রক্ষিতা,পর্ব-৩

0
970

রক্ষিতা,পর্ব-৩
আশুথিনী_হাওলাদার (ছদ্মনাম)

(গল্প শুরুর আগে একটা কথা বলে নিচ্ছি গল্পের নাম যখন ‘রক্ষিতা’ তাই ১৮+ কথা বা কাহিনীও থাকবে বুঝে শুনে নিজ দায়িত্বে পড়বেন)

__আমাকে বাজারি মেয়েদের মতো লাগছে না? এবার ঠিক আছে তো আপনার বউ না ‘রক্ষিতা বা বাজারি পতিতা দের মতো লাগছে তো আমায়?’
অর্ঘমার বলা কথা শুনা মাত্রই নিফানের চেহারার রাগী ভাবটা সরে যায় শীতল, শান্ত চোখে তাকায় অর্ঘমার দিকে। কথাটা বুকে গিয়ে বিদলো মনে হলো নিফানের। নিজেকে কোথায় নামাচ্ছে অর্ঘমা। আচ্ছা নামাচ্ছে নাকি আজ সেই’ই এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে তাকে। নিফান অর্ঘমার দিকে এক পলক তাকিয়ে চলে যেতে নেয়। অর্ঘমা তার হাত ধরে আটকে দিয়ে বলে,,
__‘আমি হালালে বিশ্বাস করি স্যার। আপনার কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা নিয়েছি আর তার বিনিময়ে আমি আপনার রক্ষিতা। আর রক্ষিতা কে রক্ষিতার মতোই ট্রিট করার উচিত। আর একজন রক্ষিতারও উচিত তার ক্লাইন্ডের মনোরঞ্জন করা। তাই না?
নিফানের অর্ঘমার এই শক্ত শক্ত কথা গুলো সহ্য হচ্ছেনা। যথা সম্ভব নিজেকে শান্ত করে গলার স্বর নরম করে তাকে প্রশ্ন করে,
__‘কি চাচ্ছো তুমি?
__‘আপনার সান্নিধ্য’
চমকায় নিফান কাকে দেখছে সে যে মেয়ের দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকালেও লজ্জায় কুকড়ে যেতো সে আজ,,,,
নিফান কিছু ভাবতে পারছেনা। অবাক চোখে তাকিয়ে আছে অর্ঘমার দিকে সে ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে নিফানের হাত আঁকড়ে ধরে তার দিকে তাকিয়ে আছে৷
__‘আমি আপনার টাকা নিয়েছি তার বিনিময়ে আপনি আমায় কিনে নিয়েছেন। রক্ষিতা হিসেবে তাই,, (কিছুক্ষন থেমে) আপনি নিশ্চই বুঝতে পেরেছেন আমি ঠিক কি বোঝাতে চেয়েছি।’
মাথা গরম হয়ে যায় নিফানের। অর্ঘমার হাত শক্ত করে চেপে ধরে নিজের কাছে এনে তার মুখ হাতের অাঙ্গুল দিয়ে চেপে ধরে হিসহিসিয়ে বলে,
__‘বড্ড সাহস বেড়ে গেছে তোমার। কার সামনে দাঁড়িয়ে আছো ভুলে যাচ্ছো। আমাকে কঠিন হতে বাধ্য করোনা তার ফল ভালো হবেনা এই টুকু বুদ্ধি নিশ্চই আছে।’
হালকা ধাক্কা দিয়ে ছেড়ে দিয়ে পা থেকে মাথা পর্যন্ত দেখে বলে,
__‘আর এক মিনিট তো দূর এক সেকেন্ডও তোমাকে এভাবে দেখতে চাচ্ছিনা। ভালোয় ভালোয় ড্রেস চেইঞ্জ করে নাও।’
কিছুটা ভয় পায় অর্ঘমা সেটা পাত্তা না দিয়ে শক্ত গলায় বলে,
__‘কেন? খারাপ লাগছে আমায়? আবেদনময়ী লাগছে না এভাবে দেখুন। সমাজের চোখে যাকে রক্ষিতা করে রেখেছেন। রুমের ভিতরে সেই রক্ষিতা কে টাচ করতে বাদছে কোথায়।’
ততোক্ষনে রাগে নিফানের চোখ লাল হয়ে যায়। নিফানের রাগী লাল চোখের দিকে তাকিয়ে থতমত খেয়ে যায় অর্ঘমা। মেকি হাসার চেষ্টা করে বলে,
__‘ব্ববেশি ব্ববলে ফফেলেছি আয়ায়ার ব্বলব না চ্চেইঞ্জ ক্করে আআসছি।
বাকা হাসে নিফান। অর্ঘমাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নেয়। হাত দিয়ে অর্ঘমার ঠোঁট স্লাট করে। গলা শুকিয়ে আসে অর্ঘমার নিজের চালে নিজেই ফেসে গেছে। এ কেমন অনুভুতি একদিকে সুখকর আর একদিকে যন্ত্রণা ময়। ভয়ে কিছু বলতেও পারছে না। নিফান অর্ঘমার কাধ থেকে চুল সরিয়ে কাধের বড় তিলটায় গভীর ভাবে ঠোঁট ছোয়ায়। অর্ঘমা চোখ খীচে বন্ধ করেনেয় বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে। নিফান অর্ঘমার দিকে তাকিয়ে বাকা হাসে। কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে,
__‘এই টুকুওতেই দম শেষ? পুরু আমি টাকে সারারাত ক্যারি করবে কি করে?
অর্ঘমার মনে হচ্ছে এখন’ই দম আটকে মারা যাবে৷ নিফান কথা বলার সাথে তার ঘাড়ে, ঠোটে,চোখে চুম্বন করছে।
কাপা কাপা কন্ঠে করুন ভাবে বলে,
__‘আয়াআমি আআর কক্কখনো আআপনার মুখে মুখে তর্ক করবোনা প্রমিস এবারের মতো সরি’
মৃদু হাসে নিফান। অর্ঘমাকে বিছানায় শুয়ে দেয়। শাড়ির আচল টা কাদ থেকে সরিয়ে বিছানা থেকে ফুলের পাপড়ি গুলো তুলে অর্ঘমার উপরে ফেলে। অর্ঘমা ভয়ে বিছানার চাদর খামছে ধরে আজ বোধায় নিফান তাকে মেরেই ফেলবে। নিশ্বাস আটকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয় অর্ঘমার। নিফান অর্ঘমার দিকে তাকিয়ে বাকা হেসে তার ঘাড়ে মুখ ডুবায়। অর্ঘমা হার মেনে নেয় নিজেকে যখন নিফানের কাছে তুলে দিতে যাবে। তখন নিফান উঠে যায় । অবাক হয় অর্ঘমা। ওভাবেই শুয়ে থেকে তাকায় নিফানের দিকে নিফান খাট থেকে শার্ট তুলে পরে নেয়। অর্ঘমার শাড়ি তুলে তার গায়ে জড়িয়ে দিয়ে অর্ঘমার সামনাসামনি এসে ঝুঁকে বলে,,
__‘নিফানের সাথে এক রাত কাটাতে কত মেয়ে মুখিয়ে থাকে জানোতো। সেখানে তুমি কিছুইনা। তোমার মতো মেয়ের সাথে সেক্স করা তো দূর সামন্য টাচ করতেও আমার বাঁধে। কিন্তু এইটুকু তো করতেই হয়। তাহলে রক্ষিতা নামটা তো সার্থক হবেনা তাইনা। নিজের জায়গাটা বুঝতে পেরেছো? এটাই তোমার শাস্তি আমি তোমার কাছে যাবো উত্তেজিত করবো কিন্তু পরিপূর্ণ না।

বাকা হেসে ভ্রু নাচিয়ে চোখ টিপ মেরে অর্ঘমার ঠোঁটে গভীর ভাবে চুম্বন করে রুম থেকে বেড়িয়ে যায় নিফান।

অর্ঘমার নিষ্পলক ভাবে তাকিয়ে থাকে নিফানের যাওয়ার দিকে। এটা কোন নিফান কে দেখছে সে। তাকে টাচ করতেও বাধে ওর। তাহলে কেন রক্ষিতা করে আনলো। কীসের শাস্তি দিচ্ছে। কোন শাস্তির কথা বলল নিফান। ডুকরে কেদে উঠে অর্ঘমা।

‘অতীত’
__‘এই “ক্রাশ হিরো”
কারো “ক্রাশ হিরো” ডাক শুনে দাঁড়িয়ে যায় নিফান। এদিক সেদিক তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে হাটা শুরু করে। তখন পিছন থেকে কেউ বলে ওঠে,,
__‘আরে তোমার পিছনে তাকাও’
পিছনে ফিরে দেখে সেদিনের সেই পাগল মেয়েটা। ভ্রু কুচকায় নিফান।
অর্ঘমার দৌড়ে এসে দাড়া নিফানের সামনে কোমড়ে হাত দিয়ে কিছুক্ষন বড় বড় শ্বাস নিয়ে নিফানের দিকে তাকিয়ে একটা ক্যাবলা হাসি দিয়ে বলে,
_“হাই”
নিফান কিছুনা বলে তার গন্তব্যের পথে হাটা শুরু করে। অর্ঘমা লাল্ফিয়ে লাফিয়ে হেটে তাল মিলায় নিফানের সাথে।
__‘আরে একটু আস্তে আস্তে হাটো না দেখছো তো তোমার সাথে তাল মিলাতে পারছিনা’
অর্ঘমাকে নিফানের বিরক্তি লাগছে এইটুকু মেয়ে কিনা তাকে তুমি তুমি করে বলছে। নিফান অর্ঘমার দিকে ঘুরে তাকে প্রশন করে,,
__‘কি চাই?
__‘তোমাকে’
থতমত খায় নিফান। রাগ নিয়ে জোড়ে চিল্লিয়ে বলে,
__“হোয়াট?
অর্ঘমা তার চিল্লানোতে কিছুটা ভয় পয়ায় তাই হাল্কা হাসার চেষ্টা করে চোখ বন্ধ করে বলে,
_‘আসলে তোমাকে আমার ভালো লাগছে ‘আই লাভ ইউ’
হা হয়ে যায় নিফান। কিছু বলার আগেই অর্ঘমা দৌড়ে পালিয়ে যায় আর নিফান বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকে। এই পুচকে একটা মেয়ে তাকে মাত্র প্রপোজ করে গেল?

বারান্দায় বসে সিগারেট ফুকসে নিফান। আগে না খেলেও গত তিন বছর ধরে তার সঙ্গী সিগারেট। মেয়েটাকে বড্ড কষ্ট দিচ্ছে সে। নিজেও পুড়ছে তাকেও পুড়াচ্ছে। অর্ঘমাকে বলা প্রতিটা কথা মনে করে। নিজের চুল খামছে ধরে নিফান। একটা মেয়েকে সে দিনের পর দিন অসম্মান করে যাচ্ছে। যাকে সে ভালোবাসে কিন্তু ওকে যে শাস্তি পেতেই হবে সারাজীবন জ্বলতে হবে ওকে। ‘ও’ জ্বললেই ‘সে’ জ্বলবে যে তার জীবনকে নরক করে দিয়েছে। তার একমাত্র আদরের ভালবাসার মানুষকে যে কেড়ে নিয়েছে। নিফান তাকে কষ্ট দেবে। আর তাকে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে অর্ঘমা। তাই অর্ঘমাকে শাস্তি পেতেই হবে। যে জ্বলন নিফান নিজে জ্বলছে ছয় বছর ধরে সেই এক’ই জ্বলন সেই মানুষটিকেও জ্বলতে হবে অর্ঘমার কষ্টের মধ্যে দিয়ে।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here