রক্ষিতা,পর্ব-৪
আশুথিনী_হাওলাদার (ছদ্মনাম)
(গল্পের শুরুতে বলে দিচ্ছি গল্পের নাম যখন “রক্ষিতা” তাই ১৮+ কথা বা কাহিনী আছে। বুঝে শুনে নিজ দায়িত্বে পরবেন)
ডায়েরি নিয়ে বসে অর্ঘমা। নিফানের সাথে কাটানো মুহুর্ত সে ডায়েরিতে লিপিবদ্ধ করে রাখতো। তার সাথে সেই মুহুর্ত গুলোর কিছু ফটো। কখনো নিফানের অজান্তে তোলা কখনো নিফানের জানাতে তোলা। সুখের স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছিল ডায়েরিটা। তবে কখনো ভাবেনি তার জীবনে এগুলই হবে শেষ সুখের মুহুর্ত নিফানের সাথে কাটানো। নিজের অতীত নিয়ে কখনো ঘাটেনি অর্ঘমা ঘাটতেও চায়না। কিন্তু না চাইতেও নিজের জীবনের কিছু অজানা কথা জানতে পেরে যায়। একদিকে নিফানের তাকে ছেড়ে চলে যাওয়া। সাথে নিজের অপ্রত্যাশিত অতীত সাথে নিজের পরিবারকে হারানো। শুধু একজন ছিল তার নিজের যাকে আকড়ে ধরে বেঁচে ছিল কিন্তু সেও ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে লড়ছে তার সাথেই কেন সব হচ্ছে। অর্ঘমা কখনো চায়নি নিফান তার জীবনে দ্বিতীয় বার ফিরে আসুক তবে তাকে ঠকানোর কারনটা অবশ্যই জানার ইচ্ছা তার ছিল। সেই ইচ্ছার কারনে সে বারবার চাইতো শুধু একবার যেন আল্লাহ তাকে নিফানের মুখোমুখি করায়। নিফান আবার ফিরে এসেছে কিন্তু তার জীবনকে দ্বিতীয় বার নরক করতে। মাঝে মাঝে ভাবে অর্ঘমা সে কি সত্যি সত্যি একজন ভুল মানুষকে ভালোবেসেছিল? নিফান কি সত্যি’ই তাকে কখনো ভালোবাসেনি। সব নাটক,ছলনা যদি ছলনাই করে। তাহলে কেন করবে? এসবে নিফানের কি লাভ?
রাত প্রায় দু’টো বাজে নিফানের দেখা নেই। অর্ঘমা নিফান কে বারবার ফোন করে যাচ্ছে কিন্তু ফোন বন্ধ। এবার অর্ঘমার ভয় হচ্ছে এত রাত তো নিফান করে না।তাহলে? কোনো বিপদ হলো না তো মানুষটার। চিন্তায় অর্ঘমার কলজে শুকিয়ে যাচ্ছে।
এমন সময় কলিং বেল বেজে ওঠে অর্ঘমা গিয়ে দরজা খুলে দেখে নিফান দাঁড়িয়ে তবে একা না সাথে একটি মেয়েও আছে। ছোটো পোশাক পরে৷ যাকে নিফান জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। অর্ঘমা নিফান কে এভাবে দেখে চোখের পলক ফেলতে ভুলে গেছে। নিফান একপলক অর্ঘমার দিকে তাকিয়ে গভীর ভাবে মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে তাকে ঠেলে ভিতরে চলে যায়। অর্ঘমা ওভাবে দাঁড়িয়ে থাকে খানিক্ষন। নিফান মেয়েটাকে নিয়ে বেড রুমে দিকে যায়। অর্ঘমা তার দিকে ঘুরে কাপা কাপা স্বরে জিজ্ঞেস করে,,
__“ন্নিফফান মমেয়েটা কে? আপনি মদ খেয়েছেন?”
“নিফান মেয়েটাকে নিজের সাথে গভীর ভাবে মিশিয়ে নেয়৷ অর্ঘমা একদৃষ্টিতে নিফানের হাতের বাধনের দিকে চেয়ে আছে যে হাত নিফান মেয়েটাকে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখেছে। নিফান অর্ঘমার দৃষ্টি অনুসরণ করে ঠোঁট কামড়ে বাঁকা হাসে। অর্ঘমার দিকে ঝুকে বলে,,
__“তুমিও যেমন টাকার কেনা রক্ষিতা তেমনি ‘ও’ আজকের রাতের জন্য আমার কেনা। আজকের রাতটা ওর সাথেই কাটাবো তুমি অন্য কোনো রুমে গিয়ে শুয়ে পরো। আজকে তোমার ছুটি।
অর্ঘমা অনুভূতি শূন্য হয়ে জবাব দেয়,
__“আমি তো আছি তাহলে? অন্য কাউকে কি দরকার?”
নিফান মেয়েটাকে ছেড়ে অর্ঘমা কাছে এসে তার শাড়ির আচল সরিয়ে উন্মুক্ত পেটে হাত দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। অর্ঘমার শরীরে বিভিন্ন জায়গায় হাত ছোয়ায়। শ্বাস আটকে যায় অর্ঘমার কেপে ওঠে তবুও এক’ই ভাবে দাঁড়িয়ে নিফানের চোখের দিকে তাঁকিয়ে থাকে। নিফান ঠোঁট কামড়ে হেসে নিজেও অর্ঘমার চোখের দিকে তাঁকিয়ে থাকে। সাথে হাত দিয়ে অর্ঘমার স্পর্শ কাতর জায়গা গুলোতে হাত বুলায়। নিফান অর্ঘমার কানের কাছে মুখ এনে কানের লতিতে কামড় দিয়ে ঠোঁট ছোয়ায়। অর্ঘমা কেপে উঠে নিফানের শার্ট খামছে ধরে। নিফান অর্ঘমাকে ফিসফিস করে বলে,,
__“তুমি তো আছো আমার পারমানেন্ট ‘রক্ষিতা’। যার মধু যখন তখন খেতে পারবো।” বাইরেও তো দু-একটা দরকার একজন দিয়ে আমার হয়না।”
কথাটা বলে নিফান তাকে ছেড়ে মেয়েটাকে জড়িয়ে ধরে রুমে গয়ে দরজা আটকে দেয়।
অর্ঘমা সেখানে অনুভূতি শূন্য হয়ে বসে পরে কাউচের সাথে হেলান দিয়ে।
__“এটা আপনি কি করলেন নিফান। আমাকে এভাবে ভেংগে গুরিয়ে দিচ্ছেন। পরে তো আমি চাইলেও কখনো উঠে দাঁড়াতে পারবো না। নিঃশেষ হয়ে যাবো আমি। নিজের স্বামী নিজের ভালবাসার মানুষকে আমি কি করে নিজের চোখের সামনে অন্য মেয়ের সাথে একঘরে রাত কাটাতে দেখবো। এমন দিন দেখার আগে আমার মৃত্যু হলোনা কেন? আমি এটা সহ্য করবো কি করে আল্লাহ তুমি দয়া করে আমার জান কবজ করাও।
(নিজ মনে বিড়বিড়ায় অর্ঘমা)
সাথে আনা মেয়েটাকে কাউচে ঘুমতে বলে নিফান বারান্দায় চলে যায়। মেয়েটাকে বেড রুমে এনেছে এই ঢের তবে বিছানায় শোয়ানোর মতো কাজ নিফান করতে পারেনি কারন এই রুম, এই ঘর, এই বিছানায় একমাত্র অর্ঘমার অধিকার। আজকের আঘাতে কেমন অনুভুতি শূন্য হয়ে গেছে অর্ঘমা। এক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে ছিল তার দিকে। নিজের হাতে নিজের ভালবাসাকে ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছে সে। খুব বড় আঘাত দিয়ে ফেলল নাতো? কোনো মেয়েই তো নিজের স্বামীর ভাগ কাউকে দিতে পারেনা। সেখানে সে অর্ঘমার চোখের সামনে অন্য মেয়ের সাথে এক ঘরে রাত কাটাচ্ছে।
সকালে ঘুম থেকে জেগে গোসল সেরে নেয় নিফান সাথে মেয়েটাকেও বলে চুল ভিজিয়ে নিতে যাতে করে অর্ঘমা বোঝে রাতে তাদের মধ্যে কিছু হয়েছে। গোসল সেরে রুম থেকে বের হয় নিফান। ডাইনিং এসে দেখে অর্ঘমা খাবার সাজাচ্ছে। তাকে দেখে মিষ্টি করে হাসে অর্ঘমা।
__“আপনারা উঠে গেছেন। আমি ভাবছিলাম দেড়ি হবে হয়তো। খাবার রেডি খেয়ে নিন। আপনার সাথের মেয়েটা কোথায় তাকেও ডাকুন খেয়ে যাক।”
নিফান অবাক হয়ে তাঁকিয়ে আছে অর্ঘমার দিকে। অর্ঘমা এমন ভাবে কথা বলছে যেন কাল রাতে কিছু হয়নি। অর্ঘমার নিজের মনে বলে,
__‘আচ্ছা থাক আপনি বসুন আমি গিয়ে তাকে নিয়ে আসছি।”
অর্ঘমা যেতে নিলে দেখে মেয়েটা রেডি হয়ে এসেছে। মেয়েটির চুল ভেজা হয়তো গোসল সেরে বের হয়েছে। ছোটো ছোটো বার কয়েক নিশ্বাস ফেলে হালকা হেসে অর্ঘমা তাকে ডাইনিং এ বসেতে বলে। মেয়েটা নিফানের দিকে তাকায়। অর্ঘমা তাকে অনুসরণ করে হেসে নিফানকে বলে,
__“আপনার নিশ্চয়ই তার সাথে খেতে অসুবিধা নেই। যার সাথে রাত কাটাতে পারেন যার শরীরের সাথে মিসে যেতে পারেন তার সাথে ডাইনিং খেলেও সমস্যা নেই। তাইনা? আর তুমি বসে যাও। ওপস সরি! আমি তুমি করে বললাম সমস্যা নেই তুমি আমি এক প্রফেশনের তুমি ওনার সাথে এক রাতের জন্য এসেছো আর আমি ওনার পার্মানেন্ট “রক্ষিতা”। উনি আমায় ২০ লাখ টাকা দিয়ে কিনে নিয়েছেন।
অর্ঘমার কথাটা কানে যাওয়া মাত্র’ই নিফানের হাত থেকে চামচ পরে যায়। রক্ত চক্ষু নিয়ে তাকায় অর্ঘমার দিকে। তবে অর্ঘমা নিফানের দিকে না তাকিয়ে মেয়েটার সাথে সাথে কথা বলায় ব্যাস্ত। রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় নিফানের। মেয়েটার দিকে তাকিয়ে শক্ত কন্ঠে বলে,,
__‘উরবুশি’ তোমার খাওয়া হলে তুমি আসতে পারো। তোমার প্রেমেন্ট তুমি পেয়ে যাবে।
নিফানের দিকে তাকিয়ে থতমত খেয়ে যায় উরবুশি। কোনো রকমে ‘জি স্যার’ বলে উঠে চলে যায়। তবে অর্ঘমা নিশ্চুপ ভাবশালিন ভাবে সবজি কেটে যাচ্ছে। অর্ঘমার ‘ডোন্ট কেয়ার’ ভাব নিফানের সহ্য হচ্ছেনা রাগে মাথা গরম হয়ে যাচ্ছে। নিফান চেয়ার থেকে উঠে অর্ঘমার কাছে গিয়ে তাকে চেয়ার থেকে টেনে তুলে। হাতে থাকা সবজি কাটার ছুরিটা টেনে নিয়ে শব্দ করে ফ্লোরে ফেলে দেয়। অর্ঘমা অবাক হয়ে তাকায় নিফানের দিকে কি হলো বোঝার আগেই নিফান অর্ঘমাকে টেনে নিয়ে যায় বেড রুমে। একপ্রকার ছুড়ে মারে বিছানায়। কি হচ্ছে অর্ঘমা বুঝতে পারছেনা। নিফানের রাগের কারনও তার অজানা। নিফান গলায় মুখ ডুবায় নিফান স্পর্শ কাতর জায়গায় হাত ছোয়ায়। খানিক্ষন পর রাগ পানি হলে উঠে চলে যায় নিফান। অর্ঘমা বিছানার চাদর খামছে বড় বড় শ্বাস নিচ্ছে। নিফান পিছন ফিরে এক পলক অর্ঘমার দিকে তাঁকিয়ে বাকা হেসে চলে যায়।
চলবে?