রক্ষিতা,পর্ব-৯
আশুথিনী_হাওলাদার (ছদ্মনাম)
বহুদিন পর চট্টগ্রাম যাচ্ছে অর্ঘমা, নিফান। নিফানের বিজনেসের কাজ পরে গেছে। বেশ কিছুদিন থাকতে হবে। তাই অর্ঘমা কেও সাথে নিয়ে যাচ্ছে নিফান। অবশ্যই ট্রেন জার্নি। অর্ঘমার ট্রেনে করে যেতে ভালো লাগত। নিজেদের গাড়ি থাকলেও কখনো এতো পথ গাড়িতে আসা যাওয়া করতো না। সব সময় ট্রেনে আসা যাওয়া করতো। আজ হঠাৎ নিফান তাঁর ইচ্ছেকে প্রধান্য দিয়ে ট্রেনে করে যাচ্ছে। অর্ঘমা মনে মনে অবাক হলেও মুখে কিছুবলেনি। তাচ্ছিল্য হেসে ভাবলো,
__‘তার আবার ইচ্ছে’
ট্রেনের জানালা দিয়ে বাইরে তাকায় অর্ঘমা। দূর থেকে পাহাড় দেখা যাচ্ছে। যত কাছাকাছি আসছে। তার বুকের ফুপবুকানি গুলো বেড়ে যাচ্ছে। চট্টগ্রামে তো তাদের প্রথম দেখা। দু’জন দু’জনকে চেনা জানা। তারপর ভালোবাসা। নিজের পাগলামির কথা মনে করে হালকা হাসে অর্ঘমা।
নিফান পুরু জার্নিতে অর্ঘমা কে দেখে যাচ্ছিলো মেয়েটা দিন দিন চেইঞ্জ হয়ে যাচ্ছে। গুমরে যাচ্ছে কয়েক মাস পর সে অর্ঘমার ঠোঁটের কোনে হালকা হলেও হাসি দেখলো। অর্ঘমার নিশ্চুপতা তার ভাল লাগছে না। কিন্তু সে এটাই চাইতো অর্ঘমা কষ্ট পাক। অর্ঘমাকে কষ্ট দিয়ে পৈচাশিক আনন্দ পেতে চেয়েছিল। এখন তার উলটো হচ্ছে বরং সে তাকে কষ্ট দিয়ে নিজে ভিতরে ভিতিরে ক্ষত বিক্ষত হচ্ছে। একটা বছর ধরে মেয়েটা তার অত্যাচার গুলো সয়ে আছে। নিফান ভাল করে লক্ষ্য করে অর্ঘমাকে চোখের নিচে কালো হয়ে গেছে। শুকিয়েও গেছে। নিফান ভেবে পায়না সে কি করবে যতবার অর্ঘমার সাথে ভাল ব্যাবহার করতে চায় তাকে ভালবাসতে চায় ততবার তার চোখের সামনে নিজের বোনের মুখ ভেসে উঠে। তাকে চিৎকার করে বলছে,
_‘ভাই তুই কাকে ভালবাসতে চাচ্ছিস? যার জন্য আজ আমি তোর কাছে নেই। তোদের মাঝে নেই। তার বোন কে ভালবাসছিস?
রাগ হয় তখন নিফানের। যত কষ্ট অভ্র তার আপু কে দিয়েছে তার চেয়ে হাজার গুন কষ্ট সে অভ্রর বোন কে দেবে। তাতে যদি নিজেকে ক্ষতবিক্ষত করতে হয় তাও সে করবে। একদিন অভ্র তার আপু কে ঠকিয়ে চলে গিয়েছিল। সমাজের মানুষের চোখে তার বোন অপমানিত হয়েছিল। আজ সে অভ্রর বোন কে ‘রক্ষিতা’ করে রেখেছে৷ সমাজের চোখে অর্ঘমা এক রক্ষিতা বাজারি মেয়ে। সেটা সমাজ না জানুক অর্ঘমা নিজে তো জানে। তা থেকে অর্ঘমার যে মানুষিক অশান্তি হয় কষ্ট হয়। সেটায় নিজের আনন্দ খুজে নিতে চায় নিফান। তবে সে আনন্দ পায় না বুকে যন্ত্রণা হয়। অর্ঘমাকে কষ্ট দিয়ে নিজে কষ্ট পায়। বোনের মৃত জুলন্ত দেহের ছবি যখন তার চোখের সামনে ভাসে। তখন নিজেকে ঠিক রাখতে পারেনা নিফান। বারে মদ খায়। সে সজ্ঞানে কখনো অর্ঘমা কে জানোয়ারে মতো স্পর্শ, অত্যাচার করতে পারবে না। তাই প্রতিবার রাতে মিলিত হওয়ার পূর্বে ড্রিংক করে বাসায় ফেরে সে। প্রতিদিন মেয়ে আনতো শুধু অর্ঘমা কে কষ্ট দিতে এটা বুঝাতে সে শুধু এক ‘রক্ষিতা’। বদ্ধ ঘরে মেয়েটা কাউচে শুয়ে পরতো। নিফান সারারাত বারান্দায় কাটিয়ে দিতো। ভোর বেলা গোসল করে বের হতো যাতে অর্ঘমা বুঝতে পারে রাতে তাদের মধ্যে কিছু হয়েছে।
চট্টগ্রামে নিফানের ফ্লাটে এসে উঠে তারা। এ ফ্লাটে অর্ঘমা আগেও এসেছে যখন নিফান চট্টগ্রাম থাকত। ফ্লাটের প্রতিটা জিনিসে হাত বুলিয়ে দেখছে অর্ঘমা। একদিন সে নিজের মন মতো করে সাজিয়েছিল। সব আগের মতো আছে। শুধু তাদের সম্পর্ক আগের মতো নেই। নিফান অর্ঘমার দিকে আড়চোখে চেয়ে গলায় কাঠিন্য এনে বলবে,
__‘তুমি যেভাবে সাজিয়ে রেখে গিয়েছিলে সব সেভাবে আছে দেখে এটা ভেবো না আমি তোমাকে ভালোবাসে এসব রেখেছি। বরং আমি এখানে আসার সময় পায়নি তাই এগুলো চেইঞ্জ করা হয়নি।
মৃদু হাসে অর্ঘমা। নিফানের সামনে এসে তার চোখে চোখ রেখে বলে,
__‘আমি এ ভুল ধারনটা নিয়ে নেই যে, আপনি আমাকে ভালোবাসেন। এক বছর ধরে আমি আপনার সাথে আছি এটুকু বুঝেছি আর যাই হোক আপনি আমাকে ভালোবাসেন না। শুধু আমাকে নয় আমার শরীর কেও আপনি ভালবাসেন না। শরীর ভালোবাসলে পরনারীতে জেতেন না।
কথা শেষ করে অর্ঘমা নিফানের রুমে চলে যায়। নিফান সেখানে পাথর হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। চোখের কোনের জল মুছে শুকনো হাসে নিফান। অর্ঘমা বিশ্বাস করে গেছে। নিফান তাকে ভালবাসে না। নিফানের তাতে খুশি হওয়ার কথা তবে সে খুশি হতে পারছে না। অস্থির লাগছে নিজেকে। পাশের রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়। মাথায় পানি ঢালে কিন্তু যন্ত্রণা যাচ্ছেনা। বুকের ভিতর চিনচিন করছে। নিজের রুমে যায় নিফান। গিয়ে দেখে অর্ঘমা আগে থেকে তৈরঈ হয়ে বসে আছে। বুকের ভিতর আবার চিনচিন করে ওঠে তার। অর্ঘমা কি ভাবছে, নিফান শুধু তার কাছে শরীরের চাহিদা মিটাতে যায়। রাগ হয় নিফানের। নিজের রাগ কন্ট্রোল করতে এদিক সেদিক তাঁকায়। অর্ঘমা গুটি গুটি পায়ে হেটে এসে নিফানের কাছ ঘেঁষে দাঁড়ায়। নিফানের শার্টের বোতাম গুলো খুলে তার বুকে ঠোঁট ছোয়ায়। নিফান হাত মুষ্টি করে শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। অর্ঘমা টাইট করে জড়িয়ে ধরে নিফান কে। তার উন্মুক্ত পিঠে দু’হাত রেখে বুকে মুখ গুজে। ফিসফিস করে বলে,,
__‘আমায় বিক্নি পরে কেমন লাগছে বললেন না। যেদিন এনেছিলেন ওইদিন পরেনি কেমন যেন অদ্ভুত লাগছিল। লজ্জা লাগছিল। আজ মনে হলো ‘রক্ষিতা’ দের আবার লজ্জা কিসের। তাদের কাজ’ই তো ক্লাইন্ডের সামনে নিজেকে নানা ভাবে প্রেজেন্ট করা। নিজের শরীর নানা ভাবে সাজিয়ে তোলা। বেশি আবেদনময়ী করে তোলা। যাতে তার ক্লাইন্ড সুখ পায় খুশি হয়। আর খুশি হয়ে টাকা বাড়িয়ে দেয়। আর আমার তো আপনার সাথে টাকার সম্পর্ক। আপনি খুশি হলে আমার লাভ। আপনার আমার শরীর দরকার আর আমার টাকা। অবশ্য বিষয়টা ইনজয় কিন্তু দু’জনেই করছি তাই না? শরীরের চাহিদা তো সবার আছে।
নিফান কে ছেড়ে দিয়ে তার সামনে দাঁড়িয়ে হেসে বলে,,
__‘কি হলো বললেন না? আমায় হট লাগছে না?
নিজে নিজে কথা গুলো বলে আয়নায় নিজেকে দেখে নিয়ে। চুল গুলো খুলে নিফানের কাছে এসে বলে এবার ঠিক আছে। চুল বাধার কারনে ততো ভালো লাগছিল না। এবার ঠিক লাগছে?
নিফান চোখ মুখ শক্ত করে তাঁকিয়ে আছে অর্ঘমার দিকে। অর্ঘমা হেসে কথা বলে যাচ্ছে। বুকে ব্যাথা করছে তার সাথে রাগ হচ্ছে। সেদিন বিক্নি এনেছিল শুধু অর্ঘমাকে কিছু তিক্ত কতহা শুনাতে। তবে অর্ঘমা যে তার তিক্ত কথা গুলো সত্যি করে এটা পরে তার সামনে আসবে কখনো ভাবেনি।
রাগ হয় নিফানের। রাগ কন্ট্রোল না করতে পেরে সে আবার একটা ভুল করে ফেললো। অর্ঘমা কে বিছানায় ছুড়ে মেরে তার উপর শোয়। এবারের রাগ সে অর্ঘমার শরীরের উপার দিয়ে শান্ত করে। তার শরীর কে ক্ষতবিক্ষত করে। কিন্তু তাতে অর্ঘমার কোনো প্রতিক্রিয়া নেই। এমন ভাব যে সে এ আঘাত গুলোতে ইনজয় করছে।
চলবে?
(অশ্লীল কোনো ওয়ার্ড দেখলে অবশ্যই জানাবেন আমি সংশোধন করবো। গল্পেরনাম যখন রক্ষিতা তাই নামের সার্থে এটুকু দিতেই হয়।)
আর যারা এসব নিতে পারছেন না যে একটা মেয়ে কেন রক্ষিতা হয়ে আছে তাদের অবগত করছি গল্পের নাম এটা। দ্বিতীয় কথা বাংলাদেশে কিন্তু হাজার হাজার পতিতা পল্লি আছে সেখানে মেয়েরা কিন্তু শরীরের ক্ষিদা মিটাতে না। টাকার উপার্জনের কোনো উপআয় না পেয়ে যায়। এত সাধু হলে পুরুষ রাও পতিতা পল্লি তে যেত না। এখানে আগেই বলা হইছে অর্ঘমার টাকা দরকার তাও অনেক টাকা একজন ক্যান্সার রোগীর চিকিৎসায় কিন্তু সর্বশান্তও মানুষ সেখানে অর্ঘমা কিছুই নেই একটা বাড়ি ছাড়া। আর সবাই বলতেছে অর্ঘমা চলে যায়না কেন? কিন্তু অর্ঘমা চলে যাবে কি করে? সে যেখানে নিফানের কেনা? একটা চুক্তি আছে দেড় বছরের সেই চুক্তি অনুযায়ী সে নিফানের কেনা। সাথে তার টাকারও দরকার। আর হ্যা গল্পের টুইস্ট আসবে আর খুব তাড়াতাড়ি। এসব শেষ হবে। সব খোলসাও হবে আস্তে আস্তে। আমি কাহিনী টা ধীরে ধীরে আগাতে চআচ্ছি তাই দেরী হচ্ছে।
অশ্লিল কোনো ওয়ার্ড থাকলে জানাবেন। আর দ্বিতীয় তো গল্পের নামের সার্থে এটুকু লেখা লাগলো যা আমার নিজেরও লিখতে খুব খারাপ লাগছে। আর একজন বলছিল যে এভাবে অত্যাচার করে মিলিত হইছে তাতে আবার নাইকা নিজেকে পরিপূর্ন মনে করছে। আমি শুনেছি। একটা মেয়ে যে কুমারী মেয়ে কোনো পুরুষের সংস্পর্শে গেলে নাকি পরিপূর্ণ হয়। খোলামেলা ভাবেই বলি যদি তার কুমারিত্ব হনোন করা হয়। বা যদি মিলিত হয় কোনো পুরুষের সাথে। আর হ্যা গত পর্বে বলা হইছে তাদের বিয়েটা কিন্তু হইছে। তবে যদি বলেন জোড় করে। আমআদের সমাজে এমন জোর করে স্বামীর হাতে ধর্ষণ হওয়া মেয়ের অভাব নেই। যে প্রতি রাতে নিজের অনিচ্ছায় ,,, কাগজে কলমের বা একটা কবুল বলে বিয়ে করা স্বামীর ধারা ধর্ষন হয়। যাই হোক খারাপ লাগলে আমি দুঃখিত।