রাকা (২৮)

0
665

রাকা (২৮)

অনু চৌধুরীর মেজাজ তুঙ্গে উঠে গেছে।
সে কিছুতেই ভাবতে পারেনা তার ওইরকম সাদাসিধে বরটার ফোন থেকে কোনো মেয়েলি কণ্ঠস্বর আসবে বলে।
কিন্তু আজ তাই ই হলো।
অনু চৌধুরী বিড়বিড় করছে অনর্গল, মেয়ের কণ্ঠস্বর রেজার ফোন থেকে আসছে!
তারমানে কি রেজা বিয়ে করছে সামনেই!
নিশ্চয়ই তানিশার দাদির কাম এইডা!
ওই মহিলা যা দজ্জ্বাল! মনে হয় তার ওই বইনের মাইয়্যাডারেই গছাইয়া দিছে,হ্যাঁ, কি যেন নাম? রিমা? হ, রিমাই তো।

মাঝেমাঝে বাসায় আসতো তো ওই লাটসাহেবের বেটি। সুরুত তো নাই ই, গুণ ও নাই ছেমরির; অথচ ভাবখানা দেখো! এহন সুযোগ পাইয়্যাই চাইপ্যা বসছে। আল্লাহ! আমার লগে কি হইতাছে এগুলা?
একদিক দিয়া এই শাহানা বেগম আরেকদিক দিয়া এখন এই রিমা আইস্যা পড়ছে !
এমন সময় শাহানা বেগম ভেতরে ঢুকে পড়লো। ভেতরে এসেই সে অনু চৌধুরীকে অনেকবার করে ডাকলো।
ইরা কাঁদছে,ওকে খাওয়ানো বাকি,গোসল করানো বাকি,কখন করাবে ইত্যাদি সব ও জিজ্ঞেস করছে। কিন্তু কোনোপ্রকার সাড়াই দিচ্ছেনা সে।
কারণ এখন সে অন্য চিন্তায় মগ্ন হয়ে আছে।

তাই শাহানা বেগম বাধ্য হয়েই ইরাকে কোলে তুলে নিয়ে হাতের বাটি থেকে কি যেন নিয়ে খাইয়ে দিলেন। ভ্রম ভাঙতেই এই দৃশ্য দেখে সে চিৎকার করে সারা বাড়ি করলো।

আজমল উদ্দীন দৌঁড়ে এসে জিজ্ঞেস করলেন, কী হইছে অনু?

অনু চৌধুরী কিছু না বলে তার সামনেই শাহানা বেগমের সামনাসামনি গিয়ে রক্তচক্ষু নিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
– এই কি খাওয়াইলি তুই আমার মাইয়্যারে? মাইর‍্যা ফেলতে বিষ খাওয়াই দিছোস? বল না, বিষ দিছোস আমার মাইয়্যারে?

শাহানা বেগম অবিরত বলে যাচ্ছে ওটা এমনি হরেক রকমের পদ দিয়ে রান্না করা খিঁচুড়ি।
ভর্তা করে একদম ভালো করে পিষেই সে এনেছে, ইরাকে খাওয়ানোর জন্য। কিন্তু অনু চৌধুরী সেসব কথা কানেই তুলছে না। ইরা ঐ মুহূর্তেই ভ্যাঁ করে কেঁদে দিলো। ইরার কান্নাটা ছিলো স্বাভাবিক কান্না। এত জোরে জোরে চিৎকার চেঁচামেচি হচ্ছে বিধায় সে ভয় পেয়ে গিয়ে কান্না জুড়ে দিয়েছিলো। কিন্তু অনু চৌধুরীর নষ্ট মাথায় নষ্ট চিন্তাই আসলো। সে ধরেই নিলো ইরাকে বিষ দেওয়া হয়েছে, যার দরুন কাঁদতে আরম্ভ করেছে তার মেয়ে।

সে কিছুমাত্র না ভেবেই আজমল উদ্দীনের সামনে শাহানা বেগমের দুই গালে দুইটা চড় বসিয়ে দিলো।
শুধু এটুকুই নয়, ঘটনা মারামারির দিকেও পা বাড়িয়েছিলো। সারাবাড়ির মানুষ এসে হাজির হয়েছে। নতুন বউ আসতে না আসতেই ঘরে চুলাচুলি লেগে গেছে; এই দৃশ্য দেখার জন্য লোকের অভাব হলো না।

শাহানা বেগমকে কষে থাপ্পড় মারার পর যখন অনু চৌধুরী চুপ হলো একটু, তখন শাহানা বেগম অশান্ত গলায় বলে উঠলেন,
– অনু! এইযে হুটহাট বড়দের গায়ে হাত তুলিস, লজ্জ্বা করে না রে তোর? ওটা বিষ ছিলো না রে,ওটা এমনি খিঁচুড়ি ছিলো। তুই তো ওর একটুও খেয়াল রাখিস না দেখছি। বাচ্চাটা কাঁদতেছে আর তুই চুপচাপ বসে আছিস। অন্য কেউ বাচ্চাটাকে ভালোবাসে তাই ছুটে এসেছে; যেখানে তুই সামনেই বসে আছিস। অথচ তুই বললি আমি বিষ দিছি তোর মেয়েরে?

এই বলে শাহানা বেগম বসে থাকা অনু চৌধুরীর কাঁধে একটা ধাক্কা দিয়ে বললো,
– খুব অহংকার তোর, তাই নারে অনু?
তারপর আজমল উদ্দীনের দিকে তাকিয়ে বললো, শুনেন, ওকে আজকেই এখান থেকে বিদায় করে দিবেন। আর পারলে আপনিসহ চলে যাবেন।
বলে সে ওই মুহূর্তেই স্থান ত্যাগ করলো কাঁদতে কাঁদতে।

আজমল উদ্দীন এসব দেখে ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বসে আছেন। পরিস্থিতি এখন তার চিন্তাভাবনার বাইরে। অনু চৌধুরী এতটা হিংস্র, এতটা স্বার্থান্বেষী এসব সে জানতোই না!
যেখানে তার প্রথম স্ত্রী,শাহানা বেগম,এতটা শান্ত,এতটা নীরব প্রকৃতির একটা মেয়ে!

শাহানা বেগম নিজের রুমে গিয়ে তার মাকে ফোন করে বিষয়টা জানালেন।
অর:পর তার মা তার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে একটা অনাকাঙ্ক্ষিত প্রস্তাব দিয়ে দিলো।
যা শুনেই শাহানা বেগমের হৃদস্পন্দন বেড়ে গেলো।
সে এই প্রস্তাবে কেবল রাজিই নয় বরং এক পায়ে খাড়া, বলা সমীচীন।

ওদিকে অনু চৌধুরী খিঁচুড়ি চেখে দেখে নিশ্চিত হয়েছে,ওটাতে বিষ টিষ কিছুই নেই,সুস্বাদু জিনিস। এতই টেস্টি লাগছে যে নিজেই ওটা খেয়ে নিয়েছে ইরাকে আর দেয়ইনি।
সবাই চলে যাওয়ার পর যখন রান্না ঘরে গেলো তখন আরো একধাপে চমকালো সে।

রান্নাঘরে নানান পদের রান্না পড়ে আছে।
এতক্ষন ধরে সব রান্না করে শাহানা বেগম নিজেই ভাগ করে অর্ধেকের বেশিই দিয়ে দিয়েছেন অনু চৌধুরীর ভাগে।
এই অবস্থা দেখে অনু চৌধুরীর সামান্য ইতস্তবোধ হলো।

তখনই পিছন থেকে আজমল উদ্দীন এসে বললেন,
– অনু, তুমি রেডি হও এখনি।
সে তৎক্ষণাৎ জিজ্ঞেস করে,কেন?
আজমল উদ্দীন রাগান্বিত স্বরে বলেন,
– কেন তুমি শুনোনাই? এই বাড়ি যার সে তোমাকে আজকেই এই বাড়ি ছাড়তে বলছে। তাই। রেডি হও। তোমাকে দিয়ে আসি গিয়ে। আসছি পর্যন্ত একটা দিন শান্তিতে থাকতে পারলাম না তোমার জন্য। তুমি যেখানেই যাও ওখানেই দেখি সমস্যা।

অনু চৌধুরী আকাশ থেকে পড়ার ভাণ করে বললো,
– তোমারে দিয়া আসি মানে? তুমি কই থাকবা? আর কি কইলা! এখন বাচ্চা হয়ে যাবার পর আর আমারে ভাল্লাগেনা তোমার? কও!

– আমি এখানেই থাকবো কিছুদিন। সত্যি বলতে,আসলেই লাগে না। শান্তি?

– ক্যান? আমি ওইহানে একা একা করমুটা কি?

– তোমার যা ইচ্ছা। তবে আমি তোমার সাথে আর বেশিদিন থাকতে পারবো না মনে হয়। তুমি অতিরিক্ত উগ্র স্বভাবের অনু। আমার অসহ্য লাগতেছে তোমারে, সত্যি কথা বলতে আমার আর ভাল্লাগতেছেনা।

– ও,এহন আমারে ও অসহ্য লাগে? ঠিক আছে। আমি ও যামুনা এইখান থেইক্যা! দেখি কে কী করতে পারে আমার।

– তাই! তো কই থাকবা? এই বাড়ি আমার ছিলো কিন্তু এখন এইড্যা শাহানার। তুমি এখানে থাকবা কই? কার বাড়িতে?

– আমার ব্যবস্থা আমি করতেছি।

– না কোনো কথা না। তুমি চলো এইখান থেকে। তুমি শহরে চলো। বাসা খালি পইড়্যা আছে।

সে দৃঢ় প্রতিভ গলায় বললো,
– থাউক পইড়্যা। আমি আর যামুইনা ওনে। দুই রুমের পাখির বাসার মত একটা বাসা! আর এইহানে কত বড় বাড়ি পইড়্যা আছে!! আমি তো এইহানেই থাকমু। আমার কিছুদিন লাগবো কেবল। আপনে একটা কাজ করেন,আপনার শাহানা বেগমরে কন,আর কোনো ঝামেলা হইবো না,আমি গ্যারান্টি দিছি। শুধু একটা শর্ত, ওই অভিশপ্ত মহিলা যেন আমার মাইয়্যারে ভুলেও না ধরে। ব্যস।

আজমল উদ্দীন অনেক বুঝালেন।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হলেন।
এক পর্যায়ে ক্রোধান্বিত হয়ে চলে গেলেন শাহানা বেগমের কাছে।
শাহানা বেগমের মুখে সেরকম কোনো কষ্টের ছাপ নেই। আজমল উদ্দীনের বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে শাহানা বেগমের অপমান দেখে দেখে।
সে হাত জোর করে ক্ষমা চাইলো।
মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো,শাহানা বেগমকে কিছুদিনের জন্য ওর বাপের বাড়িতে পাঠিয়ে দিবে।
সে শাহানা বেগমকে খুলে বললো অনু চৌধুরীর কথা। সে যাবেনা… এরকম এরকম বলতেছে..

শাহানা বেগম মলিন হাসি দিয়ে বললো,
– ঠিক আছে। থাকুক সে। তবে তারে বইল্যেন দ্বিতীয় বার ঝামেলা করলে আর নিস্তার নাই। এত গুমোটওয়ালা মেয়েছেলে ভালো হয়না। ওর বাচ্চা নিয়ে ওর খুব বেশি অহংকার। আমিও দেখতেছি কিভাবে ওর ব্যবস্থা করা যায়।

আজমল উদ্দীন বহুবছর পর আবার সেই আগের দৃঢ়প্রত্যয়ী শাহানা বেগমকে দেখে খুশিতে ভেঙে পড়লেন।
– শাহানা, অনু এরকম হবে এটা আমি আগে বুঝতেই পারিনাই বিশ্বাস করো! তুমি ওকে এত পাত্তা দিও না। বেশি দাম দিলে বেশি উপরে উঠবে।
আসলেই নিজের রুপ গুণ নিয়ে খুব অহংকার ওর। খুব লোভীও।

শাহানা বেগম বললেন,
– শুধু রুপ-গুণ ই না, বাচ্চা ও জন্ম দিতে পারছে। সে ভাগ্যবতী। অবশ্য আমার তো তাদের সারাজীবনই এভাবে দাম দিতে চলতে হবে। কারণ তারা বাচ্চা জন্ম দিতে পারছে, আমি পারিনাই।
আমি অভিশপ্ত,অপয়া,বন্ধ্যা একজন নারী। আমার জায়গা ওই ঘরের কোণাতেই। বলে সে হু হু করে কেঁদে দিলো।

আজমল শাহানা বেগমের কপালে চুমো এঁকে দিলো।
এক লহমাতেই যেন তার কম্পমান শরীর নিশ্চুপ হয়ে গেলো। যোগ করলো,
– বাচ্চা লাগেনা শাহানা। একজন ভালো মনের অধিকারী হওয়াটাই আসল। আমি আগে বুঝিনি। এখন বুঝতেছি। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দিও। আমার ভুলের কোনো অভাব নাই আসলে।
শাহানা বেগম আস্তে করে বললো,
– ঠিক আছে। বাদ দেন। তবে আমার ও দিন আসতেছে…
আজমল উদ্দীন শাহানা বেগমের শেষ উক্তিটায় অত জোর দিলেন না।

দোকানে যাওয়ার সময় সে ঘরের পিছনে, অনু চৌধুরীর রুমের পিছন দিকটায় কতগুলো ছিঁড়া কাগজের টুকরো দেখে থমকে যায়। তার বড্ড বেশি সন্দেহ হয় এখন অনু চৌধুরীকে। সে খুব বেশি একটা সুবিধার মানুষ নয়,সেটা ইতোমধ্যেই সে টের পেয়ে গিয়েছে।

অনুর ব্যাগভর্তি অত টাকা, চুরি করে ফোনালাপ কোনো কিছুই তো আর তার চোখ এড়ায় না!
সে কেবল হাতে নাতে কোনো একদিন ধরবে, সেই অপেক্ষাই করছে। এখন চুপচাপ দেখে যাওয়াই শ্রেয়। কাগজগুলো তুলে নিয়ে সে থমকে গেলো। ভালো করে দেখে বুঝলো,ওটা ডিভোর্স পেপারই ছিলো! এইটা এখানে আর কে ফেলবে! নিশ্চয়ই এটা অনুকেন্দ্রিক ঘটনা! ওকে নিশ্চয়ই রেজা ডিভোর্স পেপার পাঠিয়েছে!
ওর তো এই পেপারে সাইন করে দেওয়া উচিত ছিলো! কিন্তু করলো না কেন? আর আমাকে একটা বারের জন্যও বললো না কেন!
ভাবছেন আজমল উদ্দীন।

সে বাজারের ব্যাগ ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে অনু চৌধুরীর ঘরে গিয়ে,দরজা বন্ধ করে জিজ্ঞেস করলো তাকে,
– রেজা তোমাকে ডিভোর্স পেপার পাঠাইছে আমাকে বলোনাই কেন?
– রাগে জিদ্দে। এই কতা আর তুইল্যো না ইরার বাপ। দোহাই লাগে তোমার।
– আশ্চর্যজনক কথা অনু! তুমি আমার স্ত্রী। তোমার তো তোমার জীবনের সবকিছুই আমার সাথে শেয়ার করার কথা ছিলো। এরকম একটা সাংঘাতিক, জরুরি কথা লুকাইলা কেন?
– আরে লুকাইছি কই? রাইত্যে ঠিকই বলতাম বিষয়টা। সময়ই তো পাইলাম না। যা নাটক শুরু করছিলো তোমার বড় বিবি!
– থামো! বুঝলাম ডিভোর্স পেপার পাঠাইছে, বলার সময় পাওয়নাই। কিন্তু এইটা এইভাবে টুকরো টুকরো করার কারণ কী??
– হেইডা আমার ইচ্ছা।
– তোমার ইচ্ছা মানে! এই তোমার মতলব কী বলো তো?
– কিছু না। তুমি যাও। আমি কামে যাই।
– আমার উত্তর দিয়ে যা ইচ্ছা করোগে। উত্তর দাও আগে। ছিঁড়লা কেন? ওকে ডিভোর্স দিবানা?

– ছিঁড়ছি কারণ আমার ইচ্ছা হইছে তাই। না,কার্য হাসিল করা ছাড়া এই অনু চৌধুরী কিছু করেনা। বুঝলা? এই নিয়া আর কোনো প্রশ্ন করলে সংসারে আগুন লাগায়ে দিমু কইলাম। গেলাম আমি।

আজমল উদ্দীন মাথায় হাত দিয়ে বসে আছেন।
এ কাকে নিয়ে আসলো সে ঘরে!
অনু চৌধুরীর এই আচরণ দেখে তার ঘৃণায়, রাগে, ক্রোধে পিত্তি জ্বলে যাচ্ছে যেন!


আমরা বাসায় ফিরেছি।
খালা আর আব্বু আসার আগেই আমরা বাসায় চলে আসছিলাম।
তাদের ই আসতে দেরী হলো।
স্যার ওইদিক দিয়েই গাড়ি ঘুরায়ে আসছিলো যেন তাদের পথিমধ্যে পেয়ে গেলেও পিক করা যায়। কারণ দুজনের একজন ও ফোন ধরছে না।

তারা ফিরলো আমাদের ফেরার ও আধ ঘন্টা পর।

আমরা ভিতরে ঢুকে সব গোছগাছ করে সবাই রেস্ট নিয়ে আড্ডায় বসলাম।
খালা আমার জন্য অনেকগুলো থ্রি-পিস কিনেছে। সাথে বেন্ট,ক্লিপ ছাড়াও নানান সাজসজ্জার জিনিস!
আমি তো খুশিতে আটখানা।
এত খুশি, আড্ডার মাঝেও আপন স্যার আমার পড়া ধরলেন। কতটুকু শেষ করলাম, না করলাম জিজ্ঞেস করছে। আমি একে একে সব বলছি, সে কখনো খুশি হচ্ছে; কখনো বা মুখ ভার করছে।

লক্ষ্য করে দেখলাম,
রিমা খালা কেমন যেন চুপচাপ হয়ে গেছে।
হুট করে কি হইছে কে জানে! নির্ঘাত আব্বুর সাথে মার্কেটে ঝগড়া বা ঝামেলা হয়েছে! নয়তো আর কি হবে! গাড়িতে উঠার আগেও তো সব ঠিকই দেখছিলাম!

আমার ভ্রান্ত ধারণা আসলে মিথ্যা ছিলো।

খালা আর আব্বু যখন মার্কেট থেকে বের হয়েছিলো,তখন রিমা খালার ভাই আর ভাবীও বের হয়েছিলো তাদের বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে।
খালা কোনোরকমে মুখ ঢাকা দিয়ে বের হচ্ছিলো কিন্তু শেষ নিস্তার আর হলো না।
খালার ভাই তাকে জোর করে ডেকে নিয়ে গেলো।
আব্বু করমর্দনের জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলো, সে করমর্দন করা তো দূর, আব্বুর দিকে ফিরেও তাকায়নি।
আব্বু এক পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো বিব্রতভাবে।
পরে হাঁটতে হাঁটতে কিছুটা দূরেই চলে গেছিলো।
আব্বুও এই লোকটাকে যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করে।

খালাকে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে কি কি যেন বললো সে, সেসব তো আর আব্বু শোনেনি।
তাই জানে ও না।
ওদিকে খালার উপর দিয়ে বয়ে গেছিলো এক তুমুল ঝড়। সবার সামনে তাকে পা পর্যন্ত ধরতে হয়েছিলো তবুও তার ভাই তার কোনো কথাই শুনলো না।

(চলবে)

ফারজানা রহমান তৃনা।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here