#রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার,২পর্ব
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
জেরিন বুঝতে পারে সে খুশিতে আত্মহারা হয়ে রাসেল কে জড়িয়ে ধরেছে,
তাই লজ্জা পেয়ে দৌড়ে রুমে চলে যায়।
রুমে গিয়ে মনে মনে ভাবে,,
জেরিন:-ছি জেরিন ছি,
তুই যাকে মন থেকে স্বামী হিসেবে মানতে পারস না,তাকে জড়িয়ে ধরলি,
কি করে পারলি এটা করতে।
এইদিকে রাসেল তো সেই খুশি কেননা,
ইচ্ছে কৃত ভাবে না হলেও জেরিন তাকে তো জড়িয়ে ধরেছে এটাই তার কাছে অনেক,,
রাসেল ধিরে ধিরে রুমে যায়,
রাসেল:-জেরিন আমি তো মাত্র কাজ থেকে আসলাম, সকাল থেকে কিছুই খাইনি,
খুবই কষ্ট হচ্ছে, এখন ভাত রান্না করার শক্তি টুকু ও নেই, তাই বলি কি তুমি যদি একটু ভাত রান্না করতে,
জেরিন:-শোনো তোমার বাড়িতে আমি কাজ করার জন্য কাজের মেয়ে হয়ে আসিনি,
যে আমি রান্না করবো,
জেরিনের কথা শুনে রাসেলের অনেক কষ্ট হয়,
কিছুই বলতে পারেনা কারণ জেরিনের বাবা যে আশা করে জেরিন কে ওর হাতে তুলে দিছে,
রাসেল:-দেখো আমি তো প্রতিদিন রান্না করি,
তোমাকে বলিনা, আজকে আমার খুবই কষ্ট হচ্ছে, তাই তোমাকে বলছি,আর তুমি আমার ঘরের বউ,
তাহলে কাজ করলে কাজের মেয়ে হয়ে যাবে।
জেরিন:-এতো কিছু আমি জানিনা,
আমি কোনো কাজ করতে পারবো না, এটা আমার শেষ কথা,
বলেই বিছানায় শুয়ে পরে অন্য দিকে মুখ করে,
কি মেয়ে দেখেছেন স্বামীর ঘরে কাজ করলে নাকি কাজে মেয়ে হয়ে যাবে, বেছারা রাসেল আর কি করবে, অমনি কষ্ট করে ভাত রান্না করে,
তখনই বাইরে থেকে কেউ ডাকে,
শাওন:-এই রাসেল কোথায় তুই,
বাড়িতে আছিস নাকি,
রাসেল:-হ্যা শাওন আমি রান্না করতেছি,
তুই ভিতরে আই,
শাওন রাসেলের কথা শুনে বাড়ির ভিতরে চলে আসে,
এসে দেখে যে রাসেল সত্যি ভাত রান্না করতিছে,
শাওন:-ভাই দেখ আমি প্রতিদিন দেখি তুই রান্না করিস, কেনোরে ভাবি কি রান্না টাও করতে পারেনা, ঘরে তো বউ আমাদের ও আছে,
তো আমি তো রান্না করিনা,
রাসেল:-শাওন আস্তে বল জেরিন শুনে কষ্ট পাবে,
আর জানসি তো সামনে ওর পরীক্ষা তাই আমি কোনো কাজ করতেই দেইনা,
শাওন:-শোন আমাকে বুঝাতে আসিস না,
আমি কোনো দুধের শিশু না যে আমি এইসব বুঝবো না,
রাসেল:-আচ্ছা এইসব কথা বাদ দিয়ে যে জন্য এসেসিছ সেই টা আগে বল,
শাওন:-ওহ হ্যা,আসল কথা তো বলাই হয়নি,
একটা ওয়ারিং এর কাজ করতে যেতে হবে, আমি আর তানভীর ঠিক করেছি, তুই ছাড়া তো আর কাজ হবেনা, হাজার হলেও ওস্তাদ বলে কথা,
রাসেল:-যা শালা আমি আবার ওস্তাদ হলাম কবে থেকে হুম, আচ্ছা দুই যা আমি রান্না শেষ করে,
ভাত খেয়ে আসি সেই সকাল থেকে কিছু খাইনি,
শাওন:-ভাই তোর খাইতেও হবেনা,
একদিন দেখবি না খেয়ে থেকে মরে পরে থাকবি,
আর এখন খেয়েই কি করবি তারছে বরং মাগরিবের আযান হলেই খাইস রোযা ও হয়ে যাবে,
শালা তুই মানুষ সকাল থেকে কিছু খাসনি,
রাসেল:-ভাই চুপ করে যাতো,ভালো লাগছে না কিন্তু এইসব আমার,আমি আসতাছি খেয়ে দেয়ে,
তুই তানভীর কে নিয়ে ব্রিজের কাছে দাঁড়িয়ে থাক,
শাওন চলে যায় আর কিছু না বলে,
কারণ জানেই রাসেল কে কিছু বলেও কোনো লাভ নেই, কারো কথায় শুনবেনা,
তা না হলে বোকার মতো কেউ টাকা খরচ করে বউ কে পড়াশোনা করাই নাকি, যেই বউ তাকে দেখতেই পারেনা, রাসেল ভাত রান্না শেষ করে,
রুমে নিয়ে আসে,
রাসেল:-জেরিন উঠে খেয়ে নাও,
আমি আবার একটু কাজে যাবো, এই কাজ টা করে যদি কিছু টাকা পায় তাহলে তোমার জন্য একটা নতুন ড্রেস কিনতে পারবো,
রাসেলের কথার কোনো জবাব দেইনা জেরিন,
চুপটি করে শুয়ে আছে,
এইদিকে রাসেল খেয়ে কাজে চলে যায়,জেরিন কে কিছু না বলেই,
তানভীর:-দেখ শাওন আমাদের রান্নার বাবুর্চি আসতাছে, ওর এখন রান্না করা শেষ হলো,
শাওন:-ভাই আর বলিস না,
আমি এটাই বুঝিনা ঘরে বউ থাকতে ও কেনো রান্না করে,
রাসেল:-ঐ আমার সম্পর্কে গবেষণা শেষ হলে,
তারাতাড়ি চল কাজে যাওয়া যাক,
বেশি রাত হলে আবার কাজ করা সম্ভব হবেনা,
তানভীর:-হ ভাই ঘরে তো শুধু তোমার একাই বউ আছে আমাদের তো আর নেই, চিন্তা করিস না,
তোর কাজ না করা বউ কে কেউ নাবেনা,
শাওন:-হ কারো তো খাইয়া দায়া কাম নাই,
ওর বউকে নিয়ে বিপদে পরবে, রান্না করে খাওয়াতে খাওয়াতে,
এইদিকে রাসেল কিছু বলে না,
কি বা বলবে ওরা তো আর মিথ্যা কিছু বলছেনা,
আর সবাই এই কথাই বলে,তারপর ওরা কাজের জায়গায় চলে আসে,
রাসেল:-তানভীর এইখানে কাজ করতে হবে কয়টা রুম ,মনে হয় কাজটা বড়ই হবে,
তানভীর:-হুম কাজ টা বড়ই,মোট ছয়টা রুমেই
সম্পূর্ণ নতুন ভাবে ওয়ারিং করতে হবে,
সব মালছামানা আগেই এনে রেখেছে,
রাসেল:-ও আচ্ছা,
তাহলে চেয়ে চেয়ে না দেখে কাজ করতে লেগে করো, আর সিরাজ হালাই কৈ,
শাওন:-ঐ হালার তো কাজ একটাই কাজ করে এসেই তাছলিমার সাথে টাঙি মারা,
সেটাই করতে গেছে,
রাসেল:-আচ্ছা ওদের প্রেম তো অনেক দিনের তাহলে ওর বাবা মা বিয়ে কেনো করাচ্ছে না,
সেটাই আমি বুঝিনা,
তারপর ওরা কাজ করা শুরু করে দেই,
কাজ শেষ করতে করতে অনেক রাত হয়ে যায়,
ঐ দিকে জেরিন একা একা বাড়িতে,
ভয় ও করতেছে,কেননা রাসেল এর আগে কখনো রাত করে বাইরে থাকেনি,
জেরিন:-রাগ করে আবার বাইরে থাকলো নাকি,
অনেক তো রাত হয়ে গেলো,
এখনো আসার কোনো নাম গন্ধই নেই,
এইদিকে রাসেল কাজ শেষ করে বাড়ির দিকে রওনা দেয়, তিন বন্ধু কথা বলছে আর হাটছে,
রাসেল:-আজকে অনেক রাত হয়ে গেলো,
জেরিন মনে হয় ভয় পাচ্ছে,আমার জন্য মনে হয় চিন্তা করতেছে,
শাওন:-হ ভাই ভাবি করবে তোমার জন্য চিন্তা,
আর দুনিয়ায় কোনো মানুষ পাইলা না,
তানভীর:-শাওন তুই তো আসলেই পাগল,
তুই যে বলসিস, ভাবি রাসেলের জন্য চিন্তা করবেনা, কেন করবেনা,
রাসেলের যদি কিছু হয়ে যায় সে টাকা কোথায় পাবে, তাই চিন্তা অবশ্যই করবে,
শাওন:-এই কথাটা অবশ্যই ফেলে দেওয়ার মতো বলস নাই, আর এটাই হবে,
রাসেল:-এই তোরা কি শুরু করেছিস হুম,
একটু চুপ থাকতে পারিস না,
এমনিতেই জেরিন কি করছে সেটা ভেবে আমি কুল কিনারা পাচ্ছি না,
তানভীর:-ভাই তোর আর কুল কিনারা পাওয়া লাগবেনা,
তোর বাড়ি এসে গেছে তুই দৌড়ে চলে যা,
তারপর রাসেল বাড়ির দিকে চলে যায়,
এইদিকে শাওন তানভীর কে বলতাছে,
শাওন:-রাসেল যে ভাবির জন্য এতো কিছু করতেছে, সে কি এইসব মনে রাখবে,
নাকি রাসেল কে ফাকি দিবে,
তানভীর:-আমার মনে হয় না রাসেল,
কে সে মনে রাখবে, দেখিস রাসেলের কপালে অনেক কষ্ট আছে,
এইদিকে রাসেল বাড়ির বাইরে এসে দেখে জেরিন,
দরজার সামনে বাইরের দিকে চেয়ে দাঁড়িয়ে আছে,
ওকে দেখে যেনো প্রাণ ফিরে এলো,
রাসেল:-জেরিন তুমি কি ভয় পেয়েছো নাকি,
আর খাবার খেয়ে শুয়ে না পরে এইভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেনো,
জেরিন:-তুই এতো রাত পযর্ন্ত কোথায় ছিলে,
কখনো তো এতো রাত করে বাইরে থাকোনি,
জানো আমার অনেক ভয় করছিলো একা একা,
রাসেল ভাবছিলো, জেরিন বলবে যে ওর জন্য চিন্তা হচ্ছিলো তা না ভয় করতেছিলো,
রাসেল:-আমি একটা কাজ করলাম তাই আজকে দেরি হয়ে গেছে,
আর ভয় পেতে হবেনা, খাবার খেয়েছো,
জেরিন:-হুম খেয়েছি,
ভাত খুব ঠান্ডা হয়ে গেছে,
রাসেল:-আরে মতো মানুষের জন্য ঠান্ডা ভাত ছাড়া কপালে কি আর গরম ভাত জুটবে নাকি,
জেরিন:-তোমার আসার দেরি হচ্ছে দেখে,আমি ভাত গরম করে কোম্বল দিয়ে ডেখে রেখেছি,
যেনো ঠান্ডা না হয়,
রাসেল:-ওহহহ আচ্ছা ভালো করেছো,
এখন তাহলে শুয়ে পরো রাত তো অনেক হয়েছে,
আমি খাবার খেয়ে নিচ্ছি,
জেরিন:-আমি তো তোমাকে খাবার বেরে দিতে চাই কিন্তু আমার যে তোমাকে সহ্য হয় না, কারণ তোমার মতো গরিব কে আমার জীবনে ভাবতে পারিনা,মনে মনে
এইদিকে জেরিন গিয়ে শুয়ে পরে আর রাসল খাবার খেয়ে এসে নিছে বিছানা করে শুয়ে পরে,
আজকে খুবই ঠান্ডা পরেছে,
রাসেলের অনেক শিত লাগতেছে,
যেইটা জেরিন রাতে বুঝতে পেরে তার কম্বল টা রাসেল কে গায়ে দিয়ে রাসেলের টা জেরিন নেয়,
জেরিন:-যে আমার ভালোর জন্য এতো কিছু করতে পারে তার জন্য আমি এইটুকু করতে পারবো না এটা কি করে হয়,
এইসব ভাবতে ভাবতেই জেরিন ঘুমিয়ে পরে,
এইদিকে ফযরের আযানের মিষ্টি শুরে রাসেলের ঘুম ভেঙ্গে যায়,আর ঘুম থেকে জেগেই যা দেখতে পায়, সেটা দেখে তো রাসেল একটু না প্রায় একহাজার ভোল্টের সক খাই,
কেননা জেরিনের কম্বল যে ওর গায়ে জরানো,
ভাবে রাতে জেরিন হয়তো দেয়েছে,
রাসেল:-এই জেরিন, জেরিন শুনতে পারছো,
ফযরের আযান পরেছে, উঠে নামাজ পড়ো,
জেরিন উঠে পরে,
কেননা রাসেল কে সে যতই অপছন্দ করুক না কেনো, এই একটা কাজের জন্য রাসেল কে জেরিন খুব পছন্দ করে,
তারপর রাসেল উঠে মসজিদে চলে যায় আর জেরিন বাড়িতে নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে যায়,
রাসেল নামাজ পড়ে বাড়ির দিকে আসতেছে তখনই সামনে দেখতে পায়,,,,,,,,
চলবে……..