#রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার,১৭পর্ব,১৮
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
১৭পর্ব
জেরিন:-যানো কি, যদি কোনো ফুলের গাছ কে সঠিক ভাবে পরিচর্যা না করা হয়। তাহলে সেই ফুলের গাছ টাও এক সময় বেচে থাকার ভারসাম্যটা হারিয়ে ফেলে।একদিন হয়তো আমি ও ফুল গাছটার মতো বিলীন হয়ে যাবো এই মিথ্যা মায়ার পৃথিবী থেকে, সেদিন হয় তো খুজবে আমাই কিন্তু পাবেনা, তাই বলিকি সময় থাকতে আপন জিনিস কে আপন করে নাও, না হয় এই গানটাই গাইবে,
মইরা গেলে খুজলাম ঠিকি,
বাইচা থাকতে বুজলাম না।
হাতের ধন ঠেললাম পায়ে,
আপন মানুষ চিনলাম না।
রাসেল:-শোন একটা কথা বলি,তুষের আগুনের কি ক্ষমতা সেটা কিন্তু কাঠ পুড়িয়ে বোঝা যায় না,কিন্তুএটা বোঝা যায় আগুন একই জিনিস আলাদা না,তেমনি সব মানুষই এক কিন্তু ধনী গরিব নামক বেড়া টাই মানুষ কে আলাদা রঙ দিয়েছে,যেটা আমি বুঝেছি,আজ আমি গরিব অশিক্ষিত বলে তোর মতো শিক্ষিত বউয়ের কাছে স্বামী হিসাবে স্থান পায়নি,ভেবেছিস আমাকে স্বামী বলে লোকের কাছে পরিচয় দিলে তোর সম্মানহানি হবে,লোকে তোর রুচিতে থু থু দিবে,তাহলে এখন এই রাখাল কেই কেন আপন করে নিতে চাচ্ছিস,আমার থেকে অনেক ভালো মনের মানুষ পাবি তুই,যে তোকে অনেক সুখে রাখবে,আমার মতো না খাইয়ে রাখবে না,তুই বরং এই সন্তান টা নষ্,,
রাসেল আর বাকি কথাটা বলতে পারলো না, কারণ তার আগেই ঠাসসসস করে রাসেলের গালে একটা থাপ্পড় পরে।আরে আপনেরা কি ভাবছেন জেরিন থাপ্পড় টা মেরেছে,আরে না আপনাদের ধারনাটাই ভুল। থাপ্পড় টা মেরেছে রহিমা চৌধুরী,
আসলে রহিমা চৌধুরী কোনো একটা কাজের জন্য রাসেলের কাছে আসে যেটা রাসেল কে না জানিয়ে।
রহিমা:-ছি রাসেল ছি তুই এই জঘন্য কাজ টা করতে বলছিস তোর বেবেকে একটি বারের জন্য বাধলো না,আমার ছেলে তুই সেটা ভাবতেও আমার এখন ঘৃণা করতেছে,একটা মেয়ে না বুঝে ভুল করেছে,তার জন্য একবার না হাজার বার তোর থেকে ক্ষমা চেয়েছে,আর তুই তাকেই বলছিস আমার বংশের প্রদিব কে নষ্ট করতে।
রাসেল:-মা তুমি কখন আসলে,
আর আমি এমনটা বলতে চাইনি মা,তুমি বিশ্বাস করো।
রহিমা:-তুই নিজের কান কে অবিশ্বাস করতে বলছিস হুম,আমি সেদিন শুনতে পেয়েছিলাম তুই জেরিন কে ফ্লোরে ঘুমাতে বলছিস আমি কিছু বলিনি,কারণ ভেবেছি মজা করছিস। কিন্তু আজকে তো সত্যটা নিজের চোখেই দেখলাম,
তুই জেরিন কে নিজের স্ত্রী মানতেই পারিস নি,
বউমা চলো আজ থেকে তুমি আমার সাথে থাকবে।
জেরিন:-মা আপনে এটা বৈলেন না,কারণ আমি আপনার ছেলেকে ছাড়া কোথাও থাকতে পারবো না আমাকে মাপ করে দিবেন,আমি বাঁচলেও আপনার ছেলের বুকে মাথা রেখে বাঁচবো আর মরলেও আপনার ছেলের কোলে মাথা রেখেই মরবো কেদেঁ কেদেঁ।
রহিমা:-শুনেছিস একটা মেয়ে কতোটা ভালোবাসলে এইরকম কথা বলে।তার পর ও কি তুই চুপ করে থাকবি,ওকে কষ্ট দিয়ে তুই কি শান্তি পাস,আমি জানি তুই ওর থেকে বেশি কষ্ট পাস,
তাহলে এমনটা কেনো করতেছি,সব ভুলেকি বউমাকে আপন করে নিতে পারিস না।
রাসেল:-মা তুমি জানো আমি ওকে আমার জীবনের থেকেও বেশি ভালোবাসি কিন্তু ওর স্বামী হওয়ার যোগ্যতা যে আমার নেই,ওর সাথে কোথাও যেতে হলে তো আমাকে শিক্ষিত হতে হবে কিন্তু আমি তো মূর্খ রাখাল,ওর কি মানসম্মান থাকবে আমাকে স্বামী বলে সবার সামনে পরিচয় দিলে।
রহিমা:-দেখ বাবা এইসব হয়তো তোকে ও আবেকের বসে বলেছে,ও তখন বুঝতে পারেনি,ওর জিবনে তুই কতো গুরুত্বপূর্ণ।
জেরিন:-আমাকে ক্ষমা করে দাও প্লিজ,
আমি ভুল করেছি যার জন্য আমি বুঝতে পেরেছি তুমি আমার জিবনে কতোটা জুড়ে আছো।
রাসেল কি বলবে ভেবে পাইনা রাসেল ও যে জেরিন কে অনেক ভালোবাসে,মুখে না বললেও জেরিনের কষ্টে রাসেলের ভিতর টা ও তুষের আগুনে পোরে।
রহিমা:-বাবা তুই আগে সব ভুলে বউমা কে আপন করে নে,ওকে একন কষ্ট দিসনা তাহলে তোর সন্তানের ক্ষতি হবে,আর মানুষ মাত্রই তো ভুল করে,কারণ যে ভুল করেনা সে কিছুই শিখতে পারেনা।
রাসেল:-মা তুমি আগে বসো তো,আর কি দরকার সেটা আগে বলো,আমি জেরিন কে ক্ষমা করে দিছি অনেক আগেই কিন্তু অভিমান গুলো এইবুকের এক কোণে জমেছিলো।
রাসেলের কথা টা বলতে দেরি কিন্তু জেরিন দৌড়ে এসে রাসেল কে কপালে চুমু দিয়ে জড়িয়ে ধরতে দেরি না।
রাসেল:-দেখছেন কি বজ্জাত মেয়েরে বাবা শাশুড়ির সামনেই জড়িয়ে ধরে চুমু খাই লজ্জা সরমের কিছুই নেই।
রহিমা:-বউমা এখনে কেউ আছে আবেক টাকে একটু ধরে রাখো হাসতে হাসতে।
রহিমা চৌধুরীর কথায় জেরিন তো লজ্জায় লাল হয়ে যায়,সেটা দেখে রহিমা বেগম বলে।
রহিমা:-থাক বউমা আর লজ্জা পেতে হবেনা,
রাসেল চল তোদের এইখানে থাকতে হবেনা,
এখন বউমাকে দেখাশোনা করতে হবে,
আর একটা কথা কি আমি চাইনা জেরিন এই সময়ে পুলিশের চাকরি করুক,আমাদের কি কম আছে যে এই সময়ে ও জব করবে।
রাসেল:-মা সেটা ওর ইচ্ছা কারণ আমি বরাবরি জেরিনের ইচ্ছাটাকেই পাধান্য দিয়ে এসেছি,আজো সেটার বিপরীত করবো না।
রহিমা:-আচ্ছা তাহলে ঠিক আছে এখন চল আমরা বাসাই যায় কালকে গাড়ি নিয়ে এসে মাল ছামানা নিয়ে গেলেই হবে।
রাসেল আর কিছু বলেনা,
জেরিন কে নিয়ে রহিমা চৌধুরী বাড়ির উদ্দেশ্য রওনা হয় নিজেদের গাড়ি নিয়ে।কিছু সময় পরে বাসাই পৌঁছে যায়।
রায়হান:-তোমরা এসেছো এতো দেরি হলো কেনো,
আমরা সেই কখন থেকে অপেক্ষা করতেছি কিন্তু তোমাদের কোনো খবরই নেই।
রহিমা:-আর বলিও না তোমার ছেলে হয়েছে পুরো তোমার মতো এটা কাজও তাড়াতাড়ি করতে পারেনে,আমাকে আর বউমা কে বসিয়ে রেখে রেডি হতে কতো সময় লাগিয়ে দিলো,তির জন্যই তো আসতে একটু দেরি হলো।
রায়হান:-ওহহহ আচ্ছা সেটাই বলো।
জেরিন গিয়ে রাসেলের বাবার পায়ে ধরে সালাম করে।যা দেখে রাসেল অনেক টাই খুসি হয়,
কারণ জেরিন ওর বাবা মাকে সম্মান করতেছে এটাই ওর কাছে অনেক।
রায়হান:-বেচে থাক মা বেচে থাক,
তোর স্থান তো পায়ে না আমার বুকে,জানিস মা তোকে পেয়ে আমি আমার মায়ের কথা ভুলে যায়,আল্লাহ মনে হয় আমার বউমা করে মাকেই পাঠিয়েছে।
জেরিন:-ওহহহ তাহলে তো আজকে থেকে তুমি আমার ছেলে তাইনা বলো।
রায়হান:-হুম তুমি আমার মা আর রাসেল আমার বাবা এটা বলার কি আছে,রাসেলের পাঠক পাঠিকারা এটা এমনিতেই বুঝে যাবে,কারণ ওদে বুদ্ধি সব সময় কানের উপরেই থাকে নিচে না।
রাসেল:-হাহাহ বাবা তুমি ডায়ালগ টা কিন্তু হেব্বি দিয়েছো,আচ্ছা এটা বলোতো বুদ্ধি কানের উপরে কিভাবে থাকে।
রহিমা:-এই তুই এটা জানোস না কানের উপরেএ তো মাথার অবস্থান আর বুদ্ধি যদি মাথাতেই থাকে তাহলে তো কানের উপরেই বুদ্ধি হলো তাইনা।
রাসেল :-হুম বুঝতে পারলাম এইকথাটা তো সে ভাবে দেখিনাই।তুমি কতো সুন্দর করে তোমার এই মূর্খ ছেলেকে বুঝিয়ে শিক্ষিত করে দিলে।
রহিমা:-হুম হয়ছে আর বলতে হবে না এখন বউমা কে নিয়ে রুমে যা রুমের সব কিছু ঘুছিয়ে রাখা আছে,আর বউমা আলমারিতে তোমার জন্য সকল প্রকার জিনিস আছে পরার জন্য তুমি পড়ে নিয়ো কেমন।
জেরিন:-হুম শাশুমা ঠিক আছে,
আর এইসবের কি খুব দরকার ছিলো বলেন।
রহিমা:-আমার একমাত্র ছেলের বউয়ের জন্য এইটুকু করবোনা এটা কেমন কথা বলো,
তখনই উপর থেকে সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে নিধি বলে ওঠে,
নিধি:-বড়আম্মু সবকিছু শুধু ভাবির জন্য আনলে আর আমার কথা তো তুমি একেবারেই ভুলে গেছো,একটুও আমার কথা মনে রাখনাই অভিমানী কণ্ঠে।
রহিমা:-তোকে কি ভুলতে পারি বল,
তোরাই তো আমার সব,কে আছে আর আমার তুই রাসেল আর জেরিন এই নিয়েই আমার সব।
তোর জন্য সব তোর আম্মুর কাছে আমি আগেই দিয়েছি,যেটা তুই বিয়ের সময় পাবি তার আগে না।
রাসেল:-মা তুমি এই পেত্নির জন্য আর যাই রাখোনা কেনো,সবার আগে মেকআপের বাক্সটা রেখেদিয়ো,নাহলে পেত্নি পেত্নিই থেকে যাবে।
রাসেলের কথা শুনে তো নিধি তেলে বেগুনে জ্বলে ওঠে,এযেনো তেলের মাঝে একফোঁটা পানি পরলে যেইরকম হয় ঠিক তেমনি।
নিধি:-বড়আম্মু তোমার ছেলেকে বলে দাও আমি মোটেও পেত্নি না আমি দেখতে যথেষ্ট সুন্দরী,
রাসেল:-হুম তুই সুন্দরী সেটা তোকে আবার কে বললো,আর যেই বলে থাকুক না কেনো সে মনে হয় চোখে শরিষা ফুল দেখে,তাইতো তোকে পেত্নি না বলে সুন্দরী বলেছে।
নিধি:-দেখ ভালো হচ্ছে না কিন্তু,তোর বউযে পেত্নি সেটা কি কখনো আয়নায় দেখেছিস হুম।
রাসেল:-দেখ আমার বউ যথেষ্ট সুন্দরী তোর মতো আটা ময়দা মাখা শাউরা গাছের পেত্নির মতো স্মার্ট সুন্দরী না।
জেরিন:-এই তুমি এসব কি শুরু করেছো হুম,
নিধি আপু তুমি কিছু মনে করোনি।ও তোমার সাথে মজা করতেছে।
নিধি:-ভাবি তুমি বলো আমি কি ময়দা মাখি,
বা আমি কি পেত্নির মতো দেখতে,তার তোমার ঐ রাখাল গেঁয়ো মূর্খ জামাই আমাকে এইসব বলবে,
মনডাই চাই, না থাক বললাম না।
জেরিন:-আরে তুমি তো দেখতে আমার থেকেও বেশি সুন্দরী,তোমার ভাইতো তোমার হাথে মজা করতেছে,তুমি খেপলে তাহলে সবাই আরো বেশি বেশি বলে তোমাকে খেপাবে।
রহিমা:-নিধি আর রাসেল তোদের যদি ঝগড়া করা শেষ হয়ে থাকে তাহলে যার যার রুমে চলে যা আমার কান এমনিতেই ঝালাফালা হয়ে গেছে।
নিধি:-বড়আম্মু আর একটু ঝগড়া করি নাহলে আবার আমার পেটের ভাত কিছুতেই হজম হবে না,
রহিমা:-তবেরে দারা তোর ঝগড়া করা আমি শিখিয়ে দেয়,বলেকি ওর নাকি ঝগড়া না করলে পেটের ভাত হজম হয়না।
কে শোনে কার কথা নিধি তো আম্মুর কথা শুনে একটা দৌড়ে উপরে চলে যায়,আসলে নিধি যথেষ্ট সুন্দরী,কিন্তু রাসেল পেত্নি বলে নিধিকে কিভাবে খ্যাপানো যায় সেই দিকে ফোকাস করে।
রহিমা:-রাসেল তোরা দুইজন কি একটুও ঝগড়া না করে থাকতে পারিস না,সারাখণ শুধু ঝগড়া আর ঝগড়া কি যে করি।
রাসেল:-আমি কি নিধির পিছনে লাগতে আসি নাকি বলো, ঐ তো আমার পিছনে এসে লাগে। এখন তুমি শুধু আমাকে একাই দোষারোপ করতেছো।
এভাবে আরো অনেক কথা বলে রাসেল আর জেরিন রুমের উদ্দেশ্যে সিড়ি দিয়ে ধিরে ধিরে উপরে আসতে থাকে।
জেরিন:-আচ্ছা তোমার কি নিধি আপুর সাথে ঝগড়া না করলে ভালো লাগেনা নাকি হুম,দেখলে আপু কতোটা রাগ করে চলে গেলো।
রাসেল:-কেনো যানি আমার না ওর সাথে মজা করতে ভালোই লাগে,আর ঐ তোর আমার সাথে আগে আগে ঝগড়া করে আমার কি দোষ।
জেরিন:-হয়ছে আর শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মিথ্যে চেষ্টা করতে হবেনা,এখন রুমে চলো তারাতারি ফ্রেস না হলে শাশুমা খবর করে ছাড়বে বুঝলে।
রাসেল:-হাহাহা আম্মু কে দেখে এতো ভয় পাচ্ছো,
পুলিশ ও যে কাউকে ভয় পায় আজকে প্রথম দেখলাম।
জেরিন:-ভয় পাবো কেনো বলো সে আমার শাশুড়ি আমার গুরুজন তার আদেশ পালন করা আমার নৈতিক দায়িত্ব সেটা কি তুমি ভুলে গেছো নাকি।
এইদিকে রাসেল আর জেরিন এটা শেটা নিয়ে কথা বলছে রুমে এসে আর ঐ দিকে রহিমা চৌধুরী আর রায়হান চৌধুরী ছোফায় বসে আনমনা হয়ে কিছু একটা ভাবছে যার গভীরতা কেউ বুঝতে পারছে না,কি ভাবছে তারা কি হতে পারে যে তারা এতোটাই চিন্তাই মগ্ন হয়ে পরেছে।
জেরিন:-ঐ তুমি আগে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে আসো,আমি পরে যায় তাইনা।
রাসেল:-না গো আমি একা যেতে পারিনা ওয়াশরুমে,আমাকে একটু নিয়ে যাওনা দয়াকরে।
জেরিন:-দেখো একদম বাজে মতলব মনের মধ্যে আনবেনা বলে দিলাম,সব সময় শুধু মনের মাঝে দুষ্টুমি কিলবিল কিলবিল করে তাইনা,ফাজিল একটা।
রাসেল:-এটা কি বাজে মতলব নাকি বলো,আমি তো শুধু তোমার একটু আদর পেতে বাহানা করতাছি,আর তুমি বলতেছো আমি মতলব করতেছি।
জেরিন:-আহারে আমার পাগল টারে রাগ করেছো বুঝি,ওর কপালে একটা চুমু দিলাম আর ও আমাকে টান দিয়ে আমার ঠোঁট দুটো নিজের দখলে নিয়ে নিলো,কিযে ভালো লাগতাছে যেটা আপনাদের বলে বুঝাতে পারবো না,ওর স্পর্শ পেয়ে আমার সারা শরীরে মনে কারেন্ট বয়ে যাচ্ছে,এক অদৃশ্য অনুভুতির সৃষ্টি হচ্ছে যেটা আমার মনকে নাড়া দিয়ে তুলতেছে।
রাসেল:-আমি ওর ঠোঁট জোড়া চুসতেই ব্যস্ত,খুব ভালো লাগছে আমার,মনে হচ্ছে এক যুগ পরে উপবাস ভাঙলাম,প্রায় দশ মিনিট পরে জেরিন কে ছেড়ে দিলাম,জেরিন হাপাতে হাপাতে বলল,,,,
চলবে……
#রাখালের_বউ_যখন_বিসিএস_ক্যাডার
লেখক:-রাসেল (কালো ভূত)
______১৮পর্ব______
?
?
জেরিন:আমাকে মেরে ফেলার প্লান তৈরি করতেছো নাকি হুম।আর একটু হলেই তো আমি গেছিলাম পটল তুলতে।
রাসেল:-হাহাহা এইটা কি বলছো হুম আমি থাকতে তুমি কি করে পটল তুলতে যাবে আমি ধরে রাখছিনা,আর কতো দিন পরে ঠোঁটের উপবাস ভাঙলাম এমন তো একটু হবেই বলো।
জেরিন:-তাই বলে পাক্কা দশ মিনিট আমার এই সুন্দর নরম কমল ঠোঁটের সাথে তুমি অত্যাচার করবে।এই বাচ্চা মেয়েটার উপর তোমার কি একটু মায়া নেই হুম।
রাসেল:-হাহাহা কি যে বলনা আমি অত্যাচার কেনো করবো হুম আমি তো শুধু দুষ্টুমি করবো।
আমার বউয়ের সাথে আমি যা খুসি সেটা করবো তাতে তোমার কি।
জেরিন:-ওরে বাবা তাই নাকি মনে মনে এতো ভাবনা,আচ্ছা তুমি তাহলে তার সাথে যা ইচ্ছা করো আমি বরং শাশুড়ি মার কাছে গেলাম কেমন।
রাসেল:-না সেটাতো হবেনা,
না কে শুনলো কার কথা,জেরিন ওয়াশরুমে চলে গেলো,পাঁচ মিনিট পরে ফ্রেস হয়ে বের হলো আর আমি নিচে এসে আম্মুর সাথে বসে গল্প করতে লাগলাম।
রহিমা:-রাসেল বউমা কি করতেছে।
রাসেল:-জেরিন রুমে আছে ফ্রেস হচ্ছে আমি তো সেটাই দেখে আসলাম।
তখনি সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে জেরিন বলে ওঠে,
জেরিন:-আমার নামে মায়ের কাছে কি এমন বলা হচ্ছে শুনি।
রাসেল:-এইতো মা দেখো বলতে না বলতেই তোমার বিসিএস বউ তোমার কাছে এসে হাজির।
রহিমা:-দেখতে হবেনা বউমাটা কার,
আমার প্রতি এক্সটা একটা মায়া আছেনা,
আর বউমা আমি তোরি কথা জিগ্গেস করতেছিলাম যে তুই কী করছিস।
জেরিন:-ওহহহ আচ্ছা তাই বলো আমি তো ফ্রেস হচ্ছিলাম,
রাসেল:-তা পুলিশ ম্যাডাম এইভাবে সেজেগুজে বের হলেন যে, বেপার তো বুঝলাম না।
জেরিন:-আর বলিওনা স্যার একটু আগে ফোন করে বললো, ঐ থানায় গিয়ে স্যারের সাথে কথা বলে একটা ফাইল নিয়ে আসতে।
রাসেল তো ঐ থানার নাম টা শুনেই অবাক হয়ে যায় আর অবাক হয়েই জিগ্গেস করে।
রাসেল:-কিহ ঐ থানায় কেনো আবার,
অনেক টাই অবাক হয়ে।
জেরিন:-আম্মু তোমার ছেলে কে আমার সাথে যেতে বলোনা,আমার একা একা যেতে একটুও ভালো লাগছে না।
রাসেল:-আমি যাবো না সবাই দেখে কি বলবে।
রহিমা:-তুই যাবি না তোর বাবা সহ যাবে বুঝলি আমার কথা।
রাসেল:-তাহলে জেরিনের সাথে আব্বু কে ফোন করে যেতে বলো,আমাকে কেনো বলছো।
রহিমা:-ফাজিল ছেলে,যা তুই জেরিনের সাথে,
নিজের বউকে সাথে নিয়ে যাবি এটা তো আনন্দের বিষয় তাইনা।
রাসেল:-আনন্দ না ছাই,যদি জানতে পারে ঐ থানার পুলিশ অফিসার আমি তাহলে আমার খবর আছে মনে মনে।মা সবার কথা ফেলতে পারলেও আমি তোমার কথা ফেলতে পারবো না,আমি রেডি হয়ে আচ্ছি।
জেরিন:-একটু তারাতাড়ি এসো আবার এক চুল সাতবার ঠিক করতে লেট করিওনা।
রাসেল:-হ আমি তো তোমার মতো ময়দা মাখমু যে আমার রেডি হতে দেরি হবে,সাজতে তোমাদের দেরি হয়,ছেলেদের না।
জেরিন:-কি আমি ময়দা মাখি তবেরে দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা।
জেরিন রাসেল কে ধরার জন্য তারা করে আর রাসেল গিয়ে ওর আম্মুর পিছে দাঁড়ায়,আর উপর থেকে নিধি বলে।
নিধি:-ভাবি তুমি ঐ বাদর টাকে এইভাবে একা একাই দৌড়ানী দিচ্ছো কেনো আমাকে একটু সাথে নিতে পারলে না হুম।
রহিমা:-এই নাও দুইটার সাথেই পারতাছি না আবার আরেক জন এসে যোগ দিলো,এই রাসেল তুই কিন্তু মাইর খাবি এখন,মেয়েদের মতো শুধু পরে পরে ঝগড়া করিস।
রাসেল:-হিহিহি দেখেছিস নিধিপেত্নি আম্মু বলছে মেয়েরাই শুধু আগে আগে পায়ে পারা দিয়ে ঝগড়া করে,এবার তো মানলি তুই পেত্নি সাথে ঝগড়াটি ও বটে।
নিধি:-এই তুই দারা তোকে আজকে আমি ভাবি মিলে ঝগড়া কি করে করতে হয় সেটাই শিখাবো।
রাসেল:-হাহাহা আমারে কি পাগলা কুকুরে তারা করছে যে এখানে থেকে মাইর খামু,জেরিন আমি চললাম তুমি আসো।
বলেই রাসেল একটা দৌড়ে বাড়ির বাইরে চলে আসে,একটু পরে নিধি ও জেরিন চলে আসে।
রাসেল:-নিধি তুইও কি আমাদের সাথে যাবি নাকি।
নিধি:-নারে ভাইয়া আমি এখন হাসপাতালে যাবো জরুরি একটা কাজ আছে নাহলে তোকে দেখাতাম।
রাসেল:-আরে যা যা ময়দা সুন্দরী, তোর অকাত আমার দেখা আছে।
নিধি কোনো কথা না বলেই গাড়ি টা নিয়ে চলে যায়,এখন জেরিন আর রাসেল দাঁড়িয়ে আছে,
ড্রাইভার গাড়ি বের করছে,রাসেল গাড়ি চালাতে পারে কিন্তু এখন গাড়ি চালালে জেরিন বুঝতে পারবে।
জেরিন:-আচ্ছা তোমার কি খেয়ে দেয়ে কোনো কাজ নেই সব সময় শুধু নিধি আপু কে রাগীয়ে দাও।
রাসেল:-ওর সাথে ফাজলো করতে আমার ভালোই লাগে আর নিধি রাগ করে না,ও অনেক সুন্দর মনের একটা মেয়ে।
জেরিন:-হুম ঠিক বলেছো আমি আগে যেমনটা ভাবতাম আসলে নিধি আপু তেমন মেয়ে না।
কিছু সময় পরে গাড়িতে উঠে জেরিন আর রাসেল থানার উদ্দেশ্যে চলতে শুরু করে,কথা বার্তার মাঝেই থানায় পৌঁছে যায়,রাসেল কে যারা চেনে তাদের রাসেল চোখ ইশারায় বুঝিয়ে দিচ্ছে সালাম না দিতে,আর কথাই আছে না,সামোছদার লোগোকো লিয়ে ইশারায় কাফি হে।কিন্তু এর মাঝেও অনেকেই সালাম করে,জেরিন ভাবে তাকেই সবাই সম্মান করতেছে।
জেরিন:-দেখেছো তোমার বিসিএস বউকে এই থানার সবাই কতোটা সম্মান করতেছে,আমার পাওয়ার একটু বোঝার চেষ্টা কইরো।
রাসেল:-হাহাহা কাকে সম্মান করছে যদি জানতি তাহলে আর এই কথা বলতি না মনে মনে,
হুম গো সবাই তোমাকে অনেক সম্মান করতেছে।
তারপর ওরা দুজনে ডিআইজি স্যারের রুমে যায়,
রাসেলের সম্পর্কে ডিআইজি তো আগে থেকেই জানে তাই আর কোনো কথা বলে না,
সোজা ফাইলটা দিয়ে দেয় জেরিনের হাতে আর রাসেল কে ইশারায় বুঝিয়ে দেয় পরে কথা বলবে।
জেরিন ওর স্যার কে সালাম দিয়ে থানা থেকে বেরিয়ে আসে।
জেরিন:-আচ্ছা ডিআইজি স্যার আমার সাথে কোনো কথা বলল না কেনো,আর ইশারায় তোমাকে যেনো কি বলছিলো,তোমাকে কি স্যার চেনে নাকি।
রাসেল:-দেখো স্যার হয়তো বুঝেছে তুমি সবটা নিজেই পারবে আর স্যারের হাতেও মনে হয় সময় নেই,আর আমাকে চিনবে কিভাবে আমি তো আজকেই তার সামনে তোমার সাথে প্রথম আসলাম।
জেরিন:-এটাও তো ঠিক তাহলে কি হতেপারে না আমি কিছুই ভাবতে পারতাছি না,আচ্ছা চলো বাসার দিকে যায়,
রাসেল:-ঐ চলোনা আজকে একটু কোথাও ঘুরে আসি,কিন্তু হ্যা আমার কাছে কিন্তু টাকা নাই সেটা আগেই বলে দিলাম।
জেরিন:-হিহিহি আমার বরটা যে কিপটা সেটা আমি ভালো করেই জানি,আচ্ছা চলো তোমার কাছে টাকা নাই তো কি হয়েছে,টাকা তো অনেক আছে আমার শশুরের বুঝেছো।সেটা দিয়েই হবে হাসতে হাসতে।
রাসেল:-ওহো আমার আমার বাবার টাকা খরচ করার ধান্দা তাইনা,বুঝি সব বুঝি।
জেরিন:-কি আর করার বলো বরের যদি টাকা না থাকে তাহলে শশুরের টাকাই তো চলতে হবে তাইনা।
রাসেল:-ম্যাডাম অনেক হয়েছে এখন চলেন সামের কোনো একটা সৌন্দর্যে ভরা জায়গায় যাওয়া যাক।
তারপর রাসেল আর জেরিন গাড়ি তে উঠে পাশের একটা পার্কে চলে আসে,ড্রাইভার কে রাসেল কিছু টাকা দিয়ে তার মতো ঘুতে বলে আর রাসেল আর জেরিন ভিতরে চলে যায়,পার্কের শেষ মাথায় একটা সুন্দর ফুলের বাগান আছে দেখলেই যেনো মনটা নিমিষেই ভালো হয়ে যায়।
জেরিন:-লাভ ইউ কলিজা এতো সুন্দর একটা দিন উপহার দেওয়ার জন্য।
রাসেল:-লাভ ইউ টু কলিজা,আর এই দিনটা আমি না বরং তুমি আমাকে উপহার দিয়েছো,
তার জন্য এতো এতো উম্মমমমমা
রাসেল জেরিনের কপালে একটা ভালোবাসার পরশ একে দেয়,খুব ভালো লাগতাছে দুজনের,
পাশের একটা ব্রেঞ্চে গিয়ে জেরিন বসে আর রাসেল ওর কোলে মাথা রেখে শুয়ে পরে,
আজ যেনো গাছের পাতাগুলো ওদের দুজন কে হিংসে করতেছে তাইতো বাতাসে দুলছে না,
এইভাবে অনেক টা সময় থাকে,
জেরিন:-এখন চলো বাসাই যায় অনেক সময় হলো এসেছি,আবার বাসাই আম্মু চিন্তা করবে।
রাসেল:-হুম চলো,
আসলেই এই দিনটা খুব মিস করবো,কখনো ভাবিনি তোমার কোলে মাথা রেখে এইভাবে খোলা আকাশর নিছে সময় কাটাবো,
জেরিন:-বিধাতার কি সুন্দর নিয়ম তাইনা যার সাথে যার জুরি রাখে যেই ভাবেই হোকনা কেনো দিন শেষে জুরিটার মিল ঠিকই হয়।
এইভাবে আরো কিছু সময় কথা বলে দুজনেই গাড়িতে চলে আসে,ড্রাইভার পাশেই ছিলো তাই আর কষ্ট করে খুজতে হলো না,গাড়িতে বাইরের হালকা বাতাসে জেরিনের খোলা চুল গুলো বার বার রাসেলের মুখে এসে পরছে,এক মাতাল করা শু গন্ধে রাসেলের মনটা ভরে উঠছে,জেরিন বার বার চুল গুলো কানের পাশে গুজে দিচ্ছে কিন্তু লম্বা চুল বার বার রাসেলের মুখেই এসে পরছে।
রাসেল:-তোমার ঐ লম্বা চুল গুলোও আমাকে ছাড়া থাকতে চাইনা তাহলে তাদের কেনো বাধা দিচ্ছো হুম।
জেরিন:-তোমার সাথে তো চুল গুলো দুষ্টুমি করতেছে,তোমার তো খারাপ লাগছে তাইনা।
রাসেল:-আমার তো অনেক ভালো লাগতাছে,
তোমার চুলে এক মাতাল করা গন্ধ যা তোমার দিকে আমাকে বার বার আকৃষ্ট করে তোলে।
জেরিন:-বারে আমি বরটাযে আজ কাল একটু বেশি রোমান্টিক হয়ে উঠছে দেখছি,
এইভাবে নানা রকম কথা বার্তার মধ্যে দিয়ে কিছু সময় অতিবাহিত করে বাসাই চলে আসে,বাসাই আসতেই দেখতে পাই রাসেলের বাবা মা ছোফায় বোসে কথা বলতেছে।
রাসেল:-বাবা তুমি কখন এসেছো,
আর মুখটা এতো মলিন কেনো,শরীরটা খারাপ নাকি।
রায়হান:-আরে না শরীর টা ভালোই আছে,আর একটু আগেই অফিস থেকে আসলাম,এসেই শুনি তোরা কোথায় গেছিস,তাই আর কি করা আমরা বুড়া বুড়ি মিলেই গল্প করতেছি হাসতে হাসতে।
জেরিন:-হাহাহা বাবা আর একাএকা গল্প করতে হবে না এখন আমরা চলে এসেছি।আচ্ছা আম্মু একটা কথা বলি।
রহিমা:-একটা কথা বলবি আর সেটার জন্য ও অনুমতির কি দরকার আছে হুম পাগলি মেয়ে একটা।
জেরিন:-আমরা তো কালকে এসেছি কিন্তু তখন থেকেই ছোট মা কে দেখছিনা,কোথায় গেছে।
রহিমা:- ওহ এই কথা,নিধির আম্মু তো নিধির নানু বাড়িতে গেছে কি একটা কাজ আছে।কয়েক দিন পরে চলে আসবে,আরে সেই জন্য তো তোদের আমি নিয়ে আসলাম,বাড়িটা ফাকা ফাকা লাগছিলো।
রায়হান:-তা বাবা তোরা এখন কোথায় গেছিলি শুনি।
রাসেল:-বাবা তোমার আদরের বউমা আমাকে সাথে নিয়ে থানায় গিয়েছিল,আর আমি ভাবলাম বাইরে যখন আসলামি তখন একটু ঘুরেই যাওয়া যাক,তাই একটু ঘুরে ও আসলাম।
রায়হান:-এটা কিন্তু খুব ভালো করেছিস,
মাঝে মাঝে বউমাকে নিয়ে কোথাও ঘুরে আসবি তাহলে,আমার মা টার মন ভালো থাকবে।আমিও তোর মাকে নিয়ে অনেক জায়গায় ঘুরতে যেতাম সময় পেলেই।
রহিমা:-এই লাক সরমের মাথা খেয়েছো,বউমার সাথে কি সব বলতেছো।
জেরিন:-দেখো আম্মু আমার ছেলেকে একদম বকা দিবেনা হুম এই আমি বলে দিলাম।
রহিমা:-বাবারে বাবা বুইড়া ছেলের জন্য এতো দরত।
জেরিন:-আমার ছেলে একটু বুইড়া হয়েছে তো কি হয়েছে,তার মনটা তো এখনো সেই কুড়ি বছরেরি আছে।
সবাই জেরিনের কথা শুনে হাসতে থাকে,
এইভাবে হাসি খুসির মধ্যে দিয়েই কেটে যায় একটি মাস।একদিন রাতে সবাই এক সাথে বসে খাবার খাচ্ছে তখনি মিস্টার রায়হান চৌধুরী বলে ওঠে।
রায়হান:-সবাই শোনো তোমাদের জন্য একটা খুশির খবর আছে,আর সেটা সবার জন্যই।
নিধি:-বড় আব্বু কি খবর সেটা তারাতাড়ি বলো, আমার কিন্তু আর কথাটা শোনার জন্য তর সইছে না।,,,,,,,,
চলবে…….