রাগী বর,১১,১২
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১১
.
ছোঁয়া ::: একি আপনার গায়ে তো অনেক জ্বর ।
জলপট্টি দিতে হবে এখনি ।
জ্বরের জন্য গায়ে হাত দেওয়াই যাচ্ছে না ।
.
ছোঁয়া এক দৌড়ে নিচে থেকে একটা বাটিতে করে পানি নিয়ে আসল ।
কিন্তু কিছুতেই একটা কাপড় খুঁজে পাচ্ছে না ।
তারপর কোন উপায় না পেয়ে শাড়ির আঁচল টা ছিড়ল ।
তারপর তাড়াতাড়ি করে উপরে চলে গেল ।
আর কনকের পাশে যেয়ে বসল ।
আর সারারাত কনকের মাথায় জলপট্টি দিতে লাগল ।
.
সকাল হয়ে গেছে ।
সারারাত জলপট্টি দেওয়ার পর কনকের জ্বর একটু কমেছে ।
কনক ছোঁয়ার হাতটা শক্ত করে ধরে রেখেছে ।
আমেনা একটু পরে দরজা ধাকাচ্ছে ।
আর বলছে ,,
.
আমেনা ::: কি হল বউমা এখনও নিচে আসছ না কেন?
কোন কিছু কি হয়েছে বউমা ।
দরজাটা খোল ।
.
ছোঁয়া দরজাটা খুলে দিল ।
আমেনা দেখে ছোঁয়ার চোখে পানি ।
ছোঁয়ার চোখে পানি দেখে আমেনা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
আমেনা ::: কি হয়েছে বউমা ।
তুমি কান্না করছ কেন?
.
ছোঁয়া আমেনাকে সব খুলে বলল ।
তারপর কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: তখন আমি বুঝতে পারছিলাম না আমি কি করব ।
আপনাদেরকে যে ডাকব সেই শক্তিও পাচ্ছিলাম না ।
তবুও অনেক কষ্টে নিজেকে সামলিয়ে সারারাত জলপট্টি দিতে লাগলাম ।
.
আমেনা ::: শান্ত হও বউমা ।
রিলেক্স ।
এখন কি কিছুটা জ্বর কমেছে কিনা ।
.
ছোঁয়া ::: হুম কমেছে ।
.
আমেনা নিচে যেয়ে খাবার নিয়ে আসল ।
আর ছোঁয়াকে বলে দিল খাবারটা খাইয়ে দিয়ে ওষুধটা খাইয়ে দিতে ।
কনক কিছুতেই এই জ্বরওলা মুখ নিয়ে কোন কিছুই খেতে চাচ্ছে না ।
কিন্তু অনেক কষ্টে ছোঁয়া কনককে বুঝিয়ে খাইয়ে দিচ্ছে ।
একটু খানি খাওয়ার পর কিছুতেই কনক আর খেতে পারছে না কনকের বারবার বমি আসছে ।
কনকের কষ্ট হচ্ছে দেখে ছোঁয়াও আর কোন জোর করল না ।
ছোঁয়া কনককে ওষুধটা খাইয়ে দিল ।
.
অনন্যা কিছুখন পর এই ঘরে আসল ।
তারপর কনকের জ্বরটা মেপে দিয়ে গেল ।
দেখে স্বাভাবিকই আছে ।
কনক এখন কিছুটা সুস্থ ।
.
কনক এখন কিছুটা সুস্থ দেখে কনক বিছানা উঠতে যাচ্ছিল ঠিক তখন ছোঁয়া কনককে আটকে দিয়ে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: আপনি এখন যাচ্ছেন টা কোথায়?
.
কনক ::: কেন অফিসে যাচ্ছি ।
.
ছোঁয়া ::: না আপনি কোথাও যাবেন না ।
.
কনক ::: কেন যাব না ।
এখন তো আমি কিছুটা সুস্থ ।
.
ছোঁয়া ::: কিন্তু আপনি এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেননি ।
আজকে আপনি আমার চোখে চোখে থাকবেন ।
আজকে আমি আপনাকে কোথাও যেতে দিব না ।
বুঝতে পেরেছেন ।
.
কনক ::: হুম বুঝতে পেরেছি ।
ঠিক আছে আজকে যাব না ।
কিন্তু তোমার শাড়ির আঁচল ,,,
.
ছোঁয়া ::: কালকে রাতে আপনার মাথায় জলপট্টি দেওয়ার জন্যই তো ছিড়েছি ।
.
কনক ::: কিন্তু এই শাড়িটা তো তোমার অনেক প্রিয় ।
.
ছোঁয়া ::: এই প্রিয় শাড়ির থেকে আপনি আমার কাছে অনেক কিছু ।
.
রাত হয়ে গেছে ।
ছোঁয়া কনকের পাশে বসে রয়েছে ।
একটু পরে ছোঁয়ার ফোনটা বেজে উঠল ।
সাদিকা ফোন করেছে ।
ছোঁয়া কলটা রিসিভ করল ।
কল রিসিভ করার সাথে সাথেই ওই পাশ থেকে সাদিকা বলে উঠল ,,,
.
সাদিকা ::: দোস্ত আমাদের ইয়ার চেন্জ পরীক্ষা শুরু হবে ।
.
ছোঁয়া ::: কবে থেকে ।
.
সাদিকা ::: তেইশ তারিখ থেকে ।
.
ছোঁয়া ::: ও ,,,
.
ছোঁয়া একদম মন খারাপ করে বসে পড়ল ।
কনক সেটা খেয়াল করল ।
তাই কনক ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করল ,,,,
.
কনক ::: কি হয়েছে মন খারাপ করে বসে রয়েছ কেন?
.
ছোঁয়া ::: এক সপ্তাহ পরে ইয়ার চেন্জ পরীক্ষা ।
আমি তো কিছুই পারি না ।
কালকে কলেজেই যেয়েই কত কাজ করতে হবে আমাকে ।
পরীক্ষার রুটিন নিতে হবে এই কয়েকদিন কি কি পড়িয়েছে তা নিতে হবে আর স্যাররা কি সিলেবাস দিয়েছে তা নিতে হবে ।
কত জ্বালা আমার ।
.
কনক ::: রিলেক্স ।
তুমি এইদিকে এসে বস ।
এখন আর রাত জাগতে হবে না তোমাকে ।
তুমি এখন ঘুমিয়ে পড় ।
আর এমনিতে কালকে সারারাত তুমি ঘুমাওনি ।
লাইটটা অফ করে দিয়ে তুমি শুয়ে পড় ।
.
ছোঁয়া ::: হুম ।
.
ছোঁয়া লাইটটা অফ করে দিয়ে কনকের পাশে যেয়ে শুয়ে পড়ল ।
সকাল সকালই ছোঁয়ার ঘুমটা ভাঙ্গল ।
তাড়াতাড়ি করে রেডি হয়ে নিল ।
আর ব্যাগটা গুছিয়ে নিল তারপর কনককে ডাক দিল ।
আর বলতে লাগল ,,,
.
ছোঁয়া ::: এই যে সকাল হয়ে গেছে তো ।
আপনি কি উঠবেন না আজকে ঘুম থেকে ।
.
কনক হালকা করে চোখটা খুলল ।
তারপর ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের বুকের কাছে নিয়ে আসল ।
ছোঁয়ার নিজেকে ছুটানোর চেষ্টা করছে আর বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: ছাড়ুন আমাকে ।
কালকে তো অফিসে যাওয়ার জন্য পাগল হয়ে গেছিলেন আর আজকে কি অফিসে যাবেন না ।
আর আমাকে ছাড়ুন আমাকে এখন কলেজে যেতে হবে ।
.
কনক ::: না আজকে আমি অফিসে যাব না আর তোমাকেও কলেজে যেতে দিব না ।
.
ছোঁয়া ::: কেন ?
.
কনক ::: যতখন না পর্যন্ত তুমি আমাকে কিস দিচ্ছ আমি তোমাকে যেতে দিব না ।
আর আজকে কলেজে না গেলে তুমি পরীক্ষায় ফেল করবে ।
ভালোই ভালোই বলছি তোমাকে আমায় একটা কিস দিয়ে দাও ।
.
ছোঁয়া ::: আপনি আমাকে ব্ল্যাকমেইল করছেন ।
.
কনক ::: তুমি দিবে না নাকি ।
তাহলে কিন্তু আমি তোমাকে ছাড়ছি না ।
.
ছোঁয়া ::: ঠিক আছে আমি দিচ্ছি ।
.
ছোঁয়া বাধ্য হয়েই কনককে একটা কিস দিল ।
কনকও উঠে রেডি হয়ে নিল ।
ব্রেকফাস্ট করে নিয়ে দুইজনেই বের হয়ে গেল ।
কনক ছোঁয়াকে কলেজের সামনে নামিয়ে দিল ।
ছোঁয়া যখন গাড়ি থেকে নামতে যাবে ঠিক তখন কনক ছোঁয়ার হাতটা টেনে ধরল ।
আর ছোঁয়াকে বলতে লাগল ,,,,
.
কনক ::: আজকে সব কিছু নিতে ভুল না ।
.
ছোঁয়া ::: হুম ।
আমি যাই কলেজের টাইম শুরু হয়ে যাচ্ছে ।
.
কনক ::: হুম যাও ।
.
ছোঁয়া কলেজের ভিতর ঢুকল ।
ক্লাসে যেতে না যেতেই সব কিছু নিয়ে নিল ।
অনেক দিন পর ফ্রেন্ডসদের সাথে দেখা হয়েছে তাই একটু গল্প করছে ওরা ।
সবাই ওকে বলছে ,,,
.
—- সেইদিন তো দেখলাম তোর হাজবেন্ডকে সো হ্যান্ডসহাম ইয়ার ।
.
ছোঁয়া ::: ওই একদম নজর দিবি না আমার হাজবেন্ডের উপর তোরা ।
.
—- ঠিক আছে ।
.
কনকও ওর অফিসে চলে গেছে ।
কনক অফিসের কাজ করছে ।
একটু পরে কনকের কাছে একটা পার্সেল আসল ।
কনক পার্সেলটা নিল ।
আর কনক বলছে ,,,
.
কনক ::: আমি তো কোন কিছুই তো ,,,,
তাহলে এইটা কে পাঠাল ।
.
কনক পার্সেলটা খুলল ।
সেইটার ভিতর কিছু ছবি দেখতে পেল ।
কনক ছবিগুলো দেখল ।
কনক ছবিগুলো দেখার পর অনেক রেগে গেছে ।
ছবিগুলো নিজের পকেটের ভিতর ঢুকাল ।
প্রচুর রাগ উঠেছে কনকের ।
.
.
.
.
চলবে ।
রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১২
.
কনক অনেক রেগে রয়েছে ।
এমনিতে তো কনকের রাগ বেশি থাকে তার মধ্যে কনকের রাগ আজকে দ্বিগুন বেশি ।
রাগ করে কনক অফিসের বাইরে চলে আসল ।
সরাসরি গাড়িতে যেয়ে বসল ।
.
আর ওইদিকে আজকে ছোঁয়ার কলেজ আগেই ছুটি দিয়ে দিয়েছে ।
আর ছোঁয়া কলেজের বাইরে কনকের জন্য অপেক্ষা করছে ।
কনক একটু পর ওর গাড়ি নিয়ে এসে ছোঁয়ার সামনে এসে দাঁড়ালো ।
.
ছোঁয়া অপেক্ষা করছে কখন কনক গাড়ি থেকে নেমে ওকে ভালোবেসে গাড়িতে উঠাবে ।
কিন্তু কনক গাড়ি থেকেই নামছে না শুধু এক দৃষ্টিতে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে ।
ছোঁয়া কনকের এই ব্যবহার দেখে অনেক কষ্ট পেল ।
আর কোন কথা না ভেবে ছোঁয়া নিজেই গাড়িতে যেয়ে বসল ।
.
ছোঁয়া কিছুতেই গাড়ির সিট বেল্ট টা লাগাতে পারছে না ।
সেই কখন থেকে চেষ্টা করেই যাচ্ছে ।
একটু পরে কনক ছোঁয়ার হাতটা সরিয়ে নিজেই লাগিয়ে দিল ।
কনক ছোঁয়ার হাতটা এমন ভাবে সরাল যেন কনক মানুষ খুন করবে ।
ছোঁয়া কিছুতেই বুঝতে পারছে না কনকের কি হয়েছে ।
.
সারা রাস্তাই কনক ছোঁয়ার সাথে কথা বলল না ।
এমনকি ছোঁয়াকেও দেখে মুখে একটু হাসিও দিল না ।
ছোঁয়ার এইসবের মানে কিছুই বুঝতে পারল না ।
ছোঁয়া মনে মনে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: আজকে কনকের এমন কি হল যে আমার সাথে একটুও কথা বলল না ।
আমার দিকে তাকিয়েও একটুও হাসল না ।
কি হয়েছেটা কি উনার ।
এত রেগে রয়েছেন কেন আমার উপর । আমি করেছি টা কি ?
.
ছোঁয়া এই কথা গুলো ভাবছে আর ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
কনক সেইটা খেয়াল করল ।
কনক ছোঁয়ার দিকে টিস্যু পেপার এগিয়ে দিল ।
ছোঁয়ার কনকের দিকে তাকাল ।
কনক অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রেগেছে ।
ছোঁয়া টিস্যু পেপারটা হাতে নিল ।
.
টিস্যু পেপারটা দিয়ে চোখের পানি মুছল ।
কিছুখন পর ওরা দুইজনেই বাড়িতে পৌছে গেল ।
ছোঁয়া গাড়ি থেকে নেমে গেল কিন্তু কনক গাড়ি থেকে নামল না ।
কনক গাড়ি অন্য দিকে ঘুরিয়ে আবার চলে গেল ।
ছোঁয়া কিছুখন ওইদিকে তাকিয়ে থেকে সোজা রুমে চলে গেল ।
.
ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ারটা ছেড়ে দিল ।
এখনও ছোঁয়ার চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
সেই যে শাওয়ারটা অন করে ভিজছে আর বন্ধই করছে না ।
আমেনা আর অনন্যা ঘরে আসল ।
আমেনা আর অনন্যা বলাবলি করছে ।
.
আমেনা ::: কে রে সেই কখন থেকে শাওয়ার অন করে রেখেছে ।
দুইঘন্টা তো হবেই ।
.
অনন্যা ::: বোধ হয় ভাবি ।
আর ভাবিই যদি থাকে তাহলে এতখন ধরে শাওয়ার অন করে রেখেছে কেন ?
.
আমেনা ::: সেটাই তো বুঝতে পারছি না ।
মেয়েটা করছে টা কি আর হয়েছেই বা টা কি ?
.
অনন্যা ::: ভাবি দরজাটা খোল ।(ওয়াশরুমের দরজা ধাকাচ্ছে )
.
একটু পরে পানি পড়ার শব্দ বন্ধ হয়ে গেল ।
ছোঁয়া বের হল ওয়াশরুম থেকে ।
আমেনা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,
.
আমেনা ::: তুমি ওয়াশরুমে এতখন করছিলেটা কি তুমি বউমা ।
.
ছোঁয়া ::: খুব গরম লাগছিল তো মা তাই ।
.
আমেনা ::: তাই বলে দুইঘন্টা ধরে ।
.
ছোঁয়া ::: কি দুইঘন্টা ?
.
আমেনা ::: হুম ।
.
ছোঁয়ার এখনও চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ।
বারবার চোখের পানি মুছছে ।
সেইটা আমেনা খেয়াল করল তাই আমেনা ছোঁয়াকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,
.
আমেনা ::: কি হয়েছে তুমি কান্না করছ কেন বউমা ?
.
ছোঁয়া আরও জোরে কান্না শুরু করে দিল ।
তারপর নিচে বসে পড়ে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: উনি আমাকে সেই কখন থেকে ইগ্নোর করেই যাচ্ছে ।
আমার উপর অনেক রেগে রয়েছেন ।
আমার উপর রেগে আমার সাথেই কথা বলছে না ।
এইবার আমি করেছি টা কি ?
.
আমেনা ছোঁয়ার কাছে গেল ।
ছোঁয়াকে তুলে বিছানায় বসাল ।
তারপর ছোঁয়া কে বলছে ,,,
.
আমেনা ::: কান্না করিস না মা ।
সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে ।
আমিও তো বুঝতে পারছি না কনক কেন তোমার উপর রেগে রয়েছে ।
আর কোথাও কনক বউমা তাকে তো দেখতে পাচ্ছি না ।
.
ছোঁয়া ::: তিনি আমাকে এইখানে নামিয়ে দিয়ে কোথায় যেন চলে গেল কিছুই বুঝতে পারলাম না ।
.
আমেনা ::: ও ।
নিচে খেতে আস তাড়াতাড়ি ।
.
ছোঁয়া ::: না আমি এখন খাব না আম্মু ।
আমার এখন খিদে নেই ।
.
আমেনা ::: বললেই হল ।
.
অনন্যা ::: আম্মু ভাবিকে এখন জোর কর না ।
তুমি এখন চল আম্মু ভাবিকে এখন একটু একা থাকতে দাও ।
.
আমেনা ::: হুম ।
.
আমেনা আর অনন্যা এই ঘর থেকে চলে গেল ।
ছোঁয়া একলা একা ঘরে বসে রয়েছে চুপচাপ ।
সারাদিনেও কিছু খেল না ছোঁয়া ।
রাত হয়ে গেছে ।
রাতেও মেয়েটা কিছুই খেল না মেয়েটা ।
যেইভাবে বসে ছিল ঠিক ওইভাবেই বসে রয়েছে মেয়েটা ।
.
অনেক রাত হয়ে গেছে কিন্তু এখনও কনক আসছে না বাড়িতে ।
রাত দুটোর সময় কনক আসল বাড়িতে ।
ছোঁয়া কনককে দেখে উঠে দাঁড়াল ।
ছোঁয়া কনকের সামনে যেয়ে ওকে ধরে বলতে লাগল ,,,,,
.
ছোঁয়া ::: আপনি আমার সাথে এমন করছেন কেন ?
আপনি আমার সাথে কথা বলছেন না কেন ?
আমি আপনার কি এমন ক্ষতি করেছি যে আমার উপর রাগ করে রয়েছেন আপনি ?
.
কনক ::: এমন ভাবে তুমি জিজ্ঞাসা করছ যে তুমি কিছুই জান না ।
.
ছোঁয়া ::: সত্যিই আমি কিছুই জানি না ।
আপনি কি বলছেন আমি কিছুই বুঝতে পারছি না ।
.
কনক ::: না কি না বুঝার ভান করছেন ।
তাহলে এইগুলো কি ?
.
কনক ছোঁয়াকে ছবিগুলো দেখালো ।
ছোঁয়া ছবিগুলো দেখার প্রায় অজ্ঞান হয়ে পড়ে যাচ্ছিল ।
কিন্তু নিজেকে সামলিয়ে নিল ।
এইবার কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,
.
কনক ::: এরপরও কি তুমি না বোঝার ভান করে থাকবে ।
এমন ভাব করবে যে তুমি কিছুই জান না তুমি কিছুই কর নি ।
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন আমি এইসব করিনি ওই শয়তানটার সাথে ।
.
কনক ::: তুমি সিরাজের সাথে এইসব করার পরও আমার সামনে দাঁড়িয়ে আছ ।
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন কনক আমি এইসব করিনি ।
উল্টে ওই আমার সাথে ,,,,,
.
কনক ::: চুপ একদম চুপ তোমার ওই নোংরা মুখে আমার নাম উচ্চারন করবে না ।
আর তুমি আমার সামনে আসবে না ।
তুমি আজ থেকে এইখানে থাকবে না ।
.
কনক ছোঁয়ার হাত ধরে টান দিয়ে সরাসরি বারান্দায় ধাক্কা মেরে ফেলে আসল ।
আর বারান্দাটা ভিতর থেকে আটকে দিল যাতে করে ছোঁয়া আর ভিতরে ঢুকতে না পারে ।
ছোঁয়া কান্না জড়িত কন্ঠে জানালায় দাঁড়িয়ে বলছে ,,,
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন আমি সত্যিই এইসব করি নি ।
এইসব মিথ্যে ।
.
এইবার কনক জানালাটায় বন্ধ করে দিল ।
ছোঁয়া জোরে জোরে কান্না করতে লাগল ।
ছোঁয়ার বুকটা কষ্টে ফেটে যাচ্ছে ।
কান্না করতে করতে করতে ওইখানেই বসে পড়ল ছোঁয়া ।
ছোঁয়া কান্নাজড়িত কন্ঠে বলতে লাগল ,,,,
.
ছোঁয়া ::: হোটেল থেকে বের হওয়ার সময় সিরাজ একবার আমার হাত ধরে টান দিয়ে অন্য জায়গায় নিয়ে গিয়েছিল ।
আর ছবিগুলোতর সেই জায়গাটা দেখা যাচ্ছে ।
তার মানে যখন সিরাজ আমার সাথে জোর জবরদস্তি করছিল তখন কেউ ছবি তুলে রেখেছিল ।
কিন্তু উনি তো আমার কথা শুনতেই চাচ্ছেন না ।
হাই আল্লাহ এইবার তুমিই আমাকে সাহায্য করতে পার ।
.
ছোঁয়া বসে বসেই শুধু কান্না করছে ।
আর কনক মনযোগ দিয়ে কাজ করছে ।
মনে হচ্ছে অনেক রেগে রয়েছে ।
.
আর ওইদিকে সিরাজ আনন্দে আত্মহারা হয়ে আরমান সিকদার কাছে গেল ।
আর চিল্লাতে বলতে লাগল ,,,
.
সিরাজ ::: আই অ্যাম সো হ্যাপি ড্যাড ।
ফাইনালি আমি ছোঁয়াকে নিজের মত করে পাব ।
ওই মাঝখানের হাড্ডিটা আমাদের মাঝখান থেকে চলে যাবে ।
আমি অনেক খুশি ।
কি বলেছিল আমি কোনদিনও পাব না ।
.
আরমান ::: তুমি এখন খুশি তো মাই সান ।
.
সিরাজ ::: ইয়া ড্যাড ।
কবে যে ডিভোর্স দিয়ে দিবে আমি আমার জান পাখিটাকে আমার মত করে নিব ।
.
আরমান ::: এইবার আর কনক চৌধুরি আমার ছেলের সাথে পাঙ্গা নিতে আসবে না ।
.
সিরাজ ::: হুম ।
.
আরমান ::: এইবার খুশি তো ।
এইবার ঘরে ফিরে যাও ।
.
সিরাজ ::: হুম ।
.
ছোঁয়া এখনও বসে কান্না করছে ।
ধীরে ধীরে ভোরের আলো ফুটতে শুরু করে দিল ।
এইবার কনকও দরজাটা খুলে দিল ।
ছোঁয়াকে আসতে বলল ।
ছোঁয়া ভিতরে আসল ।
কনক ছোঁয়াকে বলছে ,,,,
.
কনক ::: পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে তুমি কলেজে যাবে না ।
কলেজে যাওয়ার নাম করে আবার না কি করে বস ।
.
ছোঁয়া ::: বিশ্বাস করুন ।
.
কনক ::: আমি তোমাকে বিশ্বাস করি না ।
তুমি শুধু পরীক্ষার দিনগুলোতে কলেজে যাবে ।
তাছাড়া তার আগে নয় ।
.
ছোঁয়া ::: কিন্তু ,,,,
.
কনক ::: কোন কিন্তু নই ।
আমি কোন কথা শুনতে চাই না ।
.
এই কথাটা বলে কনক ওয়াশরুমে চলে গেল ।
ছোঁয়া কান্না করতে করতে চোখ ফুলিয়ে ফেলেছে ।
আর চোখ তো একদম লাল হয়ে গেছে ।
.
আর কনক যখন ওকে ধাক্কা দিয়েছিল তখন হাতে একটু ব্যথা পেয়েছে ছোঁয়া ।
একটু ছুলেছে ।
রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে ।
আর প্রচুর জ্বলছে হাতটা ।
.
.
.
চলবে ।