রাগী বর,১৭,১৮

0
2010

রাগী বর,১৭,১৮
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৭
.
ডাক্তাররা কনকের নতুন রুপ দিল ,,,
কিছুখন পর কনকের জ্ঞান ফিরে আসল ,,,,,
কনক জ্ঞান ফিরার সাথে সাথেই ছটফট করছে ,,,,,
মুখে যে ব্যান্ডেজ লাগানো হয়েছে সেটা এখনও খোলা হয় ,,,,,
নার্সরা কনকের ছটফটানি দেখে ডাক্তারকে ডাক দিল ,,,
ডাক্তাররা কনকের মুখের ব্যান্ডেজ খুলে দিল ,,,,
কনকের মাথা ব্যথা করছে দেখে কনক কিছুখন মাথায় হাত দিয়ে রাখল ,,,,,
.
তারপর আয়নার দিকে তাকাল ,,,,
আয়নার দিকে তাকানোর পর কনকের চোখ একদম বড় বড় হয়ে গেছে ,,,,,
কনকের চেহারার পরিবর্তন দেখে কনক বলতে লাগল ,,,
.
— আমার চেহারা ,,,, আমি কি ভুল দেখছি না ,,,
আমাকে সিরাজের মত দেখতে লাগছে কেন ,,,
.
কনক অন্যদিকে তাকাল আবার আয়নার দিকে তাকাল ,,,,
আবার সেই‌ অবাক হল ,,,
যতবারই আয়নার দিকে তাকাচ্ছে ততবারই অবাক হচ্ছে কনক ,,,
কনক আবার বলতে লাগল ,,,
.
— কি হচ্ছে টা কি আমার সাথে ,,,,
.
ডাক্তার কনককে বলছে ,,,
.
— ঘাবড়াবেন আপনি ,,,,
এক্সিডেন্টে আপনার পুরো মুখ জ্বলে গিয়েছিল তার জন্য আমরা বাধ্য হয়েছি আপনাকে নতুন চেহারা দিতে ,,,,
.
— কি ,,,
আমাকে যে এই চেহারা দিয়েছেন কিন্তু এই চেহারার যে ছেলে আমার সাথে ছিল সিরাজ তার কি হয়েছে ডক্টর ,,,
.
— আই এম সো সরি হি ইস ডেথ ,,,,
.
— হোয়াট ,,,
আমি কি সিরাজের সাথে দেখা করতে পারি ,,,,
.
— ইয়াহ সিউর ,,,,
.
ডক্টর কনককে সিরাজের লাশের কাছে নিয়ে গেল ,,,,
কনক সিরাজের এই অবস্থা দেখে বলছে ,,,
.
— কে জেনে বুঝে আমার গাড়ির ব্রেক ফেইল করে দিয়েছে ,,,,
আমি যে একদিন বাড়িতে যাই নি তার জন্য বোধ হয় সবাই আমাকে নিয়ে টেনশন করা শুরু করে দিয়েছে ,,,,
বিশেষ করে ছোঁয়া ,,,,
আমাকে তাড়াতাড়ি যেতে হবে ,,,,,
আর মোটেও দেরি করা চলবে না ,,,,,
.
ছোঁয়া চুপ করে বসে রয়েছে ওর ঘরে ,,,,,
কনকের ছবি সামনে নিয়ে বসে রয়েছে ,,,,
আর চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ,,,,,
এই বার ছোঁয়া বলতে লাগল ,,,,
.
— কেন আপনি আমাকে এইভাবে একা রেখে চলে গেলেন ,,,,
আপমার কি একবারও মনে হয় নি যে আপনি না থাকলে আমার অবস্থাটা কি হবে ,,,,,
যেইখানে থাকুন না কেন কনক আমাকে প্লিজ এসে নিয়ে যান কনক ,,,,
আপনাকে ছেড়ে থাকা অসম্ভব ,,,,,
একবারও আপনার ভুল ভাঙ্গানোর সুযোগ দিলেন না আমাকে ,,,,,
প্লিজ আপনি আবার আমার কাছে ফিরে আসুন কনক ,,,,
আপনি আমাকে বকুন আর অত্যাচারই করুন আমার কোন সমস্যা নেই ,,,,
আমি সব কিছু সহ্য করে যাব ,,,,,
প্লিজ ফিরে আসুন ,,,,,
.
এই কথাগুলো বলে জোরে জোরে কান্না করতে লাগল ,,,,
কনক আসতেছে ওর গন্তব্যে ,,,,
আজও কি কনক পৌছাতে পারবে কনক ,,,,
.
যে রাস্তা দিয়ে কনক হেঁটে বাসায় ফিরছিল ,,,,,,
ওই রাস্তা দিয়েই আরমান সিকদার গাড়ি দিয়ে অফিসে যাচ্ছিল ,,,,,,,
ঠিক তখনই কনককে দেখে ,,,,,,
কনককে দেখে ভাবে সিরাজ কারন কনককে সিরাজের চেহারা দেওয়া হয়েছে ,,,,,,
আরমান সিকদার গাড়ি থামিয়ে গাড়ি থেকে নেমে কনকের কাছে যেতে লাগল ,,,,,,
কনকের কাছে যেয়েই বলতে লাগল ,,,,,,
.
— সিরাজ মাই সান ,,,,,,
তুমি কোথায় ছিলে ,,,,,
তোমার জন্য তো গুড নিউজ আছে তো ,,,,,
তুমি আগে বাসাই চল তো তারপর বলছি তোমাকে গুড নিউজটা ,,,,,
.
আরমান সিকদার কনককে একটা কথাও বলতে দিল না ,,,,,,
কনককে জোর করে নিয়ে গাড়িতে বসাল ,,,,,,
এমনকি গাড়িতেও কোন কথা বলতে দিল না কনককে ,,,,,,,
আরমান সিকদার কনককে নিজের বাড়িতে নিয়ে গেল ,,,,,
সিরাজের মা পাগলের মত ছুটতে ছুটতে কনকের কাছে গেল আর বলতে লাগল‌ ,,,,,,
.
— তুই কোথায় গেছিলে রে ,,,,,
কাউকে কোন কিছু না বলেই ,,,,,
কত চিন্তা হচ্ছিল আমার ,,,,,
একবার তো ফোন করে বলতেও পারতি ,,,,,
কি রে কথার উত্তর দিচ্ছিস না কেন ,,,,,,
.
— আরে তুমি কি ছেলেটাকে পাগল করে দিবে নাকি ,,,,,,,
পরে কথা বল ছেলেটার সাথে ,,,,,,,
আগে ছেলেটাকে একটু রেস্ট নিতে দাও ,,,,,,
.
আরমান তার ওয়াইফ কে ঘরে পাঠিয়ে দিল ,,,,,,,
তারপর কনকের কানে কানে বলছে ,,,,,,
.
— তুমি তোমার ঘরে যাও রেস্ট নাও তারপর তোমাকে গুড নিউজটা দিচ্ছি সিরাজ ,,,,,,,
আগে আমি তোমার মাকে একটু সামাল দিয়ে আসি ,,,,,,,
.
কনক কিছু বলার আগেই আরমান সিকদার ওইখান থেকে চলে গেল ,,,,,,,
কনক তো সিরাজের রুমও চিনে না ,,,,,,
কি করে যাবে সিরাজের রুমে ,,,,,,,
সিরাজের বাসাই যে লোকটি কাজ করে সে ওইখান দিয়ে যাচ্ছিল ,,,,,,
কনক সেই লোকটিকে জিজ্ঞাসা করছে ,,,,,,,,,
.
— এই যে হ্যালো আমার ঘরটা কোথায় ,,,,,,,,
.
— কি ছোট সাহেব আপনি আপনার রুমও ভুলে গেছেন নাকি উপরে উঠে রাইটে ,,,,,,,
আপনি একটা ডাক্তার দেখান ,,,,
.
— আই এম জোকিং ,,,,,,,,
আমার মনেই ছিল ,,,,,,
.
এই কথা বলে কনক সিরাজের রুমে ঢুকল ,,,,,
সিরাজের রুমে ঢুকার পর কনক তো পুরাই অবাক ,,,,
সারা ঘরে শুধু ছোঁয়ার ছবি লাগানো ,,,,,,,
কনকের গাটা একদম জ্বলে উঠল ,,,,,,
.
কনকের শরীরটা অনেক দূর্বল তাই শুয়ে পড়ল ,,,,,
আর মনে মনে বলছে ,,,,,,
.
— আমাকে দেখতে না পেয়ে আম্মু আব্বু আর‌ অনন্যা যে কি অবস্থা ,,,,,,
বিশেষ করে ছোঁয়ার অবস্থা ,,,,,,,
আমাকে এইখান থেকে বের হতে হবে ,,,,,,
কিন্তু কি করে বের হব সবাই তো আমাকে সিরাজ ভাবছে ,,,,,,
আম্মু আব্বুও তো আমাকে চিনবে না ,,,,,
ছোঁয়াও তো আমাকে চিনতে পারবে না ,,,,,,,
.
ছোঁয়া কনকের ছবি জড়িয়ে ধরে কান্না করছে ,,,,,,
অনন্যা আসল ছোঁয়ার কাছে ,,,,,
ছোঁয়াকে এইভাবে কাঁদতে দেখে বলছে ,,,,,,
.
— ভাবি তুমি এইভাবে আর কেঁদ না ,,,,,
যা হওয়ার তা তো হয়ে গেছে সেটা নিয়ে পড়ে থাকলে চলবে না তো ,,,,,
.
— তোমার ভালোবাসার মানুষটি যদি তোমায় ছেড়ে চলে যাও তখন তোমার অবস্থাও আমার মত হবে ,,,,
তখন তুমি একদম নিশ্চুপ‌ হয়ে যাবে ,,,,
কারোর সাথেই কথা বলতে ভালো লাগবে না ,,,,,
.
অনন্যা আর কথা বলতে পারছে না ,,,,,
আমেনা অনন্যাকে বলছে ,,,
.
— তুই এইখানে কি করছিস ,,,,,
ভাবিকে একটু শান্তিতে থাকতে দে যা ,,,,
.
— হুম যাচ্ছি ,,,,
.
অনন্যা চলে গেল ,,,,
ছোঁয়া বলছে ,,,,,
.
— আম্মু তুমি কি কিছু বলবে ,,,,,
.
— কালকে থেকে কিছুই খাসনি এখন তো কিছু খেয়ে নে ,,,,,
.
— না আম্মু আমি খাব না ,,,,
আমি উনার কাছে যাব ,,,,
.
— ধ্যাত পাগলি এইসব কি বলছিস ,,,,,
এইগুলো বলতে নেই ,,,,
.
— তো কি বলব ,,,,,
.
ছোঁয়া কান্না করতে লাগল ,,,,,
.
.
.
.
চলবে ,,,,,

রাগী বর
লেখিকা:বুশরাতুজ্জামান ছোঁয়া
পর্ব:১৮
.
ছোঁয়া শুধু কান্নাই করেই যাচ্ছে ,,,,,,,,
কিছুতেই থামাতে পারছে না এই কান্না ,,,,,,,,,
আমেনা ছোঁয়ার কান্না সহ্য করতে না পেরে নিজেও কান্না করতে করতে ঘর থেকে বের হয়ে চলে গেলেন ,,,,,,,
আমেনা ঘর থেকে বের হয়েই বলতে লাগলেন ,,,,,,,
.
— ছেলেটা চলে যাওয়ার পর পরই মেয়েটার অবস্থা একদমই খারাপ হয়ে গেছে ,,,,,,,
আমরা মেয়েটাকে একটুও সামলিয়ে রাখতে পারছি না আর একটু মুখে হাসি ফোটাতেও পারছি না ,,,,,,,
আল্লাহ তুমিই এখন পার মেয়েটার মুখে হাসি ফেরাতে ,,,,,,
.
কনক সিরাজের রুমে শুয়ে একটু রেস্ট নিচ্ছে ,,,,,,,
কারন এক্সিডেন্ট হওয়ার পর থেকে একটু রেস্টও নিতে পারেনি ছেলেটা ,,,,,,,
একটু পরে আরমান সিকদার হাসতে হাসতে আসলেন সিরাজের ঘরে ,,,,,,,,
আর বলতে লাগলেন ,,,,,,,,
.
— গুড নিউজ আছে মাই সান ,,,,,,
গুড নিউজ ,,,,,,,
.
— কি গুড নিউজ আছে সেটাই তো বলছেন না ,,,,,,,
সেই কখন থেকে গুড নিউজ আছে বলে বলে লাফাচ্ছেন ,,,,,,,,
.
— দাঁড়াও বলছি ,,,,,,,
.
— বলেন তাড়াতাড়ি ,,,,,,,
.
— তোমার পথের কাঁটা কনক চৌধুরি আর বেঁচে নেই ,,,,,,,
জান তাও আবার কে মেরেছে ওই কনককে ,,,,,,,,
আমি মেরেছি ,,,,,,,
শুধু তোমার খুশির জন্য মাই সান ,,,,,,,
.
— কি ,,,,,,,
.
— তোমার আইডিয়াতে কনক একটু দূরে সরে গিয়েছিল ছোঁয়ার জীবন থেকে ,,,,,,
আর আমার এই আইডিয়া পুরোপুরি দূরে সরিয়ে দিয়েছে ছোঁয়ার জীবন থেকে তোমার ছোঁয়ার জীবন থেকে ,,,,,,,
তুমি যদি ওইসময় মিথ্যে পিক গুলো না বানিয়ে ওই কনকের কাছে না পাঠাতে তাহলে কনককে দূর্বল করা সহজ হত না ,,,,,,,
এর জন্য মারাটা সহজ হয়ে উঠেছিল‌ ,,,,,, ,,
আপদটা গাড়ির মধ্যে আগুন লেগে পুরে ছাই হয়ে গেছে ,,,,,,,,
গুড নিউজ তাই না মাই সান ,,,,,,,,,
.
কনক এই কথাগুলো শুনে আর কিছুই বলতে পারছে না ,,,,,,,,
আরমান সিকদার সিরাজের ঘর থেকে চলে গেলেন ,,,, ,,,,
কনকের চোখ দিয়ে পানি পড়ছে , ,,,,,,,,,
আর নিজেই নিজেকেই বলছে ,,,,,,,
.
— ছি আমি ছোঁয়ার মত একটা সতী মেয়েকে অসতী মেয়ে বানিয়ে দিয়েছিলাম ,,,,,,,
আমার এই পাপের জন্য আমার কোন ক্ষমা নেই ,,,,,,,
আমি শুধু শুধু মেয়েটার উপর সন্দেহ করছিলাম ,,,,,,,
ভুল বুঝে এত কষ্ট দিয়েছি ,,,,,,
ছি নিজেকেই ধিক্কার জানাই ,,,,,,,,
আমার মরে যাওয়ার খবর শুনে আল্লাহ জানে মেয়েটার অবস্থা টা যে কি হয়েছে ,,,,,,,
আমার একবার ছোঁয়ার সাথে দেখা করা উচিৎ ,,,,,,,
ছোঁয়া বোধ হয় আবার না খাওয়া শুরু করে দিয়েছে ,,,,,,,
.
কনক ঝটফটিয়ে বের হয়ে চলে যাচ্ছে ,,,,,,,,
আর বারবার চোখের পানি মুছছে ,,,,,,,,
যাওয়ার পথে সিরাজের মার সাথে দেখা হল ,,,,,,,
এইভাবে ঘর থেকে বের হতে দেখে বলতে লাগল ,,,,,,
.
— তুই আবার এখন কোথায় যাচ্ছিস ,,,,,,,,
এই মাত্র তো বাসাই আসলি ,,,,,,,
খেয়ে যা কিছু ,,,,,,,,
.
— আমার জরুরি কাজ আছে ,,,,,,,
আমার এখন খিদে নেই‌ ,,,,,,,,
.
কনক আর কারোর কোন কথা না শুনে ঘর থেকে বের হয়ে চলে গেল ,,,,,,,,
সিরাজের বাইকটা নিয়ে বের হয়ে গেল ,,,,,,,
.
ছোঁয়া কারোর সাথে একটুও কথা বলে না ,,,,,,,
নিজেকে বন্দি করে রাখে একটা ঘরে ,,,,,,,
অনন্যা আসল ছোঁয়ার ঘরে ,,,,,,,,
ছোঁয়ার পাশে এসে বসল ,,,,,,,,
ছোঁয়ার হাতটা ধরে বলতে লাগল ,,,,,,,
.
— ভাবি তুমি আর কতদিন নিজেকে এইভাবে ঘরবন্দি করে রাখবে ,,,,,,,,
একটু বাইরে ঘুরতে চল না ,,,,,,,
কত সুন্দর মৌসুম ,,,,,,,
ভাবি তুমি না কর না ,,,,,,,
আম্মুও বলছে তুমি যেন কোথাও যেয়ে ঘুরে এস ,,,,,,,
.
— আমার কোথাও যাওয়ার কোন মোড নেই‌ ,,,,,,,
.
— প্লিজ ভাবি ,,,,,,,
প্লিজ তুমি না কর না ,,,,,,,
শুধু মাত্র তো এই পার্কেই যাব তো ভাবি ,,,,,,
প্লিজ তুমি না কর না ,,,,,, ,
প্লিজ প্লিজ প্লিজ ,,,,, ,
.
— ঠিক আছে আমি যাব ,,,,,,,,,
.
— তাহলে তুমি রেডি হয়ে নাও তাড়াতাড়ি আমিও রেডি হয়ে আসছি ,,,,,,,,
.
— হুম ,,,,,,,,
.
ছোঁয়া রেডি হওয়ার জন্য আলমারির সামনে গিয়ে দাঁড়াল ,,,,,,,
আলমারি থেকে শাড়ি বের করতে লাগল ,,,,,,,,
ছোঁয়া কোন ভালো শাড়িই খুজে পাচ্ছে না পড়ার জন্য ,,,,,,,
হঠাৎ ছোঁয়ার চোখ আটকে গেল একটা শাড়ির উপর ,,,,
শাড়িটার রং সাদা ,,,,,,,
শাড়িটা ভালোবেসে কনক ছোঁয়াকে দিয়েছিল ,,,,,,,
তাও আবার ছলে ,,,,,,,,,
শাড়িটা দেওয়ার পর থেকে ছোঁয়া একবারও এই শাড়িটা পড়ার সুযোগ পাইনি ,,,,,,,
আজকে সে সুযোগ পেয়েছে ছোঁয়া ,,,,,,,,
ছোঁয়া আজকে ঠিক করল এই শাড়িটা পড়বে ,,,,,,,
.
ছোঁয়া তাড়াতাড়ি করে এই শাড়িটা পড়ে নিল ,,,,,,,
কিন্তু ছোঁয়া‌ একটুও সাঁজল না ,,,,,,,,
যার জন্য যে সাজবে সে তো এখন নেই ছোঁয়ার পাশে ,,,,,,,
এখন সেজে কি করবে ছোঁয়া ,,,,,,,
.
অনন্যা একটু পরে আসল ছোঁয়ার ঘরে ,,,,,,
ছোঁয়াকে দেখে অনন্যা একটু অবাক হল ,,,,,,,
আর ছোঁয়াকে বলতে লাগল ,,,,,,
.
— ওয়াও ভাবি তোমাকে অনেক সুন্দর লাগছে ,,,,,,,,
আর বিশেষ করে তোমার এই শাড়িটা অনেক সুন্দর ,,,,,,,,
এই শাড়িটা তোমায় ভাইয়া দিয়েছিল তাই না ,,,,,,,
.
— হুম ,,,,,,,,
.
— আজকে প্রথম এই শাড়িটা তুমি পড়লে তাই না ,,,,,,,
.
— হুম ,,,,,,
.
— তাহলে চল ভাবি ,,,,,,,
.
ছোঁয়াকে নিয়ে অনন্যা বের হয়ে গেল ,,,,,,,
ওরা যাচ্ছে গাড়িতে সামনে একটা আইসক্রিমের দোকান পড়ল ,,,,,,,
এই আইসক্রিম নিয়ে কত কাহিনি ঘটেছিল কনকের সাথে লন্ডনে ,,,,,,
সব কিছু মনে করতে লাগল ছোঁয়া ,,,,,,
অনন্যা খেয়াল করল ছোঁয়া আইসক্রিমের দোকানের দিকে তাকিয়ে রয়েছে ,,,,,,,
.
তখনই অনন্যা মনে পড়ল ভাবির তো আইসক্রিম খুব পছন্দ ,,,,,,,
অনন্যা ড্রাইভারকে গাড়ি থামাতে বলল ,,,,,,
তারপর ছোঁয়াকে গাড়ি থেকে নামল ,,,,,,,
ওই আইসক্রিমের দোকানের সামনে নিয়ে গেল ,,,,,,,
ছোঁয়াকে দোকানের সামনে নিয়ে বসাল ,,,,,,
কেউ একজন পিছন থেকে বলে উঠল ,,,,,,
.
— তোমরা এইখানে কি করছ ,,,,,,
.
অনন্যা পিছনে তাকিয়ে দেখে জয় ,,,,,,
অনন্যা বলতে লাগল ,,,,,
.
— আপনি ,,,,,,
.
জয় ওদের কাছে চলে আসল ,,,,,,
আর বলতে লাগল ,,,,,,
.
— হঠাৎ এইখানে তাও আবার আইসক্রিমের দোকানের সামনে ,,,,,
তুমি তো বেশি আইসক্রিম পছন্দ কর না ,,,,,
.
— ভাবির জন্য এসেছি ,,,,,
ভাবিকে নিয়ে একটু ঘুরতে ,,,,,,
ভাইয়া চলে যাওয়ার পর থেকে ভাবি কেমন যেন হয়ে গেছে কারোর সাথে ঠিক মত কথাও বলে না ,,,,,,
তাই ভাবিকে নিয়ে একটু ঘুরতে বের হয়েছি ,,,,,,
আর ভাবির খুব আইসক্রিম প্রিয় ,,,,,,
.
— ও ,,,,,,
.
অনন্যা তিনটি আইসক্রিমের অর্ডার দিল ,,,,,,,
ছোঁয়ার তো শুধু কনকের কথা মনে পড়ছে ,,,,,,
আর শুধু চোখ দিয়ে পানি পড়ছে ,,,,,
.
ওই রাস্তা দিয়ে সিরাজের বাইক নিয়ে কনক যাচ্ছিল‌ ,,,,,,,
আইসক্রিমের দোকানে চোখ পড়তেই ছোঁয়াকে দেখতে পেল ,,,,,,
তারপর বাইকটা থামাল ,,,,,,
প্রানভরে ছোঁয়াকে দেখছে আর কনকের মন চাচ্ছে ছোঁঁয়াকে জড়িয়ে ধরতে ,,,,,,
কনকের দেওয়া শাড়ি টা দেখে আরও বেশি খুশি হল ,,,,,
আর বলতে লাগল ,,,,,,
.
— অনেক সুন্দর লাগছে ছোঁয়াকে ,,,,,,
বার বার শুধু ওকে দেখতে মন চাচ্ছে ,,,,,,,
কিন্তু কান্না কান্না করতে করতে নিজের কি হাল বানিয়েছে ,,,,,,
তোমার এই অবস্থা দেখতে আমি আর পারছি না ,,,,,
এখনি মন চাচ্ছে জড়িয়ে ধরে বলি আমি তোমার কনক ,,,,,,
.
ছোঁয়ারা বেশিখন আর আইসক্রিমের দোকানে বসে থাকল না ,,,,,,
গাড়িতে নিয়ে বসাল ,,,,,
পার্কের দিকে যাচ্ছে ,,,,,,
কনক ওদের পিছু নিল ,,,,,,
.
ওরা পার্কে এসে পৌছাল ,,,,,
গাড়ি থেকে নামল ,,,,,,
জয় আর অনন্যা কত কথা বলছে ,,,,,,,
কিন্তু ছোঁয়ার কিছুই ভালোই লাগছে না ,,,,,,
.
ছোঁয়া একটা বেঞ্চে এসে বসল ,,,,,
কনক শুধু ছোঁয়ার পিছু নিচ্ছে ,,,,,,
আর ছোঁয়াকে আড় চোখে দেখছে ,,,,,,
ছোঁয়া সেটা খেয়াল করল ,,,,,
ছোঁয়া ভাবছে সিরাজ ওকে ফলো করছে ,,,,,,
.
তাই‌ ছোঁয়া ওইখানে গেল আর শার্টের কলার ধরে বলতে লাগল ,,,,,
.
— তুই আবার আমার পিছু নিচ্ছিস ,,,,,,
তোর কারনে আমি আমার স্বামীকে হারিয়েছি ,,,,,,
আমি তোকে ছাড়ব না ,,,,,,,
তোকে আমি শেষ করে দিব ,,,,,,
.
কনক নিজেকে ছুটিয়ে ওইখান থেকে চলে গেল ,,,,,,
তারপর বাইকের কাছে চলে গেল ,,,,,,
বাইকটা নিয়ে ওইখান থেকে চলে গেল ,,,,,
.
ছোঁয়াকে এইভাবে উত্তেজিত হতে দেখে অনন্যা আর জয় ছোঁয়াকে নিয়ে বাড়িতে চলে গেল ,,,,,,
ছোঁয়া বাড়িতে এসে এক দৌড়ে নিজের ঘরে চলে গেল ,,,,,
আবার কান্না শুরু করে দিল ,,,,,
.
কনকও সিরাজদের বাসায় চলে এসেছে ,,,,,,,
কারোর সাথে কোন কথা না বলে সোজা রুমে চলে গেল ,,,,,,
আর দরজাটা ভিতর থেকে আটকে দিল ,,,,,
কনকের চোখ দিয়ে শুধু পানি পড়ছে ,,,,,,
কনক বলতে লাগল ,,,,,,
.
— আমার ছোঁয়ার অবস্থাটা কি হয়েছে ,,,,,,
সব কিছু হয়েছে ওই আরমান সিকদারের জন্য ,,,,,,
আরমান সিকদার আমি তো তোমায় ছাড়ব না ,,,,,,
.
ছোঁয়া তো ওর রুমে বসে কান্না করছে ,,,,,
আমেনা নিচে বসে রয়েছে ,,,,,
প্রতিবেশিরা এসেছে এইখানে ,,,,,,
একজন বলে উঠল ,,,,,,
.
— এত অল্প বয়সে বিধবা হয়েছে তাই তো এইরকম করছে ,,,,,,
আমার মনে হয় কি মেয়েটাকে আবার বিয়ে দিয়ে দিন ,,,,,
তাহলে সব ঠিক হয়ে যাব ,,,,,
.
— বিয়ে দিলেই কি সব ঠিক হয়ে যাবে ,,,,,
মেয়েটা আবার হাসতে পারবে ,,,,,
.
— হুম ,,,,,
.
— তাহলে তাই করব ,,,,,
একবার বিয়াই আর বিয়াইন এর সাথে কথা বলতে হবে ,,,,,,,,
উনার সাথেও কথা বলতে হবে ,,,,,
.
.
.
চলবে ,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here