??রাগী_জেদী_মেয়েটি❣️?,৬ষ্ঠ,৭ম পর্ব
-Tahir Ahmed Dip
পার্ট-৬ষ্ঠ
-আদ্রিতা নিজের শাড়িতে পা পিছলে পড়ে যাচ্ছিলো তার আগেই দ্বীপ ওকে ধরে ফেলে…..
.
-আদ্রিতার কোমড় শক্ত করে জড়িয়ে থাকে দ্বীপ নিজের দুই হাত দিয়ে।দুজনেই একে অন্যের চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে।দ্বীপ যেন আদ্রিতার চোখের দিক থেকে চোখ ই ফিরাতে পারছে না।আদ্রিতার কাজল কালো চোখ দুটো ওকে তাকিয়ে থাকতে বাধ্য করছে……দ্বীপ একদৃষ্টিতে তাকিয়েই আছে সেদিকে…..
.
-দ্বীপ….এই দ্বীপ….. (আদ্রিতা)
.
-হুম…..(ঘোর লাগা চোখে তাকিয়ে)
.
-ছাড়ো কেউ দেখবে তো…..(আদ্রিতা)
.
-আদ্রিতার কথায় দ্বীপের ধ্যান ভাঙে।ও আদ্রিতাকে ছেড়ে দেয়।দুজনেই বেশ লজ্জা পেয়েছে।দ্বীপ ও আদ্রিতা কেউ ই একে অন্যের দিকে তাকাচ্ছে না।চুপচাপ দুজনে হেটে চলছে।আদ্রিতার চুলের সাথে ফুলগুলো লাগানোতে ওকে আরো সুন্দর লাগছে।দ্বীপ আড়চোখে বারবার আদ্রিতার সৌন্দর্য দেখতে লাগলো….
.
-দুজনে হল রুমে গিয়ে বসে পড়ে।আদ্রিতার পাশে দ্বীপ।দুজনে পাশাপাশি বসে আছে।আদ্রিতার শরীর থেকে এক অদ্ভুত ঘ্রান আসছে।অসম্ভব সুন্দর একটা ঘ্রান…..
.
-অনুষ্ঠান শেষ হবার পর সবাই মিলে ক্যাম্পাসে আড্ডা দিচ্ছে।সবার মুখেই আদ্রিতার প্রসংশা।আদ্রিতাকে শাড়িতে দেখে সবাই ওর প্রশংসা করছে বিশেষ করে ছেলেরা। দ্বীপের এসব দেখে কেন জানি বেশ হিংসে হতে লাগলো….
.
-একজন ছেলে গিটার নিয়ে এসেছিলো।দ্বীপ গিটার টা হাতে নেয় ওর কাছ থেকে……
.
-একি ডাবল ব্যাটারি গান গাইবে নাকি?(ছেলেরা মিলে)
.
-ও গান গাইলে হয়তো সবাইকে এখান থেকে দৌড়ে পালাতে হবে….(কবিতা)
.
-আচ্ছা সবাই চুপ ওকে গাইতে দাও….(আদ্রিতা)
.
-দ্বীপ গিটারটা নিয়ে গাইতে শুরু করে।ওর বড্ড প্রিয় একটা গান আদ্রিতার চোখের দিকে তাকিয়ে গাইতে থাকে….
-O… Ek Ladki Ko Dekha To Aisa Laga?
Ek Ladki Ko Dekha To Aisa Laga?
Jaise Khilta Gulab?
Jaise Shayar ka Khwab?
Jaise Ujali Kiran?
Jaise Bun Mein Hiran?
Jaise Chandani Raat❣️
Jaise Narmi Ki Baat?
Jaise Mandir Mein Ho
Ek Jalta Diya…?
O. Ek Ladki Ko Dekha to Aisa Laga….?
.
-গান গাওয়া শেষ হলে দ্বীপ সবার দিকে তাকায়।সবাই হা করে তাকিয়ে আছে।কেউ কল্পনা ই করেনি দ্বীপ এতো সুন্দর গান করবে। বিশেষ করে মেয়েগুলো তো পুরো অবাক।কবিতাও চুপচাপ মাথা নিচু করে বসে থাকে।আদ্রিতাও অবাক হয়ে দ্বীপের দিকে তাকিয়ে আছে…
.
-ওয়াও বেশ সুন্দর হয়েছে।(আদ্রিতা)
.
-হুম দ্বীপ আমি সর্যি তুমি এতো ভালো গান করো জানতাম না….(কবিতা)
.
-Don’t judge a book by It’s cover…..( দ্বীপ)
.
-আচ্ছা দ্বীপ চলো যাওয়া যাক।বায় এভ্রিওয়ান…..(আদ্রিতা)
.
-সবাই চুপচাপ বসে থাকে। দ্বীপ একটা মুচকি হাসি দিয়ে আদ্রিতার সাথে উঠে হাটঁতে শুরু করে…..
.
-আদ্রিতা কিছুদুর হেটে যেতেই হটাৎ করেই চিৎকার দেয়…..
.
-আহহহহহহহ…..(আদ্রিতা)
..
-কি হলো….(দ্বীপ)
.
-হটাৎ করে পায়ে বেশ ব্যাথা করছে।হাই হিল পড়ার কারণে হয়তো মচকে গেছে…..(আদ্রিতা)
.
-আরেকটু হাটো গেটের কাছেই হয়তো গাড়ী….. (দ্বীপ)
.
-হাটতে পারছি না বেশ ব্যাথা করছে উহহহহ….(আদ্রিতা)
.
-দ্বীপ আর উপায় না পেয়ে আদ্রিতাকে কোলে করে নিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।আদ্রিতা আজ নিজে ড্রাইভিং করে এসেছে।ড্রাইভারকেও আনেনি তাই দ্বীপ নিজে ড্রাইভিং সীটে বসে পড়ে…..ড্রাইভিং সীটে বসেই দ্বীপের মনে পড়ে মাকে করা প্রমিসের কথা….৩ বছর আগে করা প্রমিস…..
.
-দেখ কতোটা কেটে গেছে তোকে বলেছি না ড্রাইভিং করবি না তারপর ও তুই ড্রাইভিং করতে গেলি।তোর কিছু হলে আমাদের কি হবে…??(দ্বীপের মা)
.
-উফফ মা কিছু হবে না সামান্য কেটে গেছে।আর দোষ টা আমার না ওই লোক নিজেই এসে আমার গাড়িকে ধাক্কা দিয়েছে…(দ্বীপ)
.
-আমি কিচ্ছু শুনতে চাই না।তুই আজ থেকে আর গাড়ি ড্রাইভ করবি না প্রমিস কর আমাকে…..(দ্বীপের মা)
.
-কিন্ত মা এটা তো আমার ফেভারিট কার….(দ্বীপ)
.
-আমি কিচ্ছু শুনতে চাইনা তুই প্রমিস কর আর ড্রাইভ করবি না….(দ্বীপের মা)
.
-শেষমেষ বাধ্য হয়ে দ্বীপকে প্রমিস করতে হয়।কিন্ত আজকে দ্বীপকে প্রমিস টা ভাংতে হবে।আদৃতা ওকে বাচাতেঁ গিয়েই সেদিন বেশ আঘাত পেয়েছিলো তাই আজ দ্বীপকেও ওর জন্য এটা করতেই হবে।দ্বীপ আরকিছু না ভেবে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ড্রাইভিং করতে থাকে…এদিকে আদ্রিতা দ্বীপের মতো একটা মিডেলক্লাস ফ্যামিলির ছেলেকে গাড়ি চালাতে দেখে বড্ড অবাক হয়….
.
-দ্বীপ তুমি ড্রাইভিং জানো কিভাবে…..(আদ্রিতা)
.
-আসলে আমি ড্রাইভিং এর উপর কোর্স করেছিলাম তো তাই….(দ্বীপ অনেক্ষন ভেবে)
.
-ওহ আমিও ভাবছি তোমার মতো ছেলে গাড়ি চালানো শিখলো কিভাবে… (আদ্রিতা মনে মনে)
.
-দ্বীপ আদ্রিতাকে ড্রাইভিং করে হস্পিটালে নিয়ে চলো গেলো।সেখানে গিয়ে জানতে পারে সত্যিই হাই হিল পড়ার কারণে আদ্রিতার পা মচকে গেছে।এরপর ডক্টর ওর পা ব্যান্ডিজ করে কিছু ওষুধ প্রেসক্রাইব করে দেন….
.
-দ্বীপ আদ্রিতাকে কোলে করে নিয়ে এসে গাড়িতে বসিয়ে দেয়।যদিও পুরো হস্পিটালের সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে ছিলো ওদের দিকে আর আদ্রিতা সবার এমন চাহনি দেখে দ্বীপের বুকে মুখ গুজে রইলো…..
.
-To Be Continued…..
.
??#রাগী_জেদী_মেয়েটি❤️?
.
-Tahir Ahmed Dip
.
-৭ম পর্ব….
.
-দ্বীপ এরপর আদ্রিতাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে চলে আসবে এমন সময় আদ্রিতা ওকে ডাক দেয়….
.
-দ্বীপ?…(আদ্রিতা)
.
-হ্যা কিছু বলবে??(দ্বীপ)
.
-না মানে কিছুক্ষন বসবে?তোমার সাথে একটু কথা বলি। একা একা ভালো লাগছে না…..(আদ্রিতা)
.
-ওকে আমি আছি….(দ্বীপ)
.
-এরপর দুজনে মিলে গল্প করতে থাকে।দ্বীপ জোকস বলছে আর আদ্রিতা হাসছে।আদ্রিতার হাসি দেখে দ্বীপ একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে ওর দিকে।আদ্রিতা হাসলে এতো সুন্দরী লাগে দ্বীপ এই প্রথমবার লক্ষ করে।ওর হাসিতে একটা অন্যরকম মুগ্ধতা আছে যা সচরাচর লক্ষ করা যায় না…
.
-আদ্রিতার সাথে অনেক্ষন গল্প করে দ্বীপ বেড়িয়ে একটা রিক্সা করে নিজেদের বাসার উদ্দেশ্যে চলে যায়…বাসায় যেতেই….
.
-এই যে নবাব পুত্র এতোক্ষনে আপনার আসার সময় হলো….(দ্বীপের মা)
.
-সর্যি মা একটু লেট হয়ে গেছে।….(দ্বীপ)
.
-একটু না অনেক লেট করেছিস তুই৷…… (দ্বীপের বাবা এসে)
.
-বাবা তুমি…..তুমি কখন এলে??(জড়িয়ে ধরে)
.
-এইতো কিছুক্ষন আগে।এয়ারপোর্ট থেকে সোজা বাসায়। তোর জন্য অনেকগুলো গিফট এনেছি তোর রুমে রাখা আছে…..(দ্বীপের বাবা)
.
-তুমি এসেছো সেটাই বড় গিফট….(দ্বীপ)
.
-এখন খেতে আয় অনেকদিন হলো দুজনে একসঙ্গে খাইনি…..(দ্বীপের বাবা)
.
-ওকে বাবা চলো….(দ্বীপ)
.
-দ্বীপ ও দ্বীপের বাবা দুজনেই একত্রে খাওয়া শুরু করে।খাওয়া শেষ হলে ও নিজের রুমে চলে যায়।
.
-এভাবেই বিকাল পেড়িয়ে রাত হয়।দ্বীপ যেন আজকের দিনটার কথা কিছুতেই ভুলতে পারছে না।আদ্রিতার ফেইস টা আজকে এতো সুন্দরী লাগছিলো দ্বীপের চোখের সামনে বারবার ওর হাসিমাখা ফেইস টা ভাসছে।আদ্রিতার সবকিছুই হটাৎ ওর বেশ ভালো লাগা শুরু হয়ে গেছে।এমন কখনো হয়নি ফার্স্ট টাইম কারো জন্য দ্বীপের মনে এতো ভালোলাগা কাজ করছে।আদ্রিতার কথা ভাবতে ভাবতে দ্বীপ আদ্রিতাকে কল করে বসে…..
.
-হ্যালো। আসসালামু আলাইকুম….(আদ্রিতা)
.
-ওয়ালাইকুমুস সালাম।কি করছো??(দ্বীপ)
.
-অবাক হয়ে ভাবছি….(আদ্রিতা)
.
-কিহ?(দ্বীপ)
.
-স্যার আজকে হটাৎ নিজে কল করলো।সব ঠিক আছে তো…..(আদ্রিতা)
.
-হুম সব ঠিক ই আছে।তুমি কেমন আছো তা জানতেই কল দিয়েছি….. (দ্বীপ)
.
-হুম বেটার।ব্যাথা কিছুটা কম….(আদ্রিতা)
.
-রাতে খেয়েছো…..(দ্বীপ)
.
-হুম। তুমি??(আদ্রিতা)
.
-হুম।আচ্ছা রাখছি পরে কথা হবে….(দ্বীপ)
.
-ওকে….(আদ্রিতা)
.
-দ্বীপ কল কেটে দেয়।পরেরদিন ক্লাসে গিয়ে দেখতে পায় আদ্রিতা আসেনি।দ্বীপ জানে আদ্রিতা আসবে না।ডক্টর ওকে ১৫ দিনের রেষ্ট দিয়েছেন। ক্লাসে এসেই দ্বীপ ওকে বড্ড মিস করতে থাকে।এভাবে ১৫ দিন কেটে যায়।দ্বীপের কাছে প্রতিটা দিন কয়েকশো বছর মনে হচ্ছিলো।এই কদিনে ও বুঝতে পেরেছে আদ্রিতাকে ওর লাইফে কত প্রয়োজন।দ্বীপ আদ্রিতাকে ভালোবেসে ফেলেছে এটা বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে।দ্বীপ নিজের ভালোবাসাটা আর কিছুতেই গোপন রাখতে পারছিলো না তাই ও আদ্রিতাকে বলার সিদ্ধান্ত নেয়….
।
-আজ আদ্রিতা ভার্সিটিতে আসবে।দ্বীপ একটু আগেই সেটা ফোন করে জেনে নিয়েছে।ও ফুলের দোকান থেকে একগুচ্ছ ফুল নিয়ে ভার্সিটির উদ্দেশ্যে চলে যায়।আজকে আদ্রিতাকে দ্বীপ নিজের মনের কথা বলবে।আদ্রিতাকে ভালোবাসে সেটা জানাবে।ক্লাসে গিয়ে দেখে আদ্রিতা আগেই এসেছে।দ্বীপ গিয়ে ওর সামনে হাটুগেড়ে বসে পড়ে……
.
-জানিনা কিভাবে বলতে হয় কিন্ত আমি তোমাকে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি।প্রথমত আমার তোমাকে চাই,দ্বিতীয়ত আমার তোমাকে চাই এবং সবশেষে আমার তোমাকে চাই।তোমার অনুপস্থিতিতে তোমাকে অনুভব করার নাম যদি ভালোবাসা হয় তবে আমি তোমাকে ভালোবাসি,তোমার জন্য অপেক্ষা করা যদি ভালোবাসা হয় তবে তোমাকে ভালোবাসি, চোখ বন্ধ করলে তোমার ফেইস দেখাটা যদি ভালোবাসা হয় তবে তোমাকে প্রতিটা মুহূর্তে ভালোবাসি,অল টাইম তোমার সাথে থাকার ইচ্ছাটা, তোমাকে দেখতে চাওয়ার ইচ্ছাটা,তোমাকে অনুভব করার ইচ্ছাটা যদি ভালোবাসা হয় তবে আমি তোমাকে ভালোবাসি।I love u Adrita.I truely love you.will you be mine?? …. (দ্বীপ ফুলগুলো এগিয়ে দিয়ে)
.
-দ্বীপের বলা শেষ হবার সাথে সাথেই ঠাসসস করে একটা চর পড়ে ওর গালে।ও অবাক হয়ে আদ্রিতার দিকে তাকায়।দ্বীপের বিশ্বাস ই হচ্ছে না আদ্রিতা ওকে এভাবে চর মারবে…..
.
To Be Continued…..