রাগী_জেদী_মেয়েটি❤️?,২য় পর্ব

0
853

রাগী_জেদী_মেয়েটি❤️?,২য় পর্ব
Tahir Ahmed Dip(আয়ানের বাবাই)

–এদিকে রাগে আদ্রিতার ফেইস লাল টমেটোর মতো হতে শুরু করে।ফর্সা ফেইস পুরো লাল টুকটুকে হয়ে গেছে।এই প্রথম কেউ ওকে পেত্নী বলাতে রাগে আদ্রিতা হাতে থাকা দামী ফোনটা একটা আছাড় মারে…..
.
-ফোনটা ফ্লোরে পড়ে ফোনের গ্লাসটা টুকরো টুকরো হয়ে যায়। আদ্রিতা চুপচাপ ক্লাসে প্রবেশ করে একটা বেসে বসে দ্বীপের দিকে তাকিয়ে ফুসতে থাকে……ইচ্ছে করছে দ্বীপের নাক বরাবর একটা ঘুসি দিয়ে নাক ফাটিয়ে দিতে কিন্ত সেটা পারছে না তাই বসে বসে নাগিনের মতো ফোসফোস করতে লাগলো……
.
-এদিকে দ্বীপ চুপচাপ বসে বাহিরে মাঠের দিকে তাকিয়ে আছে।ক্লাসে ওর তেমন কোনো ফ্রেন্ড নেই।চশমা পড়াতে কেউ কেউ ওকে ডাবল ব্যাটারি বলে ডাকে কিন্ত দ্বীপ কখনো কারো কথায় মাইন্ড করে না…..
.
-কিছুক্ষন পর সবাই ক্লাস রুমে প্রবেশ করতে থাকে।সবাই আদ্রিতার সাথে কথা বলছে বিশেষ করে ছেলেরা তো ওর পাশের সীটে বসার জন্য একে অন্যের সাথে ঝগড়া শুরু করে দিয়েছে….. কিন্ত স্যার ক্লাসরুমে প্রবেশ করার সাথে সাথেই সবাই চুপচাপ বসে পড়ে….
.
-গুড মর্নিং স্যার…(সবাই)
.
-গুড মর্নিং স্টুডেন্টস।আজকে আমি তোমাদের কিছু প্রশ্ন করবো যে তিনটার মাঝে দুটোর উওর দিতে পারবে সেই হবে আজকের উইনার।তো রেডি তো সবাই…..??(স্যার)
..
-ইয়েস স্যার…..(সবাই একসাথে)
.
-ওকে আমার প্রথম প্রশ্ন হলো…..বৃক্কে প্রতি মিনিটে কত পরিমাণ রক্ত প্রবাহিত হয়?
.
-আদ্রিতা উওর টা জানতো কিন্ত ওর কিছুতেই মনে পড়ছে না।হটাৎ ই দ্বীপ বলে ওঠে..
.
-১২০০০ মিলিমিটার…..
.
-ভেরি গুড দ্বীপ।আমার নেক্সট প্রশ্ন হলো…..কম্পিউটার কে আবিষ্কার করেন?
.
-দ্বীপ উওর টা ভাবছিলো তার আগেই আদ্রিতা উওর টা দিয়ে দেয়….
.
-হাওয়ার্ড এইকিন…..
.
-ভেরি গুড।আমার শেষ প্রশ্ন হলো বাঙালিদের মাঝে প্রথম কে সাতার কেটে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রম করে?
.
-আদ্রিতা ও দ্বীপ দুজনেই উওর টার ব্যাপারে ভাবছিলো হটাৎ ই দ্বীপের মনে পড়ে যায়….
.
-ব্রজেন দাস…
.
-ভেরি গুড।আচ্ছা যেহেতু দ্বীপ তিনটার মাঝে দুটো পেরেছে তাই দ্বীপ ই উইনার।So everyone congratulate him by a round of applause ….(স্যার)
.
– স্যারের কথামতো সবাই দ্বীপকে করতালি দিয়ে অভিবাদন জানায়।এদিকে আদ্রিতা চুপচাপ নিজের ডেস্কে বসে থাকে শেষের উওর টা ও জানতো কিন্ত ও বলার আগেই দ্বীপ উওর টা দিয়ে দেয় তাই ওর রাগ আরো কয়েকগুন বেড়ে গিয়েছে……
.
-এভাবে এক এক করে সব কয়টা ক্লাস শেষ হয়।ক্লাস শেষ করে আদ্রিতা নিজের গাড়িতে করে বাসায় চলে যায়।মেজাজ টা বেশ গরম ওর।আজকে ফার্স্ট টাইম কেউ ওকে পেত্নী বলল তাই ও চুপচাপ আয়নার সামনে গিয়ে দাড়িয়ে পড়ে…..
.
-আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আদ্রিতা নিজেই অবাক হয়।কালো ড্রেসটাতে আর রেশমী সিল্কি চুলগুলোতে আজকে ওকে একটু বেশিই সুন্দরী লাগছে।ওর ফর্সা ফেইস টা লাল হয়ে আছে।আদ্রিতা বারবার নিজেকে আয়নায় দেখতে লাগলো….
.
-আদ্রিতার বাবা আজকে অফিসে যান নি।তিনি আদ্রিতার রুমের সামনে দাঁড়িয়ে আদ্রিতাকে আয়নায় বারবার নিজের চেহারা দেখতে দেখে ওকে প্রশ্ন করেন…
.
-মামনি কি হয়েছে?আয়নায় এতো কি দেখছিস??
.
-বাবা আমি কি দেখতে পেত্নীর মতো…..(আদ্রিতা)
.
-কিহ!তুই দেখতে পেত্নীর মতো হতে যাবি কেন?আমার মামনি দেখতে তো অনেক সুন্দর।বাই দা ওয়ে তোকে কেউ কিছু বলেছে নাকি?? (আদ্রিতার বাবা)
.
-হুম।আমাদের ক্লাসের একটা ছেলে দ্বীপ…..(আদ্রিতা দাতেঁ দাতঁ চেপে)
.
-তাই নাকি?কে সেই ছেলে যে আমার পেত্নী মেয়েটাকে সর‍্যি আদরের মেয়েটাকে এসব বললো….(আদ্রিতার বাবা)
.
– বাবা তুমিও…..(আদ্রিতা)
.
-সর‍্যি মা।আসলে মুখ ফসকে বেড়িয়ে গেছে….(আদ্রিতার বাবা)
.
-আদ্রিতা কিছু না বলে রাগে লাল হয়ে ছাদে চলে যায়।ছাদে গিয়ে…
.
-মিষ্টি কেমন আছো?(আদ্রিতা)
.
-মিষ্টি ভালো আছে।(মিষ্টি)
.
-ওহ বলে দেই মিষ্টি হলো আদ্রিতার পোষা টিয়ে পাখি।ছোটবেলার আদ্রিতার মা ক্যান্সারে মারা যান এরপর থেকে আদ্রিতা এই মিষ্টির সাথেই অল টাইম কথা বলে। মিষ্টিও বেশ কথা শিখেছে।ঝটপট উওর দেয়…..আদ্রিতা ওর সাথে কথা বলতে থাকে…
.
-অন্যদিকে ক্লাস থেকে ফিরে দ্বীপ ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া করে একটা ঘুম দেয়।ঘুম থেকে উঠে বাহিরের দিকে হাটতে চলে যায়।ও চুপচাপ রাস্তার সাইড দিয়ে হাটছিলো হটাৎ রাস্তার সাইডে একটা খালি বোতল দেখতে পেয়ে নিজের ভেতরের রোনালদো কে আটকাতে না পেরে জোরে একটা লাথি দেয় আর ক্যানটা গিয়ে জোরে কারো মাথায় আঘাত করে…..দ্বীপ তাকিয়ে দেখে এটা একটা মেয়ে।
.
-আউউউউ……
.
-আপনি ঠিক আছেন তো?(দ্বীপ দৌড়ে গিয়ে)
.
-মেয়েটা মাথা তুলে তাকাতেই দ্বীপ চমকে ওঠে।এটা আর কেউ না আদ্রিতা।এদিকে আদ্রিতা দ্বীপকে দেখেই রাগে তেড়ে ওঠে…..
.
-সমস্যা কি হ্যা?চোখে দেখো না নাকি?ইস মাথায় কতটা ব্যাথা পেয়েছি…..(আদ্রিতা দ্বীপের কলার চেপে)
.
-আই অ্যাম সর‍্যি আসলে আমি বুঝতে পারিনি।বাই দা ওয়ে আপনি এখানে কি করছেন…??(দ্বীপ)
.
-তোকে চিবিয়ে খেতে এসেছি।….(চোখ আগুন করে)
.
-দ্বীপ ওর চোখের দিকে তাকিয়ে চমকে ওঠে।মেয়েটাকে পুরো জল্লাদ জল্লাদ লাগছে।রাগে পুরো ফেইস লাল হয়ে গেছে।দ্বীপ আরকিছু না বলে কোনোমতে নিজেকে ছাড়িয়ে চুপচাপ ওখান থেকে দৌড়ে চলে আসে…
.
-আল্লাহ বেচেঁ গেছি।নাহলে ওই ডায়নিটা আজ হয়তো আমাকে জ্যান্ত ই খেয়ে ফেলতো……(দ্বীপ মনে মনে)
.
-এদিকে আদ্রিতা দাঁড়িয়ে একা একা হেসে চলেছে।দ্বীপকে বেশ একটা শিক্ষা দিতে পেরে আদ্রিতা খুব খুশি।
.
-যাইহোক বোকাটাকে বেশ একটা শিক্ষা দিতে পেরেছি।আমার সাথে পাঙ্গা নেয়া হু…..(আদ্রিতা)
.
-দ্বীপ রুমে গিয়ে বারবার আদ্রিতার কথা ভাবতে থাকে।মেয়েটা আস্তো একটা ডায়নী।দ্বীপ তখন বড্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলো।ওর থেকে দূরে থাকতে হবে যেভাবেই হোক….
.
-পরদিন….
.
-দ্বীপ ক্লাসে গিয়ে দেখে ক্লাসে কেউ নেই তাই ও নিশ্চিন্ত হয়ে রুমে প্রবেশ করে চুপচাপ বসে থাকে।কিন্ত হটাৎ আদ্রিতাকে রুমে প্রবেশ করতে দেখে দ্বীপ কিছুটা ভয় পায় কিন্ত নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করে।হটাৎ সামনে তাকিয়েই দেখে আদৃতা ওর সামনে দাঁড়িয়ে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।
.
-দ্বীপের বুকটা ধুকবুক করতে থাকে মেয়েটা আজকেও কালকের মতো কিছু করবে না তো?তাহলে দ্বীপের মান ইজ্জত সব শেষ হয়ে যাবে।কিন্ত ওকে অবাক করে দিয়ে আদ্রিতা হটাৎ ওর….
.
-To Be Continued….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here