#রাজকুমারী_নীনা(ভৌতিক_গল্প)
#পর্ব_০৮
#লেখিকা__ফিহা_আহমেদ
নীনাঃ হ্যাঁ ও আমার বোন।কিন্তু আমরা একই মায়ের সন্তান নই।
মৃওিকাঃ তাহলে…….
নীনাঃ আমার যখন পনেরো বছর চলছে তখন আমার মা রানী ইলসা আকস্মিক মৃত্যুবরন করেন।মায়ের মৃত্যুর দুই বছর পর আমার বাবা রাজা নাহিয়ান প্রজাদের চাপে পরে এলিনা নামের একজন মহিলার সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
আমার বাবার দ্বিতীয় স্রী রানী এলিনার প্রথম স্বামীর মেয়েই হলো তৃনা।
মৃওিকাঃ রানী এলিনার প্রথম স্বামী মারা গেছেন নাকি।
নীনাঃ হ্যাঁ।
নীনাঃ আমার যখন একুশ বছর তখন বাবা ঠিক করলেন আমাকে রাজ্যের রানী বানিয়ে দিবেন।
কিন্তু রানী এলিনা আর আমার বোন তৃনা আমার রানী হওয়ার ব্যাপারটা মেনে নিতে পারেনি।তারা ষড়যন্ত্র শুরু করলো কিভাবে আমাকে আর আমার বাবাকে মারবে।
এক পর্যায়ে আমার সৎমা বাবার খাবারে বিশ মিশিয়ে আমার বাবাকে হত্যা করে।আর আমাকে ঘর বন্দী করে রাখে।
আমি বেশিরভাগ রাতে না ঘুমিয়ে থাকতাম।বাবা-মা দুজন আমাকে এই নরপশুদের কাছে রেখে গেছে। ভয়ে ঘুম আসতো না যদি আমাকেও কষ্ট দিয়ে মারে।
একদিন রাতে খাবার খাওয়ার পর আমি ঘুমে ঢলে পরি।তারপর আমার বোন তৃনা আমার ঘুমের সুযোগ নিয়ে আমার মুখে বালিশ চাপা দিয়ে আমায় মেরে ফেললো।
এনাঃ সত্যি মানুষ কতটা লোভী হলে এমন কাজ করতে পারে।ক্ষমতার লোভে নিজের বাবা আর বোনকে মারতে দ্বিধা বোধ করলো না।
রাজকুমারী নীনার কথা শুনে উপস্থিত সবার চোখে জল এসে পরলো।
মৃওিকাঃ কিন্তু তুমি বোতল বন্দী হলে কি করে।
নীনাঃ আমাকে মেরে ওরা আমার লাশটাও দাপন করেনি।আমার মৃতদেহ ওরা আমার ঘরেই রেখে দেয়।তখন আমার আত্মা প্রতিশোধের আগুনে জ্বলছিলো।
আমার আত্মা ওদের অতিষ্ট করে তুলছিলো।
তখন রানী এলিনা আর না পেরে কবিরাজ এনে আমায় বোতল বন্দী করলেন।
কবিরাজ যাওয়ার আগে বলে গেলেন,,, একমাত্র রাজবংশধর আমায় মুক্ত করতে পারবে।
মৃওিকাঃ এর সাথে আমি কিভাবে জড়িত।
নীনাঃ কারন তুমি রাজবংশের একজন।তোমার শরীরে রাজ রক্ত বইছে।
মৃওিকাঃ কি……….হ্ এইটা কি করে সম্ভব।
নীনাঃ সেটা আমি সঠিক জানিনা।কিন্তু তুমি রাজবংশের একজন তাই তুমি আমায় মুক্ত করতে পেরেছো।
মৃওিকাঃ কিন্তু রাজকুমারী নীনা রাজকুমারী তৃনা তার মাকে জীবিত করার কথা বলছে কেন।
নীনাঃ রানী এলিনাকে আমার বোন তৃনা অনেক বেশি ভালোবাসে।যখন তিনি মৃত্যুবরন করেছিলেন ওনাকে দাপন না করে কাঁচের বাক্সে রেখে দিয়েছিলো তৃনা।তৃনা এই পর্যন্ত নয়শো বিরানব্বই জনকে বলি দিয়েছে। মোট এক হাজার বলি দিলেই রানী এলিনার আত্মা জেগে ওঠবে। রানী এলিনার আত্মা জেগে ওঠলে সব শেষ হয়ে যাবে। পুরো পৃথিবী ধ্বংস করে দিবে মা মেয়ে মিলে।
মৃওিকাঃ রাজকুমারী তৃনাকে কি দাপন করা হয়নি।
নীনাঃ যে কবিরাজ আমায় বন্দী করেছিলো। ওই কবিরাজকে তৃনা বলে গিয়েছিল ওর মৃত্যুর পর ওকে যেন দাপন না করা হয়।ও চাইছে মৃত্যুর পর ও পুরো পৃথিবী রাজত্ব করতে।
জয়ঃ বাবা কি বাজে মেয়ে মরার পর ও দেশ শাসন করবে।
মৃওিকাঃ ওদের শেষ করার কোনো রাস্তা তো আছেই।
নীনাঃ হ্যাঁ আছে।ওদের আত্মার মুক্তি দিতে পারলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।
মৃওিকাঃ কিন্তু কিভাবে…….
নীনাঃ রাজপ্রাসাদের বামদিকে একটা বড় ঘর আছে।সেই ঘরটা একদম রাজপ্রাসাদের শেষ দিকে। ঘরটার বামপাশের দেয়াল ভাঙলে সেইখানে একটা জলপ্রপাত দেখতে পাবে।সেই জলপ্রপাতের ডান দিকটায় একটা সোনালী রঙের তলোয়ার দেখতে পাবে।তলোয়ারটি আনতে পারলেই ওরা মুক্তি পাবে।
ওই তলোয়ারটিতে মৃওিকার একফোঁটা রক্ত দিয়ে কোনোভাবে ওদের দুজনের বুকের মাঝে ঢুকিয়ে দিতে পারলেই ওরা দুজন মুক্তি পেয়ে যাবে।
তখন মৃওিকা তার পিছন থেকে একটা তলোয়ার বের করে,,,,,, তুমি কি এই তলোয়ারের কথা বলছো রাজকুমারী নীনা।
নীনাঃ হ্যাঁ।আমি এই তলোয়ারের কথা বলছি।আমার বড় বাবা রাজা হাসিব একজন বৃদ্ধ কবিরাজের থেকে আগেই জেনে গিয়েছেন ভবিষ্যতে এমন কিছু হবে। তারপর এক কবিরাজের পরামর্শে তিনি নিজের বুকের বাম পাশের হাড় থেকে এই তলোয়ার তৈরি করেছেন।তিনি নিজের রাজ্যের জন্য জীবন উৎসর্গ করেন।কিন্তু দুর্ভাগ্যবসত আমার সৎমা এলিনা আর তৃনাই ক্ষমতার লোভী।
মৃওিকাঃ আমার রক্ত কেন লাগবে।
নীনাঃ কারন তোমার শরীরে রাজ রক্ত বইছে। জীবন্ত মানুষের রক্ত লাগবে। তবে সেই মানুষটি রাজবংশের হতে হবে।
কিন্তু তুমি তলোয়ার পর্যন্ত কিভাবে পৌঁছালে।
তারপর মৃওিকা রাজকুমারী নীনাকে সব ঘটনা খুলে বললো।
নীনাঃ এখন আমাদের কাজ আরো সহজ হয়ে গেছে। তুমি তলোয়ারটি লুকিয়ে রাখো।
তখন পিছন থেকে কেউ বলে উঠলো,,,,,,,,,
চলবে………
[?ভুল হলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন?]
…………………………..???………………………
[কার্টেসী ছাড়া কপি করা নিষেধ]
#ফিহা আহমেদ?