রাত_যখন_গভীর Season:02,Part :04,05
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Part :04
হাজার প্রশ্নের মাঝে কোন উত্তর নেই। পরদিন সকালে,
অর্ক সবাই কে কল দেয়।
অর্ক বলেঃ দুস্ত তোমাদের সবাই কে নিজের বাসায় অনির্দিষ্ট কালের জন্য আসতে হবে। রিনি কে ফিরে পাওয়ার পর সবাই যার যার বাসস্থানে ফিরে যেতে পারবে।
সবাই সম্মতি জানালো।তবে সবাই জানালো বিকালের দিকে সবাই পৌঁছে যাবে।
অর্ক সকাল ৯ টার দিকে লেপটপ নিয়ে কাজ করছিল। কানে ইয়ারফুন দিয়ে গান চলছে। অর্ক কাজ করতে বসার আগেই লাবুকে মাছ ভাজা রান্না করতে বলে।অর্কের প্রিয় খাবারের তালিকায় মাছ ভাজা একদম প্রথমে।
লাবু আপন মনে কাজ করছে।তবে তার একটু পর মনে হচ্ছে, সে ছাড়া অন্য একজন রুমে আছে। লাবু একটা মুচকি হাসি দেয়।লাবু জানে এটা আর কেউ না অর্ক। একটু পর,
লাবু বলেঃ অর্ক ফ্রিজ খুলে মাছ গুলো বের করে দাও।
ফ্রিজ খুলার শব্দ পেল লাবু।লাবু কাজ করছিল তাই মাছগুলো পেছন দিক থেকে হাত দিয়ে এগিয়ে দেয় কেউ একজন । কিন্তু লাবুর চোখ কপালে উঠে গেল। যখন দেখে, যে মাছ দিল তার হাতে অস্বাভাবিক লোমশ।
লাবু মনে হচ্ছে, এটা তার অর্ক নই।অন্য কেই।কারণ তার অর্কের হাতে কোন লোম নেই।
তাহলে এটা কে?
এতক্ষণ ধরে কি করছে পিছনে দাঁড়িয়ে ?
দরজা তো বন্ধ করা ছিল কেমনে প্রবেশ করেছে??
লাবু সাহস করে পিছনে ফিরে তাকাই। যা দেখে তার জন্য একদম প্রস্তুত ছিল না। এটা অর্ক।কিন্তু অর্ক তো দেখতে এই রকম উদ্ভব নই।বড্ড অদ্ভুত দেখতে লাগছে অর্ক কে।একটু আগে ও তো লাবু তার অর্ক কে দেখেছে। ঠিকই ছিল ।লাবু হাত দিয়ে স্পর্শ করে দেখে অর্ক রুপি মানুষ টাকে।। সাথে সাথে সেই প্যারানরমাল জিনিস টা একটা ভয়ংকর রুপ ধারণ করে। সারা দেহে লোপ, চোখ জোড়া লাল, নক গুলো লম্বা লম্বা, ভয়ংকর শরীর কাঁপুনি দিয়ে একটা হাসি।লাবুর তো ভয়ে শরীর দিয়ে একটা ঠান্ডা স্রোত প্রবাহিত হয়েছে।
একটু পর, সেই প্যারানরমাল জিনিস টা লাবুর কাছে চলে আসছে।লাবু ভয়ে একটা চিৎকার দেয় অর্ক।অর্ক প্লিজ হেল্প মি।এই কথা বলে, লাবু সেন্স লেস হয়ে পড়ে যায়। লাবুর চিৎকার অর্কের কান অবধি পৌঁছাতে পারে নি। অর্কের কানে ইয়ারফুন ছিল।যেখানে হাই সাউন্ড দিয়ে গান চলছে। তবে, লাবুর চিৎকার শুনতে পেল, রাহাত হুজুর এর মা।
রাহাত হুজুর এর মা।তাড়াতাড়ি করে লাবুর বাসার দরজার সামনে আসে। কিন্তু দরজা বন্ধ। অর্ক কে অনেক ডাক দেই। কিন্তু কোন সাড়া দিচ্ছে না অর্ক।
অতঃপর,
রাহাত হুজুর এর মা লক্ষ্য করে। জানালা খুলা।তিনি আর দ্বিতীয় বার চিন্তা না করে।জানালা টা ভেঙ্গে ভেতরে প্রবেশ করে। তিনি লাবু কে খুজতে লাগলেন। অবশেষে লাবু কে পেলেন রান্না ঘরে।ওনি লাবুর কাছে গিয়ে যা দেখেন!!!!তা দেখে একদম শিহরিত!!!
লাবুর পুরো শরীর বাঁকা হয়ে গেছে। মুখ থেকে সাদা সাদা থুথু বের হচ্ছে। চোখ জোড়া বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে। শরীরের কাপড় কিছু টা ছিড়ে গেছে।
কি হতে চলছে?
সুমি ও জান্নাত ভয়ে চোখ বন্ধ করে আছে। একটু পর সকাল হবে,সকাল হলেই তাড়াতাড়ি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাবে।বেরিয়ে গিয়ে ফুচকা খেয়ে নিবে।জান্নাত ও সুমি টেনশন হোক বা ভয় পেলে ফুচকা খেলে একটু শান্তি অনুভব করে।ফুচকা খেয়ে বিকাল হতেই বেরিয়ে যাবে সোজা অর্কের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
সুমি ও জান্নাত একটু আগে যা দেখেলো।তা দেখে রীতিমতো ভয়ে চুপসে যায়।যার ফলস্বরূপ সকাল হওয়া অবধি চোখ বন্ধ করে আছে।
আসলে,গতকালকে কামালের কথা, ওর সুরক্ষিত থাকার কথা চিন্তা করে। জান্নাত ও সুমি, কামালের বউ রাবেয়া কে তাদের সাথে রেখে দেয়। রাবেয়া ও দ্বিমত করেনি।কামাল বাসায় ফিরে যাই।রাতে ৩ জনে রাতের খাবার খেয়ে নেই। তবে রাবেয়া এখন অনেকটা স্বাভাবিক আচরণ করছে।৩ জনে ঘুমিয়ে পড়লো।
মাঝ রাতে, আনুমানিক রাত ১ টার দিকে। জান্নাতের মোবাইলের শব্দে সুমির ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সুমি দেখে জান্নাত বেমালুম ঘুমাচ্ছে।সুমি জান্নাত এর মোবাইল নিয়ে দেখে, মুগ্ধের শখানেক কল ও টেক্সট দিয়ে মোবাইল একদম শেষ করে দিচ্ছে।
লাস্ট কয়েক একটা টেক্সট সুমি পড়ে দেখে, সেখানে লিখা ছিল,
,,,আশা ছিল মনে মনে
,,প্রেম করিব তোমার সনে
,,তোমায় নিয়ে ঘর বান্ধিব
,,,গহিন বালুর চরে গো
,,গহিন বালুর চরে,,,?
আরেকটা ছিল,
কেউ চেয়ে পাই না,আর যেটা পেয়ে হারায়,সেটা অবহেলা করে।একদিন সব ছেড়ে চলে যাবো,কারোর বিরক্তির কারণ হবো না?
পরের আরেক টা টেক্সট,
চিরচোনা তুমি অমৃত
,,ভালোবাসা।
অজান্তে ভাংচো কারো আশা।
,,তার কাছে তুমি সব,
মনে রেখো সব দেখচে রব
(কবিতা লেখক:কাইছার উদ্দিন বিজয়।)
সুমি উত্তর দেয় ঃ মুগ্ধ ভাইয়া, আপনি যাকে টেক্সট করে যাচ্ছেন সে বেমালুম ঘুমাচ্ছে। আচ্ছা, আপনার কষ্ট হয়না?গত ১ বছর ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছেন?
মুগ্ধ বলেঃ সুমি,আসলে কথা হচ্ছে।
অভ্যেস হয়ে গেলে ব্যথাকে ব্যথা মনে বলে মনে হয়না।(সমরেশ মজুমদার)।
মানুষ নিজেকে লুকিয়ে রাখতে পছন্দ করে,সে চায় তাঁকে খুঁজে বের করুক। বিশ্বাস কর,একদিন ঠিকই ওর মন মন্দিরে আমার ঘর হবে। আরেকটা কথা আছে না,
always say yes,i have a failure. I have many failure in my life but one day i will a big success in my life. And that day i will win my jannat Heart ?
জান্নাত এর প্রতিটি স্পন্দন আমার নাম প্রতিফলিত হবে।জীবনে আশা হারানো আমি শিখি নি।চেষ্টা করে যাবো।সেই মায়াবতীর মনে একটু স্থান করে নেওয়ার।
সুমি বলেঃ আচ্ছা ভাইয়া।গুড নাইট পরে কথা হবে।
সুমি কল কেটে দেয়। সুমি কিছু একটার কটমট শব্দ শুনতে পাচ্ছে। এমন সময় জান্নাত এর ও ঘুম ভেঙ্গে গেলো। তারা দুজন শব্দ টা শুনতে পেল।
জান্নাত বলেঃ এই রাবেয়া ভাবি কই?পাশে নেই কেন?
সুমি বেকুব হয়ে গেল। আসলেই এতক্ষণ সে খেয়াল করেনি।
তারা দুজন রাবেয়া কে পুরো ঘরে খুঁজে,কিন্তু কোথাও পেল না।
আবার রুমে প্রবেশ করে দুজনে।তবে কটমট শব্দ টা এখন ও হচ্ছে। দুজনে এতক্ষণে
বুঝতে পারে শব্দেটা তাদের বিছানার নিচের থেকে আসছে।
দুজনে এতক্ষণ লক্ষ্য করেনি।একটা রক্তের স্রোত বেরিয়ে আসে বিছানার নিচের থেকে।
দুজনে বিছানার নিচে উঁকি দেয়।তারা দেখে, ….
সুমি ও জান্নাত কি দেখছে?
আচ্ছা কিসর রক্ত বিছানার নিচে??
শব্দ টা কিসের?
রেশমির অবস্থা অনেকটা ভালো হয়েছে।তবে রেশমি এখন ও সে রাহাত রুপি মানুষ টাকে স্বপ্নের মধ্যে দেখে।রাতে ঘুমের মধ্যে বারবার জেগে ওঠে।খুব ভয়ংকর স্বপ্ন আসে রেশমীর। তবে রাহাত হুজুর তার বউ কে যথেষ্ট যত্ন করছে।রেশমী তার স্বামীর যত্ন পেয়ে একদম বাধ্য শিশুর মতো। রাহাত হুজুর যেমন বলছে তেমনই করছে।আজ কাল রাহাত হুজুর তার বউয়ের সাথে প্রতিযোগিতা করে।
**স্ত্রীর সাথে খেলার প্রতিযোগিতা করা সুন্নাত। রাসুল (সাঃ) এবং আয়েশা (রাঃ) রাত্রিতে সবাই ঘুমোলে দৌড় প্রতিযোগিতা করতেন( ইবনে মাজাহঃ১৯৭৯,আবু দাঊদঃ২৫৭৮)
স্বামীদের উচিত বউ কে শুধু শোবার সঙ্গী মনে না করে।সুখে,দুঃখের মধ্যে এক সাথে এক হয়ে থাকা।
?
হাবিব আজ ১ মাস ধরে চেষ্টা করে যাচ্ছে রিনির সন্ধানের জন্য। অবশেষে,আজ স্ফটিকে দেখে, রিনির একটা ভিউ ফুটে উঠেছে। রিনি ঘুমাচ্ছে।
হাবিব বলেঃ মেয়েটার মুখ একদম মলিন হয়ে গেছে।
হাবিব আরো তথ্য বের করতে চেষ্টা করছে। কিন্তু আর পাচ্ছে না।তবে এটা জেনে খুশি রিনি যে বেঁচে আছে।
হাবিব খুশিতে ডগমগ হয়ে অন্য রুমে গিয়ে একটা চিপস নিয়ে নিজের রুমে প্রবেশ করে। কিন্তু রুমে প্রবেশ করে তার চোখ জোড়া গেল আয়নার দিকে। আয়নার মধ্যে দেখে,একটা মেয়ে মুখ দেখতে পারেনি।অবশ্য মুখ দেখা যাচ্ছে না। মেয়ে টা হাবিবের বিছানার মধ্যে বসে আছে। হাবিব তার বিছানার মধ্যে দেখে কেউ নেই। কিন্তু আয়নার মধ্যে স্পষ্ট দেখতে পেল এখন ও পাচ্ছে একটা মেয়ে।
তবে বাস্তবে দেখতে পাচ্ছে না।
ব্যাপার টা কি বুঝার জন্য হাবিব আয়নার খুব কাছে চলে আসে।
অতঃপর, হাবিব আয়নার সামনে দাড়িয়ে খেয়াল করছে।কিন্তু, একটু পর এক মেয়ে টার মুখ ডেকে দেয় চুল গুলো দিয়ে। মুখ দেখা যাচ্ছে না। আয়নায় একদম হাবিবের সামনে চলে আসে সে মেয়ে টি।মেয়ে টার হাত দিয়ে হাবিব কে আয়নার মধ্যে ঢুকিয়ে ফেলতে চাইছ।
হাবিব কে রীতিমতো আয়নার ভিতরে টেনেই যাচ্ছে।
কিন্তু সেই আয়নার মধ্যে থাকা প্যারানরমাল জিনিস টার চেষ্টা সফল হয়নি।
কারণ হাবিবের ওমন গুঙিয়ে গুঙিয়ে শব্দ করাটা তার মা শুনতে পেল। সাথে সাথে রুমে প্রবেশ করে হাবিবের মা।তিনি
দেখেন,তার ছেলে আয়নার সাথে লেগে যাচ্ছে।লেগে যাচ্ছে বললে ভুল হবে। আয়নার ভিতরে ঢুকে যাচ্ছে।
হাবিবের মা আর দেরি না করে। বিভিন্ন ধরনের দোয়া পড়ে বোতলে থাকা পানিতে ফুঁ দেয়।
অতঃপর,
পানি গুলো হাবিবের উপর ছিটিয়ে দেয়। সাথে সাথে ধপাস করে বসে পড়ে হাবিব!!!!!!
হাবিব বলেঃ মা, কে সে?
হাবিবের মা বলেঃ বাবা তা আমি জানি না তবে মনে হচ্ছে খুব শক্তি শালী।
হাবিবের মা হাবিব কে তার রুমে নিয়ে গেল। হাবিব চোখ বন্ধ করে আছে। সে বিকাল হতে বেরিয়ে যাবে অর্কের বাড়ির উদ্দেশ্যে।
?
অনেক দিন ধরে প্রিন্সের আসে পাশে অন্ধকার হয়ে আছে। কারণ সেদিন মাছ ব্যাটা বোতল টা তার মুখে চালান করে দেয়। এখন প্রিন্সের জন্য মুক্তি পাওয়া অসম্ভব হয়ে গেছে।
কারণ একটা মাছের পেটে আছে। একথা কেমনে জানবে অন্য কেউ।
আর,রাহাত হুজুর এমন পদ্ধতি করে দিছে।যার ফলে কোন জিন ও মানুষের পক্ষে সম্ভব না।প্রিন্স (ইনতিয়াজের) অবস্থান জানা।
প্রিন্সের মনে এখন শুধু একটাই অপূর্ণ চাওয়া দেখা পাওয়া । শেষ বারের মতো তার প্রিয়তমা রিনির সাথে।কিন্তু পূর্ণ হবে তো?
নাকি এই অন্ধকার ই তার চিরজীবন এর সঙ্গী হবে???
প্রিন্সের আশে পাশে বিদঘুটে অন্ধকারে সে যে কেমনে এত দিন কাটিয়েছে।সে জানে, আল্লাহ পাক জানে।
প্রিন্স(ইনতিয়াজ) কিছু শব্দ শুনতে পাচ্ছে। কিন্তু……
চলবে….
রাত_যখন_গভীর
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Season:02
Part :05
প্রিন্স(ইনতিয়াজ) কিছু শব্দ শুনতে পাচ্ছে। কিন্তু,
প্রিন্স বুঝতে পারছে না কিসের শব্দ।
আসলে,সেদিন বড় মাছটা বেশ কিছু মাছ খাওয়ার সময় গাছপালা, লতাপাতা পেটের ভিতরে ঢুকে যায়। যার ফলে সব জিনিস একসাথে ঘর্ষণের সৃষ্টি করছে। তাই শব্দ টা উৎপন্ন হচ্ছে।
প্রিন্স(ইনতিয়াজ) এর আজকে খুব উদ্ভুত লাগছে। মাছটা অস্বাভাবিক ভাবে চলাচল করছে। রীতিমতো একদিক থেকে অন্য দিকে ছুটে চলছে। প্রিন্স মন থেকে চাইছে এই মাছের পেটের থেকে বেরিয়ে আসতে। কিন্তু শেষ মেষ পারবে তো?
হাবিব দুপুরে ওয়াশরুমে গেল।গোসল করবে। তার আগে,
সে প্রাকৃতিক কাজ করছিল। এমন সময়,ওয়াশরুমের গোসল করার অংশ টাতে। একটা মেয়ের কান্না করার শব্দ শুনা যাচ্ছে।হাবিব দের ওয়াশরুম টা অনেক বড়।তাই ভালো ভাবে হাবিব কে কান্না করছে দেখতে পেল না।
অতঃপর,
হাবিব প্রাকৃতিক কাজ শেষ করে আস্তে আস্তে সেদিকে এগিয়ে গেছে।গোসল করার এইদিকে একটা পর্দা আছে। হাবিব কিছু টা দ্বিধা নিয়ে পর্দাটা সরিয়ে দেয়। এমন সময় দেখতে পেল একটা মেয়ে।
লক্ষ্যনিয় বিষয় হচ্ছে,
মেয়ে টার মুখটা চুল দিয়ে ঢেকে রাখা।হাবিব কাছে আসতেই,
মেয়ে টা এবার চুপ হয়ে যায় ।
হাবিব বলেঃ কে আপনি? আমার ওয়াশরুমের মধ্যে কেমনে আসলেন???কি করেছেন এখানে?
মেয়ে টা আস্তে আস্তে তার মুখটা হাবিব এর সামনে আনে।
হাবিব এর সামনে, চুল দিয়ে ঢেকে রাখা, মুখটা এনে,
একটা অট্টহাসি দেয়।
হাবিবের ঘাঁ চমচম করছে।
হঠাৎ করে ওয়াশরুমের লাইট গুলো অন আর অফ হতে লাগলো। হাবিবের ভয়ে শরীর হিম হয়ে যাচ্ছে।
সেই মেয়ে টা আস্তে আস্তে মুখ থেকে চুল গুলো সরিয়ে নেই। হাবিব যা দেখে তা যদি একটা হার্ট এর রোগী দেখতো তাহলে মাস্ট বি হার্ট অ্যাটাক হতো।
অসম্ভব ভয়ংকর একটা মুখ। থুতনি টা ফুলে আছে। চোখ জোড়া লাল,নাক টা চেপ্টা, বণর্না করা যাবে না এমন অদ্ভুত দেখতে।
মেয়ে টা হাবিবের গলা টিপে ধরে। হাবিব আর সহ্য করতে পারে নি।
মাাা মাা মাা মাা বলে,ডাক দেয়। একটু পরে,
সেন্স লেস হয়ে পড়ে।
হাবিব বেঁচে আছে তো?
নাকি বাথরুমে মরা পড়ে আছে?
প্যারানরমাল জিনিস টা কি চাই?
রিনিকে স্ফটিকে দেখতে পাওয়ার পর থেকে কেন এমন হচ্ছে হাবিবের সাথে?
লাবুর পুরো শরীর বাঁকা হয়ে গেছে। মুখ থেকে সাদা সাদা থুথু বের হচ্ছে। চোখ জোড়া বড় বড় করে তাকিয়ে আছে সামনের দিকে। শরীরের কাপড় কিছু টা ছিড়ে গেছে।এমন অবস্থা দেখে রাহাত হুজুর এর মা কিছু টা ভয় পাই। সাথে সাথে অর্ককে ডেকে আনে।
অর্ক একদম বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে। অতঃপর লাবু কে কোলে করে বেড রুমে নিয়ে গেল। রাহাত হুজুর এসেছে। অর্ক ও রাহাত হুজুর মিলে দোয়া ও মন্ত্র পড়ে।
একটা পানিয় বানায়।যা লাবুর গায়ে ছিটিয়ে দেয়। লাবু একটু পর জেগে ওঠে। লাবু জেগে উঠার পরেই রাহাত হুজুর ও তার মা ঘরে চলে যায়।
লাবু বলেঃ অর্ক,আমি পানি পান করবো।
আর অনেক খিদে পেয়েছে। কিছু আন?
অর্ক বলেঃ তোমাকে একা রেখে কেমনে যাই?
লাবু বলেঃ তুমি রান্না ঘরে যাও। আমি ভিডিও কলে থাকি।
অর্ক এবার আস্বস্ত হলো।রান্না ঘরে গেল অর্ক।সাথে ভিডিও কলে আছে লাবু।
সব কিছু ঠিকই ছিল। কিন্তু অর্ক রুম থেকে বেরিয়ে গেছে ৯ মিনিট। তবে ১০ মিনিট হতেই। লাবুর মোবাইলে স্কিনটা কালো হয়ে গেছে।
হঠাৎ করে, মোবাইলে কিছু অস্পষ্ট স্বরে শব্দ বলছে আপনা আপনি।
মোবাইলে শব্দ গুলো ছিলঃ সালছা।মাই হা কো।।সাটোদি হা।
লাবু এসব হিজবিজি কথা বুঝতে পারছে না।একটু পর শব্দ বন্ধ হয়ে গেছে। মোবাইল থেকে আস্তে আস্তে ধোয়া বেরিয়ে আসে। পুরো রুমে ধোঁয়া হয়ে গেছে।
লাবু বারবার মোবাইল ঠিক করার চেষ্টা করছে। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না।এক পর্যায়ে রাগ উঠে গেল লাবুর।
তাই লাবু তার রাগ সামলাতে না পেরে মোবাইলটা কে দূরে ছুড়ে মারে । মোবাইল ছুড়ে মারার সাথে সাথে লাবুর মোবাইল থেকে আস্তে আস্তে কালো ধরনের ধোঁয়ার সাথে কি যেন বের হচ্ছে।
প্রথমে একটা লোমশ হাত বেরিয়ে আসে। আস্তে আস্তে সেই লোমশ প্যারানরমাল জিনিস টা বেরিয়ে আসে।
লাবুর দিকে আসেতে থাকে।
চলে আসতে আসতে, সেটা
একদম লাবুর কাছে চলে আসে। লাবু ভয়ে চুপসে যায়।
লাবু বলেঃ কি চাই?
চলে যান।
সেই প্যারানরমাল জিনিস টা লাবুকে কোন উত্তর না দিয়ে।
লাবুর বুকে স্পর্শ করতে। তার সেই লোমশওয়ালা হাতটা এগিয়ে দেয়। লাবু এতটা ভয় পেয়ে যায়। যে বিছানা থেকে নেমে দৌড়ে
যাওয়ার শক্তি ও হারিয়ে ফেলে। সেই প্যারানরমাল জিনিস টা অলমোস্ট লাবুর স্ফীত অংশে হাত দিয়ে বসেছিল। এটা দেখে লাবু চোখ বন্ধ করে। মনে মনে বলছে, আল্লাহ সহায়তা করো।
কিন্তু লাবু শুনতে পেল, অর্ক বলছে,প্রিয়তমা চোখ জোড়া খুলে দেখো।
তোমার জন্য নাস্তা আনছি।।।আর চোখ বন্ধ করে রাখছো কেন?
ঘুম আসছে নাকি?
ধোঁয়া গুলো আর নেই। মোবাইল টা নিচে পড়ে আছে। তাহলে কি হলো এগুলো!
তাহলে এতক্ষণ ধরে যা ছিল তা কি কল্পনা ?
আর যদি সত্যি হয়!তাহলে,
কি চাই সে প্যারানরমাল জিনিসটা?
আজ যদি অর্ক ঠিক সময় না আস্তো তাহলে কি হতো?
এটা ভাবতেই, লাবুর গাঁ শিহরিত হয়ে উঠে।।।
সুমি ও জান্নাত এতক্ষণ লক্ষ্য করেনি।একটা রক্তের স্রোত বেরিয়ে আসছে তাদের বিছানার নিচের থেকে।
দুজনে বিছানার নিচে উঁকি দেয়।তারা দেখে একটা খোলা চুলের মেয়ে তাদের বিছানার নিচে।কি যেন করছে?
সুমি তাদের রুমের ড্রিম লাইট জ্বালিয়ে দেয়। সেই হালকা আলো তে সুমি ও জান্নাত দেখে ,রাবেয়া কি যেন কটমট করে শব্দ করে খাচ্ছে।
জান্নাত আরেকটু চোখ নাড়িয়ে দেখে পাশে পরে আছে সাদা সাদা লোম।
জান্নাত বলেঃ সুমি আমার সাথে আই?
সুমি জান্নাত এর সাথে তাদের ড্রয়িং রুমে প্রবেশ করে।জান্নাত , সুমিকে তাদের খরগোশ এর খাঁচার দিকে এগিয়ে নিচ্ছে।
সুমি বলেঃ কই নিচ্ছেস?
এই রুমে কেন আনলি?
জান্নাত বলেঃ চুপচাপ সাথে আই।
খাঁচার সামনে আসে।
দু’জনে দেখে তাদের খরগোশ টা নেই।
সুমি বলেঃ আমাদের খরগোশ টা কোথায়?
জান্নাত আবার শোবার ঘরে নিয়ে গেল সুমিকে।
জান্নাত সুমি কে বিছানার নিচে পড়ে থাকা সেই সাদা লোম দেখিয়ে দেয়। তারা এতক্ষণে বুঝতে পারে, এই রক্ত তাদের প্রিয় খরগোশ এর।
সুমি আস্তে আস্তে বলে উঠে,বিছানার নিচে কে?
হালকা লাইটের মধ্যে স্পষ্ট দেখতে পেল, রাবেয়া চোখ জোড়া লাল লাল করে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। এটা দেখে তারা দুজনে এক দৌড় দেয়।
তারা দুজন একদম তাদের বাসার বাইরে চলে আসে। আর নিজেদের লুকিয়ে রাখে একটা ঝোপঝাড়ে।সকাল হলেই তারা বেরিয়ে যাবে।কিন্তু রাবেয়া তখন ঘর থেকে বেরিয়ে আসে!
ভয়ংকর অগোছালো চুল, রক্ত মাখা মুখ।
আর বলছে,কই তোরা?
কই গেলি?
সামনে আই????
কি হবে সুমি ও জান্নাতের সাথে ????
শেষ মেষ কি পারবে রিনির রহস্য উদ্ধার করতে?
জিন রাজা (রশিদ) খুব চিন্তিত। কারণ তার বউ জিন(লোভা) দরজা আটকে বসে আছে। সেদিনের পর থেকে। একদম বের হচ্ছে না।জিন রাজা চিন্তায় পড়ে যায়।
লোভা কি তাহলে ছেলের জন্য আমাদের উপর রেগে আছে?
কিন্তু প্রিন্স যা করলো,তার শাস্তি সে পেয়েছে!তার কর্মের ফল সে পেল।
তাহলে কি লোভা এটা মানতে নারাজ তার ছেলে যে অন্যায় করেছে????
তার কি ধারণা তার ছেলে নির্দোষ?
চলবে….