রাত_যখন_গভীর Season:02,Part :20,21
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Part :20
গান শেষ হতেই রিনি প্রিন্সের দিকে তাকাই। প্রিন্স বলেঃ রি…….নি।আজকে আবার মনটা মাতাল হয়ে গেছে। তোমার সেই ঘায়েল করা কন্ঠে।
রিনি বলেঃ এত বছর আগে শুনছেন এখনো মনে আছে? আমার সেই কন্ঠ স্বর!
প্রিন্স আবার বলেঃ রিনি,
” আমার কল্পনা জুড়ে
যে গল্প রা ছিলো
তবুও কি করে বলো তোমায়
ভুলে থাকি।।”
তোমার ব্যাপারে প্রতিটি কথা হৃদয়ে গাঁথা আছে।
প্রিন্স বলেঃ রিনি আরেকটা চাওয়া। আজ কের সব কিছু আমার মতো হয়েছে। কিন্তু আমার মন তিব্র ভাবে চাইছে তোমাকে লাল শাড়ী পরিধান করে দেখবো।
রিনি বলেঃ আচ্ছা। শাড়ী দিন পড়ে আসি।
প্রিন্স বলেঃ তাঁবু তে যাও।রাখা আছে শাড়ী ও বাকি জিনিস।
আর শুন,
“ব্যর্থ হয়ে থাকে যদি
প্রণয়ের এতো আয়োজন,
আগামী মিছিলে এসো
স্লোগানে স্লোগানে হবে,
কথোপকথন।
আকালের এ-ই কালে
সাধ হলে পথে ভালোবাসা,
ধ্রুপদি পিপসা নিয়ে আসো,
যদি।
লাল শাড়ী তোমার পড়ে এসো!!!
(কবিতা লেখকঃ বিজয়)
রিনি চুপচাপ চলে গেল তাবু তে। খুব সুন্দর একটা শাড়ি রাখা আছে। রিনি প্রস্তুত হচ্ছে। তবে আজকে শুধু মাত্র প্রিন্স (ইনতিয়াজ) কে দেখানোর জন্য প্রস্তুত হচ্ছে। এই সাজ প্রিন্সের নামে উৎসর্গ করে তৈরি হচ্ছে রিনি।
প্রিন্স চিন্তা করছেঃ আচ্ছা রিনি কি আমাকে নিয়ে চিন্তা করে?
আমি কি তার মনে সুক্ষ কোন অনুভূতি তৈরি করতে পারছি?
আমার অপরাধ কি কিঞ্চিৎ পরিমাণ মাফ করেছে!
প্রিন্স এসব ভেবে চলছে আপন মনে। প্রিন্সের ঘুর কাটে কারো নুপুরের শব্দে।ঝুনঝুন নুপুর এর শব্দ।
প্রিন্স পাশ ফিরে তাকিয়ে আছে। প্রিন্স এটা কাকে দেখছে।রিনির এই রুপ দেখে বুকের পাঁজর টায় যুদ্ধ লেগে গেছে প্রিন্স এর । ঢাল তলোয়ারের শব্দ গুলো ও স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছে প্রিন্স।
প্রিন্স বলেঃ মেয়ে টা তো মানুষ নই যেন পরি।আমার শেষ ইচ্ছে টা ও পূর্ণ হলো। এই মায়াবতী কে ভালোবাসি। তবে সে আমার ভালোবাসা তে সাড়া দিচ্ছে না। জীবন টা বেদনা।
রিনি প্রিন্সের সামনে এসে দাড়িয়ে আছে। প্রিন্স রিনি কাছাকাছি এসে দাঁড়ায়। প্রিন্স রিনির হাতটা ধরতে যাচ্ছি লো।রিনি হাতটা সরিয়ে নিতেই পায়ে কিছু একটা লেগে যাই।
রিনি মাটির উপর পড়েই যাচ্ছিলো।তার আগেই প্রিন্সের গেঞ্জি টা আকড়ে ধরে। কিন্তু প্রিন্স তাল সামলাতে পারেনি।প্রিন্স এর গেঞ্জি রিনির পরে যাওয়া আটকাতে পারে নি।
ফলে রিনি মাটিতে পড়ে যায়। তার উপর প্রিন্স পড়ে গেল। প্রিন্স এই সুযোগে রিনিকে ভালো ভাবে দেখে নিচ্ছে। খুব কাছ থেকে। এই সুযোগ যদি জীবনে আর না আসে?
তাই প্রিন্স সুযোগের সঠিক প্রযোগ করছে।দেখে নিচ্ছে চোখ ভরে তার রিনি কে।।।
অন্য দিকে,
রিনি কৈ মাছের মতো নড়াচড়া করছে।প্রিন্স এর পুরো শরীরের ভর রিনির উপর পড়েছে।
রিনি বলেঃ হা করে তাকিয়ে না থেকে আমার উপর থেকে সরেন।আমার ধম বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে আপনি আমার উপর থাকলে আমার মরণ হবে ধম বন্ধ হয়ে।
প্রিন্সের হুঁশ ফিরে আসে।রিনির কথার ঝাড়ি তে। প্রিন্স বারবার এই মেয়ে টাকে দেখে কল্পনা তে হারিয়ে যাই।ভুলে যায় সব কিছু ।
আসলেই, এই মেয়ে জাদু জানে। জাদু জানে বলেই তো বারবার চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে আমাকে।।
প্রিন্স উঠে দাড়ালো।প্রিন্স নিজের হাত বাড়িয়ে দেয় রিনির উদ্দেশ্যে।রিনি প্রিন্স এর হাত ধরে উঠে।
প্রিন্স বলেঃ ধন্যবাদ আজকের দিনটার জন্য। আমার কাছে এটা একটা শ্রেষ্ঠ মূহুর্তের মধ্যে একটা।
রিনি বলেঃ আপনাকে ও ধন্যবাদ আমাকে এতো সুন্দর সারপ্রাইজ দেয়ার জন্য।
প্রিন্স বলেঃ চল তাহলে। এবার ঘরে ফিরে যায়। কাল সকালে আমরা ফিরে যাবো পৃথিবীতে।
প্রিন্স কথা শেষ করতেই রিনি বলেঃ তাহলে, ফিরে যাওয়া যাক আপাতত আপনার নীড়ে।
এই বলে, রিনি…….
?
?
?
রহমান জিন বলেঃ হায় আল্লাহ। দরজা বন্ধ!
তার মানে মেয়ে টা প্রায় দেড় দিন মতো ওয়াশরুমের মধ্যে।
জিন রা থাকতে পার ওয়াশরুমের মধ্যে।জিনের একটা প্রিয় জায়গা অবশ্য । কিন্তু ও তো মানুষ?
বেঁচে আছে তো?
রহমান জিন আস্তে করে লক খোলে।দরজা খুলে দেখে।
একটা ভেপসা গন্ধ বের হচ্ছে। হয়তো এতটা সময় ধরে ওয়াশরুম বন্ধ ছিল তাই।
রহমান জিন ( শয়তান প্রিন্স) ওয়াশরুমের মধ্যে ঢুকে কিন্তু যা দেখে। তা আশা করে নি।রহমান জিন এর বুকে একটা মুচড় দিয়ে উঠে।
সুমির শরীর পুরো টা ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। শরীর টা এতক্ষণ ধরে পানিতে ছিল তাই হয়তো এমন হলো।বাথটাব এর পানিগুলো দেখে, লাল রক্তের বন্যা বয়ে গেছে মতো লাগছে।
রহমান জিন তাড়াতাড়ি সুমির কাছে চলে গেল। শ্বাস প্রশ্বাস আছে নাকি দেখে।
রহমান জিন বলেঃ আমি তো এমন মারাত্মক কিছু ঘটোক তা চাইনি।মেয়ে টার সাথে রাগের ফলে বড্ড খারাপ আচরণ করে ফেলেছি।
রহমান জিন দেখে মৃদু ভাবে শ্বাস নিচ্ছে সুমি। থেমে থেমে সুমির শরীর টা কাপছে।
রহমান জিন সুমি কে কোলে তুলে নেই। রুমে নিয়ে গেল।
রহমান জিন বলেঃ ওর তো কাপড় চেঞ্জ করতে হবে। তাছাড়া শরীর পুরো ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। চোখ জোড়া বন্ধ। গোলাপি রঙের ঠোঁট টা ও কালো হয়ে গেছে।
রহমান জিন বলেঃ ওর কাপড় গুলো কেমনে চেঞ্জ করবো?।কিছু বুঝতে পারছেনা।
সুমি শরীর কাঁপুনি দিচ্ছে। রহমাান বলেঃ এই অবস্থাই আর বেশি সময় থাকলে মারা যাবে ও।যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে।
রহমান জিন একটান দেয় সুমির লেহেঙ্গার জড়িয়ে থাকা ওড়না তে।সুমির দেহ টা ওড়না নিয়ে ফেলার কারণে দেহের বেশ কিছু অংশ দেখা যাচ্ছে।মেয়ে টা ধবধবে সাদা।
রহমান জিন একটা চাদর জড়িয়ে দেয় সুমির গায়ে। তারপর, একটা সাদা শার্ট বের করে।আর একটা প্লাজু বের করে।এ সব কিছু কিনে রেখে ছিল রহমান তার রিনির জন্য। কিন্তু আজ এসব অন্য একজন পড়বে।
রহমান জিন চাদরটা তুলে নেই। নিজের চোখ বন্ধ করে ব্লাউজ টা খুলে দেয়। শার্ট পরিয়ে দেয়। সুমির কাপড় চেঞ্জ করার পর ও শরীরের কাঁপা টা কমে নি।
রহমান জিন চিন্তায় পড়ে যায়। কি করবে এখন?
তাড়াতাড়ি তেল দিয়ে হাত পা মালিশ করছে।কিন্তু কোন ফাইদা হচ্ছে না।একটু গরম হয়ে আসে কিন্তু আবার ঠান্ডা হয়ে যাই।
রহমান জিন বলেঃ
যদি সুমি কে সুস্থ করতে হয়।তাহলে তার শরীর আমার
স্পর্শ করতে হবে।সব উপায় অবলম্বন করে দেখলাম। কিন্তু মেয়ে টা ঠিক হচ্ছে না।তাছাড়া সুমির উষ্ণ তা দরকার।যা এই মুহূর্তে আমি ছাড়া কেউ দিতে পারবে না।কিন্তু আমার মন প্রাণ জুড়ে আছে রিনি।আমি ওকে কেমনে স্পর্শ করবো!
রহমান সোফাতেই বসে পড়ে। কি করবে সে?
মাথা টা কাজ করছে না!
আর কোন উপায় ও নেই সুমি কে ঠিক করার!!!!
তাছাড়া,
আজ দুদিন হলো বিয়ে হলো মেয়ে টাকে রহমান ভালো ভাবে দেখে ও নি।এখন ভালো ভাবে দেখছে।
আর চিন্তা করছে কি করবে?
সুমিকে বাঁচাতে স্পর্শ করবে নাকি যেমন আছে তেমনই রেখে দিবে?
ছেড়ে দিবে ভাগ্যের হাতে!!!
?
?
রাবেয়া বলেঃ আচ্ছা কামাল আর কদিন এভাবে?
আমার মেয়ে টা কে কি পাবো না?
রাবেয়া অর্কের বাসায় আসার পর থেকে একদম নরমাল হয়ে গেছে। আগের মতো আচরণ করছে।অদ্ভুত ব্যাপার!
কামাল বলেঃ হুহ। চিন্তা করি ও না।রিনি না পাওয়া অবধি এখানে থাকবো।তার উপর এখন সুমি কে ও পাওয়া মুশকিল হয়ে পড়েছে।
আশার প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখতে হবে।না হয় জীবন যুদ্ধ হেরে যাবো গো রাবেয়া।।।
?
রানি ( লোভা) বলেঃ আচ্ছা রশিদ( রাজা মশাই)
তোমার কাছে হাবিব ছেলে টাকে কেমন লাগে?
রাজা বলেঃ হুম ভালো লাগে। ছেলে নম্র ও ভদ্র।
জিন রানি বলেঃ আমার মেয়ে শাম্মির জন্য সে কেমন হবে?
দুজন কে একসাথে একদম সেই জুটি লাগে।
রাজা মশাই বলেঃ ভেবে দেখেনি।তবে রিনি কে ফিরে পেলে।সুমি র ও যদি ফিরে আসার সম্ভাবনা থাকে তখন এই বিষয়ে ভেবে দেখবো।তাছাড়া এখন কারো মন ভালো নেই।
??
হ্যালো মা?
জান্নাত এর মা মিসেস রেহেনা। কল দিয়ে ছে।
রেহেনা( জান্নাত এর মা) বলছেঃ কখন ফিরে আসবি? তুর জন্য মন খারাপ হচ্ছে।
জান্নাত বলেঃ মা ঠিক বলতে পারছি না।
রেহেনা বলেঃ এসব কাজ করে করে থাক। বিয়ে শাদি কি করতে হবে নাকি? নাতি নাতনির মুখ কি দেখতে দিবি না নাকি?
জান্নাত বলেঃ মা প্লিজ। এই বিষয়ে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করছে না।
রেহনা বলেঃ তুর বাবা একজন কে পছন্দ করেছে।তুর ছবি দেখেছে তারা।তুকে ও পছন্দ করেছে।তুর সাথে দেখা করে পাকা কথা বলবে।তাড়াতাড়ি ফিরে আই।
জান্নাত বলেঃ মা রাখি।সালাম।ভালো থেকো।নিজের যত্ন নিবে।বাই।
জান্নাত এর শরীরে যে রহমান ভর করে ছিল তা জান্নাত বুঝতে পারে নি।মুগ্ধ ও সেদিন জান্নাত এর কাছাকাছি ছিল না।তাই সে ও জানে না।
কল রাখতেই মুগ্ধ আসে রুমে ।
মুগ্ধ বলেঃ কি হল? মন খারাপ নাকি? তোমার মা কি বলেছে?
জান্নাত বলেঃ সব কি আপনাকে বলতে হবে নাকি? একটু প্রশ্রয় কি দিছি মাথার উপর উঠে গেছেন। এজন্য ছেলে দের লাই দিতে নেই। নিজের চরকায় তেল দেন।আমাকে নিয়ে চিন্তা না করলেও চলবে।
মুগ্ধ বলেঃ যা ইচ্ছে বল।তবে তোমার এসব কথা আমার মধুর লাগে। নিজের চরকায় তো তেল দিচ্ছি দেখছো না!
জান্নাত চোখ রাঙিয়ে তাকিয়ে আছে মুগ্ধের দিকে।
?
হাবিব বলেঃ শাম্মি আর কতক্ষণ বসে থাকবে? যাও রেস্ট নাও।আমি কাজ করি।কিছু জানতে পারলে তোমাকে বলবো।
শাম্মি বলেঃ আপনি একা কাজ করবেন? তাছাড়া সবাই তো উঠে গেল। তারা তো হাল ছেড়ে দিল মনে হচ্ছে?
হাবিব বলেঃ না তেমন ব্যাপার না।দেখো আবার চেষ্টা করবে।আজ আবার রাত ভর চেষ্টা করবে।কাল ভোরের আলো তে ইনশাআল্লাহ ভালো কিছু হবে।তুমি যাও রেস্ট নাও।
শাম্মি বলেঃ আচ্ছা!
?
লাবু বলেঃ রেশমি আমার চিন্তা হচ্ছে না জানি সুমির সাথে কি হচ্ছে?
রেশমি বলেঃ ভাবি মেয়ে টার ভাগ্যে এটাই ছিল। হুহ কিছু তো করার নেই।
অর্ক বলেঃ হাল ছাড়লে হবে না।চেষ্টা করতে হবে। একবার না পারলে বারবার চেষ্টা করবো আমরা।সুমি কে ফিরে আনবো সাথে রিনি কে ও ফিরে পাবো দেখো।
রাহাত হুজুর বলেঃ হুহ।ঠিক বলছো অর্ক। আজ রাতে নিজের বেস্ট দিবো।যত বিপদ হবে হোক।আজ কোন একটা কিছু করতেই হবে।এর একটা বিহীন করতে হবে।
লাবু বলেঃ
ইনশাআল্লাহ সব ভালো মতো হবে।দেখে নিও।
রাতের খাবার শেষ করে সবাই বসে আছে। ড্রয়িং রুমে গোল করে বসেছে সবাই।
সেই ক্ষণে,
………..
চলবে…….
রাত_যখন_গভীর
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Season:02
Part :21
************
প্রিন্স কথা শেষ করতেই রিনি বলেঃ তাহলে, ফিরে যাওয়া যাক আপাতত আপনার নীড়ে।
এই বলে, রিনি, প্রিন্স( ইনতিয়াজ) কে জড়িয়ে ধরে। প্রিন্স এর মনে একটা স্বস্তি আসে। প্রিন্স একটা মুচকি হাসি দেয়।
একটু পর প্রিন্স বলেঃ রিনি চলে এসেছি।কালকে ভোরে আমরা চলে যাবো।ধন্যবাদ আমার অনুরোধ রাখার জন্য।
রিনি বলেঃ স্বাগতম।আপনার কথা কি শেষ?
শেষ হলে আমি ঘুমাতে যাই!
প্রিন্স বলেঃ অনেক কথা আছে জমে,মনের কুটিরে, একদিন না হয় দুজনে পাশে বসে শুরু করবো।একদিন না হয় আবার দুজনে খোলা আকাশ দেখবো!!!
হাহা জানি, এই ইচ্ছে টা নিছক আমার স্বপ্ন। এই স্বপ্ন রাতে ঘুমে দেখার মতো স্বপ্ন। কারণ, সকাল হতেই, এর রেশ কেটে যাবে।
রিনি বলেঃআপনি আসলে একটা পাগল!
প্রিন্স বলেঃ হা আমি পাগল। যখন আমার কাছে থাকবে না।তখন দেখবে এই পাগলের কথা গুলো মনে পড়বে তোমার।এখন আমার সাথে আছো তাই অনুভব করতে পারছো না।একদিন ঠিকই অনুভব করতে পারবে।
রিনি বলেঃ হয়তো বা।তো এখন কি আমি যেতে পারি?একটা পারফেক্ট ঘুম চাই আমার।তাছাড়া,
আমি অনেক খুশি। কারণ কাল আমার বাসায় ফিরে যেতে পারবো।হুহ্।
প্রিন্স বলেঃ শেষ একটা কথা রিনি।
রিনি,আমি চাই তুমি সব সময় সুখে থাকো।কষ্ট যেন তোমাকে স্পর্শ না করে। আমি জানি, না পাওয়ার কি বেদনা।অনুভব ও করতে পারি,একাকিত্বের যন্ত্রণা। আমি জানি অশ্রু ভেজা নয়নে কিভাবে হাসতে হয়।আমি কষ্ট কে আপন করে নিয়ছি।তুমি পারবেনা সহ্য করতে আমার মতন করে। তাই তুমি সুখে থেকো।তোমার কষ্ট গুলো আমাকে দিয়ে।
সব সময় খুশি থাকবে রিনি। শেষ বার বলছি, ভালবাসি অনেক। রিনি রিনিনি নি iii love youuu কিছু টা চিৎকার করে।
রিনি বলেঃ ধন্যবাদ, ভালবাসার জন্য। শুভ রাত্রি।
রিনি ঘুমাতে চলে গেল। প্রিন্স এর আজকের আরেকটা রাত কাটবে নির্ঘুম।প্রিন্স বসে আছে বারান্দায়।
বারান্দায় বসে বসে,
মনে করছে কাটানো সময় গুলো। তখন,
প্রিন্স বলেঃ কাল থেকে দুজন দু প্রান্তে থাকবো হয়তো। তোমার জন্য এই অবুঝ হৃদয়ে হাহাকার থাকবে আজীবন রিনি।তবু মনে হয় মিটবে না এই জনমে, কাছাকাছি এসে খুব ভালোবেসে দুজন দুজনকে একটুখানি আলতো করে ছুয়ে দেবার স্বাদ।
প্রিন্স এর দুচোখ দিয়ে অশ্রুতে টলটল করে ঝরছে জল। এ কান্না যেন বিচ্ছেদ এর।প্রিন্স রিনির রুমে প্রবেশ করে। রিনি ঘুমাচ্ছে। প্রিন্স সোফায় বসে যাই। আর রিনির ঘুমন্ত মুখ টা দেখছে।কারণ আজই শেষ দেখা ভোরের আলো ফুটবার সাথে সাথে ফিরে যাবে রিনি নিজ নিড়ে।রিনির দিকে এক নজরে পলক না ফেলে তাকিয়ে আছে।তখনই,
প্রিন্স বলেঃ আঘাত করো, আঘাত করো আমাকে। এমন হৃদয় আর পাবে না।ভালোবাসা মৃত্যুর মতো ছড়িয়ে বীজ, আমাকে ছেড়ে সে যাবে না।
প্রিন্স এর প্রতিটি হাহাকার এর সঙ্গী হচ্ছে এই নিস্তব্ধ রাত।
প্রিন্স আবার বলেঃ ভালোবেসে এই মন,তোমাকে চাই সারাক্ষণ। আছো তুমি মনের মাঝে, পাশে থাকবে না জানি সকাল সাঝেঁ!!
বলো রিনি কি করে ভুলবে এই মন, তুমি যে আমার জীবন। তোমাকে অনেক ভালোবাসি রিনি। অনেক। একবার সাড়া দিয়ে দেখতে। কতটা আগলে রাখতাম তোমাকে।
প্রিন্স সারারাত তাকিয়ে ছিল রিনির দিকে।শেষ প্রহরে ঘুমিয়ে পড়লো নিজের অজান্তেই।
ভোরের প্রথম আলো তে রিনির ঘুম ভেঙ্গে গেলো। রিনি রুমে দেখে প্রিন্স সোফায় ঘুমিয়ে আছে। রিনি প্রিন্স এর কাছে চলে গেল। রিনি দেখে প্রিন্স এর চোখ ফোলা হয়ে আছে।
রিনি বুঝতে পারছে,প্রিন্স কান্না করছে। রিনি আসলে, সিদ্ধান্ত হীনতার মধ্যে আছে। রিনি আসলে, জানে না তার মন কি প্রিন্স কে চাই নাকি চাইনা।তবে কেমন জানি একটা ভালো লাগা কাজ করে। ভালো লাগাকে ভালোবাসা বলা,নিচক একটা বোকামি ছাড়া কিছু না।
রিনি প্রিন্স কে একটা চাদর দিয়ে জড়িয়ে দেয়। তারপর
রিনি নামাজ পড়ে বেলকনিতে দাঁড়িয়ে আছে।ভোরের আলো তে প্রকৃতি কে অপুর্ব লাগছে।তাছাড়া থেমে থেমে একটা ঠান্ডা স্রোত অতিবাহিত হচ্ছে। বেশ লাগছে রিনি।আজ মনটা ফুরফুরে লাগছে রিনির।আসলে, সকালে ঘুম থেকে উঠলে এই দৃশ্য চোখে পড়ে। এমন পরিবেশে যে কেউর মন ফুরফুরে লাগবে।
প্রিন্স এর ঘুম ভেঙ্গে গেলো। ঘুম থেকে উঠে দেখে রিনি বিছানাতে নেই।ভোরের আলো ফুটে উঠেছে।
প্রিন্স তাড়াতাড়ি দুমগ কফি নিয়ে রিনিকে সারা ঘর হন্য হয়ে খুঁজেছে।
অবশেষে, বেলকনিতে এসে দেখে, রিনি দাঁড়িয়ে আছে।
প্রিন্স বলেঃ রিনি, তুমি এখানে?তোমাকে সারা ঘর খুঁজতে ছিলাম। এবার,
নাও কফিটা শেষ করো।আমদের বের হতে হবে।
দুজনে তাড়াতাড়ি কফি শেষ করে নেই।প্রিন্স কিছু বলার জন্য মুখ খোলার আগেই রিনি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে। কারণ রিনি জানে এই একমাত্র পদ্ধতি প্রিন্স এর সাথে কোথাও মহূর্তে যাওয়ার।
প্রিন্স মনে মনে বলছে,ছেড়ে তো যাবেই,
কিন্তু
মায়া বাড়িয়ে দিচ্চো কেন!
তোমার ভালবাসাতে জ্বলছি।এবার এই মায়ার দাহনে ও কি জ্বালাবে?????
প্রিন্স ও রিনি দুজনে চোখ বন্ধ করে। মুহূর্তের মধ্যে রিনির বাসায় প্রবেশ করে। কিন্তু বাসায় কেউ ছিল না।তাই আবার রিনি শক্ত করে জড়িয়ে ধরে প্রিন্স কে।
আবার যাত্রা শুরু করে,অর্কের বাসার উদ্দেশ্যে।।।।।
?
?
আর চিন্তা করছে কি করবে?
সুমিকে বাঁচাতে স্পর্শ করবে নাকি যেমন আছে তেমনই রেখে দিবে?
ছেড়ে দিবে ভাগ্যের হাতে!!!
রহমান( শয়তান প্রিন্স জিন) অনেক চিন্তা করে। অবশেষে সিদ্ধান্ত নিল।মেয়ে টাকে বাঁচাবে।এই ভাবে চোখের সামনে কাউকে মরতে দেয়া যায় না।
রহমান চাদরের প্রবেশ করে।দুই মানবি একি চাদরের আচ্ছাদিত হয়ে আছে।
সুমি এখনো কেঁপে চলছে। হাত, পা ঠান্ডা হয়ে আছে। রহমান সুমির গলাতে স্পর্শ করছে। সুমি রহমানের স্পর্শ পেয়ে কেচুর মতো নড়াচড়া করছে।
আবার কোমরে স্পর্শ করছে, দুজনের ঠোঁট জোড়া এক করে দেয় রহমান। বেশ কিছুক্ষণ পর সুমি রেসপন্স করে।সুমির হাত,পা স্বাভাবিক তাপমাত্রা তে ফিরে আসছে।শরীর এর ফ্যাকাশে ভাব টা চলে গেল।
সাথে সাথে রহমান উঠে পড়ে বিছানা থেকে ।সুমিকে চাদর দিয়ে ভালো ভাবে জড়িয়ে দেয়। যাতে গরম উষ্ণতা থাকে।রহমান অবশ্য চাইলে আরও অনেক কিছু করতে পারতো কিন্তু সে চাইনা তার অস্তিত্বে রিনি ছাড়া অন্য কেউ তার অস্তিত্ব জানান দিক।রহমান চাই তার মাঝে শুধু যেন রিনির বসবাস হোক।
তারপর রহমান ফ্লোরে একটা চাদর নিয়ে ঘুমিয়ে পড়লো।ঘুমিয়ে বললে ভুল হবে। শুয়ে পড়েছে। তাছাড়া প্রিন্স রহমান জানে সুমি এখন আশঙ্কা মুক্ত।
রহমান রিনির চিন্তায় বিভোর হয়ে আছে। রহমান বলেঃ রিনি,
“দেখো আজ মেঘ করছে খেলা।
দেখো আজ মেঘের খেলা,
শূন্য সাগরে এসে থেমেছে ঢেউ,
আছি একা,
পাশে নেই তুমি।।।
(কবিতা লেখক ঃ বিজয়)
রহমান আবার বলেঃ রিনি আজকে একটা কথা মনে পড়ছে কেউ একজন বলেছিল আমাকে।
Piyaar
Bhi unhi logo,
Se hota hai.
Jinko paane ke koi,
Chance,
Hi nahi hota…
রিনি আমি কি হারিয়ে ফেললাম তোমাকে?
আমি তো চাইনি অন্য কাউকে। তাহলে নিয়তি কেন।,অন্য একজন এর সাথে আমার বিয়ে করালো!!!আমি তো তোমাকে আগলে রেখে ছিলাম। শেষ মূহুর্তে এসে সব মাটি হয়ে গেছে।।
রহমান চোখ জোড়া বন্ধ করে আছে। ভাবছে, রিনির সাথে কাটানো মূহুর্ত গুলো। ভাবতে ভাবতে রাজ্যের ঘুম চলে আসে।
সুমি সকালে উঠে পড়ে। তার সাড়া শরীর দুর্বল লাগছে।আজ দুদিন ধরে যে পেটে কিছু পড়েনি।
সুমি হঠাৎ লক্ষ্য করে তার লেহেঙ্গা নেই।পরনে আছে অন্য কাপড়। তাড়াতাড়ি পাশ ফিরে দেখে নিচে রহমান ঘুমাচ্ছে।
সুমি বলেঃ হে আল্লাহ কেন এমন করলে? যাকে চেয়েছি তাকে পেলাম না! সে ধোকা দিয়েছে।
আর এখন যাকে পেলাম সে আমাকে সহ্য করতে পারে না।
সুমির মাথা টা চক্কর দিচ্ছে। তাই ওয়াশরুমে গেল। মুখ ধোয়ার সময় লক্ষ্য করে সুমির ঠোঁটে কামড়ের দাগ।লাল হয়ে আছে। ফোলে গেছে ঠোঁট জোড়া। গলাতে ও একটা আলতো কামড়ের দাগ।সুমি যা বুঝার বুঝে গেছে।
সুমির ধারণা রহমান সুমির উপর বর হওয়ার অধিকার ফলিয়েছে।সুমির মাথা রাগে টকটক করছে। তাই,
সুমি ধড়পড় করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। সোজা রহমানের কাছে চলে যায়। তারপর রহমানের বুকের ওপর বসে যাই।
রহমানের কলার ধরে বলেঃ বজ্জাত, লোচ্চা ব্যাটা।
তুই না রিনি কে ভালোবাসিস।
তাহলে আমাকে স্পর্শ করছিস কোন সাহসে?
কি কি করচস বলচস?মানুষ হোক বা জিন পুরুষ তো সব এক।
রহমান সুমির এমন আচরণ দেখে হা হয়ে গেছে। হঠাৎ ঘুম থেকে যদি কেউ এইভাবে জাগিয়ে তোলে তাহলে হা হয়ে যাওয়ার ই তো কথা।
রহমান খুব শান্ত হয়ে বলেঃ শুনো।তুমি আমার বউ!সব নিয়ম কানুন মেনে বিয়ে হয়েছে। সো তোমান উপর এবং তোমার শরীরের উপর আমার অধিকার আছে। তুমি কি শুনতে চাচ্ছো কোথায় কোথায় স্পর্শ করছি?
কি কি করছি.?
বলবো?
সুমি বলেঃ কি করচস?
রহমান বলেঃ সব করছি।যা একজন বর,বউ করে।নাকি বিস্তারিত শুনতে চাচ্ছো?
আর এতো বড় মেয়ে আমার বুকের ওপর বসে আছো কেন নামো!!!
সুমি রাগে সারা শরীরে আগুন জ্বলছে। তাই,
সুমি ধড়পড় করে আবার ওয়াশরুমের মধ্যে ঢুকে যায়। চোখে ভর্তি অশ্রু ছিল।
রহমান আবার পাশ ফিরে শুয়ে আছে। আর বলেঃ এমন কিছু করিনি।আমার মনে এখনো রিনি বসবাস করে। তাছাড়া, কাল বাধ্য হয়ে তোমাকে বাঁচাতে গলায়, কোমরে স্পর্শ করছি।অন্য তাই ছোঁয়ে ও দেখতাম না।
সব টা সত্যি বলতাম সুমি তোমাকে কিন্তু তুমি যে আমাকে তুই কে বললে?
আর কৈফিয়ত চাইলে!
তাই বলিনি।আমার পছন্দ না।আমি কাউকে কৈফিয়ত দিতে বাধ্য নই।
রহমান আবার ঘুমিয়ে পড়লো।
সুমি ওয়াশরুমে বসে বসে কান্না করছে।
সুমি বলেঃ বজ্জাত জিন।মেয়ে দেখলে হয়লো।এখন আমার কি হবে!
ওইদিন তো তুই করে বলছিলি।আজ কেন তুমি তুমি করতেচস?
নিজের স্বার্থ হাছিল করে তুমি বলা হচ্ছে।
আমার জীবন টা শেষ করে দিলি শালার রহমান জিন।মা মা মা……. আমার এখন কি হবে, ভে ভে কান্না করছে সুমি।
হঠাৎ করে ……
?
?
রাতের খাবার শেষ করে সবাই বসে আছে। ড্রয়িং রুমে গোল করে বসেছে সবাই।
সেই ক্ষণে,রাজা মশাই বলেঃ আমি আজকে আমাদের রাজ্যের ওইখানে সবচেয়ে বয়স্ক জিন কে ডাক দিবো।এতদিন ধরে চেষ্টা করছি।কাল তিনি সাড়া দিয়েছে। আজ আবার ডাকলে হাজির হবে।
রাজা ( রশিদ) চোখ জোড়া বন্ধ করে এক মনে ডেকে চলছে। বেশ কিছুক্ষণ পর,রুমের সব লাইট অন অফ হচ্ছে। পচন্ড বাতাস বয়ছে, বজ্র পাত হচ্ছে। কিছু সময় পর, সব থেমে যায়।
একটা লাল অালো রুমে প্রবেশ করে। আস্তে আস্তে জিনটা কে দেখা যাচ্ছে।
সবাই সালাম দিলো।
রাজা মশাই বলেঃ দাদা জান।
বয়স্ক জিনকে সবাই দাদা বলে ডাকে।তাই রশিদ রাজা ও দাদাজান বলে ডেকেছে।
রশিদ রাজা আবার বলেঃ আমার ছেলে টা…..
একথা বলতেই বয়স্ক জিন বলেঃ আমি সব জানি তুর বলতে হবে না।
বয়স্ক জিন চোখ জোড়া বন্ধ করে। তারপর বয়স্ক জিন বলেঃ রিনি, প্রিন্স কে বোতল বন্দী জীবন থেকে বের করে এনেছে। তাছাড়া, দুজন এখন একসাথে আছে। ভোরের আলো ফুটে উঠতেই চলে আসবে।তবে,সবার জন্য একটা দুঃসংবাদ আছে।
আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি, তোমাদের বান্ধবী সুমির বিয়ে হয়ে গেছে।
সবাই একসাথে বিস্ময় স্বরে বলে উঠেঃ কার সাথে?
সুমি কি শয়তান জিন এর কাছ থেকে রেহাই পেয়েছে!!!!
বয়স্ক জিন বলেঃ নাহ,বরং, যে জিন তাকে ভর করেছিল। সে ছেড়ে তো দিয়েছে। কিন্তু?
অর্ক বলেঃ কিন্তু কি?
বয়স্ক জিন বলেঃ শয়তান রাজ্যের প্রিন্স, রহমানের সাথে সুমির বিয়ে হয়ে গেছে!
প্রিন্স ইনতিয়াজ এর সবচেয়ে কাছের বন্ধু ছিল রহমান জিন। কিন্তুু এত বছরে ও তোমরা কেউ ধরতে পারো নি। আমি জানতাম কিন্তু বলতে পারিনি।বেশ ইশারা ইঙ্গিত করে দিছিলাম। আফসোস বুঝোনি রশিদ রাজা তুমি ও রানি লোভা।প্রিন্স ও রিনির সাথে যা হয়েছে তার জন্য অনেক টা রহমান জিন দায়ী।
সবাই চুপ হয়ে আছে। বয়স্ক জিন বলেঃ আমার যেতে হবে। তাহাজ্জুদ এর নামাজের সময় চলে যাচ্ছে। চিন্তা করো না কালকে ওরা দুজন পৃথিবীতে চলে আসবে।তবে যা করবে ভেবে চিন্তে করবে।আল্লাাহহাফেজ।
বয়স্ক জিন চলে গেল। সবাই মন মরা হয়ে গেছে।
মুগ্ধ বলেঃ চলেন।সবাই তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ে নি।যাতে আল্লাহ পাক সব ঠিক করে দেয়।
সবাই নামাজ পড়ে নেই। ফজরের আজান শুনতে পেল। সবাই ফজরের নামাজ পড়ে নেই।ভোরের আলো ফুটে উঠেছে। এমন সময়,
সবাই দেখে একটা লাল রশ্মি প্রবেশ করেছে।
আস্তে আস্তে দেখে সবাই, সেটা রিনি ও প্রিন্স।
রিনিকে দেখে রাবেয়া দৌড়ে আসে রিনির কাছে।
রাবেয়া বলেঃ আমার মেয়ে টা।রিনি কেমন আচিস? ওই দিন ওমন করে কই গেছিলি?
তোর চিন্তায় আমি আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছি লাম। কামাল এগিয়ে আসে রিনির দিকে। রিনির মা বাবা দুজন রিনিকে জড়িয়ে ধরে।
কামাল বলেঃ……
চলবে……
গল্প কেমন হচ্ছে কমেন্ট করে জানাবেন??