রাত_যখন_গভীর Season:02,Part :22,23

0
1010

রাত_যখন_গভীর Season:02,Part :22,23
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Part :22

নিজের স্বার্থ হাছিল করে তুমি বলা হচ্ছে।
আমার জীবন টা শেষ করে দিলি শালার রহমান জিন।মা মা মা……. আমার এখন কি হবে, ভে ভে কান্না করছে সুমি।

হঠাৎ করে ওয়াশরুমের দরজা টকটক শব্দ হচ্ছে। সুমি একইভাবে কান্না করে যাচ্ছে। কিন্তু টকটক শব্দ টা বেড়ে যাচ্ছে। সুমি এবার কান্না বন্ধ করে।দরজা টা খুলতে গেলো। সুমি দরজা খুলে দেখে, রহমান( শয়তান প্রিন্স জিন) দাঁড়িয়ে আছে।

সুমি বলেঃ আ…. আপনি? কি চাই? সব তো নিয়ে নিলেন। এখন আবার কি? এটা বলে সুমি আবার ভে ভে করে কান্না করে উঠে।

সুমি সবাই কে আপনি করে বলে।তবে রাগ বেশি উঠলে তুই বলে। আবার মাঝে মাঝে তুমি বলে ফেলে।

রহমান জিন বলেঃ এই মেয়ে ভেঁ ভেঁ করে কান্না করলে একদম শেষ করে দিবো।কুচি খুকি হয়ছো নাকি?just STOP crying. কিছুটা চিৎকার করে।

সুমি ভয় পেয়ে যায়। সুমি আবার চুপিচুপি হালকা শব্দ করে কান্না করছে।

রহমান জিন নিজের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। কারণ, রহমান এর রাগ উঠলে সে সব কিছু থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।

রহমান জিন সুমি হাত দুটো ধরে সোজা ওয়াশরুমের দেয়ালে শক্ত করে ধরে।

রহমান বলেঃ এই তোর এতো কান্না করার কি আছে? তুই আমার বিবাহিত বউ? তোর সাথে আমার যেমন ইচ্ছে যা ইচ্ছে তাই করতে পারবো!
এতো নেকামি আমাকে দেখাস না একদম।

সুমি আবার কান্না করে দেয়। রহমান এবার সুমির হাত দুটো আরো শক্ত করে ধরে। নিজের ঠোঁট জোড়া সুমির ঠোঁটের মধ্যে ডুবিয়ে দিল। সুমি ছটফট করছে। সুমির ব্যর্থ চেষ্টা করছে রহমান এর হাত থেকে রেহাই পেতে। সুমি রেহাই তো পেলনা বরং ওয়াশরুম এর ঝর্ণা টা অন হয়ে গেছে সুমির এলোমেলো ভাবে হাত,পা নাড়াচাড়ার ফলে।

বেশ কিছুক্ষণ পর রহমান জিন সুমি কে ছেড়ে দেয়। রহমান বলেঃ কি হয়েছে এখন? বলছিনা বেশী নেকামি করবি না।আবার নেকামি করে কান্না করিস।তারপর দেখিস কি করি!এমনিতে রিনির জন্য চিন্তায় শেষ হয়ে যাচ্ছি তার উপর তোরে জাস্ট অসহ্য লাগে। কি জানি নাম তোর?
ওহ টুমি মনে হচ্ছে। আরে দূর তোর নাম তো সুমি।তোরে এতটাই অসহ্য লাগে যে তোর নাম টা ও মনে থাকে না।

রহমান ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে আসে। সুমি ভেজা শরীরে বসে বসে অশ্রু ঝরাচ্ছে।

সুমি লক্ষ্য করে
আবার বাহির থেকে শব্দ আসছে।রহমান জিন চিৎকার এর স্বরে বলেঃ এই ভিজে ভিজে বসে থাকিস না।তাড়াতাড়ি বের হো।হোদায় তুর আবার অসুখ হবে।

সুমি রহমানের কথা শুনতে পেল কিন্তু ইগনোর করে।সুমি বসে ছিল কতক্ষণ সে জানে না।

হঠাৎ করে রহমান জিন ওয়াশরুমে এসে বলেঃ কিরে তুরে কি বলছি? বের হসনি কেন?

সুমি চুপ হয়ে আছে। তারপর, রহমান জিন কি যেন চিন্তা করে। সুমি কে কোলে তুলে নেই। রুমে নিয়ে আসে।সোফায় বসিয়ে দেয়।

রহমান জিন বলেঃ তাড়াতাড়ি এই স্কার্টটা ও টপসটা পড়ে নে।তুকে মা ডাকতে আসবে।

সুমি দেখে একটা লাল রঙের টপস ও স্কার্ট।সুমি চুল গুলো খোলা রাখে। ড্রেস টা পড়ে নেই। সুমি আয়নার সামনে বসে আছে। সুমির ঠোঁট জোড়া একদম ক্ষত বিক্কত হয়ে গেছে। সুমি ঠোঁটে হাত দিতেই ব্যথা তে কাতরে ওঠে।

সুমি রেডি হয়ে যাই।রহমান প্রিন্স ও রেডি হয়ে যাই। রহমান একটা শেরওয়ানি পড়েছে। হালকা ডার্ক রঙের। দুজন কে বেশ লাগছিল।

একটু পর রহমানের মা আসে।দুজনকে বড় একটা হল রুমে নিয়ে গেল। রহমান জিন বলেঃ আমার সাথে রিনির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিয়ে টা কেমনে জানি এই মেয়ে টার সাথে হয়ে গেছে। এখন আমি বিচ্ছেদ চাই।

রহমান জিন এর মা বলেঃ তুই তো জানিস আমাদের বংশের পরম্পরা হচ্ছে একটাই বিয়ে হয়। বউ যদি মারা ও যায় আর দ্বিতীয় বিয়ে করে না।তাই তোর এই মেয়ে সাথে ই থাকতে হবে। কিভাবে কি হলো জানি না।তবে ভাগ্যের এর পরিণতি মেনে নিতে হবে তুর। জীবন এ সুখে থাকতে চাস তাহলে মেনে নিতে শিখ।

হল রুমের সবাই এক কথা বলে। বেশ কিছু সময় পর দুজন আবার রুমে প্রবেশ করে।

রহমান জিন বলেঃ এই তুই আমার জীবন টা শেষ করে দিছস।তুরে আমি ছাড়বো না।

সুমি বলেঃ যদি আমি বলি আপনি আমার জীবন নষ্ট করে দিলেন।

রহমান জিন বলেঃ বেশি মুখ চলছে তোর।তোরে বলে রহমান এগিয়ে আসছে সুমির দিকে।

সুমি ভয়ে চুপসে যায়। কারণ, প্রিন্সের চোখ জোড়া একদম নীল রঙ ধারণ করেছে।এমনিতে নীল রঙের যে সেটা বোঝা যায় না। তবে মাঝে মাঝে খুব উজ্জ্বল হয়ে যাই চোখ জোড়া।

রহমান এগিয়ে আসছে সুমি পিছিয়ে যাচ্ছে। সুমি খেয়াল করে নি পেছনে যে বিছানা আছে।পিছাতে পিছাতে সোজা বিছানা তে গিয়ে পড়লো টাস।

রহমান কিছু টা ঝুকে পড়ে সুমির উপর। রহমান জিন বলেঃ আমার সাথে মুখে মুখে কথা বলা!তুর সাহস তো কম না।

সুমি বলেঃ প্লিজ আর করবো না।ছেড়ে দেন।

রহমান কে যেন ভেবে নেই। তারপর,
রহমান সোজা হয়ে দাড়িয়ে যায়। তারপর পাশে থাকা চেয়ার টাতে বসে পড়ে।
সুমি অশ্রু সিক্ত চোখে তাকিয়ে আছে রহমানের দিকে।

রহমান চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে চেয়ারে।সুমির চোখ দুটো কখন জানি বন্ধ হয়ে গেছে। সুমি ঘুমের রাজ্যে তলিয়ে গেছে।

?

?
তোর চিন্তায় আমি আস্তে আস্তে শেষ হয়ে যাচ্ছি লাম। কামাল এগিয়ে আসে রিনির দিকে। রিনির মা বাবা দুজন রিনিকে জড়িয়ে ধরে।

কামাল বলেঃকেমন আছিস? কতদিন দেখিনা মা তোকে?

রিনি বলেঃ বাবা ভালো আছি।তোমরা সবাই কেমন আছো?

সবাই বলে সবাই ভালো আছে। সবাই অনেক খুশি। তবে তাদের খুশি বেশিক্ষণ ছিল না। কারণ সবার সুমির কথা মনে পড়ে যায়।

অর্ক বলেঃ প্রিন্স আশা করি,তোমার ভুল বুঝতে পেরেছো!

প্রিন্স (ইনতিয়াজ) বলেঃ জি।সত্যি আমি বুঝতে পারছি অনেক বড় ভুল করে ফেলছি। তাই সবার কাছ থেকে মাফ চাইছি।

রাহাত হুজুর বলেঃ আচ্ছা। শুনো প্রিন্স ,সুমির বিয়ে হয়ে গেছে। তোমার বন্ধু রহমান জিন এর সাথে। আমরা সুমি কে ফিরিয়ে আনতে চাই। তোমার সাহায্য চাই।

প্রিন্স বলেঃ আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাবো।

সবাই একসাথে বসে আছে। এমন সময় লাবু বলেঃ আচ্ছা সবাই একসাথে টেবিলে আসেন।আমি ও রেশমী ভাবি হালকা নাস্তার ব্যবস্থা করেছি।

সবাই একসাথে বসে আছে। রাজা মশাই বলেঃ সুমি চলে আসলে আমরা চলে যাবো রাজ্যে।

রানি( লোভা) বলেঃ আমি ও তাই চিন্তা করছি।

সবাই নাস্তা শেষ করে। তারপর, প্রিন্স বসে আছে। রুমে ৩ টা বৃত্ত করেছে প্রিন্স। একটাতে সে একা বসেছে।অন্যটাতে সবাই কে বিভক্ত করে বসিয়েছে।

প্রিন্স মন্ত্র উচ্চারণ করছে।দোয়া পড়ছে।প্রিন্স ভালো ভাবে জানে শয়তান জিন কে কিভাবে হাজির করতে হয়। তবে সে বুঝতে পারে নি, তার সাথে এত বছর বন্ধুর মতো ছায়া হয়ে একটা বন্ধু রুপি শয়তান ছিল।

প্রিন্স জীবনে ও রহমান কে মাফ করতে পারবে না। রহমান বন্ধু হয়ে, তার জীবন টা শেষ করে দিলো।

এমনকি নিজের ভালোবাসার মানুষ টার সামনে ও একদম নিচু করে দিয়েছে।

প্রিন্স উচ্চ স্বরে দোয়া পড়ছে। ?

?

বেশ কিছুক্ষণ সময় পর,রহমান জিন এর কেমন জানি লাগছে। হঠাৎ চোখ জোড়া জ্বলে উঠছে। সারা শরীরে অস্থিরতা কাজ করছে।

সে আর চোখ বন্ধ করে থাকতে পারছে না। সে নিজেকে আর কন্ট্রোল করতে পারছে না।

এমন সময় সুমির ঘুম ভেঙ্গে গেলো। সুমি বলেঃ আরে এমন করছেন কেন? কি হয়েছে?

প্রিন্স রহমান জিন এর শরীর কাঁপুনি দিচ্ছে। সুমি বুঝতে পারছে না কি করবে।

রহমান জিন বলেঃ সুমি মি… মি।তুমি আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরো।আমাকে কিছু একটা চুম্বকের মতো করে টানছে।

সুমি কিছু না বলে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।তখনই, আচমকা সুমি ও রহমান জিন……..

চলবে……

রাত_যখন_গভীর
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Season:02
Part :23
************
সুমি কিছু না বলে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।তখনই, আচমকা সুমি ও রহমান জিন একটা রুমে আবিষ্কার করে নিজে দের কে।দুজনের চোখ বন্ধ করে ছিল।

রহমান জিন আকর্ষণ টা আর এখন অনুভব করছে না।সুমির কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নেই রহমান।

রহমান (শয়তান জিন) চোখ জোড়া খুলে দেখে। সামনে তার বন্ধু প্রিন্স (ইনতিয়াজ) বসে আছে। প্রিন্স এর চোখ লাল হয়ে আছে।রাগে ফুসফুস করছে ও জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে ।প্রিন্স এর রাগ হলে, জোরে জোরে নিশ্বাস নেই এটা রহমান জিন জানে।

অন্য দিকে,
এমন সময় চোখ জোড়া খুলে সুমি দেখে। তার সামনে তার সব আপন জন বসে আছে। সুমি তাড়াতাড়ি উঠে।
সুমি ও শয়তান প্রিন্স এবং প্রিন্স ইনতিয়াজ এর বৃত্ত থেকে বেরিয়ে অন্য বৃত্ত প্রবেশ করে।
আর জান্নাত কে জড়িয়ে ধরে।

রহমান তার বউকে ক্ষতি করতে পারবে না।কারণ তাদের নিয়মে নেই। তাদের নিয়ম মোতাবেক কোন প্রকার ক্ষতিকর জাদুর প্রয়োগ বউয়ের উপর না করা।যদিও বউ মানুষ হোক বা জিন হোক।একথা না মানলে রহমানের রাজ্যে শাস্তি দেয়া হয়।

তবে,
সুমির বেরিয়ে যাওয়ার পরপরই।
তখনই, রহমান ও বের হতে চাইলো।কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে।

প্রিন্স (ইনতিয়াজ) এমন সব দোয়া পড়ে বৃত্ত বানিয়েছে।শয়তান প্রিন্স যাতে কিছু করতে না পারে।আর যাতে বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে না পারে।কারণ বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতেই ক্ষতি করবে রহমান সবার।

সবার আগে,
প্রিন্স বলেঃ বাহ রহমান! তুই ও যে কখনো আমার বন্ধু ছিলি ভাবতেই ঘৃণা হচ্ছে। কেন এমন করলি? আমার ভালবাসার মানুষ টা ও আমাকে খারাপ মনে করে। আমার প্রিয় বোন ও আমাকে শাস্তি দিতে পরোয়া করে নি!
যে বোন এর আপন জন ছিলাম আমি ।আমার বোন শাম্মি আমাকে ছাড়া এক মূহুর্ত ও কাটাতো না সে যে কতো কষ্টে তার দিন গুলো পার করেছে সে জানে আর আল্লাহ পাক জানে।বল রহমান তুই এমন কেন করচস? কেন তুই বলিস নি তুই শয়তান রাজ্যের প্রিন্স????
কেন বন্ধু নামের পবিত্র একটা সম্পর্কের অমর্যাদা করচস?
কেনো রহমান কেনো?কেনো নিজেকে লুকিয়ে রেখেছিলি???

রহমান চুপ হয়ে বসে আছে। কিছু বলছে না। রিনি নিরব হয়ে তাকিয়ে আছে। রহমান এবার তার পিছনে ফিরে দেখে। সাথে সাথে দেখে রিনি।।।।

রহমান এবার মুখ খোলে বলেঃ আরে রিনি????
তুমি কি ভালো আছো? আরেকটুর জন্য তোমাকে আমার করতে পারলাম না!!!
রিনি,
” তুই ছাড়া হয়তো,
কেউ বুঝতে পারবে না,
এই মনের আবদার,
তাই তো ছুটে আসি রোজ,
আমি বার বার,
তোর চোখের সেই মায়ার,
আড়ালে চাই হারিয়ে যেতে।
দিবি কি একটু টাই!!!

এটা বলতেই,প্রিন্স শক্ত করে রহমান জিন কে ধরে। প্রিন্স বলেঃ তুর সাহস তো কম না,
তুরে কি জিজ্ঞেস করলাম তুই কি বলছিস? তুর এইসব পাও কথা শুনতে চাইনা।
সত্যি বল,কেন এসব ব্লেন্ডার করলি?কেন সুন্দর সম্পর্ক গুলো নষ্ট করে দিলি???

রহমান আবার চুপ হয়ে বসে আছে। এমন সময় রিনি মুখ খোলে বলেঃ আপনি কেনো এসব করছেন?
কেন বা আমার জীবন নষ্ট করলেন? কি দোষ ছিলো আমার???

এসব বলে রিনি কান্না করছে। সবাই নিরব হয়ে আছে। কারণ তারা কথা বললে,সমস্যা সমাধান না হয়ে সমস্যা বাড়বে তাই।তারা চুপ থাকাটা শ্রেয় বলে মনে করছে।

তখনই,রহমান জিন বলে উঠেঃযদি জানতাম তোমার কষ্টের কারণ হব আমি।তোমার এক ফোটা অশ্রুর কারণ হব আমি।তবে সত্যি বলছি আমি কখনোই আসতাম না তোমার জীবনে।শুধু দূর থেকে ভালোবেসে যেতাম তোমায়।

রিনি বলেঃ তাহলে হঠাৎ করে এসে ঝড়ের গতিতে কেন আমার জীবন নষ্ট করলেন???

রহমান জিন বলেঃরিনি মনে রেখো,খুব যারে অবহেলিলে, সে তো মরে বাঁচিলে, তুমি বৃথা জল ফেলবে একদিন!!সেদিন যেনো তোমার দুচোখ জল না ফেলে। সেদিন শুধু দুহাত তুলে দোয়া করো,যতো পারো ততবার।অনেক ভালোবাসি রিনি তাই এমন করেছি।হয়ছে নে এবার উত্তর কি পাইছো?

রিনি বলেঃ মিথ্যা হলো রাতের অন্ধকারের মত,আর সত্যি হলো দিনের আলোর মতো।রাতের শেষে দিন আসবেই এটাই সত্যি।
রহমান জিন তুমি যতো কথা ঘোরার চেষ্টা করো না কেন সত্যি, একদিন সবার সামনে আসবেই। আপনি কি বলবেন না কেনো এসব করেছেন?

রহমান চুপ হয়ে আছে। রহমান মনে মনে বলছে,রিনি, আসলে, নিরবতা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় চিৎকার। যেটা বুঝতে পারার,ক্ষমতা সবার নেই। এবং তোমার ও নেই। সত্যি জানলে সবাই আমাকে আরও দূরে সরিয়ে দিবে।

রহমান এর নিরবতা সবার রাগ বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রিন্স বারবার নিজের রাগ কে কন্ট্রোল করছে।কারণ, কোন অঘটন ঘটলে সত্যি টা জানতে পারবে না তারা সবাই।

রিনি এমন সময়, বলে উঠেঃরহমান জিন তুমি যদি সত্যি না বলো তাহলে নিজের হাত কেটে ফেলবো আমি!!! তারপর একদম কাহিনি শেষ হয়ে যাবে আমার।
আর আমার অভিশপ্ত এই জীবনের।

প্রিন্স (ইনতিয়াজ) বলেঃ রি….. রি নি….
প্লিজ এমন কিছু করো না।তাছাড়া তুমি কি বৃত্ত থেকে বেরিয়ে চুরি টা আনলে?
যদি বৃত্তের থেকে বের হয়ে থাকো তাহলে অনেক সমস্যা হবে। ইভেন সবাই রিস্কে পড়ে যাবে।

রিনি বলেঃ হা হা কি মনে করলে! আমি এতো বোকা।এটা আমি এখানে আসার আগেই নিয়েছি।
আমি জানি বৃত্ত থেকে বেরিয়ে পড়লে মসিবত হবে। তাই,নাস্তা করার সময় নিজের শরীরে লুকিয়ে রেখে ছিলাম চুরিটা। আমি মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছি।আমি আর বাঁচতে চাইনা! এমন রহস্যময়ী জীবন আমাকে ভেতর থেকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। আমি ক্লান্ত।
আরেকটা কথা,
মানুষ যখন কষ্ট পাই তখন সেই মানুষ টা পরিবারের কাছে শান্তি খুঁজে।পরিবার কে কাছে না পেলে মানুষ টা তার প্রিয় মানুষের কাছে গিয়ে শান্তি খুঁজে। প্রিয় মানুষ, পরিবার, ফ্রেন্ড সার্কেল কোথাও গিয়েই যখন মানুষ শান্তি খুঁজে পাই না সম্ভব তখনই সবচেয়ে কঠিন সিদ্ধান্ত নেয়া। কেউ কেউ আত্মহত্যার পথটাও বেচে নেয়।
আমার ক্ষেত্রে ও এমন হয়েছে। আমি শান্তি পাই নি,পাচ্ছি না।তাই এই সিদ্ধান্ত টা নিলাম।

রাবেয়া বলেঃ মা, ঠান্ডা হো।প্লিজ চুরি টা ফেলে দে।তুর কিছু হলে আমি মরে যাবো!!!

কামাল বলেঃ আমি ও বেচে থাকার ইচ্ছে হারিয়ে ফেলবো।যে জীবনে আমার সন্তান টা আমার চোখের সামনে স্বইচ্ছায় প্রাণ দিবে।আর তার সুখে আমার বউটা ও পরপারে পাড়ি দিবে।চাইনা এমন জীবন!!! আমিও এমন কিছু করে ফেলবো দেখিস।প্লিজ বোকামি করিস না রিনি।ওই রহমান প্লিজ সত্যি টা বলো!!!

রিনি বলেঃ বাবা,মা।
যখন পরিবারের থেকে শান্তি খোঁজার জন্য উদ্বেগ নিলাম।তখন আমাকে কিডন্যাপ করে ফেলে আমার মা-বাবা ছাড়া অন্য কোন প্রিয় মানুষ ছিল না।তাছাড়া, কলেজে নতুন ছিলাম বলে, তেমন ভালো কোন বন্ধুরা ছিল না।আর যদি থাকতো তাও শান্তি খুজতে যেতে পারতাম না।কারণ, আমি তখনো রহমানের নিয়ন্ত্রণে ছিলাম।মানে আমাকে শান্তি খুঁজার সময় টা ও দেয় নি।রাত যখন গভীর তখনই, হঠাৎ করে উদাও করে ফেলে রহমান।।আমি শান্তি চাই।i Just need peace…..

হঠাৎ, রহমান জিন একটা গর্জন দিয়ে উঠে। রহমান বলেঃ রিনি প্লিজ এমন কিছু করো না।আমি নিজেকে মাফ করতে পারবো না।রিনি।

রিনি বলেঃ তাহলে, কেন এমন করলেন বলেন? কেনো প্রিন্স ইনতিয়াজ ও প্রিন্স রহমান আমার জীবন টাকে শেষ করে দিলো কেনো????
উত্তর দাও তোমরা দুজনেই!!!

রহমান জিন বলেঃ হঠাৎ একদিন প্রিন্স আমার কাছে আসে। প্রিন্স বলে,রহমান জানিস আমি না একটা মেয়ে কে দেখে মন দিয়ে বসেছি।মেয়ে টার কন্ঠো ও ঘায়েল করার মতো ছিল। মেয়ে টা অনেক মায়াবী। সাথে তার লম্বা চুল গুলো আরও সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে।

সেদিন আমি বলি,মেয়ে টা কোন রাজ্যের?কোন জিনের মেয়ে?
প্রিন্স বলেছিল,সেটা জিনের মেয়ে না।এটা হচ্ছে মানুষের মেয়ে। আর শুন কাল তুকে দেখাবো, স্কুল ফেরার পথে দাড়িয়ে থাকবো।তেতুল গাছের পাশে আমরা দুজন। এই বলে প্রিন্স চলে গেল।

আমি ভালো ভাবে বুঝতে পারছি প্রিন্স মেয়ে টার বিষয়ে সব কিছু জেনে নিয়েছে।

তাই যথারীতি,
পরদিন সকালে, দাড়িয়ে ছিলাম আমি ও প্রিন্স ইনতিয়াজ তেঁতুল গাছের পাশে।
তবে,
মেয়ে টা আসে নি সেদিন।কিন্তু, হঠাৎ করে একদিন, স্কুল ফেরার পথে মেয়ে টার মানে রিনির দেখা মেলে। আমি ও প্রিন্স সাথে ছিলাম তখন।

সেদিন আমি প্রিন্স কে বলি,আবে শালা,মেয়ে টা সুন্দর নাই,আমাদের রাজ্যে আরও ভালো মেয়ে পাবি।আমার মেয়ে টাকে মানে রিনি কে দেখে পছন্দ হয়নি।

কারণ,সেদিন মেয়ে টার চুল ভর্তি তেল ছিল। তেল সব মুখে এসেছে।যার ফলে মুখ টা একদম কালো হয়ে গেছে। তার সাথে অগোছালো ড্রেস। একদম কোন শ্রিছাড়া মনে হয় ছিল।

এর বেশ কিছু সময় পর, প্রিন্স আবার আমার কাছে আসে।প্রিন্স বলেঃ চল এক জায়গায় যাই।

আমি মানা করে ছিলাম।প্রিন্স এর বাড়াবাড়ির ফলে তার সাথে যায়।

প্রিন্স আমাকে একটা ঘরের ছাদে নিয়ে আসে।

আমি লক্ষ্য করে দেখছিলাম। এমন সময় দেখি,একটা মেয়ে চুল গুলো খোলা রেখে। বসে আছে। চেহারা দেখা যাচ্ছে না। আমি উৎসাহ নিয়ে সামনে চেহারা দেখতে গেলাম।তখন আমি দেখি,,,,

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here