রাত_যখন_গভীর Season:02,Part :32,33
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Part :32
আরেকটা, মহিলা পুলিশ অফিসার এসে বলেঃ কি হচ্ছে টা কি?
আপনাদের,
দুজনের ঝগড়া তে পুলিশরা সবাই ও বিরক্ত। কখন যে আপনারা বিদায় হবেন।উফ।
তখনই, সবাই প্রবেশ করে পুলিশ স্টেশনে।
কামাল বলেঃ এই তো একটু পরে এই দুজন টম এন্ড জেরি কে নিয়ে যাবো হি হি।
রাবেয়া বলেঃ আরে,তোমার তো যেখানে সেখানে জোক্স দিতে হয়। অন্তত পক্ষে এখানে জোক্স না বললে ও পারতে।
সুমি বলেঃ আবার, তোমরা শুরু হয়ে যে ও না কিন্তু। রহমান,আপনি কিছু করেন?
আমার বেস্টি টা আর কতক্ষণ থাকবে জেলের মধ্যে??? বেচারি জান্নাত।
রহমান বলেঃ শান্ত হও। আমি একটা উকিল কে বলেছি।অবশ্য, কামাল সাহেব এর ও পরিচিত। উকিল একটু পর পৌঁছাবে।একটু অপেক্ষা করো।
কামাল বলেঃ কিরে?
পেত্নী জান্নাত?
কেমন লাগছে জেলে?
তোর হবু বর জানে তো?
নাকি আমি কল করবো?
জান্নাত অস্পষ্ট স্বরে বলেঃ তার জন্য তো এতো সব হলো।হুহ।
জান্নাত বলেঃ বাদ দে কামাল ওর কথা। আমাকে জাস্ট বের কর এখান থেকে।
রাবেয়া বলেঃ মুগ্ধ ভাইয়া, আপনি ঠিক আছেন তো?
মুগ্ধ অস্পষ্ট স্বরে বলেঃ যে খবর আপনার ননদীনি জান্নাত শুনালো।আমি যেটা
শুনলাম সেটা শুনে ভিতর টা ক্ষত বিক্ষত হয়ে গেছে। আজকের মতো কখনো এতটা খারাপ লাগে নি।ইয়া আল্লাহ পথ দেখান।
মুগ্ধ বলেঃআরে,ভাবি আমি একদম ঠিক আছি।যত দ্রুত বের হতে পারবো ততটা ভালো হবে।
সবাই অপেক্ষা করছে, উকিল এর জন্য। উকিল এসেছে। একটা পেপার দেখালো।সাথে সাথে দুজন কে মুক্ত করে দিলো।
সবাই চলে আসছিলো। তখনই, অফিসার মহিলা বলেঃ জান্নাত তোমার পাশে মুগ্ধ কে বেশ লাগে। দুজন দুজনার জন্য পারফেক্ট। এভাবে চলতে থাকুক আজীবন তোমাদের পথ চলা।ডা,মুগ্ধ বউয়ের যত্ন নিবেন কিন্তু।
জান্নাত লজ্জা পেল। কারণ, অফিসার তো সত্যি টা জানে না।
মুগ্ধ বলেঃ জি,ইনশাআল্লাহ।
সবাই গাড়ি তে উঠে পড়ে।
কামাল বলেঃ কই যাবা সবাই?
রাবেয়া বলেঃ চলো একটু ঘুরতে যাই।তাছাড়া, রহমান তো আমাদের মেহমান। সো হালকা ঘোরাঘুরি তো চলে।
কামাল বলেঃ আমার মামুনির কি হবে?
সে কি একা বাসায় আসতে পারবে?
সুমি বলেঃ চিন্তা করিস না।ইনশাআল্লাহ মেয়ে বড় হয়েছে ঠিক সামলে নিবে।
এখন তো তোর পিচ্চি মেয়ে আর পিচ্চি নেই।এখন সে ভার্সিটি তে পড়ছে।
সবাই কামাল এর হাতে ছেড়ে দে। সবাই কামাল কে বলে, যে কোন জায়গায় নিয়ে যেতে।কামাল এর পছন্দ মতো। কামাল আপন মনে এগিয়ে যাচ্ছে।
সাথে এগিয়ে যাচ্ছে সবাই । একটা সুন্দর সময় কাটানোর জন্য।।
?
মিসেস রেহেনা অনেকটা সময় ধরে জান্নাত কে কল দিচ্ছে পাচ্ছে না।জান্নাত এর বাবা কে ও জানিয়ে দিয়েছে। কিন্তু কেউ কোন খবর পাচ্ছে না।
মিসেস রেহেনার প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে। কারণ, জান্নাত এর খবর না পেলে তার প্রেশার বেড়ে যায়।
মিসেস রেহেনা আস্তে আস্তে দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, প্রেশার এর ফলে ।রেহেনা কে অবাক করে দিয়ে। জান্নাত কল করেছে তখনই,
কল রিসিভ করে,
রেহেনা বলেঃ কিরে হতচ্ছাড়ি কই আছিস?আমার
প্রেশার বেড়ে যাচ্ছে। তাও তোর কোন খবর পাচ্ছিলাম না।
কই আছিস?
রিসিভ করিস নি কেন কল?
জান্নাত বলেঃ মা আমি ঠিক আছি। চিন্তা করিও না।তেঁতুল এর শরবত খাও ঠিক হয়ে যাবে।
ওষুধ টা ও খেয়ে নাও মা।আমি আর পিচ্চি নাই তো।এতো চিন্তা করলে কি চলে!
জান্নাত আবার বলেঃ ওহ হ্যাহ্যা মা।আমি রাবেয়া ও কামাল এর বাসায় থাকবো।কয়েক দিন।
থাকবো তো?
মিসেস রেহেনা চিন্তা করছে কি করা যায়। মিসেস রেহেনা লক্ষ্য করছে, জান্নাত বেশ কিছু দিন ধরে চুপচাপ হয়ে গেছে।সবসময় মন মরা হয়ে থাকে। তাই তিনি মেয়ের মন ঠিক করতে ওকে করে দেয়।
জান্নাত ও খুশী হয়ে গেছে। মোবাইল রেখে দিয়ে একটা চিৎকার করে দেয়।
মিসেস রেহেনা তার দুহাত তুলে বলে, ইয়া মাবুদ, ইয়া আল্লাহ পাক, আমার মেয়ে কে সুস্থ রাখো।আগের মতো করে দাও।সাথে, তার
কাজের প্রতি আরোও উন্নতি করে দাও।ওর মনে প্রশান্তি দাও।আর যেনো একটা ভালো সঙ্গী পাই।আমিন।
?
?
শাম্মি বলেঃ হাবিব এবার যে তোমার চোখ জোড়া বন্ধ করতে হবে?
হাবিব বলেঃ বাহ রে কেনো?
বন্ধ করতে হবে?
বলো?
শাম্মি বলেঃ চুপ একদম যা বললাম আপনাকে তাই করেন!
এদিকে আসেন।
এই বলে,শাম্মি তার দু’হাতে হাবিবের চোখ জোড়া বন্ধ করে দেয়। হাবিব চোখ বন্ধ করে হাঁটছে।আর পথ বলে দিচ্ছে, শাম্মি।
শাম্মি বলেঃ হাবিব চোখ জোড়া খুলে দেখো।
হাবিব চোখ জোড়া খুলে দেখে, সামনে একটা জাহাজ। খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে জাহাজ টাকে।
শাম্মি বলেঃ চলেন।যাই।
দুজন জাহাজে উঠে পড়ে।
শাম্মি বলেঃ আপনার জন্য কিছু কাপড় রাখা আছে পড়ে নেন।আমিও রেডি হয়ে আসি।বাম পাশে আপনার কেবিন। ওকে?
হাবিব বলেঃ আচ্ছা।।। ওকে
দুজন দু’দিকে কেবিনে চলে গেল। শাম্মি কাপড় টা পড়ে নেই।রেডি হয়ে বেরিয়ে আসে।
অন্য দিকে, হাবিব ও রেডি।
শাম্মি দেখে, হাবিব একটা সাদা শার্ট এবং পেন্ট পড়েছে। সাদা ড্রেসে হাবিব কে অসম্ভব ভালো দেখাচ্ছে।
হাবিব ডেবডেব করে তাকিয়ে আছে শাম্মির দিকে। হাবিব দেখে, শাম্মি চুল গুলো খোলা রেখেছে। গোলাপি রঙের একটা টপস এবং হালকা গোলাপি রঙের লেহেঙ্গার মতো রাউন্ড দেয়া আছে ড্রেসে।গলায় একটা নেকলেস। হাবিব বলেঃ হাই,মার ঢালা।
শাম্মি লজ্জা পেল। হাবিব এক পা দু পা করে এগিয়ে আসছে শাম্মির দিকে। হঠাৎ করে, শাম্মির কোমর টা জাপ্টে ধরে ফেলে।
হাবিব বলেঃ কিছু মনে করো না।প্লিজ শাম্মি।
আমি নিজেকে আর সংযত করতে পারি নি।কি যেনো অদৃশ্য একটা টান অনুভব করছি।যার ফলে এভাবে জাপ্টে ধরেছি।
তখনই শাম্মি বলেঃ হাবিব………
?
?
=>মামা!!!!!
ঐশী বলেঃ আবে রিনি আরেক টু জোরে ডাক দে।দেখছিস না কতো মানুষ আছে।
রিনি বলেঃ মা…..মামা।
দু প্লেট ফুচকা দেন।একদম ঝাল করে।
এবার কাজ হলো এটেন্সন পেলো।ফুচকা ওয়াকা দু প্লেট দিলো।দু জন ই টপাটপ মুখে দিয়ে দেয়। ১ মিনিটে শেষ করে ফেলে।
এবার,ঐশী বলেঃ মামা,আরও দু প্লেট। তবে,আরও ঝাল হতে হবে। আগের গুলো ঝাল কম ছিলো।
একটু পর, আবার দু প্লেট দিয়ে দিলো।আস্তে আস্তে মানুষ কমে যায়।
রিনি বলেঃ মামা ঝাল আরও বাড়িয়ে দেন।
ঐশী বলেঃ আমাকে ও।
ফুচকাওয়ালা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে। কারণ, অলরেডি লাল মরিচের গুঁড়োর জন্য ফুচকা লাল হয়ে গেছে। কিন্তু, এরা আরও ঝাল খুঁজছে।
ফুচকাওয়ালা কোন উপায় না পেয়ে, কাঁচা মরিচ গুঁড়ো গুঁড়ো করে দেয়।
দুজন এবার তৃপ্তি পাচ্ছে। দুজনের চোখে অশ্রু টলটল করছে। তবুও কেউ পানি চাইছে না।
দু’জন ই আবার ফুচকা অর্ডার করে। এবাবে করে, একজন ৫ প্লেট করে খেয়ে নিলো।রিনি টাকা টা পে করে দেয়। দুজনের মুখ লাল হয়ে যাই। চোখ জোড়া অশ্রুতে চকচক করছে।
গাড়ির কাছাকাছি গিয়ে, ড্রাইভার চাচা কে পেল রিনি।
রিনি বলেঃ চাচা আপনি আমার চাচা না!
একটা আবদার করি?
ড্রাইভার চাচা বলেঃকি আবদার বলো,?
তাছাড়া
মামুনি,তোমরা কি ঠিক আছো?
তোমাদেরকে এমন লাগছে কেন দেখতে?
রিনি বলেঃ আমি এবং ঐশী আমরা ঠিক আছি।
রিনি আবার কিছু একটা বলতে যাচ্ছি লো।
তখনই, ড্রাইভার চাচার মোবাইলে কল আসে।
কথা শেষ করে। কান্না করছে ড্রাইভার চাচা।
রিনি বলেঃ কি হয়েছে?
ড্রাইভার চাচা বলেঃ আমার মেয়ে এক্সিডেন্ট করেছে। আমার বউ জরুরি ডেকেছে। কিন্তু তোমাদের একা কেমনে রেখে যাবো?
রিনি বলেঃ আপনি কোন চিন্তা না করে যান
আমি ড্রাইভ করবো।তাছাড়া, ঐশী ও ড্রাইভ জানে।
ড্রাইভার চাচাকে আস্বস্ত করেছে রিনি।কোন সমস্যা হবে না বলেছে।ড্রাইভার চাচা যেতে চাচ্ছিলো না।জোর করে পাঠিয়ে দেয় রিনি।
রিনি এতক্ষণ লক্ষ্য করে নি।তার বান্ধুবী ঐশী তার পাশে নেই।রিনি ঐশী কে খুজতে লাগলো। কিন্তু পাচ্ছে না।
রিনি পুরো ক্যাম্পাসে খুঁজে যাচ্ছে।কিন্তু কোন হদিস পাচ্ছে না। হটাৎ করে, রিনির চোখ জোড়া পড়ে একটা ঘরে। সে ঘরে আছে, মাহমুদ।
রিনি দেখে, মাহমুদ স্যার এক নজরে তাকিয়ে আছে একটা মেয়ের দিকে। আর মেয়ে টা তৃপ্তি করে ফুচকা খাচ্ছে।
রিনির কেনো জানি সহ্য হচ্ছে না এমন দৃশ্য টা।রিনি চোখ সরিয়ে নেই। কারণ, তার বেস্টি কে খুঁজে বের করতে হবে। তাছাড়া, এসব দেখে রিনির বড্ড কষ্ট হয়।
রিনি সবখানে খুঁজে দেখেছে।তবে ছাদে দেখেনি।তাই,রিনি
ছাদের দিকে এগিয়ে গেছে। তখনই, রিনি একটা ছেলের কন্ঠ শুনতে পেল।
রিনি আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে কন্ঠ টার দিকে।
রিনি ছাদে উঠেছে।আন,
রিনি দেখতে পেল… ,……..
চলবে…..
রাত_যখন_গভীর
জান্নাতুল_মাওয়া_মহুয়া
Season:02
Part :33
************
রিনি আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছে কন্ঠ টার দিকে।
রিনি ছাদে উঠেছে।অতঃপর
রিনি দেখতে পেল,
একটা ছেলে।কিন্তু ঐশী চোখ বন্ধ করে পড়ে আছে ছাঁদে।সেন্স লেস হয়ে।
ছেলে টার চোখ জোড়া নীল।
রিনি বলেঃ কে আপনি?
আমার বান্ধুবীর সাথে কি করছেন?
দূরে সরেন বলছি???
ছেলে টা বলেঃ আমি আলাউদ্দিন। আমি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলাম।তখন মেয়ে টা দেখি রাস্তা তে পড়ে আছে। আমি মেয়ে টাকে ঠান্ডা বাতাস পাই মতো ছাদে নিয়ে আসি।
মেয়ে টা মনে হয়, ঝাল কিছু বেশি খেয়েছে?তাই ঝাল এর প্রকোপ বেশি হয়ে সেন্স লেস হয়ে গেছে।
রিনি বলেঃআপনি কেমনে জানলেন?
তাছাড়া, ও এখন কেমন আছে?
আলাউদ্দিন বলেঃ আমি মেডিকেল এ পড়ি।
তাই বুঝতে দেরি হয়নি।একটু পর সেন্স ফিরবে।
বেশ কিছু সময় পর, ঐশী চোখ জোড়া খুলে দেখে। তার সামনে একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে। তার ঠিক পাশে আছে রিনি।
ঐশী বলেঃ কি হয়েছে আমার?
হঠাৎ করে মাথা টা চক্কর দিয়ে উঠে। আর কিছু মনে পড়ছে না। একটু বল কি হয়েছে রিনি।।
রিনি বলেঃ মিস্টার, আলাউদ্দিন তোকে সারিয়ে তুলেছে।এবার চল।বাসায় যায়। বাকিটা পরে বলবো।
ঐশী বলেঃ যাবো তবে আগে তারি কিনবো।আজকে খাবোই খাবো।
রিনি বলেঃ আবে আমি কই পাবো?
ড্রাইভার চাচা ও তো নাই।
আলাউদ্দিন বলেঃ এটা কোন ব্যাপার না চলেন।
আলাউদ্দিন তাদের তারি নিয়ে দেয়। তারপর, দুজন ই আলাউদ্দিন কে বিদায় দেয়। রিনি গাড়ি চালাচ্ছে। ঐশী পাশে বসে আছে।
ঐশী বলেঃ থাম এখানে।
এখানে খাই।
রিনি বলেঃ বাসার সামনে গিয়ে খাবো।যাতে খাওয়ার পর বাসায় প্রবেশ করতে পারি।
যেমন কথা তেমন কাজ। গাড়ি পার্ক করেছে। তারি গ্লাসে নিলো।দুজন ই খাচ্ছে।
বেশ কিছুক্ষণ পর,
রিনি বলে উঠেঃ ঐশী, মাথা টা চক্কর দিচ্ছে কেন?
চারপাশে, ধোঁয়াশা দেখছি।এমন কেন?
ঐশী বলেঃ আমি তো অন্ধকার দেখছি চারপাশে।
দুজন ই তারি সব শেষ করে নিয়েছে। প্রচুর মাথা ধরেছে।
হঠাৎ,
ঐশী দেখে,
রিনি তাকে রুমে নিয়ে যাচ্ছে। সুন্দর করে শুয়ে দিলো।ঐশী আরাম করে ঘুমিয়ে পড়লো।আবার, আলতো করে চোখ জোড়া খুলে বলে,ধন্যবাদ রিনি।
রিনি আলতো করে দেখে,
ঐশী তাকে তুলছে। তবে চোখ জোড়া কছলে ফেলে রিনি।তখন দেখে প্রিন্স।
রিনি বলেঃ হে হে।ঐশী তোরে এখন দে দে দে দেখতে প্রিন্স এর মতো লাগছে। এমন কেন?মনে হয় এই প্রিন্স আমাকে পাগল করে ছাড়বে।
আবার,
রিনি বলেঃ তোই আমার কোমরে শক্ত করে ধর।না হয় পড়ে যাবো।
আর শাড়ি টা সামনে থেকে ঠিক করে দে।
একদম পড়ে যাচ্ছে আঁচল টা।
জা জানিস ঐশী, আজকে এই জালিম মাহমুদ স্যার একটা মেয়ের ফুচকা খাওয়া অনেক তৃপ্তি করে দেখছিলো।
কেনো জানি আমার খারাপ লাগছে। বুকের মধ্যে চিনচিন করছে। হুহ।
রিনি আবার বলেঃ এই ঐশী তোই হাসিস কেন?কিছু তো বল?
দুঃখের কথা বলছি। আর তোই আমাকে নিয়ে হাসছিস।
রিনি বকবক করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লো। রিনি কে সুন্দর করে শুয়ে দিলো। রিনি গভীর ঘুমে মগ্ন হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। একদম পিচ্চি মেয়ের মতো।শাড়ি টা এলোমেলো হয়ে গেছে। কালো শাড়ী তে একদম অপসারী লাগছিলো রিনি কে।
ঐশী ও রিনি গভীর ঘুমে মগ্ন হয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। সকালের আলোতে, রিনির চোখ জোড়া খুলে দেখে,সে বাসায় তার রুমে ঘুমিয়ে ছিলো এতক্ষণ। পাশে দেখে ঐশী ও ঘুমিয়ে আছে।
রিনি মনে করার চেষ্টা করে কি হয়ে ছিলো রাতে?
রিনি বলেঃ আচ্ছা,কেমনে আসলাম নিজের ঘরে?
রিনি চোখ বন্ধ করে চেষ্টা করছে কালকের রাতের কথা মনে করতে। তখনই, রিনির মনে পড়ে, সে নেশার ঘোরে আবছা আলোতে দেখেছিলো,
ঐশী,তাকে তোলে নিয়ে…..
?
?
হাবিব বলেঃ কিছু মনে করো না।প্লিজ শাম্মি।
আমি নিজেকে আর সংযত করতে পারি নি।কি যেনো অদৃশ্য একটা টান অনুভব করছি।যার ফলে এভাবে জাপ্টে ধরেছি।
তখনই শাম্মি বলেঃ হাবিব,আমি ও আপনাকে ভালোবাসি। অনেক ভালোবাসি।সারাজীবন আপনার সাথে থাকতে চাই।
হাবিব বলেঃ এটা কি স্বপ্ন নাকি?
মনে হচ্ছে সব স্বপ্ন। আমি এমন স্বপ্ন সারাজীবন দেখতে চাই। আমার ঘুম যেনো না ভেঙ্গে যায়। স্বপ্ন টা থাকুক এভাবে। চলুক দিনভর।
শাম্মি তার মুখ টা হাবিব এর কাছে নিয়ে গেল। শাম্মি আস্তে করে, একটা চুমু দেয়।
শাম্মি বলেঃ প্রিয়, এটা সত্যি।স্বপ্ন না।ভালোবাসি হাবিব।সেদিন নিরব ছিলাম কারণ, আমি কি চাই তা জানতে। কিছু টা সময় নিয়ে ছিলাম।
অবশেষে উত্তর পেলাম।তোমাকে ছাড়া আমার চলবে না।
হাবিব বলেঃ ধন্যবাদ এতো সুন্দর সারপ্রাইজ এর জন্য। শাম্মি তোমার হাতটা দাও?
শাম্মি হাতটা এগিয়ে দেয়। হাবিব আলতো করে হাতটা ধরে আর একটা চুমু দেয়। দুজন একটা চেয়ারে বসে।
হাবিব দেখে কিছু মেহেদীর টিউব পড়ে আছে । হাবিব একটা তোলে নেই।আর,শাম্মি কে দু-হাতে মেহেদী দিচ্ছে। দেখতে দেখতে দুহাত ভরে মেহেদী দিয়ে দেয়। শাম্মি অবাক হয়ে গেছে। কারণ, হাবিব অনেক সুন্দর করে মেহেদী দিয়ে দিলো।মেহেদী শুকিয়ে গেছে। দুজন তাকিয়ে আছে দুজনের চোখের দিকে।
শাম্মি বলেঃ হাবিব,আমি কি মা,বাবাকে আপনার কথা জানাবো?
হাবিব বলেঃ শাম্মি……
?
?
রাবেয়া বলেঃ কামাল এটা তো খুব সুন্দর জায়গা।তবে এটার নাম কি?
জান্নাত বলেঃ ওফ ফাইনালি পৌঁছে গেলাম।কমছে কম ২,৩ ঘন্টা এর সফর হয়েছে।
কামাল বলেঃ এটা হচ্ছে, আলির গুহা। এখানে অনেক টা পথ টা হাটতে হবে।সো কিছু খাবার বহন করতে হবে। আমি ও মুগ্ধ যায়। তোমাদের জন্য কিছু নিয়ে আসি খাবার জন্য।
সুমি বলেঃ হা।যাও। রহমান থাকুক আমাদের সাথে। কারণ, আমরা এমন নির্জন জায়গায় একা থাকলে ভালো হবে না।
সবাই সহমত জানাই। কামাল ও মুগ্ধ চলে গেল। রহমান বসে আছে জান্নাত, সুমি,রাবেয়ার সাথে।
জান্নাত বলেঃ সুমি!!!
সুমি বলেঃ জি।
জান্নাত বলেঃ কেমনে পারলি?
আমাকে এভাবে একা করে রাখতে। তোকে যে কতটা মিস করছি। বলার ভাষা হারিয়ে ফেলছি। তোই যখন কাছে ছিলি তখন তোর সাথে না থাকলে যে এতটা মিস করবো বুঝতে পারিনি।তবে এখন হারে হারে টের পাচ্ছি।
সুমি বলেঃ তোই আমার তেমন ই প্রিয় আছিস।
নিয়তি চাইলে আমরা আবার একসাথে থাকবো।
আমিও বড্ড কষ্ট পেয়েছি তোকে ছেড়ে। কাছে আয়।
সুমি জাপ্টে ধরে জান্নাত কে।দুজন বান্ধুবী বেশ কিছু দিন দূরে থাকলে একে অপর কে খুব মিস করে।
রাবেয়া বলেঃ আমি কি দোষ করলাম?
আমাকে ও জড়িয়ে ধরো না?
তিনজন ই হাগ করে।সুমির মনটা আজ অনেক ভালো লাগছে। একদম ফুরফুরে হয়ে গেছে। জান্নাত এর ঠোঁটের কোণে হাসি ফুটে উঠেছে। রাবেয়া ও খুব খুশী।
রহমান বলেঃ আচ্ছা, জান্নাত।
জান্নাত বলেঃ জি জিজু।
রহমান বলেঃ মুগ্ধ কে কেনো কষ্ট দিচ্ছো?
প্রিয় মানুষ টা কে না পাওয়ার অনেক কষ্ট। কেনো দূরে সরিয়ে দিচ্ছো?
সুমি বলেঃ জান্নাত আমার মনে হয়,
এটা বলার সাথে সাথে, রহমান সুমির কথা টা বন্ধ করে দেয়।
রহমান বলেঃ জান্নাত, জীবন টা তোমাকে ভালো একটা উপহার দিচ্ছে।
কেনো সরিয়ে দিচ্ছো???
জান্নাত বলেঃ জানি না জিজু।
রাবেয়া বলেঃ জান্নাত, আসো ওই পাখি টা দেখি।ওইদিকে প্রকৃতি ও দেখতে সুন্দর।
রাবেয়া ও জান্নাত একপাশে চলে গেল।
সুমি বলেঃ আমার কথা কেনো বন্ধ করে দিয়ে ছিলে?
রহমান জিন বলেঃ সুমি,আসলে,
জান্নাত নিজে ও জানে না।তার অজান্তেই, সে মুগ্ধ কে….
চলবে…..