রুম নাম্বার ১০১,পর্বঃ- ০২

0
788

গল্পঃ- রুম নাম্বার ১০১,পর্বঃ- ০২
লেখাঃ- Rafsan Sydul
পর্বঃ- ০২

হাঁটুর একটু উপরে শীতল কিছু অনুভব করছে মহিমা, উপরের দিকে উঠছে সেটা। সমস্ত শরীরের পশমগুলো কাটা দিয়ে ফুটছে এমন সময় রমিজ মিয়া পিছন থেকে ডাক দিয়ে বললো.
“আপা আপনার খাবার আপনার রুমে রেখে এসেছি”
কথাটা বলার সময় রমিজ মিয়ার সমস্ত মুখ ঘেমে গেছে। রমিজ মিয়া তাকিয়ে ছিল মহিমার পেটের দিকে। অদ্ভুত ভাবে গোলাপি গেঞ্জির ভিতর থেকে কেউ বলছে রমিজকে চলে যেতে, কিন্তু রমিজ ওখান থেকে সরছে না। মহিমা থমকে দাঁড়িয়ে আছে, শরীরের ভেতরে কেমন করছে মহিমার। সরতে পারছে না রমিজ মিয়ার জন্য। যদি কিছু হয় তাহলে অন্ততঃ লজ্জায় তার সামনে আসা-যাওয়া মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে। রমিজ মিয়া আবার বললো,
“ম্যাডাম অস্বস্তি লাগছে?”
“একটু একটু”
“আমি আগেই বলছিলাম ম্যাডাম। তবে যাইহোক তার আপনাকে পছন্দ হয়েছে”
“কার আমাকে পছন্দ হয়েছে?” বিস্মিত চোখে তাকায় মহিমা। রমিজ মিয়া হতভম্ব হয়ে মাথা নিচু করে দ্রুত প্রস্থান করে সেখান থেকে, কথাটা বলা উচিত হয়নি তার। কিছু কিছু কথা বলা তার বারণ আছে। যদি কখনো সেসব কথা মুখ ফসকে বের হয়ে আসে তাহলে সে রাতে তার শরীরের অত্যাচার দ্বিগুন হয়।

রমিজ মিয়া যেতেই দ্রুত মহিমা নিজের রুমে ঢুকেই জিন্স খুলে ফেলে। চারদিকে অন্ধকার। নিজেই নিজেকে দেখতে পাচ্ছে না তখন দেয়ালের সেই মার্বেল পাথরগুলো ঝলসে উঠছে, মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে মহিমা। শরীরে গোলাপি গেঞ্জি ছাড়া আর কিছুই নেই। মহিমা নিজ রুমে শরীরের সবকিছু খুলে বসে থাকতে পারলে হয়তো বেশি খুশি হতো কিন্তু তখন নিজের কাছেই কেমন যেন লাগত, তাই অর্ধনগ্ন হয়ে বসে রাতের খাবার খেয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ছে। মোবাইলে তার ভালোবাসার কাছে নিজের নগ্ন ছবি আদান প্রদান করছে। রুমের কোনে কোন এক আবছা ছায়া বসে বসে দেখছে মহিমার নগ্ন দেহ। ইচ্ছে করছে ঝাপিয়ে পড়ে ওই যৌনতা ভরা যৌবনে। চাইলেই কি সব হয়? এ চাওয়াটা মনের বাহিরেরও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় তাদের। আজ নাহয় দূর থেকেই তৃষ্ণা মিটায় সে। অন্ধকারে হারিয়ে যায় সে ছায়া। মহিমা মেতে আছে তার ভালোবাসায়। এর মাঝে মনের আড়াল হয় রমিজ মিয়ার মুখ ফসকে বের হওয়া কথাটা। যা মনের মধ্যে সন্দেহের সৃষ্টি করে।

সে রাতে মহিমা তৃপ্তির ঘুম ঘুমিয়ে নেয়। সকাল হতেই স্কুল। ব্যস্ততা মহিমাকে ঘিরে নিবে। এলার্ম ঘড়ির টিকটিক শব্দে ঘুম ভাঙে মহিমার। বাহিরের কোমল রোদ তার শরীরে এসে ভিড়ছে। সাদা চামড়া আরও উজ্জ্বল দেখাচ্ছে। মহিমার চোখে এখনো ঘুম টেবিলের উপরে নাস্তা রেখে দেওয়া দেখে নিজের শরীরের দিকে তাকায়। নগ্ন দেহে ঘুমিয়ে ছিল মহিমা তাহলে “রুমে কে আসল?” রমিজ মিয়া আসলে তো আমার সব শেষ? ”
তড়িঘড়ি করে পোশাক পড়ে মহিমা। বাহিরের ঘরে রমিজ মিয়ার কাছে যায় মহিমা। রমিজ মিয়ার রুমের দরজা আটকানো দেখা হালকা করে ডাক দেয় মহিমা.
“রমিজ চাচা, এই রমিজ চাচা রুমে আছেন কি?”
মচমচে একটা শব্দ করে দরজা খুলে দেয় রমিজ মিয়া। চেহারার বিভৎস দাগ। সারা মুখে রক্তের ছাপ স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে। মহিমা ঘাবড়ে যায় রমিজ মিয়ার এমন অবস্থা দেখে.
“কি হয়েছে আপনার? ” মহিমার চোখে বিস্ময়কর অনুভূতি।
“কিছু হয়নি মা, রাতে ঘুমানোর সময় হয়তো কিছু লেগেছে মুখে”
“ওহ্!”
চুপ হয়ে যায় মহিমা। যা বলার জন্য এসেছিল মহিমা তা বলতে দ্বিধা বাজছে রমিজ মিয়াকে দেখে। মহিমার চুপ থাকা দেখে রমিজ মিয়া বললো.
“কিছু বলবে মা?”
“না তেমন কিছু না। আসলে আমার রুমে সকাল সকাল নাস্তা দিয়ে আসলো কে? তা জিগ্যেস করতে এসেছিলাম একটু।”
“কেনো মা কিছু কি হয়েছে?”
“একজন মেয়ে মানুষের রুমে সকাল সকাল কে যায় সেটা তো জানতে হয় চাচা”
“ওহ্! সে ব্যাপার। আজকে পাশের বাসা থেকে কাজের মেয়েটা আসছিল ওই নিয়ে গেছে তোমার রুমে তোমার নাস্তা।”
বড় করে এক নিশ্বাস ফেলে মহিমা। তারমানে রমিজ চাচা যায়নি তার রুমে।
“আচ্ছা চাচা আমি আসি আপনার কিছু লাগলে বলবেন এনে দিব।”
বলেই মহিমা সেখান থেকে চলে আসে নিজের রুমে। সুন্দর করে সাজানো টেবিলের উপর দুটো রুটি একটি ডিম একটি আপেল, এক গ্লাস লাল বর্ণের অদ্ভুত জলীয়।

রমিজ মিয়া নিজের রুমের দরজা আটকে নিজের হাতের দিকে তাকায়, কতখানি কেটেছে সেটা দেখবার জন্য। এখনো টুপটুপ রক্ত ঝড়ছে সেখান থেকে। হাঁটু গেড়ে বসে পড়ে এক ছায়ামূর্তির সামনে। “হুজুর আমি আপনার দাশ। দয়া করুন আমাকে একটু। হুজুর আর সহ্য হচ্ছেনা যে।” আকুতি মিনতি করছে রমিজ মিয়া। কে কিংবা কার কাছে আকুতি করছে সবকিছুই যে ধোঁয়া অন্ধকার।

মহিমা নাস্তা করে পানির পরিবর্তে গ্লাসভর্তি রক্তের ভিতরে মুখ চুবিয়েই সব বমি করে ফেলে দেয়।….

“চলবে”

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here