রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ১৯,২০

0
1989

রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ১৯,২০
লেখিকা: সুলতানা তমা

পুরো এক সপ্তাহ হসপিটালে থেকে তারপর বাসায় আসতে পারলাম। বাসার সামনে এসে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম, হসপিটালে এতো দিন থাকা যায়। কাব্য যে কিভাবে সারাটা দিন হসপিটালে কাটায়…
আমি: আরে কি করছ ডাক্তারবাবু?
কাব্য: দেখতেই তো পারছ কি করছি।
আমি: হ্যাঁ দেখছি কিন্তু আমি তো হেটে যেতে পারবো কোলে নিয়েছ কেন?
কাব্য: তুমি এখনো পুরোপুরি সুস্থ হওনি তাই।
আমি: তাই বলে এখান থেকে বাসার ভিতরে…
কাব্য: উফফফ তুমি না বড্ড বেশি কথা বলো। (কাব্য’র ধমক শুনে চুপ হয়ে গেলাম। গাড়ি থেকে নেমে বাসার ভিতর চলে যাবো তাও এইটুকু জায়গা ও আমাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে)
হিয়া: এইতো ভাইয়া ভাবিকে নিয়ে চলে এসেছে।
ভাবি: এখানে বসিয়ে দাও। (কাব্য আমাকে ড্রয়িংরুমে সোফায় এনে বসিয়ে দিলো)
অয়ন: ভাবি তুমি এতোদিন হসপিটালে ছিলে বাসাটা কেমন যেন ফাঁকাফাঁকা লাগছিল।
ভাবি: হ্যাঁ এখন ওর সামনে বেশি বকবক করোনা ও কিন্তু এখনো পুরোপুরি সুস্থ হয়নি।
আমি: ভাবি আমি ঠিক আছি সুস্থ হয়ে গেছি তোমরা এতো চিন্তা করোনা।
কাব্য: হ্যাঁ তুমি এতোটাই সুস্থ হয়ে গেছ যে এখন তুমি দৌড়াতে পারবে। (কাব্য’র কথা শুনে চুপ হয়ে গেলাম, সত্যিই তো আমি এখনো পুরোপুরি সুস্থ হইনি)

হিয়ার কাধে মাথা রেখে বসে আছি আর সবাই গল্প করছে। হঠাৎ কলিংবেল বেজে উঠলো।
কাব্য: ফারাবী এসেছে মনে হয় আমি দেখছি। (কাব্য দরজা খুলে দিতেই মামি এসে তাড়াহুড়ো করে ভিতরে ঢুকলেন)
মামি: তমা।
আমি: মামি তুমি এখা…
মামি: এতো অবাক হচ্ছিস কেন আমি তোকে দেখতে এসেছি।
আমি: বাহ্ এক সপ্তাহের উপর হসপিটালে থেকে আসলাম তখন দেখতে যাওনি আর আজ বাসায় আসা মাত্রই দেখতে চলে আসলে।
ভাবি: মামি আপনি বসে কথা বলুন না। (মামি এসে আমার পাশে বসলেন)
মামি: আসলে আমি জানতাম না তুই এতোটা অসুস্থ সেদিন তিশা বলছিল তুই অসুস্থ আমি এতোটা কানে নেইনি কিন্তু আজ তিশা ওর মায়ের সাথে কথা বলছিল তোর বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে এই ব্যাপারে, তাই তো ছুটে আসলাম তোকে দেখতে। (ব্যাপার কি মামি হঠাৎ এতো ভালো হয়ে গেলো, কোনো না কোনো কাহিনী তো নিশ্চয় আছে। আচ্ছা এসবের পিছনে মামির হাত নেইতো)
মামি: কিরে কথা বলছিস না যে?
কাব্য: মামি এই বিষয়ে তিলোকে কিছু না বলাই ভালো।
মামি: ঠিক আছে বাবা।
কাব্য: আপনি রেস্ট নিন আমি তিলোকে নিয়ে রুমে যাচ্ছি। (কাব্য আবার আমাকে কোলে তুলে নিলো, সবাই স্বাভাবিক ভাবেই তাকিয়ে আছে কিন্তু মামি চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। কাব্য’র বুকের শার্ট খামছে ধরে মাথাটা ওর বুকের মধ্যে এলিয়ে দিলাম। কাব্য সিঁড়ি দিয়ে উপড়ে উঠতে উঠতে আমার দিকে ভ্রু কুঁচকিয়ে তাকালো)
আমি: এভাবে ভ্রু কুচকাচ্ছ কেন?
কাব্য: তুমি হাসছ কেন?
আমি: বউকে কোলে করে নিয়ে চলাফেরা করতে হয় তোমার কি কষ্ট এইটা ভেবেই হাসছি।
কাব্য: ওহ তাই তো আমার তো খুব কষ্ট হয় এখনো হচ্ছে, আমার তো এখন তোমাকে ঠাস করে ফেলে দেওয়া উচিত।
আমি: এই না না। (ভয়ে দুহাত দিয়ে কাব্য’র গলা জরিয়ে ধরলাম)

কাব্য আমাকে বিছানায় শুয়ে দিয়ে জানালা গুলো খুলে দিলো। কতোদিন পর নিজের রুমে আসতে পেরেছি।
আমি: কতোদিন পর বাসায় আসছি তাই না?
কাব্য: হ্যাঁ আমার লক্ষী আমার ঘরে ফিরে এসেছে।
আমি: লক্ষী কে?
কাব্য: আমার বউ।
আমি: তোমার বউ কে?
কাব্য: আমার তিলো পাগলী।
আমি: তোমার তিলো পাগলী কে?
কাব্য: তু… (কথা আটকে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হেসে দিলো কাব্য। কতোদিন পর ওর মুখে এই পাগল করা হাসিটা দেখলাম)
কাব্য: তিলো সব ভুলে যাও আমরা আবার নতুন করে সব সাজাবো কেমন?
আমি: হু।
কাব্য: পেটের ব্যথা কমেছে? (কি বলি এখন ওকে, পেটের ব্যথাটা যে এখনো কমেনি। কাব্য’কে বললে তো ও টেনশন করবে)
কাব্য: আর বলতে হবে না আমি উত্তর পেয়ে গেছি। (কাব্য আমার পেটের শাড়ি সরাতে সরাতে বললো)
আমি: আরে ডাক্তারবাবু কি করছ?
কাব্য: ডাক্তারবাবু তার বউয়ের চিকিৎসা করছে। (কাব্য আমার পেটে আলতো করে একটা চুমু খেলো)
কাব্য: চিন্তা করোনা সব ঠিক হয়ে যাবে। (কাব্য’র দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। আজ কতোদিন পর কাব্য এমনভাবে স্বাভাবিক হয়ে কথা বলছে, হাসছে)
কাব্য: তখন ভয় পেয়ে আমার গলা জরিয়ে ধরেছিলে কেন, ভেবেছিলে সত্যি আমি তোমাকে ফেলে দিবো?
আমি: আস…
কাব্য: তোমার ডাক্তারবাবু তোমাকে কখনো কষ্ট দিবে না যদি কখনো পাও বুঝে নিও নিজের অজান্তে দিয়ে ফেলেছি। (আমার নাকের সাথে ওর নাক ঘসছে। দ্যাত নিজের প্রতি এখন রাগ হচ্ছে, আগে কেন ভয় পেতে গেলাম)
কাব্য: নিজের উপর রাগ করোনা বুঝেছ।
আমি: নিজের উপর রাগ করোনা বুঝেছ। আমি যে নিজের উপর রাগ করেছি তুমি বুঝলে কিভাবে?
কাব্য: আমাকে ভেঙাচ্ছ কেন আমি বুঝতে পেরেছি তাই বললাম। আসলে তুমি যখন নিজেই নিজের প্রতি রেগে যাও তখন তোমার নাকটা লাল হয়ে যায় আর আমার তখন… (কাব্য আমার ঠোঁটের কাছে ওর ঠোঁট দুটু এনে আমার চোখের দিকে তাকালো)
আমি: আর তোমার তখন কি?
কাব্য: তোমার লাল হয়ে যাওয়া নাকটায় কামড় বসিয়ে দিতে ইচ্ছে করে (কাব্য আমার নাকে আলতো করে একটা কামড় দিলো)
আমি: ফাজিল কোথাকার অসুস্থ বউয়ের সাথে রোমান্স হচ্ছে।
কাব্য: অসুস্থ বউয়ের সাথে রোমান্স করা যাবে না এইটা কোন বইয়ে লিখা আছে হু?
আমি: কোনো বইয়ে লিখা নেই তবে আমার আইনে আছে।
কাব্য: যে আইন আমার থেকে আমার তিলো পাগলীকে আলাদা করে নিবে সে আইন আমি মানি না বুঝেছ?
আমি: হ্যাঁ বুঝেছি কিন্তু কি করছ এসব?
কাব্য: যা করছি তাতো দেখতেই পারছ। (কাব্য আমার পেট থেকে চুমু দিয়ে দিয়ে আস্তে আস্তে উপরে উঠছে। গলায় চুমু দিয়ে একটা হাত আমার গালে রাখলো তারপর আমার ঠোঁটের উপর ওর ঠোঁট রাখলো। একটা হাত দিয়ে কাব্য’র ঘাড়ের কাছের চুলগুলো মুষ্টি করে ধরলাম সাথে সাথে দরজায় টোকা পড়লো, ওর চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে ওকে সরাতে চাইলাম। কাব্য আমার ঠোঁট দুটু ওর ঠোঁটের মধ্যে রেখেই আমার চোখের দিকে তাকালো। রাগে কাব্য’র চোখ দুটু লাল হয়ে আছে দেখে খুব হাসি পাচ্ছে কিন্তু কাব্য তো আমাকে ছাড়ছেই না, ওদিকে কে যেন দরজায় টোকা দিয়েই যাচ্ছে)
কাব্য: নাও ছেড়ে দিলাম আর হাসি চেপে রাখতে হবে না মন খুলে হাসো। (হাসি আটকানোর জন্য একটা হাত দিয়ে মুখ ঢাকলাম, কাব্য দেখে আরো রেগে গেলো)
কাব্য: যে এসেছে তাকে তো এখন আমি…
আমি: আরে ডাক্তারবাবু… (কাব্য রাগ নিয়ে দরজা খুললেও হিয়াকে দেখে ওর সব রাগ ফুস)
হিয়া: কখন থেকে ডাকছি এতোক্ষণ লাগে দরজা খুলতে (কাব্য কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না তাই মাথা চুলকাচ্ছে)
হিয়া: নাও ভাবিকে খাবার খাইয়ে দিয়ে ওষুধ দাও।
কাব্য: ঠিক আছে রেখে যা। (হিয়া খাবার রেখে আমার দিকে তাকিয়ে একটা চোখ টিপ দিয়ে চলে গেলো। হিয়া চোখ টিপ দিলো কেন)
কাব্য: কি ভাবছ?
আমি: হিয়া চোখ টিপ দিলো কেন?
কাব্য: জানিন… (কাব্য অর্ধেক বলে আটকে গেছে, আমার পেটের দিকে তাকিয়ে আছে। ওর এমন চাওয়া দেখে পেটের দিকে তাকালাম, ইহহ পেটে তো শাড়ি নেই তারমানে…)
কাব্য: আমার দিকে রাগি চোখে তাকাচ্ছ কেন আমি কিছু জানিনা।
আমি: নিজে সরিয়ে এখন জানেনা, ইসসস হিয়া বুঝে পেলেছে তুমি আমাকে…
কাব্য: আদর করছিলাম তাই তো, হিয়া বুঝলে কি হয়েছে আমি আমার বউকেই তো আদর করছিলাম।
আমি: হিয়া তো বোন তাই না?
কাব্য: আমার বোন হলেও তোমার তো ননদ সমস্যা নেই।
আমি: না হিয়া আমারো বোন।
কাব্য: আচ্ছা বাবা হিয়া তোমারই বোন এখন খেয়ে নাও।
আমি: হু।

ছোট বাচ্চাদের মানুষ যেভাবে যত্ন করে কাব্য সেভাবে আমার যত্ন করছে। নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দিয়েছে, ওষুধ খাইয়ে দিয়েছে আ…
কাব্য: কি হলো মিটিমিটি হাসছ যে?
আমি: ভাবছি হাজবেন্ড ডক্টর হলে ভালোই হয় অসুস্থ হলে বেশি বেশি সেবা পাওয়া যায়।
কাব্য: আর ওইটা বলো হাজবেন্ড রোমান্টিক হলেও ভালো হয় অসুস্থ হলেও আদর পাওয়া যায়।
আমি: দ্যাত তুমি না। (হঠাৎ কাব্য’র ফোন বেজে উঠলো। ফোন নিয়ে কাব্য জানালার কাছে চলে গেলো)

কাব্য: আরে লোক দুটু তো আর আকাশে উড়ে উড়ে ছাদে আসেনি এসেছে তো নিচ থেকেই তাহলে সিসি ক্যামেরায় দেখা যাবে না কেন? (ওপাশ থেকে কে কি বলছে শুনতে পাচ্ছি না তবে এইটা বুঝতে পারছি কাব্য লোক দুটুকে খুঁজছে)
কাব্য: বাইরের ক্যামেরা নাহয় নষ্ট করে দিয়েছিল কিন্তু হসপিটালে তো অনেক ক্যামেরা কোনো ক্যামেরায় কি ধরা পড়েনি? (কাব্য যে খুঁজছে ওদের ওই মেয়েটা আবার হিয়ার কোনো ক্ষতি করবে নাতো। আমি কি কাব্য’কে নিষেধ করবো)
কাব্য: দ্যাত ফোন রাখ তিলো সুস্থ হলেই আমি কক্সবাজার আসছি। (কাব্য ফোন কেটে দিয়ে আমার পাশে এসে বসলো)
কাব্য: তিলো এখন ঘুমিয়ে পড়ো অনেক রাত হয়েছে।
আমি: ওকে।

কাব্য লোক দুইটাকে পাগলের মতো খুঁজছে বুঝতে পারছি কিন্তু ওই মেয়েটা যদি হিয়ার ক্ষতি করে তাই ভয় হচ্ছে। কাব্য’কে নিষেধ করলেও শুনবে না কারণ কাব্য আমাকে ভালোবাসে, যারা আমাকে এতো কষ্ট দিয়েছে কাব্য তাদের ছেড়ে দিবে না। কাব্য আমাকে এতোটাই ভালোবাসে যে এতো অসুস্থ ছিলাম আমি ওর একটু একটু ভালোবাসা সেবা দিয়ে আমাকে সুস্থ করে তুলেছে। একটা ছোট বাচ্চাকে যেভাবে যত্ন করা হয় কাব্য আমাকে সেভাবে যত্ন করছে। কতোটা ভালোবাসলে মানুষ এতো ধৈর্য নিয়ে দিনের পর দিন এভাবে যত্ন করে যেতে পারে কাব্য আমার জীবনে না আসলে বুঝতামই না।

মাঝরাতে হঠাৎ পেটের ব্যথায় ঘুম ভেঙে গেলো, কাব্য’কে ডাকার জন্য হাত বাড়ালাম কিন্তু কাব্য তো আমার পাশে নেই। তাকিয়ে দেখি কাব্য কি যেন লিখছে, আশ্চর্য এতো রাতে আর ডিম লাইটের আলোতে কাব্য কি লিখছে? আচ্ছা ডায়েরি নয় তো? কাব্য হঠাৎ ডায়েরিটা হাতে নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে পা বাড়ালো। কাব্য কোথায় যাবে আমি দেখতে পারবো না কারণ ওর পিছু পিছু যাওয়া সম্ভব না পেটে ব্যথা করছে। যেভাবেই হউক কাব্য’কে আটকাতে হবে যেন কাব্য ভুলে ডায়েরিটা এই রুমেই রেখে দেয়।
আমি: ডাক্তারবাবু… (আমার ডাক শুনে কাব্য থেমে গেলো, ডায়েরিটা টেবিলে ছুড়ে ফেলে দিয়ে তাড়াতাড়ি আমার কাছে আসলো)
কাব্য: কি হয়েছে তিলো কষ্ট হচ্ছে তোমার।
আমি: হুম পেটে ব্যথা করছে আর এই রুমে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
কাব্য: এই রুমে…
আমি: আমাকে বারান্দায় নিয়ে চলো প্লিজ।
কাব্য: এতো রাতে।
আমি: হু।
কাব্য: ঠিক আছে।

কাব্য আমাকে কোলে করে এনে বারান্দায় রাখা কাউছ’টায় শুয়ে দিলো।
আমি: তুমি কোথায় যাচ্ছ।
কাব্য: আসছি একটু।
আমি: কোথাও যাবে না আমার ভয় করে এখানে বস। (কাব্য চুপচাপ এসে আমার পাশে শুয়ে পড়লো, কাব্য’র বুকে মাথা রেখে ওকে জরিয়ে ধরলাম। সকালে ওর আগে আমাকে ঘুম থেকে উঠতে হবে যেন ডায়েরিটা পেয়ে যাই। রাতে কাব্য’র এখান থেকে যাওয়ার সুযোগ নেই ডায়েরি লুকাবে কিভাবে)
কাব্য: ঘুমিয়ে পড়ো তিলো পাগলী।
কাব্য এক হাত দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরে রেখেছে আরেক হাত দিয়ে আমার চুলে বিলি কেটে দিচ্ছে। কাব্য’কে জরিয়ে ধরে চুপচাপ শুয়ে রইলাম, সকালে শুরু হবে আব্বু আম্মুকে খুঁজে বের করার জন্য আমার প্রথম কাজ।

চলবে?

রোমান্টিক ডাক্তার
পার্ট: ২০
লেখিকা: সুলতানা তমা

সকালে ঘুম ভাঙতেই ঘুম ঘুম চোখে রুমের চারপাশে তাকালাম, কাব্য সোফায় বসে ল্যাপটপ টিপছে।
কাব্য: গুড মর্নিং তিলো পাগলী।
আমি: গুড মর্নি… (আশ্চর্য কাব্য এভাবে হাসছে কেন, আমার দিকে না তাকিয়েই ল্যাপটপ টিপছে আর মিটিমিটি হাসছে)
আমি: এই তুমি এভাবে হাসছ কেন? (কিছুনা বলে আরো বেশি হাসছে)
আমি: বলো বলছি কেন হাসছ।
কাব্য: কোথায় আমি হাসছি নাতো। (হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরে হাসছে ইচ্ছে হচ্ছে ওকে… হঠাৎ রাতের কথা মনে পড়লো। আমার তো কাব্য’র আগে ঘুম থেকে উঠার কথা ছিল আর ডায়েরি… ডায়েরিটা আছে তো? তাড়াতাড়ি উঠে বসলাম, কোথায় টেবিলে তো ডায়েরিটা নেই)
কাব্য: আরে এভাবে লাফ দিয়ে উঠে বসেছ কেন সমস্যা হবে তো।
আমি: আচ্ছা আমরা তো বারান্দায় ঘুমিয়েছিলাম তাহলে বিছানায় আসলাম কিভাবে?
কাব্য: এই ঠান্ডার মধ্যে তোমাকে বারান্দায় রাখবো আমি পাগল হয়েছি তো। তুমি ঘুমানোর পরই তোমাকে রুমে নিয়ে এসেছি। (তারমানে কাব্য রাতেই ডায়েরিটা সরিয়ে ফেলেছে। এখন কি করবো আমি, দ্যাত নিজের প্রতি নিজের রাগ হচ্ছে ইচ্ছে হচ্ছে নিজেকেই…)
কাব্য: তুমি আবার নিজের উপর রাগ করছ? আমি কিন্তু তোমার রাগে লাল হয়ে যাওয়া নাক দেখে নিজেকে ঠিক রাখতে পারবো না।
আমি: তুমি আবার হাসছ? (আচ্ছা কাব্য এভাবে হাসছে কেন তাহলে কি ও আমার চালাকি ধরে ফেলেছে। দ্যাত আমি চালাকি করতে পারলাম কোথায় কাব্য নিজেই তো আমার চেয়ে বড় চালাক)
কাব্য: তিলো তুমি অসুস্থ রেস্ট নাও প্লিজ, অন্য টেনশন মাথায় এনো না। (অবাক হয়ে তাকালাম কাব্য’র দিকে তারমানে কাব্য সব বুঝে ফেলেছে)
কাব্য: যেভাবে আছি ভালোই তো আছি কেন শুধু শুধু অশান্তি বাড়াচ্ছ?
আমি: অশান্তি আমি করছি না। আর টেনশনের কথা বলছ? আমার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই টেনশন আমি করেই যাবো।
কাব্য: হুম করো কিন্তু মনে রেখো কোনো লাভ হবে না। (কাব্য রুম থেকে বেরিয়ে গেলো)
ডাক্তারবাবু তুমি আমার সাথে যতোই চালাকি করো আমি যখন বলেছি আব্বু আম্মুকে ফিরিয়ে আনবো তাহলে আনবোই।

দুই সপ্তাহ পর…

এই দুই সপ্তাহের ভিতরে কাব্য’কে আর ডায়েরি লিখতে দেখিনি, ভেবেই পাচ্ছি না কিভাবে কি করবো। কাব্য যেহেতু ডায়েরিটা আমার থেকে লুকিয়ে রাখতে চাইছে তারমানে এই ডায়েরিতে কোনো না কোনো রহস্য তো আছেই।
ভাবি: হিয়া কি হয়েছে? (ড্রয়িংরুমে বসে বসে এসব ভাবছিলাম হঠাৎ ভাবির কথা শুনে দরজার দিকে তাকালাম হিয়া ভয়ে দৌড়ে ভিতরে এসে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিলো)
ভাবি: কিরে হিয়া কি হয়েছে?
আমি: হিয়া কি হয়েছে তুমি এতো ভয় পেয়ে আছ কেন?
হিয়া: আমাকে পানি দাও। (ভাবি হিয়ার জন্য পানি আনতে গেলেন, হিয়া আমাকে জরিয়ে ধরে বসে আছে। আশ্চর্য হিয়া এতো ভয় পেলো কেন?)
ভাবি: এইনে পানি খেয়ে নিজেকে শান্ত করে বলতো কি হয়েছে। (হিয়া ঢকঢক করে পানি খেয়ে আবার আমাকে জরিয়ে ধরলো, কিছুই তো বুঝতে পারছি না)
ভাবি: হিয়া বল আমাদের কি হয়েছে?
হিয়া: শপিং করতে গিয়েছিলাম কখন যে সন্ধ্যা হয়ে গেছে বুঝতেই পারিনি। যখন শপিংমল থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলাম তখন মনে হলো কেউ আমাকে ফলো করছে। গাড়িও নিয়ে যাইনি তাই তাড়াতাড়ি একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়ি। কিন্তু বার বার মনে হচ্ছিল কে যেন আমাকে ফলো করছে, ভয়ে আর পিছন ফিরে তাকানোর সাহস পাইনি। বাসার সামনে এসে যখন রিকশা থেকে নামলাম তখন দুইটা লোক আমার দুইপাশে এসে দাঁড়ালো। বিপদ হতে পারে বুঝতে পেরে একটা লোককে ধাক্কা দিয়ে আমি দৌড়ে চলে আসি আর আসার সময়…
আমি: আসার সময় কি?
হিয়া: একটা লোকের হাতে বোধহয় চাকু ছিল আমি দেখতে পাইনি আমার হাতে লেগে গেছে।
ভাবি: কোথায় দেখি?
আমি: অনেকটা জায়গা কেটে গেছে তো। (হঠাৎ পাশেই রাখা আমার ফোনটা বেজে উঠলো, কাব্য ফোন দিয়েছে)
ভাবি: তিলোত্তমা কে ফোন দিয়েছে দেখ আমি হিয়ার হাত ব্যান্ডেজ করে দিচ্ছি।
আমি: হুম।

একটু দূর এসে ফোনটা রিসিভ করলাম।
আমি: হ্যালো।
কাব্য: তিলো আজকে ফিরতে পারবো না।
আমি: কেন?
কাব্য: একটু কাজ আছে। (কিসের কাজ এমন যে কাব্য বাসায় ফিরবে না। আচ্ছা ও তো বলেছিল আমি সুস্থ হলে কক্সবাজার যাবে এখন তো আমি পুরোপুরি সুস্থ তাহলে কি ও কক্সবাজার যাচ্ছে)
আমি: আমার থেকে কি লুকাচ্ছ বলো।
কাব্য: কি লুকাবো কিছুই নাতো, কাজ আছে তাই ফিরবো না। (কাব্য যদি সত্যি কক্সবাজার যেতে চায় তাহলে ওকে আটকাতে হবে। হিয়ার সাথে আজকে যা ঘটলো তা আমার কাছে ঠিক লাগছে না, আমি নিশ্চিত এসব ওই মেয়েটার কাজ)
আমি: ডাক্তারবাবু হিয়া হাত কেটে ফেলেছে।
কাব্য: মানে কিভাবে?
আমি: বাসায় আসো তারপর বলছি।
কাব্য: ঠিক আছে আমি আসছি। (ফোন রেখে হিয়ার কাছে আসলাম)
আমি: আচ্ছা হিয়া তুমি লোক দুইটাকে চিনতে পেরেছ?
হিয়া: না অন্ধকারে তো বুঝা যাচ্ছিল না আর মনে হলো দুজনের মুখই রোমাল দিয়ে বাধা ছিল। (আমাকে যারা মেরেছিল তারা নয়তো)
আমি: শপিং করতে গিয়েছিলে তো ছিনতাইকারী হবে, তুমি ভয় পেয়ো না রুমে গিয়ে রেস্ট নাও।
হিয়া: ঠিক আছে।

বারান্দা আর রুমে পায়চারী করছি কিছুতেই শান্ত হয়ে বসতে পারছি না। মেয়েটা অনেক দূর এগিয়ে গেছে, আজ হয়তো হিয়ার তেমন ক্ষতি হয়নি কিন্তু পরে? পরে যে বেশি ক্ষতি করবে না তার কি নিশ্চয়তা আছে? হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো হাতে নিয়ে দেখি অচেনা নাম্বার, এই অচেনা নাম্বার দেখলেই এখন আমার ভয় হয়। ভয়ে ভয়ে ফোনটা রিসিভ করলাম।
আমি: হ্যালো।
–আমি আন্দাজ করতে পেরেছি সেদিন হসপিটালে আমার ফোন কাব্য নয় তুমি রিসিভ করেছিলে। আমি এতোকিছু বলার পরও কাব্য চুপ হয়ে থাকার ছেলে নয়। সেদিন কি কি বলেছিলাম মনে আছে তো? অবশ্য মনে না থাকলেও সমস্যা নেই আজ হিয়ার এই অবস্থা দেখে অবশ্যই মনে পরে গেছে।
আমি: তুমি কে বলতো।
–আমি কে শুনলে চমকে যাবে তারচেয়ে না জানাই ভালো।
আমি: কেন করছ এরকম?
–কাব্য আমার সাথে প্রতারণা করেছে তাই প্রতিশোধ নিচ্ছি ওকে আমি শান্তিতে থাকতে দিবো না।
আমি: কি করবে তুমি হ্যাঁ?
–যা যা করেছি তা থেকে কি আন্দাজ করতে পারছ না?
আমি: দেখো তোমার কোথাও ভুল হচ্ছে ডাক্তারবাবু কারো সাথে প্রতারণা করতেই পারে না।
–করেছে তো আমার সাথে করেছে।
আমি: যেটুকু বুঝতে পেরেছি তুমি ডাক্তারবাবুর অতীত আ…
–তুমি খুব চালাক মেয়ে কিন্তু তুমি এইটা কেন বুঝতে পারছ না কাব্য আমার লোক গুলোকে খুঁজতে চাইছে আর তাই আমি হিয়ার ক্ষতি করছি। কাব্য’কে নিষেধ করো তাহ…
আমি: অন্যায় যখন করেছ শাস্তি তো তোমাকে পেতেই হবে।
–আমাকে খুঁজে পাবে না তো শাস্তি কিভাবে দিবে? বরং আমি তোমাদের একের পর এক ক্ষতি করেই যাবো।
আমি: ভীতুরা লুকিয়েই অন্যের ক্ষতি করে, সাহস থাকলে সামনে এসে ক্ষতি করো দেখি পারো কিনা।
–এই আমাকে একদম ভীতু বলবি না।
আমি: ভীতু কে তো ভীতুই বলতে হয়। তুমি তো ভয়ে আমার সামনেই আসছ না টাকা দিয়ে লোক কিনে আমাদের ক্ষতি করছ আ…
–খুব শীঘ্রই তোর সামনে আসবো। (ফোনটা কেটে দিলো যাক রাগিয়ে দিয়ে তো একটা কাজ হলো, ও আমার সামনে আসবে ওকে তো চিনতে পারবো)
হঠাৎ কাব্যদের চেঁচামেচি শুনে তাড়াতাড়ি নিচে আসলাম।

তিন ভাই একসাথে চলে এসেছে আর হিয়াকে একটার পর একটা প্রশ্ন করেই যাচ্ছে।
হিয়া: আরে থামো তোমরা। (হিয়ার চিৎকারে সবাই শান্ত হলো)
হিয়া: এভাবে তিনজন একসাথে প্রশ্ন করলে আমি উত্তর দিবো কিভাবে?
ভাইয়া: ঠিক আছে এখন বল তোর হাত কেটেছে কিভাবে।
হিয়া: দুজন লো…
আমি: হিয়াকে রাস্তায় ছিনতাইকারী ফলো করেছিল আর ওদের কাছ থেকে পালিয়ে আসতে গিয়ে কেটে গেছে।
কাব্য: তোকে একা বাইরে যেতে বলেছিল কে অয়নকে বললে তো নিয়ে যেতো আর একা গিয়েছিস তো গাড়ি নিলি না কেন?
হিয়া: কখন থেকে সবাই আমাকে বকা দিয়েই যাচ্ছ, আমার তো তেমন কিছুই হয়নি সামান্য হাত কেটেছে মাত্র।
অয়ন: এক থাপ্পড় দিবো সামান্য কেটেছে বলছে আবার।
আমি: অয়ন কি করছ? যাও তোমরা তিন ভাই এই রুম থেকে বের হও। (সবাইকে জোর করে রুম থেকে বের করে দিলাম)
ভাবি: কেন যে একা একা গেলি।
হিয়া: আমি জানতাম নাকি ছিনতাইকারী ধরবে।
আমি: অয়নকে নিয়ে গেলেই পারতে, দেখছ তো সামান্য হাত কাটাতে তোমার ভাইরা কেমন পাগল পাগল হয়ে গেছে।
হিয়া: হু।
আমি: এখন চুপ করে ঘুমাও।
হিয়া: ঠিক আছে।

রুমে এসে দেখি কাব্য নেই গেলো কোথায়? বারান্দার দরজা খোলা তাহলে মনে হয় বারান্দায়। কাব্য বারান্দায় দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে কাঁদছে, হঠাৎ ও কাঁদছে কেন?
আমি: ডাক্তারবাবু।
কাব্য: হুম।
আমি: কি হয়েছে কাঁদছ কেন?
কাব্য: জানো তিলো আমি কখনো হিয়ার গায়ে এতটুকু আছর লাগতে দেইনি আর আজ হিয়ার হাত এতোটা কেটে গেছে।
আমি: এজন্য কাঁদতে হয় পাগল কোথাকার।
কাব্য: কি করবো খুব কষ্ট হচ্ছে যে, হিয়াটাই তো আমার সব।
আমি: হু বুঝতে পেরেছি। (সামান্য হাত কেটে গেছে তাতেই কাব্য কান্নাকাটি করছে এরচেয়ে বড় কোনো ক্ষতি হলে তো কাব্য…)
আমি: আচ্ছা তোমাকে একটা প্রশ্ন করি রাগ করবে নাতো?
কাব্য: উঁহু বলো।
আমি: আচ্ছা তুমি তো আমার প্রথম ভালোবাসা আমিও কি তোমার প্রথম ভালোবাসা? (কাব্য চমকে উঠে আমার দিকে তাকালো)
কাব্য: হঠাৎ এসব জানতে চাইছ কেন?
আমি: বলোনা প্লিজ। (কাব্য’কে পিছন থেকে জরিয়ে ধরে ওর পিটে মাথা রাখলাম, কোনো ভাবে তো জানতে হবে আমাকে মেয়েটা কে)
কাব্য: তুমি আমার প্রথম ভালোবাসা না, এর আগেও আমার একজনের সাথে রিলেশন ছিল।
আমি: তাহলে তাকে বিয়ে করলে না কেন?
কাব্য: ওকে বিয়ে করলে কি আমার তিলো পাগলীকে পেতাম?
আমি: তুমি কিন্তু আমার কথা এড়িয়ে যাচ্ছ, আচ্ছা মেয়েটির নাম কি ছিল?
কাব্য: ওই নোংরা নামটা আমি মুখে আনতে চাই না। (কাব্য আমাকে এক ঝটকা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে রুমে চলে গেলো)

কিযে করি কিছুই ভেবে পাচ্ছি না। কাব্য তখন রাগ করে বাসা থেকেই বেরিয়ে গেলো, মেয়েটির নাম জানতে চাওয়াতে কাব্য এতো রেগে গেলো কেন বুঝতে পারছি না। দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকালাম রাত এগারোটা বাজে, কাব্য এখনো বাসায় আসছে না কেন? হঠাৎ ফোন বেজে উঠলো, আদনান ভাইয়া এতো রাতে ফোন দিলো কেন?
আমি: হ্যালো।
আদনান: ভাবি কাব্য আমার কাছে আছে টেনশন করোনা।
আমি: ও বাসায় আসবে না?
আদনান: বলেছিলাম ও তো না করছে। আর তুমি হঠাৎ করে ওর অতীত জানতে চাইছ কেন বলতো?
আমি: ওহ এজন্য ও রাগ করেছে?
আদনান: রাগ না ঠিক তবে অতীত মনে পড়লে ও কষ্ট পায় প্লিজ আর কখনো জানতে চেয়ে ওকে কষ্ট দিও না।
আমি: ঠিক আছে ওকে সকালে পাঠিয়ে দিও।
আদনান: ওকে।
আশ্চর্য তো যে কাব্য আমাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারে না সে কাব্য সামান্য অতীত জানতে চাওয়াতে রাগ করে বন্ধুর বাসায় চলে গেলো।

কাব্য যখন বাসায় নেই এই সুযোগটাই কাজে লাগাতে হবে, এমনিতেই অনেক দেরি হয়ে গেছে। কিন্তু ডায়েরিটা পাবো কোথায়? এই রুমে কোথাও আছে বলে তো মনে হয় না।

কি খুঁজছি নিজেও জানিনা শুধু জানি ডায়েরিটা আমাকে পেতে হবে। আর খুঁজতে খুঁজতে নিচে চলে এসেছি। অন্যমনস্ক হয়ে হাটছিলাম হঠাৎ অয়নের সাথে ধাক্কা খেলাম, এতো রাতে অয়ন সজাগ কেনো?
অয়ন: ভাবি এতো রাতে এখানে কি করছ?
আমি: আমিও তো তোমাকে এই একি প্রশ্ন করতে পারি।
অয়ন: এইতো ঘুম আসছিল না তাই হাটছিলাম।
আমি: ওহ আমি পানি খেতে আসছিলাম।
অয়ন: মিথ্যে বলছ তুমি, আমি এর আগেও অনেক বার লক্ষ করেছি তুমি এই বাসায় কি যেন খুঁজো।
আমি: হ্যাঁ খুঁজি, তুমি আমাকে সাহায্য করবে?
অয়ন: বলে দেখো করলে তো করতেও পারি। (অয়নের দিকে তাকালাম সত্যি কি ওকে বলা উচিত হবে, ও কি সাহায্য করবে আমায়)
আমি: আসলে আমি তোমার ভাইয়ার ডায়েরি খুঁজছি।
অয়ন: হঠাৎ ডায়েরি কেন?
আমি: প্রয়োজন আছে।
অয়ন: আমাকে বললে সাহায্য করতে পারি।
আমি: আম্মু আব্বুকে খুঁজে বের করতে চাই আবার সবাইকে এক করতে চাই।
অয়ন: পারবে তুমি এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে?
আমি: পারবো কিনা জানিনা তবে চেষ্টা তো করতেই পারি।
অয়ন: চলো আমার সাথে।

অয়ন আমার হাত ধরে টেনে স্টোররুমে নিয়ে আসলো।
আমি: এই রুমে তো আমি আগেও এসেছি এখানে কিছু নেই। (অয়ন আমার দিকে একবার তাকিয়ে দেয়ালের সাথে লাগানো আলমারিটা সরিয়ে ফেললো। আলমারির পিছনে দরজা দেখে তো আমি অবাক)
অয়ন: এই দরজার কথা কেউ জানেনা একদিন আমি ভাইয়াকে ফলো করে এখানে এসেছিলাম আর তুমি ভাইয়ার আব্বু আম্মুকে ফিরিয়ে আনতে চাইছ বলেই তোমাকে দেখালাম।
আমি: এখানে আরেকটা রুম আছে?
অয়ন: লাইব্রেরী।

অয়ন আর আমি দুজন লাইব্রেরীতে ঢুকলাম। ছোট একটা রুম কিন্তু পুরো রুমে বই দিয়ে ঠাসা। টেবিলের উপর অনেক গুলো ডায়েরি রাখা আর টেবিলের পাশে গীটার রাখা। দেয়ালে তাকালাম পুরো দেয়াল জুড়ে শুধু আব্বু আম্মুর ছবি। সেদিন যে ডায়েরিটা দেখেছিলাম সে ডায়েরিটা টেবিলের উপর রাখা দেখে হাতে নিলাম। অবশেষে ডায়েরিটা পেয়ে গেলাম, কোনো না কোনো সূত্র তো পাবোই আব্বু আম্মুকে খুঁজে পাওয়ার। আস্তে আস্তে ডায়েরিটা খুললাম…

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here