রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ২১,২২

0
1894

রোমান্টিক ডাক্তার,পার্ট: ২১,২২
লেখিকা: সুলতানা তমা

এই ডায়েরি খুলে আমার পুরো মাথাটাই নষ্ট হয়ে গেলো, পুরোটা জুড়ে শুধু আমার কথাই লিখা।
“ভেবেছিলাম আর কখনো কোনো মেয়েকে ভালোবাসবো না, ঘৃণা জন্মে গিয়েছিল মেয়েদের প্রতি। কিন্তু আজ হসপিটালে তিলোত্তমাকে দেখে নতুন করে ভালোবাসা জন্মেছে আমার মনে, ইচ্ছে হচ্ছে এই তিলো পাগলীকে সহস্র শতাব্দী ভালোবাসি। জানিনা তিলো পাগলীর মধ্যে কি আছে মন শুধু ওকেই ভালোবাসতে চায়”

“আমার তিলো পাগলী দেখতে খুব মায়াবী, ওর চোখ দুটু এতো গভীর যে এই চোখের গভীরতায় ডুব দিয়ে অনায়াসে কাটিয়ে দেয়া যাবে হাজারটা শতাব্দী। তিলো পাগলীর চুলগুলো সবসময় আমাকে মন্ত্রমুগ্ধের মতো ওর কাছে টানে। তিলো পাগলী রেগে গেলে ওর নাকটা লাল হয়ে যায় ইচ্ছে হয় তখন নাকে কামড় বসিয়ে দেই হিহিহি”

“আজ তিলো পাগলীর সাথে অনেক বড় অন্যায় করে ফেলেছি, শুধুমাত্র ওর মামির ভুলের জন্য ওকে টাকা দিয়ে কিনতে হয়েছে আমার। জানিনা এসব কতোদিন লুকিয়ে রাখতে পারবো, তিলো জানলে খুব কষ্ট পাবে”

“অবশেষে বিয়ে করে ফেললাম তিলো পাগলীকে। এখন আর কোনো ভয় নেই ওকে হারানোর, তিলো শুধু আমার এখন”

“আমার তিলো পাগলী এতোটাই ঘুম পাগলী যে আজ আমাদের বাসর রাত জেনেও তিলো দিব্বি ঘুমুচ্ছে। আমার বাসর পুরাই মাটি হয়ে গেলো”

দ্যাত আর পড়তে ইচ্ছে হচ্ছে না। শুধু আমাকে নিয়েই লিখা কেন, মেয়েটিকে নিয়ে তো কিছুই পাচ্ছি না আর আব্বু আম্মুকে নিয়ে তো কিছুই লিখা নেই। রাগে ডায়েরির পাতা গুলো উল্টাচ্ছিলাম হঠাৎ শেষ লিখাটায় চোখ আটকে গেল। কি যেন লেখা সাথে ছোট একটি বাবুর ছবি। ছবিটা সরিয়ে লেখা গুলো দেখলাম।
“আমি আসলেই খারাপ, হিয়া ঠিকি বলে আমি কখনো ভালো হতে পারবো না। তিলো ভয় পাওয়ার পরও কক্সবাজার যাওয়ার কি প্রয়োজন ছিল। জোর করে তিলোকে নিয়ে গেলাম আর এখন কিসব হয়ে গেলো। আমাদের বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে গেলো। আমারই তো খুব কষ্ট হচ্ছে তিলোর তো কষ্ট হবেই। তিলো নাহয় মুখে আমাকে কোনো দোষ দিচ্ছে না কিন্তু তিলো নিজেও তো জানে আমার জোর করার কারণেই আজ আমাদের এই শাস্তি পেতে হলো। তিলো পাগলী আমাকে ক্ষমা করে দিও সোনা বিশ্বাস করো আমি বুঝতে পারিনি এমন কিছু হবে আর তুমি প্রেগন্যান্ট সেটাই তো আমি বুঝতে পারিনি। কোনো বাবা কি তার সন্তানকে মেরে ফেলতে চায় তুমিই বলো। তোমাদের কাউকে আমার কষ্ট বুঝতে দেই না কিন্তু আমারো তো কষ্ট হয় কারণ আমি যে বাবা”
আর পড়তে পারলাম না চোখ দুটু থেকে বৃষ্টির মতো পানি পরে ডায়েরিটা ভিজিয়ে দিচ্ছে। এতো কষ্ট পেয়েছে কাব্য কিন্তু আমার সামনে দিব্বি হেসেছে শুধুমাত্র আমি যেন সাহস পাই মনে এজন্য।

ডায়েরিটা রেখে বাকি ডায়েরি গুলোতে খুঁজছি, কোথাও মেয়েটি বা আব্বু আম্মুদের নিয়ে কিছু লিখা নেই। একটা ডায়েরি উল্টাতে উল্টাতে হঠাৎ ডায়েরির মাঝখানে চোখ পড়লো। ডায়েরির প্রথম দিকে বা শেষ দিকে কিছু লিখা নেই শুধু মাঝখানে একটা পৃষ্ঠায় লিখা…
“তোমার জন্য লিখা ডায়েরিটা পুরিয়ে ফেলেছি আরশি, কি হবে এই নোংরা অতীত গুলো জমিয়ে রেখে। আগে কষ্ট হতো তোমাকে মনে পড়তো কিন্তু এখন তোমাকে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছে হয় কারণ তুমি আমার জীবন থেকে চলে না গেলে আমি আমার তিলো পাগলীকে পেতাম না। তুমি ছিলে নোংরা মেয়ে আর তুমি চলে যাওয়াতে আমি পেয়েছি তিলোত্তমার মতো একটি পবিত্র মেয়ে”

আর কিছু লিখা নেই, তারমানে মেয়েটির নাম আরশি। এতোকিছু এই আরশি মেয়েটাই করছে।
অয়ন: ভাবি শেষ হয়েছে ভাইয়া কিন্তু যেকোনো সময় চলে আসতে পারে।
আমি: ডাক্তারবাবু বাসায় নেই চুপ করে বসে থাকো।
অয়ন: বাসায় নেই মানে এতো রাতে ভাইয়া কোথায় গেলো।
আমি: আমার উপর রাগ করে আদনান ভাইয়ার বাসায় চলে গেছে। এতো কথা বলোনা তো।
অয়ন: এতো মনোযোগ দিয়ে কিযে খুঁজছ তুমি।
আমি: একটা সূত্র চাই শুধু, যে সূত্র ধরে আমি আব্বু আম্মুর কাছে পৌঁছাতে পারবো।
অয়ন: কি বলছ এতো আস্তে আস্তে?
আমি: উফফ অয়ন চুপ করে বসো তো।
অয়ন: ঠিক আছে কি আর করার আমি বসে থাকি আর তুমি গোয়েন্দাগিরি করো। তবে হ্যাঁ আমি তোমাকে সাহায্য করছি এইটা যেন ভাইয়া না জানে, জানলে আমার বারোটা বাজিয়ে দিবে। (অয়নের কথার কোনো উত্তর দিলাম না। একমনে একে একে সব গুলো ডায়েরি খুঁজে চলেছি। একটা মানুষের কাছে এতোগুলো ডায়েরি থাকতে পারে ভাবতেই পারছি না)

হঠাৎ একটা ডায়েরিতে কিছু লিখা পেলাম কিন্তু অনেক কম।
“তোমাদের আব্বু আম্মু ডাকতে আমার ঘৃণা হয় তাই তোমাদের নিয়ে কিছু লিখতে চাই না, ইচ্ছে নেই লিখার। কিছু লিখতে আসলে মনে পড়ে যায় তোমরা কোনো সন্তানের বাবা মা হবার যোগ্যই না”

আর কিছু লিখা নেই। সারা ডায়েরি খুঁজে শেষ দিকটায় একটা ছোট লিখা পেলাম। দেখে তো মনে হচ্ছে কোনো বাসার ঠিকানা, তাহলে কি আমি যা খুঁজছিলাম তা পেয়ে গেছি? কিন্তু এই জায়গাটা তো ঢাকা থেকে অনেক দূরে যাবো কিভাবে আমি। কাব্য’কে তো বলে যাওয়া যাবে না আর এতো দূর লুকিয়ে যাওয়া তো সম্ভব না। যা করার সুযোগ বুঝে করবো, ঠিকানাটা একটা কাগজে লিখে নিলাম। ডায়েরি গুলো সব গুছিয়ে রাখলাম ঠিক আগের মতো, কাব্য যেন বুঝতে না পারে যে এই রুমে কেউ এসেছিল। কাব্য যদি একবার বুঝতে পারে তাহলে প্রথমেই আমাকে সন্দেহ করবে আর অশান্তি করবে।
অয়ন: ভাবি শেষ?
আমি: হুম চলো।
অয়ন: পেয়েছ কিছু?
আমি: মেয়েটার নাম জানতে পেরেছি আর একটা বাসার ঠিকানা পেয়েছি।
অয়ন: বাসার ঠিকানা…
আমি: হুম, জানিনা ওই বাসায় কে থাকেন তবে আমার সন্দেহ হচ্ছে। আমার ধারণা যদি ঠিক হয় তাহলে ওই বাসায় আব্বু বা আম্মু থাকেন অথবা দুজনই থাকেন।
অয়ন: যদি তাই হয় তাহলে ভাইয়া জানবে কিভাবে?
আমি: তোমার ভাইয়া মুখে যতোই বলুক আব্বু আম্মুকে ঘৃণা করে সত্যি তো এটাই ও আব্বু আম্মুকে খুব ভালোবাসে। আর একজন সন্তান বাবা মায়ের খুঁজ নিবে কোথায় থাকে সেটা জানবে এটাই তো স্বাভাবিক।
অয়ন: হুম বুঝলাম কিন্তু তুমি জানবে কিভাবে ওই বাসায় কে থাকে।
আমি: যাবো আমি ওই বাসায়, আমাকে জানতে হবেই।
অয়ন: ঠিক আছে।

এতো রাত হয়েছে কিন্তু ঘুম আসছে না। বিয়ের পর কাব্য’কে ছাড়া কখনো একা থাকিনি আর আজ কাব্য এমন করলো। ফোনটা হাতে নিয়ে ভাবছি ওকে ফোন করবো কিনা। ভাবতে ভাবতে ফোনটা করেই ফেললাম কিন্তু ফোন তো সুইচড অফ বলছে। আশ্চর্য সামান্য একটা নাম জানতে চাইছি বলে কাব্য আমাকে এতো বড় শাস্তি দিচ্ছে। ইচ্ছে হচ্ছে কাব্য’র কাছে ছুটে চলে যাই কিছুই ভালো লাগছে না ওকে ছাড়া। আজ বুঝতে পারছি আমি কাব্য’কে কতোটা ভালোবাসি।

দরজায় কে যেন ধাক্কাচ্ছে তাড়াতাড়ি উঠে এসে দরজা খুললাম। ভেবেছিলাম কাব্য চলে এসেছে কিন্তু না ভাবি আমাকে ডাকতে এসেছে।
ভাবি: কিরে কি হয়েছে তোর এতো বেলা হয়ে গেলো এখনো উঠছিস না। আর তোর চোখ মুখের এই অবস্থা কেন? (ভাবির কথা শোনে ঘড়ির দিকে তাকালাম সকাল নয়টা বাজে)
আমি: নয়টা বাজে তো ডাক্তারবাবু আসেনি?
ভাবি: মানে কি কাব্য বাসায় নেই?
আমি: না কালকে আমার উপর রাগ করে আদনান ভাইয়ার বাসায় চলে গিয়েছিল।
ভাবি: চিন্তা করিস না চলে আসবে। ফ্রেশ হয়ে নাশতা করতে আয়।
আমি: হুম।

কিসের ফ্রেশ হওয়া আগে ফোনটা হাতে নিয়ে কাব্য’কে ফোন দিলাম, এখও সুইচড অফ বলছে। আর ভালো লাগছে না আমার এবার কান্না করে দিবো।
অয়ন: ছোট ভাবি নিচে এসো। (অয়নের ডাক শুনে ফোনটা রেখে নিচে চলে আসলাম)

হিয়া: ভাবি কি হয়েছে তোমার রাতে ঘুমাওনি?
আমি: ঘুমাবো না কেন, তোমার হাতের অবস্থা কি?
হিয়া: এইতো ভালো।
অয়ন: ভাবি রাতে ভাইয়ার চিন্তায় ঘুমাতে পারেনি।
ভাবি: অয়ন এইটা নিয়ে কেউ ঠাট্টা করে। (সত্যিই তো রাতে ঘুম হয়নি। ডায়েরি খুঁজে আর পরে কাব্য’র চিন্তায় ঘুমই হয়নি তেমন)
অয়ন: ভাবি কিছুই তো খাচ্ছ না।
আমি: আমার খেতে ইচ্ছে করছে না। (চুপচাপ রুমে চলে আসলাম)

সবকিছু অসহ্য লাগছে, কাব্য’কে ছাড়া সবকিছু কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগছে। আচ্ছা কাব্য’রও কি এমন লাগছে?
অয়ন: ভাবি আসবো?
আমি: হ্যাঁ এসো।
অয়ন: একটা কথা বলি যদি রাগ না করো।
আমি: বলো।
অয়ন: ভাইয়া তো বাসায় নেই তুমি চাইলেই এই ফাকে ওই ঠিকানায় যেতে পারো (অয়নের দিকে তাকালাম, ও তো ঠিকি বলছে। কিন্তু কাব্য যদি বাসায় ফিরে আসে তখন কি হবে)
আমি: না না এই রিস্ক নেওয়া যাবে না এমনিতে ডাক্তারবাবু আমার উপর রেগে আছে আর হুট বাসায় এসে যদি দেখে আমি বাসায় নেই তখন আরো রেগে যাবে।
অয়ন: তাও ঠিক বলেছ।
আমি: তুমি চিন্তা করোনা আমি সুযোগ বুঝে ওই বাসায় যাবো।
অয়ন: ঠিক আছে।

অয়ন চলে যেতেই ফোনটা নিয়ে আদনান ভাইয়াকে ফোন দিলাম।
আদনান: ভাবি আমরা হসপিটালে জামেলায় আছি পরে কথা হবে। (ফোনটা কেটে দিলো কিসের জামেলায় আছে কে জানে)

সারাটা দিন কেটে গেলো কিন্তু কাব্য আসলো না। সারাটা দিন অপেক্ষা করা যে কতো কষ্টের আজ ভালো ভাবেই বুঝেছি। কাব্য তো ফোনটাও অফ করে রেখেছে আর পারছি না ইচ্ছে হচ্ছে… ফোন বেজে উঠলো বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিলাম দৌড়ে রুমে গেলাম, হয়তো কাব্য ফোন করেছে। নাহ তিশা ফোন করেছে।
আমি: হুম তিশা।
তিশা: কি হয়েছে কাঁদছিস কেন?
আমি: ডাক্তারবাবু আমার উপর রাগ করে চলে গেছে বাসায় আসছে না।
তিশা: কান্না থামা আর ফোন কর।
আমি: ফোন অফ।
তিশা: দাঁড়া আমি আদনানকে ফোন করছি। (তিশা ফোন কেটে দিলো)

রাত দশটা বাজে এখনো ওর আশার নাম নেই। হঠাৎ মেসেজটোন বেজে উঠলো, তিশা মেসেজ করেছে।
“কাব্য বাসায় চলে গেছে একটু অপেক্ষা কর”

কিছুক্ষণ পর দরজায় টোকা পড়লো, দৌড়ে এসে দরজা খুললাম। কাব্য দাঁড়িয়ে আছে দেখেই ওর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়লাম। কাব্য আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো, ও নিঃশব্দে কাঁদছে আমি বুঝতে পারছি, ওর চোখের পানি আমার ঘাড় বেয়ে পিটে গিয়ে পড়ছে।
কাব্য: হুম হয়েছে অনেক কেঁদেছ এবার থামো।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: তিলো এভাবে কাঁদলে কিন্তু আমি আবার চলে যাবো। (কাব্য’র কথা শুনে ওকে ছেড়ে দিয়ে দূরে এসে দাঁড়ালাম। অবাক হয়ে তাকিয়ে আছি ওর দিকে, কাব্য আবার চলে যাবে এই কথাটা বলতে পারলো ও)

চুপচাপ বিছানায় বসে আছি আর নিঃশব্দে কাঁদছি। কাব্য দরজা বন্ধ করে এসে আমার পায়ের কাছে ফ্লোরে বসে পড়লো। কাব্য আমার কোলে মাথা রেখে দুহাত দিয়ে আমার কোমর জরিয়ে ধরলো।
কাব্য: কি হলো চুলে হাত বুলিয়ে দিবে না? (ওকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে বিছানার এক পাশে এসে শুয়ে পড়লাম। এতো কষ্ট দিয়ে আজ আবার চলে যাওয়ার কথা বলছে তারমানে ওর কোনো কষ্ট হয়নি)
কাব্য: আমার তিলো পাগলী খুব রাগ করেছে আর ওর নাকটা লাল হয়ে গেছে ইচ্ছে হচ্ছে…
আমি: একদম আমার কাছে আসবে না।
কাব্য: সরি ভুল হয়ে গেছে ক্ষমা করে দাও। আসলে ফোনটা ভুলে আদনানের বাসায় ফেলে রেখে গিয়েছিলাম আর হসপিটালে আজ একটু জামেলা ছিল তাই বাসায় আসতে পারিনি।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: এইযে কান ধরছি আর এমন হবে না।
আমি: (নিশ্চুপ)
কাব্য: মানছি ভুল করেছি তাই বলে এখন কথা বলবে না। আচ্ছা তুমি কি একা কষ্ট পেয়েছ আমি পাইনি?
আমি: কষ্ট পেলে আজ আবার চলে যাওয়ার কথা বলতে না।
কাব্য: এইটা তো তোমাকে রাগানোর জন্য বলেছি। আবার যাবো পাগল হয়েছি এমনিতেই যা কষ্ট পেয়েছি। জানো কাল রাতে একটুও ঘুমাতে পারিনি। (কাব্য আমার পাশে শুয়ে এক হাত দিয়ে আমাকে জরিয়ে ধরলো,আমার গালে ওর গাল ঘষছে)
কাব্য: আর কখনো এমন হবে না আসলে…
আমি: হয়েছে আর বলতে হবে না।
কাব্য: হুম একটু হাসো প্লিজ। (কাব্য’র চোখের দিকে তাকালাম, ও পারে কিভাবে এতো সহজ ভাবে কথা বলতে)
কাব্য: যদিও রাগ করে বাসা থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলাম, এইটা হওয়া উচিত ছিল।
আমি: মানে?
কাব্য: এইযে এই রাগের জন্য দুজন একদিন আলাদা থেকেছি আর কে কাকে কতোটা ভালোবাসি সেটা বুঝতে পেরেছি।
আমি: ভালোবাসা বুঝার জন্য দূরে যেতে হয় না, ভালোবাসা দিয়েই ভালোবাসা বুঝা যায়।
কাব্য: হুম তাইতো এখন ভালোবাসা দিয়ে ভালোবাসা বুঝবো।
আমি: কি করছ।
কাব্য: চুপ।
কাব্য একটা আঙ্গুল আমার মুখে রেখে কথা বলতে নিষেধ করলো। আমার হাত বিছানায় চেপে ধরে আমার হাতের আঙ্গুলের ভাজে ভাজে ওর আঙ্গুল গুলো আটকে দিলো। চোখ দুটু বন্ধ করে আছি কাব্য মাতালের মতো আমার সারা শরীরে চুমু খাচ্ছে, ওকে আটকানোর চেষ্টা করতেই আমার ঠোঁটের মধ্যে ওর ঠোঁট ডুবিয়ে দিলো। আমার ঠোঁট দুটু ওর ঠোঁটের মাঝে রেখে আমার চোখের দিকে ও এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। কাব্য’র নেশা ধরানো চাহনি আর মাতাল করা স্পর্শে শিউরে উঠে কাব্য’কে শক্ত করে জরিয়ে ধরলাম।

চলবে?

রোমান্টিক ডাক্তার
পার্ট: ২২
লেখিকা: সুলতানা তমা

আয়নার সামনে বসে চুল আছড়াচ্ছি আর বার বার কাব্য’র দিকে নজর পড়ছে। আয়নাতে ওকে ঘুমন্ত অবস্থায় দেখতে খুব মায়াবী লাগছে কিন্তু ওর ঘুম দেখে হিংসেও হচ্ছে। ইচ্ছে হচ্ছে ঘুমটা ভাঙিয়ে দেই। কোনো ইচ্ছে অপূর্ণ রাখতে নেই তাই কাব্য’র পাশে এসে দাঁড়ালাম, ভেজা চুলগুলো মুঠো করে ওর মুখের উপর ধরলাম। চুল থেকে টুপটুপ করে পানি ওর চোখে মুখে পড়তেই এক রাশ বিরক্তি নিয়ে ঘুম ঘুম চোখে তাকালো।
কাব্য: তিলো কি হচ্ছে?
আমি: যা হবার তাই হচ্ছে।
কাব্য: ঘুমুতে দাও প্লিজ।
আমি: উঁহু হবে না উঠে পড়ো।
কাব্য: তুমি কিন্তু বলেছিলে নামাজ পড়লে ঘুমুতে দিবে, তোমার সাথে তো নামাজ পড়েছি তাহলে এ…
আমি: রাতে আমাকে ঘুমুতে দাওনি এখন তুমি নাক ডেকে ঘুমাবে তা কি করে হয় উঠো বলছি।
কাব্য: প্লিজ লক্ষীটি। (নাহ ওর ঘুম এভাবে ভাঙানো যাবে না অন্য কিছু ভাবতে হবে। আচমকা দেয়াল ঘড়ির দিকে তাকিয়ে চেঁচিয়ে উঠলাম)
আমি: এই দশটা বাজে তুমি হসপিটালে যাবে না। (হিহিহি কাজ হয়ে গেছে কাব্য এক লাফে উঠে বসে গেছে)
কাব্য: মাত্র সাতটা বাজে আর আজ তো শুক্রবার ফাজি মেয়ে। (ঘড়ি দেখে আবার শুয়ে পড়লো দ্যাত)
আমি: রাতে আমাকে ঘুমুতে দিবে না শুধু দুষ্টুমি করবে আর সকালে উনি নাক ডেকে ঘুমুবে আমার ঘুমাবার উপায় নেই। আজ কে দুষ্টুমি করে দেখবো। (ইচ্ছে করেই হাতের চিরুনিটা কাব্য’র উপর ছুড়ে ফেলে দিলাম। চলে আসতে চাইলাম আচমকা কাব্য আমার হাত ধরে হেচকা টান দিয়ে আমাকে ওর বুকে শুয়ে দিলো)
আমি: উফফ কোমরটা বোধহয় ভেঙেই গেছে।
কাব্য: পড়েছ তো আমার উপর তোমার কোমর ভাঙবে কিভাবে। ভেঙেছে তো আমার কোমর যা মুটকি তুমি।
আমি: আমি মুটকি হ্যাঁ, আর আমি পড়েছি নাকি তুমিই তো হাত ধরে টান দিয়েছ।
কাব্য: আস্তে কিল দাও লাগছে তো।
আমি: আর আমাকে মুটকি বলবে? (আরো কতোগুলো কিল দিলাম ওর বুকে)
কাব্য: এমন চিকনিকে মুটকি বলতে আমার বয়েই গেছে।
আমি: হুহ।
কাব্য: ভেজা চুলে তোমাকে খুব স্নিগ্ধ লাগছে ইচ্ছে হচ্ছে…
আমি: আবার দুষ্টুমি শুরু করেছ ছাড়ো বলছি।
কাব্য: প্লিজ। (কাব্য আমার গলায় চুমু দেওয়ার জন্য ওর মুখ এগুতে শুরু করলো, একটা হাত দিয়ে আটকে দিলাম। কাব্য এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আমার দিকে)
আমি: কি হলো রাগ করেছ?
কাব্য: আমাকে ছেড়ে চলে যাবে নাতো কখনো? (আমার চোখের সামনে চলে আসা চুলগুলো কানের কাছে গুঁজে দিয়ে আবার আমার চোখের দিকে তাকালো, ওর চোখে পানি ছলছল করছে)
আমি: হঠাৎ এসব বলছ কেন আর আমি তোমাকে ছেড়ে যাবোই বা কেন?
কাব্য: জানিনা খুব ভয় হয় যদি তোমাকে হারিয়ে ফেলি। (আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো, ওর বুকে মাথা রেখে চুপচাপ শুয়ে আছি)
কাব্য: গতকাল এতোটা সময় তোমার থেকে দূরে থাকতে চাইনি, হঠাৎ হসপিটাল থেকে ফোন এসেছিল আমার ফোনটা আদনান এর বাসায় রেখেই চলে গিয়েছিলাম তারপর আর সুযোগই হয়নি। জানো তুমি কতোটা কষ্ট হয়েছিল আমার, তুমি কখনো চলে গেলে আমি মরেই যাবো।
আমি: পাগলের মতো কি বলছ এসব আর কখনো যেন এসব না শুনি।
কাব্য: হু। (কাব্য’র চোখের পানি মুছে দিয়ে ওর কপালে আলতো করে একটা চুমু দিলাম)
কাব্য: তিলো তোমার সাথে কিছু কথা ছিল হিয়াকে নিয়ে এখন বলবো?
আমি: বলো।
কাব্য: হিয়াকে এর আগেও অনেক বার বিয়ের কথা বলেছি ও সোজা না করে দিয়েছে এখন তো ও দেশে এসেছে ভাবছিলাম বিয়েটা দিয়ে দিলে…
আমি: হিয়া রাজি না কেন?
কাব্য: ওইযে আমার উপর রেগে আছে।
আমি: ভাইয়া অয়ন ওরা জানে?
কাব্য: না আজ বলবো সবাইকে।
আমি: ছেলে দেখেছ?
কাব্য: হুম ছেলের পরিবার ব্যাংকক থাকে, বিয়ের পর হিয়াকেও নিয়ে যাবে।
আমি: তোমরা কথা বলো আমি হিয়াকে রাজি করাবো।
কাব্য: প্লিজ তুমি চেষ্টা করে দেখো, হিয়াকে ভালো ছেলে দেখে ভালো পরিবার দেখে বিয়ে দেওয়াটাই এখন আমার সবচেয়ে বড় দায়িত্ব।
আমি: তুমি চিন্তা করোনা আমি ওকে ঠিক রাজি করাবো। এখন উঠে ফ্রেশ হয়ে নাশতা খেতে আসো।
কাব্য: ওকে।

টেবিলে নাশতা আনছি আর আরশির বলা কথা গুলো ভাবছি, সত্যি ও হিয়ার কোনো ক্ষতি করবে নাতো? একবার হাত কেটেছে পরে আবার কি করে বসবে কে জানে। হিয়ার বিয়েটা হয়ে গেলে ওকে তো ব্যাংকক নিয়ে যাবে তখন আরশি আর হিয়ার খুঁজ পাবে না, আমিও এই চিন্তা থেকে মুক্তি পেতাম। কিন্তু হিয়া কি রাজি হবে?
ভাবি: তিলোত্তমা কি হয়েছে তোর অন্যমনস্ক হয়ে আছিস।
আমি: হুম কিছু হয়নি।

সবাই নাশতা খাচ্ছে কাব্য বার বার হিয়ার দিকে তাকাচ্ছে, বলতে ভয় পাচ্ছে ও। আমাকেই শুরু করতে হবে।
আমি: ডাক্তারবাবু তুমি না আজ কি যেন বলবে বলছিলে সবাইকে।
ভাইয়া: কিরে কাব্য কি বলবি?
কাব্য: আসলে…(আবার হিয়ার দিকে তাকাচ্ছে, কোনো ভাই ছোট বোনকে এতোটা ভয় পায় এই প্রথম দেখলাম)
ভাইয়া: হ্যাঁ বল।
কাব্য: আমি হিয়ার জন্য ছেলে দেখেছি ওর বিয়ে দিতে চাই। (একদমে বলেই হিয়ার দিকে তাকালো, হিয়া তো খুব রেগে গেছে। সবাই হিয়ার দিকে তাকিয়ে আছে)
হিয়া: আগের কথা গুলো ভুলে গেছ? ভুলে গেলে আবারো বলছি আমি বিয়ে করবো না। (হিয়া উঠে রুমে চলে গেলো। কাব্য হাতের খাবারটা রেখে দিয়ে চুপচাপ বসে আছে)
আমি: তোমরা খাও আমি হিয়াকে দেখছি।

হিয়া চুপচাপ বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওর পাশে এসে দাঁড়ালাম।
আমি: হিয়া একটা প্রশ্ন করবো?
হিয়া: হুম।
আমি: তুমি কি কাউকে ভালোবাস?
হিয়া: এই ভালোবাসা সম্পর্ক এসব তো আমি ঘৃণা করি।
আমি: কেন?
হিয়া: কারণ ওই…(আমার দিকে তাকিয়ে হিয়া থেমে গেলো। আব্বু আম্মুর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তো হিয়া জানে না তাহলে ও কিসের জন্য ভালোবাসা সম্পর্ক এসব ঘৃণা করে? আর হিয়া কি বলতে গিয়ে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে থেমে গেলো?)
আমি: বিয়ে করতে চাও না কেন?
হিয়া: যে বিয়েতে আমার আব্বু আম্মু থাকবে না সে বিয়ের কোনো মানে হয় না।
আমি: আর যদি আব্বু আম্মু থাকেন তাহলে বিয়ে করবে? (হিয়া অবাক হয়ে তাকালো আমার দিকে)
হিয়া: কি বলছ এসব?
আমি: যা জিজ্ঞেস করেছি তার উত্তর দাও।
হিয়া: ভাইয়ার জন্য সম্পর্ক ভালোবাসা এসবে ঘৃণা জন্মেছিল কিন্তু তোমাকে দেখে এসবে কিছুটা হলেও বিশ্বাস জন্মেছে আর তাই আব্বু আম্মু উপস্থিত থাকলে আমি আজই বিয়ে করবো। ভাইয়া আমার চোখে অপরাধী কিন্তু সমাজের চোখে তো না। ভাইয়াকে আমি সমাজের কাছে ছোট করতে চাই না কিন্তু আব্বু আম্মু…
আমি: বললাম তো আব্বু আম্মু বিয়ের দিন উপস্থিত থাকবেন।
হিয়া: সত্যি?
আমি: হুম। হয়তো এতো তাড়াতাড়ি খুঁজে পাবো না কিন্তু কথা দিচ্ছি তুমি কবুল বলার ঠিক আগের মুহূর্তে হলেও আমি আব্বু আম্মুকে বিয়ের আসরে উপস্থিত করবো।
হিয়া: আব্বু আম্মু না আসা পর্যন্ত আমিও কবুল বলবো না। যাও ভাইয়াকে বিয়ে ঠিক করতে বলো।
আমি: হুম।

হিয়াকে তো কথা দিলাম ঠিকি কিন্তু পারবো তো আমি? খুব তাড়াতাড়ি করতে হবে সবকিছু, বিয়েটা খুব তাড়াতাড়ি দিয়ে দিতে হবে। আরশির নজর থেকে হিয়াকে দূরে সরাতে হবেই।
কাব্য: তিলো রাজি হয়েছে হিয়া?
আমি: হুম তুমি বিয়ের তারিখ ঠিক করো।
কাব্য: তুমি পারলে কিভাবে ওকে রাজি করাতে?
আমি: (মৃদু হাসলাম। কতো বড় রিস্ক নিয়েছি সেটা তো একমাত্র আমি জানি)
আমি: ছেলে দেখতে কেমন ভালো তো?
কাব্য: হিয়া আমার কলিজার টোকরা ওকে আমি ভালো ছেলের হাতেই তুলে দিবো বিশ্বাস রাখো আমার উপর।
আমি: ঠিক আছে।

ভাবির সাথে রান্নায় হেল্প করছি হঠাৎ দেখি কাব্য আর ভাইয়া রেডি হয়ে এদিকে আসছে। কোথায় যাবে ওরা?
ভাইয়া: নিরা আমরা আসছি।
আমি: কোথায় যাচ্ছ দুজন।
কাব্য: হিয়ার বিয়ে ঠিক করতে।
আমি: আসবে কখন?
কাব্য: রাত হয়ে যাবে।
আমি: ঠিক আছে। (ভাইয়া আর কাব্য বেরিয়ে যেতেই ভাবির হাত ধরে ভাবির মুখের দিকে তাকালাম)
ভাবি: কিছু বলবি?
আমি: হুম একটা হেল্প করো প্লিজ।
ভাবি: কি?
আমি: একটু বাইরে যাবো আসতে অনেক দেরি হবে এর মধ্যে কাব্য চলে আসলে তুমি অন্যকিছু বলো।
ভাবি: কিন্তু যাবি কোথায়?
আমি: পরে বলবো শুধু এই টুকু জেনে রাখো সবার ভালোর জন্যই যাচ্ছি আর অয়নকে সাথে নিয়ে যাচ্ছি তুমি চিন্তা করোনা।
ভাবি: ঠিক আছে সাবধানে যাস।
আমি: ওকে।

অয়নকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম জানিনা ওই ঠিকানায় গিয়ে আদৌ কিছু পাবো কিনা।
অয়ন: ভাবি গাড়ি নিলেই ভালো হবে তাড়াতাড়ি চলে আসতে পারবো।
আমি: ড্রাইভ করতে পারো তো?
অয়ন: এইটা আমরা তিন ভাই ভালোই পারি।
আমি: ঠিক আছে চলো।

অয়ন খুব স্পিডে গাড়ি চালাচ্ছে কিন্তু তাও যেন রাস্তা শেষ হচ্ছে না। ভয়ে আমার শরীর ঘামছে, কাব্য এসব জানতে পারলে আমাকে আস্ত রাখবে না। আর ওই আরশির লোক গুলো তো সবসময় আমাদের উপর নজর রাখছে কখন কি করে বসে ঠিক নেই। আচ্ছা আরশি আমাদের ক্ষতি করবে এটাই শুধু ভাবছি একবারো তো এইটা ভাবছি না আরশি কাব্য’র উপর এতো ক্ষেপে আছে কেন? কাব্য তো কারো সাথে প্রতারণা করার মতো মানুষ নয়, তাহলে আরশি কিসের প্রতিশোধ নিচ্ছে?
অয়ন: ভাবি গাড়ি এখানে রেখে কিছুটা জায়গা হেটে যেতে হবে।
আমি: ঠিক আছে চলো।
অয়ন: ভাবি আমরা কোনো ভুল করছি নাতো?
আমি: ভুল হবে কেন আমরা তো আব্বু আম্মুকে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছি আর আমার বিশ্বাস আব্বু আম্মুও নিজের ছেলে মেয়ের কাছে ফিরে যেতে চান।
অয়ন: চলো দেখি কি হয়।

এতোকিছুর পর আসতে পারলাম, কিন্তু বাসা তো…
অয়ন: ভাবি বাসা তো তালা দেয়া।
আমি: তাইতো দেখছি।
অয়ন: এখন কি করবে।
আমি: কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে দেখি।
অয়ন: কার জন্য অপেক্ষা করবে আমরা তো জানিই না এই বাসায় কে থাকে।
আমি: কাউকে একটু জিজ্ঞেস করো প্লিজ।
অয়ন: দাঁড়াও আমি দেখছি।

বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছি, অয়ন একটু দূর যেতেই আমার ফোন বেজে উঠলো। এইটা তো শুভ্রার নাম্বার তাহলে কি ওরা আমাদের ফলো করছে। চারপাশে একবার চোখ বোলালাম সন্দেহজনক তো কাউকে দেখছি না। ফোন রিসিভ করলাম, আমি কিছু বলার আগেই শুভ্রা বলে উঠলো…
শুভ্রা: হাই মিস তিলোত্তমা সরি মিসেস কাব্য।
আমি: কেন ফোন করেছ?
শুভ্রা: একটা গুড নিউজ দেওয়ার জন্য।
আমি: মানে?
শুভ্রা: একটু আগে কাব্য’র ফোনে একটা মেসেজ গেছে “তুমি বোনের বিয়ে ঠিক করতে ব্যস্ত আর তোমার তিলো পাগলী তোমারই ছোট ভাইয়ের হাত ধরে ঘুরতে ব্যস্ত তাও কাছে কোথাও নয় একেবারে লং ড্রাইভে”
আমি: এতো গুলো থাপ্পড় খেয়েও শোধরাওনি দেখছি।
শুভ্রা: থাপ্পড় গুলোর প্রতিশোধ নিতে হবে না?
আমি: এসব নোংরা কথা বলে প্রতিশোধ নিতে পারবে না কারণ কাব্য তোমার এসব নোংরা কথায় কান দিবে না।
শুভ্রা: সেটা নাহয় পরেই বুঝতে পারবে এখন সামনে যে বিপদ এসেছে সেটা সামলাও তো দেখি।
আমি: মানে। (হঠাৎ পিছনে কারো উপস্থিতি টের পেয়ে পিছনে তাকালাম। ভয়ে আমার শরীর শিউরে উঠলো, ওরা তো সেই দুজন লোক। আজকেও রোমাল দিয়ে মুখ ঢাকা)
শুভ্রা: আরশির বুদ্ধির প্রশংসা করতে হয়। সেদিন তো মরতে মরতে বেঁচে গিয়েছিলে কিন্তু আজ… (ফোনটা কেটে দিলাম। কি করবো এখন আমি)
অয়ন: ভাবি তুমি যা…(অয়ন লোক দুইটাকে দেখে থেমে গেলো, আমার পাশে এসে দাঁড়ালো)
অয়ন: কে তোমরা?
–ভয় নেই তোর ভাবিকে বেশি কষ্ট দিয়ে মারবো না। সেদিন তো বেঁচে গেছে কিন্তু আজ আর সুযোগ নেই।

লোক দুটু আমাদের দিকেই এগিয়ে আসছে। আমি তো ভাবতেও পারিনি এমন কিছু হবে। এই আরশি আর শুভ্রা তো আমাকে মারার জন্য পাগল হয়ে গেছে। ভয়ে আমার হাত পা কাঁপছে, অয়নের পিছনে গিয়ে ভয়ে ওর হাত চেপে ধরলাম।

চলবে?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here