#রৌদ্র_কুয়াশা,পর্ব ১৯,২০
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ১৯
৫৬
-সাবধানে থাকবে।দরজা লক করে রাখবে।কোনো সমস্যা হলে ইশতিয়াক কে কল করবে।ও আগে বাড়িতেই থাকত।এখন তুমি আছোতো। তাই ও বাইরে থাকছে ।আর তোমাকে যে নতুন মোবাইল দিয়েছি ওখানে ডায়েল কলে আমার নাম্বার রয়েছে।কল করবে।ফোন করলে রিসিভ করবে।আর শোনো ।কেউ আসলে কিন্তু দরজা খুলতে যাবে না।আমাকে আগে ফোন দেবে।আমি অনুমতি দেওয়ার পর দরজা খুলবে।
-ঠিকাছে।
ইলা মাথা নাড়িয়ে সায় দিল মাহিরের কথায়।গেট পর্যন্ত এসে দাঁড়িয়ে আছে দুজনে।মাহির অফিসের জন্য রওনা হবে এখন।মাহির ইলাকে নিজের কাছে টেনে কপালে চুম্বন করলো।
-এখন ঘুমিয়ে থাকো কেমন।দুপুর বেলা খাবার গরম করে নিও।রাতের জন্য অন্য কিছু ভেবো।আসি।আল্লাহ হাফেজ ।
-আল্লাহ হাফেজ।
-তুমি যাও।তুমি দরজা লাগাবে তারপর আমি গাড়ি স্টার্ট দেব।
মাহিরের কথা মতো ইলা গুটিগুটি পায়ে বাড়ির দরজার কাছে পৌছে দরজা খুলে পিছন ঘুরে তাকালো।মাহির গাড়িতে বসে জানালা খুলে ইলার দিকে তাকিয়ে আছে।ইলাকে ইশারায় দরজা বন্ধ করে দিতে বলছে মাহির।ইলা মুচকি হেসে হাত নাড়িয়ে বিদায় জানালো মাহিরকে।মাহির ও হাত নাড়ালো।দরজা বন্ধ করে দিল ইলা।মাহির স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো।
-চলো ড্রাইভার।
ঘরের ভেতর ঢুকে ইলা ডাইনিং টেবিলে গেল।খাবার গুলো ঢেকে এটো থালাবাসন গুলো নিয়ে গেল রান্না ঘরে।ফোনের রিংটনের শব্দ কানে ভেসে আসলো ইলার।
-এটা কার ফোন?মাহিরের ফোনেই তো এমন রিংটোন আছে।দেখি তো।
ইলা ফোন খুঁজতে খুঁজতে গিয়ে দেখে সোফার ওপর মাহিরের ফোন বাজছে।
-দেখো অবস্থা।এ তো কথা বলে গেল।এখন নিজেই ফোন রেখে চলে গেছে।কেমন লাগে!
ইলা কোমড়ে হাত রেখে দাড়িয়ে দাড়িয়ে ভাবছে।মাহিরের অফিসের গুরুত্বপূর্ণ কল ও হতে পারে।ইলা তো এসবের কিছু বোঝেনা।ফোন রিসিভ করলে উওর দিতে হবে ।সেটা আরো বড় ঝামেলা।কিন্তু মাহিরের কাছে ফোনটা পৌছে দেওয়া যায় কিভাবে?সে তো মাহিরের অফিস ও চেনে না।ইশতিয়াক।হ্যা ইশতিয়াক।ইশতিয়াক এর মাধ্যমে সে পাঠাতে পারবে।
ইলার ভাবনার মাঝেই কলিংবেল বেজে উঠলো।
-যাক।মাহির বোধ হয় এসেছেন।যাই তাড়াতাড়ি দরজা খুলে দেই।নয়তো দেরি হয়ে যাবে ওনার।
ইলা দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলে দিল।দরজার বাইরের মানুষটিকে দেখে থমকে গেল ইলা।
৫৭
-এখন কেমন লাগছে তোমার?
-আপনি কে?আমি এখানে কিভাবে এসেছি?
-তুমি কাল ব্রিজের ওপর অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলে।মাথায় আঘাত ও পেয়েছো।আমার ভাইয়া তোমাকে এখানে নিয়ে এসেছে।
গতকাল রাতের কথা মনে পড়তেই শিউরে উঠলো অনু।তবে কি কাল ঐ লোকগুলোর খপ্পর থেকে সে বেচে গেছে!কে বাঁচিয়েছে তাকে? সেই এই জোড়া জুতো পরা পায়ের মালিক!
– কি ভাবছো?
-আপনার ভাই!
-হুম।ইন্সপেক্টর আরিয়ান।তোমার কপাল ভালো যাই বলো।একদম ভাইয়ার পায়ের কাছেই এসে পৌছেছো।
-তার মানে।জুতা পরা লোকটা আপনার ভাই ছিল।
-কোন জুতা পরার কথা বলছো জানিনা ।কিন্তু আমার ভাইয়া তোমাকে এখানে এনেছে এতটুকু বলতে পারি।আর তোমাকে যারা তাড়া করেছিল আজ যা তাদের কি হাল করবে আল্লাহ জানে।
-আপনার নাম কি?
-তুলি।
অনু তুলির কথা শুনে চুপ করে আছে।তুলিকে একবার ভালো করে লক্ষ্য করছে সে।গর্ভবতী মহিলা।চেহারার মধ্যে যেন বিশেষ একটা মায়া আছে।তার মানে তুলি বিবাহিত।আচ্ছা অনুর মতো কি তুলির স্বামী ও তুলির ওপর অত্যাচার করে!না নিশ্চয়ই করে না।নাহলে এরকম শরীর নিয়ে আজ সে থাকত না।অনুর কাছে সন্তান শব্দ টার অর্থ বৃহৎ।এ এক ভালোবাসা।অনুভূতি।অনুভূতির সংমিশ্রণ।কিছু ছোট্ট চাওয়া পাওয়ার,কিছু সুখকর মুহূর্তের ফল।সবাই তো আর নিবিড় নয়।
অনুকে চুপ থাকতে দেখে তুলি অনুকে হালকা করে ধাক্কা দিল।অনুর ধ্যান ভাঙলো।
-কি ভাবছো তুমি?
-কিছু না।
-ও।আসল কথাতে আসি এবার।
-কি কথা?
-তোমার বাড়ি কোথায়?আর এতো রাতে তুমি ব্রিজের ওখানে কি করছিলে?
বাড়ির কথা শুনে চমকে উঠলো অনু।বাড়ি!আদৌ কি তার কোনো বাড়ি আছে?বিয়ের আগে মেয়েদের স্থান বাবার কাছে।বাপের বাড়ি নামেই সেটা খ্যাত।একটা নির্দিষ্ট সময় পর যখন বিয়ের বয়স হয় তখন সেই বাবা মায়ের কাছেই যেন সে অতিষ্ঠের কারণ হয়ে দাড়ায়।জন্মানো পরগাছা হয়ে যায়।তখন সেটাকে বাপের বাড়ি বললে ও ভুল হবে।আশ্রয় কেন্দ্র বললেই হয়তো ঠিক হবে।আর বিয়ের পর তো স্বামীর বাড়ি।সবাই বলে স্বামীর বাড়ি মানেই তোমার বাড়ি।কিন্তু যখন সেই স্বামী খোটা দেয়,দূর দূর করে তাড়িয়ে দেয় তখন সেটাকে কি বলা যাবে?স্বামীর থেকে পরিত্যক্ত হয়ে বাপের কাছে ছুটবে?তুমি তো তখন ও বাড়ির অতিথি।
“না এ ঘর আমার,
না ও ঘর আমার,
তবে কোন ঘর আমার?
আছে কি কোনো ঠিকানা?”
ভাবনার দেয়াল ভেঙে অনু তুলির দিকে তাকালো।এ দেয়াল আর উঁচু হতে দেওয়া যাবে না।যে প্রাচীর শুধু উচুই হয়,প্রাচীরের গাথুনি গুলো দেখার কেউ নেই,সে প্রাচীর গড়ার কি মানে?শুধু শুধু মানসিক চাপ,আরেক দফা মনঃকষ্ট।নিজের বিরহে নিজেরই তো মরতে হবে।কেউ দু ফোটা চেখে দেখবে না।
-আমার কোনো ঠিকানা নেই।
-অদ্ভূত!তাহলে কোথ থেকে এসেছো তুমি?
-কোন থেকে এসেছি জানিনা।এটুকু বলতে পারি সাপের গর্ত থেকে বাঘের গুহায় এসে পড়েছিলাম,সেখান থেকে পালিয়ে নদীর মাঝে দাড়িয়ে।না একুল যেতে পারছি,না ওকুল।দুদিকেই বিপদ।
৫৮
দরজার বাইরে আলফাজ সাহেব দাড়ানো।ওনাকে চিনতে কষ্ট হয়নি ইলার।যথেষ্ট পরিচিত লোক তিনি।যদি ও ব্যবসায়ী রা মিডিয়ার সামনে আসেন না বললেই চলে।তবুও তাকে অনেক মানুষ ই চেনে।ইলা কে একবার পা থেকে মাথা অবধি দেখে নিলেন আলফাজ সাহেব।ইলা তাড়াতাড়ি করে আচল দিয়ে মাথায় ঘোমটা টেনে দিল।
-আসসালামু আলাইকুম বা,,,।
ইলাকে কথা শেষ করতে দিলেন না আলফাজ সাহেব।তার আগেই পাশ কেটে ভেতরে চলে গেলেন।ইলা অবাক হয়ে গেল ওনার এমন কাজে।ইলা নিজে ও দরজাটা হালকা করে লাগিয়ে আলফাজ সাহেবের পিছু পিছু ভেতরে গেল।আলফাজ সাহেব গিয়েই সোফাতে গা এলিয়ে দিলেন।
-এই মেয়ে।ঐ মেয়েটা কোথায়?
-কোন মেয়ে?
-আমার স্ক্রাউন্ডেল ছেলেটা যাকে বিয়ে করেছে।ডাকো তাকে।আজ দেখে নেব আমি।কত বড় সাহস ঐ মেয়ের।
আলফাজ সাহেবের কথাতে ভয় পেয়ে গেল ইলা।
ভয়ে ভয়ে উওর দিল,
-আমিই বাবা।
-কিহ!তুমি!এই কাজের বুয়ার মতো শাড়ি টাড়ি পড়ে মাথায় ঘোমটা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছো।আর আমাকে বাবা বলছো!তোমার সাহস তো কম না।উহ!যেমন থার্ড ক্লাস মা ছিল।তার তেমন ছেলে।এ তো আরো এক ক্লাস নিচে নেমে গেছে।
আলফাজ সাহেব একদম বিরক্তি নিয়ে কথাগুলো বলছেন।ইলার বেশ খারাপ লাগছে ওনার এই ব্যবহারে।
-তোমার সাথে কথা বাড়াব না আমি।যাও নিজের ব্যাগ গুছিয়ে নেও।তোমাদের ডিভোর্স এর ব্যবস্থা করে এসেছি আমি।আমি কাল ই মাহির এর এনগেজমেন্ট করব আমার পছন্দের পাত্রীর সাথে।যাও বলছি।
ইলা কেঁপে উঠলো আলফাজ সাহেবের কথা শুনে।ভয়ে কেঁদেই দিল।কি থেকে কি হয়ে যাচ্ছে কিছুই বুঝলো না সে।
-এতোই যদি পাত্রী তোমার পছন্দ হয় নিজেই বিয়েটা করে নেও না বাবা।
হুট করে মাহিরের কন্ঠ শুনে চমকে গেল ইলা।আলফাজ সাহেব ও উঠে দাঁড়ালেন।মাহির দরজার কাছে দাঁড়ানো।
-মাহির!
-তোমাকে কে বলেছে আমার সংসারে এসে নাক গলাতে?আমার সংসার আমি কাকে বিয়ে করব সব আমি দেখব।এর মধ্যে তোমার ঐ ঘি মাখা নাকটা না গলালেও চলবে।
মাহিরের কথা শুনে বিস্ময় নিয়ে মাহিরের দিকে তাকিয়ে আছেন আলফাজ সাহেব।আজ অবধি কখনো মাহির তার সাথে এমন ব্যবহার করেনি।
-তুমি ভুলে যাচ্ছো তুমি কার সাথে কথা বলছো?
-উহুম।ভুলে যাইনি।আমি একটা অপদার্থ লোকের সাথে কথা বলছি।যে সন্তান হিসেবে অপদার্থ, স্বামী হিসেবে অপদার্থ আর আজ বাবা হিসেবেও।তুমি এতোটাই স্বার্থপর একজন লোক যে নিজের স্বার্থের জন্য নিজের সন্তানকে ও কুরবানি করতে পারে।
-আমি তোমার থেকে আমার ক্যারেকটার সার্টিফিকেট নিতে আসিনি।তুমি নিজে কতোটা পদার্থ তোমার বউকে বলেছো তো?
আলফাজ সাহেবের কথা শুনে মাথা নিচু হয়ে গেল মাহিরের।
-আমি তোমার এই বিয়ে এখনি ভেঙে দেব।তোমাদের ডিভোর্সের ব্যবস্থা করে এসেছি আমি।একটা বার ড্যান্সার কে বিয়ে করেছো!ছিহ!না আছে বংশ পরিচয়, না কোন মর্যাদা।
-বংশ পরিচয়,মর্যাদা না থাকতে পারে কোন অমানুষ না।একটা মানুষ কে বিয়ে করেছি।আর আমি কি করব না করব সেটা তোমাকে দেখতে হবে না বাবা।অনেক দেখেছো তুমি আমার জন্য। আগুনের মধ্যে ফেলে নিজে দাঁড়িয়ে হাতে তালি দিয়েছো।আমি আজ একটু স্বস্তির খোঁজে এসেছি।
-তুমি,,,।
-তুমি যেতে পারো।আমার বাড়িতে আমি চাইনা তোমার পা পড়ুক।
-তোমার বাড়ি!
-হ্যাঁ আমার।তোমার ব্যবসা কোথায় ছিল।আর এখন কোথায় এসেছে।শুধু তো বুক ফুলিয়ে বলে বেড়াও।কতটুকু মাথার ঘাম ঝরিয়েছো ব্যবসার জন্য!আমি আমার প্রাপ্য থেকেই নিজে এই বাড়িটা কিনেছি।তাই এখানে নিজের অধিকার ফলাতে আসবে না।
-মাই ফুট!আমার এতো বড় বাড়ি থাকতে এই সব জায়গায় কি করতে আসব আমি!
-তোমার আসাও লাগবে না।শুধু এটুকু বলে দিলাম খুব শিগগিরি একা হবে।খুব একা হবে তুমি।তোমার দাম্ভিকতা তুঙ্গে উঠেছে।সব কিছু শেষ হবে একদিন দেখে নিও।
আলফাজ সাহেব আর কথা না বাড়িয়ে রেগে বেরিয়ে গেলেন।ইলা চুপচাপ দাড়িয়ে আছে।মাহির ইলার কাছে গেল।
-পানিজল।
-হুম।
– আমি দুঃখিত।আজ ফোনটা রেখে চলে গেছিলাম।তবে একদিক দিয়ে ভালোই হয়েছে আমাকে আসতে হয়েছে।
-আমি ভেবেছিলাম আপনি হয়তো ফোন নিতে এসেছেন।তাই দরজা খুলেছি।
-পানিজল একটা কথা বলব।
-কি?
-তরকারিতে সব মশলা কিন্তু একি পরিমাণে থাকে না।কিছু কম দেওয়া হয় কিছু বেশি।তাতে কি এসে যায়?স্বাদ টাই মুখ্য।
-আপনার কথার কিছুই বুঝলাম না।
-হয়তো আজ বোঝোনি।একদিন বুঝবে।আমার বড্ড ভয় হয় সেই দিনের।যদি হারিয়ে যাও তুমি,ছেড়ে যাও আমাকে।
মাহির আবেগে জড়িয়ে ধরলো ইলাকে।ইলা হতভম্ব হয়ে গেছে।মাহিরের কথার কিছুই সে বুঝতে পারছেনা।
“একটা কুঁড়েঘর থাকবে,
চারপাশে মাটির দেয়াল,
মাঝখানে একটা চৌকি খাট।
গোলপাতার চালটা ছিদ্র হয়ে যাবে,
ঘোর অমাবস্যা,
ঝুপ ঝাঁপ বৃষ্টি,
আর আমি তুমি বসে চাঁদ দেখব,
পূর্ণিমার চাদ”
মাহির ইলাকে ছেড়ে দিল।মাথার ঘোমটা টা আরো টেনে দিল।
-বেগম সাহেবা।আসছি।
-হুম।
-আল্লাহ হাফেজ।
-আল্লাহ হাফেজ।
মাহির ফোনটা নিয়ে বেরিয়ে গেল।ইলা দরজা লাগিয়ে সোফায় বসে পড়লো।কি অদ্ভুত স্বপ্নের কথা বললো মাহির।অমাবস্যা রাতে পূর্ণিমার চাঁদ!
“একটা কুঁড়েঘর থাকবে,
চারপাশে মাটির দেয়াল,
মাঝখানে একটা চৌকি খাট।
গোলপাতার চালটা ছিদ্র হয়ে যাবে,
ঘোর অমাবস্যা,
ঝুপ ঝাঁপ বৃষ্টি,
আর আমি তুমি বসে চাঁদ দেখব,
পূর্ণিমার চাদ।”
—-ইতি ঝড়ো হাওয়া
হ্যা এ তো সেই চিরকুটের কথা।কেঁপে উঠলো ইলা।আজ এত বছর পর কেন এ কথা?মাহির ই বা জানলো কিভাবে এই কথা গুলো?
ইলা উদাস হয়ে বসে রইলো,
-আমি আজো পেলাম না চিরকুট দাতা কে!
চলবে———
#রৌদ্র_কুয়াশা
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ২০
ইলা চোখ বুজলো।সামনে এখনো যেন স্পষ্ট সেই কালো বাইক টা।রোজ আসতো।রোজ বিকেলে।ইলা গুটি গুটি পায়ে যেই প্রাইভেট পড়ার উদ্দেশ্য বাড়ি থেকে বের হতো বাইকটা তাকে ফলো করতো।আজ ও কথাগুলো মনে পড়লে বুক কেঁপে উঠে ইলার।কতোই না ভয় পেয়েছিল প্রথম প্রথম সে।তার বাবা অসুস্থ।এর মধ্যে একটা বাইক তাকে ফলো করে।যদি কোনো ক্ষতি করে দেয়!
কে জানতো সব ফলোয়ার গুলো ক্ষতি করতে আসে না।কেউ কেউ ছায়া হয়েও ঘুরে বেড়ায়।আত্মগোপন করে থাকে নিজের পরিচয়।মনের কথাগুলো মনের মাঝেই রেখেই দেয়।তাদের কাছে যেন গোপনীয়তা একটা বিশেষ কিছু।যেটা মনের সেটা মনের, বাহিরের নয়।
মাথায় কালো রঙের হেলমেট পরনে কালো,শার্ট,প্যান্ট সবকিছু ই শুধু কালো।তার চোখ দুটো ও কখনো দেখার সৌভাগ্য হয়নি ইলার।শুধু লোমশ হাত দুটো।ধবধবে সাদা হাতের খণ্ডাংশ।সে শার্ট এর হাতাটা ভাজ করে কনুই অবধি উঠিয়ে রাখত।বাম হাতটায় সব সময় কালো রঙের ঘড়ি।
ইলার বার বার মনে পড়ছে অতীতের দিনগুলো।কতো বখাটেরা উত্যক্ত করতো আগে তাকে।কালো বাইক আর তার মালিক আসলো।তার জীবন থেকে যেন এই বখাটের ছায়াগুলো ও চলে গেল।কিন্তু সব কিছুর ঐ কিন্তটা থেকেই যায়।
-আমি আজো খুঁজে পেলাম না আপনাকে।আপনি ঠিকই বলতেন।আপনি ঝড়ো হাওয়া।ঝড়ো হাওয়ার মতোই এসেছিলেন।কদিনেই কেমন বদলে গেছিল আমার জীবন।স্কুলে যাওয়ার সময় পথ গুলো আর কণ্টকাকীর্ণ মনে হতো না।কিন্তু আপনি কোথায় গেলেন ঝড়ো হাওয়া।যেই ঝড়ো হাওয়া হয়ে হুট করে এসেছিলেন সেই হাওয়া হয়েই হুট করে চলে গেলেন!আপনি কে জানতাম না।আজো জানি না।তবুও আপনি যাওয়ার পর রোজ চলার পথে পেছনে ফিরতাম।যদি সেই কালো বাইকের ছায়াটা দেখতে পাই।আপনিও চলে গেলেন।আবার পথ গুলো কণ্টকাকীর্ণ হয়ে উঠলো।
ইলা উদাস হয়ে বসে আছে।অতীত টাকে তীব্র অনুভব হচ্ছে তার।
“যাওয়ারই যদি কথা ছিল
তবে কেন এসেছিলেন?
আসবেন ই যদি
তবে কেন চলে গেলেন?
ঝড়ো হাওয়া,
আমি আজো প্রহর গুনে চলেছি।
একটা বিকেল হবে,
দুপুরের সূর্য হেলে পড়বে,
আলোটা একপেশে হয়ে আসবে।
আমি আবার রিক্সায় চড়ব,
আমার চুলগুলো বিনুনি করা থাকবে।
কাধের ওপর থেকে ছড়িয়ে দেব
দুপাশের দুটো বিনুনি।
পরনে সেই চুরিদার,কামিজ আর ওড়না থাকবে।
রিক্সার হুডি সরিয়ে বার বার পিছু ঘুরে দেখব
আর সে
কালো রঙের বাইকটাকে কখনো জোরে কখনো বা ধীরে চালিয়ে আসবে,
ছুটবে আমার পেছনে।
লোমশ হাত দুটো বার বার টানবে আমায়,
মনে হয় ছুঁয়ে দেখি,
ভেঙে ফেলি এই লুকোচরির খেলা।
ঝড়ো হাওয়া,
সময় কি হবে একদিন?
একটা বিকেল?
দেবেন আমাকে?
একটু খুঁজে দেখতাম,
আপনার পরিচয়। ”
৫৯
ঘরের মেঝেতে শীতলপাটি বিছিয়ে তার ওপর বসে আছেন রমজান সাহেব।থরথর করে কাঁপছেন তিনি।তার সামনেই চেয়ারে বসে পায়ের ওপর পা তুলে নাচাচ্ছে নিবিড়।রমজান সাহেব ইতিমধ্যে মনে মনে অনেক গালিও দিচ্ছেন নিবিড়কে।কতো বড় অসভ্য না হলে শ্বশুর নিচে বসে আছে সে উপরে বসে শ্বশুরের মুখের উপর পা তুলে নাচাচ্ছে।
-এই ছোটলোকের বাচ্চা।বল তোর মেয়ে কোথায়?
নিবিড়ের কথাতে আবার কেঁপে উঠলেন রমজান সাহেব।তানিয়া বেগম দরজার আড়ালে দাড়িয়ে আছেন।রমজান সাহেবের দ্বিতীয় স্ত্রী সে।প্রথম স্ত্রী অনুর মা যখন দুরারোগ্যে আক্রান্ত হন।স্ত্রীর চিকিৎসা বাদ দিয়ে ধুমধাম করে রমজান সাহেব দ্বিতীয় বিবাহ করেন।পাছে অনুর মা যদি মরে যায়।সংসার দেখবে কে?মেয়ে মানুষ ছাড়া সংসার চলে নাকি!কিন্তু কে জানতো ঐ টাকা গুলো বিয়ে তে খরচ না করে অনুর মায়ের চিকিৎসা করালেও হয়তো প্রাণটা থাকত।হায়াত তো আছেই।স্বামী হিসেবে কি দায়িত্ব ছিল না তার!অনুর মা যেদিন মরলো অভাগিনীর তিলক যেন অনুর কপালে লেগে গেল।সৎ মায়ের অত্যাচারে জর্জরিত ছিল সে।এর মধ্যে কোথ থেকে একদিন একজন মহিলা আসেন।পথে অনুর সাথে দেখা হয় তার।অনুর অপরিচিত মানুষের সাথে সুমিষ্ট ব্যবহার কড়া নাড়ে তার মনে।আশপাশে খবর নিয়ে নিজের ছেলের জন্য প্রস্তাব ই নিয়ে আসেন।তিনি আর কেউ না ইসমাত বেগম।
-কি হলো বল সালা?তোর ঐ চরিত্রহীন মেয়েকে ঝুলিয়েছিস আমার গলাতে।কোন নাগরের সাথে পালিয়েছে বল?
আবার কেঁপে উঠলেন রমজান সাহেব।নিবিড়ের মুখে থুথু ছিটাতে মন চাইছে তার।কিন্তু পারছেন না।নিবিড় যথেষ্ট প্রভাবশালী আরো তার মেয়ে পালিয়েছে।এজন্য মুখে কুলুপ এঁটে আছেন রমজান সাহেব।
-দেখ জামাই বাবা।অনু আর যাই হোক চরিত্রহীন না।একথা বলো না বাবা।ছোট থেকে ঘরের কাজ করেছে।ঘরের বাইরে বের হয়না ও।
রমজান সাহেবের কথা শুনে দাঁত কিড়মিড় করছে নিবিড়।ওপাশে দরজার আড়াল থেকে ফোড়ন কাটলো তানিয়া বেগম।
-হ।এখন তো কইবা।জামাই তো হক কথা কইছে।তোমার মেয়ে যদি বাইরে না যায় হের মা কেমনে দেখছিল আরে?
তানিয়ার কথা শুনে নিবিড়ের মাথাটা আরো বিগড়ে গেল।
-ঐ চরিত্র হীন টাকে আমার গলায় ঝুলিয়ে কি ভেবেছিস সব চুকে গেছে?এক সপ্তাহ র মধ্যে যেন তোর মেয়ে আমার বাড়িও না একদম আমার বিছানায় হাজির হয়।কোথ থেকে আনবি জানিনা।ওরে শুধু পাই।খেল বুঝিয়ে দেব।আমাকে বেল্ট দিয়ে মেরেছে।এতো সাহস।মা*** কে তো আমি ভালো মতো মার দেওয়ার শখ বুঝিয়ে দেব।একদভ ফেনা উঠিয়ে দেব মুখ থেকে।এমন মার মারব।
রমজান সাহেবের দিকে চেয়ারটা লাথি মেরে ছুড়ে ফেললো নিবিড়।রমজান সাহেব সরে বসলেন তাড়াতাড়ি।আরেকটু হলেই হয়তো তার গায়ে লাগতো।
নিবিড় চলে যেতেই তানিয়া বাইরে আসলো।রমজান সাহেবের কাছে গেল।
-অলক্ষী।অলক্ষী।আপনের এই মাইয়া আপনার জীবন টা শেষ করে দিল একদম।আহারে কতো ভালো জামাইডা। আমার ফুলির লগে ওর বিয়ে হইলে দেখতেন ঐ জামাই আপনের সাথে মাথা নত করে কথা কইতো।তা না।নিজের বড় মাইয়াডারে দেওনের লাইগা উঠে পড়ছিলেন।
তানিয়ার কথা শুনে বিস্ফারিত দৃষ্টিতে তানিয়ার দিকে তাকালেন রমজান সাহেব।
-এই চুপ কর।হের মা অনুরেই বউ করতো।তোর ঐ বদের ঢেকি ফুলিরে না।
-কি কইলেন আপনে!
-যা বাইর হ।
৬০
সোফার ওপর বসে আঙুর ফল খাচ্ছে তুলি।পাশে অনুকে বসিয়েছে।সকাল থেকে অনু নিজের সব কিছুই বলেছে তুলিকে।তুলি মেয়েটাকে বেশ ভালো লাগছে অনুর।কতো আপন করে নিয়েছে তাকে।সব সময় এটা ওটা বলে হাসাচ্ছে।
-অনু।তুমি খাচ্ছো না তো?
-আপনি খান।আমি এতো টক পছন্দ করিনা।আঙুর গুলো বেশ টক।
-আবার আপনি!
-তুমি।ঠিকাছে?
-হ্যাঁ। এটাই।শোনো তোমাকে পেয়ে ভালোই হয়েছে।আমার আর একা একা থাকতে হবে না।
-কেন?শ্বশুর বাড়ি যাবে না?
-আসলে আমার শ্বাশুড়ি মারা গেছে এই দু বছর হলো।এই শরীর নিয়ে রান্না বান্না করতে পারিনা ঠিকমতো।আর আমার বরটাতো ইউনিটে।
-কি করেন তোমার বর?
-নৌবাহিনীতে চাকরি করে।ও তো এখন আসতে ও পারবে না।তাই ননদ শ্বশুর কে নিয়ে গেছে।আর আমাকে এখানে রেখে গেছে।যদিও আরো পরে আসতাম।ভাইয়া ফোন করলো।তাই সব কিছু গুছিয়ে এখনি চলে এসেছি।
-এখানে কে খেয়াল রাখতো?
-ভাইয়া।ভাইয়া আমার অল রাউন্ডার।সব পারে।ও ঠিক রান্না করে খাইয়ে আমার কাপড় ধুয়ে দিয়ে থানায় যেত।
-ওহ।
-আর এখন তুমি রাখবে।রাখবে না?
-আমি কতদিন থাকব বলো?
-যতদিন না নিজের একটা ঠিকানা পাও ততদিন।
-জানিনা কি আছে কপালে!
-আচ্ছা শোনো।তুমি মেয়ে হয়েও টক পছন্দ করো না কেন?
-ভালো লাগে না।
-কি ভালো লাগে?
-মিষ্টি খেতে আমার বড্ড ভালো লাগে।
-এই যাহ!
-কি হলো?
-তুমি তো দেখছি একদম ভাইয়ার মতো চিন্তা নিয়ে ঘোরো।
-মানে?
– ভাইয়া বলে,মেয়ে মানুষ কে কেন টক ই খেতে হবে।আমি চাই আমার প্রেয়সী আমার সাথে বসে রসগোল্লা খাবে।এক হাড়ি রসগোল্লা নিয়ে বসব দুজনে।পাল্লা দেব কে কতো খেতে পারে।
-ভারী আজব!
-হুম।তুমি মিষ্টি খাবে?ফ্রিজে আছে।এনে দেই।
-না না।এখন মিষ্টি খেতে ইচ্ছে করছে না।সন্ধ্যাবেলা আলুর চপ,পেয়াজু, বেগুনি এগুলো খেতেই বেশ লাগে।
-তা যা বলেছো।
এর মধ্যে কলিংবেলের আওয়াজ ভেসে এলো।তুলি অনু দুজনেই কথা থামিয়ে দরজার দিকে তাকালো।
– ভাইয়া চলে এসেছে বোধ হয়।
-ওহ।
-তুমি একটু দরজাটা খুলবে?আমার নড়াচড়া করতে ভীষণ কষ্ট হয়।
অনু খুব ইতস্তত বোধ করলো তুলির কথাতে।একটা অচেনা মানুষকে দরজা খুলে দিতে হবে তার।তাও পুরুষ মানুষ।ভাবতেই কেমন লাগছে অনুর।তুলির কথা চিন্তা করে মলিন হেসে উঠে দাড়ালো অনু।শাড়ির আঁচল দিয়ে ভালো করে মাথা শরীর ঢেকে নিল।ধীর পায়ে এগিয়ে গেল দরজার দিকে।
দরজার বাইরে দাড়িয়ে অস্থির হয়ে যাচ্ছে আরিয়ান।আজ বড্ড চাপ গেছে তার।এক হাতে ফোন দেখছে।আরেক হাতে একটা থলে ধরে রেখেছে।
দরজা খোলার শব্দ হতেই ফোনের দিকে তাকিয়েই আরিয়ান থলে টা সামনে বাড়িয়ে দিয়ে বললো,
-কিরে?কতক্ষণ লাগে তোর?এই নে এটা ধর।তোর জন্য গরম গরম পেয়াজু,আলুর চপ,বেগুনি,ছোলা এনেছি।গিয়ে মুড়ি দিয়ে বেশ জব্বর করে মেখে ফেলতো।
আরিয়ান থলে ধরেই আছে।কেউ ধরছে না।আরিয়ান ফোন থেকে চোখ সরিয়ে সামনে তাকালো।অবাক হয়ে গেল সে।দরজা খুলে দরজার কোন ধরে মাথা নিচু করে একটা মেয়ে দাড়িয়ে আছে।খয়েরি রঙের শাড়ি।মাথায় ঘোমটা দেওয়া।আরো মাথা নিচু করে রেখেছে।যেন স্বামী এসেছে।নতুন বউ দরজা খুলছে।এমন লাগছে আরিয়ানের।আরিয়ান কিছু না বলে চুপ চাপ ভেতরে ঢুকলো।আরিয়ান ভেতরে যেতেই অনু দরজা লাগিয়ে দিল।
-এই নে।তোর জন্য আলুর চপ,আরো ভাজা নিয়ে এসেছি।
থলেটা আরিয়ান তুলির সামনের ছোট্ট টি টেবিলের ওপর রাখলো।তুলি অবাক চোখে আরিয়ানের দিকে তাকিয়ে আছে।
-কি রে ওভাবে তাকিয়ে আছিস কেন?
-ভাইয়া।তুই আজ ই এগুলো নিয়ে আসলি!
-কেন?খাবি না?
-আরে না।অনু এইতো কেবল ই এগুলোর কথা বলছিল।
-অনু?
-আরে ঐ মেয়েটা।
তুলি সামনে র দিকে ইশারা করলো।আরিয়ান আড়চোখে তাকিয়ে দেখে অনু ভেতরের ঘরের দিকে যাচ্ছে।এর মধ্যে তুলি অনুকে ডাক দিল।
-অনু।
তুলির ডাক শুনে অনু দাড়িয়ে গেল।
-কিছু বলবে?
-কোথায় যাচ্ছো?
-ঘরে যাচ্ছিলাম।
-পরে যাবে।এদিকে এসোতো।রান্নাঘরে গিয়ে দেখো উপরে মুড়ির কৌটা আছে।এগুলো নিয়ে একটু সুন্দর করে মেখে আনবে প্লিজ।আমার উঠতে ইচ্ছে করছে না।
অনুর ভীষণ অস্বস্তি বোধ হচ্ছে।আরিয়ান বিষয় টা কিছুটা আচ করলো।
-তুই থাক।আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।
-আচ্ছা।
আরিয়ান নিজের ঘরের দিকে চলে গেল।
৬১
গাড়ির হর্ন এর আওয়াজ পেতেই ইলা খাট ছেড়ে উঠে দাড়ালো।ঘড়ির দিকে তাকালো।নয়টা বাজে।ইলা দৌড়ে বেলকনির দিকে গেল।বেলকনির গ্রিল ধরে দাড়িয়ে দেখে ইলা মাহিরের কালো রঙের গাড়িটা গেট দিয়ে ঢুকছে।
গাড়ি থেকে নামতেই ইশতিয়াক ছুটে গেল মাহিরের কাছে।
-আসসালামু আলাইকুম ভাইজান।
-ওয়ালাইকুম আসসালাম।ইশতি তুমি এখনো বাড়ি যাওনি?
-না ভাইজান।আমি বাগানের ওখানে ই ছিলাম।সকালের ঘটনা শোনার পর ভাবলাম ভাবীজান হয়তো নিশ্চয়ই ভয় পেয়ে আছে।কখন কি সমস্যা হয়।এজন্য যাইনি।
-আসলেই তোমাকে ধন্যবাদ দেব না।এতোটা খেয়াল রাখো তুমি আমার।এখন তোমার ভাবীর ও।
-রাখব না কেন?ভাইজান আপনি তো কম করেননি আমার জন্য।ভাবীজান আমার বড় বোনের মতো।তার খেয়াল রাখাটাও তো দায়িত্ব।
-আচ্ছা।তুমি এখন বাড়িতে যাও তাহলে।
-জি।
-রাতে খেয়েছো?
-খেয়েছি।ভাবীজান ডেকে খাবার দিয়েছিলেন।
-তোমার ভাবীজান!
-হ্যা।পানির খুব পিপাসা পেয়েছিল ।পানি আনতে গেছি।ভাবীজান একদম খাইয়ে ছেড়েছেন।
-আচ্ছা। তাহলে সাবধানে যাও।
-আল্লাহ হাফেজ ভাইজান।
-আল্লাহ হাফেজ।
ইশতিয়াক কে বিদায় দিয়ে সদর দরজার দিকেই এগিয়ে যাচ্ছিল মাহির।হুট করে থেমে গেল।উপরের দিকে তাকালো।
অন্ধকার বেলকনিতে ও বাইরের আলোতে অস্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে কেউ দাড়িয়ে আছে।তার খোলা চুল গুলো বাতাসে উড়ছে।এক আধার মায়াবতী।
মাহিরের মুখে হাসি ফুটে উঠলো।
-আমার ভাবনার ঘোর তবুও কাটবে না।কতোবার চেয়েছি এভাবে।তোমাকে দেখব আমি।আমি অফিস থেকে ফিরব।আর তুমি মুখ গোমড়া করে অপেক্ষা করবে আমার জন্য।কেন দেরী হলো?কোথায় ছিলে?ইত্যাদি প্রশ্নের সাগরে ডুবিয়ে রাখবে আমাকে।আর আমি আলতো করে তোমাকে বুকে টেনে নেব।মাথায় হাত বুলিয়ে দেব।বলব,পাগলি এতো চিন্তা কেন।এই তো আছি।তোমার ই আছি।
চলবে———–