রৌদ্র_কুয়াশা,পর্ব ৪৭,৪৮

0
3515

#রৌদ্র_কুয়াশা,পর্ব ৪৭,৪৮
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ৪৭

-মাহির আমার কিছু হয়নি।আমার আপনি আছেন।আর কিছু লাগবে না।দেখুন না কতো অভিশাপ পেয়েছি সবার থেকে।আরে আল্লাহ কি এতোটাই নির্দয় হবে বলুন।রহমানুর রহিম তিনি কেন তাহলে?মাহির একটা মেয়ের কাছে না পরিবারের পর আসে স্বামী।এই স্বামী ব্যক্তিটি যখন তার জীবনে আসেনা তার কাছে মা-বাবা,ভাই বোন সবকিছু অতিথি হয়ে যায়।এটাই সত্যি।আমার কাছে আপনি আছেন।এমন একটা আপনিকে পেয়েছি যাকে পেতে ভাগ্য লাগে।আমার আর কোনো আফসোস নেই।বরং ভালো লাগছে।যাদের থেকে আজ অবধি কষ্ট আর বদনাম ই পেয়ে আসলাম তাদের কাছে কিসের সুখের আশা করব বলুন তো?মাহির কেউ আমাকে একটু সম্মান দেয়নি না দেখেছে আমার কষ্ট টা না বোঝার চেষ্টা করেছে আমাকে।আপনার থেকে সব পেয়েছি আমি।আর কিছু চাইনা আমার।

ইলা মাহিরকে পুরো কথাগুলো হাসিমুখেই বললো।চোখে বিন্দুমাত্র পানির ছিটেফোঁটা ও নেই।মাহির ও মুচকি হেসে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসলো।

-চলুন তো।আজ তো মাকে আনতে যেতে হবে।
-হুম।চলো।আজ আমার অনেক ভালো লাগছে ইলা।অনেক বেশি আনন্দ হচ্ছে। মাকে কাছে পাব।
-বুঝেছি আমি।
-কিন্তু।
-কিসের কিন্তু?
-তোমার জন্য কষ্ট হচ্ছে।
-মাহির আমি এতক্ষণ ধরে কি বললাম আপনাকে?মাহির সব কিছু অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।এখন পাথর হয়ে গেছি।কষ্ট লাগেনা।আপনি কেন বার বার এটা মনে করিয়ে দেন?
-সরি।
-চলুন।

গাড়ি অবশেষে এসে গন্তব্যে পৌছালো।মাহির ইলাকে নিয়ে নেমে নিবিড়ের ফ্লাটের দিকে গেল।কিন্তু ফ্লাটের সামনে তালা ঝুলানো দেখে চমকে গেল দুজনে।

-এটা কি হলো?তালা ঝুলছে।তাহলে মা কোথায় গেল?
-মাহির আমরা আশে পাশে একটু জিজ্ঞাসা করে দেখি।
-চলো।

মাহির বেরোনোর আগেই একজন দারোয়ান এসে তাদের পথ আটকালো।

-আপনারা কি নিবিড় সাহেবের খোঁজে এসেছিলেন?এখানে এসে দাড়িয়ে পড়লেন।
-জি চাচা।আপনি কি বলতে পারবেন ওনারা কোথায় গেছে?
-সে এক বিরাট কাহিনী।কাল রাতে এই ঘর থেকে ওনার মায়ের চিৎকার এর আওয়াজ শুনে আমি আরো কয়েকজন কে সাথে নিয়ে আসি।ওনার মা দরজা খুলে দেন।নিবিড় সাহেব না সাড়া দিচ্ছিলেন না এতো বার দরজা ধাক্কানোর পর দরজা খুলেন। আমরা দরজা ভেঙেই ফেলি।তার পর।
-কি হয়েছিল তার পর?
-নিবিড় সাহেব অজ্ঞান অবস্থায় মেঝেতে পড়ে ছিলেন।হাত থেকে রক্ত পড়ছিল।সুইসাইড করেছিলেন উনি।
-কিহ!

নিবিড়ের কথা শোনার পর মাহির ইলা দুজনেই চমকে গেল।কাল রাত অবধিও তারা সব ঠিকঠাক দেখে গেছে।অথচ এই ঘটনা কিভাবে ঘটলো?

-চাচা ওনারা এখন কোথায়?
-নিবিড় সাহেব কে নিয়ে আমরা হসপিটালে ভর্তি করি।ওনার মা ও ওখানেই আছেন।এখনো অবধি বাড়ি আসেননি।
-কোন হাসপাতাল বলতে পারবেন?
-এই সামনেই যে হাসপাতাল বাধে ওখানে।
-অনেক ধন্যবাদ চাচা।
-আপনারা কি ওনাদের আত্নীয়?
-জি।আমরা এসব কিছুই জানিনা।
-ওহ।

দারোয়ান চলে গেলেন।মাহিরের চোখে মুখে ভয়।নিবিড় কেন এমন একটা কাজ করলো সেটাই ভেবে পারছে না সে।

-ইলা।নিবিড় এমন কেন করলো?
-আমি ও বুঝতে পারছিনা।চলুন আর দেরি করা ঠিক হবেনা।মা ওখানে কি করছেন একা একা।
-হুম চলো।

ইলাকে নিয়ে মাহির হসপিটালের উদ্দেশ্যে রওনা হলো।

১২২

সন্ধ্যা সাতটা বাজে।

অনু বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে।ভয়ে হাত পা কাঁপছে তার।আরিয়ান তাকে বলেছিল সে আজ তাড়াতাড়ি আসবে।আর সেটাই বলবে অনুকে যেটা সে চায়।অনুর কান্ড দেখে তুলির ভীষণ হাসি পাচ্ছে।

-আরে অনু।এত টেনশন করছো কেন তুমি?
-তুলি আপু।আরিয়ান সাহেব কি চাইবেন আমার আছে।আমি যদি দিতে না পারি।আপনি কি জানেন তিনি কি চান?

তুলি দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,

-না।একদম জানিনা।কি জানি কি আছে তোমার কপালে?

তুলির কথা শুনে অনু আরো ভয়ে গুটিশুটি হয়ে গেল।

-তুলি আপু আমার সত্যি ভয় করছে।
-অনু জানো আমার না তোমাকে খুব ভালো লাগে।খুব ইচ্ছে করে ভাবি বলে ডাকতে।

তুলির কথা শুনে অনুর কাদোকাদো অবস্থা।এতো কথার প্যাচ বুঝতেই পারছে না সে।এর মধ্যে কলিংবেলের আওয়াজ।অনুর বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো।অনু ভয়ার্ত চোখে তুলির দিকে তাকালো।

তুলি মুচকি হাসি দিয়ে বললো,

-যাও অনু।আজ তুমি দরজা খুলবে।ভাইয়া এসেছে।
-আমি!
– আবার ঘাবড়ে যাচ্ছো কেন?এমনিতেই ঠান্ডা পড়েছে।যাও দরজা খুলো।
-আচ্ছা।

অনু ভয়ে ঢোক গিলে কাপা কাপা পায়ে দরজার দিকে এগিয়ে গেলো।কাপা কাপা হাতে দরজা খুললো।

দরজার বাইরের দৃশ্য দেখে অজান্তেই অনুর মুখে হাসি ফুটে উঠলো।আরিয়ান হাতে অনেক বড় ফুলের তোড়া নিয়ে দাড়িয়ে।এতো গুলো গোলাপ আগে কখনো এক সাথে দেখেনি সে।

-পছন্দ হয়েছে?
-আরিয়ান সাহেব আপনি এত ফুল কোথ থেকে পেলেন?
-আপনার জন্য আনলাম।নিন ধরুন।

আরিয়ান অনুর হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে ভেতরে ঢুকলো।দরজা লাগিয়ে দিল।অনুও আরিয়ানের পিছু পিছু সোফায় গিয়ে বসলো।তুলি দুজনকে দেখে রান্নাঘরে চলে গেল।তার মতে এই রকম পরিস্থিতিতে আরিয়ান-অনুকে একা ছেড়ে দেওয়া উচিত।সে না হয় রান্না ঘর থেকে উঁকি দিয়ে দেখবে।

-অনু,দাড়িয়ে আছেন কেন?বসুন।
-হুম।

অনু আরিয়ানের বিপরীত সোফায় বসলো।আরিয়ান এক নজর অনুর দিকে তাকালো।

-অনু,আপনাকে অনেক দিন থেকেই বলব ভাবছি।আজ সুযোগটা পেলাম।অনু কারোর জীবন কিন্তু এভাবে একাকীত্বে চলে না।আমি জানি আপনার জীবনে যা ঘটেছে তার থেকে আপনি একা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।কিন্তু আমি চাই আপনার জীবনটা নতুন করে সাজাতে।আপনি সুখে থাকুন এটাই চাই।
-আপনার কথা বুঝতে পারছিনা আরিয়ান সাহেব?
-অনু আমি চাই আপনি নতুন জীবন শুরু করুন।আমি আপনার জন্য আপনার যোগ্য জীবনসঙ্গী পেয়েছি।আমি চাই আপনি নীলের সাথে নতুন জীবন শুরু করুন।

আরিয়ানের কথা শুনে চমকে গেল অনু।কোন নীলের কথা বলছে সে?তার চেয়ে বেশি চমকে যাচ্ছে তুলি।রান্নাঘর থেকে সব শুনছে সে।সে বুঝতেই পারছে না আরিয়ান কেন নীলের কথা বলছে।

-অনু আমার কথা শুনছেন আপনি?
-আপনি কোন নীলের কথা বলছেন বুঝলাম না।
-যে আমাদের বাড়িতে মাঝে মাঝে আসে।অনু নীল খুব ভালো ছেলে।আপনার ব্যাপারে সব কিছু জানে সে।ও অনেক সম্মান করে আপনাকে।পছন্দ করে বলতে পারেন।ও আমাকে প্রস্তাব দিয়েছে।আমিও এটাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।আপনার এলোমেলো জীবনটাকে গুছিয়ে দেব।নীল কে অনেক বছর ধরে চিনি আমি।আপনি ভালো থাকবেন ওর সাথে।
-আপনি কি এটাই চাইছিলেন আমার কাছে?
-হ্যা অনু।এটাই চেয়েছিলাম।আমি আপনার জন্য যতটুকু করেছি তার বিনিময়ে আপনি আমার চাওয়াটা পূরণ করবেন।আমি জানি আপনার হয়তো মত নেই।অনেক টা জোর করে আপনি মানতে বাধ্য হবেন।একটা কথাই বলব অনু সব ছেলে নিবিড় হয়না।সবাই তো অমানুষ না অনু।আপনি কি শুনছেন আমার কথা?
-দেখুন আরিয়ান সাহেব আমি এতদিনে এতটুকু বুঝেছি আপনি অনেক ভালো একজন মানুষ।আমার কেন কোন মানুষের খারাপ চাননা আপনি।কিন্তু আমার ভয় হয় আরিয়ান সাহেব।আরো একবার যদি জীবন থেকে ঠকে যাই।
-এবার ঠকবেন না ।অনু জীবন সব সময় ঠকায়না। ভালো কিছু ও দেয়।নীল আপনার সাথে আলাদা করে কথা বলতে চায়।আমিও চাই আপনাদের বিয়েটা দ্রুত দিতে।নীল আপনার সব স্বপ্ন পূরণ করবে।আপনার ভয় গুলোকে কাটানোর দায়িত্ব ও তার এরপর থেকে।আপনি কাল কলেজের পর নীলের সাথে রেস্টুরেন্টে দেখা করবেন।আমি আপনাকে ঠিকানা জানিয়ে দেব। আশা করছি আপনি আমাকে ফেরাবেন না।আমি এই ফুলগুলো আপনার নতুন জীবনের শুভ কামনার জন্য এনেছি।আপনার জীবনটা যেন ফুলের মতোই হয় সুন্দর।
-আরিয়ান সাহেব আমি আপনাকে ওয়াদা করেছিলাম। এটাই যদি আমার থেকে আপনার চাওয়া হয় তবে তাই হবে।
-আপনি বরং ঘরে যান এখন।কালকের জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হন।
-আচ্ছা।

অনু ফুলের তোড়াটা নিয়ে ঘরে যেতেই তুলি তেড়ে ছুটে আসলো আরিয়ানের দিকে।

-ভাইয়া।এটা কি করলি তুই?

তুলি কে দেখে আরিয়ান হাত পা ছড়িয়ে সোফায় বসলো।

-কি করলাম?
-নীল অনুকে বিয়ে করবে মানে?নীল কোথ থেকে এলো?
-তুলি যার যেখানে থাকার কথা সে সেখানেই এসেছে।
-মানিনা আমি।তুই যে এতদিন অনুকে ভালোবাসতিস সেগুলো কি ছিল তাহলে?উওর দে।
-তুলি।অনুকে সম্মান করি।কখনোই ভালোবাসিনি।
-মিথ্যা কেন বলছিস?তুই না ওকে নিয়ে নতুন জীবন শুরু করতে চেয়েছিলি?
-কখনো না।সত্য বলছি আমি।তুলি আমি একজন পুলিশ অফিসার।আমার জন্য এতো মেয়ের অভাব পড়েনি যে একটা ডিভোর্সি মেয়েকে বিয়ে করব আমি।তুই কি পাগল?সাহায্য তো কত জনকেই করেছি।তাই বলে কি জনে জনে ভালোবাসবো আর বিয়ে করব?আমার আত্মসম্মান বলেও একটা ব্যাপার আছে নাকি?নীল অতি উদার হতে পারে। আমি না।একটা ডিভোর্সি মেয়েকে,,,,ছিহ তুই ভাবলি কি করে?

আরিয়ান রেগে উঠে নিজের ঘরের দিকে চলে গেল।তুলি থ মেরে দাড়িয়ে আছে।সে আদৌ বুঝতে পারছেনা এতদিন সে এভাবে একটা ভুল ধারনা নিয়ে কিভাবে ছিল!

১২৩

হসপিটালের কেবিনে শুয়ে আছে নিবিড়।সকালে জ্ঞান ফেরার পর আবার পাগলামি শুরূ করেছিল সে।সে আবার সুইসাইড করবে।তার আম্মাজান শুধু তার।কেন অন্য কেউ তাকে মা বলে ডাকবে মেনে নিতে পারছেনা নিবিড়। ডাক্তার নিবিড়কে ঘুমের ইনজেকশন দেয়।এখন ঘুম ভাঙলো নিবিড়ের।ঘুম ভাঙতেই ইসমাত বেগমকে পাশে বসে থাকতে দেখলো নিবিড়। কিন্তু তার পেছনে মাহির আর ইলাকে দেখে মাথায় রক্ত উঠে গেল তার।লাফ দিয়ে শোয়া থেকে উঠে বসলো।সেই সকাল থেকে মাহির ইলা দুজনেই ইসমাত বেগমের সাথে হসপিটাল এ আছে।

-নিবিড় কি করছো তুমি?এই শরীরে এভাবে কেন উঠছো?
-আম্মাজান।ঐ ছেলেটা এখানে কি করছে?আপনি কিছু বলেননি?ও এখানে কি করছে?
-নিবিড় শান্ত হও তুমি।
-কিসের শান্ত হব?এই ছেলেটা আপনাকে নিয়ে যেতে চাইছে।ওর সাহস তো কম না।

মাহির এগিয়ে গিয়ে নিবিড়ের সামনে দাড়ালো।মাহির কে দেখে নিবিড় ইসমাত বেগমের হাত শক্ত করে ধরে বসে রইলো।

-নিবিড় আমি কেন তোমার আম্মাজান কে নিয়ে যাব?তুমিও তো যাবে আমার সাথে।তুমি তো আমার ছোট ভাই।আমি তুমি মা তোমার ভাবী সবাই একসাথে থাকব।
-না।কিসের ভাই?আমার কোনো ভাই নেই।আমার আম্মাজান শুধু আমার।কে আপনি?যান বলছি না হলে কিন্তু আপনাকে মেরে দেব আমি।
-নিবিড় উনি আমার ও মা।তোমার ও মা।দুজনের মা।মা কে কেউ ভাগাভাগি করে?আমরা তো একসাথে থাকব।
-না না না।এটা শুধু আমার আম্মাজান।তোকে তো মেরেই ফেলব আমি।

নিবিড় ইসমাত বেগমকে ছেড়ে এদিক ওদিক তাকাতে লাগলো।পাশে পানির বোতল দেখে সেটা মাহিরের দিকে তাক করে ছুড়ে মারলো।মাহির নিবিড়ের গতি দেখেই সরে গিয়েছিল।একটুর জন্য মাহিরের গায়ে লাগেনি।

-নিবিড়।কি করছো তুমি?মাহির তোমার ভাই হয়।কেন মারছো ওকে?
-না না।আমার কেউ নেই।আমি আর আম্মাজান, আম্মাজান আর আমি।আর কেউ নেই।আমি না আপনার ছেলে আম্মাজান বলুন।
-হ্যা তুমি তো আমার ছেলে।
-তাহলে। আপনি কোথাও যাবেন না।ঐ শয়তান লোকটার কাছেও না।
-নিবিড় মাহির ও তো আমার ছেলে।ও এত বছর আমাকে পায়নি।আমি ওকে একা ছাড়তে পারব না বাবা।তুমিও তো আমার সাথে যাবে বলো।

ইসমাত বেগমের কথা শুনে পাগলের মতো আচরণ শুরু করলো নিবিড়।হাতের স্যালাইনের ক্যানোলা টেনে খুলে ফেললো।হাত থেকে রক্ত পড়ছে তার।চারপাশের সব কিছু এলোমেলো করতে লাগলো।নিবিড়ের আচরণে ভয় পেয়ে ইসমাত বেগম ও দূরে সরে গেলেন।মাহির দৌড়ে গেল ডাক্তারকে ডাকতে।

-আপনি শুধু আমার আম্মাজান। শুধু আমার।আপনি বলেছিলেন আপনি আমাকে ছেড়ে যাবেন না অনুকে ছেড়ে দিলে।আমি অনুকে ছেড়ে দিয়েছি।আমি ওর কাছে আর যাইনি।আপনার কথা শুনেছি আমি।বলুন শুনিনি।

নিবিড় দাড়িয়ে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো।নিবিড়ের কান্না সহ্য হলো না ইসমাত বেগমের।তিনি নিবিড়কে গিয়ে জড়িয়ে ধরলেন।

-আমি কোথাও যাইনি বাবা। তুমি শান্ত হও।
-না হবো না শান্ত। আমি আপনার কথা শুনিনি বলুন না আম্মাজান?

ইসমাত বেগম নিবিড়কে ধরে বেডে বসালেন।

-শুনছো তো বাবা।তুমি তো আমার ভালো ছেলে।তাই না?দেখো কি করলে।হাত থেকে রক্ত পড়ছে তো।
-আপনি আমাকে ছেড়ে যাবেন না আম্মাজান।আমি কিন্তু মরে যাব বলে দিলাম হুম।আপনি আমাকে ছেড়ে চলে গেলে আমি অনুকে ও গিয়ে মেরে ফেলব।এই ছেলেটা আছেনা আপনাকে নিতে চাইছে ওকেও মেরে দেব।তার পর নিজেও মরব হি হি।যেমন কাল শিরা কেটে ছিলাম।

নিবিড় পাগলের মতো হাসতে শুরূ করলো।ইসমাত বেগমকে জড়িয়ে ধরেছে সে।

-সোনা আমার।আমি তোমাকে ছেড়ে যাচ্ছিনা তো।
-না আপনি আমাকে ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।আপনি আমাকে একটুও ভালোবাসেন না আম্মাজান।
-কে বলেছে?আমি বাসিতো।
-আপনি ঐ ছেলেটার সাথে কথা বলবেন না আম্মাজান।একদম বলবেন না।আপনি ওর সাথে কথা বললে আমি এখনি নিজেকে মেরে দেব।
-না।কি বলছো কি তুমি?

মাহির ডাক্তারকে ডেকে আনতেই সবাই মিলে ধরে নিবিড়কে শোয়ালো।ডাক্তার ঘুমের ইনজেকশন দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলেন নিবিড় কে।

হসপিটালের করিডোরে দাঁড়িয়ে আছেন ইসমাত বেগম।তার হাত দুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে দাড়িয়ে আছে মাহির।

-মা।সারাদিন অনেক কষ্ট হয়েছে তোমার।তুমি চলো।তুমি ইলার সাথে বাড়ি তে যাও।আমি এখানে আছি।
-চলে যা মাহির।আর কোন দিন আমার সামনে আসবি না।

ইসমাত বেগমের কথা শুনে থমকে গেল মাহির।ইলাও প্রচন্ড অবাক হলো।ইসমাত বেগমের চোখ থেকে পানি পড়ছে।তিনি চোখ নামিয়ে রেখেছেন।মাহিরের দিকে তাকাচ্ছেন না পর্যন্ত।

-মা কি বলছেন আপনি?
-হ্যাঁ।বৌমা মাহিরকে নিয়ে চলে যাও।আর কখনো আমার সামনে আসবে না তোমরা।কখনো না।আর আমিও কোথাও যাব না তোমাদের সাথে।

ইসমাত বেগমের কথা শুনে মাহিরের পৃথিবীটা যেন নিমিষেই থমকে গেল।

চলবে———-

#রৌদ্র_কুয়াশা
Suvhan Årag(ছদ্মনাম)
পর্ব ৪৮

-মা কি বলছো কি তুমি?
-আমি তোমাকে বড় করতে পারিনি।জন্ম তো দিয়েছি।আজ তোমার কাছে কিছু চাইব মাহির।আমাকে ফেরাবে না তুমি।মনে করো এই তোমার মাতৃ ঋণ শোধ।আমি কোনদিন কোন দাবি করব না তোমার কাছে।
-তুমি এভাবে কেন বলছো মা?কি চাও তুমি?
-আমার ছেলেটাকে বাঁচতে দেও মাহির।মাহির নিবিড় ছোট থেকেই অসুস্থ।আর পাঁচটা বাচ্চার মতো স্বাভাবিক মস্তিষ্কের ছিল না।ছোট বেলায় একবার ওকে বলেছিলাম ও আমার ছেলে না।মৃত্যুর মুখে চলে গিয়েছিল ও।মাহির ও রাগী হোক যাই হোক এই আম্মাজান ই ওর দুনিয়া।আমি ছাড়া ওর কেউ নেই।মাহির তোমার বাবা আছেন,তোমার ইলার মতো স্ত্রী আছে, ধন-সম্পদ মর্যাদা সব ই আছে।আমার নিবিড়টার আমি ছাড়া কেউ নেই বাবা।আমি ওকে ছেড়ে গেলে ও মরেই যাবে বাবা।ওকে আমি জন্ম না দিতে পারি তবুও আমি ওর মা।ওর পৃথিবীতে আসা থেকে আজ অবধি ওকে কষ্ট করে মানুষ করেছি আমি।ওর কাছে চাওয়া বলতে শুধু আমি।মাহির ও অনেক অসুস্থ।আমি যদি চলে যাই আর তোমাকে যদি আর ও একবার দেখে ও সত্যি সত্যি নিজের ক্ষতি করে দেবে।আমি ওর কোনো কষ্ট দেখতে পারব না মাহির।

মাহিরের হাত ধরে ডুকরে কেঁদে উঠলেন ইসমাত বেগম।মাহিরের চোখ ও ভরা পুকুর হয়ে গেছে।

– আমার কষ্ট টা দেখতে পারবে?আমি না খুব কষ্ট পাব।জানো মা স্কুলে যখন পড়েছি সবাই মাদারস ডে তে মা কে গিফট করতো।মায়েরাও আসতো।আর আমি শুধু চুপ করে দেখতাম।আমি ভাবতাম এক দিন আমার ও দিন আসবে।আমি ঠিক আমার মাকে খুঁজে গিফট দেব।তুমি বলো মা আমার দিন কি একবারের জন্যও আসবে না?

মাহিরের প্রশ্ন শুনে পাথর হয়ে দাড়িয়ে রইলেন ইসমাত বেগম।চোখের পানি যেন আরো বেশি ঝড়ছে তার।

-মা তুমি নিবিড়কে নিয়ে চলো।তুমি সারাদিন ওর সাথে থাকবে।আমি কখনো কিছু বলব না।শুধু দিনশেষে আমি মা বলে ডাকলে একটু সাড়া দেবে।আমার বেশি কিছু চাইনা।তাতেই হবে।মা আমি কি খুব বেশি কিছু চেয়েছি বলো?বলো না মা।

ইসমাত বেগম মাহিরের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিলেন।ছলছল চোখে মাহির তাকিয়ে আছে ইসমাত বেগমের দিকে।ইলা নিরব দর্শকের মতো শুধু দাড়িয়ে দেখছে সব।

-আমার কথা তুমি বুঝতে পারছো না?আমার ছেলেটা মরেই যাবে বুঝতে পারছো না তুমি?এতো বছর তো ছিলে তোমার বাবার কাছে।সেদিন যদি আমি ঐ বাড়িতে না যেতাম তাহলেও তো তুমি খুঁজে পেতেনা আমাকে।তাহলে কেন এরকম অবুঝের মতো আচরণ করছো?এত বড় হয়েছে এই টুকু বোধ শক্তি তোমার নেই?একটা অসুস্থ মানুষ ও।ওর জীবনের চেয়ে কি তোমার কাছে নিজের আশা বড় হয়ে গেল?তুমি তোমার বাবার মতোই স্বার্থ পর হয়েছো মাহির।ছিহ। তোমার সব আছে।আমার নিবিড়ের কিছু নেই।আমি না থাকাতে এত বছর তোমার কিছু এসে যায়নি মাহির।কিন্তু আমার না থাকাটা আমার নিবিড়কে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিতে পারে।ও কখনো আমার পাশে কাউকে সহ্য করতে পারেনা। কখনো না।আমি জন্ম দিয়েছি তোমাকে।তোমার কাছে হাতজোড় করছি চলে যাও তুমি।আর কখনো আসবে না আমার সামনে।এটাই মনে রেখো ছোট বেলায় তোমার মা চলে গেছিল কিন্তু এবার তোমার মা মরে গেছে।তোমার তোমার বাবার ঐ রকম বিলাসিতা জীবন আমার চাইনা।আমার নিবিড় টা বেচে থাকুক।তাতেই হবে আমার।আমি ওকে নিয়ে দূরে চলে যাব।তোমার জীবনেও আসব না কোনদিন।আমার অনুরোধ টা রাখো তুমি।তোমার কাছে আর কোন দিন কিছু দাবি করব না আমি।স্বার্থপর এর মতো আচরণ করোনা। আমার নিবিড়কে বাঁচতে দেও।

মাহির থ হয়ে দাড়িয়ে আছে।পৃথিবীর আরেক নিষ্ঠুরতা আজ তাকে আবার গ্রাস করেছে।সে আজ স্বার্থপর হয়ে গেল তার মায়ের কাছে?ইসমাত বেগমের কাছে গিয়ে তার হাত নামিয়ে নিল মাহির।চোখ মুছে দিল নিজের হাতে।

-মায়েদের হাত জোড় করা মানায়না।না মানায় চোখে পানি।আমি আর কোনদিন তোমার সামনে আসব না মা।কোন দিন না।বিশ্বাস করো।একটা কথা মাহির আশহাব তার কথা রাখতে জানে।বললে না সে তার বাবার মতো স্বার্থ পর।তো শুনে রাখো আমি কখনোই আমার বাবার মতো হইনি।কিন্তু বাবার একটা গুণ পেয়েছি।এক কথার মানুষ আমি।কথা দিলাম আর কোনদিন তোমার সামনে আসব না।একটা কথা কি জানো মা তুমি এতক্ষণ বললেনা আমার সব আছে।ভুল বললে।আমার মা নেই ।আমার বাবা থেকেও নেই।আর রইলো ধন-সম্পদ।সেটা কখনোই সুখ দেয়নি আমাকে।না আমি তার আশা করি।শুধু একটা কথাই ঠিক বলেছো।ইলার মতো স্ত্রী আছে।আসলেই এটা ঠিক বলেছো। কিন্তু আমি ধনী হয়েও পৃথিবীর সবচেয়ে গরীব মা।আমার ঘরে মা নেই।আমি শুধু এতকাল ধরে স্বপ্ন দেখেছি মাকে নিয়ে।আমি তো ভেবেছিলাম আজ সেটা পুরন হবে।আমি আমার মায়ের কোলে মাথা রেখে ঘুমাব।অথচ দেখো আমি এই সামান্য কিছুই চাইলাম।আর স্বার্থ পর হয়ে গেলাম!অদ্ভুত না।ঠিকাছে তুমি যা চাও তাই হবে।মাতৃত্বের দাবি নিয়ে আজ এমন কিছু চেয়েছো হয়তো তুমি আমার জীবনটা চাইলেও এত কষ্ট পেতাম না।যাই হোক।আর কোনদিন তোমার সামনে আসব না মা।কখনো না।কোনদিন মা বলে ডাকব না।তুমি নিবিড়ের মা হয়েই থেকো।

মাহির ইসমাত বেগমকে ছেড়ে সরে আসলে ইসমাত বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।একমাত্র তিনিই জানেন ঠিক কতোটা কষ্ট নিয়ে এতগুলো কথা বললেন তিনি।মাহিরের হাত ধরলেন ইসমাত বেগম।

-মাহির।আমাকে ক্ষমা করে দিস বাবা।আমাকে ক্ষমা করে দিস।আমি নিরুপায় মাহির।মাহির নিবিড় এত গুলো বছর ধরে আমার শূন্য কোল পূরণ করে রেখেছে।আমাকে আগলে রেখেছে।আজ অধিকারের জোর ওর বেশি মাহির।আমি ওকে,,,,।
-আমার আর কোনো ব্যখার প্রয়োজন নেই ইসমাত বেগম।আপনি স্বার্থ পর বললেন এটাই যথেষ্ট ছিল আমার জন্য।আসলেই আজ আরো নতুন কিছু জানলাম।নিজের মাকে কাছে পেতে চাওয়াটা ও স্বার্থপরতা।আর রইলো অধিকার।আমার আপনার ওপর কোন অধিকার নেই।কোন অধিকার না।আপনি কেউ না আমার।না আমি।আপনি একটু আগেই আমার ওপর থেকে নিজের সব দাবি তুলে নিয়েছেন।আর কোন ব্যাখার প্রয়োজন নেই আমার।যদি কখনো এই অধমকে প্রয়োজন পড়ে তো মনে করবেন।একজন সাধারণ মানুষ হিসেবে আরেকজন মানুষ কে সাহায্য করব।আপনি আমাকে ফেলতে পারেন আমি পারব না।কোন দিন না।

মাহির ইসমাত বেগমের থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিল।নিজের জায়গায় পাথর হয়ে দাড়িয়ে রইলেন ইসমাত বেগম।মাহির এগিয়ে গিয়ে ইলার হাত ধরলো।

-মাহির।একবার মা বলে ডেকে গেলিনা।
-আপনি হয়তো কিছু ভুলে যাচ্ছেন।আমার কোন মা নেই।ভালো থাকবেন ইসমাত বেগম সরি নিবিড়ের মা।

মাহির আর কথা বাড়ালোনা ।ইলার হাত ধরে দ্রুত গতিতে স্থান ত্যাগ করলো।

করিডোরে দাঁড়িয়ে কেঁদেই চলেছেন ইসমাত বেগম।মাহিরের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছেন তিনি।যতদূর অবধি দেখা যায় তাকে।

-আমি অসহায় বাবা।আমাকে ভুল বুঝিস না সোনা।তোকে আমি কখনোই ফেলব না।তোকে কিভাবে ফেলতে পারি আমি।তোকে মোনাজাতে ই রেখে দেব।

১২৪

বাড়ি ফিরে রকিং চেয়ারে বসে আছে মাহির।পুরো ঘর অন্ধকার করে রেখেছে সে।ইলা এসে ঘরের বাতি জ্বালালো।মাহির একটু চমকে গেল।

-আলো জ্বালালে কেন?
-অন্ধকারে কিছু দেখা যায় নাকি।
-ওহ।

মাহির আর কোনো উওর দিল না।আগের মতোই রকিং চেয়ারে বসে আছে।ইলা বিছানায় বসে তাকিয়ে আছে মাহিরের দিকে।কথায় আছে অল্প শোকে কাতর অধিক শোকে পাথর।আজ মাহিরের হয়তো সেই অবস্থা।হসপিটাল থেকে সারা রাস্তা সেখান থেকে বাড়ি।এই অবধি মাহির টু শব্দ করেনি।না তার চোখে পানির ছিটেফোঁটা।ইলা উঠে দাড়ালো।মাহিরের কাছে গিয়ে মাহিরকে টেনে তুললো।

-কি হয়েছে?
-বেলকনিতে যাব।
-যাও।
-একা ভয় করে তো।
-আচ্ছা চলো।

মাহির ইলার সাথে বেলকনিতে গিয়ে দাড়ালো।দুজনে পাশাপাশি দাড়িয়ে আছে।শীতের হিম প্রবাহ দুজনকে ছুঁয়ে দিচ্ছে।আরো কেঁপে উঠছে দুজনে।

-মাহির।এটা তো কথা ছিল না।
-কি হয়েছে?
-কথা ছিল কষ্ট ও একার না দুজনের হবে আর সুখ ও।
-কেন কি হলো আবার?
-মা নিরুপায় মাহির।জানেন আলিশা আমার বোনের সন্তান।অথচ ওর একটু জ্বর হলেও আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারতাম না।মনে হতো ওটা আমার হয়েছে।মাহির মা তো নিবিড় কে মানুষ করেছে।উনি কিভাবে নিজেকে ঠিক রাখবে বলুন?আজ বাধ্য হয়ে উনি একটা পথ বেছে নিয়েছেন।
-আমি কষ্ট পাইনি ইলা।ইলা আজ অবধি মায়ের ভালোবাসা পাইনি।আজ ও পেলাম না।সেই একি কাহিনী হলো।জীবনের সব কিছু পাওয়াতেই তো হয়না না পাওয়াতে ও কিছু গল্পের সমাপ্তি ঘটে যায়।আমার ও তাই হলো এই আরকি।

মাহিরকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে দাঁড় করালো ইলা।

-আমার থেকে লুকাচ্ছেন?আপনি না বলেছিলেন আমার কাছেই আপনার মাথা গোজার শেষ স্থান।আমার থেকে লুকিয়ে থাকতে পারবেন।

মাহির আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলো না।ইলাকে নিজের সাথে আঁকড়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়লো।

-ইলা কেন আমার সাথে এ মন হলো?কেন?আমি তো মা নিবিড় দুজনকেই চেয়েছিলাম।
-আপনি তো কেবল বললেন সব গল্পের সমাপ্তি প্রাপ্তিতে নয়।

ইলাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই যাচ্ছে মাহির।সাথে ইলাও।আজ রাত টাও সাক্ষী হলো কিছু না পাওয়া বেদনার,অসমাপ্ত গল্পের।

১২৫

দুদিন কেটে গেছে।গভীর রাত।নদীর পানির স্রোত ও যেন বাতাসটাকে আরো বেশি শীতল করে দিচ্ছে।অনেক দিন পর আরিয়ান মাহিরের মুখোমুখি হয়েছে।

ব্রিজের ওপর দাঁড়িয়ে আছে মাহির।নদীর চারপাশের অন্ধকারাচ্ছন্ন শহরটাকে দেখছে সে।আরিয়ান নিচে বসা।

-কেন এমন করলি আরিয়ান?তুই তো নিজে বলেছিলি তুই অনুকে ভালোবাসিস।কেন আজ এই কথা শুনতে হলো আমার?
-আন্টির কথা শুনে খারাপ লাগলো।নিবিড়ের বাড়িতে গিয়ে আন্টিকে দেখে চিনতেই পারিনি যে উনি তোর মা।
-কথা ঘোরাস না আরিয়ান।তুলির থেকে সব শুনেছি আমি।সত্যি করে বল কেন এমন করেছিস?
-নীল আমার কাছে কিছু চেয়েছিল।ওর কাছে অনেক ঋণ আছে আমার।তাই ওকে সেটা দিয়েছি।
-নীল চেয়েছিল।কিন্তু ও এটাও বলেছিল তুই চাইলে হবে না হলে না।ও তো এটা জানেনা তুই অনুকে ভালোবাসিস। আর মিথ্যা বলিস না আমাকে।

আরিয়ান মুচকি হেসে উঠে দাড়ালো।গাড়ির দিকে গিয়ে ভেতর থেকে একটা খাম বের করে এনে মাহিরের হাতে দিল।

-কি এটা?
-একমাত্র তোর কাছে কিছু লুকাইনা আজ অবধি।আজ ও লুকাব না।

আরিয়ান মুচকি হেসে নদীর দিকে চেয়ে রইলো।মাহির আরিয়ানের দিকে এক নজর তাকিয়ে খামটা র ভেতর থেকে একটা কাগজ বের করলো।ফোনের ফ্ল্যাশ লাইট অন করে কাগজটা পড়লো।মাহিরের হাত কাপছে।

-একটা কথা কি জানিস মাহির।ভালোবাসি বলে এই না যে ভালোবাসার মানুষটিকে নিজের কাছে পেতে হবে।সে আমার না হোক অন্য কারোর হোক কিন্তু ভালো থাক এটাও ভালোবাসা।

চলবে————

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here