লাল পাঁড়ের সাদা শাড়ি
পর্ব ৩৭,৩৮,৩৯
সামিরা আক্তার
৩৭
শিকদার বাড়ির সবাই যখন রাফসানের কথার হিসাব মেলাতে ব্যাস্ত তখন চৈতালীর নানী গুলনাহার বেগম বলে উঠলেন,
-আমি আগেই কইছিলাম তোরে রেবেকা আল্লাহ বাচ্চা দেয় নাই তুই ও বাচ্চার চিন্তা বাদ দে। কার না কার পাপের ফল মানুষ করলি এখন দিলো তো মুখে চুনকালি??
গুলনাহার বেগমের কথায় ঘরের প্রত্যেকটা মানুষ বিস্ফোরিত চোখে তার দিকে তাকিয়ে রইলো। রেবেকা আর আসলাম শিকদার হতভম্ব হয়ে গেলেন।
রেবেকা অসহায় গলায় বললো- মা!!!
গুলনাহার বেগমের টনক নড়লো। তিনি বুঝলেন ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছেন। যা এত বছরে কেউ জানে নাই তাই তিনি বলে ফেলেছেন।
কিভাবে বিষয়টা সামলাবেন বুঝতে না পেরে আমতা আমতা করতে লাগলেন।
আসলাম শিকদার আর রেবেকা হাঁসফাঁস করতে লাগলেন। ঘরের প্রত্যেকটা মানুষ তাদের দিকে প্রশ্নবিদ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। একমাত্র আসমাত শিকদার আগের মতই নিশ্চুপ।
– নানী এসব কি বলছে মেজোমা?? অবাক গলায় জানতে চাইলো রাফিয়া।
রেবেকা চুপ করে রইলেন। এমন হবে জানলে তিনি গুলনাহার বেগম কে জীবনেও এখানে আনতেন না।
– আন্টি কি বলছেন মেজো ভাই?? চৈতালী এ বংশের মেয়ে নয়? তোমার আর মেজো ভাবীর মেয়ে নয়?? কিছুই তো বুঝতে পারছি না। অধৈর্য হয়ে বললেন আরমান শিকদার।
আসলাম শিকদার সবার দিকে তাকালেন। তারপর ঠান্ডা গলায় বললেন- চৈতালী আমার মেয়ে, এই বংশের সন্তান। এই বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই।
তারপর নিজের শাশুড়ির দিকে তাকিয়ে বললেন- আমার মেয়েকে যে আপনি কোন দিন নিজের নাতনী বলে ভাবেন নাই তা আজ আপনি প্রমান করে দিলেন আম্মা। ভাবলে আজ এতবড় কথাটা বলতে পারতেন না।
তারপর একটু দম নিয়ে বললেন- চৈতালী আপনার মেয়ের গর্ভে জন্ম না নিলেও ও আমার মেয়ে। আমার ঔরসজাত সন্তান।
আসলাম শিকদারের কথায় যেন আরেক দফা অবাক হলো সবাই। রেবেকা বিস্ফোরিত দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো আসলাম শিকদারের দিকে। অবাকের শীর্ষ স্থানে পৌছে গেলেন তিনি। বললেন- তোমার ঔরসজাত মানে??
– মানেটা আমি বলছি তোমায়। এতহ্মণে মুখ খুললেন আসমাত শিকদার।
এবার সবাই চোখ বড় বড় করে আসমাত শিকদারের দিকে তাকালো।
জুনায়েদ বললো- আর হেয়ালি করবেন না বাবা। সকাল থেকে এত শকিং নিউজ আর নিতে পারছি না।
আসমাত শিকদার বললেন- বিয়ের অনেক বছর পরও যখন আসলাম আর রেবেকার বাচ্চা হচ্ছিল না তখন আসলাম চেয়েছিল একটা বাচ্চা দত্তক নেবে। কিন্তু আমি বা তোমাদের দাদু কেউ রাজি হই নি। বাবা বলেছিলেন আসলামের আবার বিয়ে দেবেন।
কিন্তু আসলাম তাতে সায় দেয় নি। কারণ ও রেবেকাকে প্রচুর ভালবাসতো।
এর মধ্যেই বাবা মারা গেলেন। বাবা মারা যাওয়ার পরের কথা। আসলাম কে একটা কাজে মানিকগঞ্জ যেতে হয়েছিল। ওখানেই দেখা হয় ওর কলেজ জীবনের বান্ধবী শর্মিলার সাথে।
শর্মিলা ডিভোর্সী ছিলো। প্রচন্ড সুন্দরী হওয়ার কারণে এলাকার বখাটে দের নজরে ও ছিল। একে তো সুন্দরী তার উপর ডিভোর্সি। এজন্য সবাই সুযোগ নিতে চাইতো। কিন্ত সুবিধা করতে পারে নি কেউ। সেদিন আসলামের সাথে শর্মিলাকে অনেকক্ষণ কথা বলতে দেখে তারা শর্মিলা কে শায়েস্তা করার জন্য ওদের এক প্রকার ধরে বেধে ওই এলাকার মাতবরের কাছে নিয়ে যায়।
সবাই এক জোট হয়ে বলে ওর অনৈতিক কাজ করছিলো তাই ধরে নিয়ে এসেছে।
যেটা ছিলো সম্পূর্ণ ভুল। এলাকার মাতবর আর লোকজন সেদিন ধরে বেধে শর্মিলার সাথে আসলামের বিয়ে দিয়ে দেয়।
ওদের দুজনের কোন কথাই কেউ শোনে নি। বিয়ের পর শর্মিলা অবশ্য বলেছিল আসলাম কে সব ভুলে চলে আসতে। কিন্তু আসলাম তার দায়িত্ব এড়াতে পারে নি।
আবার শর্মিলাকে বাড়িতে আনারও উপায় ছিলো না।
না পেরে সেদিন আমাকে ফোন দেয় আসলাম।
আমি গিয়ে আসলাম কে বলি শর্মিলা কে মানিকগন্জেই রাখতে। পরে সময় সুযোগ করে বাড়িতে আনা যাবে।
মানিকগন্জেই শর্মিলাকে বাসা ভাড়া করে রাখা হয়। আসলাম ব্যবসার কথা বলে ওর কাছে যেতো। একসময় শর্মিলা প্রচন্ড ভালবেসে ফেলে ও। আবার রেবেকা কেও ভালবাসতো। দুইজনই ওর স্ত্রী ছিলো।
শর্মিলা চৈতালীর মত শক্ত মনের মেয়ে ছিলো। কখনো শিকদার বাড়ি আসার জন্য জেদ করে নি। পরিস্থিতি জানতো ও।
আসলাম আর শর্মিলার সংসার ছিলো ২ বছরের। বিয়ের তের মাসের মাথায় চৈতালী শর্মিলার গর্ভে আসে।
রেবেকাও তখন সন্তানের জন্য পাগলামী করছিল। উপায় না পেয়ে আমি শর্মিলার সাথে দেখা করি। আসলাম তখন ওখানে ছিলো। আমাকে দেখে ওরা অবাক হলেও কিছু বলে না।
শর্মিলার প্রেগনেন্সির তখন দুমাস চলছে। এই অবস্থায় আমি গিয়ে বলি যে শর্মিলা আমি তোমায় বাড়ি নিয়ে যাব।
শর্মিলা যত না অবাক হয়েছিল তার থেকে বেশি অবাক হয়েছিল আসলাম।
বললো- ভাইজান এটা কি ভাবে সম্ভব??
-সেটা আমার উপর ছেড়ে দাও। তবে একটা শর্ত আছে।
– শর্ত!!???
শর্মিলা অবাক হয়েছিল।
হ্যাঁ শর্ত। দেখো তুমি যেমন শিকদার বাড়ির বৌ। তেমন রেবেকাও। বরং ও আগে বৌ হয়ে এসেছে। তোমাকেও আমরা ভালবাসি। ওকেও ভালবাসি। একটা বাচ্চার জন্য মেয়েটা এমন করবে এটা আমরা সইতে পারছি না। তাই আমি চাই তোমার এই বাচ্চা জন্মের পর এটা রেবেকা কে দিয়ে দেবে।
তারপর আমি তোমাকে আসলামের বৌ হিসাবে নিয়ে যাব।
আমি জানি না আমি শর্মিলাকে কিভাবে এ বাড়িতে আনতাম। তবে সেদিন আমার কথায় শর্মিলা হেঁসে বলেছিল- আপনার কি মনে হয় না ভাইজান এতে আমার সাথে অন্যায় হবে?? আমি আমার নাড়িছেঁড়া ধন কেন দেবো??
আমার শিকদার বাড়ির বৌয়ের পরিচয় চাই না।
– ভেবে দেখো শর্মিলা তোমার সন্তান নিজের বাবার নাম ছাড়া কিছুই পাবে না। বাবাকেও সেভাবে কাছে পাবে না। সব থাকতেও ছন্নছাড়া ভাবে মানুষ হবে। তার থেকে মা বাবা সবই পাবে। দরকার পরলে তুমি যাওয়ার পর সময় সূযোগ বুঝে রেবেকা কে জানিয়ে দিও বাচ্চা তোমার। তাছাড়া তুমি চাইলে আবার মা হতে পারবে।
– কিন্তু আমি আমার সন্তান কে তার মায়ের কোল ছাড়া করতে চাই না ভাইজান। তখন মুখ খুলেছিলো আসলাম।
আমাকে সেদিন হতাশ হয়ে ফিরতে হলেও দুদিন বাদে আবার আমাকে খবর দেয় শর্মিলা। বলে- ভাইজান অনেক ভেবে দেখলাম আমার সন্তান আমি রেবেকা কে দিয়ে দিবো।
– হঠাৎ এমন সিধান্ত??
– আমি তো মরেও যেতে পারি ভাইজান। তাছাড়া আমার সন্তান যদি নিজের বাড়িতে মাথা উঁচু করে সম্মানের সাথে বাঁচে তাতেই আমি খুশি।এর চেয়ে একটা মায়ের আর কি চাই?? তবে আসলাম যে কয়দিন আমার কাছে থাকবে আমার সন্তান ও আমার কাছে থাকবে। আর আমাকে আপনার শিকদার বাড়ি নিয়ে যেতে হবে না।
আসলাম হাজার বারণ করা সত্ত্বেও শর্মিলা সেদিন নিজের সিদ্ধান্তে অটুট ছিল। আমি জানতাম অন্যায় হচ্ছে শর্মিলার সাথে। তবে নিরউপায় ছিলাম।
তার পরের কাজ গুলো হয়েছে প্ল্যান মাফিক। রেবেকা প্রেগনেন্ট বলে ওকে বাপের বাড়ি পাঠানো হলো। বলা হলো একেবারে বাচ্চা নিয়ে ফিরবে। আসলে রেবেকা প্রেগনেন্ট ছিলোই না।
আর আসলাম কে দেশের বাইরে পাঠানোর নাম করে পাঠালাম শর্মিলার কাছে। চৈতালীর জন্মের আগ থেকে শুরু করে জন্ম পর্যন্ত আসলাম শর্মিলার কাছে ছিলো।
চৈতালীর জন্মের সময় অতিরিক্ত ভয়ে, আর টেনশনে শর্মিলার অবস্থার অবনতি হয়।
আসলাম সেদিন আমার বিপক্ষে গিয়ে বলেছিল- আমি তোমায় কথা দিচ্ছি শর্মি যাকে জন্ম দিতে গিয়ে তুমি এত কষ্ট পাচ্ছো তাকে তোমার বুক থেকে আমি কোথাও নিয়ে যেতে দেবো না।
রেবেকা কে আমি অন্য বাচ্চা এনে দেবো।
আমিও কথা বলি নি। নিজেও শর্মিলা কে তাই বলেছিলাম। কারণ নিজের ভুল আমি বুঝতে পেরছি তখন। বুঝতে পেরেছি আমি স্বার্থপরতা করেছি।
কিন্তু আমাদের ফাঁকি দিয়ে চৈতালী জন্মের সময় শর্মিলা মারা যায়। আসলে অতিরিক্ত ভয়ে হার্ট এট্যাক করেছিলো ও।
আমি তখন অথই সাগরে। একে শর্মিলার দাফন করতে হবে, তারপর শর্মিলার জন্য আসলামের পাগলামি। আবার চৈতালী। কাউকে ডাকবো যে সে উপায় ও নাই।
কি ভাবে সামলেছি আল্লাহ জানে।
তার পরের গল্পটা সবার জানা। চৈতালী কে রেবেকার কাছে দেওয়া হলে ওকে সবাই রেবেকার মেয়ে বলেই জানলো।
এজন্যই রাফসান আর চৈতালীর বিয়েতে রাজি হয়েছিল আসলাম। ও ভেবেছিল আমি হয়তো কাউকে বলে দিবো আমার ছেলের সাথে ওর মেয়ের বিয়ে না দিলে।
কিন্তু ও বুঝতে পারে নি এত বছরে যখন বলি নি সেদিনও বলতাম না। এমন কি আজও বলতাম না।
চৈতালীর জন্ম চৈত্র মাসে। এই নামটা শর্মিলা পছন্দ করেছিল। তাই আসলাম এটা রেখছে। এইজন্যই চৈতালীর জন্মদিন নিয়ে আসলাম উৎসাহ দেখায় না।
আসমাত শিকদারের কথা শেষ হলে সোফার উপর ধপ করে বসে পড়লেন রেবেকা। চোখ দুটো ঝাপসা হয়ে এলো তার।
তার স্বামী এত বড় একটা সত্যি তার থেকে আড়াল করে রেখেছিলো ভাবতেই মরে যেতে ইচ্ছে করছে তার।
(ক্রমশ)
লাল পাঁড়ের সাদা শাড়ি
* পর্ব ৩৮
সামিরা আক্তার
অঝোর ধারায় কেঁদে চলেছেন রেবেকা। এত বছর পর এই চরম সত্যটা মেনে নিতে তার খুব কষ্ট হচ্ছে। তার স্বামী তাকে এভাবে অন্ধকারে রেখেছিল??
সে ছাড়াও তার জীবনে অন্য নারী ছিলো?? একজন মেয়ের কাছে এর থেকে কষ্টকর আর কিছু না।
নিজেকে তিনি কোন ভাবেই বোঝাতে পারছেন না।
তাছাড়া চৈতালী?? ও যদি জেনে যায় তিনি ওর মা নন। তাহলে কি হবে??
মেয়েটাকে তাহলে আর তাকে মা বলে ডাকবে না??
কেন ডাকবে না?? নিজে নিজেই প্রতিবাদ করে উঠলেন তিনি। চৈতালীকে তিনি কোলেপিঠে করে মানুষ করেছেন। চৈতালী তো মা বলতে তাকেই বোঝে।
আচ্ছা এত ঘটনার পর এরা চৈতালী কে বাড়িতে আনবে তো?? রাফসান যে বললো ও আবার বিয়ে করেছে।
সব ভুলে রেবেকা এবার চৈতালীর চিন্তায় অস্থির হয়ে গেলো।
আসলাম শিকদার রেবেকার দিকে এগিয়ে এলেন। তারপর রেবেকার হাত ধরে বললেন- তোমার কাছে হ্মমা চাওয়ার মুখ আমার নেই। আমি জানি সবটা জানার অধিকার তোমার ছিলো। কিন্তু আমিও উপায়হীন ছিলাম।
– কিন্তু ভাইজান চৈতালীর ব্যাপারটার কি হবে?? রাফসান যে বললো ও আবার বিয়ে করছে। বললেন আরমান শিকদার।
– কি হবে মানে?? ঐ মেয়ের নাম এ বাড়িতে কেউ নিবি না। আমার ছেলের জীবনটা শেষ করে দিয়েছে ওই মেয়ে। বেহায়া মেয়ে। স্বামী থাকতে আবার বিয়ে করেছে। ছিঃ ছিঃ। একপ্রকার চিৎকার করে কথা গুলো বললেন আয়শা।
– চৈতালী যেহেতু বেঁচে আছে সেহেতু ও এই বাড়ি আসবে এটা স্বাভাবিক। কারণ এটা ওর বাড়ি। বললেন আসমাত শিকদার।
– তুমি এখনো ওই নষ্টা মেয়ে হয়ে কথা বলবে?? এক প্রকার ফুঁসে উঠলেন আয়শা।
– আহ্ চুপ করবে?? আসমাত শিকদার রেগে গেলেন। তারপর বললেন- চৈতালীর খোঁজ পাওয়া গেলে আমরা শ্রীমঙ্গল যাব। তারপর সবটা জানা যাবে। তবে আজকের কথাবার্তা যেন এ কয়জন ব্যাক্তির বাইরে না যায়।
সবাই আসমাত শিকদারের সাথে সায় দিলেন।
**চারিদিকে সবুজের সমারোহ। রাফসান তার চা বাগানের মাঝে দাঁড়িয়ে আছে। ভেবেছিলো বাগান টা বিক্রি করে দেবে। এখন সিদ্ধান্ত বদলেছে। বাগান টা থাকবে, লোকজন কাজ করবে। সে নাহয় এদিকে আসবে না।
এই শ্রীমঙ্গল তার সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। সে যে আশা বুকে নিয়ে এই আড়াই বছর কাটিয়েছে সেই আশা ধূলিসাৎ করে দিয়েছে।
এই শ্রীমঙ্গলে এসেই সে জানতে পেরেছে তার চৈতী আজ অন্য কারো। রাফসান তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিলো।
তার মত হতভাগা বোধ হয় কেউ নেই। একজনের মোহে পড়ে জীবনের অনেকটা সময় গেলো। তারপর তার থেকে যে তাকে বের করে আনলো, তাকে ভালবাসতে বাধ্য করলো, তার জীবনটা সুখে ভরিয়ে দিলো,
একসময় সেই এসে তাকে দুমড়ে মুচড়ে দিলো।
রাফসান হতাশার একটা নিঃশ্বাস নিলো। সে এখানে এসেছে সপ্তাহ হবে। এর মাঝে বাড়িতেও ফোন দেয় নি।
মাঝে জুনায়েদ অবশ্য ফোন দিয়েছিলো। চৈতালীর কথা জিজ্ঞেস করায় সে কেঁটে দিয়েছে।
সে কি এখানে চৈতালী কে খুঁজতে এসেছে নাকি?? এক সময় খুঁজতো।
তবে যদি জানতো খোজার পর এই ফলাফল পাবে তাহলে জীবনেও খুঁজতো না।
রাফসানের ভাবনার মাঝে হঠাৎ ম্যানেজার এসে বললো
– স্যার মেয়েদের কাজের হিসাব যে রাখে আর ছেলেদের কাজের হিসাব যে রাখে তাদের ডাকা হয়েছে। আপনি আসুন।
-হুম চলো।
এই চা বাগান কেনার পর আগের কর্মচারীই আছে। রাফসান যেহেতু এখানে থাকবে না তাই এসব কাজকর্ম যারা করবে তাদের কে একটু কাজ বুঝিয়ে দেওয়া উচিত।
যদিও এরা কাজ জানে তাছাড়া রাফসান বিশ্বস্ত বাড়তি লোক ও দিয়ে যাবে তারপরও ছেলেদের গ্রুপের প্রধান আর মেয়েদের গ্রুপের প্রধানের সাথে কথা বলাটা জরুরি মনে হয়েছে তার কাছে।
চা বাগানের সাইডে নিজের বিশ্রামাগারে বসে ম্যানেজার কে আদেশ দিলো ওদের ডেকে আনার জন্য। ম্যানেজার চলে যেতেই ল্যাপটপ খুললো সে। স্কিনে চৈতালীর হাঁসিমাখা একটা ছবি ভেসে উঠলো।
অনেক আগে সেভ করেছিলো সে। তবে আজ বোধহয় নিজের ল্যাপটপে এই ছবি রাখার অধিকার তার নেই।
ছবিটা সরানোর জন্য ল্যাপটপে হাত দেওয়ার আগেই হঠাৎ ম্যানেজার বলে উঠলো -এইতো স্যার ওরা এসে গেছে।
রাফসান মুখ তুলে উপরে তাকিয়েই বাকা হাঁসলো। এই জন্যই বলে পৃথিবী গোল। এতদিন খুঁজে পায়নি। এখন একবার যখন পেয়েছে এখন বোধহয় বার বার সামনে আসবে।
অপরদিকে চৈতালী আর আরিফ ও একটু অপ্রস্তুত। চা বাগান টা যে অন্য কেউ কিনে নিয়েছে এট তারা জানতো। কিন্তু নতুন মালিক যে রাফসান হবে কে জানতো??
এই চা বাগানে আরিফ দু বছর ধরে কাজ করলেও চৈতালী আদ্র জন্মের পর থেকে কাজ করছে।
আচ্ছা রাফসান কি তাদের বের করে দেবে??
চৈতালী ঘামতে শুরু করলো। এখান কার আয় দিয়েই তাদের সংসার চলে।
অন্যদিকে আরিফ ভাবছে অন্য কথা। সে জানতো চৈতালী ধনী পরিবারের। তবে এতটা সেটা বোঝে নি। তবে এই মেয়ে নিজেকে কেন লুকিয়ে রেখেছে আরিফ বুঝলো না।
চৈতালী যে কারণে ভয় পেলো রাফসান সেদিকে গেলো না। তাদের কয়েকটা কাজ বুঝিয়ে দিয়ে আসতে বললো।
চৈতালী হাফ ছেড়ে বাঁচলো। আবার রাফসানের এখানে কাজ করতে হবে ভেবে অস্বস্তি ও হলো।
কিন্তু কিছু করার নেই। পড়ালেখাটা ও আর হয় নি।
তবে কথা শুনে মনে হলো রাফসান এখানে মাঝে মাঝে আসবে।
সব সময় থাকবে না। এটা স্বস্তির ব্যাপার।
চৈতালীরা বেরিয়ে যেতেই রাফসান বাইরে এসে চৈতালীর দিকে একমনে তাকিয়ে রইলো। এতহ্মণ পর্যন্ত চৈতালী কে দেখা যায় ততহ্মণ তাকিয়ে রইলো। তারপর তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে গেলো ঢাকার উদ্দেশ্য। শ্রীমঙ্গল তার সহ্য হচ্ছে না। যে শহরে চৈতালী অন্য কারো সে শহর তার জন্য বিষাক্ত।
** রাতে আদ্র কে ঘুম পাড়ানোর পর জানালার ধারে এসে দাড়ালো চৈতালী। মানুষটা আজকে তার দিকে এক বারও তাকায় নি। সেদিন কি কয়েকটা কথা শুনালো তারপর আজ একটা কথাও বললো না।
তার মানে নিশ্চয়ই খুব ভালো আছে। আফরিন বোধহয় ভালবাসা দিয়ে তার সব স্মৃতি মুছে দিয়েছে।
তাই আজ তার দিকেও তাকায় না। অথচ এই রাফসান একটা সময় একমনে তার দিকে তাকিয়ে থাকতো।
চৈতালী একটু নড়াচড়া করলে বলতো- নড়িস না তো দেখতে দে।
ভাবতেই চোখ বেয়ে পানি পড়লো। মানুষটা বোধহয় আফরিন কে ও ওভাবেই আদর করে যেভাবে তাকে করতো।
অবশ্য আফরিন তো আগে থেকেই ছিলো। সেই মাঝে কাবাব মে হাড্ডি হয়েছিল।
চৈতালীর হঠাৎ খুব রাগ হলো। আফরিন কেই যদি জীবনে আনার ছিলো তাহলে সেদিন তার ডাকে সারা দিয়েছিলো কেন??
কেন তার জীবনটা নষ্ট করলো?? তার ছেলেটাও সব কিছু থেকে, সবার আদর থেকে দূরে সরে রইলো।
তবে চৈতালী সবার সাহায্য ছাড়াই আদ্রকে মানুষ করে দেখিয়ে দেবে সেও শিকদার বাড়ির মেয়ে। কোন বেঈমান বিশ্বাঘাতকের সাহায্য ছাড়াই ছেলেকে মানুষ করেছে।
রাফসান বাড়ি এসেছে শুনেই রেবেকা ছুটে এসেছে। এই এক সপ্তাহ সে এক প্রকার বন্দি জীবন কাটিয়েছে। কারো সাথে কথাও বলে নি। আজ দৌড়ে এসে রাফসানকে বললো- আমার চৈতালীর আর কোন খোঁজ পেলি বাবা??
– এই তুমি কি মানুষ রেবেকা?? ঘুরে ফিরে আমার ছেলের কাছেই তোমার ওই কাল নাগিনী মেয়ের কথা তুলতে হবে?? বলি আমার ছেলের কষ্ট একটু বুঝতে চেষ্টা করো। ও মানুষ ফেরেশতা না।
বলতে বলতে কেঁদে ফেললো আয়শা।
– আহ্ মা। আমি ঠিক আছি। এত অল্পতে রাফসান শিকদার কষ্ট পায় না।
আয়শা কষ্টের একটা হাসি দিয়ে মনে মনে বললেন- তুই যাই বলিস আমি তো জানি তোর মনে কি চলছে। তুই যে গুড়িয়ে গেছিস বাবা।
আমি মা হয়ে তোর এই কষ্ট আর কত দেখবো।
রাফসান এবার রেবেকার দিকে তাকিয়ে বললো- তোমার মেয়ে আমার চা বাগানে কাজ করে মেজোমা। আমি আগামি শনিবার যাব। তারপর গিয়ে তোমাদের যেতে বললে তারপর যেও।
– কিন্তু আজ তো মাত্র রবিবার। তার মানে আরও প্রায় এক সপ্তাহ।
– হুম। এতদিন যখন কষ্ট করলে তখন আর একটু করো। নিয়ে যাব বলছি তো।
বলেই নিজের রুমে গেলো সে।
(ক্রমশ)
লাল পাঁড়ের সাদা শাড়ি
*পর্ব ৩৯
সামিরা আক্তার
চৈতালীর দিন কাঁটছে ব্যাস্ততায়। রাফসানের গত সপ্তাহে এখানে আসার কথা থাকলেও আসে নি। চৈতালী এক প্রকার হাফ ছেড়ে বেঁচেছে। যত কম আসে ততই ভাল।
অন্তত মুখোমুখি হতে হবে না।
তবে এ সপ্তাহে আসবে নিশ্চিত। চৈতালী অবশ্য অন্য চা বাগানে কাজের খোঁজ লাগিয়েছে। পেলেই এখান থেকে চলে যাবে। তাই আর রাফসানের চোখের সামনে থাকতে হবে না।
আজকাল চা বাগানের কাজ বেড়েছে। রাফসান বাগান কেনার পর নিয়ম কানুন ও বেড়ে গেছে। চৈতালী মনে মনে এক গাঁদা বকা দিলো রাফসান কে।
হঠাৎ করেই মনে হলো আদ্র পাশে নেই। ছেলেকে সব সময় আনে না কাজের জায়গা। মাঝে মাঝে আনে।
চৈতালীর আত্মা ভয়ে সিটিয়ে গেলো আদ্র কোথায় গেলো?? এদিক ওদিক খুজে দেখতে পেলো চা বাগানের মাঝে প্রসস্ত রাস্তায় বসে কি যেন করছে।
চৈতালীর মেজাজ খারাপ হলো। এটা যদি মেইন রোড হতো?? ভাগ্য ভালো এই রাস্তা শুধু চা বাগানের কাঁচামাল নেওয়া আনায় ব্যবহার করা হয়।
দৌড়ে গিয়ে ছেলেকে এক থাপ্পড় মারলো। পাঁজি ছেলে। এই ছেলে এত দুষ্টু কিভাবে হলো??
মায়ের থাপ্পড় খেয়ে আদ্র চিৎকার দিয়ে কেঁদে উঠলো। তারপর ঠোট উল্টিয়ে নিজের ভাষায় বকতে লাগলো।
– হ্যাঁ বকেন। আগে আপনার বাপ বকতো এখন আপনি বকেন।
আদ্র কান্নায় থামিয়ে মা কি বলছে একটু বোঝার চেষ্টা করলো। তারপর আবার কাঁদতে শুরু করলো।
চৈতালী এক দৃষ্টিতে ছেলের দিকে তাকিয়ে হেঁসে ফেললো। তারপর বললো- আর কাঁদবেন আব্বা। মার ভুল হয়ে গেছে। আপনার বাপ যদি জীবনে কোনদিন জানতে পারে আমি তার ছেলেকে মারছি কি করবে আমাকে বুঝতে পারছেন??
কথাটা বলেই আনমনা হয়ে গেলো সে। মনে মনে বললো- আফসোস আপনার কথা আপনার বাপ কোনদিন জানতে পারবে না আব্বা।
পরহ্মণেই নিজেকে সামলে নিয়ে আদ্রর পেটে সুরসুরি দিলো সে। পেটে সুরসুরি দিতেই খিলখিল করে হেঁসে উঠলো আদ্র।
সাথে হাঁসলো চৈতালীও। মা ছেলের এই হাঁসির মধ্যে হঠাৎ কেউ বললো- কাজ করা বাদ দিয়ে ছেলেকে নিয়ে খেললে কি ভাবে হবে মিসেস চৈতালী?? মালিক কি আপনাদের এই মা ছেলের হাঁসি দেখার জন্য বেতন দেয়??
চৈতালী পিছনে তাকিয়েই থমকে গেলো। রাফসান দাঁড়িয়ে আছে। যার থেকে পালাতে চাইছিলো তার সামনেই পড়লো। মাথা নিচু করে ফেললো সে।
– ছেলেকে কাঁজের জায়গা আনবেন না মিসেস চৈতালী।
চৈতালী ছলছল চোখে তাকালো। এই লোকটার সামনে আসলে আজকাল তার কান্না পায়। কথাও আটকে আসে। তার উপর এই লোকটা আজ তাকে চৈতালী বলছে??আগে তো চৈতী বলতো। আবার আপনি??
এতটা পর করে দিয়েছে??
কই তার কাছে তো কিছুই জানতে চায় নি সেদিন কি হয়েছিল। কেন সে এমন করেছিল?? কেন হারিয়ে গিয়েছিল?? শুধু নিজের মত করে কিছু একটা ভেবে নিয়েছে।
আসলে আফরিন আছে তো। চৈতালী তো এখন উটকো ঝামেলা তাই।
অভিমানে গলা বুঝে এলো চৈতালীর।
– মিসেস চৈতালী? কি বললাম বুঝেছেন??
রাফসানের ডাকে হুশ ফিরলো চৈতালীর। কোনরকমে বললো- আসলে ওকে আমি আনি না। আজ কান্না করছিলো তাই।
রাফসান ভ্রু কুঁচকে তাকালো। আনে না মানে কি?? কার কাছে রেখে আসে?? ওই ছেলেটাও তো এখানে কাজ করে। কোথায় থাকে চৈতী?? বাড়িত আর কে কে আছে??
মনে অনেক প্রশ্ন জমা হলেও কিছু বললো না। শুধু একবার তাকালো চৈতালীর দিকে। ছেলেকে এমনভাবে আঁকড়ে ধরে আছে যেন ছেরে দিলেই কেউ নিয়ে যাবে।
রাফসান যেতেই চৈতালী হাফ ছেরে বাঁচলো। এই লোক এত সকালে?? কখন এসেছে?? রাতে?
যাই হোক দুপুরেই আদ্রকে বাড়ি রেখে আসবে। অবশ্য শিউলির ও শরীর ভালো না। মেয়েটা চার মাসের প্রেগনেন্ট। তার কাছে রেখে আসতেও খারাপ লাগে। একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে সে কাজের জায়গা গেলো।
রাফসান বসে বসে চোখ বন্ধ করে চৈতালীর হাঁসিমুখ টা কল্পনা করছিলো। ছেলেকে নিয়ে কেমন হাঁসছিলো চৈতালী। কেমন সুখী সুখী চেহারা। ওই ছেলেটা নিশ্চয়ই চৈতালী কে সুখে রেখেছে।
যেটা সে পারে নি। তাচ্ছিল্যের একটা হাসি দিলো সে নিজের প্রতি। মনে বললো ব্যার্থ তুমি রাফসান শিকদার। ব্যার্থ।
এভাবে এতহ্মণ পেরিয়ে গেঁছে সে জানে না। আচমকা তার মনে হলো তার পায়ের উপর দুটো ছোটো ছোটো হাত ঘুরাঘুরি করছে।
সাথে সাথে চোখ খুলে ফেললো সে। তাকিয়ে দেখলো একটা বাচ্চা ছেলে তার দু পা ধরে দাঁড়িয়ে আছে। ছেলেটাকে তার চেনা চেনা লাগলো। কোথায় যেন দেখেছে??
সে তাকাতেই ছেলেটা দাঁত বের করে কিউট একটা হাঁসি দিলো।
সাথে সাথে রাফসান বুঝতে পারলো ছেলেটা চৈতালীর। কি যেন নাম??
ও হ্যাঁ আদ্র। ওর হাজবেন্ডের নাম তো আরিফ। বাহ্ স্বামীর নামের সাথে মিলিয়ে রেখেছে।
রাফসান বাচ্চা টার কাছে গিয়ে বসে পড়লো। চৈতালীর উপর রাগ থাকলেও আদ্রর প্রতি তার কেন যেন কোন রাগ হলো না।
কি নিষ্পাপ চেহারা। একদম চৈতালীর মুখের আদল। বিধাতার কি নির্মম পরিহাস এই বাচ্চাটার মা তার চৈতী। কিন্তু বাবা সে নয়।
অথচ সেরকমই হওয়ার কথা ছিলো। একটা বাচ্চার খুব শখ ছিলো তার। কিন্তু কেন যেন সেটা চৈতালী কে বলা হয় নি। বললে যদি চৈতালী রাগ করতো??
সে চেয়েছিল চৈতী নিজ থেকে বলুক যে আমার একটা বাচ্চা চাই। বলুক আমি আর মেডিসিন নেবো না এবার কেউ আসুক। হয় নি সেটা।
কি হতো যদি এই বাচ্চা তার হতো?? কি হতো যদি চৈতালীকে নিয়ে তার সুখের সংসার হতো??
রাফসান আদ্রকে টেনে কোলে বসালো। তারপর ওর গালে একটা চুমু দিলো। কেন দিলো জানে না। চৈতালীর ছেলে বলে?
কোন ব্যাখ্যা খুঁজে পেলো না। তবে আদ্রকে কোলে নিয়ে তার ভাল লাগছে। ভীষণ ভালো লাগছে। প্রশান্তি খুঁজে পাচ্ছে যেন।
আদ্র আপন মনে বা, বা, বা, মাম,মাম করে যাচ্ছে।
রাফসান ওকে বুকে জরিয়ে নিলো। সাথে সাথে রাফসানের মনে হলো ওর কলিজা যেন অনেকদিন পর ঠান্ডা পরশ পেলো। চৈতালীর সাথে সম্পর্কিত কোন কিছু বুঝি এত শান্তি দেয়??
ছেলেটা চৈতালীর বলেই কি এতো ভালে লাগছে তার??
সে আর একটা চুমু দিলো আদ্রকে।
তারপর কোলে নিয়ে উঠে দাঁড়াতেই কোথ থেকে ঝড়ের বেগে উড়ে এলো চৈতালী। এসে এক প্রকার রাফসানের কোল থেকে ছিনিয়ে নিলো আদ্র কে।
রাফসান একটু অবাক হলেও কিছু বললো না। কারণ তার পর পরই এসে দাড়িয়েছে আরিফও।
বোঝাই যাচ্ছে অনেকহ্মণ ধরে খুঁজছে। আদ্রকে কে ওভাবে কেড়ে নেওয়াতে রাফসানের কেন জানি খুব কষ্ট লাগলো।
সে একমনে চৈতালী আর আদ্র কে দেখতে লাগলো। চৈতালী ততক্ষণে আদ্রকে জরিয়ে ধরে হাঁপাচ্ছে। আর বির বির করে বলছে -বার বার কেন হারায় যান আব্বা?? এত পন্ডিত কেন আপনি??
আরিফ এতহ্মণ একমনে রাফসান কে পর্যবেহ্মণ করছিলো। আদ্র কে কেড়ে নেওয়ার সাথে সাথে যে রাফসানের মুখ কালো হয়ে গেছে সেটা লহ্ম করেছে সে।
আবার এখন কাতর চোখে ওদের দিকে তাকিয়ে আছে। আরিফের একটু খটকা লাগলো। এমন তো নয় চৈতালী যা ভাবছে ভুল??
রাফসানের ব্যাপারে খোঁজ নিতে হবে। কেন যেন তার হিসাব মিলছে না।
চৈতালী কে সে নিজের বোন ভাবে। ওর জীবনের ভালো মন্দ দেখা তার দায়িত্ব।
ভাবনার জাল থেকে বেরিয়ে রাফসান কে বললো- আপনাকে ধন্যবাদ স্যার। আসলে ও হাঁটতে শেখার পর থেকে আর স্থির থাকতে চায় না। বোধহয় আপনাকে ডিস্টার্ব করছে। তার জন্য সরি।
রাফসানের এতহ্মণে হুশ ফিরলো। বললো- ইটস্ ওকে। ও নিজে থেকেই এসেছে। আর আমাকে ডিস্টার্ব করে নি।
চৈতালী রাফসানের কথায় শক্ত হয়ে গেলো। ফাঁজিল ছেলে। ঠিক বাপের কাছে চলে এসেছে। তার আরও সাবধান হতে হবে।
(ক্রমশ)