লেডি_ডন পর্বঃ১৭

0
713

লেডি_ডন
পর্বঃ১৭
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona

আদিঃআমি সব জেনেশুনে কি করে জয়কে বলব,
তুমি এতদিন যাকে তিলে তিলে গড়ে তুলেছো তাকে আজ আমায় দিয়ে দাও।

কিন্তু আমিও তো রুহিকে ভালবাসি ওকে ছাড়া আমিই বা বাঁচব কি করে?
,
,
,
,
এতক্ষন রাস্তায় কেউ কারো সাথে কোনো বলে নি। বাসায় ফিরেই যে যার রুমে চলে গেল। সবার মন খারাপ।
দেখতে দেখতে সন্ধ্যা পেড়িয়ে রাত হয়ে গেল,
রুহির মা সবাইকে রাতের খাবারের জন্য ডাকতে বলল,
মিলি সবাইকে ডেকে আনল,
রুহিসহ সবাই এসে টেবিলে বসলো,
কিন্তু রুহি না খেয়ে উঠে গেল,
রুহিঃআমি খাব না মা, জয়ের বাসায় যাব….
এতক্ষনে জয় একবারো এই বাসায় আসে নি। ও কখনো আমাকে ছেড়ে এতক্ষন থাকে নি।
একটু বেশিই রাগ করছে মনে হয়।
এটা বলেই রুহি যেতে চাইল আদি দাঁড়িয়ে বলল, আমি কি যেতে পাড়ি?
রুহিঃ হুম অবশ্যই….

লিজাঃ আমিও যেতে চাই…

সাওন,মাহিরঃ লিজা তর কি মনে হয় আমরা যেতে চাই না?

মনিঃ সত্যি বলতে জয় অনেক ফ্রেন্ডলি ওর জন্য খারাপ লাগছে চলো সবাই গিয়ে ওকে নিয়ে আসি।

রুহির মাঃআচ্ছা যেও,কিন্তু আগে খেয়ে নাও তারপর যাও….

আদিঃ আন্টি চিন্তা করবেন না আমরা জয়কে নিয়ে বাইরে খেয়ে নিব।
,
,
,
সবাই মিলে জয়ের বাসায় গেল।
বাসায় ঢুকেই বোঝা যাচ্ছে বাসাটা কোনো রুচিশীল মানুষের। পুরো বাড়িটা সুসজ্জিত।
বাইরে প্রচুর গার্ডস রয়েছে।

বাসায় ঢুকে রুহি সোফায় বসে পড়ল আর বলল,
আদি উপড়ে জয়ের রুম,তুমি যাও ওকে নিয়ে এসো।
আদি উপড়ে গিয়ে একটা রুমে ঢুকল কিন্তু রুমে কেউ নেই।
আদি রুমটা ভাল করে একবার দেখেই বের হয়ে যেতে লাগল,
পিছন থেকে জয় বলল,আরে আদি তুমি এখানে…???আর এসেছো যখন চলে যাচ্ছ কেন?

আদিঃ আসলে আমি তোমার বাড়িত আমি চিনি না,এই রুমে ঢুকে মনে হল এটা কোন মেয়ের রুম তাই চলে যাচ্ছিলাম।

জয়ঃ অহ তাই বলো, এসো ভিতরে এসো এটা আমারেই রুম ভয় নেই।

আদিঃ তোমার পুরো বাড়িটা এত সুন্দর করে সাজানো কিন্তু তোমার রুম এমন কেন?না আসলে রুম টা সুন্দর কিন্তু দেখে মনেই হচ্ছে না এটা কোন ছেলের রুম।

জয়ঃ হুম ঠিকি বলেছো,পুরো বাড়িটা আমার ইচ্ছা মত সাজানো কিন্তু আমার রুমটা রুহি সাজিয়েছে।বেবিডলের পিংক কালার পছন্দ তাই এই রুমে যা আছে সবি পিংক কালার আর এই যে এত টেডি দেখছো সেগুলোও ওই নিয়ে এসেছে।মেয়ের পছন্দের রুম তো মেয়ের মতই হবে তাই না? বলে হেসে উঠল জয়।
এসব ছাড়ো এখন বল তুমি হঠাৎ এখানে….??? বাসা চিনলে কি করে?

আদিঃআমি একা নই আমরা সবাই এসেছি….

জয়ঃ আরে কি বল? প্রথমবার তোমরা আমার বাসায় এসেছো আর আমি এখানে দাঁড়িয়ে বকবক করছি…. চলো চলো ওদের কাছে যাই।বলেই জয় আদির গলা জড়িয়ে ধরল যেমন টা ২জন ভাল কোনো বন্ধু একাসাথে গেলে, গলাগলি করে যায় তেমন।
২ জনেই হাসতে হাসতে নিচে নামছিল হঠাৎ একটা গুলি ২ জনের মাথা ছুই ছুই করে মাঝখান থেকে বেড়িয়ে পিছনের দেওয়ালে লাগল….

জয় অবাক হয়ে গেল, এখানে,আমার উপড় গুলি ছুড়ার সাহস কার হবে?জয়ের মুখোমুখি হওয়ার সাহস এই এলাকায় কারও নাই তাও আবার নিজের বাড়িতে যেখানে এত এত গার্ডস আছে।

জয় একবার পিছনের দেওয়ালে গুলিটার দিকে তাকিয়ে নিচের দিকে তাকাল,

জয়ঃতাই তো বলি জয়ের উপড় গুলি ছুঁড়ার সাহস কার?

লিজাঃতুমি হঠাৎ শুট করলে কেন রুহি? একটু হলেই তো ২ জনের মধ্যে একজনের জান চলে যেত।
রুহিঃ রুহির হাত এখনো টার্গেট মিস করে না সেটাই দেখালাম। অই তো বলেছিল আমি নাকি ভিতু হয়ে গেছি।শুট করতে পাড়ি না?
আমি ভয় পাই না,আমি ওর বউ হওয়ার যোগ্য সেটার প্রমান দেওয়ার জন্য শুট করলাম

জয়ঃ তা তো বোঝলাম কিন্তু তর বলা শেষের কথাগুলি বোঝলাম না।

রুহিঃ না বোঝার মত কি বল্লাম? আমি তোকে বিয়ে করছি। আপত্তি আছে নাকি?থাকলেও কিছু করার নাই তোর আপত্তি গাহ্য হবে না।আমি সিধান্ত নিয়ে ফেলেছি,তর মতামত নেওয়ার প্রয়োজন মনে করিনি, তাই নেই নি।

রুহির কথাগুলি শোনার সাথে সাথে আদির ভিতরে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়ে গেছে।তার ভিতরে রক্তক্ষরন শুরু হয়ে গেছে যা কেউ দেখতে পাচ্ছে না শুধু আদিই অনুভব করতে পাড়ছে।

জয়ঃ জ হকুম ম্যাডাম,আপনার মুখের কথা আমার কাছে হকুম স্বরুপ আর এখন ত হুকুম করলেন তাহলে না মানার প্রশ্নই উঠে না।

রুহিঃ হইছে ঢং করতে হবে না। চল এখন, অনেক কাজ বাকি
শপিং করতে হবে সবাইকে ইনভাইট করতে হবে।বাবা মা ফুফিকে জানাতে হবে…….আরও কাজ আছে।
জয়ঃ এত তাড়া কিসের সব হবে তুই চাপ নিস না।

রুহিঃ ওমা এখন না করলে কখন করব?
কাল তো আমাদের এনগেইজমেন্ট।

জয়ঃ ওই মাথা ঠিক আছে?আর এত তাড়াহুড়ো করার কি আছে?
রুহিঃ আমি ফিরে আসার সময়েই প্লেন করে এসেছি,এখানে এসেই বিয়ে করব।
তাই তো এদের সবাইকে নিয়ে এসেছি।

এরা বাসায় কাউকে বলে আসে নি এতক্ষনে সবাই মনে হয় এদের খুঁজে খুঁজে পাগল হয়ে গেছে তাই তাড়াতাড়ি করে বিয়েটা করেই ওদের পাটিয়ে দিতে চাই।
জয়ঃ তুই যেমনটা চাইবি।

আচ্ছা চল শপিং করতে যাই,

আদি একনজরে একটা দেয়ালের দিকে তাকিয়ে আছে,
দেয়ালের সবটা জুড়ে জয় আর রুহির ছবি।
ছোট বেলা থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত সব বয়সের ছবি আছে।

জয় আদির কাছে এসে বলল অবাক হয়ে লাভ নাই ব্রো,এসবি পাগলির কাজ, না হলে ড্রয়িং রুমে কেউ পার্সনাল ছবি রাখে? তাও এতগুলি।ওর কথা হল, সবাইকে জানাতে হবে যে অই জয়ের অত্মা তাই এই ব্যবস্থা।
রুহিঃ কি বললি আমি পাগলি? দাড়া আজ তোর হচ্ছে বলে জয়ের কাছে এগিয়ে আসলো

জয় দৌড়ে গিয়ে লিজার পিছনে লুকাল
জয়ঃ কি হল আমি তোমার ফ্রেন্ড না? বাঁচাও না কেন?
লিজা অবাক হয়ে গেল।
জয়ঃ তারমানে আমাকে তোমার পছন্দ না, তাই তো বাঁচাবে না।
লিজাঃ পছন্দ কেন করব না করি করি অবশ্যই করি দাঁড়ান বলছি।
এতক্ষন জয় লিজাকে রুহির সামনে ধরে ছুটছে আর রুহি জয়কে ধরার চেস্টা করছে সামনে লিজা থাকায় মারতে পারচ্ছে না।
লিজাঃ থাক রুহি ছেড়ে দাও আমি উনার হয়ে সুপারিশ করছি।
রুহিঃ শুধু লিজার জন্য ছেড়ে দিলাম।
জয়ঃ থাংকস লিজা…..

লিজাঃ হুম বোঝছি চলো এখন সবাই যাই।

গাড়িতে বসে বসে আদি ভাবছে ওদের মধ্যে কত ভালবাসা, একে অপরের জন্য মরে যেতেও রাজি,জয়ের মত করে রুহিকে কেউ ভালবাসতে পাড়বে না।
রুহি জয়ের কাছেই ভাল থাকবে।
ওরা যদি পাড়ে ভালবাসার মানুষের জন্য নিজের জীবন দিয়ে দিতে, তাহলে আমি কেন পাড়ব না?আমার উচিত আমার ভালবাসার মানুষটাকে ভাল রাখার জন্য তাকে তার যোগ্য কারো হাতে তুলে দিতে?
আমি পারব….যত কষ্টই হোক পারতে আমাকে হবেই।
জানি না কেন আমি জয়কেউ ভালবেসে ফেলেছি ওর প্রতিটা ব্যবহার দেখে মনে হয় আমি যেন জয়কে কত বছর ধরে চিনি।
আমি রুহি বা জয় কাউকেই কষ্ট দিতে পাড়ব না।
,
,
,
,
চলবে…!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here