লেডি_ডন
পার্টঃ২১
#লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona
বিকাল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে সারাদিন সবাই ব্যাস্ত ছিল।পার্টির সব কাজ মোটামোটি শেষ। একটা রিসোর্ট এ সব আয়োজন করা হয়েছে।আদি হাসিমুখেই এই বিয়েতে অংশগ্রহন করছে।তার পারফরম্যান্স দেখে মনে হচ্ছে তার খুব কাছের বন্ধুর বিয়ে।
রুহিঃকিরে জয় কেউ এখনো আসে না কেন?
জয়ঃ চাপ নিও না ডেয়ার সবাই চলে আসবে এখুনো ৬ টা বাজে নি।
তুমি যাও রেডি হয়ে নাও আজ তোমার বিয়ে বলে কথা।
রুহিঃশুধু কি আমার নাকি তোরো তো বিয়ে যা তুই ও রেডি হয়ে নে।
জয়ঃ হুম যাচ্ছি,আদি শাওন মাহিরকেও নিয়ে যাচ্ছি।
রুহিঃ ঠিকি বলেছিস আমিও লিজা আর মনি কে নিয়ে যাই।বলে রুহি চলে গেল।
তিনজন মিলে পার্লারে চলে গেল।লিজার তেমন খারাপ লাগছে না কারন সে আদির ব্যাপারটা জানে না কিন্তু মনির মন খুব খারাপ সে এসবে মন দিতে পাড়ছে না। কিন্তু আদি রিকুয়েষ্ট করেছে যেন ভালমত পারটিসিপেট করে,সে জন্য খারাপ লাগলেও সে সবার সাথে তাল মিলাচ্ছে।
,
,
,
,
,
রুহি আজ একটা লাল লেহেংগা পড়েছে সাথে গোল্ডেন দুপাট্টা। হাত ভর্তি কাচের গোল্ডেন চুড়ি কানে বড় বড় ঝুমকা সাথে কপালে টিকলিও পড়েছে দেখতে অনেকটাই পরী পরী লাগছে রুহিকে।
লিজাও আজ বেশ সেজেছে তবে সে লেহাংগা পড়ে নি সে একটা নীল কালার বারবি ড্রেস পড়েছে। তাকে বারবির ডলের মতই লাগছে।
মনিঃ আমি এত গর্জিয়াস কিছু পড়ব না রুহি সিম্পল কিছু দাও আমার বেশি ভাল লাগছে না।
রুহিঃ তা বল্লে হয় নাকি কত লোক আসবে আজ বলে রুহি, মনিকে একটা সাদা লেহেংগা দিল।
মনি লেহেংগা পড়েছে সাথে স্মোকি আইজ,আর রেড লিপ মেকাপ।
মনিকে কোন অংশে মডেলের চেয়ে কম লাগছে না। খুব সুন্দর লাগছে ৩ জনকে।
মনি সাজতে চায়নি মনিকে রুহি অনেকটা জোর করেই সাজিয়েছে।
এদিকে আদি,সাওন, মাহির,জয় সবাই ব্লেক কোর্ট সাথে ফরমাল প্যান্ট আর ব্লেক শো পড়েছে তাদেরকেও বেশ লাগছে।
৬ টা বেজে গেছে অনেকেই পার্টিতে চলে এসেছে,রুহি,লিজা,মনি তিনজনেই পার্লার থেকে ফিড়ে এসেছে।তাদের আসতে একটু লেট হয়েছে ৭.৩০ বেজে গেছে আসলে, মেয়েদের সাজ বলে কথা।
সবাই কে অসাধারন লাগছে,গাড়ি থেকে নামতেই সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে থাকল।
ওরা আসতেই আদি জয় সাওন মাহির ওদের এগিয়ে নিয়ে গেল যেখানে পার্টির জন্য সাজানো হয়েছে সেখানে। পার্টি এখনো শুরু হয়নি সবাই কেবল আসতেছে রুহি আর জয় সবাইকে স্বাগতম জানাতে ব্যাস্ত।আদিও ব্যাস্ত, খারাপ লাগার কোন চাপ তার মধ্যে নেই।
কিন্তু পৃথিবীর সব খারাপ লাগা এসে ভীর করেছে মনি,সাওন আর মাহিরের মনে। এরা কিছুতেই হাসতে পাড়ছে না
লিজা রুহির সাথে দাঁড়িয়ে আছে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে।
মনির এসব একদম ভাল লাগছে না সে শুধু আদিকে আর রুহিকে দেখছে।আদিকে এত সাভাবিক থাকতে দেখে মনির রাগ হচ্ছে।
মনি রাগে গিয়ে রিসোর্ট এর ভিতরে এক কোণায় দাঁড়াল। রিসোর্ট পুরোটা আজ রুহি আর জয়ের বিয়ে উপলক্ষে ভাড়া করা হয়েছে।বাহিরের দিকে পার্টির জন্য সাজানো হয়েছে আর ভিতরে গেস্টদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।যেহেতু পার্টি এখুনো শুরু হয়নি তাই রিসোর্টের ভিতরে এখন কেউ নেই সবাই বাইরে।
সেই সুবাদে মনি নীরবে দাঁড়িয়ে ছিল।
কিন্তু মনির এই শান্তি বেশিক্ষন থাকল না হঠাৎ করেই কেউ মনির হাত ধরে টানতে শুরু করল।মনিকে বেশ জোরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে রিসোর্টের ভিতরে।
কোন ছেলে মনির হাত ধরে তাকে নিয়ে যাচ্ছে সেটা মনি বোঝতে পাড়ছে কিন্ত মনি তার মুখ দেখতে পাচ্ছে।
মনিঃ আরে এই আপদ টা আবার কে?এইযে শুনছেন কে আপনি?আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
ছেলেটার কোন রেসপন্স নেই সে একমনে মনির হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
মনিঃ কি করব এখন? বাইরে সবাই ব্যস্ত আশেপাশেও কাওকে দেখতে পাচ্ছিনা।
চিৎকার করব? কিন্তু তাতেও কি কোন লাভ হবে? যে জোড়ে সাউন্ড বক্স এ গান বাজচ্ছে আমার কথা কারও কানে ঢুকবে না।উফফ কেন যে একা একা এখানে এসেছিলাম।
কিন্তু আমারতো এখানে কোন শত্রু বা মিত্র নাই হয়ত অন্যকাউকে ভেবে আমায় নিয়ে যাচ্ছে।
ছেলেটিঃ মনিকে একটা রুমে নিয়ে দরজা লক করে দিল
ভয়ে মনির অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।
মনিঃ কককক…. কে আপনি?আমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন?
ছেলেটি মনির কোন কথা না শুনে মনির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেঁপে দিল মনি নিজের সব শক্তি দিয়ে ছেলেটিকে ছাড়ানোর চেস্টা করে ব্যার্থ হল।
ছেলেটি মনির ঠোঁটের সবটুকু লিপস্টিক খেয়ে নিয়ে মনিকে ছাড়াল।
মনিঃএই ছেলেকে তো আমি জীবনে কখনো দেখিনি তাহলে এমন করছে কেন নিশ্চিত খারাপ কিছু করার জন্য নিয়ে এসেছে।ভাগ মনি ভাগ এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভাগ।আজ কপালে তর দুঃখ আছে (মনে মনে)
আপনি এমন করছেন কেন?
অবশেষে ছেলেটির মুখে বুলি ফোঁটল কি করলাম নিজের ঠোঁটে লেগে থাকা মনির লিপস্টিক মুছতে মুছতে জবাব দিল, আমার জিনিস আমি খেয়েছি তোমাকে কেন কয়ফত দিব।
মনিঃ মানে কি?
ছেলেটিঃ তোমার রেড লিপস্টিকটা আমাকে পাগল করে দিচ্ছিল কখন তার স্বাধ নিব সেই চিন্তাতেই ছিলাম সুযোগ যখন পেলাম সুযোগটা কাজে লাগালাম
মনিঃ বোঝেছি….ক্রাস খেয়েছেন তাই তো? যদি আমায় দেখে ক্রাস খেয়ে থাকেন তবে বলি আমার বয়ফ্রেন্ড আ….
কথা শেষ হওয়ার আগেই ছেলেটি মনির চুলের মুটি ধরে মুখটা নিজের দিকে উঁচু করে নিয়ে বলল একদম চুপ আমি শুনতে চেয়েছি এসব? বেয়াদব মেয়ে….আর যদি বিএফ থেকেও থাকে আজ থেকে আর থাকবে না বোঝেছো?
মনিঃ নিশ্চিত ম্যান্টাল হসপিটাল থেকে পালিয়ে এসেছে মনে মনে।
আরে ভাই আমি বিবাহিত আমার একটা মেয়েও আছে।
ছেলেটিঃ ও তাই নাকি বাহ ভালই তো…. এটা কোনো সমস্যা না ডেয়ার,তোমার বরটাকে মেরে মাটি চাপা দিয়ে দিলেই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
আর বউ এর সাথে বাচ্চা ফ্রি পেতে আমার কোনো আপত্তি নেই বলেই মনিকে একটানে ঘুড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে দিল তারপর মনির হাত দুটি মনির পেটের উপড়ে রেখে মনির হাতের উপড় নিজের হাত রাখল।
পরিচিত হোক বা অপরিচিত ছেলেটির এমন স্পর্শ পেয়ে মনি কেঁপে উঠল।
ছেলেটিঃ ভয় পেও না ডেয়ার জাস্ট চিল, বলে মনির চুলে মুখ ডোবাল ছেলেটি। মনির চুলে নাক ঘষঁছে সে।
মনিঃ দেখতো ভদ্রলোকের ছেলেই মনে হয় কিন্তু স্বভাবটা এমন কেন? চিনেন না জানেন না একটা মেয়েকে একা পেয়ে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট করছেন?
ছেলেটি মনির ঘাড়ের চুলগুলি সরিয়ে জোরে একটা একটা কামড় বসিয়ে দিল।
মনিঃ আহ মাগো আমি শেষ…..
ছেলেটিঃ আগের গুলি হ্যারাসমেন্ট হলে এটা কি?
আর যে মেয়েটি কিছুদিন পর আমার বউ হবে তাকে কিস করতে,কার কাছ থেকে পারমিশন নিতে হবে শুনি?
মনিঃরাক্ষস একটা,এভাবে কেউ কামড়ায়?
এই হয়ত আমাকে চিনতে পারে নি। অন্য কারোর সাথে গুলিয়ে ফেলেছে।যেভাবেই হোক এখান থেকে বের হতে হবে।
ছেলেটিঃ কি হল ছটফট বন্ধ হয়ে গেল কেন…
মনিঃ ঘুরে ছেলেটির দিকে তাকাল
,
ছেলেটিঃ এবার বলো আমাকে কেমন লাগছে?
মনিঃকোন উল্টা পালটা কথা বলা যাবে না একটু চাপা মারি তবে যদি বের হতে দেয়।
ছেলেটিঃ কি হল বলো? ধমক দিয়ে
মনিঃ আপনি দেখতে কি অসম্ভব সুন্দর আর স্মার্ট ভাল না লেগে পাড়ে?
ছেলেটিঃ বিয়ে করতে কোন আপত্তি নেই তো।
মনিঃ না না কিসের আপত্তি আমি ত পাড়লে এক্ষুনি বিয়ে করে ফেলি।
ছেলেটিঃ তাহলে তোমার বর আর বাচ্চার কি হবে?
মনিঃ নেই তো কখনও ছিল না কোন জনমে হবেও না।
ছেলেটিঃ এই কি বলছো এগুলা হবে না কেন আমাকে বিয়ে করলে আমি তো বর এই হব নাকি?
মনিঃ বেশি চাপা মেড়ে ফেলেছি মনে হয় (মনে মনে)
হ্যা তাই তো আমাদের বিয়ে হবে তারপর আমাদের ফুটবল টিম এর সমান বাচ্চাকাচ্চা হবে অনেক মজা হবে বোঝেছেন।
কিন্তু এখন না আমাকে যেতে হবে আমরা বাচ্চার বিষয়টা নিয়ে পড়ে কথা বলব কেমন? বলেই মনি বাইরে যেতে চাইল, ছেলেটি মনির হাত খপ করে ধরে বলল এই অবস্থায় বাইরে গেলে লোকে খারাপ বলবে।এটা বলেই মনির উড়নাটা ভালমত সেট করে দিল তার পর চুল দিয়ে ঘাড়ের কামরের দাঘটাও ঢেকে দিল কিন্তু লিপস্টিক ঠিক করার আগেই মনি দৌড়ে বেরিয়ে গেল,
মনিঃ কি মছিবতে পড়েছিলাম…. আল্লাহ মালুম এখন রুহি আর লিজার থেকে এক ইঞ্চি দুরেও যাব না।
মনি এসে রুহির সাথে দাঁড়াল
লিজাঃ কই ছিলি তুই? মেকাপের এই অবস্থা কেন? লিপস্টিক এমন এবড়ো থেপড়ো হল কি করে?
মনিঃ ভাগ্য ভাল হারামিটা ঘাড়ের দাগ টা লুকিয়ে দিয়েছিল না হলে এখন সবাই কি যে ভাবত আল্লাহ জানে। লিজা তুই তাড়াতাড়ি আয় এদিকে আমাকে একটু ঠিক করে দে।
,
,
,
চলবে…!!!
(আমার দাওয়াত রক্ষা করতে কে কে এসেছেন দেখি একটু সবাই চলে আসলে জয় আর রুহির এনগেইজমেন্ট শুরু করব)