লেডি_ডন পার্টঃ২১,২২ শেষ

0
1549

লেডি_ডন
পার্টঃ২১,২২ শেষ
লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona
পার্টঃ২১

বিকাল গড়িয়ে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে সারাদিন সবাই ব্যাস্ত ছিল।পার্টির সব কাজ মোটামোটি শেষ। একটা রিসোর্ট এ সব আয়োজন করা হয়েছে।আদি হাসিমুখেই এই বিয়েতে অংশগ্রহন করছে।তার পারফরম্যান্স দেখে মনে হচ্ছে তার খুব কাছের বন্ধুর বিয়ে।

রুহিঃকিরে জয় কেউ এখনো আসে না কেন?

জয়ঃ চাপ নিও না ডেয়ার সবাই চলে আসবে এখুনো ৬ টা বাজে নি।
তুমি যাও রেডি হয়ে নাও আজ তোমার বিয়ে বলে কথা।

রুহিঃশুধু কি আমার নাকি তোরো তো বিয়ে যা তুই ও রেডি হয়ে নে।

জয়ঃ হুম যাচ্ছি,আদি শাওন মাহিরকেও নিয়ে যাচ্ছি।
রুহিঃ ঠিকি বলেছিস আমিও লিজা আর মনি কে নিয়ে যাই।বলে রুহি চলে গেল।

তিনজন মিলে পার্লারে চলে গেল।লিজার তেমন খারাপ লাগছে না কারন সে আদির ব্যাপারটা জানে না কিন্তু মনির মন খুব খারাপ সে এসবে মন দিতে পাড়ছে না। কিন্তু আদি রিকুয়েষ্ট করেছে যেন ভালমত পারটিসিপেট করে,সে জন্য খারাপ লাগলেও সে সবার সাথে তাল মিলাচ্ছে।
,
,
,
,
,
রুহি আজ একটা লাল লেহেংগা পড়েছে সাথে গোল্ডেন দুপাট্টা। হাত ভর্তি কাচের গোল্ডেন চুড়ি কানে বড় বড় ঝুমকা সাথে কপালে টিকলিও পড়েছে দেখতে অনেকটাই পরী পরী লাগছে রুহিকে।
লিজাও আজ বেশ সেজেছে তবে সে লেহাংগা পড়ে নি সে একটা নীল কালার বারবি ড্রেস পড়েছে। তাকে বারবির ডলের মতই লাগছে।

মনিঃ আমি এত গর্জিয়াস কিছু পড়ব না রুহি সিম্পল কিছু দাও আমার বেশি ভাল লাগছে না।

রুহিঃ তা বল্লে হয় নাকি কত লোক আসবে আজ বলে রুহি, মনিকে একটা সাদা লেহেংগা দিল।

মনি লেহেংগা পড়েছে সাথে স্মোকি আইজ,আর রেড লিপ মেকাপ।
মনিকে কোন অংশে মডেলের চেয়ে কম লাগছে না। খুব সুন্দর লাগছে ৩ জনকে।
মনি সাজতে চায়নি মনিকে রুহি অনেকটা জোর করেই সাজিয়েছে।

এদিকে আদি,সাওন, মাহির,জয় সবাই ব্লেক কোর্ট সাথে ফরমাল প্যান্ট আর ব্লেক শো পড়েছে তাদেরকেও বেশ লাগছে।

৬ টা বেজে গেছে অনেকেই পার্টিতে চলে এসেছে,রুহি,লিজা,মনি তিনজনেই পার্লার থেকে ফিড়ে এসেছে।তাদের আসতে একটু লেট হয়েছে ৭.৩০ বেজে গেছে আসলে, মেয়েদের সাজ বলে কথা।
সবাই কে অসাধারন লাগছে,গাড়ি থেকে নামতেই সবাই ওদের দিকে তাকিয়ে থাকল।
ওরা আসতেই আদি জয় সাওন মাহির ওদের এগিয়ে নিয়ে গেল যেখানে পার্টির জন্য সাজানো হয়েছে সেখানে। পার্টি এখনো শুরু হয়নি সবাই কেবল আসতেছে রুহি আর জয় সবাইকে স্বাগতম জানাতে ব্যাস্ত।আদিও ব্যাস্ত, খারাপ লাগার কোন চাপ তার মধ্যে নেই।
কিন্তু পৃথিবীর সব খারাপ লাগা এসে ভীর করেছে মনি,সাওন আর মাহিরের মনে। এরা কিছুতেই হাসতে পাড়ছে না
লিজা রুহির সাথে দাঁড়িয়ে আছে সবার সাথে পরিচিত হচ্ছে।

মনির এসব একদম ভাল লাগছে না সে শুধু আদিকে আর রুহিকে দেখছে।আদিকে এত সাভাবিক থাকতে দেখে মনির রাগ হচ্ছে।

মনি রাগে গিয়ে রিসোর্ট এর ভিতরে এক কোণায় দাঁড়াল। রিসোর্ট পুরোটা আজ রুহি আর জয়ের বিয়ে উপলক্ষে ভাড়া করা হয়েছে।বাহিরের দিকে পার্টির জন্য সাজানো হয়েছে আর ভিতরে গেস্টদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে।যেহেতু পার্টি এখুনো শুরু হয়নি তাই রিসোর্টের ভিতরে এখন কেউ নেই সবাই বাইরে।
সেই সুবাদে মনি নীরবে দাঁড়িয়ে ছিল।

কিন্তু মনির এই শান্তি বেশিক্ষন থাকল না হঠাৎ করেই কেউ মনির হাত ধরে টানতে শুরু করল।মনিকে বেশ জোরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে রিসোর্টের ভিতরে।
কোন ছেলে মনির হাত ধরে তাকে নিয়ে যাচ্ছে সেটা মনি বোঝতে পাড়ছে কিন্ত মনি তার মুখ দেখতে পাচ্ছে।

মনিঃ আরে এই আপদ টা আবার কে?এইযে শুনছেন কে আপনি?আমাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন?
ছেলেটার কোন রেসপন্স নেই সে একমনে মনির হাত ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

মনিঃ কি করব এখন? বাইরে সবাই ব্যস্ত আশেপাশেও কাওকে দেখতে পাচ্ছিনা।
চিৎকার করব? কিন্তু তাতেও কি কোন লাভ হবে? যে জোড়ে সাউন্ড বক্স এ গান বাজচ্ছে আমার কথা কারও কানে ঢুকবে না।উফফ কেন যে একা একা এখানে এসেছিলাম।

কিন্তু আমারতো এখানে কোন শত্রু বা মিত্র নাই হয়ত অন্যকাউকে ভেবে আমায় নিয়ে যাচ্ছে।

ছেলেটিঃ মনিকে একটা রুমে নিয়ে দরজা লক করে দিল
ভয়ে মনির অবস্থা খারাপ হয়ে গেছে।
মনিঃ কককক…. কে আপনি?আমাকে এখানে কেন নিয়ে এসেছেন?

ছেলেটি মনির কোন কথা না শুনে মনির ঠোঁটে নিজের ঠোঁট চেঁপে দিল মনি নিজের সব শক্তি দিয়ে ছেলেটিকে ছাড়ানোর চেস্টা করে ব্যার্থ হল।
ছেলেটি মনির ঠোঁটের সবটুকু লিপস্টিক খেয়ে নিয়ে মনিকে ছাড়াল।

মনিঃএই ছেলেকে তো আমি জীবনে কখনো দেখিনি তাহলে এমন করছে কেন নিশ্চিত খারাপ কিছু করার জন্য নিয়ে এসেছে।ভাগ মনি ভাগ এখান থেকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভাগ।আজ কপালে তর দুঃখ আছে (মনে মনে)
আপনি এমন করছেন কেন?

অবশেষে ছেলেটির মুখে বুলি ফোঁটল কি করলাম নিজের ঠোঁটে লেগে থাকা মনির লিপস্টিক মুছতে মুছতে জবাব দিল, আমার জিনিস আমি খেয়েছি তোমাকে কেন কয়ফত দিব।

মনিঃ মানে কি?

ছেলেটিঃ তোমার রেড লিপস্টিকটা আমাকে পাগল করে দিচ্ছিল কখন তার স্বাধ নিব সেই চিন্তাতেই ছিলাম সুযোগ যখন পেলাম সুযোগটা কাজে লাগালাম

মনিঃ বোঝেছি….ক্রাস খেয়েছেন তাই তো? যদি আমায় দেখে ক্রাস খেয়ে থাকেন তবে বলি আমার বয়ফ্রেন্ড আ….
কথা শেষ হওয়ার আগেই ছেলেটি মনির চুলের মুটি ধরে মুখটা নিজের দিকে উঁচু করে নিয়ে বলল একদম চুপ আমি শুনতে চেয়েছি এসব? বেয়াদব মেয়ে….আর যদি বিএফ থেকেও থাকে আজ থেকে আর থাকবে না বোঝেছো?

মনিঃ নিশ্চিত ম্যান্টাল হসপিটাল থেকে পালিয়ে এসেছে মনে মনে।
আরে ভাই আমি বিবাহিত আমার একটা মেয়েও আছে।
ছেলেটিঃ ও তাই নাকি বাহ ভালই তো…. এটা কোনো সমস্যা না ডেয়ার,তোমার বরটাকে মেরে মাটি চাপা দিয়ে দিলেই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

আর বউ এর সাথে বাচ্চা ফ্রি পেতে আমার কোনো আপত্তি নেই বলেই মনিকে একটানে ঘুড়িয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে দিল তারপর মনির হাত দুটি মনির পেটের উপড়ে রেখে মনির হাতের উপড় নিজের হাত রাখল।
পরিচিত হোক বা অপরিচিত ছেলেটির এমন স্পর্শ পেয়ে মনি কেঁপে উঠল।
ছেলেটিঃ ভয় পেও না ডেয়ার জাস্ট চিল, বলে মনির চুলে মুখ ডোবাল ছেলেটি। মনির চুলে নাক ঘষঁছে সে।
মনিঃ দেখতো ভদ্রলোকের ছেলেই মনে হয় কিন্তু স্বভাবটা এমন কেন? চিনেন না জানেন না একটা মেয়েকে একা পেয়ে সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট করছেন?
ছেলেটি মনির ঘাড়ের চুলগুলি সরিয়ে জোরে একটা একটা কামড় বসিয়ে দিল।

মনিঃ আহ মাগো আমি শেষ…..

ছেলেটিঃ আগের গুলি হ্যারাসমেন্ট হলে এটা কি?
আর যে মেয়েটি কিছুদিন পর আমার বউ হবে তাকে কিস করতে,কার কাছ থেকে পারমিশন নিতে হবে শুনি?

মনিঃরাক্ষস একটা,এভাবে কেউ কামড়ায়?
এই হয়ত আমাকে চিনতে পারে নি। অন্য কারোর সাথে গুলিয়ে ফেলেছে।যেভাবেই হোক এখান থেকে বের হতে হবে।
ছেলেটিঃ কি হল ছটফট বন্ধ হয়ে গেল কেন…

মনিঃ ঘুরে ছেলেটির দিকে তাকাল
,
ছেলেটিঃ এবার বলো আমাকে কেমন লাগছে?

মনিঃকোন উল্টা পালটা কথা বলা যাবে না একটু চাপা মারি তবে যদি বের হতে দেয়।

ছেলেটিঃ কি হল বলো? ধমক দিয়ে

মনিঃ আপনি দেখতে কি অসম্ভব সুন্দর আর স্মার্ট ভাল না লেগে পাড়ে?

ছেলেটিঃ বিয়ে করতে কোন আপত্তি নেই তো।

মনিঃ না না কিসের আপত্তি আমি ত পাড়লে এক্ষুনি বিয়ে করে ফেলি।

ছেলেটিঃ তাহলে তোমার বর আর বাচ্চার কি হবে?

মনিঃ নেই তো কখনও ছিল না কোন জনমে হবেও না।
ছেলেটিঃ এই কি বলছো এগুলা হবে না কেন আমাকে বিয়ে করলে আমি তো বর এই হব নাকি?

মনিঃ বেশি চাপা মেড়ে ফেলেছি মনে হয় (মনে মনে)
হ্যা তাই তো আমাদের বিয়ে হবে তারপর আমাদের ফুটবল টিম এর সমান বাচ্চাকাচ্চা হবে অনেক মজা হবে বোঝেছেন।
কিন্তু এখন না আমাকে যেতে হবে আমরা বাচ্চার বিষয়টা নিয়ে পড়ে কথা বলব কেমন? বলেই মনি বাইরে যেতে চাইল, ছেলেটি মনির হাত খপ করে ধরে বলল এই অবস্থায় বাইরে গেলে লোকে খারাপ বলবে।এটা বলেই মনির উড়নাটা ভালমত সেট করে দিল তার পর চুল দিয়ে ঘাড়ের কামরের দাঘটাও ঢেকে দিল কিন্তু লিপস্টিক ঠিক করার আগেই মনি দৌড়ে বেরিয়ে গেল,

মনিঃ কি মছিবতে পড়েছিলাম…. আল্লাহ মালুম এখন রুহি আর লিজার থেকে এক ইঞ্চি দুরেও যাব না।
মনি এসে রুহির সাথে দাঁড়াল
লিজাঃ কই ছিলি তুই? মেকাপের এই অবস্থা কেন? লিপস্টিক এমন এবড়ো থেপড়ো হল কি করে?
মনিঃ ভাগ্য ভাল হারামিটা ঘাড়ের দাগ টা লুকিয়ে দিয়েছিল না হলে এখন সবাই কি যে ভাবত আল্লাহ জানে। লিজা তুই তাড়াতাড়ি আয় এদিকে আমাকে একটু ঠিক করে দে।
,
,
,
চলবে…!!!

#লেডি_ডন
#অন্তিম_পর্ব

কারন শেষ পর্বটা আমি আমার মত করে নয় বরং তোমারা যেভাবে বলছো সেভাবেই লেখেছি।

মনি, লিজা কে একটু দূরে নিয়ে গিয়ে সব খুলে বলল।
লিজাঃ কি বলিস এসব? ছেলেটা কে ছিল?

মনিঃ আমি কিভাবে বলব কে ছিল,আমি চিনি নাকি?
লিজাঃ আচ্ছা আমি আদিকে সব বলছি দাঁড়া.

মনিঃ পাগল হলি নাকি এসব কাওকে বলা যায় নাকি কাওকে বলতে হবে না তুই এক কাজ কর আমাকে নতুন কোনো ড্রেস দে,
অই ছেলে মনে হয় আমাকে অন্য কেউ ভেবেছে যে হয়ত আমার মত ড্রেস পড়েছিল।

লিজাঃ ঠিকি বলেছিস চল ড্রেস চেঞ্জ করবি।

মনিঃ আমার ভয় লাগছে আবার যদি কিছু হয়

লিজাঃ আরে তুই একা যাচ্ছিস নাকি আমিও তো যাচ্ছি।

মনিঃ হুম চল।

লিজা মনিকে একটা ব্লেক কালার শাড়ি পড়িয়ে দিল আর এবার পিংক কালার লিপস্টিক পড়িয়ে দিল মনির শাড়িটা খুব সুন্দর কিন্তু পাতলা।

লিজা আর মনি ফিরে আসছিল কিছুটা আসার পর লিজা বলল তুই একটু দাঁড়া মনি আমি একটু ওয়াশরুম থেকে আসছি।এই যাব আর আসব।

মনির ভয় অনেকটা কেটে গেছে তাই বলল হ্যা যা এখন আর কোন সমস্যা নেই অই ছেলে আর আমাকে অন্য কেউ ভাব্বে না।ড্রেস তো বদলে ফেলেছি।
লিজা চলে গেল,
মনি গুন গুন করতে শাড়ি ঠিক করছিল কিন্তু হঠাৎ আবারো কেউ তার কোমড় জড়িয়ে ধরল।
মনি আঁতকে উঠল তার দিকে তাকিয়ে মনির চোখ কপালে উঠে গেল আপনি আবার?

ছেলেটিঃ তুমি যদি আমার জন্য নতুন করে খাবার সাজাও আমি কি না খেয়ে পাড়ি? বলেই রুহির পিংক কালার লিপস্টিক সম্পুর্ন টা হজম করে নিল।
যতবার লিপস্টিক পড়বা ততবার একই রকম হবে মনে থাকে যেন।
মনিঃ আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে আপনি যাকে ভাবছেন আমি হয়ত সে না।

ছেলেটঃ আমাকে দেখে পাগল মনে হচ্ছে নাকি?

মনিঃ তার চেয়ও বেশি কিছু মনে হচ্ছে মনে মনে

ছেলেটি মনির কোমড়ের খালি জায়গায় স্লাইড করতে করতে বলল কি পড়েছো এটা সব তো দেখাই যাচ্ছে।এক্ষুনি চেঞ্জ করবা না হলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে না বলে উল্টো দিকে হাঁটা দিল।
মনি অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে
পিছন থেকে লিজা এসে বলল নে চল।

মনি ঘুরে লিজার দিকে তাকাল

লিজাঃ কিরে কি হয়েছে

মনিঃ দেখতে পাচ্ছিস না কি হয়েছে?
অই ছেলটা অন্য কাউকে না বরং জেনে বোঝে আমাকে ফলো করছে।হুকুম করে গেল ড্রেস চেঞ্জ করতে।

লিজাঃ কি dangers ব্যাপার?চল ভাগি।

মনিঃ হুম কোনরকম রুহির বিয়ে হয়ে গেলেই এখান থেকে চিরবিদায় নিব।
কথায় কথায় ড্রেস চেঞ্জ করার কথা মাথা থেকে বেড়িয়ে গেছে এই ড্রেসেই মনি নিচে নেমে আসল।

নেমে এসে দেখে রুহি আর জয় রিং চেঞ্জ করার জন্য রেডি।
ওরা আসতেই জয় বলল তোমাদের জন্যই ওয়েট করছিলাম।
জয়ঃ রুহি সবাই তো চলে এসেছে চল প্রপোজ টা করে ফেলি।
রুহিঃ আমার একটু নার্ভাস লাগছে তুই একটু দাঁড়া আমি জাস্ট একবার প্রেকটিস করে নেই।

জয়ঃ লাগবে না আগে আমি করছি তুই দেখে নে তারপর তুই কর।
রুহিঃ কেন আমি তোর চেয়ে কম কিসে চল একসাথেই করব। এটা বলেই
২ জনেই হাঁটু ঘেরে বসে রিং এগিয়ে দিয়ে একসাথে বলে উঠল,
will you Marry me….????

সবাই হাত তালি দিতে লাগল।
আদি এতক্ষন ঠিক থাকলেও এবার আর সহ্য হল আদি চোখের পানি ছেড়ে দিল…!!!
সাথে মাহিরো কাঁদছে কারন মাহির বরাবরই ইমোশনাল
,
,
আদি শুধু শুধু কাঁদছে না তার যথেস্ট কারন আছে,কারন রুহি আর জয় ২জন মুখোমুখি হাটু ঘেরে বসে নি পাশাপাশি বসেছে।আর রুহির হাতের রিংটা আদির দিকে জয়ের রিংটা লিজার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
রুহি বাম হাতে আদির ডান হাত টা নিজের দিকে টেনে নিয়ে রিং পড়িয়ে দিল।

জয়ঃ এই মেয়ে হাত বাড়াও তাড়াতাড়ি লিজাকে উদ্দেশ্য করে বলল।
লিজা কিছু বোঝার অবস্থায় নেই সে স্টেচো হয়ে গেছে।
মনি লিজার হাতটা বাড়িয়ে দিল জয় রিংটা পড়িয়ে দিল।

রুহি উঠে দাঁড়িয়ে বলল,
কি….মিঃ আদিত্য চৌধুরী অরফে হাদারাম,লেডি ডনের শাস্তি কেমন লাগল?তুমি এত বোকা কি করে হতে পাড়লে বলো ত?
তোমার মনে কি একবারো প্রশ্ন জাগলো না আমার এত টাকা থাকতে আমি কেন আমার বাবা মানে নুরার বাবার চিকিৎসার টাকা তোমার কাছ থেকে নিলাম যেখানে জয়কে একবার বল্লেই ও টাকার বন্যা বয়িয়ে দিত?
২য় কথা আমি কেনইবা তোমার কাছে ২ মাস থাকলাম কেন ফিরে আসলাম না?
আদির কাছে গিয়ে আদির ২ হাত জড়িয়ে ধরে রুহি বলল,কেন আসিনি জানো,কারন আমি তোমাকে সেদিনেই ভালবেসে ফেলেছিলাম যেদিন এত অপমানের পড়েও তুমি সারারাত ধরে আমার বাসার সামনে দাঁড়িয়ে ছিলে।
আর তোমার বাসায় যেতে রাজি হয়েছিলাম কারন সেদিন হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আমি শুনেছিলাম তুমি আমার সাথে প্রেম করতে চাও না।বরং বিয়ে করতে চাও।
এখন বলতে পারো আমার উপড় অত্যাচার করার পড়েও আমি কেন প্রতিবাদ করি নি কারন আমি দেখতে চেয়েছিলাম মনি কি আসলেই তোমার জিএফ কিনা?
এখন এটা জিজ্ঞাস করো আমি তোমাকে প্রথমেই তো বলতে পাড়তাম তুমাকে বিয়ে করছি কেন বল্লাম না?
কারন তুমি আমার উপড় একদিন অত্যাচার করেছিলে আমিও তোমার উপর একদিন প্রতিশোধ নিলাম। যখন থেকে শুনেছো আমার বিয়ে তখন থেকে তুমি কেমন ছিলে আমি বেশ বোঝতে পাড়েছিলাম।
সব অত্যাচার একরকম হয় না।তুমি আমার উপড় শারিরীক অত্যাচার করেছিলে আর আমি মানুষিক করলাম।
আমি জানি তোমার সেই অত্যাচার আমার এই শাস্তির কাছে কিছুই না।লেডি ডনের শাস্তি তো একটু অন্যরকম হবেই।

আর বাকি থাকল জয় আর আমার ব্যাপার জয় আর আমার মাঝে যদি তেমন কোনো সম্পর্ক থাকত আমাদের বিয়ে অনেক আগেই হয়ে যেত।

জয় আমাকে কখনো সেই দৃষ্টিতে দেখে নি। আমি আর জয় ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছি ওর প্রতি আমার টান আছে,আছে ভালবাসাও কিন্তু….

তখনি জয় এসে আদির ঘাড়ে হাত রেখে বলল রুহি আমার ছোট বোন,আমার সবচেয়ে প্রিয় বন্ধু, আমার জীবনদানকারি ওকে আমি কখনো জিএফ বা বউ এর চোখে দেখতেই পাড়ব না।
আমি রুহিকে ভালবাসি কিন্তু সেটা প্রেমিকের ভালবাসা না। এই ভালবাসাটা এমন যে রুহি যেখানেই থাকুক যেভাবেই থাকুক ওর জন্য আমার ভালবাসা সবসময় একই রকম থাকবে।

রুহি তার বাবা মার কাছে আছে নাকি তোমার সাথে আছে সেটা এই ভালবাসায় মেটার করে না

সব টান সব ভালবাসা বেড শেয়ারের জন্য হয় না আদি।আজ রুহির সাথে আমার বিয়ে হয়নি বলে কিংবা ও অন্য কারও সাথে বেড শেয়ার করছে বলে আমি ওকে সহ্য করতে পাড়ব না এমন ভালবাসা আমাদের মধ্যে কখনই ছিল না কিছু ভালবাসা নির্স্বাথও হয়।

আমি রুহিকে যতটা ভালবাসি তোমাকে আজ থেকে ততটাই বাসব।

জয় লিজাকে উদ্দেশ্য করে বলল এই যে শুনছেন আমি এদের ২ জনকে সারাজীবন মাথায় করে রাখব কিন্তু আপনাকে এখানে রাখব। বুকের বাম পাশে ইশারা করে দেখাল।
আপনি যদি রাজি না থাকেন এই বিয়েতে তবুও আমার কিছু করার নেই কারন আমি তো তোমাকে ভালবেসে ফেলেছি।আমার মার ও তোমাকে বেশ পছন্দ

লিজা এখনো স্টেচো অবস্থাতেই আছে।

আদি জয়কে জড়িয়ে ধরল কিছু বলল না
তারপর গলার চেইনটা খুলে রুহিকে পড়িয়ে দিয়ে বলল আজ থেকে তোমাকে আমার বউ হিসেবে স্বীকার করে নিলাম।

রুহি আদিকে জড়িয়ে ধরল।
সব ভালভাবেই মিটে যাচ্ছিল কিন্তু হঠাৎ সেখানে বেহানের এন্ট্রি হল যাকে রুহি কাল মেরে এসেছিল।
রুহি বলল আমার গান দে জয়।

জয়ঃ আরে বিয়ে করতে এসেছি মারামারি করতে না গান কই পাব?

রুহিঃ গার্ডস ডাক তাড়াতাড়ি।

জয়ঃ থাম রুহি বেহান মনে হয় না মারামারি করতে এসেছে ওর হাতে কোন গান নেই বরং একটা ফুল আছে সাথে কোন গার্ডস ও দেখতে পাচ্ছিনা ওকে আসতে দে।

বেহান এসে রুহিকে বলল কিরে টুনির মা কেমন আছিস?
রুহিঃ বেহান তুই আমাকে এই নামে…….

বেহানঃ তুই তো ভুলেই গেছিস কোন এক কালে আমিও তোর বন্ধু ছিলাম।দেখ রুহি ঝামেলা সবার মাঝেই হয় কিন্তু আমি এসব ভুলে গেছি যখন তুই হারিয়ে গেলি তখনি ভুলে গেছি।
একসময় আমরা ভাল বন্ধু ছিলাম আস্তে আস্তে শত্রু হয়ে গেলাম কিন্তু তোর আর জয়ের জন্য আমার ঠিকি কস্ট হত বিশ্বাস কর।

তুই যেদিন ফিরলি সেদিনেই তোর সাথে দেখা করতে আসছিলাম কিন্তু মাঝখানে ঘটনা ঘটে গেল তাই আর কথা বলা হল না আচ্ছা সব বলছি আগে একটা ছোট কাজ সেরে নেই

বেহান হাঁটু ঘেরে বসে একটা ফুল বাড়িয়ে দিল মনির দিকে will you marry me?

মনিঃ লিজা আমাকে ধর আমি এখনি হার্ট ফেইল করব মনে হচ্ছে। এটাই সেই আপদ যার কথা আমি তোকে বলেছিলাম।

বেহানঃ ফুলটুসি এখনি হইও না খেলা ত আবি বাকি হে।
জয়ঃ বেহান কি করছিস….

বেহানঃ আরে শোন না এসেছিলাম রুহির সাথে দেখা করতে কিন্তু মাঝখানে ফুলটুসির উপড় ক্রাস খাইলাম তাই দেখা না করে ফুলটুসিকে ফলো করতে শুরু করলাম। আর রুহি ভাবল আমি কোন ক্ষতির জন্য ফলো করছি তাই রাতে বাসায় এসে মারামারি শুরু করল। আমিও কিছু বল্লাম না চুপচাপ মার খেলাম হাজার হোক হবু বউয়ের বন্ধবি ত তাই আর কি।
বিশ্বাস কর এমন ক্রাস খাইছিলাম যে রুহির মার আমার গায়েই লাগে নি শুধু মনির মুখটাই ভাসছিল চোখে।
জয়ঃ বাহ কলেজের সব মেয়ের ক্রাস আজ আমারেই শালির উপড়ে ক্রাস খেল।

বেহানঃ ক্রাস বলিস না দোস্ত ভালবেসে ফেলছি রে তাই বিয়ে করব ঠিক করে ফেলছি।কোন প্রেম টেম না।
মনিঃ কিসের বিয়ে আজব তো আমার এসব মাফিয়ে একদম পছন্দ না।

লিজা এগিয়ে এসে ভয়ে ভয়ে বলল আ আ আ আমারো প প পছন্দ না।

জয়ঃ তাই নাকি? কিন্তু তোমার মতামত কে জানতে চায়ছে বলতো?জয় বেঁচে থাকতে তোমাকে এখান থেকে পৃথিবীর কোন শক্তি নিয়ে যেতে পাড়বে না বোঝেছো?

রুহিঃ এই তোরা ভুলে যাচ্চিস আমি ওদের বন্ধু আমি বেঁচে থাকতে তোরা ওদের সাথে জোর করতে পারবি না।

জয়ঃ ছি রুহি তুই এটা ভাবতে পারলি আমি ওর উপড় জোর করব সেদিন তো জিজ্ঞাস করলাম আমাকে পছন্দ কিনা তখন তো একবার না ৩ বার বললা পছন্দ করে তোর সামনেই তো বলল এখন কথা ঘুরালে হবে নাকি?

রুহিঃ তাই তো আচ্ছা তোর টা বাদ বেহান জোর করবি না ওর তোকে পছন্দ না।

বেহানঃ আরে রুহি কথা তো ফুলটুসিও ঘুরাচ্ছে। একটু আগেই কয়টা বাচ্চা নিবে সে বিষয়ে আলোচনা করছিল এখন বলছে বিয়ে করবে না। বলেই বেহান একটা ফোন থেকে একটা ভয়েজ শুনিয়ে দিল। যেখানে মনি স্পস্ট ভাষায় বলছে বিয়ে করবে আর ফুটবলের টেমের সমান বাচ্চা নিবে।

রুহিঃ তাহলে আমার কিছু বলার নাই।এরা কখন আসলো আর কখন যে প্রেম করল খোদা জানে।

আচ্ছা রুহি তুই চাপ নিস না এদের আমরা সাইজ করে নিব। সিজন ২ এ।
বলে বেহান একটানে মনিকে কাছে টেনে নিল আর জয়ও লিজাকে।

বেহানঃ মনির কানে কানে বলল বলছিলাম না ড্রেস চেঞ্জ করতে, করলে না কেন? এর শাস্তিটা তুলা রইল শোধে আসলে শোধ করে নিব।

জয়ঃ লিজার কাছে ফিসফিস করে বলল তুমি কি চাও এখনি তোমার ভয় ভেংগে দেই? যদি চাও তাহলে এখুনি বেডরুমে নিয়ে যেতে পাড়ি আর যদি না চাও সাভাবিক হয়ে যাও।

আদি আর রুহি তো এসব দেখে খুব খুশি।
অবশেষে সবাই মিলে মাহির আর সাওনের দিকে তাকাল।
মাহিরঃ না ভাই না আমার দিকে তোরা তাকাস না আমার ১০ টা না ৫ টা না একটাই জিএফ আমি এখানে বিয়ে করলে বেচারি মারা যাবে।

সাওনঃ আমার টা আমাকে মেরে ফেলবে।আমি ওকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পাড়ব না মাফ কর আমাকে।

সবাই এদের কথা শুনে হেসে দিল।

সমাপ্ত

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here