লেডি_ডন
সিজন_২
পার্টঃ১১,১২
লেখিকাঃ Snigda Hossain Mona
পার্টঃ১১
রুহিঃজয়, তুই এখন আমার পিছন পিছন আসলে আমি নিজের কি অবস্থা করব তুই সেটা ভাল করেই জানিস, তাই এটাই ভাল হবে তুই এখানেই থাক। রাগি লুক নিয়ে বলল।
জয় মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে গেল।
এদিকে লিজার মন আনন্দে ভরে গেল।
লিজাঃ বাহ রুহি তুমি নিজেই নিজের উইক পয়েন্ট বলে দিলে তারমানে জয় তোমাকে কষ্ট দিলে তুমি নিজের ক্ষতি করবে।তাহলে তো আগুনে ঘী ঢালতেই হয়।তোমাকে এখান থেকে বের করতে আমার প্রধান হাতিয়ার হবে জয়।
আমায় আর আটকায় কে।এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা
,
,
,
বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করে, জয় রান্না ঘরে গেল।
লিজাঃ তুমি রান্না ঘরে কি করছো….???
জয়ঃ রান্না করব তাই এসেছি…
লিজাঃ তোমার রান্না করতে হবে কেন খালা তো আছে।
জয়ঃ না খালার রান্নায় হবে না।রুহি এখন কিছু খাবে না কিন্তু যদি আমি খাবার বানাই, আমার কষ্ট হয়েছে ভেবে হয়ত খেয়ে নিবে।
লিজাঃ যতসব আদ্যিকেতা (মনে মনে)
জয় ঝটপট ২ টা টোস্ট সাথে ডিমের অমলেট আর ১ গ্লাস দুধ নিয়ে রুহির ঘরে গেল।
রুহিঃ এই এই এই তুই পারমিশন ছাড়া ঘরে ঢুকলি কেন?
জয়ঃ তোর কাছে এসেছি নাকি?
রুহিঃ এই ঘরে আমি ছাড়া আছেই বা কে?
জয়ঃ আছে আমার আমানত আছে।
রুহিঃ মানে কি জয়?আচ্ছা নিচে শুনে আসলাম তুই বিয়ে করেছিস ওই মেয়েটা তোর বউ আর এখানে এসে বলছিস তোর আমানত….
এই বাচ্চাটা আসলে কার জয়?
আমার হয়ত কিছু কিছু বিষয় মনে নেই তাই বলে আমি পাগল নই।
বাচ্চাটা কার জয় জবাব দে….প্রথম ভেবেছিলাম বাচ্চাটা হয়ত তোর আর আমার যেহেতু তর আমানত বলেছিস। কিন্তু পড়ে ভেবে দেখলাম এটা অসম্ভব আর আমার বিয়ে হয়েছে বলে তো আমার মনে পড়ছে না তাহলে কি আমার সাথে খারাপ কিছু ঘটেছিল?
জয়ঃ খারাপ কিছু ঘটলে কি আমার আমানত বলতাম? সময় হলে সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবি এখন শুধু শুধু মাথায় এত চাপ দিস না কেমন?আর শোন এই বাচ্চাটা জয়ের কাছে রুহির চেয়েও বেশি প্রিয় বোঝেছিস?
রুহিঃ না বোঝিনি বোঝিয়ে বল….
জয়ঃ পারব না। খালি পেচাঁস কেন? পড়ে সব বলব বলছি না?
রুহিঃ আচ্ছা।
জয়ঃ এখন বল রাগ কমেছে?
রুহিঃ আমি রাগ করি নি,বাচ্চাটার বিষয়ে টেনশান হচ্ছিল তাই হয়ত একটু বেশি রিয়েক্ট করে ফেলেছি।
জয়ঃ হুম আমি জানতাম আমার বিয়ের ব্যাপারে তুই রাগ করতেই পারিস না।
রুহিঃ দূর আমি কি তর গার্লফ্রেন্ড নাকি যে রাগ করব?বিয়ের ব্যাপারে আমার কোন রিয়েকশান নেই, ছবির ব্যাপারে খারাপ লাগছিল পড়ে যখন শুনলাম বিয়ে করেছিস তখন রাগ কমে গেল।এটাতো ঠিকি কোন মেয়েই চাইবে না তার জামাইয়ের সাথে অন্যমেয়ের ছবি থাকুক তাও সারা দেয়াল জুড়ে।
জয়ঃ আমি জানি রুহি কেউ আমায় না বোঝলেও তুই বোঝবি।
রুহিঃতুই এখন আর রুহির না বলা কথা গুলি বোঝিস না তাই না রে জয়? আমি কতটা কষ্ট পেয়েছি তুই বোঝতে পাড়ছিস না মুখের কথাগুলিই বিশ্বাস করছিস(মনে মন)
জয়ঃ এখন আয় খেয়ে নে প্লিজ…
রুহিঃ খেতে ইচ্ছা করছেনা…
জয়ঃআমি বানিয়েছি রুহি
রুহিঃ দিলি তো দুর্বল করে?
জয়ঃ সত্যি আমি বানিয়েছি।
রুহিঃ আচ্ছা রেখে যা আমি খেয়ে নিব।
জয়ঃ আমি খাইয়ে দেই?
রুহিঃ তোর বউ দেখলে খারাপ ভাব্বে
জয়ঃ খারাপ ভাব্বে কেন আমরা কি প্রেম করছি নাকি? আমি তো আমার আমানতের খেয়াল রাখছি।
রুহিঃ লাগবে না আমি নিজেই খাব।
জয়ঃ আমার সামনেই খা তাহলে…
রুহিঃ আহ জয় কেন ঝামেলা করছিস?আমি কি বাচ্চা নাকি?ক্ষুদা লাগলে নিজেই খাব, ভাল লাগছে না এখন তুই যা।
জয়ঃ হুম বোঝেছি,
ঠিক আছে চলে যাচ্ছি।খালা না হয় তোকে পড়ে খাবার বানিয়ে দিবে আমি এগুলো নিয়ে যাচ্ছি।
রুহির বোঝতে বাকি রইল না জয় কষ্ট পেয়েছে,
রুহিঃ দাড়াঁ হারামি,আর গাল ফুলাতে হবে না।জয়ের কাছে গিয়ে মুখ বাড়িয়ে দিয়ে আদুরি গলায় রুহি বলল দে খাইয়ে দে।
জয়ঃ আমার লক্ষিটা….হা কর।
,
,
,
জয় গল্প করতে করতে রুহিকে খায়িয়ে দিল,রুহি নিজেও খেল মাঝে মাঝে জয়কেও খাইয়ে দিল।
জয়ঃ নে এবার দুধটা খেয়ে নে।
রুহিঃই ই ই ছি….এটা সরা জয় আমি এটা খাব না।
জয়ঃ এতক্ষন তো নিজের জন্য খেলি এবার আমার আমানতের জন্যেও একটু খা।বলেই জয় রুহির মুখে দুধ তুলে দিল।
রুহি আর কিছু বলার সু্যোগ পেল না।দুধ মুখে দিতেই রুহি গা গুলিয়ে উঠল আর সাথে সাথেই
বমি করে জয় কে মাখিয়ে দিল।
জয়ঃঅস্থির হয়ে বলল, রুহি কষ্ট হচ্ছে…???
রুহিঃ পেটে চেপে ধরে অভিমানি কন্ঠে বলল হুম।
জয়ঃ এই সময় এমন একটু হয়। একটু সহ্য কর প্লিজ।চল চোখে মুখে পানি দিয়ে দেই ভাল লাগবে।
রুহিঃ যেতে পাড়ছি না কষ্ট হচ্ছে…
জয় রুহিকে কোলে নিয়ে ওয়াশরুমে গিয়ে চোখে মুখে পানি দিয়ে দিল আর বলল যা এখন একটু রেস্ট নে তাহলেই ঠিক হয়ে যাবে।
রুহি আস্তে আস্তে চলে গেল রুহির মুখ দেখে বোঝা যাচ্ছে সে ঘাবড়ে গেছে।
জয়ঃরুহি নিজেই তো এখনো বাচ্চা এর আবার বাচ্চা কিভাবে হবে আল্লাহ জানে।
জয় রুহির রুম থেকে বের হতেই লিজা জয়ের অবস্থা দেখে বলল ছি কি অবস্থা তোমার গা ঘিন ঘিন করছে না?
জয় হেসে উত্তর দিল না করছে না মন থেকে ভালবাসলে তার কোন কিছুকেই কখনো ঘৃনা করা যায় না।
লিজাঃএই ভালবাসা কতক্ষন ধরে রাখতে পাড়ো সেটাই দেখব। (মনে মনে)
জয় ফ্রেশ হয়ে নিচে বসে মোবাইল টিপছিল, হঠাৎ রুহি এসে বলল জয় কার্ড দে শপিং করতে যাব আর শোন মাকে ফোন করে বলিস তো খাবার পাঠাতে মার হাতে অনেক দিন খাইনি।
জয় অবাক হয়ে ভাবতে লাগল মামা মামি মারা গেছে রুহি সেটাও ভুলে গেছে?(মনে মনে)
রুহিঃ কিরে মুখটা পেঁচার মত করে আছিস কেন কার্ড দে।
জয়ঃ না কিছুনা আচ্চা শুন আমিও যাই তোর সাথে।
রুহিঃ না তোর বউ এর গিফট কিনতে যাচ্ছি তুই দেখে নিলে মজা শেষ হয়ে যাবে।
রুহি বেরিয়ে গেল,কিন্তু বাড়ির সামনে রাস্তায় এসে একবার ডানে আবার বাম দিকে থাকাচ্ছে।
পিছন থেকে জয় এসে বলল থেমে গেলেন কেন ম্যাম?
রুহিঃকোন দিকে যাব সেটাই বোঝতে পাড়ছি না বাড়িটার কথা ত মাথায় আছে কিন্তু শপিংমল টা জানি কোন দিকে?
জয়ঃ হুম বোঝেছি,বাইকের পিছনে উঠ শপিং মলে নামিয়ে দিয়ে আসি প্রমিজ নামিয়ে দিয়েই চলে আসব।
রুহিঃ ঠিক তো?
জয়ঃ পাক্কা….
রুহি রাজের পিছনে বসে রাজকে জড়িয়ে ধরে বসল।জয় রুহিকে মলে নামিয়ে দিয়ে বলল ফিরতে পাড়বি তো?
রুহিঃ হুম পাড়ব তুই যা।
রুহি মলে গিয়ে একটা ডায়মন্ডের নেকলেস নিল কিন্তু যখন পে করতে যাবে কার্ডের পিন ভুলে গেছে।
রুহিঃ আরে রুহি কি ছিল পিন মনে কর ফাউল।
কিন্তু কিছুতেই মনে করতে পাড়ছে না বোকার মত দাঁড়িয়ে আছে।
পিছন থেকে আবার জয় এসে বলল আবার কি হল ম্যাম?
রুহিঃ আরে দেখ না পিন টাই তো ভুলে
গেছি।
জয়ঃ জানতাম ঝামেলা লাগাবেন তাই যেতে চেয়েও পাড়লাম না।
আপনি বডিগার্ড ছাড়া চলতে পাড়েন নাকি?
রুহিঃ হারামি তুই আমাকে ফলো করছিস।
জয় তাত একটু করছিলামি কিন্তু এখন এসব ছাড়, চল বাড়ি যাই বলে জয় পে করে দিল।
রুহি ভ্রুকুচকে জয়ের দিকে তাকাল।
জয়ঃআরে কি কিনেছিস সত্যি দেখি নি রাগ করছিস কেন?
রুহি এসে জয়ের হাত ধরে বলল এটা কি?
জয়ঃ ব্রেসলেট।
রুহি সেটা তো আমিও দেখছি কিন্তু এটা তো আমি লিজা কে দিয়েদিছিলাম তুই পড়েছিস কেন?
জয়ঃএটা আমি ছাড়া অন্য কারোর পড়ার অধিকার নাই তাই নিয়ে নিছি।বকবক না করে বাড়ি চল।
রুহিঃ হারামি, চল
রুহি বাড়ি এসে বলল জয় তুই উপড়ে আসিস না আমি লিজাকে সারপ্রাইজ দিব।
জয়ঃ যা আপনার ইচ্ছা।
রুহি উপড়ে চলে গেল আর জয় রান্না ঘরে।কারন রুহি মায়ের হাতের রান্না খেতে চেয়েছে তাই জয় নিজে রান্না করবে বলে রান্না ঘরে গেল।
রুহি উপড়ে গিয়ে লিজাকে নেকলেসটা দিয়ে বলল দেখো তো কেমন হয়েছে?
লিজা নেকলেস্টা টা হাতে নিয়ে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বলল আমার বর এর পকেট কেটেই তো কিনেছো তাইলে এত আদ্যিকেতা দেখাচ্ছ কেন?
রুহিঃ আরে লিজা কি বলছো এসব? জয় আর আমার টাকা আলাদা নাকি?
লিজাঃ আগে আলাদা ছিল না কিন্তু এখন আলাদা।তুমি কি বোঝতে পাড়ছো না তুমি আমাদের ২ জনের মধ্যে একটা ঝামেলা হয়ে ঢুকে পড়েছো
রুহির প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থা হয়ে গেছে,
লিজাঃ শোনো,জয় এখন তোমার জন্য যা করছে সবটাই দয়া আর করুনা ভালবাসা না।
রুহিঃ বাজি রেখে বলতে পাড়ি জয় আমাকে দয়া করছে না।ও আমাকে ভালবাসে বলেই আমার জন্য সবাই করি।
লিজাঃ তাহলে হয়ে যাক বাজি জয় যদি তোমার কথায় চলে তাহলে তুমি যা বলবে আমি তাই মেনে নিব।আর যদি আমার কথামত চলে তাহলে তুমি এ বাড়ি ছেড়ে জয়কে ছেড়ে সারাজীবনের জন্য চলে যাবে রাজি?
রুহিঃ ঠিক আছে রাজি…..
লিজাঃ কিন্তু এই বাজির ব্যাপারে জয় কে কিছু জানানো যাবে না।
রুহিঃ আচ্ছা জানাব না কিন্তু শুধু শুধুই বাজি ধরেছো জয়ের কাছে সারা পৃথবী এক দিকে আর আমি অন্যদিকে হলেও জয় আমাকেই বেঁচে নিবে।
লিজাঃ আগের দিন ভুলে যাও রুহি, জয় এখন শুধু আমাকে ভালবাসে….
আর তোমাকে তুমার বাচ্চার জন্য করুনা করছে।
রুহিঃ অনেক বলেছো আর না।দেখাই যাক কি হয়।
,
,
,
চলবে…!!!
#লেডি_ডন
#পার্টঃ১২
#সিজন_২
Snigda Hossain Mona
রুহি লিজার ঘর বেরিয়ে গেল,
কিছুক্ষন পর জয় রুমে আসলো।এসে জয় কিছুটা অবাক হল।কারন লিজা বসে বসে কাঁদছে।
জয়ঃ লিজা তুমি কাঁদছো কেন?
লিজাঃ কই না তো…. চোখে কিছু মনে হয় পড়েছে।
জয়ঃ স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি কাঁদছো কি হয়েছে আমাকে বলো।
লিজা এবার জোরে জোরে কঁদে দিল।
জয়ঃ আরে লিজা হয়েছেটা কি? শরীর খারাপ লাগছে?ডাক্তার ডাকব?
লিজাঃ রুহি এসেছিল একটু আগে।
জয়ঃ হ্যা রুহি তোমার কাছে আসবে আমি জানতাম ও আমাকে বলল নিচে থাকতে উপড়ে যেন না আসি তোমায় সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিল।তাই আমি আর আসিনি।
লিজাঃ হুম অনেক বড় সারপ্রাইজ দিয়ে গেল।
জয়ঃ তাই….??? দেখাও দেখি কি দিল? অবশ্য রুহির পছন্দ বরাবরাই ভাল। সবকিছুর মধ্যে সেরাটাই ওর চাই।
লিজাঃ হ্যা জানি,তাই তো প্রথমে আদিকে চাইল এখন তোমায় চাচ্ছে।
জয়ঃ লিজা কি বাজে কথা বলছো?
লিজাঃ বাজে কথা নয় সত্যি বলছি।রুহি আমাকে হিরার নেকলেস দিয়ে বলল, এই নাও তুমার মত মেয়ে তো টাকার জন্য সব পাড়ে তাই দামি গিফট দিলাম।
আমি বল্লাম কি বলছো রুহি?
রুহি উত্তর দিল, যা বলছি ঠিকি বলছি জয়কে ছাড়তে কত টাকা নিবে বলো আমি সব দিব। বিনিময়ে জয়কে ছেড়ে দাও।অনেক বড় সারপ্রাইজ দিল তাই না?
জয়ঃ ধমক দিয়ে বলল লিজা…..কার ব্যাপারে কি বলছো জান তুমি?রুহিই আমায় জোর করে তুমার সাথে বিয়ে দিয়েছিলো সেটা তুমি জানো।তারপরেও তুমি এসব কি করে বলছো?আমি জানি রুহি এসব বলতেই পড়েনা।
লিজাঃতখন রুহির মাথা ঠিক ছিল এখন নাই।আর তখন রুহির পাশে আদি ছিল এখন আদি নেই, তাই তোমাকে আখরে ধরতে চাইছে।
লিজা এবার জয় এর পা জড়িয়ে ধরে কেঁদে কেঁদে বলল আমি জানি তুমি রুহিকে ভালবাসো ওকে নিয়ে আমার কোন সমস্যা নেই ও এখানেই থাকুক কিন্তু প্লিজ আমার জায়গাটা ওকে দিয়ে দিও না।তুমি আমায় কথা দিয়েছিলে তুমি আমাকে কখনো ঠকাবে না।আমার তো কিছুই নেই জয়।এইটুকু সম্মান আমার কাছ থেকে কেড়ে নিও না প্লিজ।আমাকে ছেড়ে দিলে আমি কোথায় যাব বলো?
জয়ঃ উঠো লিজা এভাবে আমাকে ছোট করে দিও না।চোখ মুছো আমি আজ পর্যন্ত তোমার কোন কথা ফেলি নি আজও ফেলব না।কিন্তু রুহি এসব বলতে পাড়ে আমার সেটাই বিশ্বাস হচ্ছে না।ও তোমাকে যথেষ্ট ভালবাসে।
লিজাঃ বিশ্বাস না হলে রুহিকে গিয়ে জিজ্ঞাস করো এই ঘরে কি কি কথা হয়েছে আর তোমাকেই বা কেন এই ঘরে আসতে মানা করল?লিজা শান্ত গলায় বলল একটা অনুরোধ করব রাখবে জয়?
জয়ঃ হুম বল কি কথা।
লিজাঃ তুমি রুহিকে যতই কেয়ার করো আমার কোন আপত্তি নেই কিন্তু সবার সামনে অন্তত প্রকাশ করিও যে আমি তুমার স্ত্রী।
জয় আর কিছু না বলে চলে গেল।
,
,
,
কিছুক্ষন পর জয় রুহির রুমে গেল।
রুহি রাগে ফুঁসছে কারন লিজা তাকে বলেছে জয় তাকে করুনা করেছে।
রুহিঃ সাহস কত এই মেয়ের বলে কিনা রুহিকে করুনা করছে আরে রুহি কি কারোর ধার ধারে নাকি যে দয়া করতে হবে? যতসব ফালতু মেয়ে।(মনে মনে)
জয়ঃ কিরে কি হয়েছে রুহি?
রুহিঃ কি হয়নি তাই বল, কি আজব ধরনের মেয়ে বিয়ে করেছিস ইচ্ছা করছে এখুনি ঘার ধরে বের করে দেই।
জয়ঃ আহ রুহি কি বলছিস এসব?লিজা আমার স্ত্রী।
রুহিঃ সেই তো আমি তো আর কেউ না?
জয়ঃবাজে কথা বন্ধ করে বল কি হয়েছে।লিজা কি বলেছে তোকে?
রুহিঃ যেই বলতে যাবে তখন মনে পড়ল বাজির কথা তো জয় কে বলা যাবে না তাই আমতা আমতা করে বলল না কিছু না। তুই এখন যা এখান থেকে।
জয় কিছু বলার আগে রুহি জয়কে বের করে দিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল।
রুহিঃ আর একটু হলেই তো বলে দিচ্ছিলাম।আগে বাজিতে জিতি তারপর বলব, আর লিজা তুমায় বোঝাব আমাকে চ্যালেঞ্জ করার মজা কত।
জয় বাইরে এসে ভাবতে লাগল রুহি এমন ব্যবহার করল কেন। ওর কথায় স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল ও কিছু লুকাচ্ছে। কিন্তু যাই ঘটুক আমাকে বলতে কি সমস্যা?
তাহলে কি লিজা যা যা বলল তাই ঠিক? কিন্তু তা কি করে সম্ভব? রুহির আর কিছু মনে না পড়লেও আমি যে জয় সেটা মনে আছে আর আমাকে বিয়ের করার কথা তো রুহি কখনো ভাবেই নি তাহলে….???
নাকি বাচ্চাটার জন্যই এমন করছে?সে যাই হোক লিজার যেহেতু রুহিকে নিয়ে কোন সমস্যা নাই তাহলে এত ভাবছি কেন? রুহিকে আমি বোঝিয়ে নিতে পারব।
,
,
,
কিছুক্ষন পর জয় সবাইকে খেতে ডাকল।
সবাই মিলে খেতে বসলো।
জয়ঃ দেখ রুহি তোর সব পছন্দের খাবার রান্না করেছি,তুই আন্টির হাতের খেতে চেয়েছিলি কিন্তু আন্টি তো এখানে নেই তাই আমি রান্না করেছি খেয়ে বল কেমন হয়েছে? আন্টির মত পেড়েছি কিনা দেখতো।
রুহি লিজার দিকে একবার তাকিয়ে বলল খায়িয়ে দিবি?
জয় এটা আবার জিজ্ঞাস করার কি আছে অবশ্যই দিব।
জয় ভাত মাখছিল হঠাৎ লিজার দিকে চোখ পড়তেই জয়ের মন খারাপ হয়ে গেল।লিজা ছল ছল চোখে জয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।
রুহিতো বিশাল খুশি
জয় একমুঠো ভাত মেখে সবাইকে অবাক করে দিয়ে লিজার মুখে তুলে দিল।
জয় লিজাকে উদ্দেশ্য করে বলল,তুমি আগে খাও তারপর রুহিকে খায়িয়ে দেই।
লিজা রুহির দিকে তাকিয়ে শয়তানি হাসি দিয়ে খেয়ে নিল।
লিজার হাসি দেখে রুহির রাগ উঠে গেল।
রুহি ছোট থেকে রাগ কন্ট্রল করতে পাড়ে না। রুহি উঠে জয়ের সামনের খাবার ছুঁড়ে ফেল দিল।
জয়ঃ রুহি করছিস টা কি? বাচ্চাদের মত করছিস কেন?
রুহিঃ তুই ওকে খাওয়ালি কেন?
জয়ঃ রুহি ও আমার স্ত্রী আর একটু খেলে কি হয় বাকিটা তো তোকেই খাওয়াব তাই না?
রুহিঃ লাগবে না রুহির অবস্থা এখুনো এত খারাপ হয়নি যে নিজের হাতে খেতে পাড়বে না বলেই রুহি ঘরে চলে গেল।
জয়ঃ কি হল ব্যাপারটা বোঝলাম না এত রিয়েক্ট করল কেন? সকালেই তো বলছিল বউ সবার আগে আর এখনি এত পরিবর্তন?
লিজাঃ আমি তো তুমাকে আগই বলেছিলাম তুমি বিশ্বাস করলে না।
জয়ঃ না এটা অন্যায়। আমার রুহিকে বোঝাতে হবে।
লিজা মনে মনে আনন্দে পরিপুর্ন্য
যাক বাবা চাল টা কাজে লেগেছে….?
জয় ট্রে ভর্তি খাবার নিয়ে রুহির ঘরে গেল।
রুহি জয় কে দেখেই রেগে গেল বের হ এক্ষুনি বের হ… আপদ তোর মুখ দেখতে চাই না।
জয়ঃ আচ্ছা দেখিস না কিন্তু খাবার টা খেয়ে নে।
রুহিঃ তোর খাবারে গোষ্ঠী কিলাই চোখের সামনে থেকে সরা এসব।
জয়ঃ সকালেও তো ঠিক ছিলি হঠাৎ কি হল?
রুহিঃ আমার উপড় শয়তানি ভর করেছে।
জয়ঃআমারো তাই মনে হচ্ছে
রুহিঃ তোকে ভাল করে বলছি তুই এখন এখান থেকে যা।
জয়ঃ হুম বোঝলাম,বলেই দরজা লক করে দিল।
রুহিঃ একি কি করছিস তুই? দরজা লক করলি কেন?আরে তুই এগিয়ে আসছস কেন?
জয় রুহির দিকে এগিয়ে আসছে রুহি পিচ্ছাচ্ছে।
রুহিঃ জয় তো আগের মত নেই কি করবে কে জানে মারবে নাকি?
জয় এসে রুহিকে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে দিয়ে চোখ বড় বড় করে বলল যদি না খাস তোকে যে কি করব খোদা জানে।
রুহিঃ জয় তুই আমার সাথে এভাবে কথা বলছিস?
জয়ঃ শুধু বলছি না করেও দেখাব।বলে রুহিকে এক টানে বিছানায় বসিয়ে দিল তারপর রুহির মুখ পিঞ্জি দিয়ে শক্ত করে ধরে জোর করে খবার দিয়ে দিল।
দেখিছিস কি করতে পাড়ি এভাবে খাওয়ালে ব্যাথা পাবি তাই নিজে খেয়ে নে। না খেতে চাইলে আমি এভাবেই খাওয়াব।
রুহিঃ গায়ের ব্যাথা দেখতে পাড়ছিস জয়,মনের টা দেখতে পাচ্ছিস না?মনটা যে ভেংগে চুরমার করে দিচ্ছিস।তুই এমন করতে থাকলে আমাকে সারাজীবনের জন্য তোর জীবন থেকে সরে যেতে হবে তুই কি বোঝতে পাড়ছিস ?আগে তো তোকে মুখ ফোঁটে কিছু বলতে হত না সব বোঝতে পাড়তি আর এখন এত রাগ দেখাচ্ছি আর তুই একবারও রাগের কারন টাও খোঁজার চেষ্টা করছিস না? কখনো ত এমন ব্যবহার করতি না? তবে কি সত্যি ই তোর কাছে এখন আর রুহির কোন মুল্য নেই সে তোর কাছে শুধুই বোঝা? ( মনে মনে)
জয়ঃ সরি রে রুহি তুই এখন কিছু বোঝার অবস্থায় নাই, কিন্তু তোকে না খাইয়ে যাব কি করে? বাচ্চাটার জন্য হলেও খাওয়াতে হবে। জানি ভাল ভাবে বললে তুই খেতি না কিন্তু বাচ্চাটার জন্য যে তোকে খাওয়াতেই হত তাই জোর করলাম তুই আমায় ক্ষমা করে দিস(মনে মনে)
,
,
,
,
চলবে…!!!