শব্দহীন_বৃষ্টি (২৫)

0
1008

শব্দহীন_বৃষ্টি
(২৫)
#ফারহানা_আক্তার_রুপকথা
_________________________
এক পশলা বৃষ্টির মত এক পশলা কান্না শেষ হয়েছে নিপার। সকালটা বেশ রৌদ্রজ্বল থাকলে দুপুরে হুট করেই বৃষ্টি শুরু হয়েছিলো। তাই বরযাত্রী আসতে দেরি হয়েছে। নিপাকে পার্লারে নিয়ে গিয়েছিলো মাহি আর নিপার খালাতো বোন। সাজার সময় ও নিজেকে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলো নিপা। বাড়ি ফিরে ও একদম স্বাভাবিক ভাবে বসে ছিলো। ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফার কি চমৎকার সব পোজে তার ফটো নিয়েছে ভিডিও ধারণ করেছে। মাহির একবার মনে হয়েছিলো নিপা হয়তো সমুদ্র কে ভুলতে চেষ্টা করছে। কিছুক্ষণ বাদেই বর আসবে বিয়ে পড়ানো হবে হয়তো তাই নিজেকে সামলে নিয়েছে৷মাহির ভাবনা যে ভুল তা অতিদ্রুতই প্রমাণ হলো যখন সে নিপার জন্য খাবার নিয়ে ঘরে আসলো।

–” আমি সত্যিই তোমাকে অনেক ভালোবাসি সমুদ্র আমি সত….’ নিপার বলা কথার এখানেই সমাপ্তি ঘটে। উহুম ঘটে না আসলে ঘটায় । মাহি নিপার আগের কোন কথাই শোনেনি শুধু এতটুকু শুনেই খপ করে তার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে আছাড় মেরেছে। কেন ভেঙেছে তা জানে না। এই মুহুর্তে আসলে মাথায় কিছু আসেই নি তাই এমন হুট করে ফোনটাই ভেঙে দিয়েছে। হতবুদ্ধি হয়ে মাহি প্রথমে দরজা আটকে দিলো তারপর কিছুক্ষণ চুপ করে এক হাত কোমড়ে আরেক হাত কপাল চেপে দাঁড়িয়ে রইলো। নিপা কেঁদেই চলছে মাহির দিকে ও তাকানোর সাহস পাচ্ছে না যেন। দরজায় করাঘাত শুনে মাহি তটস্থ হলো যেন।

–” নিজেকে স্বাভাবিক কর আমি দরজা খুলছি ” বলেই মাহি দরজা খুলল।

–” দরজা লাগিয়ো না এখন৷ বরযাত্রী রওনা হয়ে গেছে। অন্য গেস্টরা ও অপেক্ষা করছে বউ দেখবে বলে।” দরজায় দাঁড়িয়ে নিপার মামি বলে গেল।

–” আচ্ছা মামি।” মাহি জবাব দিতেই মামি চলে গেল।

মাহি খাবারের প্লেট নিলো আবার। এক লোকমা নিপার মুখের কাছে তুলে ধরলো আর খুব শান্ত স্বরেই বলল, ” সময় নেই এখন আর পাগলামি করার। বিয়েটা আর আজ ঠিক হয় নি। এতদিন যেহেতু মন সামলে রেখেছিলি আজ এমন কিছু করা ঠিক হয় নি। সমুদ্র কে ভালোবাসিস তা অন্যায় চিলো না। কিন্তু এটা খুব বড় রকমের ভুল তোর। ভাবিস না আমি স্বার্থপরের মত কথা বলছি। বিশ্বাস কর তোর কষ্ট আমি অনুভব করতে পারছি বলবো না তবে আন্দাজ করতে পারি। ভালো আমি ও বাসি একজন কে। ভালোবাসার মানুষকে না পাওয়ার দুঃখ হয়তো অনেক কিন্তু এই মুহুর্তে তোর ভুল কোন কাজের জন্য শুধু তুই না তোর পুরো পরিবারকে সাফার করতে হবে। পরিবারের সম্মান সাথে তোর সম্মান সবটাই সমাজের সামনে ধুলিসাৎ হবে। সমুদ্র তোর হবে না জানিস তো তাই না?” মাহি যেন দম না ফেলেই বলছে সব কথা। নিপা চোখ বন্ধ করে আছে গাল বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে সে মাহির সব কথা শুনছে কিন্তু এই কথা গুলোর কোন মূল্যই এই মহেন্দ্র ক্ষণে সে উপলব্ধি করতে পারছে না। মন বলছে বিষাক্ত এই ধরনীতে তার সময় ফুরিয়ে আসছে। চারপাশে শুধু বিরহ। কিন্তু এই বিরহ কিসের জন্য! সমুদ্র তো তাকে ভালোবাসে না। আর না মা বাবা জানে তার মনের খবর। অবশ্য বাবা তাকে বহুবার জিজ্ঞেস করেছে সে রাজী কিনা বিয়েতে। কিন্তু মা বলেছে রাজী না হওয়ার কি আছে ছেলে ভালো। পড়াশোনার বাহানা করতে গিয়ে ও পারেনি কারণ তমাল নিজেই বলেছিলো মেয়েকে পড়তে হবে বিয়ের পর ও। মাহি আরো কিছুক্ষণ বোঝালো এটা সেটা । নিপার মনের অবস্থা আঁচ করতে পেরে আবার নিজেই চুপ হয়ে গেছে। নিপার খাওয়া হয়নি খেলো না মাহি নিজেও। মন খারাপ তার ও হচ্ছে এদিকে মা’কে কল দিয়ে ও পায় নি। ফোন কোথায় রেখেছে কে জানে! বাইরে হৈ চৈ শোনা গেল “বরযাত্রী চলে এসেছে।”

নিপাকে বসিয়ে রেখেই মাহি বের হলো। গেইটে যাওয়া বারণ ছিলো তার। নিরব সকালেই কল দিয়ে বলেছে “গেইটে যেন তোকে না দেখি”। কিন্তু দূর থেকে তো দেখা যেতেই পারে। যেই ভাবা সেই কাজ একটু দূর সবার থেকে পেছনে স্থির মাহি। যদিও দৃষ্টি তার অস্থির বিশেষ কাউকে দেখার জন্য কিন্তু নাহ, খুঁজেই পাচ্ছে না তাকে। কালকের কথা মনে পড়লো হঠাৎ । না চাইতেই ডান হাতটা উঠে গেল ঘাড়ে। ফোলা এখনও একটু কিন্তু ব্যাথা নেই। আচ্ছা উনার ও কি ফোলাটা রয়ে গেছে? ইশ, কোথায় যে লোকটা কে জানে! বারবার এদিক ওদিক খুঁজে ও সাগরের দেখা মিলল না কিন্তু কেন যেন মনে হচ্ছে এক জোড়া দৃষ্টি তার ওপর আটকে আছে।স্নায়ুবিক উত্তেজনা টের পেল মাহি কিন্তু কারণ কি! আবার খেয়াল হলো এত মানুষের ভীরে নিরব ভাইয়া নেই৷

— “শুনলাম সাগরের জন্য চামেলি ভাবির মেয়েকে পছন্দ করেছেন?” জয়নব কথায় কথায় বড় জা শামসুন্নাহার কে জিজ্ঞেস করলো।

–” মা পছন্দ করেন মাহিকে খুব। আবার মাহি দেখতে শুনতে ও মাশাআল্লাহ । পড়াশোনায় ও ভালো তাই মোটামুটি সবাই পছন্দ করেছে। তুই তো আজকাল নিচে তেমন আসিস না তাই আর বলা হয়ে উঠেনি। ” শামসুন্নাহার জবাব দিলো।

–” হ্যা, ওই তো সাথী, যুথির আজকাল পড়াশোনা বেড়েছে তার ওপর কাজের মেয়েটা রাখলাম তাই ব্যস্ততা বেশিই।” জয়নবের কথায় শামসুন্নাহার বিরক্ত হলেন তবুও কিছু বললেন না। আলাদা হওয়ার পর থেকে প্রায় এড়িয়েই চলে জয়নব বাড়ির সকলকে। সে সুযোগের অপেক্ষায় আছে ফ্ল্যাট কিনে চলে যাওয়ার।

–” তোর কি মত বল শুনি। তাহমিনার পছন্দ হয়েছে তোর বড়দা আর মেজদা ও বলছে মনজুর ভাইয়ের সাথে কথা বলতে।”

–” আমার আর কি মত। আপনার দেবরের কাছেই শুনলাম আমি সে তো বলল তার ও পছন্দ হয়েছে। বলছে মেয়েটা চোখের সামনেই বড় হয়েছে। একটু চঞ্চল তবে চলাফেরা ভালো অন্তত সৈকতের বউয়ের চেয়ে,,,, বলতে বলতেই শামসুন্নাহার এর চোখে চেয়ে থেমে গেল জয়নব। শামসুন্নাহার যেমনই হোক কখনও ছেলের বউয়ের দোষ ত্রুটি নিয়ে তার অলক্ষ্যে কখনো কিছু বলেন না আর শুনতে ও পছন্দ করেন না। দুই জায়ের কথোপকথন আর এগোলো না। তাহমিনা মাহিমকে খাবার বেড়ে দিচ্ছিলেন আর দূর থেকেই দুই জা’কে লক্ষ্য করছিলো। জয়নব চলে যেতেই সে এসে সাগরের মাকে জিজ্ঞেস করলো কি বলছিলো সাথীর মা। শামসুন্নাহার জবাব না দিয়ে চলে গেলেন। সৈকতের জন্য মনটা সারাক্ষণ ছটফট করে এমনিতেই। তার উপর কেউ শিলার কথা তুললে মনটা বিষিয়ে যায় খুব। বুকের ধন বুকের কাছে না থাকলে কি মায়ের মন শান্ত থাকতে পারে! এখন তিনি দরজা বন্ধ করে কাঁদবেন কিছুক্ষণ এতেই স্বস্তি আজকাল।

–” কিপটার দল, খচ্চর, কাউয়ার দল পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে কি হয় আজকাল?” তমালের সামনাসামনি দাঁড়িয়ে মাহি বলে চলছে। গেইট,জুতা চুড়ি আর বরের হাত ধোয়ানো বাবদ পাঁচ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়েছে তমালের বড় ভাই তামিম। মাহি গেইটে ছিলো না, হা ধোয়াতে ও আসে নি তবে সঠিক সময়ে জুতো জোড়া ঠিকই চুরি করে নিয়েছে। তামিম যখন পাঁচ হাজার দিলো মাহি ভেবেছে পুরো টাকাটাই জুতো চুরির। কিন্তু সাগর কোথা থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসলো। কানের কাছে এসে বলল, ” গেইটে কেউ টাকা নিতে পারেনি তাই রাগ করে চলে এসেছে৷ আর তাই তামিম এখন সুদে আসলে তিন কাজের টাকা একসাথেই দিয়েছে।”

–” এটা কোন কথা?” হতাশ মাহি এত্তো এত্তো বাচ্চা কাচ্চা সব গুলো কে এই কয়টাকায় কি দিবে!”

–” ওমা ললিপপ পাঁচ টাকার বেশি লাগবে না। তোমরা যে ক’টা বাচ্চা আছো হয়ে যাবে বরং ললিপপের বন্যা করতে পারবে এ টাকায়।” কথাটা বলেই সাগর রাজ্যের হাসি হেঁসেছিলো। মাহি চমকে উঠেছিলো তখন৷ এত বছরে সে কি এই প্রথমবার সাগরের হাসি দেখলো! কি করে সম্ভব ! এই মুহুর্তে যে হাসি গা জ্বালানো সেই হাসি ও মাহির মনে শব্দহীন বৃষ্টিপাত ঘটাচ্ছে। শীতল এক শিহরণ জাগছে । ভালো করে তাকাতেই দেখলো আজ ও মানুষটার চুল গুলো এলোমেলো আজও সাদা রঙ গায়ে। এই মানুষটার কি সাদার বাইরে অন্য কোন রঙ নেই? কখনো কোন একদিন মাহি বলবে খুব গাড় নীল রঙের একটা শার্ট পড়তে আর সাথে সে ও মিলিয়ে নিল রঙের শাড়ি পড়বে। কেমন লাগবে দু’জনকে? মাহি ভাবনা জগতে এতোই আনমনা হয়েছে যে তমালের এক বন্ধু তাকে বিগত দুই মিনিট ধরে এক নাগাড়ে কিছু বলছে সে শুনতেই পায় নি। বাধ্য হয়ে ছেলেটা তার মুখের সামনে তুড়ি বাজালো। আচমকা চোখের সামনে তুড়ি বাজতেই হুঁশ এলো মাহির।

–” কি হয়েছে?”

–‘ তমাল ডাকছে আপনাকে।”

–“তমাল! ওহ হুবু দুলাভাই? আগে বলবেন না।”

–” আমি আপনাকে অনেকক্ষণ ধরেই ডাকছি আপনি শোনেনি৷ বাই দ্য ওয়ে, আপনি খুব মিষ্টি।”

–” খেয়ে দেখেছিস বুঝি?” সাগর পেছন থেকে বলল। ছেলেটা একটু চমকে গেছে। মাহি অবশ্য খুশিতে পাগল হওয়ার উপক্রম । সাগর কি কিছু একটা ভেবেই এমন এগিয়ে এলো! মাহি মুচকি হাসতে হাসতে চলে গেল বরের সামনে।

–” আমায় ডেকেছিলেন ভাইয়া?” মাহি তমালকে প্রশ্ন করলো।

–” নিপার ফোন বন্ধ কেন মাহি?” জ্বিভ কাটলো মাহি কথাটা শুনে। সে নিজেই তো নিপার ফোনটা ভেঙেছে৷

–” ভাইয়া নিপার ফোনটা চুরি হয়ে গেছে। বিয়ে বাড়ি অনেক মানুষ । আপনি একটু অপেক্ষা করুন আমি আমার ফোনটা ওকে দিচ্ছি। ”

–” না, থাক কাজী চলে আসছে। ” মাহি ও আর কিছু বলেনি। মনে মনে দোয়া করছে আল্লাহ যেন সবটা ঠিক রাখে। তমাল ছেলে হিসেবে খুবই ভালো। নিরব বলেছিলো ছেলেটা এত বড় হয়ে ও কখনো প্রেম ভালোবাসা নিয়ে বেশি মাতামাতি করেনি। বরং সবসময় একটা দ্বায়িত্ববান ভাব ছিলো তার মধ্যে । আর বিশেষ ব্যক্তিত্বের একটা ধার আছে তার মধ্যে৷

–” নিপার বিদায় পর্ব শেষ হতেই সব গুছিয়ে নিবে।” মাহির সামনে গিয়ে সাগর কথাটা বলেই আবার চলে যাচ্ছিলো৷

–” কিহ?”

–” বাড়ি যাবে না?”

–” হ্যা।”

–” নিরব আসে নি তা নিশ্চয়ই দেখেছো?”

–” হ্যা, কিন্তু ভাইয়া আসেনি কেন। ” মাহি প্রশ্ন করতেই সাগর বিড়বিড় করলো, ” নিরব আসলে আমি কি করে তোমায় নিয়ে ডেটে যেতাম।” মাহি বোঝেনি সাগরের কথা তাই আবার বলল ” কি বলছেন।”

–” কিছু না তোমার মা ফোন করেছিলেন। বললেন যাওয়ার সময় আমি যেন নিয়ে যাই তোমায়৷ নিরব কোন কাজে আটকে গেছে। ”

–” সত্যি!” উচ্ছসিত হয়েই চিৎকার করে বলল মাহি । পরক্ষণেই লজ্জা পেল নিজের কাজে। ইশ সাগর কি এখন তাকে নির্লজ্জ ভাবছে! আর এক মুহুর্ত সাগরের সামনে না দাঁড়িয়ে সোজা চলল নিপার ঘরে৷

বিয়ের পর্ব খুব সুন্দর আর স্বাভাবিক ভাবেই শেষ হলো। নিপা আর একবার ও কান্না করেনি। অস্বাভাবিক শান্ত হয়ে বসেছিলো সে যা মাহির মনে ভয়ের সৃষ্টি করলো। সন্ধ্যের আগ মুহুর্তে যখন বিদায় দেওয়া হচ্ছিলো তখন কেঁদেছে সবাই শুধু নিপা কাঁদেনি৷ মাহি হুট করেই জড়িয়ে ধরেছিলো নিপাকে আর কানের কাছে অনেকটা অস্পষ্ট স্বরেই বলেছিলো, ” একটু কেঁদে দেনা লক্ষীটি প্লিজ । তমাল ভাই তোকে খুব ভালোবাসবে দেখিস। সারাজীবন তুই সুখের সাগরে ভাসবি। ” নিপা কাঁদেনি তবে আস্তে করে বলেছিলো ” টেনশন করিস না তমালই হবে আমার শেষ ভালোবাসা।”

ঘোর অমানিশা বোধ হয় আজ তাই এমন বিদঘুটে অন্ধকার লাগছে পথঘাট। রাত আট টা বাজে মাত্র । সাগর গাড়ি এনেছিলো তাই মাহিকে গাড়িতে বসিয়ে নিরবকে কল দিলো, ” কতদূর তুমি?” ওপাশ থেকে নিরবের কথা শোনা না গেলে ও বোঝা গেল সে এখন অনেক দূর। সাগর আবার বলল, ” তারমানে তো আর ও তিন থেকে চার ঘন্টা লাগবে পৌঁছুতে । আমি বাড়ি যাচ্ছি মাহি যাচ্ছে কথা বলবে?”

–” আচ্ছা তবে রাখছি সাবধানে যেও৷ মাহি আমার বোনদের সাথেই থাকবে আন্টি কে বলো টেনশন না করতে। ” কথা শেষ হতেই ফোন পকেটে ঢুকিয়ে সাগর ড্রাইভিং সিটে বসলো।

–” ভাইয়া কি দূরে কোথাও গেছে?” মাহি চকিতে প্রশ্ন করলো ।

–” মাহি বি স্ট্রং আই ওয়ান্ট টু সে ইউ সামথিল সিরিয়াস।” সাগরের কথা শুনে মাহি একটু অস্থিরভাবে তাকালো।

–” কি?”

গাড়ি স্টার্ট দিয়েই বলল, ” তোমার বড় মামার হার্ট এটাক হয়েছে। নিরব যশোর যাচ্ছে ইভেন তোমার বাবা মা ও খালা,খালু ও যাচ্ছে।”

–” কিহ?” কাঁপছে মাহির কন্ঠস্বর। কান্না এলো বলে।

–” কান্না করবে না কিন্তু আমার পুরো কথা শোনো মাহিম আমাদের বাড়িতে আছে । আর মা বলেছে তুমিও আমাদের বাড়ি থাকবে৷ তোমার আম্মু অনেকবার তোমার সাথে কথা বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু নিরব দেয় নি। আন্টি খুব কান্নাকাটি করছে। ” সাগর থামলো তারপর গাড়ি এক সাইডে রেখে মাহির হাত ধরলো আলতো করে। মাহির কান্না এতক্ষণ গলায় আটকে ছিলো সাগরের ভরসাময় হাতের ছোঁয়ায় যেন সেই কান্নার বাঁধ ভাঙলো। কান্না শুরু করে দিলো আর বলতে লাগলো সেও যাবে৷ সাগর পড়েছে বিপদে৷ রাস্তাট ধারে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রেখেছে। পথচারীরা এমন গাড়ির ভেতর কান্নার আওয়াজ শুনলে নির্ঘাত উল্টাপাল্টা কিছু ভাববে।অনেক কিছু বলে থামানোর চেষ্টা করে ও যখন মাহিকে থামানো গেলো না তখন সাগট উপায় না পেয়ে বলল, ” এ্যাই মেয়ে আমায় বিয়ে করবে?”

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here