#শহরজুড়ে_প্রেম_নামুক
#পর্বঃ০৪,০৫,০৬
#Arshi_Ayat
০৪
টিউশনি থেকে ফিরে গোসল করে খেয়ে বিশ্রাম নিচ্ছিলো স্বর্ণ।প্রয়োজনীয় একটা কাজে ফেসবুকে এসেছে কিন্তু নিউজফিডে চোখ পড়তেই দেখলো কিছুক্ষণ আগে উচ্ছ্বাস আর ওই মেয়েটা রিলেশনশিপ স্ট্যাটাস দিয়েছে।স্বর্ণ বড় একটা শ্বাস নিয়ে নিজেকে ধাতস্থ করে ব্লক করে দিলো দু’জনকেই।এরপর ফোন’টা রেখে বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে ছিলো কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছে বলতেও পারবে না।
মাগরিবের আজানের শব্দে ঘুম ভেঙেছে স্বর্ণ’র।আজু করে নামাজ পড়ে।রান্নাঘরে গেলো নাস্তা বানাতে।কিছুক্ষণ পর চা জ্বাল দিতে দিতেই ড্রইং রুমে সুমনের গলার আওয়াজ পেলো।সিমা সুমনকে বসতে বলে রান্নাঘরে আসলো।স্বর্ণকে ডেকে বলল,’সুমন ভাই এসেছে।তুমি নাকি ওনার কল ধরো নি!’
‘সাইলেন্ট ছিলো ভাবী।’স্বর্ণ দায়সারা কন্ঠে জবাব দিলো।
‘আর সাইলেন্ট রেখো না।কথা বলো ওনার সাথে যাও,ড্রইংরুমে বসে আছে।আমি চা-নাস্তা নিয়ে আসছি।’
স্বর্ণ বিনাবাক্যে ড্রইং রুমে এলো।ওকে দেখেই সুমন বলল,’কল ধরো নি কেন?ইগনোর করছো?’
‘তেমন কিছু না আসলে সাইলেন্ট ছিলো,ফোন চেক করি নি।’
‘আচ্ছা,রেডি হও বের হবো আমরা।’
‘আমার শরীর খারাপ লাগছে।আজকে না।’
‘আমি বাহানা শুনবো না স্বর্ণ।তুমি যাবে আমার সাথে ব্যাস।নাহলে আমি আশরাফকে ফোন দিচ্ছি।’
স্বর্ণ ম্লানমুখে বলল,’আচ্ছা বসুন।রেডি হয়ে আসছি।’
স্বর্ণ ভেতরে গিয়ে কালো রঙের একটা থ্রিপিস পরে হালকা সেজেগুজে এলো।সুমন ওকে দেখে বিরক্ত হয়ে বলল,’থ্রিপিস কেনো পরেছো?শাড়ি পরতে পারো নি?’
‘শাড়ি পরতে মন চাচ্ছে না এখন।’
‘তুমি এমন করো কেন বলো তো?আমি যা বলবো সবসময় তার বিপরীতে করো।’
স্বর্ণ কথা ঘুরিয়ে বলল,’যাবেন না?’
সুমন বিরক্তি নিয়ে বলল,’চলো।’
বেরিয়ে রিকশা নিলো সুমন।পাশাপাশি বসেও কিছুটা দুরত্ব রেখেছে স্বর্ণ কিন্তু সুমন বারবারই কাছে আসার চেষ্টা করছে।একপর্যায়ে স্বর্ণ বলল,’সরে বসুন।আমার খারাপ লাগছে।’
‘হ্যাঁ আমি বসলেই খারাপ লাগবে।বয়ফ্রেন্ড বসলে লাগবে না।বয়ফ্রেন্ডের সাথে তো কতকিছু করেছো আমার সাথে করতে দোষ কি?আমি তো তোমার ফিয়ন্সে।’
‘হাসবেন্ড নন তো!সরে বসুন তা নাহলে নেমে যাবো।’স্বর্ণ কঠোর স্বরে বলল।তাতে কাজও হলো সুমন সরে বসেছে।সারা রাস্তা আর কোনো কথা হয় নি।যে যার মত ছিলো।সুমন ওকে নিয়ে একটা ফাইভ স্টার হোটেলে এলো।কর্ণারে একটা টেবিলে গিয়ে বসলো ওরা।যদিও স্বর্ণর ইচ্ছে ছিলো না কোণায় বসার তবুও কিছু বলল না সুমনকে অনুসরণ করে কোণার টেবিলেই বসলো।প্রথমেই সুমন বলল,’কি খাবে বলো,অর্ডার দেই।’
‘আপনি দিন।আমার ইচ্ছে করছে না কিছু খেতে।’
সুমন এবারো বিরক্ত হলো।নিজে গিয়ে’ চাইনিজ অর্ডার দিয়ে এলো।’
ফিরে এসে সুমন বলল,’শোনো কয়দিন পর আমাদের অফিশিয়াল একটা ট্যুর আছে তোমাকে নিয়ে যাবো ভাবছি।’
‘না আমি কোথাও যাবো না।’
‘ভয় পাচ্ছো কেনো?তোমার ভাইয়া ভাবীও থাকবে।আর তোমার ভাই নিজেই বলেছে নিয়ে যেতে।তোমার সমস্যা কোথায়?’
‘আমার ইচ্ছে নেই যাওয়ার।আপনি গিয়েই ঘুরে আসুন।’
সুমন ক্ষেপে গিয়ে বলল,’তুমি এমন কোনো?আমার কোনো গার্লফ্রেন্ড কে এত বার বলা লাগতো না।যখন বলতাম চলে আসতো।আর তুমি!’
‘আমি আপনার গার্লফ্রেন্ড নই!’
‘নও তো কি হয়েছে কয়েকদিন পর তো বিয়ে করবোই আমরা।’
‘যেদিন বিয়ে হবে সেদিন আমার আপত্তি থাকবে।যেখানে যেতে বলবেন যাবো কিন্তু এর আগে জোর করবেন না।জোরাজোরি ভালো লাগে না।’
‘আমি তোমার এত কথা শুনবো না।তুমি যাবে মানে যাবেই।এ নিয়ে আর কথা বলবে না।’
স্বর্ণ কিছু বলল না আর নিরব হয়ে রইলো তবে মেনে নিলো না।সে যাবে না কিছুতেই।কিন্তু সেটা আর প্রকাশ করলো না।
খাবার আসার পর খাওয়া দাওয়া করে বেরিয়ে পড়লো ওরা।সুমন ওকে নিয়ে একটা শপিংমলে গেলো।প্রথমে শাড়ির কর্ণারে ঢুকলো।সুমন জামদানী শাড়ি দেখানোর জন্য বলল।বিভিন্ন ডিজাইনের জামদানী শাড়ি রাখা হলো ওদের সামনে।সুমন বলল,’পছন্দ করো।যে কয়টা পছন্দ হবে সব কিনে দেবো।’
স্বর্ণ কিছুক্ষণ শাড়িতে চোখ বুলিয়ে বলল,’কালো জামদানীটা সুন্দর।’
‘কি!কালো জামদানী তোমার ভালো লেগেছে?আমার তো ক্ষেত লাগছে।তোমাকে হলুদ জামদানীতে মানাবে’
বলেই সুমন হলুদ একটা জামদানী দিলো স্বর্ণকে।বলল,’পরে এসো তো!’
‘পরতে ইচ্ছে করছে না।’
‘এত কথা শুনছি না।যা বলেছি করো।’সুমন কঠোর গলায় বলল।স্বর্ণ আর কথা বাড়ালো না।শাড়ি নিয়ে চলে গেলো চেন্জ করতে।কিন্তু রংটা একদমই ভালো লাগছে না ওর।হলুদ শাড়ি পরে বেরিয়ে আসতেই সুমন বলল,’ভালো লাগছে না তেমন!’
‘এখন যাও খয়েরী রঙেরটা পরে এসো।’
স্বর্ণ আবার গেলো চেঞ্জ করতে।এভাবে পাঁচটা শাড়ি বদলালো ওকে দিয়ে।শেষ পর্যন্ত নীল রঙের একটা শাড়ি পছন্দ হয়েছে এবং সেটাই কিনলো সুমন।স্বর্ণের কোনো মতামতই নিলো না।আর স্বর্ণের পছন্দ করা কালো রঙেরটা নিলো ওর ভাবীর জন্য।শপিংমল থেকে বেরিয়ে সুমন বলল,’এবার বাসায় চলো।মাঝেমধ্যেই এভাবে বের হবো আমরা।আর নিজেকে তৈরি করো আমার জন্য।এভাবে ন্যাকডেটেড হয়ে থাকলে হবে না।অন্যান্য মেয়েরা কত মর্ডাণ আর তুমি এত পড়েও গেঁয়ো ই রয়ে গেছো।আমার মনে হয় এই কারণেই তোমার বয়ফ্রেন্ড তোমাকে ছেড়ে গেছে।’
সুমনের বলা কথায় কোনো জবাব দিলো না স্বর্ণ।প্রচন্ড কষ্ট হয়েছে ওর।হয়তো সুমন ঠিক বলেছে ও গেয়ো বলেই উচ্ছ্বাস ওকে ছেড়েছে।
বাসায় আসার পর সিমাকে দু’টো শাড়ির প্যাকেট দিয়ে বলল,’তোমার জন্য দু’টো শাড়ি কিনে দিয়েছে সুমন।’
সিমা খুশিতে গদগদ হয়ে বলল,’সত্যি!’
‘হ্যাঁ।’
সিম শাড়িগুলো খুলে দেখা শুরু করলো আর স্বর্ণ নিজের ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে থ্রিপিস খুলে ঘরের পোশাক পরলো।তখনই সিমা এসে বলল,’তোমাকে কিছু কিনে দেয় নি?’
‘আমাকে তো দিবেই বিয়ের পর।এগুলো তোমার জন্য দিয়েছে।’
সিমা আহ্লাদী কন্ঠে বলল,’সুমন ভাই কত ভালো দেখেছো!’
স্বর্ণ কিছু বলল না কিছুটা তাচ্ছিল্যের হাসি দেখা গেলো মুখে।অতঃপর সিমা আবার বলল,’আচ্ছা শোনো,তরকারিগুলো গরম করে রাখো আর আজমানের জন্য দুধ জ্বাল দিয়ে ঘরে দিয়ে যেও।’
স্বর্ণ মাথা নাড়লো।সিমা খুশিতে গদগদ হয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো শাড়িগুলো ট্রায়াল দিতে।
বাসার সবাই ঘুমিয়ে যাবার পর স্বর্ণ নিজের আলমারি খুলে উচ্ছ্বাসের দেওয়া যত গিফট আছে সব নিয়ে ছাঁদে গেলো।তাতে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলো।আর যতক্ষণ পর্যন্ত না সমস্তটা পুড়েছে ততক্ষণ চেয়েছিলো।মনের আগুন যে আরও কতটা তীব্র সেটা নিজে ছাড়াও কেউ অনুভব করতে পারে না।আজ যখন সুমন কথা শোনাচ্ছিলো তখন স্বর্ণ মন চাচ্ছিলো মরে যেতে।কেনো জীবনটা এত কলুষিত হয়ে গেলো।পদে পদে কষ্টে জর্জরিত হতে হচ্ছে।
পোড়া শেষে ছাঁদ চোখমুছে ছাঁদ থেকে নেমে যাওয়ার সময় স্বর্ণ মায়ের দেখা পেলো।নিহারিকা খানম বললেন,’যাস না।কফি এনেছি।আয় কফি খাই।’
স্বর্ণ গেলো না।মায়ের সাথে বসলো।নিহারিকা খানম কফিটা বাড়িয়ে বলল,’দেখ কেমন হয়েছে।’
‘তুমি বানালে ভালোই হয় মা।তোমার সবকিছুই বেষ্ট।’
নিহারিকা খানম হাসলেন।কফিতে চুমুক দিয়ে বললেন,’ভালো করেছিস।বেইমানদের স্মৃতি রাখতে নেই।’
‘মা সুমন আমাকে নিয়া অফিশিয়াল ট্যুর দিতে চাচ্ছে।ভাইয়াও রাজি হয়েছে।’
‘সমস্যা নেই যেদিন বলবে তার আগেরদিন তুই তোর খালার বাসায় চলে যাবি।আমাকে বললে বলবো ভার্সিটি থেকে ট্যুরে গেছে।’
স্বর্ণ মায়ের কথা শুনে পুলক অনুভব করলো।আনন্দিত কন্ঠে বলল,’মা,তুমি আমাকে সবসময় এতো বোঝো কেন?তোমার মত কেউ বোঝে না!’
‘কারণ আমি তোর মা।’
মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন তিনি।
চলবে….
#শহরজুড়ে_প্রেম_নামুক
#পর্বঃ০৫
#Arshi_Ayat
মায়ের সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে ঘরে এসে স্বর্ণ ঘুমালো না।প্রজেক্টের পেপারগুলো নিয়ে বসলো।প্রফেসর কিবরিয়া তাকে এগুলো দেখতে দিয়েছে।ডিপার্টমেন্টে ভালো সি জিপিএ ধারীদের মধ্যে স্বর্ণ দ্বিতীয় আর প্রথম হলো আরব।প্রফেসর ওদের দু’জনকেই স্নেহ করেন খুব।তিনি বলেছেন যার আইডিয়া ভালো হবে তার জন্য তিনি সুপারিশ করবেন।আরবের পরিকল্পনা,দক্ষতা খুবই উন্নত তাই ভয় ভয় লাগছে স্বর্ণের যদি আরবের কাজ পছন্দ হয়ে যায় প্রফেসরের তাহলে তো তিনি ওর জন্য সুপারিশ করবেন আর ওর স্কলারশিপ’টা হয়ে যাবে কিন্তু এই স্কলারশিপ’টা তো স্বর্ণের খুব দরকার।যদি আগের মত অবস্থা থাকতো।উচ্ছ্বাস বাচ্চাটা মেনে নিত।ওদের বিয়ে হত তাহলে হয়তো স্বর্ণ প্রজেক্ট নিয়ে এত সিরিয়াস থাকতো না।কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন!
সোয়া চারটায় বিছানায় শুয়ে পড়লো স্বর্ণ।ঘুম আর মানছে না এবার একটু ঘুমাতে হবেই।তারপর আবার সকালে উঠে নাস্তা বানিয়ে ভার্সিটিতে যেতে হবে।
এলার্মের কর্কশ শব্দে ঘুম ভেঙে গেলো স্বর্ণের।একঘন্টাও ঠিকমত ঘুম হয় নি।মাথা ধরে আছে ভিষণ।তবুও উঠে ফ্রেশ হয়ে নামাজ পড়ে রান্নাঘরে গেলো নাস্তা বানাতে।ঘুমে চোখ ঢুলছে ওর তবুও রুটি বানাচ্ছে।পেছন থেকে নিহারিকা খানম ওর কাঁধে হাত রাখতেই স্বর্ণ ঘুরে তাকালো।মেয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে তিনি বুঝলেন সবকিছু।হাত থেকে আটার কাই নিয়ে বললেন,’যা ঘরে গিয়ে ঘুমা।আমি ডাক দিলে উঠবি।এর আগে যেন উঠতে না দেখি।’
‘মা,আমি পারবো।’
‘তোরে আমি যা বলছি কর।বেশি কথা বলবি না।’
স্বর্ণ মায়ের কথা মেনে নিলো চুপচাপ।না মেনেও উপায় নেই শরীর চলছে না।ঘরে এসে বিছানায় শুয়ে আবারও ঘুমে তলিয়ে গেলো স্বর্ণ।
আট’টায় নিহারিকা খানম স্বর্ণকে ডেকে দিলেন।ঘুম থেকে উঠে এখন একটু ভালো লাগছে।গোসল করে,খেয়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সিমা ওকে ডেকে বলল,’কাল রাতে ট্যুরে যাবো আমরা।তুমি,সুমন ভাই,আমি,তোমার ভাই আর আজমান।’
‘মা’কেও নিয়ে যাও।’
‘উনি তে বুড়ো মানুষ।ওনার এত শখ আছে নাকি!’
স্বর্ণ কিছু বলতে নিবে তার আগেই নিহারিকা খানম পেছন থেকে চোখে ইশারা করলেন চুপ থাকতে।মায়ের আদেশ মান্য করে স্বর্ণ চুপ করে বেরিয়ে গেলো।আজ দু’টো কথা শোনাতে মন চাচ্ছিলো খুব।সংসারে সেও টাকা দেয়।তবুও এভাবে দাসের মত ব্যাবহার কেন মায়ের সাথে?তারা বোঝে না কেন বুড়ো মানুষের ও শখ আহ্লাদ থাকে।বুড়ো তো শরীরে হয় মন তো তরুণ সবসময়।
ভার্সিটি থেকে বেরিয়েই সুমনকে দেখে অবাক স্বর্ণ।এই লোক এখানে কি করে?এখন আবার সময় কাটাতে হবে নাকি ওর সাথে?স্বর্ন চিন্তিত কন্ঠে প্রশ্ন করলো,’আপনি এখানে?’
‘শপিং করবো চলো।কালকে তো ট্যুরে যাচ্ছি আমরা।শপিং না করলে চলে?আর তুমি যা ব্যাকডেটেড জামা কাপড় পরো তোমাকে নিয়ে কলিগদের সামনে যেতেই লজ্জা লাগবে আমার।তাই চলো আজকে তোমাকে কিছু ড্রেস কিনে দেই।’
‘কিন্তু আমার তো টিউশনি আছে।’
‘ছুটি নিয়ে নাও চারদিনের।আজকে তো শপিং এ যাবে আর তিনদিন ট্যুর এর জন্য।’
‘এতদিন ছুটি নেওয়া যায় না টিউশনি থেকে।’
‘তাহলে বাদ দিয়ে দাও।’
‘বাদ দেওয়া যাবে না এখন।’
সুমন এবার ক্ষেপে গিয়ে বলল,’তোমার কাছে আমার চেয়ে টিউশনির গুরুত্ব বেশি?’
স্বর্ণ মনে মনে বলল,’অনেক বেশি।’
কিন্তু মুখে কথা ঘুরিয়ে ফেলে বলল,’আচ্ছা আমি না করে দিচ্ছি সবাইকে।’
স্বর্ণ সবাইকে টেক্সট করে জানিয়ে দিলো আজকে আসতে পারবে না কিন্তু চারদিনের কথা বলে নি।শুধু আজকের কথাই উল্লেখ করেছে।অবশ্য চারদিন ছুটি এমনিতেও দিবে না সে।এই অবস্থায় এসে করুণার পাত্রী হওয়ার ইচ্ছে নেই তার।সুমন বার বার টিউশনি ছাড়তে বলে কারণ ও টিউশনি ছাড়লেই তো টাকার জন্য ভাইয়ের কাছে চাইবে তখন ভাই না দিলে বাধ্য হবে ওর কাছে চাইতে।তখন ই এর সুযোগ নিবে লোক’টা।তাই যত কষ্টই হোক টিউশনি ছাড়া যাবে না।
কিছু ওয়েস্টার্ন শর্ট ড্রেস কিনে দিলো সুমন ওকে।কেনার সময় স্বর্ন হ্যাঁ বা না কিছুই বলে নি।একদম শোকেসে সাজিয়ে রাখা পুতুলের মত বসেছিলো।শপিং শেষে ফাইভ স্টার হোটেলে খেয়ে স্বর্ণর সাথে বাসায় এলো।সিমা সুমনকে দেখে খুশিতে গদগদ হয়ে বলল,’আরে সুমন ভাই আসেন বসেন।আপনার জন্য নাস্তা নিয়ে আসি।’
‘না ভাবী লাগবে না।আমরা খেয়ে এসেছি বাইরে থেকে।’
সিমা উজ্জ্বলমুখে বলল,’আমি ভাবতেও পারি নি স্বর্ণর এমন রাজ কপাল হবে।’
নিজের প্রসংশা শুনে গর্বে বুক ফুলে উঠলো সুমনের।তারপর স্বর্ণকে ঠেস দিয়ে বলল,’আপনি বুঝলে কি হবে ভাবী!আপনার ননদ তো বোঝে না।’
স্বর্ণ সব শুনলো কিন্তু কিছু বলল না।ডাইনিং থেকে একগ্লাস পানি খেয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো।সুমন আর সীমা আরও কিছুক্ষণ গল্প-গুজব করলো।যাওয়ার সময় নিহারিকা খানমের সাথে দেখা করে গেলো।তিনি না পারতে হাসিমুখে কথা বলে বিদায় করলেন।এই ছেলেটাকে দেখতে মন চায় না তার।এই ছেলেটার সাথে মিশে মিশে আশরাফও নষ্ট হয়ে গেছে।বারবার আশরাফকে বলেছিলো এসব মানুষের সাথে মিশতে না কিন্তু মা-বাবার কথা তো সন্তান সময় থাকতে শোনে না সময় যাবার পর আফসোস করে।
সুমন যাওয়ার পর সিমা স্বর্ণের রুমে এসে আহ্লাদী কন্ঠে বলল,’কি কিনে দিয়েছে তোমাকে দেখি?’
স্বর্ণ শপিং ব্যাগগুলো তুলে সিমার হাতে দিলো।সিমা প্রবল উৎসাহে দেখা শুরু করলো।দেখতে দেখতে বলল,’বাহ!সুমন ভাইয়ের রুচি আছে বলতে হবে।কি সুন্দর ড্রেসগুলো।’
স্বর্ণ কিছু বলল না।সিমা আবারও বলল,’আমার বিয়ের আগে তো আমি এসবই পরতাম।বিয়ের পরও পার্টিতে মাঝেমধ্যে পরি।আচ্ছা,আমার জন্য কিছু কিনেছে?’
স্বর্ণ বলল,’না ভাবী আজ তো তোমার জন্য কিছু দেয় নি কিন্তু তোমার পছন্দ হলে এগুলো তুমি নিয়ে নিতে পারো।’
‘কি বলো!সুমন ভাই রাগ করবে না?’
‘না উনি আর কি বলবেন!তুমিই তো বলো উনি ভালো মানুষ।’
‘হ্যাঁ আসলেই তো!আচ্ছা এগুলো আমি নিয়ে নিলাম।তুমি কিছু মনে করো না।’
‘আরে না কি মনে করবো!তুমি নিয়ে যাও ভাবী।’
সিমা খুশিতে গদগদ হয়ে প্যাকেটগুলো নিয়ে নিজের ঘরে চলে গেলো।স্বর্ণ তাচ্ছিল্যের হাসি হাসলো।টাকা খরচ করলে সবাই ভালোই হয়।যেই টাকা খরচ বন্ধ হয়ে যাবে তখনই খারাপ হয়ে যাবে।দুনিয়াটাই এমন।
ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলো স্বর্ণ।মাথাব্যথা করছে প্রবল,যন্ত্রণা হচ্ছে ভিষণ।একটা ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়লো স্বর্ণ।যখন উঠলো তখন রাত নয়টা।ঘড়িতে চোখ পড়তেই চোখ কপালে উঠে গেলো।ভাবী কি তুলকালাম করে ফেলেছে কে জানে!আজকে সকালে আর দুপুরে তো মা রান্না করেছে রাতেরটাও কি মা করেছে?স্বর্ণ হাত,মুখ ধুয়ে দ্রুত চলে গেলো রান্নাঘরে।কিন্তু রান্নাঘরে গিয়ে সে বিস্মিত।সিমা রান্না করছে তাও বিরিয়ানী।বিরিয়ানীর গন্ধে সারাঘর সুবাসিত।ওকে দেখে সিমা বলল,’ঘুম হলো তোমার?’
‘হ্যাঁ ভাবী।দাও আমি করি।’
‘না তোমার করা লাগবে না।তুমি গিয়ে আজমানের সাথে টিভি দেখো।আমি তোমার জন্য কফি আনি।’
স্বর্ণ বিষ্ময়ের দকল সামলাতে পারছে না।কি বলছে এগুলো ভাবী।সে কফি বানাবে তাও ওর জন্য।কানে কি ভূল শুনছে।
স্বর্ণকে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে সিমা বলল,’আরে বাবা যাও না!আমি কফি নিয়ে আসছি।’
স্বর্ণ মাথা নেড়ে বিষ্মিত নয়নেই বেরিয়ে ড্রইং রুমে এলো।ড্রইং রুমে বসে আজমান কার্টুন দেখছে।স্বর্ণও ওর সাথে বসলো কিন্তু টিভিতে মন নেই ওর।ঠিক কি কারণে ভাবীর এত পরিবর্তন?মস্তিষ্কে একটু চাপ দিতেই স্বর্ণ বুঝলো বিকেলে ড্রেসগুলো দেওয়াতেই এই মহা পরিবর্তন সাধিত হয়েছে তবে এর স্থায়িত্ব একদিনের বেশি হবে না কোনভাবেই।
চলবে……
#শহরজুড়ে_প্রেম_নামুক
#পর্বঃ০৬
#Arshi_Ayat
স্বর্ণ মায়ের কথা মত কাউকে কিছু না জানিয়ে খালার বাসায় চলে গেলো।আজ খালার বাসায় থাকবে আর কোনোভাবেই মা ব্যাতিত কারো ফোন ধরবে না বিশেষ করে সুমনের ফোন তো ধরবেই না।অবশ্য আজ সারাদিনে মাত্র একবার ধরেছিলো তাতেই ছাড়ার নাম নিচ্ছিলো না লোকটা।ট্যুরে গিয়ে কি করবে না করবে তার বৃত্তান্ত দিচ্ছিলো।মেজাজ খারাপ হওয়ায় স্বর্ণ কিছু না বলে খট করে লাইন কেটে দিয়ে সাইলেন্ট করে রেখেছিলো।এই লোকটার সাথে যখনই কথা হয় তখনই মেজাজ খারাপ হয়ে যায়।যদি এর সাথে বিয়ে হয় তাহলে সংসার কতটা দুর্বিষহ হবে সেটা আর ভাবা যাচ্ছে না।
স্বর্ণ’র খালার দুই মেয়ে।দু’জনেরই বিয়ে হয়ে গেছে।এখন বাসায় খালা আর খালু ছাড়া কেউ থাকে না।স্বর্ণকে প্রায়ই যেতে বলে কিন্তু স্বর্ণই যায় না।আজ দেখেই খুশীতে জড়িয়ে ধরে চুমু খেলেন তিনি।খালুও ওর প্রতি বেশ আন্তরিক।স্বর্ণ এসেছে শুনে আপ্যায়নের তোড়জোড় লেগে গেলো।খালা ওকে নিজের বড় মেয়ের রুমে থাকতে দিলেন।এই ঘরে এর আগেই অনেকবার এসেছে স্বর্ণ।খালাতো বোনদের সাথে সম্পর্কও ভালো।দুইজনেই ওর বড়।বিয়েও হয়েছে কিছু বছর আগে এখন দু’জনেরই সন্তান আছে।এবার স্বর্ণর পালা ছিলো।কিন্তু…
স্বর্ণ ফ্রেশ হয়ে ফ্যানের নিচে বসতেই খালা হরেক পদের নাস্তা এনে হাজির করলো।স্বর্ণ মৃদু আপত্তি করে বলল,’এসবের কি দরকার ছিলো বলো তো!’
‘চুপ,তোর থেকে শুনতে চেয়েছি?খা তাড়াতাড়ি।আসিসই তো না।যবে থেকে দু’টোর বিয়ে হলো তোকেও আর দেখা যায় না।ওরা তো সংসারের জন্য আসতে পারে না তুই কেন আসিস না?পর হয়ে গেছি আমরা?আর এত শুকিয়েছিস কেন?’
স্বর্ণ হেসে বলল,’তুমি আর মা একই কথা বলো।তোমাদের কাছে আমি সবসময় শুকিয়েই থাকি।’
‘তো বলবো না?তুই ঠিকমত খাবি না,অনিয়ম করবি তো এমন হবেই।আপা তো ঠিকই বলে।’
‘হ্যাঁ জানি তো।তোমরাই ঠিক।’
‘আপা কেমন আছে রে?’
‘আলহামদুলিল্লাহ মা ভালো আছে।’
‘আলহামদুলিল্লাহ।অনেকদিন দেখি না।’
‘আসো কাল আমার সাথে বেড়িয়ে আসবে।’
‘হ্যাঁ যাবো কিন্তু তুই কাল কোথাও যাবি না।কমপক্ষে এক সপ্তাহ থাকতেই হবে।’
‘আরে না ইম্পোর্টেন্ট ক্লাস,প্রজেক্ট আছে।এতদিন পারবো না।’
‘ছোটোই থাকতি বড় হলি কেন?সন্তান বড় হলে বাবা-মায়ের কাছে থাকে না।’নয়নতারা আফসোসের সুরে বললেন।স্বর্ণও কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়লো।পরক্ষণেই নয়নতারা আবার বললেন,’শুনলাম তোর নাকি বিয়ে ঠিক হয়েছে?’
স্বর্ণ বিরস মুখে বলল,’হ্যাঁ।’
‘কি করে ছেলে?’
‘একটা প্রাইভেট কম্পানিতে ম্যানেজার।’
‘বাহ!বেশ ভালো।ছেলে তোর পছন্দ হয়েছে?’
‘হ্যাঁ।’স্বর্ণ না পারতে মিথ্যা বলল।সত্য বললে আরও অনেক প্রশ্ন উঠবে সেসব বলতে গেলে আর কিছুই বাকি থাকবে না তারচেয়ে এটাই ভালো।
‘বেশ ভালো।আমিও তোর জন্য একটা ছেলে দেখেছিলাম।খুব ভালো ছেলে আমার ননাসের ছেলে।দেখতেও ভালো।’
স্বর্ণ মজা করে বলল,’ছবি দেখাও পছন্দ হলে বিয়ে ক্যানসেল করে তোমার ননাসের ছেলেকে বিয়ে করবো।’
নয়নতারা হেসে বললেন,’এখন আর দেখিয়ে কাজ নেই তুই তোর হবু জামাইর দিকে নজর দে।’
‘হ্যাঁ তুমিও দাও আমার খালুর দিকে।’
‘আরে এখন তো আমরা বুড়ো হয়ে গেছি এত রঙ নেই মনে।’
‘কি আর বুড়ো হয়েছো তোমার যা রুপ আবার বিয়ে দেওয়া যাবে তোমাকে।’
‘হ্যাঁ হয়েছে তোর চাপাবাজী বন্ধ কর।ওই দু’টোও এমন।
স্বর্ণ হেসে বলল,’রুমা আপু আর সুমা আপু আসবে না?’
‘কয়দিন আগেই তো আসলো।তোকে বললাম তুই তো আসলি না।’
‘তখন তো পরীক্ষা চলছিলো।’
‘আচ্ছা এবার আসলে বলবো নি।’
‘আচ্ছা।দেখা হয় না অনেকদিন।
নয়নতারা আর কিছুক্ষণ কথাবার্তা বলে অর্ধখালি নাস্তার প্লেট’টা নিয়ে চলে গেলেন।উনি যাওয়ার পর স্বর্ণ চুপচাপ শুয়ে পড়লো।ঘুম পেয়েছে খুব।
সুমনের মেজাজ খারাপ হয়ে গেছে খুব।মেয়েটার সাহস কত না জানিয়ে ট্যুরে চলে গেলো।মনে মনে খুব খারাপ কয়েকটা গালমন্দ করলো হবু বউকে।কত ইচ্ছে ছিলো ট্যুরে গিয়ে দু’জনে কোয়ালিটি টাইম স্পেন্ড করবে আর এখন বেয়াদব মেয়েটা হাওয়া।সারাদিনে একবার মাত্র ফোন ধরেছে এরপর আর ফোন,মেসেজ কিছুতেই রেসপন্স করে নি।এভাবে উড়তে দেওয়া যাবে না।ফিরে এসেই বিয়ের জন্য চাপ দিতে হবে।বিয়েটা হোক একবার উড়াউড়ি একদম বন্ধ হয়ে যাবে।আর বিয়ের পর এমন বন্ধী করবে যে এমবিএ করা বের হবে।এমবিএ করারও কি দরকার সেই তো ঘর সংসারই সামলাতে হবে যেটুকু হয়েছে তাতেই তো বেশ।কেন যে তখন রাজি হতে গেলো।না রাজি হলেও স্বর্ণর কিছু বলার ছিলো না।না এই ভূল করা যাবে না।এসেই আশরাফের ব্রেইনওয়াশ করতে হবে যেন বিয়েটা তাড়াতাড়ি হয়।
স্বর্ণ’র এভাবে না জানিয়ে উধাও হওয়ার কারণে আশরাফ আর সিমা ওরাও রেগে আছে।কারো ফোনও রিসিভ করছে না বিচ্ছু মেয়েটা।সামনে পেলে ঠাটিয়ে চড় মারতো আশরাফ।বহু বাড় বেড়েছে।না জানিয়ে ট্যুরে চলে যাচ্ছে এখনই কয়দিন পর তো বিদেশ চলে যাবে।শাসন করতে হবে বেয়াদব মেয়েটাকে।
প্রচুর গালমন্দ করে গজগজ করতে করতে স্বর্ণকে ছাড়াই ওরা তিনজনে রওনা দিলো।ফিরবে তিনদিন পর।সুমন মনে মনে পণ করেছে ফিরেই স্বর্ণকে একটা শিক্ষা দেবেই।এত্তবড় সাহস যে কথার অমান্য করে।
স্বর্ণ ঘুম ভেঙেছে রাত দশটায়।ফ্রেশ হয়ে এসে ফোন চেক করতেই দেখলো সুমন,আশরাফ,সিমার অজস্র ফোন আর মেসেজ।একটু আগে নিহারিকা খানমও ফোন দিয়েছিলেন।স্বর্ণ ওগুলো দেখলো না শুধু মা’কে ফোন দিলো।নিহারিকা খানম মেয়ের ফোনের আশায় বসেছিলেন।ফোন ধরেই বললেন,’চলে গেছে ওরা।’
‘যাক ভালো।তুমি খেয়েছো মা?’
‘হ্যাঁ তুই?’
‘খাবো।ঘুম থেকে মাত্রই উঠলাম।’
‘আচ্ছা খেয়ে নিস তাড়াতাড়ি।’
‘মা তোমার একা লাগছে?আমি আসবো?’
‘না রে মা।এই একাকীত্ব আমার আজকের না বহুবছর পুরোনো।অভ্যাস হয়ে গেছে।তুই চিন্তা করিস না।’
‘আচ্ছা মা আমি কালই চলে আসবো।’
‘আচ্ছা,রাখছি।’
নিহারিকা খানম ফোন রেখে দিলেন।মায়ের সাথে কথা শেষ করে স্বর্ণ ফোন রেখে নয়নতারার কাছে চলে গেলো।তিনি ওকে দেখে বললেন,’ঘুম ভাঙলো তোর!আয় চল খাবি।আমরা খেয়ে নিয়েছি।তুই ঘুমে ছিলি বলে ডাকি নি।’
‘সমস্যা নেই।’
স্বর্ণ খাওয়া শেষ করে ঘরে এসে ব্যাগ থেকে খাতা বইপত্র বের করলো।এখনও বেশকিছু রিচার্স করা বাকি আছে।জমা দেওয়ার ডেট পরশু।একটা বিষয় জানার জন্য ফোন ওপেন করতেই স্বর্ণ দেখলো আরব মেসেজ করেছে একটু আগে।কৌতুহল বশত মেসেজ ওপেন করেই লেখা দেখলো,’আছো?’
স্বর্ণ রিপ্লাই করলো,’হ্যাঁ বলো।’
প্রায় সাথেসাথেই রিপ্লাই এলো,’কেমন আছো?’
‘এইতো।তুমি?’
‘ভালো।একটা কথা জিজ্ঞেস করি?’
‘হ্যাঁ অবশ্যই।’
‘তোমার কি উচ্ছ্বাস ভাইয়ার সাথে ব্রেকাপ হয়ে গেছে?’
‘হ্যাঁ।’
‘ও আচ্ছা।আরেকটা কথা বলবো?’
‘বলো।’
‘কল দিবো?কলে বলি?’
‘আচ্ছা।’
আরব কল দিতেই রিসিভ করলো স্বর্ণ।তারপর বলল,’বলো।’
‘আসলে উচ্ছ্বাস ভাইয়ার সাথে রিলেশন ছিলো বলে বলতে পারি নি।আমি তোমাকে ভালোবাসি।’
স্বর্ণ রিনরিনে গলায় হাসলো।বলল,’প্রজেক্ট কম্প্লিট?’
‘হ্যাঁ তোমার?’
‘না এখনো না।আচ্ছা তুমি তো আমাকে ভালোবাসো তাই না?তাহলে প্রমাণ করো।’
‘কিভাবে?’
‘এই প্রজেক্ট’টা ছেড়ে দাও।’
কথাটা বলার পরই আরব আর কিছু বলল না।নিঃস্তব্ধতা ছেয়ে গেলো।স্বর্ণ আবারও হাসলো ক্ষীণ!হায়রে ভালোবাসা!
চলবে….
(ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।)