শালিক_পাখির_অভিমান #পর্ব_২২,২৩

0
420

#শালিক_পাখির_অভিমান
#পর্ব_২২,২৩
#অধির_রায়
২২

ঘুম ভা’ঙ’তেই নিজেকে ইহানের উম্মুক্ত বুকে আবিষ্কার করলাম৷ দুই বাহুর মাঝে আবদ্ধ পাখি৷ উঠতে মন চাচ্ছে না৷ ডিম লাইটের আলোতে ইহানের মুখ অসম্ভব সুন্দর লাগছে৷ ঠোঁটের কোণে জমে আছে মিষ্টি হাসি। মাথার অবাধ্য চুলগুলো কপালে এলোমেলোভাবে ছ*ড়ি*য়ে আছে। এই লোকটা কি ঘুমের মাঝেও হাসে? মাঝে মাঝে আমার ভীষণ হিংসা হয় হাসি দেখে৷ ইচ্ছা করছে ইহানের ওষ্ঠ জোড়া স্পর্শ করতে৷ মনের মাঝে লুকিয়ে রাখা ভালোবাসার পূর্ণতা দিতে ইহানের ওষ্ঠের দিকে ঝুঁকতেই ইহান আঁখি মেলা তাকান৷ ঘুম ঘুম নয়নে মুচকি হেঁসে বলল,

“চু*রি করে আমাকে ভালোবাসা হচ্ছে৷ তুমি প্রতিদিন রাতে আমাকে নিজের কাছে টানো৷”

ইহানের কথায় লজ্জা পেলাম৷ নিজেকে সংযত করে সরে আসতে নিলেই আমাকে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে ধরলেন৷ লজ্জামাখা চোখে উনার দিকে তাকানোর সাহস হচ্ছে না৷ ইহান নেশা ভরা কন্ঠে বলল,

“ঘুমের সুযোগ নিয়ে মিষ্টি খেতে চাও! আমি তোমার সব অনুভূতি আগে থেকেই বুঝতে পারি৷ এখন তোমার কাঁপা ঠোঁটদ্বয় আমাকে আসক্ত করছে৷”

ঠোঁটের কোণে বাসা বেঁধেছে দু*ষ্টু হাসি৷ সে হাসি চোখ বুঝে অনুভব করে যাচ্ছি৷ ইহানের মুখের দিকে তাকানোর সাহস পারছি না৷ লজ্জায় ম*রে যেতে ইচ্ছা করছে৷ এই লোকটা আমাকে ভীষণ লজ্জায় ফেলতে ভালোবাসেন। শ্বাস ভীষণ ভারী হচ্ছে৷ নিজেকে ইহানের বাহুদ্বয় থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করলাম৷ ইহানের বেশ ভালোই লাগছে৷ আমার অবাধ্য কেশগুলে কানের কাছে গুছে দিলেন। সমস্ত দেহে ঝড় বয়ে গেল৷ অস্বাভাবিকভাবে কম্পন বয়ে যাচ্ছে সারা দেহে৷ খিঁচে আঁখি বন্ধ করে ফেললাম৷ কানের কাছে ফিসফিস করে বলল,

“তোমার লজ্জামাখা মায়াভরা মুখটা আমার ভীষণ ভালো লাগে৷ তোমার লজ্জামাখা মায়াভরা মুখটা আমাকে বারং বার রাতের কথা স্মৃরণ করিয়ে দিচ্ছে৷ আমার দু*ষ্টু মন তোমায়…”

উনার মুখ থেকে এসব কথা শুনতেই কেমন লজ্জা লাগছে৷ আমি “না” বলে উনাকে জড়িয়ে ধরে মুখ লুকালাম। শেষ রক্ষা হবে কিভাবে? আযানের একটু আগেই ঘুম ভেঙে যায়৷ ভোর সকালে নিজর অবাধ্য ভালোবাসা প্রকাশ করতেই অবস্থা নাজেহাল। আমি কবে থেকে এতো লজ্জাবতী হলাম? আবার নেশা ভরা কন্ঠে বলল,

“লজ্জাবতী তোমার লজ্জামাখা মুখটা আমাকে ভীষণ কাছে টানে৷ তোমার মায়ায় বার বার ফেঁসে যায়। বাহিরের অঝোর ঝড়ো হাওয়া বলে দিচ্ছে শালিকের লজ্জা ভাঙাতে৷ তা”ন্ড’ব আবহাওয়া তোমাকে আবার নিজের করে পেতে চাচ্ছে।”

উনার কথায় আমি মাথা তুলে তাকাতে পারছি না৷ উনাকে জড়িয়ে ধরে উনার দেহের সুভাস নিচ্ছি৷ হারিয়ে যাচ্ছি উনার মাঝে৷ কথা বলার সুযোগ পাচ্ছি না৷ আজ আমার কাছে স্মরনীয় দিন৷ ঝড়ো হাওয়া আমাদের মনকে অশান্ত করে দিয়েছে৷ ভালোবাসার সাগর দেখিয়েছে। দূরত্বকে টেনে এসেছে স্বামী স্ত্রীর বন্ধনে৷ মসজিদ থেকে আজানের ধ্বনি কানে আসতেই বললাম,

“শাওয়ার নিয়ে আসেন৷ আজ থেকে আমরা এক সাথে ফজরের সালাত আদায় করব৷ আপনার কোন বাহনা শুনবো না৷”

ইহান আমাকে আরও জোরে চেপে ধরে বলল,

“তোমাকে ছাড়া শাওয়ার নিতে নিজেকে বেমানান লাগবে৷ তুমি চাইলে আমরা একসাথে শাওয়ার নিতে পারি৷”

অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলাম উনার দিকে৷ গম্ভীর কন্ঠে আদেশ দিলাম,

“এখনই শাওয়ার নিয়ে আসেন৷ আর একটা কথা বললে দাঁত ভেঙে দিব৷”

আমার চোখে চোখ পড়তেই কিছু বলতে পারলেন না৷ বাধ্য স্বামীর মতো ওয়াসরুমে চলে গেলেন৷ আমি পূর্বের জানার গ্লাস টেনে দিলাম৷ পাখির কলকলিয়ে যাচ্ছে৷ সারারাত বৃষ্টিতে ঘুমাতে পারিনি অসহায় পাখিগুলো৷ আনমনে ভেবে যাচ্ছি পাখির কথা৷ ভাবনার মাঝে পিছন থেকে ইহান জড়িয়ে ধরে৷ কেঁপে উনার হাত চেপে ধরে৷ আমার কাঁধে মুখ ঠেকিয়ে বলল,

“আমার কাছে আজকের রাতটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে৷ আজ শুধু তোমাকে সময় দিব৷ তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে আসো৷ দু’জনে একসাথে সালাত আদায় করব৷ তোমার জন্য আমি অপেক্ষা করছি৷”

শীতল হাওয়া কোমল স্পর্শ ত্যাগ করে ওয়াসরুমে যেতে মন ঠাঁই দিচ্ছে না৷ আল্লাহর ফরজ কাজ করতে হবে আগে৷ আল্লাহকে খুশি রাখার জন্য উনার পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে৷ মহানবী (স) এর পথ অনুসরণ করতে হবে৷ ইবাদতে মশগোল থাকতে হবে৷ শুরু হলো আমাদের নতুন পথ চলা আল্লাহর নাম নিয়ে৷ ইহান সালাত আদায়ের পর উনি শুয়ে পড়লেন৷ আমি কুরআন শরীফ তেলওয়াত করতে থাকলাম৷ বেলকনিতে বসে প্রকৃতির আলোতে আল্লাহর দেওয়া পবিত্র কুরআন শরীফ তেলওয়াত করলে মনে প্রশান্তি পাওয়া যায়৷

আজ খাবার টেবিলে ইমন ছাড়া সবাই খাচ্ছে৷ আমার চোখ শুধু শ্রুতি ভাবীর দিকে৷ শ্রুতি ভাবীও নিয়মিত সালাত আদায় করেন৷ আল্লাহর রহমত বাড়ির প্রতিটি সদস্য সঠিক সময়ে সালাত আদায় করেন৷ শুধু সালাতে আবদ্ধ করতে পারিনি ইমন ভাইয়াকে৷ ইমন ভাইয়া শুক্রবারে শরীফ চৌধুরীর চাপে পড়ে জুম্মার সালাত আদায় করেন৷ আমি আফসানা চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে প্রশ্ন করলাম,

“ম্যাডাম ইমন ভাইয়া কই? এখানে বাড়ির সবাই একসাথে বসে খাবার খাচ্ছি, ইমন ভাইয়া খেতে আসল না৷”

আমার কথা শুনে আফসানা চৌধুরী শ্রুতি ভাবীর দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন৷ কোন জবাব পেলাম না আফসানা চৌধুরীর কাছ থেকে৷ আবারও পুনরায় প্রশ্ন করলাম,

“শ্রুতি ভাবী ইমন ভাইয়ার খুঁজ জানেন না৷ আপনি শ্রুতি ভাবীর দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলে সব ঠিক হবে না৷ আমার চোখে ইমন ভাইয়া ধরা পড়েছে৷”

আমার কথায় খাবার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন৷ আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করেন৷ অগ্নিমূর্তির ন্যায় নেত্র পাকিয়ে উচ্চ স্বরে প্রশ্ন করল,

“খাবার টেবিলে আমি অচথা প্রশ্ন করা পছন্দ করিনা৷ তোমাকে টেবিলে খাবার অনুমতি দেওয়া হয়েছে মানে তোমাকে বাড়ির বউ হিসেবে মেনে নেয়নি৷ নিজেকে বাড়ির কর্তী ভেবে ভুল করবে না৷ নিজের সীমার মাঝে থাকো৷”

শরীফ চৌধুরী কোমল কন্ঠে বলল,

“শালিককে বকাবকি করে লাভ কি? সবাই খেতে আসছে ইমন খেতে আসল না৷ ইমন তো আমাদের সাথে ঠিকমতো খাবার খায়না৷ তার সমস্যা কি? আমি নিজে ইমনকে ডেকে আনছি৷”

শরীফ চৌধুরী উঠতেই শ্রুতি ভাবী বলল,

“ইমন ঘরে নেই৷ আজ রাতে ইমন বাসায় ফিরে নি৷ অনেকবার ফোনে ট্রাই করছি। কিন্তু ইমনের ফোন বন্ধ।”

আফসানা চৌধুরী চিন্তিত স্বরে বলল,

“ইমন বাড়ি ফিরেনি আমাকে জানাতে পারলে না৷ আমি কি বাসায় ছিলাম না? ইমন কি তোমাকে না বলে কোথাও যায়?”

শ্রুতি ভাবী সুযোগ বুঝে সবার সামনে বলল,

“মা আপনি সবার সামনে মিথ্যা কথা বলছেন কেন? গতকাল রাতে আপনার রুমে যখন নক করলাম তখনই তো বললাম৷ আপনি নিজেই বললেন ইমন কোথায় গেছে আপনি জানেন? বাবাকে বলেন ইমন কোথায়? বাবা আপনি তো আমাকে দেখেছেন৷ আমি বুঝতে পারলাম না; মা আমার উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা করল কেন?”

রাতে শ্রুতি ভাবী পেইন ব্রাম নেওয়ার জন্য নক দেন৷ সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাড়ে হাঁড়ি ভেঙে দিলেন৷ শ্রুতি ভাবীর পারফেক্ট অভিনয় দেখে মুগ্ধ হলাম৷ মা, ছেলের লু*কো*চু*রি ধরা পড়বে৷”

আফসানা চৌধুরী পরিস্থিতি সামলিয়ে নেওয়ার জন্য কিছু একটা ভাবলেন৷ মাথায় বিলি দিতে দিতে বলল,

“আমর মাথা থেকে একদম বেরিয়ে গেছিল৷ ইমন আনমোনের বাসায় গেছে৷ আনমোন অনেকটা অসুস্থ। তাকে নিয়ে হসপিটালে গেছিল৷ বৃষ্টিতে আটকা পড়ে৷ আমার বোনটা কেমন আছে আমি জানি না৷”

কথা বলার মাঝে চোখের জল ফেলল৷ এমন অভিনয় করল যেন ঘটনা সত্য সত্য অসুস্থ হয়েছেন৷ শরীফ চৌধুরী বিচলিত কন্ঠে বলল,

“আনমোন অসুস্থ হয়েছে আমাকে তো একবারও বললে না৷ আমি তাকে ছোট বোনের মতো ভালোবাসি৷ মায়া আমার ফোনটা নিয়ে আয় তো৷ আমি ফোন দিয়ে একটু খবর নেয়৷ আমার বোনটা ঠিক আছে কিনা৷”

শরীফ চৌধুরীর কথা শুনে আফসানা চৌধুরী ভয় পেয়ে যান৷ ভয়ে কয়েকটা শুকনো ঢুক গিলেন৷ চিন্তিত কন্ঠে বলল,

“আরে তুমি খাওয়া শেষ করো৷ আমি সকালে ফোন দিয়েছিলাম৷ এখন ভালো আছে৷ তোমাকে কোন চিন্তা করতে হবে না৷”

ততক্ষণে সবারই প্রায় খাওয়া শেষ৷ শরীফ চৌধুরী খাওয়া শেষ করে বলল,

“আমার খাওয়া শেষ৷ আমি ফোন না করলে শান্ত হতে পারব না৷ আমি আগে একটু ফোন করে নিজের কানে শুনবো৷”

আনমোন হলো আফসানা চৌধুরীর ছোট বোন৷ প্রতিমাসে এখানে ঘুরতে আসেন৷ উনি আমাকে একদম সহ্য করতে পারেন না৷ আমাকে দেখলে তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন৷ আমি ইহানকে চোখের ইশারায় ফোন দিতে বললাম৷ ইহান ইশারা বুঝতে পেরে ফোন দিল৷ শরীফ চৌধুরীর দিকে ফোন এগিয়ে দিয়ে বলল,

“বাবা আমি আন্টিকে ফোন দিয়েছি৷ আপনি কথা বলে নেন৷”

ফোনটা শরীফ চৌধুরী নেওয়ার আগে আফসানা চৌধুরী খ*প করে নিলেন৷ রিসিভ হতেই বলে উঠল,

“তুই সুস্থ আছিস? গতকাল ডক্টর তোকে কি বলল? আর ইমনকে তাড়াতাড়ি বাসায় পাঠিয়ে দিবি৷”

আফসানা চৌধুরীর থেকে আনমোন খেলায় একধাপ এগিয়ে৷ বুদ্ধি খাটিয়ে এ যাত্রায় বেঁচে গেলেন আফসানা চৌধুরী। খাওয়া শেষ হতেই সবাই চলে যান৷ শ্রুতি ভাবী আফসানা চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে বলল,

“মা আমাকে আর অন্ধকারে রাখতে পারবেন না৷ দিনের আলোর মতো সব চকচকে হয়ে গেছে৷ ইমন আমাকে অনেক বার ঠকিয়েছে৷ ইমনের অপরাধের বিচার আইন করবে৷ মা, ছেলে সকল সীমা অতিক্রম করে ফেলেছেন। আপনাকে অনেকবার বলছি আপনি ইমনকে বুঝিয়ে বলেন৷ ছেলেকে না বুঝিয়ে আপনি বললেন, ‘ছেলে মানুষ দুই, তিন নারীর প্রতি আসক্তি থাকবে৷ ভালো না লাগলে ডিভোর্স দিয়ে চলে যাও৷ মোটা অঙ্কের যৌতুক নিয়ে ছেলে বিয়ে দিবেন৷’ এখন আমি বলছি ইমনকে জেলের ভাত খাওয়াবো৷ এমন শাস্তি পাবে মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকাতে পারবে না৷”

শ্রুতি ভাবী হুমকি দিয়ে নিজের রুমে চলে যান৷ আফসানা চৌধুরীর মুখ দেখার মতো হয়েছে। উনার ভালোবাসায় এতোটা মুগ্ধ ছিলাম কখন উনার পিছন পীট বুঝতে পারিনি৷ ধপাস করে সোফায় বসে পড়েন৷

ইহানের সাথে বের হতে বলছে৷ ইহানের দেওয়া নীল শাড়ি পড়ে বারবার নিজেকে আয়নায় দেখছি৷ নিজেকে খুটিয়ে খুটিয়ে দিছ্ঋি৷ নীলা শাড়িতে আমায় বেশ ভালো লাগছে৷ ইহান বিছানায় বসে গোমড়া মুখ করে বলল,

“বউকে নিজের হাতে শাড়ি পড়ানোর অনেক শখ ছিল৷ কিন্তু আমার বউ শাড়ি পড়তে পারে৷ তোমাকে শাড়ি পড়া কে শিখিয়েছেন? তাকে সামনে পেলে তার হাত দু’টোতে ভালোবাসার পরশ একে দিতাম৷”

ইহানের এমন কথায় ভীষণ হাসি পেল৷ ঠোঁট কামড়ে হাঁসি আটকানোর চেষ্টা করলাম৷ ইহান আমাকে টেনে বিছানায় বসিয়ে দেন৷ আফসোস অসহায় কন্ঠে বলল,

“তোমাকে শাড়ি পড়াতে পারিনি সমস্যা নেই৷ তোমাকে নিজ হাতে সাজাতে তো পারব৷ এখন মানা করতে পারবেন না।”

আমি মানা দিতে পারলাম না৷ ইহান নিজ হাতে কাঁচের নীল চুড়ি পড়িয়ে দিচ্ছেন৷ উনার স্পর্শে আমি কেঁপে উঠছি৷ আজ কি উনার মনে রোমান্টিকতা বাসা বেঁধেছে? উনি রোমান্টিকভাবে চুড়ি পড়াচ্ছেন৷ আমাকে লজ্জা দিতে চোখ চোখ পড়তেই চোখ টিপল দেন৷ আগে শুনে এসেছি বিয়ের পর ছেলেরা অ*স*ভ্য হয়ে উঠে৷ এখন হারে হারে উপভোগ করতে পারছি অ*স*ভ্য*তা৷ আমার হাতে আলতো করে ভালোবাসার স্পর্শ দেন৷ দুই হাত দিয়ে বিছানায় চেপে ধরে উনার অ’ত্য’চা’র সহ্য করে যাচ্ছি৷ চুড়ি পড়ানোর পর কপালে টিপ, ঠোঁটে লিপস্টিক দিয়ে দেন৷ আমার পা উনার ভ্যাছে রেখে নুপুর পড়িয়ে দেন৷ আমার শাড়ির সাথে ম্যাচিং করে উনিও নীল রঙের পাঞ্জাবি পড়েন৷ আমার কপালে আলতো করে ভালোবাসার স্পর্শ একে দেন৷ আমার হাত ধরে সিঁড়ির কাছে আসতেই পাঁজাকোলে তুলে নেন৷ মিনমিনিয়ে বললাম,

“আপনি দিনে দিনে খুব দু*ষ্টু হয়ে যাচ্ছেন৷ ডাইনিং রুমে সবাই বসে আছে৷ আমাদের এমন অবস্থায় দেখলে কি ভাববে?”

ডোন্ট কেয়ার লুক নিয়ে বলল,

“কে কি ভাববে সেসব নিয়ে আমি মাথা ঘামায় না? আমি দু*ষ্টুা*মি শুরুই করলামই না৷ দু*ষ্টা*মি*র সীমা বাড়িয়ে দিলে খুব তাড়াতাড়ি মা ডাক শুনতে পাবে৷”

লজ্জায় উনার বুকে মুখ লুকালাম।

চলবে….

রোমান্টিক আবহাওয়ায় রোমান্টিকতা দিলাম৷ তবুও কেউ উৎসাহ দিচ্ছে না৷ উৎসাহ পেলে লিখতে মন বসে৷
#শালিক_পাখির_অভিমান
#পর্ব_২৩
#অধির_রায়

রাতে ঝড়ো বৃষ্টি হওয়ায় আকাশ বেশ ফর্সা৷ সূর্য্যি মায়া উঁকি দিচ্ছে৷ বড় আমগাছের পাতার একটু ফাঁকা অংশ ভেদ করে আসছে সূর্যের আলো৷ সূর্যের আলো ইহানের হাত ঘড়িতে পড়ছে। ঘড়ির গ্লাসে সূর্যের আলো প্রতিফলিত হয়ে চারদিকে চিকচিক করছে৷ উনি রিক্সা উঠে বলল,

“উঠে আসো৷ দাঁড়িয়ে আছো কেন? যেতে ইচ্ছা করছে না৷”

আমি এদিক ওদিক তাকিয়ে হাত বাড়িয়ে দিলাম৷ উনার হাতে ভর করে রিক্সায় চেপে বসলাম৷ আজও কেমন অজানা সংকোচ নাড়া দিচ্ছে মনে৷ গন্তব্য কোথায় জানা নেই? রিক্সা চলতে শুরু করল আপন গতিতে। হাতের উপর হাত রেখে উনার কাঁধে মাথা দিলাম৷ মানুষটার দিকে তাকিয়ে বললাম,

“আপনি শুধু আমার৷ আপনার দিকে কখনও কেউ নজর দিতে পারবে না৷ আমি ভাবতেই পারছি না আপনি আমার হৃদয়ে জোড়ে জায়গা করে নিবেন৷”

ঠোঁটের কোণে হাসির রেখা বজায় রেখে আমার দিকে নিষ্পলক তাকান৷ আমার হাতের উপর আলতো করে হাত রেখে বলল,

“আমি যতদিন বেঁচে আছি ততদিন আমি তোমার হাত ছাড়ব না৷ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমি তোমার সাথে চলতে চাই৷”

আমি উনাকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছি৷ কানের কাছে হালকা কালো বর্ণের তিল ঝলঝল করছে৷ এতোদিন চোখে পড়লেও তেমন খেয়াল করিনি৷ কালো তিলটা উনার সৌন্দর্য দ্বিগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে৷ ইচ্ছা করছে ওষ্ঠদ্বয় স্পর্শ করি৷ প্রতিবারের মতো এবারও নিজের ইচ্ছাকে কুরবানী দিলাম৷ ত্যাগের মাঝে সকল ভালোবাসা নিহিত। উনি অন্য দিকে তাকিয়ে বলল,

“এভাবে কাকে দেখছ? নেশাভরা চাহনি অন্য কিছু সাড়া দিচ্ছে৷”

এদিক ওদিক দিকে নিজেকে সংযত করলাম৷ উনি তো আমার দিকে তাকান নি৷ উনি কিভাবে জানলেন আমি উনার দিকে তাকিয়ে আছি? আমার দিকে না তাকিয়েই বুঝতে পারেন৷ আমতা আমতা করে জবাব দিলাম,

“আপনাকে দেখার কি আছে? রাস্তার আশেপাশে অনেক কিছুই দেখতে পাচ্ছি৷ আমি ভুলেও আপনার দিকে তাকায়নি৷”

উনি আমার উত্তরে সন্তুষ্ট হয়েছেন কিনা বুঝতে পারলাম না৷ তবে মুখের কোণে হাসির রেখা ফুটে উঠেছে। সন্দিহান চোখে আমার দিকে তাকান৷ মুচকি হেঁসে বলল,

“আমার পাশে একটা বোকা মেয়ে বসে আছে৷ সে নিজেকে খুব চালাক এবং চতুর ভাবে৷ সে জানেনা সে কতটা বোকা৷”

আমি গলায় বললাম,

“রাস্তাঘাটে মেয়েদের বোকা বললে আমি মেয়ে হয়ে সহ্য করব না৷ আমি আপনার নামে ইভটিজিং এর মা’ম’লা করব৷”

“আমাকে সাথে নিয়ে যেতে পারো৷ আমিও মামলা করব৷”

সরু চোখে তাকিয়ে বললাম,

“আপনি কিসের জন্য মামলা করবেন৷ আপনি তো ইভটিজিং এর স্বীকার হোননি৷”

আমি মামলা করব আমার কানের পাশে যত্নে বেড়ে উঠা তিলটার প্রতি একজন মেয়ে লোভনীয় চোখে তাকিয়েছে৷”

এভাবে ফেঁসে যাব ভাবতেই পারিনি৷ হাতেনাতে চো*র ধরলে যেমন পরিস্থিতি হয়৷ আমার ঠিক এমন অবস্থা। হাতির ঝিলে এসে আমাদের রিক্সা থামল৷ আমার হাত ধরে তিনি ঝিলের নির্জন একটা জায়গায় আসেন৷ পানিতে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে পাশাপাশি বসে আছি৷ কারো মুখে কোন কথা নেই৷ উনার দিকে তাকাতেই লজ্জা লাগছে৷ উনি উনার পকেট থেকে শরতের বকুল ফুলের মালা বের করলেন৷ শরৎ কালেও যে বৃষ্টি হয় জানা ছিল না৷ শুধু বৃষ্টি নয়৷ ঝড়ো হাওয়ার সাথে মূলধারার বৃষ্টি৷ নিজ হাতে আমার ঘন কেশে পড়িয়ে দিলেন৷ মুচকি হেঁসে বলল,

“তোমাকে এখন পরিপূর্ণ লাগছে৷”

তাজা ফুলের গন্ধ নাকে আসছে৷ উনি বকুল ফুল কখন কিনলেন? উনি সব সময় আমার সাথেই ছিলেন৷ সন্দিহান দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,

“আপনি বকুল ফুল কোথা থেকে পেলেন? আপনি সব সময় আমার সাথে ছিলেন৷ দেখে মনে হচ্ছে একদম তাজা জীবন্ত ফুল৷”

“আমি একটু আগেই কিনেছি৷ মন অন্য জায়গায় পড়ে থাকলে সেদিকে খেয়াল থাকে না৷ কার কথা ভাবছেন ম্যাডাম।”

আমি কোন জবাব দিতে পারলাম না৷ পড়ন্ত বিকেলের সূর্য পানিতে ঝিকিল দিচ্ছে৷ প্রকৃতির সৌন্দর্য সব সময় আমাদের মুগ্ধ করে৷ আমি মুগ্ধ নয়নে প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখতে বিজি৷ রাত এগারোর টার দিকে বাসায় ফিরলাম৷ সারাদিনের ক্লান্তিতে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই রাজ্যের ঘুম চলে আসল৷

প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করে বেঁচে থাকতে হয়৷ স্বাধীন ভাবে এক কদম এগিয়ে যাওয়া যাইনা৷ মায়ের গর্ভ থেকে যুদ্ধ করে পৃথিবীতে আসতে হয়৷ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত এ যুদ্ধ বহাল থাকে৷ কলেজে প্রথম দিকে ঠিকঠাক থাকলেও আজ সব কিছু ভিন্ন। আমাকে দেখেই সকলেই দৃষ্টি সরিয়ে নিচ্ছে৷ প্রথম দিকে আমাকে সবাই মেনে নিলেও এখান মেনে নিতে পারছে না৷ তাদের চাহনি দেখে মনে হচ্ছে নতুন সময় সাদরে গ্রহণ করেছে৷ এখন আর পাচ্ছে না৷ আমি সামনের বেঞ্চে বসতেই ছোঁয়া বলল,

“শালিক তুমি এ বেঞ্চে বসতে পারবে না৷ তোমার মতো কালো মেয়ের সাথে আমি বসতে পারব না৷ আমার আম্মু কালো মানুষের সাথে চলতে মানা করেছেন।”

ছোঁয়ার রেশ ধরে সবাই বলতে শুরু করল,

“হ্যাঁ শালিক আমরা তোমার সাথে বসতে পারব না৷ তুমি আজ থেকে পিছনের বেঞ্চে বসবে৷ তোমার মন কালো সেজন্য তোমার চেহারা কালো৷”

এদের কথা শুনে তপোধনে চলে যাচ্ছি৷ শিক্ষিত জনগোষ্ঠী আজও কুসংস্কার বিশ্বাস করে আসছে৷ নিজের অজান্তেই চোখ থেকে দুই ফোঁটা নোনা জল গড়িয়ে পড়ল। আজ মনে পড়ছে আশার কথা, বড়লোক ঘরের মেয়ে হয়েও কোন অহংকার ছিল না৷ আমাকে খুব ভালোবাসতো৷ নিহা, সানী একে একে স্কুল ফ্রেন্ডের কথা মনে নাড়া দিচ্ছে। তারা একবার অবহেলা করলেও আরেরকবার বুকে জড়িয়ে নিয়েছে। এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করলাম৷ ঝাঁঝালো কণ্ঠে বললাম,

“আমি পিছনের বেঞ্চে কেন বসবো? ছোঁয়ার বসতে ইচ্ছা না হলে সে পিছনে বসতে পারে৷ এখানে বসলে আমি কিছু মনে করব না৷”

আমার কথায় ছোঁয়া রেগে যায়৷ আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। কটমট করে বলল,

“শাকিল তুমি পিছনে বসতে৷ আমরা তোমার জন্য তো পিছনে বসতে পারিনা৷ এখানে তুমিই একমাত্র কালো মেয়ে৷ আমরা তোমার সাথে বসতে পারব না৷”

“আমি যেখানে সিট পেয়েছি সেখানেই বসবো৷ আমাকে পিছনে বসতে বলার তুমি কে? তুমিও এই কলেজের ছাত্রী আমিও এই কলেজের ছাত্রী৷ আমাকে আর একবার পিছনে বসতে বললে ছুটির পর তোমাকে পি*টা*ব।”

ছোঁয়া আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলার সাহস পেলো না৷ ছোঁয়ার গায়ের রং ফর্সা৷ দেখতে মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর। ছোঁয়ার চোখে মুখে ভয়ের ছাপ ফুটে উঠেছে৷ অন্যরা কিছু বলার সুযোগ পেল না৷ তার আগেই স্যার রুমে চলে এসেছেন৷ ক্লাসের মাঝে মাঝে ছোঁয়ার দিকে ক্ষিপ্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করেছি৷ সে ক্ষিপ্ত দৃষ্টি থেকে বাঁচার জন্য নিজেই পিছনে গিয়ে বসেছে৷ ছুটির পর একে একে চলে যাওয়ার জন্য তাড়াহুড়ো। ছাত্র জীবনে ছুটির ঘন্টা বাজা মানেই ঈদ৷ সকলের মুখের হাসির রেখা ফুটে উঠে। আমি নিজ জায়গায় বসে আছি৷ আমার উদ্দেশ্য হলো ছোঁয়ার ভয় দূর করা৷ ছোঁয়ার আমাকে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই ছোঁয়ার হাত ধরে ফেললাম৷ ছোঁয়া ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলল। কোমল গলায় বললাম,

“জোরে কথা বললে এখানেই মে*রে ভু*ত বানিয়ে দিব৷ চুপচাপ আমার পাশে বসো৷”

দুই মিনিটের মাঝেই সমস্ত রুম ফাঁকা হয়ে যায়৷ ছোঁয়া ভয়ে অস্বাভাবিকভাবে কাঁপছে। আমি ছোঁয়ার হাতের উপর হাত রাখতেই ছোঁয়া ভেজা গলায় বলল,

“প্লিজ শালিক আমাকে ছেড়ে দাও৷ আমি তোমার সাথে আর কখনও খারাপ ব্যবহার করব না৷”

“আমাকে ভয় পাচ্ছো কেন? আমি তোমার কোন ক্ষতি করব না৷ চল তোমার সাথে চা খেতে খেতে কথা বলা যাবে৷”

ছোঁয়া ভেজা গলায় বলল,

“আমি চা খাবো না৷ আমি বাড়িতে যাব৷ কলেজ ছুটির পর কিছু খেতে ইচ্ছা করছে না৷ দেরি হলে মা চিন্তা করবেন।”

রাগী দৃষ্টিতে তাকাতেই ছোঁয়া চুপসে গেল৷ ছোঁয়া এতোটা ভিতু ভাবতেই পারিনি৷ দ্বিতীয় কোন কথা বলার সুযোগ পেল না৷ চায়ের কাপে চুমু দিয়ে বললাম,

“তোমার ভয় তোমার দূর্বলতা৷ ভয়কে জয় করতে শিখো৷ এই ভয় তোমার সর্বনাশের কারণ হয়ে দাঁড়াবে৷”

ছোঁয়া কাঁপা কাঁপা গলায় বলল,

“আমার আম্মু সব সময় এসব থেকে দূরে থাকতে বলেছেন৷ কখনও কারোর সাথে কথা বলতে মানা করেছেন৷”

“আমি তোমাকে মারামারি করতে বলছি না৷ ভয় পেলেও মুখে কখনও প্রকাশ করবে না৷ আজ তোমাকে একটা গল্প শোনাব৷ আমিও তোমার মতো অনেক ভীতু টাইপের মেয়ে ছিলাম৷ কখনও মাথা উঁচু করে কথা বলার সাহস পেতাম না৷ আমার গল্পটা তোমাকে শুনাব৷”

ছোঁয়ার চোখে মুখে উজ্জ্বল হাসির রেখা ফুটে উঠে। উৎফুল্ল হয়ে বলল,

“আমি শুনতে চাই৷”

চায়ের কাপ টেবিলে বলতে শুরু করলাম,

“আনন্দপুরের নিষ্পাপ মেয়ে শাকিল৷ সবুজের ছোট গাছের ছোঁয়ায় ভরে উঠতো কোমল মন৷ মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়ানো তার প্রধান কাজ ছিল৷ তবুও লোক সমাজের চুক্ষুর আড়ালে থাকত সব সময় ৷ চুপি চুপি সবুজ বনে ঘুরে বেড়াতো৷ বাবা শখ করে স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেন৷ স্কুলে পিছনের বেঞ্চে তার জায়গা হতো৷ স্যাররাও কোনদিন পড়া ধরত না৷ শালিক নামে তাদের একটা ছাত্রী আছে জানেন না। আমার দিকে তাকানোর সময়টুকু নেই৷ অবলা শালিক তবুও এক একটু ভালোবাসা পাওয়ার জন্য দোয়ারে দোয়ারে ঘুরত। সবাই অপয়া বলে তাড়িয়ে দিতেন। সকালে আমার মুখটাও দেখত না৷ এক সময় আমার কিশোর জীবনে ফুটে বিয়ের ফুল৷ যৌতুকের বিনিময়ে আমার বিয়ে হয়৷ স্বামীর শারীরিক মানসিক অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য বাবা জায়গা জমি বিক্রি করে যৌতুকের টাকা দেন৷ টাকাতে মন ভরে নি৷ প্রতিদিন শুরু হতো লা*থি উ*স্টা দিয়ে৷ মাটি আটকে ঘর করার স্বপ্ন দেখতান৷ স্বামীর রুচিশীল হয়নি বলে ডিভোর্স পেপার হাতে ধরিয়ে দিলেন। লোক সমাজেও আমার আর কোন জায়গা হলো না৷ মুখ দেখতে চাইনা কেউ। সবাই অপয়া বলে দূরে ঠেলে দিতেন৷ ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে জেনে যেতে পারিনি৷ শাকিলার বিয়েতে চো*রের অপবাদ দিলেন৷ চো*রের অপবাদে আমার ফুপি, দাদী সু*ই*সা*ই*ড করেছেন৷ চো*রে*র অপবাদ থেকে মৃত্যু অনেক ভালো৷ নিষ্ঠুর রাতের আঁধারে পালিয়ে আসি ঢাকা শহরে৷ শুরু হয় নতুন পথ চলা৷ দেয়ালে পীঠ ঠেকে যায় দু*ষ্টু লোকের চোখে লোভনীয় দৃষ্টিতে৷ বুঝতে পেরেছি নিজেকে শক্ত হতে হব। মোকাবেলা করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে৷ আমার মনের সকল দূর্বলতা ছিল চোখের পানি৷ আল্লাহর আমাকে ধৈর্য ধারণ করতে শিখিয়েছেন। আল্লাহর উপর ভরসা করে আজ আমি এতদূর এগিয়ে আসছি৷ আল্লাহ তায়ালার কাছে হাজার হাজার শুকরিয়া।

চোখের কোণে পানি জমে উঠেছি৷ এদিক ওদিক তাকিয়ে নিজেকে শান্ত করলাম৷ ছোঁয়া কান্না করতে করতে হেঁচকি তুলল। ছোঁয়ার দিকে পানি এগিয়ে দিলাম৷ পানি পান করে নিজেকে শান্ত করল৷ ছোঁয়াকে বললাম,

“বাসায় যাও৷ আমার কথা সম্পুর্ন তোমাকে বলতে পারিনি৷ সংক্ষিপ্ত কথায় তুমি ভেঙে পড়েছো৷ সকল ঘটনা জানলে তুমি এখন ঠিক থাকতে পারতে না৷”

ছোঁয়া আমাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করে দিল। বুঝতে পারলাম মেয়েটার মন অনেক কোমল৷ বাস্তবতার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে কষ্টকর হয়ে পড়বে৷

চলবে….

রিচ দেখে লেখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলি

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here