#শিশিরের কহিনুর,পর্বঃ৩৯(শেষ পর্ব)
#আরোহী নুর
কেটে গেলো আরও ছয় মাস নুর এখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা, রোদেলাও বাচ্চা নিতে চেয়েছিলো কিন্তু আকাশের কড়া বারন ডাক্তারি পাশ করার আগে নো চাইল্ড,এদিকে অনিল ভোরের সম্পর্কটাও এখন নতুন রুপ নিয়েছে,ভোরও এখন অনিলের প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে,অনিলের নিঃস্বার্থ ভালোবাসা যে ভোরকে অনিলকে ভালোবাসতে শিখিয়েই দিলো।
পুরো আট মাস চলছে,পেটটা অনেক বড় হয়ে গেছে আমার,আমিও নাদুসনুদুস হয়ে গেছি,উনি যখন তখন আমার গাল ধরে টান দেন বাচ্চাদের মতো আর বলেন,আমি নাকি দিন দিন আরও কিউট হয়ে পড়ছি,উনি সারাদিন ছায়ার মতো লেগেই থাকেন আমার সাথে,আমাকে চোখের আড়ালই করেন না,যদি আমার কিছু হয়ে যায়,আমার সাথে তিন তিন জন নার্স রাখা হয়েছে,আমাকে তো এখন একা হাটতেও দেওয়া হয় না,আর ঘরের কোনো সদস্যও কম যাচ্ছে না, কে কি করবে আমার জন্য কেউ যেনো তা ভেবেই উঠতে পারছে না,এরা পারলে তো আমায় সারাদিন কোলে নিয়েই বসে থাকবে,সারাদিন বসে বসে আমায় এটা ওটা ক্ষেতে হয়,আর না খেলে যে ব্যাঙ মশাই জোর করে খাইয়ে দেয়,আমি অনুভব করতে পারি আমার ভিতর আমাদের ভালোবাসার অস্তিত্ব বেড়ে উঠছে ধীরে ধীরে,মা হবার অনুভুতি টা যে এতোটা মধুর হয় তা হয়তো কখনো কল্পনায়ও ভাবি নি,এ যে পুরো এক আলাদা অনুভুতি, উনার পাগলামি একচুলও কমে নি আমার জন্য,বরং আরও বেড়ে গেছে,এদিকে এখন আমার সাথে বেবিও যে আছে,সারারুমটা বেবিদের ছবি দিয়ে ভরে দিয়েছেন,আমাদের রুমের সাথে কানেক্ট করে একটা বেবি রুম বানিয়েছেন,আমার তো মনে হয় এই শহরের সকল বেবিশপ উনি আমাদের রুমেই নিয়ে এসেছেন,বেবি আসার আগে এতোকিছু বেবি আসলে কি হবে একমাত্র আল্লাহ জানেন ,সেদিন যখন জানলেন আমি মা হবো পরেরদিন সকালে উঠেই উনি চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে সবাইকে ডেকে ডেকে বললেন যে উনি বাবা হতে চলেছেন,বাড়িতে মিষ্টান্ন ঝড় নিয়ে এসেছিলো এই পাগলটা।সত্যিই লোকটা পাগল, আমার ভালোবাসার পাগল।এদিকে প্রেগন্যান্সিতে মুড সুয়িং নিয়ে আমি উনাকে আজকাল অনেক প্যারা দেই,উনি সব হাসি মুখে মেনে নেন,কি করবো আমি আমার যে ক্ষনে ক্ষনে মন পাল্টায়,এই এটা মন চায় তো এই ওটা,কখনো হাসির মধ্যেও কান্না চলে আসে,আর কখনো বিনা কারনেই হাসতে থাকি খুশি করি।এখন রাত বাজে ২ টা হঠাৎ চকলেট খেতে মন চাইলো উঠেই ডাক দিলাম উনাকে,উনি ঝটফট উঠে পড়লেন।
কি হয়েছে লক্ষিটি।
চকলেট খাবো।
ওকে আমি আনছি।
উনি কিছুক্ষণ পর চকলেট,কেইক,পিজ্জা, বার্গার,ফুচকা আরও কি সব নিয়ে হাজির হলেন আমার সামনে।
আমি তো শুধু চকলেট চাইছিলাম।
কিন্তু আমি জানি চকলেট আনলে তুমি ফুচকা চাইতে,ফুচকা আনলে তুমি বার্গার চাইতে তাই আমি সব একসাথে নিয়ে এসেছি এবার যা ইচ্ছে খাও।
আমি যে এখন রোজ রাতেই এমন করি,মুড সুয়িং এর জন্য এটা আনলে ওটা চাই আর ওটা আনলে আরেকটা,মাত্র দুদিন এমনটা করার পর উনি তিনদিনের কাল থেকে সকল ব্যাবস্থা করে নিলেন,বিশ্বাস করা যায় উনি শুধু আমার খাতিরে আমাদের বাড়ির বাইরে পিজ্জা, বার্গার, ফুচকা,চকলেট, সব ধরনের খাবার যা আমার প্রয়োজন সব ধরনের স্টল লাগিয়ে দিয়েছেন,স্টলগুলো প্রতি রাতের জন্য,কারন দিনের বেলা উনি বাইরে থেকে আমায় এসব এনে দিতে পারবেন কিন্তু রাতে তো সব দোকান বন্ধ থাকবে,আর উনার বউ বাচ্চার আবদার পুরো হবে না এমন তো আর হতে পারে না,খাবার এনে উনি ফ্রিজেও রাখতে দেন না,আমি যাই খাবো সব নাকি ফ্রেস এবং তাজা হবে,তাই রাতের জন্য এমন ব্যাবস্থা করা আরকি,কিন্তু আমার আর কি কোনো কিছুই ঠিকমতো খেতে পারি না কখনো আর কখনো কখনো অনেক অনেক খাই আর তারপর অনেক করে বমি করি,মিষ্টি মা বলেছেন এ সময় এমনটা নাকি হয়ে থাকে,এদিকে উনি আমার জন্য এ ঘরের কাউকে শান্তিতে থাকতে দেন না,সবাই যেনো ডাক্তার হয়ে পাপ করেছে, যখন তখন আমাকে চেক আপ করানোর জন্য এদের যাকে পায় ধরে আনে,আমার তো কখনো মনে হয় বাড়িটাকে হাসপাতালই বানিয়ে দিবে লোকটা আমার জন্য,বেবিটা জলদি সুস্থভাবে পৃথিবীতে চলে আসলেই বাঁচি।
আমি একটু চকলেট খেয়ে শুয়ে পড়লাম এবার উনি আমার কপালে চুমু কাটলেন,তারপর আমার পেটে চুমু কাটলেন।আমি উনার মাথায় হাত বুলিয়ে বললাম।
অনেক ভালোবাসেন না ওকে।
উনি এবার উঠে এসে আমার কপালে আবারও নিজের অধর ছুঁইয়ে বললেন।
অনেক ভালোবাসি ওকে কিন্তু তোমার থেকে বেশি না,তোমাকে যে আমি সবথেকে বেশি ভালোবাসি আর এ ভালোবাসার সমতুল্য অন্য কোনো ভালোবাসা যে হতেই পারবে না কহিনুর। আই লাভ ইউ।
আই লাভ ইউ টু মি.খান।
পাঁচ বছর পর………
মি.খান কি করছেন কথায় কথায় বন্ধুক বার করলে হয় না কি?
ছাড়ো কহিনুর,এর সাহস কি করে হলো তোমার রিপোর্ট দেড়িতে দেবার কথা বলার,পুরো দুদিন,তোমার আজ শরীর খারাপ করছে আর এ রিপোর্ট দিবে দুদিন পর,এ দুদিনে যদি তোমার কিছু হয়ে যায় তখন আমি কি করবো,একে তো আমি মেরেই ফেলবো।
স্যার প্লিজ আপনি হাইপার হবেন না,আপনি একটু অপেক্ষা করেন আমি যেভাবে পারি রিপোর্ট দিচ্ছি।
কথাটা বলে ভয়ে লোকটা হাসপাতালের একটা কক্ষের দিকে দৌঁড়ালো,এদিকে উনাকে টেনেটুনে কোনোরকম বসিয়েছি আমি,রিভালভারটা হাতে নিয়ে নিয়েছি আমি কখন জানি কি অঘটন ঘটিয়ে দেয়,এক সন্তানের বাবা হয়ে গেছে এবার আরেকটার হবে তাও পাগলামি গেলো না,আমাকে নিয়ে এখন আরও বেশি পাগলামি করে,আরে আমার একটু মাথা ঘুরছিলো আর বমি হয়েছে সকালে দুবার,দূর্ভাগ্যবশত এই ব্যাঙটার সামনে এসব হয়েছে।আসলে দুদিন ধরে আমার এমনটা করছিলো ব্যাঙটা জানতো না,আগেও একবার মা হয়েছি তাই প্রেগন্যান্সির সিনড্রোম সম্পর্কে আমার ভালোই জানা আছে,ভেবেছিলাম আজকে লুকিয়ে টেস্ট করিয়ে আগের বারের মতো উনাকে স্যারপ্রাইজ দিবো কিন্তু বজ্জাতটা আমার সব স্যারপ্রাইজে জল ঢেলে আমায় নিয়ে আসলো এখানে,আমি এখনও একে এ সম্পর্কে কিছু বলি নি কিন্তু আমি সিওর আমি প্রেগন্যান্ট,ডাক্তারের কাছে আসায় ডাক্তার আমায় কিছু টেস্ট দিলেন তারপর টেস্ট করানোর পর রিপোর্ট দিতে দেড়ি হবে শুনে এমনটা করলো ব্যাঙটা,দশ মিনিটের মাথায় যদি আজ রিপোর্ট না পায় তবে হয়তো এ হাসপাতাল আর রাখবে না।যাক রিপোর্টটা কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসলো,বাঁচলো হাসপাতালটা।যা ভেবেছিলাম তাই আমি প্রেগন্যান্ট,ব্যাঙটার খুশি কে দেখে,হাসপাতালে এতো এতো লোকজনের সামনে আমাকে কোলে নিয়ে চিৎকার করে করে বলছে কহিনুর আমি আবারও বাবা হবো,ইয়েেেেে।সত্যিই পাগল লোকটা,পুরো হাসপাতালে মিষ্টি বিলি করলো আর সবাইকে চিৎকার করে করে বললো আমি আবার বাবা হবো আর এবার আমার মেয়ে হবে,আমি তো লোকটার এসব কান্ড দেখছি আর হাসছি,এতো বড় হয়ে গেলেও এখনও ঠিক বাচ্চাদের মতো আচরণ এর।
_______________
শুভ্র বসে বসে ওর বাবার ল্যাপটপে কিছু গুতাগুতি করছিলো আভা ওর পাশে বসে পুতুল দিয়ে খেলছিলো,হঠাৎ নীল এসে আভার পাশে বসলেই তৎক্ষনাৎ উঠে এসে নীলকে ঠাস ঠাস করে দু-তিনটা দিয়ে দেয় শুভ্র,ছেলেটাকে মেরে ফ্লোরে আড়ঁছে ফেলে,ছেলেটা ফ্লোরে পড়ে ভ্যা ভ্যা করে কেঁদে দেয়,আর আভা হঠাৎ এমন মার দেখে ভয়ে কাঁদতে লাগে,শুভ্র আভার কান্না দেখে এবার নিজের রাগটা দমন করলো আর আভার পাশে গেলো,গিয়ে ওর কান্না মুছে দিয়ে বললো।
প্লিজ তুই কান্না করিস না আভা তুই তো জানিস তুই কান্না করলে আমার একদমও ভালো লাগে না।কান্না করিস না প্লিজ।
আভা তোতলিয়ে বললো।
টবে টুমি ওকে মাললে কেনো।
ও তোর পাশে এসেছিলো তাই,তোর পাশে যেই আসবে তাকেই মারবো আমি।
তৎক্ষনাৎ ছেলেটির কান্না শুনে সেখানে সবাই উপস্থিত হলেন সেখানে।নুর নীল(ওদের প্রতিবেশির ছেলে) ছেলেটাকে উঠালো আর বললো।
কি হয়েছে বাবা।
আন্টি শুভ্র আমাকে মেরেছে।
কিিিিিিিিি?শুভ্র তুমি ওকে মারলে কেনো?
মাম্মাম ও আভার পাশে এসেছিলো,আমার আভার পাশে আসার সাহস হয় কি করে ওর,তাই ওকে মেরেছি,যেই আভার পাশে আসবে আমি তাকেই মারবো,আভা শুধু আমার সাথে থাকবে ও আমার বন্ধু, ওর পাশে অন্য কেউ কেনো আসবে।
শুভ্র বাবা আমার,ও ওতো তোমার বন্ধু, তবে ও আভার বন্ধু হলে কি হয়,তিনজন মিলে একসাথে খেলা করলেই তো পারো,চলো সরি বলো ওকে।
আমি ওকে সরি বলবো না মাম্মাম,আভা শুধু আমার বন্ধু, আর ও শুধু আমার সাথে খেলা করবে দেট ইজ ফাইনাল।
বলেই শুভ্র আভার হাত ধরে ওকে নিয়ে ছুঁটে চলে গেলো সেখান থেকে।
শুভ্র কথা শুনো আমার,শুভ্র।
এবার উনি বললেন।
আহা কহিনুর যেতে দাও না,বাচ্চা তো বুঝে কতটুকু।
আপনার সায় পেয়ে পেয়েই বিগড়ে যাচ্ছে এই বাদরটা।
এবার ভোর আপু মশকরা করে বললেন।
আরে নুর কোনো শাসন করে লাভ নেই,ও হয়েছে বাপকা বেটা,বাপ কি কম পাগলামি করে ওর মাকে নিয়ে যে ও করবে না।ওর বাপের রোগ ও ওষুধ যেমন তুমি তেমনি ওরও রোগ ও ওষুধ আমার মেয়ে,হা হা।।
কথাটা শুনে সবাই হা হা করে হেসে উঠলো, দেখলাম এমন সময় উনি দুষ্টু চাহনিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছেন,সবার সাথে লোকটাও আমাকে লজ্জা না দিয়ে পারে না,আমি আর লজ্জা সামলাতে না পেরে রুমে ছুটে চলে আসলাম।
শুভ্র আমার ছেলে,আর আভা ভোর আপুর মেয়ে,শুভ্র হবার দুবছর পর আভার জন্ম হয়েছে,ওর বয়স এখন তিন বছর,রোদেলা দু-মাসের অন্তঃসত্ত্বা, চার মাস আগেই ও ডাক্তারি পাশ করে আমাদেরই মেডিক্যাল কলেজে এজ এ প্রফেসর নিয়োগ হয়েছে,আমিও গ্রেজুয়েশন কপ্লিট করেছি, ফাস্ট ক্লাস পেয়েছি আমি,আসলে শুভ্র হবার পর আমি আর পড়তে চাই নি কিন্তু আমার ব্যাঙ মশাই যে আমাকে গ্রেজুয়েশন কপ্লিট না করিয়ে ধম নিচ্ছিলেন না,হুহ।উনি এখন রোদেলাকে নিজের ছোটবোনের মতো আদর করেন আর মিষ্টি মাকে মা বলে ডাকেন,উনাকে মায়ের যথেষ্ট মর্যাদাও দেন।সব মিলিয়ে আমরা এখন অনেক সুখি,আমার ছেলেটাও দেখতে ঠিক বাপের মতোই হয়েছে,সেই নাক সেই চোখ সেই মুখ আর সেই রাগ,বিহেইব,কেরেক্টার একদম ওর বাপের মতোই,সারাদিন খেলনা পিস্তল নিয়ে লোককে তাড়া করে বড় হলে সিওর বাপের মতো রিভালভার পিছনে লুকিয়ে নিয়ে ঘুরবে,আমার জন্য মিনি ব্যাঙটাও পুরো পাগল,আর তারপর পাগলামি করে ভোর আপুর মেয়ে আভাকে নিয়ে,হা হা।
অনিল ভোর শুয়ে আছে আর মধ্যখানে ঘুমিয়ে আছে আভা,দুজনই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে।
সত্যিই তুই ওভাবে সেদিন আমাকে আবারও নতুন করে বাঁচার প্রেরণা না দিলে এমন একটা সুন্দর জীবন যে পেতাম না অনিল,ধন্যবাদ আমার জীবনে এতো সুখ নিয়ে আসার জন্য।
ধন্যবাদ তো আমি তোকে দিতে চাই,তুই আমার জীবনে না আসলে যে আমি সেই কভেই শেষ হয়ে যেতাম,ধন্যবাদ আমার জীবনে আসার জন্য, আর আভাকে উপহার হিসেবে আমাকে দেওয়ার জন্য।এভাবেই পাশে থাকিস সবসময়,কখনো ছেঁড়ে যাস না আমায়।
কখনোই ছেঁড়ে যাবো না,ভালোবাসবো আজীবন।
আই লাভ ইউ ভোর।
আই লাভ ইউ টু অনিল।
তারপর আভাকে একসাথে জড়িয়ে ধরে দুজনও ঘুমিয়ে পড়লো।
রোদেলা বসে আছে আর আকাশ ওর পেটে কান লাগিয়ে বেবির অস্তিত্ব অনুভব করার চেষ্টা করছে।
কি শুরু করেছো তুমি,সবে তো মাত্র দুই মাস,এখন কিছু কিভাবে অনুভব করবে,হা হা।
আরে চুপ থাকো আমি ঠিকই অনুভব করবো।
রোদেলা এবার ওর মাথায় হাত বুলিয়ে বললো।
এতোদিন তো বাচ্চা নিতেই চাইছিলে না আর এখন এতো পাগলামি করছো।
এতোদিন এজন্য নেই নি কারন আমি চাই নি আমাদের বাচ্চার জন্য তুই তোর সপ্নকে নষ্ট করে ফেল,আমার জন্য তুই কতোটা মুল্যবান তা তুই কখনো কল্পনাও করতে পারবি না রোদেলা,তোর সপ্ন যে আমারও সপ্ন ছিলো,তোকে ডাক্তার হিসেবে দেখার তস যে আমার সইছিলো না রে।যা এবার ডাক্তার হয়ে গেছিস এবার যা ইচ্ছা বাচ্চা নে,আরে আমার তো পুরো ক্রিকেট টিম চাই যাদের কোচ আমি হবো,হু হা।
যাহ তুমিও না।
কথাটা বলে রোদেলা আকাশের বুকে লজ্জায় মুখ গুজলো,আকাশ মুখে হাসি ঝুলিয়ে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে লাগলো।
বিছানায় বসে আছি আমি,দুদিক থেকে দুইটা ব্যাঙ আমার কোলে মাথা রেখে নিজেদের গবেষণায় ব্যস্ত।
পাপা বোন কখন আসবে।
এই তো আর মাত্র কয়েক মাস তারপর তোমার কোলে বোন চলে আসবে, তখন পাপা আর ভাইয়া মিলে ওকে অনেক আদর করবো কেমন।
ইয়েেেেে,আমার বোন আসবে,ইয়ে।বাবা আমি ওকে বন্ধুক চালানো শিখাবো,আর মারপিট শিখাবো।
হুম আর আমি ওকে জোর করে কিভাবে কিছু আদায় করে নিতে হয় তা শিখাবো।
রাগ উঠলে যে ভাংচুরও করতে হয় পাপা তাও তো শিখাতে হবে।
হ্যাঁ এটাও একটা ফ্যাক্ট।
দুইটার কথা শুনে আমার মাথায় আগুন ধরলো,বলে কি আমার মেয়েকে নাকি এদের মতো বাঁদরামো শিখাবে এরা,এবার আমি রেগে বললাম।
একদম না,আবার যদি এসব বলেছো তবে বড় ব্যাঙ আর মিনি ব্যাঙ দুটাকেই আচ্ছা ধুলাই দিবো আমি,আমার মেয়েকে নাকি নিজেদের মতো বাঁদরামো শিখাবে এরা,একদম না আমার মেয়ে আমার মতোই হবে একদম,সুইট এন্ড কিউট, হুহ।
কথাটা বলে মুখ ফুলিয়ে বসে রইলাম আমি,এবার দুই ব্যাঙ হাসিমুখে এলো আমার পাশে, তারপর দুইটাই আমার দুই গালে পাপ্পি দিলো একসাথে,আমিও এদের বাঁদরামোতে না হেসে পারি না তাই এবারও হেসে দিলাম ফিক করে।
মাম্মাম তুমি না অনেক কিউট,আমার বোনটাও যেনো ঠিক তোমার মতোই হয়।
হুম, দেখো তোমার বোনটা ঠিক তোমার মাম্মামের মতোই হবে কিউট।
হুম।
আর আমরা ওকে একদম বাঁদরামো শিখাবো না।
হুম, একদম না।
আমি এবার আলতো হেসে শুভ্রের গালে চুমু আঁকলাম, তখনি বজ্জাত মিনি ব্যাঙ বললো।
পাপাকেও দাও।আর ওর ওই বজ্জাত পাপাটাও আমাকে আঙুল দিয়ে নিজের গালে ইশারা করলো।
আমি দিবো না, মানা করলে দুটাই চেঁচামেচি করতে লাগলো,দেখো তো বাচ্চার সামনে এসব কি করে দেয়,তারপর লজ্জামাখা মুখে আলতো একটা চুমু আমি উনার গালে আঁকলাম আর লজ্জায় নিজের চোখজোড়া নামিয়ে নিলাম,এবার দুই ব্যাঙ এক সাথেই বলে উঠলো।
উই লাভ ইউ,উম্মাহ।
দুটাই আমার দু গালে দুইটা পাপ্পি দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো। আমিও ওদের জড়িয়ে ধরলাম।
সমাপ্ত…………