শুভদিন (পর্ব-০২)

0
1819

শুভদিন
(পর্ব-০২)
লিখাঃ সুমাইয়া বিনতে আব্দুল আজিজ

অরিত্রীর মনে হচ্ছে ও নিজেই একমাত্র মেয়ে যাকে কলেজ ড্রেস পরে বিয়ে করতে হচ্ছে;তাও আবার নিজের বাবার উপস্থিতিতে।মাথায় কলেজ ড্রেসের সাথে সাদা স্কার্ফ বাধা।বাবা একটা লাল উড়না কিনে এনেছিল সেই উড়না টা বিয়ে পড়ানোর সময় স্কার্ফের উপর দিয়ে মাথায় দেয়া হল।

বিয়ে পড়ানো শেষ করতে দেরি হল কিন্তু আরশির পিঠে ধুমধাম করে কয়েকটা কিল পরতে দেরি হল না।সবাই হা করে তাকিয়ে আছে অরিত্রী আর আরশির দিকে।আরশির মুখ বিস্ময়ে হা হয়ে গেছে।কিন্তু ওর নিকাবের কারনে সেইটা দেখা যাচ্ছে না।আরশি অবাক হয়ে বলল,
-“এটা কি হল অরু?”
-“একটু পরেই তো ট্রিট চাইতি….আমি দেরিতে কোনো কাজ করতে পছন্দ করি না।তাই আগে ভাগেই ট্রিট দিয়ে দিলাম।”

অরিত্রীর কথা শুনে সবাই হো হো করে হেসে দিল।আরশির কপালের ভাজ আরো কুচকে গেল।অরিত্রী আরশির কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলল,
-“বাসায় গিয়ে আরো বড় ট্রিট দেব আপনাকে।আমাকে জব্দ করার শাস্তি পাওয়ার জন্য রেডি থাকেন।”
-“জব্দ কই করলাম রে বাবা? তোকে তো আমরা সারপ্রাইজ দিলাম।”
-“এটাকে সারপ্রাইজ বলে? আরেকটু হলেই তো সিনেমার নায়িকাদের মত ছাদ থেকে লাফ দিতাম আমি।”
-“হ্যা,আপনার মাথায় তো সারাদিন অইসব সিনেমা আর নায়ক নায়িকাদের চিন্তাই ঘুরবে।যার জন্য চুরি করলাম সেই আমাকে চোর বলে পিটাচ্ছে..!! ভালোর খাওয়া নাই…হুহ।”

আরশি অরিত্রীকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে বিরক্তির সাথে কপাল কুচকে ফোন টিপতে টিপতে সেখান থেকে বের হয়ে বাইরে গেল।

রিকশায় হৃদয় আর অরিত্রীকে উঠিয়ে দিয়ে আহসান আলম আরশিকে নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা হলেন।
যাক,,অবশেষে ও হতে পারল হৃদের হৃদী…!
ভাবতেও ভেতরে শিহরণ দিয়ে উঠছে।কলেজ টাইম শেষ হওয়ার সাথে সাথেই বাসায় যেতে বলেছে বাবা।তা না হলে বাসার অন্যসব লোকেরা উলটা পালটা সন্দেহ করবে।একটু হলে আরেকটু বানিয়ে বলে সবার কাছে ছোট করার কাজ টা তো অরিত্রী, আরশির সৎ মা হুমাইয়া জাহান খুব ভালো করেই পারেন।হাতে আর ২ ঘন্টা সময় আছে।এই দুইঘন্টা ওরা রিকশায় ঘুরবে।শহরের বাইরের দিকে যাচ্ছে ওরা।অরিত্রীর মাথায় এই বিয়ে নিয়ে হাজার হাজার প্রশ্ন জাগছে।কিন্তু সেসব প্রশ্নের উত্তর এখন না পেলেও চলবে।পরে সেসব আরশির কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নিলেই হবে।এখন ওর হৃদ ওর পাশে আছে।সময় টুকু উপভোগ করতে চায় ও।
এভাবে রিকশায় পাশাপাশি বসা এই প্রথম।ওদের রিলেশনের বয়স তো খুব বেশি না।এই তো,আর ৩ দিন পর ৫ মাস পূর্ন হত।এই ৫ মাসে ওরা একবারও দেখা করে নি।এত তারাতাড়ি যে এভাবে ওকে আপন করে পাবে সেইটা অরত্রীর কল্পনার বাইরে ছিল।
রিকশায় পাশাপাশি বসার পর হয়তো নার্ভাস ফিল করছিল হৃদয়।এমন ভাবে বসে ছিল মনে হচ্ছিল অপরিচিত কেউ।অরিত্রী মনে মনে বলছিল,
-“আরে হাবলু,একটু কোমড় জড়িয়ে ধর না রে…আমি তোর বউ রে,তোর বউ।অপরিচিত কেউ না আর বাঘ ভাল্লুকও না।এত নার্ভাস ফিল করছিস কেন কাছে আসতে? বাবস তোকে মিছামিছিই মিস্টার হালুম বলে।হালুম নামটা পাওয়ার যোগ্যই না তুই।যে কিনা নিজের সহ্য বিয়ে করা বউ এর কোমড় জড়িয়ে ধরে রিকশায় বসতেই ভয় পায় সে কিনা আবার ছোট বেলায় বাঘের সাথে লড়তে চাইতো!”
ইশ,এরকম কেন করছে হৃদয়? আপাতদৃষ্টিতে এত স্মার্ট একটা ছেলের কাছ থেকে এমন হাবলু টাইপ আচরণ কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না অরিত্রী।এক পর্যায়ে অরিত্রী হৃদয়কে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলল,
-“এই শোনো,আমার না বিকশা থেকে পরে যাওয়ার অভিজ্ঞতা অনেক আছে।একটু ঝাকি লাগলেই তাল সামলাতে না পেরে পরে যাই।তাই রিকসায় যার সাথেই বসি সে আমাকে শক্ত করে ধরে বসে।”

****

হৃদয় অরিত্রীর আপন ফুপাতো ভাই।ওর ফুপু একটাই।অরিত্রীর ফুপু আসমানী বেগম ৩ ভাইয়ের একমাত্র বোন।সবার ছোট উনি।আসমানী মানুষ হিসেবে বোকাসোকা এবং খুব ভালো।তবে,নিজের ভালো টা সবার আগে বুঝবে।নিজের টা ভালো বুঝার ক্ষেত্রে একদম নাছোড়বান্দা।বাকিসব জাহান্নামে যাক;তবুও নিজের ক্ষতি হবে এমন কোনো কাজ করার নাম মুখে আনে না।তার এই বৈশিষ্ট্য টা ভালো গুন হিসেবে বিবেচিত হলেও সময় বিশেষে দোষে পরিনত হয়।কারণ, নিজের জন্য আদৌ কোনটা ভালো সেইটা বুঝার ক্ষমতা উনার একটু কম।আর কেউ যদি বুঝাতে যায় কারো বুঝ মানেন না তিনি।নিজেকে তিনি একাই একশ ভাবেন।

এই যে,হৃদয় আজ মায়ের কাছ থেকে লুকিয়ে বিয়ে করল;এটার কি খুব দরকার ছিল? আসমানী বেগম যদি কিছু বুঝালে বুঝতেন তাহলে হয়তো আজ এমনটা হত না।

বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে হৃদয়।বাবা-মা দুজনেই চাকরীজীবী।দুজনেই একই কলেজের প্রফেসর।বাবা-মা দুজনেই চাকরীজীবী হওয়ার কারনে হৃদয় বাবা-মা এর সংস্পর্শে খুব বেশি আসতে পারে নি বললেই চলে।
সেই ছোট্ট বেলা থেকে আবাসিক হোস্টেলে থেকে থেকে এতটুকু হয়েছে।হৃদয় এখন ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে সিএসই’র ১০ সেমিস্টারের স্টুডেন্ট।ওদের ক্যাম্পাস টা আশুলিয়া।ভার্সিটির হলেই থাকে সে।মাঝে মাঝে ছুটিতে বাসায় যায় বাসার মেহমান হিসেবে।

অরিত্রী,আরশি এবার সবে মাত্র এসএসসি পাশ করে কলেজে ভর্তি হয়েছে।এসএসসি এক্সাম দিয়ে অরিত্রী গিয়েছিল ওর ফুপ্পির বাসায় বেড়াতে।কম হলেও ৪ বছর পর ফুপ্পির বাসায় গেল সেইবার।ফুপা,ফুপ্পি কেউ বাসায় থাকে না সারাদিন তাই অই বাসায় যেতেও ভালো লাগে না ওর।কিন্তু এবার ও কি মনে করে মন ছুটে গেল। আরশিকে যেতে বললে ও ডিরেক্ট যাবে না বলে দিল।ফুপার সামনে আরশির পর্দা করতে সমস্যা হয়।ফুপা ওপেন মাইন্ডেড মানুষ। আরশিকে নিজের মেয়ের মত ভেবে আদর করে সে গায়ে হাত দেয় সেইসব আরশির একদম পছন্দ না।সে না পারে পিতৃতুল্য ফুপাকে কিছু না বলতে আর না পারে অইসব সহ্য করতে।তাই সে এইসব এড়িয়ে চলতে চায়।
না পেরে অরিত্রী একাই গেল ফুপ্পির বাসায়।সাধারণত আরশিকে ছাড়া ও কোথাও যায় না।যেতে ইচ্ছেই করে না।কিন্তু এবার কি হল কে জানে…আরশিকে ছাড়াই চলে গেল।যেন ওখানে না গেলে ও দম বন্ধ হয়ে মারা যেত।

আহসান আলম মেয়েকে ময়মনসিংহ এনে রেখে যান।অরিত্রী ময়মনসিংহ যাওয়ার দুদিন পর ফুপাতো ভাই হৃদয় ছুটিতে বাসায় আসে বেড়াতে।হৃদয় বাসায় এসে পৌঁছায় দুপুর ১২ টার দিকে।ফুপা,ফুপু দুজনেই কলেজে ছিলেন তখন।বাসায় গেট টা তাই অরিত্রীই খুলে দিল।গেট খুলে হা করে তাকিয়ে আছে হৃদয়ের দিকে।প্রচন্ড গরমে ঘেমে একাকার হয়ে যাওয়া একটা সুদর্শন যুবক ওর সামনে দাড়িয়ে ওর দিকে তাকিয়ে মিষ্টি মিষ্টি হাসছে।মুখ টা তৈলাক্ত হয়ে আছে,চুলগুলো প্রচন্ড ধুলাবালির জন্য উস্কো খুশকো দেখাচ্ছে।তবুও যেন পৃথিবীতে এর চেয়ে কিউট কাউকে আজ অবদি দেখা যায় নি।অন্তত অরিত্রী দেখে নি…!!
উফফ, নেশা লাগিয়ে দিচ্ছিল সেই চাহনী আর সেই হাসি…!!

অরিত্রীর মনে হচ্ছে প্রথম দেখাতেই ও প্রেমে পড়ে যাচ্ছে..! লাস্ট ঠিক কত বছর আগে হৃদয়ের সাথে ওর দেখা হয়েছিল ঠিক মনে নেই ওর।নিশ্চয়ই সেইটা খুব ছোট থাকতে;যখন অরিত্রী কিছু বুঝতেই শিখে নি।তা না হলে এই ছেলের প্রেমে ও আরো আগেই পরে যেতো।

আচ্ছা,আগেই প্রেমে পরে যেত মানে কি? ও তো সেই নেংটা কাল থেকেই এই ছেলের উপর ফিদা হয়ে আছে।ফুপ্পি বলেছে,ছোট বেলায় নাকি অরিত্রী হৃদয়ের কোলে চড়তে খুব ভালোবাসত। সেগুলো কি এমনি এমনি? এই ছেলে….তুমি যে আগে আমাকে কোলে চড়িয়ে পুরো মহল্লা ঘুরতে সেগুলো কি তুমি ভুলে গেছ?
মনে মনে এই প্রশ্ন হৃদয়ের দিকে ছুড়ে দিতেই হৃদয় হালকা কাশি দিয়ে বলল,
-“হাই”
-“হা..?অহ হাই।”
-“এভাবে হা করে তাকিয়ে থাকবে নাকি ভেতরে ঢুকতে দেবে?”

হৃদয়ের কথায় অরিত্রী বেশ লজ্জা পেয়ে গেটের সামনে থেকে সরে ওকে সাইড দিল ভেতরে ঢুকার জন্য।ভেতরে ঢুকত্র ঢুকতে হৃদয় বলল,
-“মা বলল আরশি নাকি আসে নি।তো, আসে নি কেন? সেও আসত।টুইনদের একসাথে দেখতে আমার বেশ লাগে।লাস্ট কত বছর আগে যেন তোমাদের দেখেছিলাম?
-“ইয়ে,ভুলে গেছি আমি।আর আরশি একটু হুজুরনি টাইপের তো।তাই কোথাও সেভাবে যেতে চায় না আর কি।”

হৃদয় এবার আরশির আপাদমস্তক একবার চোখ বুলিয়ে শয়তানী মার্কা হাসি দিয়ে ভ্রু নাচাতে নাচাতে বলল,
-“হুজুরনীর বোনের তাহলে এই অবস্থা?”

কপাল কুচকে অরিত্রী হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে ইতস্তত হয়ে জিজ্ঞেস করল,
-“মানে?”
-“হুজুরনীর বোন…অথচ গায়ে টি-শার্ট,বুকের উপর উড়না নেই;অথচ সে একটা ছেলের সামনে দাঁড়িয়ে আছে…! ওয়াহ…!”

হৃদয় সশব্দে হেসে উঠল।অরিত্রী একটু অপমান বোধ করল।ওর চুলগুলো খোলা ছিল।উড়নার কথা বলতেই সেই খোলা চুলগুলো সামনে এনে বুকের উপর ছড়িয়ে দিল।তারপর রাগান্বিত স্বরে বলল,
-“হুজুরনীর বোন বলে কি আমাকে বাসার ভেতর বোরকা পরে বসে থাকতে হবে? আমি কি টি-শার্ট পরে, উড়না না নিয়ে বাসার বাইরে গেছি?”
-“এতক্ষণ বাসায় একা ছিলা সমস্যা ছিল না।এখন তো আমি এসে গেছি।আর মেইন গেট খুলার আগে গায়ে উড়না জড়িয়ে নিতে হয়।”
এইটুকু বলে হৃদয় একদম অরিত্রীর মুখের কাছে চলে গেল।তারপর গলার স্বর নিচু করে মিষ্টি করে একটা হাসি দিয়ে বলল,-“বুঝতে পেরেছ মিস গুলগুলি?”

হৃদয়ের আচমকা এভাবে কাছে চলে আসায় অরিত্রী হালকা ভয় পেয়ে যায়।হৃদয় দূরে সরে যেতেই ও বুকে থু থু দেয়।হৃদয় হেসে দেয় এবার।হৃদয়ের হাসি দেখে অরিত্রীও হেসে ফেলে।হৃদয় সরাসরি ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার নেয়ার জন্য।জার্নির পর শাওয়ার না নিলে খিটখিটে লাগে ওর।হৃদয় ওয়াশরুমে ঢুকে ওয়াশরুমের দরজা অফ করতেই অরিত্রী খুশির চোটে চোখ টা বন্ধ করে সাকিব খানের মত করে ওয়াশরুমের দিকে একটা ফ্লায়িং কিস ছুড়ে দিল।ফ্লায়িং কিস ছুড়ে চোখ টা খুলতেই দেখে হৃদয় ওয়াশরুমের দরজা খুলে ওর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে..! লজ্জায় অরিত্রীর মাটির ভেতর ঢুকে যেতে ইচ্ছে করছে।হৃদয়কে অজুহাতের ভঙ্গিতে বলল,
-“ওয়াশরুমের দরজায় টিকটিকি ছিল একটা।আ…আমি টিকটিকি ভীষণ পছন্দ করি।তাই চুমু ছুড়েছি টিকটিকির দিকে।”

হৃদয় একবার দরজার উপর থেকে নিচ অবদি চোখ বুলিয়ে দেখে নিল টিকটিকি আদৌ আছে কিনা।তারপর মন খারাপের ভঙ্গিতে বলল,
-“আচ্ছা,আমাকে তোমার টিকটিকি বলেই মনে হয় মিস গুলগুলি?”

ইশ,লজ্জায় আবার মাথা কাটা গেল..! আর এক মুহুর্তও সেখানে দাড়াতে পারল না অরিত্রী।দৌড়ে রুমের ভেতর লুকালো।হৃদয় অরিত্রীর এরকম দৌড়ে পালানো দেখে হো হো করে হেসে উঠল। হাসতে হাসতে ওয়াশরুমের দরজা আবার অফ করে দিল।সে যে তোয়ালে টা নেয়ার জন্য দরজা খুলেছিল সেইটা ও ভুলেই গেল।

দুপুরেই হৃদয়ের বাবা-মা দুজনেই বাসায় ফিরলেন।লাঞ্চের জন্য টেবিলে বসে আছে সবাই শুধুমাত্র অরিত্রী বাদে।ওর ভীষণ লজ্জা লাগছে হৃদয়ের সামনে আসতে।টেবিলে অরিত্রীকে না দেখে হৃদয় ওর মাকে জিজ্ঞেস করল,
-“অরু কই মা? ওকে ডাকো।”
-“মাত্রই তো ডেকে এলাম।আসছে না কেন? অরু..?? এই অরুউউউ??”

জোরে জোরে আরো দুইটা ডাক দিল আসমানী বেগম।
অই যে,ফুপ্পি আবারো ডাকছে।কি করবে অরিত্রী? ক্ষুধাও লেগেছে প্রচন্ড।আবার যেতেও ইচ্ছে করছে না লজ্জায়।কি একটা অবস্থা…!? এরপর ফুপা দুই-তিন টা ডাক দিলেন।অরিত্রী এবার উঠে দাড়ালো যাওয়ার জন্য। টেবিলে গিয়ে একদম হৃদয়ের মুখোমুখি বসতে হল ওকে।ও আসার পর থেকেই হৃদয় ওর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি করে হাসছে। খুব অস্বস্তি লাগছে ওর।খাচ্ছে সবাই…খাওয়ার মাঝখানে হৃদয় ওর মাকে উদ্দেশ্য করে বলল,
-“জানো মা? তোমার ভাতিজী অবশেষে টিকটিকির প্রেমে পরেছে।টিকটিকি দেখলেই উনার টিকটিকিকে চুমু খেতে ইচ্ছে করে।”

হৃদয়ের কথা শুনে ওর বাবা-মা দুজনেই কপাল কুচকে ওর দিকে তাকালো।অরিত্রীও কপাল কুচকে রাগান্বিত দৃষ্টিতে হৃদয়ের দিকে তাকিয়ে রইলো।আসমানী বেগম বিরক্তির স্বরে বললেন,
-“ফাযলামি বাদ দিয়ে চুপচাপ খা তো।”
-“ফাযলামি না মা…মেয়ে মানুষ যে টিকটিকির প্রতিও ফ্লায়িং কিস ছুড়তে পারে সেইটা এই মেয়েকে না দেখলে জানতেই পারতাম না।

অরিত্রী এবার ধমকের সূরে বলল,
-“হৃদ ভাইয়া..!! এটা নিয়ে আর একটা কথাও বলবেন না।বললে কিন্তু আমি খাবই না এখন।”
-“তুমি না খেলে আমার কি হবে? তোমার বর টিকটিকিই কষ্ট পাবে…আমার কি?”

অরিত্রীর এবার প্রচন্ড জেদ হচ্ছে।জেদে কান্না করে ফেলতে ইচ্ছে করছে।একটু ফ্লায়িং কিস’ই তো ছুড়েছে।তাতে কি এমন হয়েছে যে এভাবে পচাতে হবে?
ও আর এক মুহুর্তও খাবার টেবিলে বসল না। চেয়ার ছেড়ে উঠে মোটামুটি দৌড়েই ওর রুমের ভেতরে চলে যাচ্ছিল।ওর চলে যাওয়া দেখে হৃদয় পেছন থেকে চিল্লিয়ে বলল,
-“ও টিকটিকির বউ? কই যাও?”

চলবে ইন-শা-আল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here