শুরুটা_অন্যরকম #পর্ব_১৯,২০

0
437

#শুরুটা_অন্যরকম
#পর্ব_১৯,২০
#অধির_রায়
১৯

নির্বণ নেশা ভরা দৃষ্টি নিক্ষেপ করে নিয়তির দিকে৷ বাঁকা হেসে নিয়তির দিকে এগিয়ে যেতে থাকে৷ নিয়তি ধীরে ধীরে পিছিয়ে যাচ্ছে। এক পর্যায়ে নিয়তির পীঠ দেয়ালের সাথে লেগে যায়৷ নিয়তি বাঁ দিকে যেতে নিলে নির্বণ ডান হাত দিয়ে আটকিয়ে ফেলে৷ ডান দিয়ে যেতে নিলে নির্বণ বাঁ হাত দিয়ে আটকিয়ে ফেলে৷ নির্বণ নিয়তির অনেক কাছে চলে আসে । নির্বণের প্রতিটি গরম নিঃশ্বাস নিয়তির উপর পড়ছে৷ নিয়তি ভয়ে লজ্জায় জড়োসড়ো হয়ে আছে ।

— নিয়তির কোমরে হাত দিয়ে নিজের কাছে টেনে নিয়ে, “এখন কোথায় পালাবে নিয়তি৷” তোমার পালানোর সব পথ বন্ধ।

নিয়তির কানে কাছে ফিসফিস করে বলায় নিয়তি কেঁপে উঠে৷ নির্বণকে চেপে ধরে কাঁপা কাঁপা ঠোঁটে বলে উঠে, ” প্লিজ আমার খুব ভয় লাগছে৷ আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরে আছেন কেন?”

— নিয়তিকে আরও নিজের কাছে টেনে নিয়ে, ” মাই সুইটহার্ট, ভালোবাসা আদায় করছি৷ আমার মাঝে একটুও ভালোবাসা নেই৷ আজ দেখিয়ে দিব আমি কতটা রোমান্টিক এন্ড ভালোবাসতে পারি।”

— নরম কোমল কন্ঠে, ” আমি আপনার রোমান্টিকতা দেখতে চাইনি৷ আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে৷ ঘুমের ঘরে আমার মাথা ঠিক থাকে না৷ কখন কি বলে ফেলেছি আমি জানি না?”

— নেশা ভরা কন্ঠে, ” কিন্তু আমি জানি৷ আজ ঘুমালে বাসর করব কার সাথে?” নিয়তির পেট হালকাভাবে চেপে ধরে৷”

— নিয়তি কেঁপে উঠে, ” আপনি সত্যি একটা অসভ্য।”

নিয়তি নির্বণকে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে দেয়৷ নিয়তি লজ্জা মাখা মুখ নিয়ে দৌড়ে বেলকনিতে চলে যায়৷ নির্বণ নিয়তির পিছু পিছু বেলকনিতে চলে আসে৷ নির্বণ নিয়তিকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে৷ নিয়তির খোলা কেশগুলো ঘাড় থেকে সরিয়ে কানে গুঁজে দেয়৷ গলায় থাকা কালো তিলটায় একটা ডিপ কিস করে। নিয়তি কেঁপে উঠে নির্বণের হাত চেপে ধরে।

— নিয়তি লজ্জা মাখা চোখ বন্ধ করে মিষ্টি স্বরে বলে উঠে, ” প্লিজ নির্বণ আমাকে ছেড়ে দেন৷ আমি আপনার ভালোবাসা বুঝতে পেরেছি৷”

— দুষ্টু হাসি দিয়ে, ” এখনো আমার ভালোবাসা প্রকাশ করিনি৷ এখনই সব লজ্জা শেষ করো না৷ বাসরের জন্য কিছু লজ্জা লুকিয়ে রাখো৷ তোমার লজ্জা মাখা স্ট বেরির মুখটা একদম হট।”

— নিয়তি কিছুটা ক্ষেপে, ” আপনি এখান থেকে যাবেন৷ নাকি আমি আপনাকে ঠেলে পাঠিয়ে দিব৷”

নির্বণ নিয়তির গলায় হালকা করে আরও একটা কিস দেয়৷ এতে নিয়তি কেঁপে উঠে৷ নির্বণ নিয়তিকে পাঁজা কোলায় তুলে নেয়৷ নিয়তি কিছু বলতে যাবে ঠিক তখনই নির্বণ ঠোঁট বাড়িয়ে দেয়৷ নিয়তি চোখ বন্ধ করে নির্বণের গলা জড়িয়ে ধরে৷ নির্বণ নিয়তিকে বিছানায় চেপে ধরে।

— নিয়তির ঠোঁটের কাছে ঠোঁট নিয়ে, ” আরও বলবে এখান থেকে চলে যাবে৷ ”

— নিয়তি কোমল কন্ঠে আস্তে করে বলে উঠে, ” আর কোনদিন চলে যাওয়ার কথা বলব না৷ আমি সারাজীবন এখানেই থাকব।”

— নিয়তিকে বুকে জড়িয়ে, ” নাও এখন ঘুমিয়ে পড়। আজ থেকে তুমি আমার বুকের মাঝে ঘুম আসবে৷”

নিয়তিও মুচকি হেঁসে নির্বণের বুকে ছোট ছানার মতো ঘুমিয়ে পড়ে৷ নির্বণ পরম যত্নে নিয়তির মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে মনে মনে বলে উঠে, ” আজকের লাভ টর্চারটা একটু বেশি হয়ে গেছে। আমাকে আনরোমান্টিক বলা৷ কাল থেকে বুঝবে নিয়তি রোমান্টিক কাকে বলে?” [লেখাঃ অধির রায়]

___________

— “মা আমার দিকে এভাবে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে আছেন কেন? আমি কিন্তু এখন চলে যাব৷ আমার লজ্জা লাগছে৷” অসহায়ভাবে বলে উঠে।

— “তুমি কি সত্যি নিয়তি!” চকিত হয়ে।
ইউ আর লুকিং সো কিউট। আমি ভাবতেই পারিনি তোমাকে ওয়েস্টার্ন ড্রেসে অসাধারণ লাগবে৷ সত্যি তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে৷

নিয়তি আজ নির্বণের পছন্দের ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়েছে৷ তবে ছোট ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়েনি৷ লং ওয়েস্টার্ন ড্রেসে নিয়তিকে একদম অন্য রকম লাগছে। সাথে হালকা মেকআপে সকল নারীদের সুন্দর লাগে৷ নিয়তি বাদ পড়েনি৷

— অরিন দৌড়ে নির্বণের মায়ের রুমে আসে। হন্তদন্ত হয়ে বলে উঠে, ” এই মেয়ে তোমাকে ম্যামের রুমে প্রবেশ করার অনুমতি কে দিয়েছে?” বাহির থেকে এসে সরাসরি ম্যামের রুমে প্রবেশ কখনও কেউ করে না৷ তুমি জানো না ম্যাম অসুস্থ।” এক টানে কথাগুলো বলে দেয়৷

নিয়তি পিছনে ঘুরতেই অরিন চকিত হয়ে উঠে৷ অরিন “হ্যাঁ ইশ্বর ” বলে দুই কদম পিছিয়ে যায়৷

— ম্যাম আপনাকে যে সুন্দর লাগছে বলে বুঝাতে পারব না৷ একদম পরীর মতো লাগছে৷ আপনি এখন থেকে আর শাড়ি পড়বেন না৷ আপনাকে এমন পোশাকে সুন্দর লাগে।

— নির্বণের মা নিয়তিকে কাছে বসিয়ে, ” আজ এত সাজুগুজু করার কারণ কি? আমি তো কখনও এত সাজুগুজু করতে দেখিনি তোমায়৷”

নিয়তি নির্বণের মায়ের কথায় লজ্জা পেয়ে যায়৷ মাথা নিচু করে বলে উঠে, ” আসলে মা এগুলো কিনে নিয়ে আসার পর পড়া হয়নি। তাই ভাবলাম ড্রেসগুলো পড়ি৷ এখন তো মোটা হয়ে যাচ্ছি। পরে এসব পড়তে পারব না৷”

— এই মেয়ে মাথা তুল। আমাকে কি তোমার সিরিয়ালের শ্বাশুড়ি মনে হয়? যে আমি তোমার কাছ থেকে তোমার স্বাধীনতা কেঁড়ে নিব৷ আমি জানি তুমি শাড়িতে কমফোর্টেবল নয়৷ তুমি যেটা কমফোর্টেবল সেসব ড্রেস পড়বে। নির্বণ খুব ভালোবাসে ওয়েস্টার্ন ড্রেস।

— “ধন্যবাদ মা৷ আমি তাহলে আজ থেকে শাড়ি পড়ব না৷ শাড়ি আমার একদম ভালো লাগে না।” বাংলা পাঁচের মতো মুখ করে বলে উঠে।

— আরে বিয়ে হলেই কি মেয়েদের সব বিসর্জন দিতে হবে? তুমি যেমন ছিলে তেমনই থাকবে৷ মানুষের বাহিরের সৌন্দর্যটা আসল নয়৷ যে ভিতর থেকে খাঁটি সেই আসল সুন্দর।

— হুম মা৷ কিন্তু আমাদের সমাজের লোকেরা এসব কম বুঝে৷ যেমনঃ অনেকে মনে করেন সাদা চামড়া ওয়ালা মেয়েরা সব থেকে বেশি সুন্দর। তাদের ধারণা ভুল৷ বর্ণে মানুষের পরিচয় নয়৷ কর্মই মানুষের আসল পরিচয়৷

— হ্যাঁ মা তুমি একদম ঠিক বলেছো?

— অরিন পিছন থেকে বলে উঠে, ” আমি আজ কালা বলে আমার একটাও বরফ ফ্রেন্ড নেই৷ আজ যদি আপনাদের মতো সুন্দর হতাম তাহলে আমার কতোগুলো বরফ ফ্রেন্ড থাকত৷

— নির্বণের মা চকিত হয়ে, ” বরফ ফ্রেন্ড কি!”

— নিয়তির অরিনের কাঁধে হাত রেখে, ” অরিন ওইটা বরফ ফ্রেন্ড হবে না৷ ওইটা বয়ফ্রেন্ড হবে৷”

— ছোট ম্যাম, ” বয়ফ্রেন্ড আর বরফ ফ্রেন্ড এক কথা৷

অরিনের কথা শুনে নিয়তি, নির্বণের মা হেঁসে উঠে। নিয়তি আর অরিন মিলে আজ নির্বণের মাকে ছাঁদে নিয়ে আসে৷

ছাঁদে নিয়ে আসার কারণ হলো নিয়তি এখনো ছাঁদটা ভালো করে দেখতে পারেনি। একদিন ছাঁদে এসেছিল তখনই নিয়তির ডাক পড়ে৷ তার আর ছাঁদ দেখা হয়নি৷ বেচারি নিয়তির স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেছে।

___________

— “একি আজ আপনি এখনও অফিসে যান নি! বিকাল ২ টা বাজে!” নিয়তি রুমে ঢুকে অবাক হয়ে বলে উঠে।

— না আমি আজ এখনও অফিসে যায়নি৷ আজ আমার অফিসে কোন মিটিং নেই৷ আজ ক্লাইনরা ফাইভ স্টার হোটেলে মিটিং এর আয়োজন হয়েছে। সে্খানে ছোটখাটো একটা পার্টিরও আয়োজন করেছে। সেখানে সবাইকে নিমন্ত্রণ করেছে। আমি চাই তুমিও আমার সাথে পার্টিতে যাবে।

— না আমি আপনার সাথে পার্টিতে যেতে পারব না৷ কারণ আমি পার্টিতে উপস্থিত হলে মায়ের খেয়াল কে রাখবে? মা এখনও নিজে থেকে হাঁটতে পারেন না৷ মা সুস্থ হলে আমি যাব৷

— নিয়তি শুধু আজ রাতের জন্যই তো৷ মায়ের খেয়াল রাখবে সবাই৷, সম্যুদা, অরিন, সিনথিয়া, কণিকা, লাবু, জেসি, রুহি, রিয়া, ফাইজা, রিমি, মিহু, লাখি, অনিমা, ঊর্মি, তানিশা,(সব লেখিকাদের ডাক নাম) তারা ঠিক মাকে দেখে রাখবে৷

— আপনি একে একে সব সার্ভেন্টের নাম বলে যাচ্ছেন ঠিক। কিন্তু সব সার্ভেন্ট রাত অব্দি থাকে না৷ আর হ্যাঁ আপনি এখনই তাহলে রেডি হচ্ছেন কেন?

— অফিসে কিছু কাজ আছে। সেগুলো করে আমি সেখান থেকে চলে যাব৷ তুমি রেডি থাকবে। যাওয়ার সময় তোমাকে ড্রপ করে নিয়ে যাব৷

— নিয়তি বিরক্ত নিয়ে বিরবির করে বলে উঠে, ” আমার দিকে একবারও তাকাল না৷ আমি আজ উনার পছন্দের ওয়েস্টার্ন ড্রেস পড়লাম। ভাবছিলাম কত প্রশংসা করবে। কিন্তু না উনি উনার মতো আছেন।”

— “কিছু বললে নিয়তি?” সোল্ড ঠিক করতে করতে।

— না কিছু বলিনি৷ আমার অনেক কাজ আছে৷ আপনার যা ইচ্ছা তাই করেন৷ আমি আপনার সাথে যাব না৷

নিয়তি চলে যেতে নিলেই নির্বণ ডাক দেয়৷ বিরক্ত নিয়ে নিয়তি নির্বণের কাছে আসে।

— নিয়তি আমার সিলভার কালারের রোজ খুঁজে পাচ্ছি না (ল্যাপেল/ রোজ)। প্লিজ একটু খোঁজে দাও।

— আপনার হাতের বাঁ পাশের ড্রয়ারে রাখা আছে। সেখান থেকে নিয়ে পড়ে নেন৷ আপনি তো সব নিজে গুছিয়ে রাখেন৷ তাহলে না জানার ভান করেন কেন?

— প্লিজ নিয়তি একটু লাগিয়ে দাও না৷ আমি লাগাতে পারছি না৷ আজ আমার কি হয়েছে নিজেও জানি না৷
মনে মনে, ” সামনে আসো না একবার দেখাবো আমি কি জিনিস? তুমি ভাবছো আমি তোমাকে দেখছি না৷ সামনে এত বড় গ্লাস থাকতে তোমার দিকে ঘুরে তাকিয়ে থাকার কোন মানে নেই৷”

নিয়তি সিলভার কালারের রোজটা নিয়ে নির্বণের বুকের বাঁ দিকে লাগাতে নিলেই নির্বণ “আউচ% করে উঠে।

— আপনার লাগেনি তো? সরি আমি আসলে খেয়াল করতে পারিনি৷ আর এমন হবে না৷ বেশি লাগেনিতো।

— লেগেছে অনেক। মেবি রোজের পিন কিছুটা বয়ে গেছে৷ রক্ত ঝরছে মেবি৷

— দেখি রক্ত ঝরছে কিনা৷ আমি একটা কাজও ঠিক মতো করতে পারিনা৷ আপনাকে কতটা কষ্ট দিয়ে ফেললাম।

নিয়তি নির্বণের শার্টের বাটন খুলতে নিলেই নির্বণ নিয়তির কোমরে হাত দিয়ে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

— নেশা জনিত কন্ঠে বলে উঠে, ” আমি কোন আঘাত পাইনি৷ তোমার সাথে ফার্ন করলাম।”

— আমার সাথে ফার্ন করা৷ আমি কিন্তু এভার সত্যি সত্যি বুক ফোটু করে দিব৷

— বুকের বাঁ পাশে ফোটু করে তোমার নাম লিখে দাও৷

— ছাড়েন আমাকে আমার অনেক কাজ আছে।

— তোমাকে ওয়েস্টার্ন ড্রেসে অসাধারণ লাগছে৷ একদম পরীর মতো লাগছে। মনে হচ্ছে তুমি আকাশের কোন অপ্সরা। তোমাকে যতই দেখি ততই..

— আমাকে যতই দেখেন ততই কি? আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরে আছেন কেন? ছেড়ে কথা বলেন? কেউ রুমে চলে আসলে কি ভাববে? “সেই সকাল থেকে আপনার পছন্দের ড্রেস পড়ে আছি। একবারও বললেন না তো আমাকে কেমন লাগছে৷ এখন আসছে ভালোবাসা দেখাতে।” একটু অভিমানী স্বরে বলে উঠে।

— নিয়তির কেশে মুখ লুকিয়ে, ” আই ডোন্ট কেয়ার। আর কেউ রুমে আসবে না৷ আমি তোমার ড্রেসকে নয়৷ আমি তোমাকে ভালোবাসি৷ অবশ্য ড্রেসটা তোমাকে দারুণ মানিয়েছে। আমি চয়েস করেছি বিধায় তোমায় মানিয়েছে।”

— হয়েছে আপনার আজাইরা কথা৷ আজাইরা কথা শেষ হলে আমাকে নিচে যেতে হবে৷ অনেক কাজ আছে৷ ছাড়েন আমাকে?

— আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না৷ ছাড়তে পারি একটা শর্তে?

— কি শর্ত, তারাতাড়ি বলেন? মা কখন ডাক দেয় জানা নেই?

— নির্বণ ঠোঁট বাড়িয়ে দিয়ে, ” প্লিজ একটা কিস। কিস করলেই তুমি এখান থেকে যেতে পারবে৷”

— না পারব না৷ আপনি এখনই আমাকে ছাড়বেন৷

— নিয়তিকে আরও চেপে ধরে,” আমার কোন সমস্যা নেই৷ আমি বাড়ির সবাইকে ডাক দিচ্ছি৷ সবাই এসে দেখে যাক তাদের ম্যাম কতটা অসভ্য।”

— নিয়তি ক্ষেপে বলে উঠে, ” একদমই না৷ আপনি এমন কোন কাজ করবেন না৷ ”

— যদি শর্ত না মনো তাহলে তো তাই করতে হবে৷ ডাকা শুরু করলাম ওয়ান. টু..

— ওকে আমি আপনার শর্তে রাজি৷ তবে আপনাকে চোখ বন্ধ করতে হবে৷

নির্বণ চোখ বন্ধ করতেই নিয়তি নির্বণের গোলমুলু গালে আলতো করে একটা উম্মা দিয়ে চলে যায়৷

— শোধ তুলে নিব। তুমি আমাকে এখনও চিন না৷
________

নির্বণকে দেখে সবাই হেঁসে যাচ্ছে। অন্যদিকে নিয়তি লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছে৷ নিয়তি চলে যেতে নিলে অরিন নিয়তির হাত ধরে ফেলে৷ সকলের সাথে নির্বণ বন্ধুসূলভ আচরণ করে৷ সেজন্য সবাই নির্বণের অবস্থা দেখে হেঁসে যাচ্ছে।

— আয়াত এগিয়ে এসে, ” স্যার ভালোবাসা জমে ক্ষীর হয়ে গেছে। আপনার গোলমুলু গাল তার প্রমাণ দিচ্ছে৷

নির্বণ চকিত হয়ে আয়াতসহ অন্য সার্ভেন্টের দিকে তাকায়৷ নিয়তি ইশারায় বুঝিয়ে দেয় নির্বণের গালে নিয়তির লিপস্টিক লেগে আছে। সেটা নিয়েই সবাই হাসাহাসি করছে।

চলবে….

#শুরুটা_অন্যরকম
#পর্ব_২০
#অধির_রায়

নির্বণ বাসায় এসে দেখে নিয়তি এখনো রেডি হয়নি৷ নিয়তি সকলের সাথে বসে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় স্যারের আনন্দমঠ উপন্যাস শুনছে। মা সকলকে আনন্দমঠের অর্থ বুঝিয়ে দিচ্ছে, যেখানে বুঝতে কষ্ট হয় অন্যদের৷

— নির্বণ তার মায়ের দিকে অসহায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে , ” মা নিয়তিকে আজ রাতের জন্য ছেড়ে দেওয়া যায় না৷”

— নির্বণের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, ” কেন নির্বণ? আজ ক্লাইনের সাথে তোমার পার্টি ছিল তো। তুমি ফিরে আসলে যে।”

— মা আমি ফিরে এসেছি এই জন্য যে, “তোমাদের জিনিয়াস বউমা নিয়তিকে নেওয়ার জন্য। যাওয়ার সময় বলে গিয়েছিলাম তৈরি হয়ে থাকতে৷ কিন্তু এই মহান জিনিয়াস এখানে বসে বসে আড্ডা নিচ্ছে৷”

— নিয়তি নির্বণের সামনে গিয়ে, ” আপনি সবার সামনে কি আবোলতাবোল বকে যাচ্ছেন? আমি যাব না আপনার সাথে।”

নির্বণ চোখের ইশারায় তার মায়ের কাছ থেকে পারমিশন নিয়ে নেয়৷ নির্বণের মায়ের একটায় চাওয়া তাদের এক করা৷ এর মাধ্যমে সম্ভবত এক হতে পারে। কিন্তু তিনি জানেন না যে, “তারা একে অপরকে ভালোবেসে ফেলেছে। ”

নির্বণ নিয়তির কথার কোন উত্তর না দিয়ে হাত ধরে টেনে নিয়তিকে রুমে নিয়ে আসে৷

— নিয়তি ক্ষেপে বলে উঠে, ” এটা কি ধরনের অসভ্যতা? আপনি সবার সামনে এমন না করলেও পারতেন৷ আমি কি ছোট বাচ্চা! হাত ছেড়ে দিলে হারিয়ে যাব৷”

— নির্বণ অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, ” তোমাকে আমি কি বলে গিয়েছিলাম? বলেছিলাম তো সন্ধ্যায় রেডি থাকতে৷ আমার কথা অমান্য করার মানে কি?”

— একটু ভয়ে ভয়ে কোমল কন্ঠে বলে উঠে, ” আমি তো আপনাকে বলে দিয়েছিলাম আমি যাব না৷ আমি পার্টিতে.. ”

— নিয়তির ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে, ” আমি কোন অজুহাত দেখাতে বলিনি৷ তুমি আমার সাথে যাবে মানে আমার সাথেই যাবে৷”

— মাথা নিচু করে, “আসলে আমি পার্টিতে না গেলে হয়না৷ সেখানে তো সবাই থাকবে৷ আমি বরং বাড়িতে থেকে মায়ের সাথে গল্প করে সময় কাটিয়ে দিব৷”

— নিয়তির দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করে, ” আমি তোমাকে মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছি না৷ মা অনুমতি দিয়ে দিয়েছেন। কথা না বাড়িয়ে তৈরি হয়ে নাও৷”

নিয়তি কিছু বলতে নিবে কিন্তু নির্বণের অগ্নি দৃষ্টি দেখে বলতে পারল না৷ নিয়তি নির্বণের দিকে অসহায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ধীরে ধীরে আলমারির দিকে এগিয়ে যাছে। যাকে বলে পিঁপড়ার চলা৷ এক কদম এগিয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দুই কদম পিছিয়ে যাচ্ছে৷

নির্বণ বুঝতে পারে নিয়তি ভয় পেয়ে আছে৷ নিয়তিকে এভাবে বকা ঠিক হয়নি৷ নির্বণ নিজেই নিয়তির আলমারি থেকে পছন্দ করে সাদা রঙের একটা ওয়েস্টার্ন ড্রেস বের করে৷ সাদা ওয়েস্টার্ন ড্রেস অন্যান্য ওয়েস্টার্ন ড্রেসের থেকে তুলনামূলক ছোট৷

— নিয়তি চকিত হয়ে বলে উঠে, ” আমি সবার সামনে এই ড্রেস পড়ে যাব! আপনি কি পাগল হলেন?”

— আমার মাথা ঠিক আছে৷ সবাই এর থেকে ছোট ছোট ড্রেস পড়ে আসবে৷ সেখানে তোমার মতো বাঙালি কম পাওয়া যাবে৷ বেশিরভাগই ফরেনার৷ আর তুমি তো ওয়েস্টার্ন ড্রেস অফিসে পড়েছো৷ আজ কেন এত সংকোচ?

— আসলে আমি এখন বিবাহিত মেয়ে। আমাকে এসব পোশাক এখন মানাবে৷ এই সাদা ড্রেসটা হাঁটু অব্ধি। আর একটু বড় হলে ভালো লাগত৷

নির্বণ নিয়তিকে টান দিয়ে একদম নিজের কাছে নিয়ে আসে। নিয়তিকে আভয় বানী দিয়ে বলে উঠে, ” তুমি এত ভয় পাচ্ছো কেন? আমি তো আছি তোমার সাথে। তোমাকে এই পোশাকে অনেক সুন্দর লাগবে৷ আমি তোমাকে নিজ হাতে পড়িয়ে দিচ্ছি৷”

— এক কদম পিছিয়ে, ” না.. না.. একদমই না৷ আমি নিজে পড়তে পারি৷ আমাকে পড়িয়ে দিতে হবে না৷”

নিয়তি নির্বণের হাত থেকে ড্রেসটা নিয়ে ওয়াসরুমে দৌড়ে চলে যায়।
সাদা ওয়েস্টার্ন পোশাকে নিয়তি একদম পরীর মতো লাগছে৷ নির্বণ নিয়তির দিক থেকে চোখ ফেরাতে পারছে না৷ নির্বণ অপলক দৃষ্টিতে নিয়তির দিকে তাকিয়ে আছে৷

— নিয়তির দিকে মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে, “বিউটিফুল! ইউ আর লুকিং সো সুইট। তোমাকে একদম এঞ্জেলস লাগছে।”

— হয়েছে এভার আমরা এখন যেতে পারি তো৷ এখন কি আপনার লেট হচ্ছে না?

— হ্যাঁ, আমরা এখন যেতে পারি৷ কিন্তু তোমার সাজ এখনো পরিপূর্ণ হয়নি৷ আমি তোমাকে নিজ হাতে সাজিয়ে দিচ্ছি।

নিয়তি নির্বণের সহযোগিতা নিয়ে হালকা মেকআপ। ঠোঁটে গাঢ় লিপস্টিক। হালকা সাজে নিয়তি অসাধারণ লাগছে। [লেখাঃ অধির রায় ]

নির্বণ নিয়তির দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়৷ নিয়তি নির্বণের হাতে নিজের হাত রাখে। নির্বণ নিয়তিকে নিয়ে হিরোর মতো এন্ডি করে পার্টিতে৷
___________

নির্বণের সাথে নিয়তিকে দেখে অনেকে হিংসা করতে থাকে। অনেক মেয়ের হার্ট অ্যাটাকের উপক্রম হয় এটা শুনে যে, “নির্বণ বিবাহিত। আর নির্বণের ওয়াইফ নিয়তি। ”

স্টাফদের মাঝে একজন মেয়ে স্টাফ নিয়তিকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠে, ” কাজের লোক থেকে মালকিন। বাহ্ বাহ্, তোমরাই পারো বড়লোক ছেলেদের মাথা বাজে চিন্তা চেপে দিতে! ”

নিয়তি মাথা নিচু করে চলে আসতে নিলেই নির্বণ নিয়তির হাত ধরে ফেলে, ” এক্সকিউজ মি ম্যাম। সি ইজ নট সার্জেন্ট। সি ইজ মাই ওয়াইফ।”
একটা মেয়ে হয়ে অন্য মেয়েকে ইনসাল্ট করতে আপনার মুখে বাঁধল না৷ আমি যদি চাই আমি এই ডিল মাঝ পথে ছেড়ে দিতে পারি৷ আমাদের কোম্পানির কোন ক্ষতি হবে না৷ যা ক্ষতি হবার আপনাদের ক্ষতি হবে৷” কারণ আমরা আমাদের পরিশ্রমের চেয়ে বেশি পেয়ে গেছি৷ ক

নির্বণ রেগে ডাকতে শুরু করে, “মি. দত্ত…. নি. দত্ত” যার সাথে নির্বণের ডিল কন্টাক্ট হয়েছে।

নির্বণের ডাক শুনে মি. দত্ত নির্বণের সামনে আসে৷ ভদ্রতার সাথে বলে উঠেন, ” মি. নির্বণ চৌধুরী আপনি রেগে আছেন কেন? এনি প্রবলেম।”

— ইয়া মি. দত্ত৷ আপনার এসিস্ট্যান্ট মানুষকে মানুষ হিসেবে গণ্য করে না। এমন এসিস্ট্যান্ট আপনার সাথে যুক্ত থাকলে আমি এই ডিল ক্যানলেস করে দিব ৷ ইভেন আমরা চাইনা এই ডিল এগিয়ে নিয়ে যেতে।”

— মি. দত্ত কোমল কন্ঠে বলে উঠেন, ” নির্বণ চৌধুরী মেবি আপনার কোথাও কোন ভুল হচ্ছে৷ আমরা কাউকে এমনভাবে ইনসাল্ট বা ছোট করে দেখিনি। প্লিজ শান্ত হন৷”
মি. দত্তের এসিস্ট্যান্টকে বলে উঠে, ” তুমি তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নাও৷”

— স্টাফ অহংকার নিয়ে বলে উঠে, ” নো স্যার৷ আমি দুই টাকার মেয়ের কাছে ক্ষমা চাইব না৷ দরকার পড়লে আমি আপনার জব ছেড়ে দিব৷”

— নিয়তি নির্বণকে এন্ড মি. দত্তকে থামিয়ে বলে উঠে, ” প্লিজ স্যার আপনার এসিস্ট্যান্টকে বকতে হবে না৷ আর আমরা এই ডিল ক্যানসেল করব না৷”
মি. দত্ত মানুষের টাকা থাকলেই মানুষ বড়লোক হয় না৷ সৃষ্টিকর্তা আমাদের সৃষ্টি করেছেন মানুষ হিসেবে। হোক সে গরিব, হোক সে ধনী। সৃষ্টিকর্তা আমাদের পরীক্ষা করার জন্যই টাকা দিয়েগছেন৷ আমরা কি টাকার অহংকার দেখায় কিনা? আজ টাকা আছে কাল নেই৷ এই নিয়ে আমি মন খারাপ করিনি৷ আপনি বরং পার্টির দিকে খেয়াল রাখেন৷ কোন সমস্যা হলে আপনার সম্মান হানী হবে৷

— মিসেস চৌধুরী আমি আপনার যুক্তি বুঝতে পেরেছি৷ আমি তার হয়ে আপনার কাছে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইছি৷ আপনারা এই পার্টির মধ্যমনি৷

_______

— জানেন ম্যাম আজ ছোট ম্যামকে কি সুন্দর লাগছিল যে, “আমি ছোট ম্যামের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিলাম!”

— কেন? তুইতো অনেক সুন্দর। তুই কি কারো থেকে কম সুন্দর?

— আন্নে কি যে কন? আমি কহন সুন্দর হলাম৷ আমি কি ছোট ম্যামের মতো ফার্সা। আমি তো কালা মানুষ৷

— সৌন্দর্য মানুষের রুপে নয়৷ সৌন্দর্য মানুষের গুণে ফুটে উঠে। তোর শ্যামবর্ণ মুখটা মায়ায় জড়ানো। তোকে দেখলে মানুষের মন জুগিয়ে যাবে।

— কিন্তু আজ পর্যন্ত কোন বরফ ফ্রেন্ড জুগার করতে পারলাম না৷ জানেন অনেকে ফোনে তাদের বরফ ফ্রেন্ডের সাথে কথা কই৷ আমার মন চাই বরফ ফ্রেন্ডের সাথে ফোনে কথা বলতে।

— নির্বণের মা মুচকি হেঁসে, “বরফ ফ্রেন্ড নয়৷ ওইটা বয়ফ্রেন্ড হবে। বর্তমান জেনারেশনে কোন ভালোবাসা নেই। আছে শুধু ধোঁকা আর স্বার্থ। নিজের স্বার্থ ফুরিয়ে গেলেই ভালোবাসা ফুরিয়ে যায়। তাই কখনো ভালোবাসার কথা মুখে আনবি না৷ তুই ইশ্বরের কাছে প্রার্থনা কর তুই কারো প্রেমে পড়িস নি৷”

— হ্যাঁ ম্যাম৷

— অনেক রাত হয়েছে। যা ঘুমিয়ে পড়৷ আর আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে না৷ আমি এখন ঠিক আছি।

___________

— নির্বণ ক্ষেপে বলে উঠে, ” এসব কি? তোমাকে সে মেয়ে ইনসাল্ট করল আর তুমি তাকে ছেড়ে দিলে।”

— প্লিজ শান্ত হন৷ কে বলছে আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি৷

— তাহলে এসব কি? আমি জানতাম মি. দত্ত তাকে আজই চাকরি থেকে বের করে দিত৷

— আস্তে কথা বলেন৷ কেউ শুনে ফেলবে। আমি তাকে শাস্তি দিব বলেই তখন তাকে ছেড়ে দিয়েছি৷

— নির্বণ চকিত হয়ে, ” তুমি! তুমি তাকে কিভাবে শাস্তি দিবে?” তার সামনে তুমি পড়লে তোমাকে আবার ইনসাল্ট করবে৷ আমি সহ্য করতে পারব না৷

— আমি তার সামনে যাব না৷ এভার মুডটা ঠিক করেন। এমন করলে আমি চলে যাব৷ আমি বলেছি তাকে শাস্তি না দিয়ে যাব না। মানে যাব না৷

— যদি তুমি আমায় একটা কিস দাও তাহলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

— ড্যান্সের সময় দিব৷ এখন সকলের সাথে হাসিমুখে কথা বলেন৷


মি. দত্ত মাইক হতে নিয়ে এনাউন্স করল, ” আজ প্রতিটি কাপলদের জন্য ড্যান্সের ব্যবস্থা করেছি৷ যারা কাপল নয় তারা তাদের ফ্রেন্ডদের সাথে পার্টিসিফ্রেন্ড করবে৷”
মিউজিক স্টার৷ এক এক করে সবাই ড্যান্সে অংশগ্রহণ করছে।
♪♪
Dil ibaadat kar raha hai, dhadakane meri sun.
Tujhako main kar loon haasil lagi hai yahin dhun.

— এভাবে দাঁড়িয়ে থাকবেন৷ চলেন আমরা যোগদান করব৷ আর এখানেই ওই মেয়েকে শাস্তি দিব৷

নির্বণ নিয়তির দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়৷ নিয়তি নির্বণের হাত ধরে ড্যান্স শুরু করে।

Jindagi ki shaak se loon kuchh haseen pal main chun.
Tujhako main kar loon haasil lagi hai yahin dhun.
Jo bhi jitane pal jiu, unhe tere sang jiu
Jo bhi kal ho abb mera use tere sang jiu
Jo bhi saansein main bharu unhe tere sang bharu.
♪♪
নিয়তির নজর শুধু ওই মেয়েটার দিকে। মেয়েটা কাছে আসতেই মিয়তি মির্বণকে বলে উঠে, ” আমাকে চারিপাশে রাউন্ড করান৷ আজ দেখে যান নিয়তির খেলা৷

নির্বণ নিয়তির কথা মতো রাউন্ড করাতে থাকে। নিয়তি সুযোগ বুঝে মেয়েটার পায়ে লাথি বসিয়ে দেয়৷ আর মেয়েটি চিৎকার করে নিচে বসে পড়ে।
গান বন্ধ করে দেওয়া হয় খারাপ সিচুয়েশন দেখে।

— নিয়তি তার দিকে দৌড়ে এসে, ” একি আপনি পড়ে গেলেন কিভাবে?” আপনার বেশি ব্যথা লাগেনি তো৷” আমাকে ধরেন৷ আমি আপনাকে সাহায্য করছি ৷”

কোন উপায় না পেয়ে মেয়েটি নিয়তির হাত ধরে উঠে দাড়ায়৷ নিয়তি মেয়েটিকে নিয়ে একটা টেবিলে বসিয়ে দেয়। নির্বণকে চোখের ইশারায় বুঝিয়ে দেয় “নিয়তিও কোন অংশে কম না৷”

— তুমি জুস খাবে। আই নো ইউ আর টায়ার্ড।

— হ্যাঁ এক গ্লাস অরেঞ্জ জুস হলে ভালো হয়৷

নিয়তি মনে মনে বলে উঠে, ” শাঁকচুন্নি তোকে আমি অরেঞ্জ জুস খাওয়াব৷ কিন্তু এমন অরেঞ্জ জুস খাওয়াবো তুই সারাজীবন মনে রাখবি৷”

নিয়তি অরেঞ্জ জুসে ড্রিংকস মিশিয়ে দেয়৷ ড্রিংকসযুক্ত অরেঞ্জ জুস খেয়ে মেয়েটির নেশা হয়ে যায়৷ তার পার একের পর এক মদ পান করতে থাকে।
_________

— বিছানায় গা এলিয়ে দিয়ে নির্বণ বলে উঠে, ” তোমায় মাথায় এত শয়তানি বুদ্ধি আসে কোথা থেকে? মি. দত্তের PA কে মদ খাইলে দিলে।”

— পায়ে বেশি ব্যথা না পেলে ওই মেয়েটা আরও বাজে হাল করে ছেড়ে দিতাম। সে উঁচু হিল পড়াতে অল্প লাথিতেই পড়ে গেছে। আর হিলের জন্য অনেক ব্যথা পেয়েছে।” একটু কম ব্যথা পেলে নাটক জমে যেত।

— নির্বণ নিয়তিকে কাছে টেনে নিয়ে, ” আমার সাথেও তাহলে এতদিন এমনভানে শয়তানি করে এসেছো। আজ ছাড়ছি না, সব গুলোর প্রতিশোধ নিব।

— ছাড়েন আমার ভীষণ ঘুম পাচ্ছে। অনেক রাত হয়ে গেছে। একটা কথা বলবো?

— নেশা ভরা কন্ঠে “হুম বল?”

— আপনি ওইভাবে সিনক্রিয়েট করলেন কেন আমার জন্য? ওই মেয়ে তো সত্য কথাই বলেছিল। আমি তো কাজের লোকই ছিলাম। আমার তো কিছুই নেই..

— নিয়তির মুখে আঙুল দিয়ে, ” একদম এসব কথা মুখে আনবে না৷ সবার আগে তুমি একজন মানুষ৷ আর কে বলেছে তোমার কিছু নেই? আমার সবকিছুই তোমার। আমি তোমায় খুব ভালোবাসি। তোমাকে কেউ অপমান করলে আমি মেনে নিতে পারব না৷”

— আমিও আপনাকে খুব ভালোবাসি।

চলবে..

হানিমুনে কি সুইজারল্যান্ড পাঠাবো?

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here