শেষটা_সুন্দর পার্ট_৫

0
2760

#শেষটা_সুন্দর
পার্ট_৫

আমার কনসিভ করার বিষয় টা আমি সর্বপ্রথম মাকে জানালাম,,শুনেই মা পুরো কাঁপতে শুরু করলো,,আমাকে এদিকে শান্তনা দিচ্ছে ঠিকই কিন্তু সমাজের ভয় মাকে চুবিয়ে খাচ্ছে,,কনফার্ম হতে আবার পরীক্ষা করা হলো আমার,রিপোর্ট আসলো পজিটিভ__মা থেকে খবর টা বাবা আপু থেকে শুরু করে জানানো হলো রিফাত আঙ্কেল দের ফ্যামিলিকে,,অভ্র ভাইয়া আসলো সাথে আসলো আঙ্কেল আন্টি,,রীতিমতো শুরু হয়ে গেলো বাড়িতে চিৎকার চেঁচামেচি

সবাই সিদ্ধান্ত নিলো তারা এই বাচ্চা টাকে নষ্ট করবে কিন্তু আমি রোদেলা মুনতাসীর বেঁচে থাকতে মেরে ফেলবো আমার বাচ্চা কে কখনোই না,,সবার মুখের উপর দিয়ে বললাম আমার পক্ষে এই বাচ্চা কে নষ্ট করা কিছুতেই সম্ভব না!!

মাঃ আমি এ বিষয়ে তোর আর একটা কথা শুনতে চাই না রোদেলা,,তুই বাচ্চা টাকে নষ্ট করবি এটাই আমার শেষ কথা

রোদেলাঃ আমি পারবো না মা

মাঃ কি পারবো না হ্যা কি পারবো না__কে কে নিবে তোর এই বাচ্চার দায়িত্ব,,এটা জানাজানি হলে আমরা মুখ দেখাতে পারবো এই সমাজে___ও রোদের বাবা তুমি একটু বুঝাও না তোমার মেয়েকে,,ও এখন আবেগে ভাসছে তুমি ওকে বলো ও যেনো আমাদের কথা টা একটু শুনে

বাবাঃ শান্ত হও অনু,,মুনতাসীর মা,,মা রে,,আমরা কি তোর খারাপ চাবো মা,,এই বাচ্চা টা পৃথিবীতে আসলে না তুই সুখি হতে পারবি না পারবি এই বাচ্চা টাকে মানুষ করতে___অবৈধ সন্তান বলে বলে তোকে আর তোর বাচ্চা টাকে সবাই খেয়ে ফেলবে মা

রোদেলাঃ আমি সব সহ্য করে নিতে পারবো বাবা,,কিন্তু নিজের হাতে নিজের বাচ্চা কে খুন আমি করতে পারবো না

আপুঃ কিসের খুন হ্যা কিসের খুন??রাইমা কে দেখিস নি দুটো বাচ্চা হয়েছে বলে আর বাচ্চা নেবে না দেখে গত মাসে কনসিভ করা বাচ্চা টাকে সে নষ্ট করে দিয়ে আসলো,,তাহলে কি রাইমাও খুনি

রোদেলাঃ প্লিজ আপু এসব বলে আমাকে বুঝিয়ে লাভ নেই,,রাইমা আপু হয়তো পেরেছে কিন্তু আমার পক্ষে সম্ভব না

মাঃ তোমার মেয়েকে বুঝাও আহমেদ,,আমি নিরুকে দিয়ে হোমিও ঔষধ আনতে পাঠিয়েছি তোমার মেয়ে যেনো নিরু আসার সাথেই সেটা খেয়ে নেয়

রোদেলাঃ মা আমি খাবো না

মাঃ কি খাবো না হ্যা কি খাবো না,,তুই কি তোর সাথে সাথে আমাদের কেও নিয়ে মরবি রোদেলা

বাবাঃ আহ অনু এসব কি ধরনের কথা বার্তা

মাঃ সামনে ওর বিয়ে বিকাশ,,অভ্র তুই অনন্ত দাঁড়িয়ে না থেকে রোদকে একটু বুঝা

অভ্র ভাইয়া কিছু বলার আগে মুনতাহা আন্টি এবার চিৎকার করে উঠলো!!!!!!

মুনতাহা আন্টিঃ অভ্রর এখানে কিছু বলার নেই অনু,,রোদেলা ধর্ষিতা জেনেও আমি রোদেলাকে নিজের ঘরের বউ করতে রাজি হয়েছি কিন্তু এই ঘটনার পর আমি কিছুতেই

অভ্রঃ মা আমাকে কথা বলতে দেও

মুনতাহাঃ তুমি চুপ করো??অনেক শুনেছি আমি তোমার আর তোমার বাবার কথা___কিন্তু আর না রোদেলাকে কিছুতেই আমি আমার ঘরের বউ করে তুলবো না,,কতো ভালো মেয়ে পাবো আমি তোমার জন্য,,এখনো কতো নামি দামি ঘর থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসে তোমার জন্য আমি শুধু তোমার মুখের দিকে চেয়ে

রিফাতঃ মুন আমার কথা টা শুনো,,রোদেলা তো নষ্ট করছে বাচ্চা টা তাহলে সমস্যা কোথায়

রোদেলাঃ সরি আঙ্কেল আপনার হয়তো বুঝতে ভুল হচ্ছে,,আমি কিন্তু একবারো বলি নি এই বাচ্চা টা আমি নষ্ট করবো

অভ্রঃ রোদেলা একটু শান্ত হ তুই,,বস এখানে বস____রোদ দেখ এই বাচ্চা টার কোনো ভবিষ্যৎ নেই,,তুই এই বাচ্চা টাকে তোর পেটে বড় করলে বিপদ টা তোরই,,এই সমাজ টা ভালো না রোদ

রোদেলাঃ তুমি কি চাও অভ্র!!

এই প্রথম আমি অভ্র ভাইয়াকে নাম ধরে সম্বোধন করলাম!!

রোদেলাঃ অভ্র আমি এই বাচ্চা টা নষ্ট করতে পারবো না,,তুমি যদি এই বাচ্চা টাকে নিজের পরিচয় দিয়ে আমাকে বিয়ে করতে পারো তাহলে আমি আছি তোমার সাথে,নয়তো

অভ্রঃ নয়তো??

রোদেলাঃ এই বিয়ে এখানেই আমি ভেঙে দিচ্ছি

অভ্রঃ রোদেলা!! রোদ একটু শোন আমার কথা টা

চলতে থাকলো সবার বাক বিতন্ডা,,আমিও বসে বসে দেখে যাচ্ছিলাম ব্যাপারটা কতোদূর গড়ায়,,কিন্তু সবাই এক রোখা হয়ে এটাই ডিসিশান নিলো তারা আমার এই বাচ্চা টাকে খুন করে দেবে,,তাই শেষ বার আমি আমার ব্যাগ সব রিপোর্ট সেই স্ট্রিপ নিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম অভ্র ভাইয়ার সামনে

রোদেলাঃ তুমি কি এই বাচ্চা টাকে নিজের বলে গ্রহন করবে??

মুনতাহা আন্টিঃ কখনোই না,,কার না কার পাপ,সেটাকে বহন করবে আমার ছেলে

রোদেলাঃ আমি কিছু জিজ্ঞেস করছি অভ্র ভাইয়া তোমাকে

অভ্রঃ রোদ আমি

রোদেলাঃ হ্যা কি না??

অভ্রঃ না

আমি একটা দীর্ঘ শ্বাস টেনে মনে মনে মুচকি হেঁসে দিলাম,,আমিও কোথাও একটা চাচ্ছিলাম অভ্র ভাইয়া যেনো না বলে দেয়,,আমার ইচ্ছে টা পূরণ হলো,,সবার দিকে একবার চোখ বুলে নিয়ে আমি ওসব রিপোর্ট প্রেগন্যান্সি স্টিপ নিয়ে বেড়িয়ে পড়লাম বাড়ি থেকে,,গন্তব্য এখন একটাই টিউলিপ❤️
__________________

রিক্সা থেকে নেমেই এক ছুটে রিসিপশনে গিয়ে খোঁজ নিলাম শিশির শাহরিয়ার এর চেম্বার টা ঠিক কোনদিকে,,মেয়ে টা আমাকে দিক টা দেখিয়ে দিতে এক ছুটে ওনার চেম্বারের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে গেলাম,,দেখলাম চেম্বারের আশেপাশে কিছু মানুষ বাহিরে ওনার জন্য অপেক্ষা করছে তবে ভীড় নেই বললেই চলে,,সবার কথা শুনে বুঝলাম উনি ওটিতে আছে ওটি থেকে বের হতে সময় লাগবে,,তাই অনেকে চলে যাচ্ছে কেউ বা ঠিক করছে পড়ে আসবে,,আমি ওনার চেম্বারের সামনে দাঁড়িয়ে আছি কি করবো বুঝতে পারছি না এদিকে তাড়াহুড়ো তে ফোন টাও বাড়িতে ফেলে রেখে আসছি,,রিপোর্ট হাতে ওনার চেম্বারের ভেতর উঁকি দিতেই পেছন থেকে আহির ভাইয়া আমাকে ডেকে উঠলেন।

আহিরঃ Excuse me miss কাকে চাই আপনার??

আহির ভাইয়ার ডাকে পেছনে ফিরলাম,,আমাকে দেখে আহির ভাইয়া রীতিমতো ভূত দেখার মতো ভয় পেয়ে গেলো,তবে খুব সুন্দর করে উনি ওনাকে স্বাভাবিক করে নিলেন,সেদিন রাতে উনি আমার সাথে যেই ব্যবহার টা করেছিলেন আজ তার চাইতেও হাজার গুন বিনয় আর নম্রতা প্রকাশ পাচ্ছে তার কথা বার্তাতে!!

রোদেলাঃ জ্বী ডক্টর শিশির শাহরিয়ার কখন ফিরবে,,আমার খুব জরুরি কথা ছিলো ওনার সাথে।

আহিরঃ স্যারের তো ওটি থেকে বের হতে একটু সময় লাগবে আপনি এক কাজ করুন চেম্বারের ভেতরে গিয়ে বসুন,,আমি দেখে আসছি।

রোদেলাঃ না আমি বাহিরেরই ঠিক আছি,,আপনি যদি কাইন্ডলি একটু__

আহির ভাইয়া মাথা নাড়িয়ে চেম্বারে ঢুকে আবার বেড়িয়ে গেলেন,চোখের ইশারায় আমাকে বললেন বাহিরে চেয়ারে বসতে,উনি গিয়ে ওটি রুমে ওনার স্যারকে খবর দিলেন আমি এসেছি,শুনেই শাহরিয়ার সাহেব হালকা ভূ কুঁচকে নিলেন,,আহির ভাইয়াকে আদেশ দিলেন আমাকে নিয়ে গিয়ে টিউলিপে ওনার গেস্ট রুমে বসাতে,ওনার ওটি কম্পিলিট হতে নাকি আরো ঘন্টা খানেক সময় লাগবে,,

আহির ভাইয়াকে বিদায় দিয়ে উনি আবার সুই কাঁচি হাতে ওনার কাজে লেগে পড়লেন,আহির ভাইয়া আমাকে নিয়ে আসলো ওনার গেস্ট রুমে,,রাতে যখন ওনার নাইট ডিউটি থাকে তখন এসে এসে উনি এই গেস্ট রুমে থেকে যান,আমাকে বসিয়ে দিয়ে আহির ভাইয়া আমাকে কিছু খাবার অফার করলো আমি না করে দিলাম,আহির ভাইয়া জোর করলো না,উনি আমাকে বসিয়ে দিয়ে ওনার একটা কাজে বেড়িয়ে গেলেন যাওয়ার আগে অবশ্য ওনার কার্ড দিয়ে বললেন কিছু লাগলে এই নাম্বারে ফোন করতে বা রিসিপশনে মেট্রন আছে ওনাকে বলতে।
__________

আমি ওনার অপেক্ষায় ওনার গেস্ট রুমের বিছানায় বসে আছি,শরীর টা আবার খারাপ করতে শুরু করলো,বমি বমি আসতে শুরু করলো,কিন্তু বমি টা হয়েও আর হলো না,ক্লান্ত শরীর টা এলিয়ে দিলাম ওনার বিছানায়,হাতে থাকা রিপোর্ট টা আর স্টিপ টায় চোখ বুলে নিয়ে সেগুলো আবার ব্যাগে ভরিয়ে রাখলাম,শরীর টা ছেড়ে দিতে শুরু করলো,ঘড়িতে তখন ৩ঃ২০ আমি এই রুমে যখন আসি তখন বাজে ঠিক ২ঃ৫০ তার মানে আমি গত আধা ঘণ্টা ধরে ওনার জন্য অপেক্ষা করছি,আর কিছু ক্ষন পর
হয়তো উনি আসবেন

ওনার অপেক্ষা তে থাকতে গিয়ে কখন যে আমি ঘুমিয়ে গেলাম বলতে পারি না,যখন ঘুম থেকে উঠি তখন ঘড়ির কাটা জানান দিচ্ছে এখন বাজে ৫ঃ১০,,আড়মোড়া দিয়ে উঠে পড়তেই দেখলাম গায়ে আমার একটা সুন্দর কম্বল মুড়ে দেওয়া,,আমি যখন আসি তখন এসি টা ওফ ছিলো এখন ওন করে দেওয়া,,আমার ব্যাগ টা খুব সুন্দর করে সাইড টেবিলে রেখে দেওয়া,,আর সামনে রাখা অনেক ধরনের খাবার,,বুঝলাম আমি ঘুমে যখন গিয়েছিলাম উনি এসে আমাকে হয়তো❤️

কিন্তু এখন কোথায় উনি,আমার যে ওনার সাথে কথা বলা খুব জরুরি,,কম্বল টা গা থেকে সরিয়ে বিছানা থেকে নামলাম,,তখনি উনি ব্যালকুনি থেকে টাওয়াল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে হেঁটে রুমে আসলেন,,ওনাকে দেখে মনে হচ্ছে এই মাএ গোসল করে এসেছে,চুল গুলো সব মোছার কারণে এলোমেলো হয়ে আছে,,তবে এর মধ্যে মূল একটা জিনিস খেয়াল করলাম আমি আজ,এই প্রথম উনি সাদা রঙ পড়েন নি সাদার বদলে সাদার কাছাকাছি একটা হালকা ব্রাউন রঙের গেন্জি গায় দিয়ে ঘিয়ে রঙের হাফপ্যান্ট পড়েছে,,আমার তো মানুষ টার উপর ঘেন্না হবার কথা কিন্তু অদ্ভুত ভাবে আজ প্রথম ওনাকে আমার ভালো লাগতে শুরু করলো!!তবে সেটা নিজের মনের মধ্যে আমি লুকিয়ে রাখলাম,এখন কিছুতেই ওনার সামনে এই অনুভূতি টা প্রকাশ করা যাবে না,আগে ওনাকে সব সত্যি টা জানাতে হবে উনি কি চায় সেটা বুঝতে হবে,,হতেও তো পারে এই ভালোলাগা টাই একটু পর কঠিন ঘৃণায় পরিণত হয়ে যাবে!!

শিশিরঃ শুনলাম নেক্সট ফ্রাইডে নাকি বিয়ে করে বিক্রি হয়ে যাচ্ছ তোমার ঔ সো কলড অভ্রর কাছে,,তা হঠাৎ এ সময় এই নোংরা শাহরিয়ার কে কিসের প্রয়োজন পড়লো রোদেলা মুনতাসীর!!!!

ওনার উওরে একটা দীর্ঘ শ্বাস টানলাম,,গত কয়েক মাসে ওনার এই নোংরা কথা বার্তায় আমি এক প্রকার অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি বলতে পারেন,,ব্যাগ টা হাতে নিলাম,,রিপোর্ট গুলো আর সেই প্রেগন্যান্সি স্ট্রিপ টা বের করে ওনার হাতে ধরিয়ে দিলাম,,উনি ভূ কূঁচকে হাতে থাকা রিপোর্ট গুলো খুবব মনোযোগ দিয়ে পড়লেন,,ওনার মুখের ভঙ্গি দেখেই বুঝতে পারলাম উনি ঠিক ব্যাপারটা মেনে নিতে পারছে না,,উনি বিরক্ত হয়ে রাগে রিপোর্ট গুলো বিছানার উপর ছুঁড়ে দিলেন

উজানঃ এসব আমাকে কিসের জন্য দেখাচ্ছ তুমি??

ওনার প্রশ্নে মাথা পুরো গরম হয়ে আসলো আমার,,সপাটে গিয়ে ওনার গেন্জির কলার চেপে ধরলাম,,

রোদেলাঃ কিসের জন্য দেখাচ্ছি বুঝতে পারছেন না আপনি__আমার এতো বড় একটা সর্বনাশ করে এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন আপনি

শিশিরঃ আমি আহির কে বলে মেডিসিন দিয়ে পাঠাচ্ছি তোমাকে,ওসব খেয়ে বাচ্চা টা নষ্ট করে ফেলো,,আর কোনো প্রশ্ন তোমার

আমি ওনার কথা শুনে হতবাক হয়ে গেলেম,ইনি কি মানুষ,নিজের বাচ্চা কে কেউ এরকম করে,

উনি খাবার টেবিল থেকে খাবার তুলে আমার দিকে একটা প্লেট নিয়ে এগিয়ে আসলেন____

শিশিরঃ দুপুরে এসেছিলে শুনলাম,,খাও নি তো মনে হয় কিছু,,দেখি এই খাবার টা শেষ করো

এমনিতে ওনার কথা শুনে আমার মেজাজ পুরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে তার উপর উনি এসব,রাগে প্লেট টা ওনার হাত থেকে নিয়ে মেঝেতে ছুড়ে দিলাম,ভাতের দানা আর তরকারি দিয়ে মেঝে পুরো একাকার হয়ে গেলো নিমিষে,,আমি আবার গিয়ে ওনার কলার চেপে ধরলাম

রোদেলাঃ বাচ্চা নষ্ট করার জন্য আমি এসেছি আপনার কাছে,,বাচ্চা নষ্ট করতে___বাচ্চা টাকে খুন করার হলে তো আমি বাড়িতেই করতে পারতাম

শিশিরঃ রোদেলা আমার লাগছে,,ছাড়ো আমাকে

রোদেলাঃ আপনি না একজন ডক্টর,,মানুষকে বাঁচান আর সেই আপনি কি করে নিজের সন্তান কে এভাবে নষ্ট করতে বলছেন,,আপনি কি সত্যি মানুষ টা এতো টাই খারাপ

শিশিরঃ হ্যা আমি খারাপ,আমি জঘন্য একটা মানুষ,,আমি কোনোদিন কোনো বাচ্চার ভালো বাবা হতে পারবো না রোদেলা,,তুমি এই বাচ্চা টাকে নষ্ট করে দেও,,বাবা হতে গেলে অনেক কিছু করতে হয় আর সেই অনেক কিছু করার মতো ভালো ছেলে আমি না,,তাই আমি যা বলছি তুমি সেটা শুনো

রোদেলাঃ আমি শু–ন–বো না,,এই কয়েকটা মাস আমি অনেক কথা শুনেছি আপনার কিচ্ছু বলি নি কিন্তু প্রশ্ন টা যখন আমার বাচ্চার উপর আমি মুনতাসীর চুপ করে থাকতে পারবো না

শিশিরঃ তোমার না ফ্রাইডে বিয়ে রোদ,,অভ্র জানে তুমি আমার কাছে এসে এভাবে

রোদেলাঃ আমি সব ছেড়ে চলে এসেছি,,ভেঙে দিয়েছি আমি আমার বিয়ে!!

শিশিরঃ রোদেলা (অস্ফুটে)

রোদেলাঃ আমি আপনার কাছে কিচ্ছু চাই না কিচ্ছু না,আপনি শুধু এই বাচ্চা টাকে আপনার পরিচয় দেবেন এতটুকুই চাওয়া আমার আপনার কাছে

শিশিরঃ তোমার মাথা ঠিক আছে তো রোদেলা,,পরিচয় দেওয়া মানে বুঝো তুমি,,পরিচয় দিতে গেলে আমাকে তোমায় বিয়ে করতে হবে,,

রোদেলাঃ করতে হলে করবেন

শিশিরঃ Are you gone an incense রোদ,,তুমি কি করে আমার মতো একটা নোংরা ছেলের সাথে নিজেকে জড়াতে চাইছো??___রোদ তুমি আমাকে বিয়ে করে আমার যেই বাড়িতে যাবা আমি সেখানে রোজ নতুন নতুন মেয়ে নিয়ে আসি____আমার কথা টা একটু শুনো তুমি,, তুমি এই বাচ্চা টাকে এখানেই শেষ করে দেও রোদ,অভ্র অনেক ভালো ছেলে রোদ তুমি ফিরে যাও

আমি এবার আমার রাগ টাকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না,,রাগে কেঁদে ভাসিয়ে ওনার গালে ইচ্ছে মতো থাপ্পড় বসিয়ে দিতে থাকলাম!!

রোদেলাঃ আপনি কি জানেন,আপনি শুধু একটা জানোয়ার না আপনি একটা কাপুরুষ____মানুষ এতো নীচ কি করে হয়__একটা বাচ্চা কে যখন নিজের পরিচয় দিতে পারবেন না তখন কিসের জন্য আমাকে সেদিন নিজের ভোগের বস্তু বানিয়ে ছিলেন,,নিষিদ্ধ পল্লী তে কি মেয়ে কম পড়ে গিয়েছিলো না আমাকে দেখে নিষিদ্ধ পল্লী থেকে আসা কোন মেয়ে মনে হয়েছিল কোনটা??

শিশিরঃ রোদ এসব কি ধরনের কথা(ঝারি দিয়ে)

রোদেলাঃ কি কথা কি কথা বোঝেন না আপনি কি কথা,,এতো অবুঝ তো না আপনি,,কিসের জন্য বলুন কিসের জন্য

শিশিরঃ রোদ শান্ত হও

রোদেলাঃ আমি পারছি না শান্ত হতে,আমি সব ফেলে চলে এসেছি শুধু এই বাচ্চা টার জন্য,এই বাচ্চা টা না থাকলে আমিও মরে যাবো এই আমি আপনাকে বলে রাখলাম

শিশিরঃ রোদ!!??

উনি রাগে আমাকে ওনার বুকে আগলে নিলেন,আমি জানি আমি যদি ওনাকে এসে বলতাম আমি আপনাকে বিয়ে করতে চাই উনি হয়তো একবার হলেও বিষয় টা ভাবতেন কিন্তু বাচ্চা,,উনি যে এটাকে একদম পছন্দ করেন না,পছন্দ করেন না ঠিক না আসলে উনি বাবা হতে ভয় পান!!!!

আমি ওনার বুকে লেপ্টে গিয়ে কেঁদে পুরো ভাসিয়ে দিলাম,,উনি পুরো হেল্পলেস হয়ে গিয়েছিলো সে সময় টা,,কি করবে কিছুই উনি বুঝতে পারছিলেন না

রোদেলাঃ আপনি আপনি একটু আমার দিক টা দেখুন,আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি আমি কোনোদিন কোনোদিন কোনো অধিকার নিয়ে আপনার সামনে দাঁড়াবো না,,আপনি শুধু এই বাচ্চা টাকে মানুষ করতে আমাকে সাহায্য করুন,,যদি সেটাও না পারেন এই বাচ্চা টাকে একটা পরিচয় দিন অনন্ত,,যাতে কেউ অনন্ত আমার এই বাচ্চা টাকে জারজ বলে না ডাকতে পারে

শিশিরঃ রোদেলা!!(অস্ফুটে)

রোদেলাঃ আপনার ঔ বিশাল বাড়িতে কি আমার জন্য একটা ঘর হবে না,একটা ছোট্ট ঘর,দরকার হলে আমি বাকি মেড দের মতো আপনাকে সেবা দেবো কিন্তু তবুও আপনি আমাদের এই বাচ্চা টাকে শেষ করতে বলবেন না প্লিজ আমি হাত জোর করছি আপনাকে

শিশিরঃ রোদেলা প্লিজ একটু চুপ করো

রোদেলাঃ আপনি মেয়ে নিয়ে আসলেও আমি আপনাকে কিচ্ছু বলবো না,আপনি আমাকে এক বেলা খেতে না দিলেও আমি কিচ্ছু বলবো না আপনি শুধু এই বাচ্চাটাকে নষ্ট করতে বলবেন না,,বলবেন না আপনি

আমার সেই গলা ছাড়া কান্না দেখে উনি আমাকে এক ধাক্কায় ছাড়িয়ে পেছন ঘুরে দাঁড়ালেন,আমি তখনো কেঁদে যাচ্ছি কিন্তু ওনার মন গলাতে পারছি না

শিশিরঃ তুমি ফিরে যাও রোদ,আমার এই Cursed life এ আমি কিছুতেই তোমাকে জোড়াতে পারবো না,,কিছু তেই না,

ওনার কথায় ভেঙে গিয়ে আমি মুখে হাত দিয়ে আরো জোরে কেঁদে উঠলাম,,উনিইও এবার আমার সাথে কেঁদে উঠলেন,,খুব কাঁদলেন!!!

শিশিরঃ আমি একটা খারাপ ছেলে রোদ,,খারাপ ছেলে আমি,,কারো বাবা হওয়ার জন্য আমি সঠিক মানুষ না রোদ,,আমি একটা জঘন্য ছেলে,,তুমি ফিরে যাও রোদ ফিরে যাও

আমি কাঁদছি উনিও কাঁদছে,,,,শিশির মুখ ঘুরিয়ে আবার আমাকে জড়িয়ে ধরলেন,,আমার মাথা টা শক্ত করে ওনার বুকে চিপে ধরলেন,,আবার কাঁদতে থাকলেন,,এরপর আমার মাথার সাথে মাথা ঠেকিয়ে দিয়ে উনি ওনার দু হাত আমার গালে রাখলেন,,আমি হাত রাখলাম আমার গালে হাত রাখা ওনার হাতের উপর,,

শিশিরঃ আমি বাবা হতে খুব ভয় পাই রোদ,,খুব ভয় পাই,,বাবা শব্দ টা শুনলেই আমার ঘৃনা আসে,,আমি কোনোদিন কোনো বাচ্চার ভালো বাবা হতে পারবো না রোদ কখনো পারবো না,,

রোদেলাঃ আপনি শুধু এই বাচ্চা টাকে একটা নাম দেবেন শুধু একটা নাম,,আমার বাচ্চা টা যেনো কারো কাছে অবৈধ বলে না পরিচিত হয়ে ওঠে শিশির,,আমার শুধু এতটুকু চাওয়া আপনার কাছে শুধু এতোটুকুই

দুজনে আবার কাঁদতে থাকলাম,,কান্নায় এতো বিভোর যে মা এসে কখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন কারোরই বুঝে আসে নি সেটা,,একটা পর্যায় উনি কান্না থামিয়ে এ মুখ তুলে কিছু বলতে যাবেন তার আগেই মা নিজের গায়ের সর্বশক্তি দিয়ে ওনার গালে ইচ্ছে মতো একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন!!

আমি মুখ তুলে তাকাতে গিয়ে চুপ হয়ে গেলাম,উনি মা কে কিছু বলতে যাবে তার আগে মা চিৎকার করে উঠলো,মার কন্ঠ ছিলো ভারী চোখে ছিলো আগুনের লাভা,মার চোখের দিকে তাকাতে আমি নিজেই ভয়ে পুরো চুপসে গেলাম!!

বাসবিঃ শাহরিয়ার বংশের রক্ত তো শাহরিয়ার এর-ই মতোই হবে

শিশিরঃ মা তুমি

বাসবিঃ খবরদার,,খবরদার তোর এই নোংরা মুখে আমাকে আর কোনোদিন তুই মা বলে ডাকবি না____আমার তো ভাবতেই ঘেন্না লাগছে আমি তোর মতো একটা ছেলে কে দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করেছিলাম

মা আবার ওনার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন,আমি পুরো কেঁপে উঠলাম,উনি কেঁদে ফেললেন কিন্তু মার চোখের আগুন দ্বিগুণ হয়ে উঠলো!!

বাসবিঃ এতোদিন তোকে নিয়ে আমি গর্ব করতাম আজ কি মনে হচ্ছে জানিস তোর মতো একটা পাপ কে জন্মদিয়ে আমি জীবনে সব চাইতে বড় ভুল করেছি

শিশিরঃ এভাবে বলো না মা তুমি, আমি তো তোমার ভালো রাজা বলো

মা আবার ওনার গালে থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন!!

বাসবিঃ রাজা,,আমার রাজা মরে গেছে আজ থেকে,,তোকে আমি ডক্টরি পড়িয়েছিলাম মানুষকে বাঁচাতে আর তুই কি না নিজের সন্তান কে নষ্ট করে দিতে____তোকে দেখেই ঘেন্না হচ্ছে আমার,,ছিঃ____আজ প্রথম আমার মনে হচ্ছে আমি সমরেশের নোংরা ছায়া তোর মাঝে দেখছি

শিশিরঃ মা!!!!

বাসবিঃ____আমার দেওয়া শিক্ষা টা এতোই মূলহীন ছিলো তোর কাছে রে রাজা যে তুই এভাবে একটা মেয়ের জীবন নিয়ে

মা আবার ওনার গালে একটার পর একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিতে থাকলেন তো থাকলেনই,আমি এখন ঠিক কি করবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না,ওনাকে এতো গুলো থাপ্পড় দিয়েও মা শান্ত হলেন না,,এপাশ ওপাশ খুঁজে ওনার বারান্দা থেকে একটা লোহা টাইপ লম্বা কি জানি খুঁজে বের করে নিয়ে আসলেন,,মার হাতে ঔ মোটা লাঠি টা দেখে আমি ভয় পেয়ে পুরো আঁতকে উঠলাম????মা এখন এই লোহার লাঠি টা দিয়ে ওনাকে মারবে!!?‍♀️?‍♀️?‍♀️?‍♀️

হ্যা মা তাই করছে,,লাঠি টার উপর নিজের সর্বশক্তি দিয়ে মা ওনার হাতে পিঠে কোমড়ে বুকে যেখানে পারছে মারছে,,এক একটা মারের শব্দ আসছে ধপাস ধপাস,,মাকে থামানো যাচ্ছে না,আমি কিছু বলতে গিয়ে হাত বাড়াতে গিয়েও হাত বাড়াতে পারছি না,ভয়ে আবার হাত নামিয়ে নিচ্ছি,এর মধ্যে আহির ভাইয়া আসলেন,উনিও এসে চুপ করে দাঁড়িয়ে গেলেন,দেখে মনে হচ্ছে উনি এসবে অভ্যস্ত অভ্যস্ত বললে ভুল হবে উনিও মাকে চরম লেভেলের ভয় পান,আমি ঠিক করলাম এবার মাকে থামানো উচিৎ,আমি মাকে কিছু বলতে যাবো কিন্তু আহির ভাইয়া আমাকে ইশারায় না করে দিলেন,,

মা মারছে আর উনি একদম সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে সেই মাইর গুলো সহ্য করে নিচ্ছে,আমি সেই মাইর গুলোর ব্যাথা বুঝতে পারছি,উনার চোখ দিয়ে জল বের হচ্ছে নাক দিয়ে পানি,তবুও উনি চুপচাপ দাঁড়িয়ে আছে কিচ্ছু বলছে না,একটা টু শব্দো না

বাসবিঃ এতো এতো মেয়েদের নেশা তোর,,এতো__আমি থাকি না বলে রোজ রাতে মেয়ে নিয়ে এসে,,তোকে দেখেই ঘেন্না লাগছে আমার রাজা,,ঘেন্না ধরে যাচ্ছে তোকে দেখে__কটা কটা মেয়ের জীবন এভাবে নষ্ট করেছিস তুই কটা___এই শয়তানের বাচ্চা বল এরকম করে কটা বাচ্চা কে মেরে ফেলছিস তুই,,চুপ হয়ে আছিস কেনো উওর দে___মুখ নেই না এসব কিছু বলার____আরে তোর মায়ের ঘরেও তো একটা মেয়ে আছে বোন আছে তোর তার সাথে যদি আজ কেউ এরকম করতো তুই পারতি এরকম করে___

আহিরঃ ম্যাডাম স্যার আসলে

বাসবিঃ আমি তোমাকে এর মধ্যে কথা বলতে বলেছি আহির___তুমি তো তোমার বসের হয়ে সাফাই গাইবে তাই না___রাজার এই সব নোংরা কাজ তোমার একবারো মনে হয় নি ম্যাডাম কে আমি ফোন করে জানাই___ছিঃ____

মা লাঠি ফেলে দিয়ে আবার ওনার গালে পট পট পট পট করে থাপ্পড় মারতে শুরু করলেন?‍♀️?‍♀️?‍♀️?‍♀️না আমি আর ওনার এই কষ্ট সহ্য করতে পারতিছি না,থাপ্পড় খেয়ে খেয়ে ওনার সাদা সাদা গাল গুলো পুরো পাকা টমেটোর মতো লাল হয়ে গেলো,নাক টা পুরো লাল টুসটুসা স্ট্রবেরির মতো হয়ে আছে,, তবে মনে মনে খুব খুশি হলাম আমি,,ওনার এই সব নোংরামো এবার বন্ধ হবে হু

আমি মাকে থামাতে যাবো তার আগে আমার মাথা ঘুরে আবার বমি আসতে শুরু করলো,,আমি শরীর ছেড়ে দিয়ে পড়ে যেতেই শিশির আমাকে লক্ষ্য করে আমাকে আগলে ধরলেন,মা ওনার সাথে আমাকে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলেন,

মা-র সামনে উনি আমাকে ধরতেও ভয় পাচ্ছিলেন,তবু কাঁপা হাতে আমার পালস চেক করে মাথা নামিয়ে বলে উঠলেন আমি দুপুর থেকে কিছু খাই নি,মা ওনাকে আমার পাশ থেকে উঠে দিয়ে আহির ভাইয়া কে বললেন আমার জন্য খাবার নিয়ে আসতে।

___________________

আমি একটু সুস্থ হলে মা আমাকে নিয়ে আমার বাড়িতে আসেন,,আমার সাথে ওনার ছেলের বিয়ের ব্যাপারে কথা বলতে!!

কিন্তু সেখানে মাকে আমার পরিবারের প্রত্যেকটা সদস্য থেকে এতো অপমান সহ্য করতে হবে আমি ভাবি নি,,আমাদের সাথে ছিলেন শিশির আর আহির ভাইয়াও,,শুধু মা চুপ করে থাকতে বলেছে দেখে শিশির চুপ হয়ে দাঁত মুখ খিঁচে মার অপমান টা সহ্য করে নিলেন,নয়তো!!

বাবা,মা’র দিকে ঘুরেও তাকালেন না,শুধু আমাকে এসে বললেন আমি যদি শিশির কে বিয়ে করি তাহলে উনি আমাকে তাজ্য টাইপ কিছু করবেন!!আর সাথে এও বলে দিলেন আমার জন্য এ বাড়ির দরজা সারাজীবনের জন্য বন্ধ হয়ে যাবে

সবাই আমাকে তারপরো বুঝাতে লাগলেন বাচ্চা টাকে নষ্ট করতে,,এসব বিয়ে সংসার তাও আবার যে আমার সাথে এতো বড় অন্যায় করছে তার সাথে কেউ মেনে নিতে পারছিলেন না ব্যাপারটা,কিন্তু আমি কারো কথা শুনলাম না, এখন আমার একটাই চিন্তা যেভাবেই হোক আমার গর্ভে একটা বাচ্চা আছে আর যখন আমার কাছে সুযোগ আছে বাচ্চা টাকে পৃথিবীর আলো দেখানোর তখন আমি শিশিরকে বিয়ে করেই সেই কাজ টা করবো,,কতো মেয়ের বছরের পর বছর বাচ্চা হয় না বলে তারা মরিয়া হয়ে পড়ে আর আমি কি না সেখানে আমার বাচ্চা কে!!

এক কাপড়ে মা কে নিয়ে বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আসলাম,বাবা যে আমার এ কাজে ভীষণ কষ্ট পেয়েছে তা আমি বেশ বুঝলাম,ওদিকে আমার যিনি মা উনি আমার জন্য কেঁদে ভাসিয়ে দিচ্ছে,আপুও কাঁদছে,তারা জানে বাবার রাগ মানে অন্য রকম আমাকে না করেছে মানে আমার সাথে তাদেরও আর কখনো যোগাযোগ উনি করতে দেবেন না!!
____________________
কাজি অফিসে খুব সাধারণ ভাবে বিয়ে হলো ওনার সাথে আমার,ওনার সাক্ষী ছিলো আহির ভাইয়া,আমার সাক্ষী কে ছিলেন জানেন নীলিমা আপু!!খুব অবাক হচ্ছেন তাই না,,যেই নীলি শিশিরের জন্য এতো টা পাগল ছিলো সে কি করে শিশিরের বিয়েতে শিশিরের বউয়ের সাক্ষী হলো!!

আমি যখন শরীর খারাপ করে ওনার বিছানায় শুইয়ে ছিলাম তখন মার সাথে নীলি আপুও ওনাকে বোঝাতে টিউলিপে এসেছিলেন,উনি নীলি আপুর এই রুপ দেখে সত্যি অবাক হয়ে গিয়েছিলেন,,নীলি আপুর এক কথা ছিলো উনি শিশির কে ভালোবাসে সে ঠিক আছে কিন্তু আমার আর আমার বাচ্চার সাথে কোনো অন্যায় উনি শিশিরকে করতে দেবেন না,সে যে-ভাবেই হোক আমি ওনার বাচ্চার মা তাই আপু আজ কাঠ কাঠ কন্ঠে শিশিরকে আদেশ করেন শিশির যেনো আমাকে বিয়ে টা করে নেয়!!

মা আমাদের নিয়ে বাড়িতে আসলেন,,নীলি আপুও বেশ খানিকক্ষণ আমাদের সাথে থেকে ওনার বাড়িতে চলে গেলেন,তবে নীলি আপু যে আমাদের এভাবে এক সাথে দেখে ভেতরে ভেতরে শেষ হয়ে যাচ্ছিলেন আর কেউ না বুঝুক আমি বেশ বুঝতে পারছিলাম,,

রাতের দিকে নীলি আপু বাড়ি ফিরে গেলেন,,এর মধ্যে মার সাথে আমার ভাবটাও হয়ে আসলো খুব ভালো করেই,,তার ছেলে আমার সাথে অন্যায় করেছে দেখে মা নিজে যেনো আমার সাথে চোখে চোখ মেলাতে পারছিলেন না,,,মা তো পারলে শিশির কে পুলিশে ধরিয়ে দেয় কিন্তু আমি বাঁধা দিয়ে বসলাম,,মা তবুও আমার থেকে বারবার ক্ষমা চাইতে লাগলেন,,তাই আমি মার সাথে যতোটা পারছি ফ্রি হতে চেষ্টা করতে থাকলাম,,কিন্তু ওদিকে বাবা আর মার জন্য বুক ফেটে কান্না আসছিলো আমার,,ওনারা কি করছে খুব জানতে ইচ্ছে হচ্ছিলো,,সাহস করে নিরু আপুকে ফোন করলাম নিরু আপু ছাঁদে গিয়ে আমার সাথে কথা বললেন,,আপু আমাকে জানালেন আমি চলে আসার পর বাবা সবাইকে ডেকে বলে দিয়েছে এই বাড়িতে রোদেলার নাম যেনো আর কোনোদিন ভুলেও কারো মুখ থেকে উচ্চারণ করা না হয়!!!!
_____________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here