চার বছর পরে দেশে ফিরে বউয়ের মুখে ভাইয়া ডাকটা শুনে মেজাজ টা খারাপ হয়ে গেল। তবুও নিজেকে সংযত করে বললাম:
হৃদয়: আমি তোমার ভাই হবো কেন? কে বলেছে আমি তোমার ভাইয়া।
নীলিমা: আপনার আম্মু আব্বু তো আমাকে তাদের কে আম্মু আব্বু বলে ডাকতে বলেছে। তাহলেতো আপনি ভাইইয়াই হন।😃
হৃদয়: আরে আমি তোমার ভাইয়া হতে যাবো কোন দুঃখে। আমি তোমার স্বামী, বর বর।😠
নীলিমা: ওকে এখন থেকে বর বলে ডাকবো?😌
হৃদয়: নাম ধরে ডাকবে নাম নাম নাম! আমার নামটা জানো তো?🙄
নীলিমা: হ্যাঁ জানি তো।😀
হৃদয়: কি বলতো?🙂
নীলিমা: হারামজাদা।😇
হৃদয়: কি কে বলেছে এটা?😠
নীলিমা: আপনার আম্মু!🤐
কথাটা শুনে আমি আম্মু বলে চিৎকার করে উঠলাম। আম্মু ছুটে এসে বলল:
আম্মু:কি হয়েছে?😳
হৃদয়: আমার নাম হারামজাদা😠
আম্মু: এমা তা হবে কেন।😐
হৃদয়: তুমি নাকি নীলিমাকে বলছো🙄
নীলিমা :সেদিন তুমি বললে না ওই হারামজাদা টার জন্য নাকি তোমার শান্তি নেই।😀
আম্মু :আরে ওটা তো আমি এমনি বলছি ওর নাম হৃদয়।😅
হৃদয়: হৃদয় বলে ডাকবে আমাকে ওকে?😑
নীলিমা:আচ্ছা🙃
আমি আর কথা না বাড়িয়ে ফ্রেশ হয়ে দুপুরের খাওয়া-দাওয়া করে বেরিয়ে পড়লাম আমার সেই চিরচেনা শহর টা ঘুরতে।
সারা বিকাল ঘোরাঘুরি করলাম। বন্ধুবান্ধবের সাথে দেখা করলাম অনেকদিন পর তাদের সাথে দেখা। একেকটা তো হাতির মত মোটা হয়ে গেছে। 😁
তাদের সাথে আড্ডা দিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় ফিরলাম।
রাতে ডিনার শেষ করে রুমের দরজায় এসে দেখি নীলিমা খাটের মাঝখানে বসে আছে।
আমাকে রুমে ঢুকতে দেখে।
নীলিমা: কি করছেন? একটা মেয়ের রুমে ছেলেমানুষ হয়ে এত রাতে ঢুকছেন।বেরিয়ে যান এক্ষুনি।😠
হৃদয়: কিহ!😳
নীলিমা: আপনার একটা মেয়ের রুমে ঢুকতে লজ্জা করে না।😠
হৃদয়: আজব, আমিতো তোর বর।🙁
নীলিমা: তো, তাই বলে আপনি আমার রুমে আসবেন?🙄
হৃদয়: তো কোথায় যাব।🙂
নীলিমা: সেটা আমি কি করে বলব। 😐আম্মু……
আমি দৌড়ে গিয়ে নীলিমার মুখটা চেপে ধরলাম।
হৃদয়:এই আম্মুকে ডাকতেছিস কেন?😱
নীলিমা: আমি আম্মুকে বলে দেব তুমি আমার রুমে আসছো! তুমি ভালো না বদমাইশ খারাপ ছেলে কোথাকার লুচ্চা লাল টিকটিকি তেলাপোকা বান্দর হনুমান।😞
হৃদয়: আরে বোন আমি আসলে সমস্যা কোথায়? 😭
নীলিমা: আম্মু বলেছে কোন ছেলের সাথে কথাও না বলতে ইউনিভার্সিটিতে গিয়ে। সবার থেকে দূরে দূরে থাকতে। আর তুমি ডাইরেক্ট আমার রুমে চলে আসছো।😠
এতক্ষণে ব্যাপারটা আমি বুঝতে পারলাম। মনে হয় স্মৃতিশক্তি নষ্ট হওয়ার কারণে ভুলে গেছে স্বামী স্ত্রী কাকে বলে।😶
কি প্যারা এখন কি আমি বউয়ের সাথে থাকতেও পারবো না। 😭😭
হঠাৎ একটা আইডিয়া মাথায় আসলো।
হৃদয়: আচ্ছা আমার আব্বু আম্মু স্বামী-স্ত্রী তাই না?😪
নীলিমা: তো 🙄
হৃদয়: তারা তো একসাথে থাকে।😇
নীলিমা: হুমম।🤐
হৃদয়: এখন কি বুঝতে পারছিস। স্বামী স্ত্রী একসাথে থাকতে হয়।🙂
নীলিমা: ও আচ্ছা।🙄
যাক বুঝতে শেষ পর্যন্ত বুঝতে পেরেছে। আমিতো ভাবলাম আজকে আমাকে ঘরের বাইরে রাখবে। একটা মুচকি হাসি দিয়ে ঘরের ভেতরে ঢুকলাম।😃
আমি বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে খাটে শুয়ে পরলাম। মনে মনে ভাবতেছি খাটে শোয়া নিয়ে আবার কি কাহিনী হয়।🙁
কিন্তু দেখলাম কিছু না বলে আমার পাশে এসে শুয়ে পড়ল।😃
যাক মনে হয় সবকিছু স্বাভাবিক করতে তেমন কষ্ট হবে না।😌
আমি একটু নীলিমার দিকে এগিয়ে আসতেই আমার হাত নীলিমার হাতের সাথে একটু স্পর্শ লাগতেই নীলিমা সজোরে এক ধাক্কা মেরে খাট থেকে দিল ফেলে।💔
এবার মনে হয় মাজা টা ভাঙলো গো….।😭
আমি খাট থেকে ঊঠে দেখি নীলিমা খাটের মাঝখানে বসে আছে। মনে হচ্ছে আছার মারি 😠
হৃদয়: ঐ আমায় ধাক্কা মেরে ফেলে দিলি কেন?😠
নীলিমা: তুমি আমার হাতে হাত দিলে কেন 🙄 তুমি একটা লুচু ছেলে। যাও সোফায় যাও।🤐
হৃদয়: আরে আমি কি ইচ্ছা করে হাত দিয়েছি? আর তুমি তো আমার বউ। তোমার গাঁয়ে হাত দিব না কার গাঁয়ে দিবো?☹️
নীলিমা: কি হাত দিয়েছ আবার বলছো কার গায়ে হাত দিব?😤
হৃদয়: আরে বউয়ের গায়ে হাত দিলে কি এমন হবে? আল্লাহ বাঁচাও আমায় 😭
নীলিমা: বউ বলে কি তার গায়ে হাত দেওয়া লাগবে নাকি? 🙄
হৃদয়: তো মানুষ কি বউকে বিয়ে করে নে বাক্সের ভেতর তুলে রাখে 🙄
নীলিমা: তুমি এর আগে কয়টা বিয়ে করছো? এর আগে বিয়ে না করলে তো জানার কথা নয় বর বউয়ের গায়ে হাত দিতে পারে।
হৃদয়: কয়টা মানে 🙄। তুমিই প্রথম।
নীলিমা: তারমানে আরো বিয়ে করার ইচ্ছা আছে?🤬
হৃদয়: কখন বললাম সে কথা?😐
নীলিমা: ওই যে বললে তুমি প্রথম। তারমানে দ্বিতীয় তৃতীয় চতুর্থ পঞ্চম আরো নিয়ে আসবে 🙄
হৃদয়: আমি সে কথা বলি নি।🤭
নীলিমা: আমি আর কিছুই জানতে চাই না তুমি এক্ষুনি সোফায় যাও।😤
হৃদয়: আর হাত দিবো না। থাকি না?😟
নীলিমা: যাবে না আম্মুকে ডাকবো?😒
হৃদয়: যাচ্ছি যাচ্ছি।😶
আমি আর কিছু না বলে সোফায় গিয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। ধুর একসময় খাটে শোয়ার সুযোগ থাকলেও শুইতে চাইতাম। আর আজ খাটে শুইতে চেয়েও সোফায় শুতে হচ্ছে।😕
এভাবেই কেটে গেল অনেকদিন। আমি এখন নীলিমার যন্ত্রণায় পুরাই অতিষ্ঠ হয়ে গেছি। মনে হচ্ছে বাড়িঘর ছেড়ে এখন পাবনা যাই।🤯
বাড়িতে ফিরতেই ইচ্ছা হয় না। মেয়েটাকে বিয়ে করার পর থেকে আমার জীবনটা তেজপাতা হয়ে গেছে। আমি ডাইনে গেলে ও বামে যায় আর আমি বামে গেলে ও ডাইনে যায় ।😞
মনে হইতাছে সব কিছু ছাইড়া হিমালয় চলে যাই।😩
রাতে বেলকুনিতে বসে থেকে এসব ভাবতেছি। অনেক রাত হয়েছে নীলিমা এখনো আসলো না রূমে। তাই বের হয়ে আসছিলাম। রান্নাঘরের কাছে আসতেই যা শুনলাম তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না।😱
নীলিমা: বড় আম্মু, হৃদয় তো এখন দেশে ফিরেছে। আর এতদিনে অনেক জ্বালিয়েছি। এখন কি সবকিছু স্বাভাবিক করে নিলে হয়না? অনেক দিনই তো স্মৃতিশক্তি হারানোর একটিং করলাম।😌
আম্মু: না নীলু, আরো কিছুদিন। ও তোরে অনেক কষ্ট দিয়েছে। আরও কিছুদিন এভাবে থাকতে দে।🌝
আমি এসব শুনে পুরোটাই হতভম্ব হয়ে গেল। তার মানে সবই অভিনয়। বাহ আমার মা ওই এর মাথা। যারে বলে ঘরের শত্রু বিভীষণ।😟
আমি রাগে গজতে গজতে রুমে গেলাম। গিয়ে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে থেকে কি করা যায়।…….
চলবে,,,,,,
গল্প শেষ বেলার তুমি
পর্ব ১