শেষ_থেকে_শুরু পর্ব_১৩,১৪

0
1156

শেষ_থেকে_শুরু
পর্ব_১৩,১৪
নন্দিনী_চৌধুরী
পর্ব-১৩

২৭.
জেলের সেলে দেওয়ালে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে আরিশ।চোখ গুলো ভিজে গেছে চোখের পানিতে।সে যে তার জীবনের কত বড় ভুলটা করেছে সে চাইলেও তা ঠিক করতে পারবেনা।সে সব থেকে অধম কাজ করছে।তার কোনো ক্ষমা হয়না।

আরিশ মেহেরের দেওয়া প্যাকেটা খুলে সেখানে একটা ফোন কয়েকটা কাগজ আছে।আরিশ ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে ফোনে কোনো সিম নেই।কয়েকটা ভিডিও ফ্লোডার আছে।আরিশ ভিডিও ফ্লোডার গুলো অন করলো।

প্রথম ভিডিও,

ভিডিওটাতে মেহের বসা একটা সোফায় তার সামনে বসা একটা লোক।লোকটার চোখ মুখ দেখে মনে হচ্ছে অনেক মেরেছে লোকটাকে।

মেহের লোকটার দিকে তাকিয়ে বলছে,

মেহের:বল কার কোথায় তুই আরিশকে মারতে চেয়েছিলি?
লোকটা:বিশ্বাস করেন স্যার।আমি নিজের ইচ্ছায় মারতে চাইনাই।আমাকে একটা মেয়ে বলছিলো মারতে।
মেহের:কোন মেয়ে দেখতে এ কিনা সেই মেয়ে?
লোকটি:জি স্যার।এটাই সেই মেয়ে যার কোথায় আমি ওই ছেলেটাকে মেরেছিলাম।এই মেয়েটা আমাকে ওই ছেলের ছবি দিয়ে বলেছিলো আমি যেনো ছেলেটাক মারি তবে একেবারে জেনো মেরে না ফেলি।ওর কথামতোই আমি ছেলেটাকে অর্ধেক আহত করেছিলাম পরে ওই মেয়েটাই বাঁচিয়েছিলো ছেলেটাকে।এর বদলে আমাকে ৪লাখ টাকা দিছে।

২য় ভিডিও,
এখানে তিনজন ডাক্তার কে বেঁধে রাখা হয়েছে তাদের সামনে মেহের বসা।

মেহেরঃকার কোথায় আপনারা প্রেগ্ন্যাসির মিথ্যা রিপোর্ট বানিয়েছিলেন?
ডাক্তারঃআমি কিছু ইচ্ছা করে করিনি লোভে পরে করে ফেলেছি।অই মহিলা আর মেয়েটা আমাকে ৫লাখ টাকা দিয়েছিলো বলেছিলো প্রেগ্ন্যাসির মিথ্যা রিপোর্ট বানাতে।
ডাক্তার ২য়ঃআমাকে বলেছিলো সুইসাইডের মিথ্যা রিপোর্ট দিতে।আমি দিয়েছি বদলে ৮লাখ টাকা দিয়েছে আমাকে।
ডাক্তার ৩য়ঃআমাকে বলেছে মিস্কেরেজের মিথ্যা রিপোর্ট বলতে আমি বলেছি বিনিময় ৬লাখ টাকা পেয়েছি।

সব গুলা ভিডিও দেখে স্তব্দ হয়ে যায় আরিশ।এ কাকে সে বিশ্বাস করলো।কাকে বিশ্বাস করে নিজের সব শেষ করলো সে।নিজের স্ত্রীকে ঠকালো।আরিশ পরের কাগজ গুলো খুললো।দুইটা চিঠি সেখানে।প্রথম চিঠিটা মেহেরের।

প্রথম চিঠি,
আরিশ
আমি জানি এই সব সত্য যখন জানবে তখন তুমি অনুতপ্ত হবে।তখন তুমি এটাই ভাব্বে যে তুমি কি ভুল করেছো।কিন্তু এই অনুতপ্ত হয়ে এখন কোনো লাভ নেই।তুমি আমার বোনকে অনেক কষ্ট দিয়েছো।তোমার জন্য মরতেও বসেছিলো বোনটা আমার।তাই কোনোদিন যদি তুমি জেল থেকে ছাড়া পাও তবে ভেবোনা আমার বোনকে ফিরে পাবে।আমি কোনো দিন আমার বোনকে তোমার কাছে ফেরত দেবোনা।

২য় চিঠি,

আরিশ,
জানি তুমি ভালো নেই।তোমাকে জেলে নেওয়া হয়েছে আমি জানি।এটাও জানি এই কাজ গুলো তুমি করোনি।ফাঁসানো হয়েছে তোমাকে আশা করি এখানে থেকে তাড়াতাড়ি মুক্তি পাবে।তবে কিছু কথা আমি জানি এতোদিনে তুমি সম্পত্তির ফাইলটা পেয়েগেছো।আর কিছু হলেও তোমার ভুল ভেংগেছে।হয়তো তুমি এখন অনুতপ্ত তোমার কাজে।হয়তো ভাবছো কি করলে এটা।জানো আরিশ আমি অনেক আগেই ভুজেগেছিলাম তুমি আর আমার নেই।তুমি অন্য কারো হয়েগেছো।কারন যেই নারী একটা পুরুষের সাথে মিলিতো হয়ে সে বুঝে ভালো সেই পুরুষটাকে।আমিও বুজতাম তুমি পরোনারীর সাথে থেকে আসছো।তার পার্ফিউমের ঘ্রানে বুজতাম।শার্টে লিপ্সটিক দেখে বুজতাম কিন্তু কিছুই বলতাম না।আমি চেয়েছিলাম তোমার ভুলটা শুধরে দেবো।তোমাকে ঠিক করে আনবো।কিন্তু তার আগেই তুমি আমাকে ছেড়ে দিলে।আমারই বোনের সাথে পরোকীয়ায় লিপ্ত হয়ে।সম্পত্তির প্রতি আমার কোনো লোভ ছিলোনা আর না এখনো আছে।আমি শুধু চাইতাম একটা ভালো মানুষ আমার জীবনে আসুক।আমাকে ভালোবাসুক।তুমি এসেছিলে আমার জীবনে।সুখ কিছু দিয়েছিলে কিন্তু বরাংবর দুঃক্ষ দিলে।আর তাও এমন দুঃখ যার ক্ষমা করা যায়না।আমার বাবাও এই কাজ করেছিলো ছোট মায়ের সাথে পরোকিয়ায় জরিয়ে আমার মাকে কেড়ে নিলো।ভাইয়া আমাকে জানাইয়েছে বাবা নাকি ছোট মায়ের সাথে পরোকীয়া করতো।মা অনেক কেঁদেছিলো বাবার পা ধরে কিন্তু লাভ হয়নি।শেষ পরীনতি আমার মা আমাদের ছেড়ে চলে গেলো।আমি চাইনি আমার মায়ের মতো পরীনতি আমার হোক তাই তুমি বলা মাত্রই তোমার জীবন থেকে আমি চলে এসেছি।তুমি আর সায়মা আমাকে অনেক অপমান করেছো।কোনো প্রতিবাদ করিনি।কারন আমি জানতাম যে আমি ঠিক।আর সেটা একদিন তুমি জানবা।তুমি ডিভোর্সের চারদিনের মাথায় বিয়ে করে নতুন ঘর বাঁধলে আর আমি তখনো লোকের কথা শুনতাম।সবাই নানা ভাবে অপমান করতো আমাকে।এমনকি দুইবার নিজের ইজ্জত হারাতেও বসে ছিলাম আমি।একবার বাঁচায় ভাইয়া আরেকবার সাদাফ স্যার।এই মানুষ গুলোর জন্য আমি আজ বেঁচে আছি।তোমাদের জন্য মরতেও বসেছিলাম আমি।ভাইটা আমার পাগল হয়েগেছিলো।তোমার জন্য শুধু তোমার জন্য সব হয়েছে।
যাই হোক আর কিছু বলতে চাইনা।ভালো থেকো আর হ্যা একটা কথা।

“আরিশ তোমার ওপর আমার কোনো রাগ নেই সত্যি কিন্তু আমি তোমাকে কোনোদিনও ক্ষমা করতে পারবোনা।”

তাই কোনোদিন আমার সামনে এসোনা ক্ষমা চাইতে।তুমি আমার জীবনের শেষ।আমার জীবনের শেষ থেকে শুরু হবে অন্য ভাবে যেখানে থাকবেনা কোনো প্রতারণা।কোনো লাঞ্চনা।

ইতি
মুগ্ধ।

চিঠি দুটো পরে হাউমাউ করে কাঁদছে আরিশ।কত বড় ভুল করলো সে।সায়মা বিশ্বাস করে সব হারিয়ে ফেললো সে।এমনকি পরোকীয়ার মতো নোংড়া কাজেও সে লিপ্ত ছিলো।

আমি নিজ হাতে সব শেষ করে দিয়েছি মুগ্ধ।ঠিক বলেছো আমাকে ক্ষমা করা যায়না।আমার মতো পশুকেন ক্ষমা করা যায়না।সব শেষ করে দিয়েছি নিজ হাতে।

মেহের মুগ্ধকে জানায়নি যে তাদের বাবাই মেরেছে তাদের মাকে আর সালমা সায়মার কথাও জানায়নি।মেহের জানে বোন তার অনেক কষ্ট পাবে।তাই যেটুকু জানানোর সেটুকু জানিয়েছে।

সালমা বেগমের বাসায় এসেছেন পুলিশের লোকেরা।সালমা তো কিছুই বুজতে পারছেনা কি হচ্ছে।

সালমাঃআপনারা এখানে কি কারনে?
পুলিশঃম্যাম আপনার বাসাটা সিল করে দেওয়া হয়েছে।আইনতো এই বাসা এখন আরিয়ান খান মেহেরের।তার কথা মতে আপনি এই বাসায় থাকতে পারবেন না।আপনাকে আজকের মধ্য বাসা ছেড়ে যেতে বলার নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
সালমাঃমানে কি বলছেন এসব?
পুলিশঃএইযে দেখুন।
সালমা ফাইল নিয়ে দেখে আসলেই এই বাসা এখন মেহেরের ইভেন সব সম্পত্তি এখন মেহেরের নামে করা।সালমা বুজতেই পারছেনা এসব কিভাবে হলো।সালমার ভাবনার মাঝে কল আসে তার ফোনে।কল রিসিভ করতেই মেহের অপাশ থেকে বলে উঠে,

মেহেরঃবিকালের মধ্য বাসা থেকে চলে যাবেন।আর ভুলেও চালাকি করবেন না। বাসার চারপাশে আমার গার্ডস আছে। ইভেন বাসায় সিসিটিভি ক্যামেরাও লাগানো। সো কোনো চালাকিনা এক কাপড়ে বেরিয়ে আসবেন।বিকালের পর আপনাকে বাসায় পেলে আপনার মেয়ে জামাই যেখানে আসে সেখানেই আপনাকে দিয়ে আসবো।

বলেই কল কেটে দিলো মেহের।

আজকে কলেজ অফ।মুগ্ধ তাই বাসায় বসে আছে।বসে বসে একদম বরিং লাগছে তার কিছুই ভালো লাগছেনা।মুগ্ধ টিভি ওন করলো কিছু দেখার জন্য তখন খবরের চ্যানেলে দেখলো,

ব্রেকিং নিউজ বিশিষ্ট ব্যাবসায়ী মেহেরাব খানের ২য় স্ত্রীকে তাদের বাসা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে।জানা যায় তিনি এতোদিন ছলনা করে মেহেরানের প্রথম পক্ষ্যের ছেলেমেয়েকে ঠকিয়ে সব অর্থ সম্পত্তি নিজের নামে করতে চেয়েছিলেন।কিন্তু মেহেরাব খানের বড় ছেলে আরিয়ান ইসলাম মেহের বাঁচিয়ে নেন তাদের সম্পত্তি আর বের করে দেন ওনাকে এই বাড়ি থেকে।

মুগ্ধ নিউজ দেখে অবাক।কি হচ্ছে এসব।কাল আরিশ আজ ছোট মা।সালমাকে ঘিরে ধরেছে প্রেসের লোকেরা কোনো মতে তাদের কে পার করে রিকশায় উঠেছেন সে।গন্তব্য সায়মার কাছে যাওয়া।

মেহের অফিসের চেয়ারে বসে নিউজ দেখছে আর হাসছে।

যেখানেই যান মিসেস খান আপনাকে আমি এতো সহজে ছাড়ছিনা।যান মেয়ের কাছে এর পরের পালা আপনার মেয়ের।
আমার মা বোনের সাথে করা অন্যায়ের শাস্তি আপনারা পাবেন।

সালমা বেগম এসেছেন সায়মার কাছে সায়মার সেম অবস্থা।আরিশের বাসা অফিস সব সিল মেরে দেওয়া হয়েছে।কেউ থাকতে পারবেনা।সায়মা দাঁড়িয়ে আছে বাসার সামনে।এখন কি করবে সে কিছুই মাথায় আসছেনা তার।আচ্ছা ধোরা পরে যাবে নাকি তারা।সাদাফ মেহের কি সব জেনে গেলো।সালমা বেগম মেয়ের কাছে এসে দেখেন মেয়েও তার মতো অসহায় হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।কোনো পথ দেখতে পাচ্ছেনা তারা।কি হচ্ছে এসব তাদের সাথে।কোথায় যাবে এখন তারা।

চলবে

#শেষ_থেকে_শুরু
#পর্ব_১৪
#নন্দিনী_চৌধুরী

২৮.
পানির ঝাপটায় চোখ মেলে তাকান সালমা।আশেপাশে ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে সে একটা রুমে আছে।নিজের দিকে তাকিয়ে দেখে চেয়ারে হাত বাধা অবস্থায় আছে।মাথায় কি একটা পড়িয়ে দেওয়া।সালমা বেগম কিছু বুজতে পারছেনা এগুলা কি হচ্ছে।

“এভাবে মোচরামূচরি করে লাভ নেই।এই দড়ি ছিড়ে আপনি পালাতে পারবেন না মিসেস সালমা।”

সালমা বেগম কথাটা শুনে সামনে তাকিয়ে দেখে মেহের দাঁড়ানো।দুই হাত পকেটে রেখে দাঁড়িয়ে আছে।সালমা অবাক হয়ে বলে,

সালমা:মেহের তুমি!
মেহের:ইয়েস আমি।
সালমা:মানে তুমি….।
মেহের:হ্যা আমিই আপনাকে এখানে এনেছি।শুধু আপনাকে না আপনার গুনবতি মেয়েকেও আনা হয়েছে।
সালমা:কোথায় সায়মা।ওকে কোথায় রাখছো।
মেহের:আছে এখানেই আছে তবে অন্য রুমে।
সালমা:কেন করছো এসব।নিজের বাবার সব সম্পত্তি ঘ্রাস করে আমাকে রাস্তায় বের করে দিলে বোনের স্বামীটাকে জেলে পাঠালে।লজ্জা করেনা তোমার।
মেহের:হাহাহাহাহাহা!ওরে কে কোথায় আছিস রে দেখ মিসেস সালমা বেগম বলছেন লজ্জার কথা।যে নিজে হাজার পাপ করে এখান পর্যন্ত এসেছে সে আমাকে বলছে লজ্জার কথা।উফ আল্লাহ হাসতে হাসতে আমি শেষ।আপনার নিজের যদি লজ্জাবোধ থাকতো তবে নিজে অন্য একজনের সংসার নষ্ট করে তাকে মেরে তার সংসারে আসতেন না।নিজে মতো নিজের মেয়েকে বানাতেন না।আপনার লজ্জার ল বলতেও কিছু নেই।
সালমা:ম.মানে কি বলতে চাও তুমি?
মেহের:কি হলো ঘামছেন কেন আমিতো কিছুই বলা শুরু করলাম না এর মধ্যেই ঘাম ছুটে গেলো।আচ্ছা এবার বলুন কেন আমার মাকে মারলেন?
সালমা:কিসোব বাজে কথা বলছো।তোমার মা এক্সসিডেন্টে মারা গেছে।আমি কেন মারবো তাকে।
মেহের:সত্যি কথাটা বলুন।
সালমা:আমি সত্যিই বলছি।আমি কেন মারবো তোমাত মাকে।
মেহের:আচ্ছা বুজলাম।

মেহের পাশের গার্ডকে ইশারা করতেই সে একটা সুইচ টিপলো আর সাথে সাথে মিসেস সালমা চিৎকার করে উঠলেন,

সায়মা:আয়ায়ায়ায়া!
মেহের সালমাকে ইলেক্ট্রিক শোক দিয়েছে।
মেহের:এই শোকটাকে সাধারন ভাব্বেন না যতখন আপনি সত্যি শিকার না করবেন একটু পর পর এই শোক চলতে থাকবে।
সালমা:প.পানি!
মেহের:পানি দেও একে।
একটা গার্ড এসে পানির গ্লাস দিয়ে গেলো।পাশের গার্ড সালমার মুখে তা ধরে।সালমা পানি খেতে গিয়ে দেখে গ্লাসে টাকা।সালমা অবাক হয়ে তাকায় মেহেরের দিকে।মেহের বাঁকা হেসে বলে,

মেহের:কি হলো খান।এটাইতো আপনার সব।এখন খান এটা।এটার জন্যতো সব করেছেন।এখন এটাই খাবেন আপনি।

মেহের উঠে চলে আসে আর আসার আগে সবাইকে বলে আসে।

উনি যদি সত্যি বলতে রাজি না হয় তবে প্রতি ৫মিনিট অন্তর অন্তর ওনাকে শোক দেবে আর কিছু খেতে চাইলে টাকা দেবে।টাকাই খাবেন উনি।

এদিকে

সায়মাকে একটা রুমে বেধে রাখা হয়েছে তার সামনে সাদাফ বসা।সায়মার দুইপাশে দুইটা মেয়ে দাঁড়ানো।সায়মা মাথা নিচু করে বসে আছে।

সাদাফ:তাহলে বলো কেন আমার সাথে চিট করলে।কেন মুগ্ধকে আমার থেকে আলাদা করে দিলে?
সায়মা:আ.আমি কিছু করিনি।কিসব বাজে কথা বলছেন আপনি।
সাদাফ:বাজে কথা বলছি আমি।
সায়মা:হ্যা বাজে কথাই বলছেন।অহেতুক আমাকে ফাঁসাচ্ছেন।আপনার মুগ্ধের চরিত্র ভালোনা চলেগেছে আপনাকে রেখে।
সাদাফ:শেষ বারের মতো জিজ্ঞেশ করছি সত্যিটা বলো।
সায়মা:বললাম না আমি কিছু করিনি।(চিৎকার দিয়ে)
সাদাফ এভার উঠে মেয়েগুলোকে বললো,

অনেকদিন আপনাদের হাত কাজ করেনা আজকে মন মতো কাজ করিয়ে নেন হাতের।মনে রাখবেন মরে যেনো না যায়।বলেই সাদাফ বেরিয়ে আসে।
আর মেয়ে গুলো সায়মাকে ধরে বেধরাম মার মারা শুরু করলো।

বিকালে সালমা সায়মা যখন রাস্তায় দাঁড়ানো তখন একটা কালো মাইক্রো এসে তাদের উঠিয়ে নিয়ে যায়।এনে দুইজনকে দুই রুমে নিয়ে যায়।সালমাকে সেন্সলেস করে আনা হয়েছে।আর সায়মাকে সজ্ঞানে আনা হয়েছে।মেহের আগেই জানতো সোজাভাবে এরা সত্যকথা বলবেনা তাই দুইজনের জন্য সুন্দর ব্যবস্থা করেছে।

মুগ্ধ আর রুহি ঘরে বসে আড্ডা দিচ্ছে।রুহির এখন ৪মাসে চলছে।মুগ্ধ সবসময় চেষ্টা করে রুহির সাথে থাকতে।যাতে রুহির একা না লাগে।সাদিয়া ও আশে প্রায় প্রায় আড্ডা দিতে।সাদাফ ও আসে এখন মাঝে মাঝে।মুগ্ধ এখন আগের মতো সাদাফকে অতোটা ভয় পায়না।রুহি ঘুমিয়েগেছে তাই মুগ্ধ নিজের রুকে চলে এসেছে।মুগ্ধ নিজের রুমে আসতেই ওর ফোনে কল আসে মুগ্ধ ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখে বোবাভূত।মুগ্ধ চোখ মুখ কুচকে নিলো।কারন কয়েকদিন কোনো ফোন দেয়নাই আজকে আবার কি জন্য দিলো।মুগ্ধ কল রিসিভ করলো।

মুগ্ধ:হ্যালো।
সাদাফ:মেহুরানী!

মুগ্ধ অবাক হলো এই নামেতো তাকে সাদাফ ডাকে।মুগ্ধ আবার স্ক্রিনের দিকে তাকালো।না নাম্বারতো অই বোবা ভূতেরই তাহলে।

মুগ্ধ:ক.কে?
সাদাফ:আবার তোতলাচ্ছো।
মুগ্ধ:স্যার আপনি!
সাদাফ:হ্যা আমি কেন অন্য কাউকে আশা করেছিলে?
মুগ্ধ:না মানে স্যার এই নাম্বারতো একটা বোবাভূতের।
সাদাফ:বোবাভূত!
মুগ্ধ:হ্যা বোবা ভূত।কল দিয়ে কোনো কথা বলেনা।তাই বোবাভূত বলি।
সাদাফ:হুম বুজলাম।
মুগ্ধ:কিন্তু এই নাম্বার আপনার কাছে কেন?আপনি কি বোবাভূতের নাম্বার চুরি করেছেন।
সাদাফ:সাট আপ!আমি কেন চুরি করবো আজব।এটা আমার নাম্নার।
মুগ্ধ:এ!আপনার নাম্বার হলে আমাকে কল দিতো কে?
সাদাফ:আমিই দিতাম।
মুগ্ধ:কিহ!আপনি সেই বোবাভূত।আপনি এতোদিন ফোন দিয়ে কথা বলতেন না কেনো?
সাদাফ:এমনি।আচ্ছা বাদ দেও একটা কথা বলার আছে।
মুগ্ধ:কি?
সাদাফ:উম আসলে আমি তোমাকে….
মুগ্ধ:আপনি আমাকে কি?
সাদাফ:আমি তোমাকে….।
মুগ্ধ:কি আপনি আমাকে?
সাদাফ:কিছুনা বাই।

বলেই সাদাফ কল কেটে দিলো।উফফ আমি ওকে কিভাবে বলবো মনের কথা।
মুগ্ধ:কি আজব লোক বাবা।

দুইদিন পর,
আজকে মেহের,মুগ্ধ,রুহি সাদাফ এসেছে সালমা সায়মার কাছে।মুগ্ধ,রুহি বুজতে পারছেনা এখানে কেন এনেছে ওদের।সালমা আর সায়মাকে এখন এক রুমে রাখা হয়েছে।মেহের অদের নিয়ে সেখানে গেলো।মুগ্ধ রুহি সালমা সায়মাকে দেখে চমকে যায়।সালমা বেগম দুইদিনের টর্চারে একদম নেতিয়ে পড়েছে আর সায়মা দুইদিন মার খেয়ে একদম দুর্বল হয়েগেছে।

মুগ্ধঃঅদের এই অবস্থা কেন?
রুহিঃএরকম দেখাচ্ছে কেন ওদের?
মেহেরঃঅনের আদর যত্ন করা হয়েছে তাই এমন দেখাচ্ছে।মুখ খুলতে রাজি হয়েছে?
গার্ডঃজি স্যার দুইজনেই মুখ খুলবে বলেছে।
মেহেরঃতো মিস সায়মা আগে আপনি শুরু করেন।

সায়মা আসতে আসতে বলতে শুরু করলো।

“মুগ্ধ যখন ক্লাস টেনে মাত্র উঠেছে তখন আমি ক্লাস এইটে।মুগ্ধ ফাইভে দুইবার ফেল করেছিলো তখন আমি থ্রিতে। এরপর মুগ্ধ পড়াশুনা অফ করে দিছিলো।পরে স্কুলের স্যার বলছিলো এবার তারা টাকা ছাড়া মুগ্ধকে পড়বে।মা শুধু মুগ্ধের স্কুলের বেতন দিতো।টিউশানির টাকা দিতোনা।আমি যখন ফোরে উঠলাম মুগ্ধ তখন আবার ফাইবে এবার ভালো রেজাল্ট করলো।তারপর আবার পড়াশুনা আগের মতো চলতে লাগলো।একদিন আমি আর মুগ্ধ এক সাথে স্কুল থেকে আসছিলাম তখন মুগ্ধ কি একটা কেনার জন্য পাশের দোকানে যায় তখন একটা ছেলে আমাকে একটা লেটার দেয় আর বলে এটা সাদাফ ভাই আপনাকে দিছে।আমি লেটারটা নিয়ে ব্যাগে রেখেদেই।বাসায় এসে লেটার পড়ে দেখি লেটার আমার না মুগ্ধের জন্য।লেটারে সাদাফ ওর মনের কথা জানিয়েছে মুগ্ধকে।পরেরদিন স্কুলে এসে দেখি সাদাফ আর অই লেটার দেওয়া ছেলেটা দাঁড়ানো।লেটার দেওয়া ছেলেটা আমাদের দেখাচ্ছে আর সাদাফকে কিছু বলছে।তখন আমি বুজতে পারি অই ছেলেটা সাদাফ।সাদাফকে দেখে আমার ভালোলাগে।তাই আমিন একটা প্লান করি যে আমি মুগ্ধ সেজে সাদাফের সাথে প্রেম করবো।যেই ভাবা সেই কাজ আমি পরেরদিন চিঠির উত্তর দেই মুগ্ধ সেজে অই ছেলেকে দিয়ে পাঠিয়ে দেই।মুগ্ধ রোজ ক্লাসে আসতে পারতোনা।তাই আমি মুগ্ধের মতো করে রোজ আসতাম স্কুলে আর সাদাফ ভাবতো অটাই মুগ্ধ।সাদাফের সাথে ফেজবুকে প্রেম শুরু করি।ওকে আমি এটা বলি যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে কথা বললে কেউ দেখলে বাসায় জানিয়ে দেবে আর আমাকে বাবা অনেক বকবে স্কুলে আসা বন্ধ করে দেবে।সাদাফ তাই রাস্তায় দাড়াঁতোনা।আমি যত পারতাম তত মুগ্ধকে মায়ের মাধ্যমে বাসায় রাখতাম যাতে ও স্কুলে যেতে না পারে।সাদাফ ছয় মাসেও আমাকে সামনাসামনি দেখেনি।এভাবে এক বছর চলেগেলো। মুগ্ধের বিয়ের সমন্ধ এলো আরিশদের বাসা থেকে।আরিশ অনেক ধনি ঘরের ছেলে কিন্তু সাদাফ তখন ছিলো মিডেলক্লাস।মুগ্ধের এতো ভালো ঘরে বিয়ে হোক সেটা মা আমি কেউ চাইনি।পরে ভাবলাম সাদাফের থেকে আমাকে পিছন ছাড়াতে হলে মুগ্ধের এই বিয়ে করা লাগবে আর আরিশকে আমার করে পেতে হলেও বিয়ে করা লাগবে।তাই পরে আমি মাকে মানিয়ে নেই।এরপর মুগ্ধের নিয়ের আগেরদিন রাতে আমি সাদাফকে যা নয় তাই বলে অপমান করে রিলেশন ব্রেকাপ করি।আর সাদাফ ভাবে ওটা মুগ্ধই ছিলো।এরপর আরিশের সাথে মুগ্ধের বিয়ে হয়।এরপর আমি আর মা মিলে পরিকল্পনা করে আরিশ মুগ্ধকে আলাদা করে দেই।”

মুগ্ধ সব শুনে অবাক হয়ে গেছে কতটা জঘন্য সায়মা।মুগ্ধ কাপাকাপা গলায় বলে,

মুগ্ধঃএতোটা জঘন্য কাজ কিভাবে করতে পারলি তুই সায়মা।ছোট থেকে তোকে আমি এতো ভালোবেসেছি। কোনোদিন মনে করিনি তুই আমার সৎ বোন।নিজের এই দুইহাতে আমি তোকে বড় করেছি।তুই একটা আঘাত পেলে আমার কত কষ্ট লাগতো।আর সেই তুই আমার সাথে এমন করলি।
সায়মাঃসয্য হতোনা তোকে।হিংসা হতো তোকে দেখলে।কারণ ছোট থেকে সবাই শুধু তোকেই চায়।সবাই তোর রুপ গুনের প্রশংসা করতো।সবার মুখে খালি মুগ্ধ আর মুগ্ধ।বিরক্ত লাগতো এসব দেখে।আমিওতো বাবার মেয়েছিলাম।কিন্তু তবুও বেশি প্রায়োরিটি তুই পেতিস।তাই তোকে ছোট করার জন্যই আমি এসব করেছি।
মুগ্ধঃএতো ঘৃণা করতিস তুই আমাকে বোন।তুই এমন কেন করলি সাদাফ স্যার আরিশ ওদের কাছে আমাকে ছোট করতে গিয়ে এতো গুলা নাটক করলি তুই।
মেহেরঃএভার মিসেস সালমা আপনিও আপনার গুনকির্তির কথা বলুন।

২৯.
সালমা বলা শুরু করলেন,

“আমার নানার দুই বিয়ে ছিলো।মেহেজাবীনের নানী ছিলো নানার প্রথম পক্ষ্য আর আমার নানী ছিলো দ্বিতীয় পক্ষ্য।মেহেজাবীনের নানীর সব ছেলেমেয়েকে নানা অনেক ভালোবাসতেন।কিন্তু আমার নানীকে নানা অনেক অবহেলা করতেন।আমার নানীর ঘরে শুধু আমার মা হয়েছিলো।আর মেহেজাবীনের নানীর ঘরে তিন ছেলে আর দুই মেয়ে ছিলো।নানা ওদের সব সম্পত্তি দিয়ে গেছিলো মারা যাওয়ার আগে।কিন্তু আমার মা নানীকে কিছু দেয়নি।নানা মারা যাওয়ার পর নানী মাকে নিয়ে অনেক কষ্ট করেছেন।মা বড় হবার পর নানী তাকে রেখে চলেযান পরোপারে।মা নিজের জীবনে অনেক কষ্ট করেন এরপর আমার বাবার সাথে মায়ের বিয়ে হয়।তারপর আমি হলাম।তখন আমাদের সাথে মেহেজাবীনদের কোনো যোগাযোগ ছিলোনা।কিন্তু মেহেজাবীনের খালার সাথে আমার বাবা পরোকীয়ায় জরিয়ে যায়।মা বাবার কাছে অনেক আকুতিমিনুতি করেছিলো যেনো বাবা এসব না করে।একবার আমার কথা জেনো ভাবে।কিন্তু না বাবা আমাদের ফেলে চলে যায় মেহেজাবীনের খালার সাথে।আমার মা সেই দুক্ষ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করে।আমি এতিম হয়ে গেলাম।তখন আমি ক্লাস সেভেনে।আমাকে আমার প্রতিবেশিরা দিয়ে আসে এতিমখানায়।সেখানেই বড় হতে লাগলাম।এভাবে কলেজে উঠলাম।যেই কলেজে আমি ভর্তি হলাম সেখানে মেহেজাবীন ও ছিলো।ওকে দেখলে আমার গায়ে আগুন জ্বলে উঠতো।তবু নিজেকে সামলে নিলাম।মেহেজাবীন আমার ব্যাপারে কিছু জানতোনা যে ওর একটা সৎ খালাতো বোন আছে।এরপর মেহেজাবীন আমার প্রায় দেখা হতো।মেহেজাবীন নিজে এসে আমার সাথে কথা বলতো।আমি বলতাম না ইচ্ছা করতোনা।এরপর একদিন শুনি মেহেজাবীনের বিয়ে হয়েগেছে।ছেলেরা অনেক ধনী।এরপর একদিন আমি আমার বান্ধুবির সাথে ক্লাবে আসি আমার আরেক বান্ধুবির জন্মদিন উপলক্ষ্যে।সেখানে আমার সাথে পরিচয় হয় মেহেরাবের।জানতে পারি সে মেহেজাবীনের স্বামী।তখন আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে।যেই কষ্ট আমার মা নানু পেয়েছে সেই কষ্ট এভার আমি মেহেজাবীনকে দেবো।মেহেরাব ছিলো মেয়েলোভী।তাই আমার জন্য সহজ হয়ে যায় কাজ।জরিয়ে যায় আমার সাথে ও সম্পর্কে।এভাবে দুই বছর যাবার পর আমি মেহেরাবকে চাপ দেই বিয়ের জন্য।আমি জানতাম মেহের আর মুগ্ধের কথা।মেহেরাব জানালো মেহেজাবীন নাকি ওকে ছাড়ছেনা।তখন আমি ওকে বলি মেহেজাবীনকে মেরে ফেলতে।প্রথমে ও রাজী না হলেও পরে হয়ে যায়।এরপর মেরে ফেলি আমরা মেহেজাবীনকে।তারপর আমি মেহেরাবের বউ হয়ে ডুকি খানবাড়ি।আমার কথা মেহেজাবীনের ফ্যামিলির কেউ জানতোনা।কারন আমাকে তারা সেই ছোট বেলায় দেখেছিলো।এরপর কেউ দেখেনি আমায়।তাই কেউ চিনতে পারেনি আমায়।এরপর মুগ্ধের সাথে প্রথমে আমি ভালো ব্যবহার করতাম।কিন্তু পরে ভাবতাম ও আমার মায়ের খুনির বোনের মেয়ে।কেন আমি ওকে ভালোবাসবো।এরপর সায়মা যখন হলো।শুরু করলাম ওর উপর অত্যাচার।মেহের ও ছিলোনা তখন মুগ্ধের পাশে আর মেহেরাব ও না।এরপর মুগ্ধ সায়মা বড় হতে লাগলো।মুগ্ধের প্রতি অত্যাচার বাড়তে লাগলো।এরপর মুগ্ধের বিয়ের কথা আসে আরিশদের থেকে রাজী হয়নি প্রথমে কিন্তু সায়মার কথায় রাজী হই।আমিও ভাবি যেভাবে ওর মায়ের বোন আমার মায়ের সংসার ভেংগেছে সেভাবে এখন ওর বোনকে দিয়েই ওর সংসার ভাংবো।আর ভেংগে দেই মুগ্ধের সংসার।মুগ্ধের নামে যেই প্রোপার্টি ছিলো সেগুলা আমি সায়মার নামে করত্র চেয়েছিলাম।মেহেরের গুলো আমার নামে ছিলো করা।কিন্তু মুগ্ধ বেঁচে থাকলে প্রোপার্টি পাওয়া যাবেনা তাই ওকে মারার ব্যবস্থাও করেছিলাম।কিন্তু বেঁচে যায় ও।তারপর ও আমি অনেক চেষ্টা করেছি মুগ্ধকে মারার সায়মাকে মুগ্ধের কলেকে ডুকালাম।কিন্তু মেহের মুগ্ধকে কড়া গার্ডে রেখেছিলো।যার কারনে আমি ব্যার্থ।”

সালমার কথা শুনে ধপ করে মাটিতে বসে পরে মুগ্ধ।
মেহেরঃকিন্তু সায়মাতো মিস্টার খানের নিজের মেয়ে নয়।আপনার আর আপনার প্রেমিকের মেয়ে সায়মা।

মেহেরের কথা শুনে সায়মা সহ সবাই চমকে যায়।সায়মা জোরে বলে,

সায়মাঃকিহ!
সালমাঃতুমি কিভাবে জানলে এটা?
মেহেরঃমারা যাওয়ার আগে মিস্টার খান আমাকে চিঠি দিয়েগেছে সেখান থেকেই সব জেনেছি।
সালমাঃবেশ তবে লুকিয়ে কি লাভ।হ্যা সায়মা মেহেরাবের নিজের মেয়ে নয়।আমার আর কবির এর মেয়ে ও।কবিরের সাথে আমার সম্পর্ক ছিলো মেহেরাবের সাথে পরিচয়ের আগেই।বিয়ের পর ও সম্পর্ক ছিলো।কিন্তু একদিন কবির আমাকে রেখে চলে যায়।পরে আমি জানতে পারি কবিরের সন্তান আমার গর্ভে।মেরে ফেলিনি মেহেরাবের সন্তান বলে চালিয়ে দেই ওকে।কবির পরে মেহেরাবকে সব জানিয়েদিয়েছিলো।
সায়মাঃতার মানে আমি একটা জারজ।আমি তোমার পাপের ফসল।আমি বাবার মেয়ে নই।খান পরিবারের কেউ নই আমি।
সালমাঃহ্যা তুই মেহেরাবের মেয়ে নস।
সালমার কথা শুনে সায়মা অবাক হয়ে চেয়েরইল।তার এই পরিচয় মিথ্যা।তার শরীরে অবৈধ রক্ত।সে জারজ।

মুগ্ধঃকেন ছোট মা কেন আমার মাকে মেরে দিলে।আমাকে কেন এতিম করলে।ছোট মা, মা মারা যাওয়ার পর আমি তোমার মাঝে মাকে খুঁজতাম।তোমার কাছে মায়ের মতো ভালোবাসা চাইতাম।কিন্তু না তুমি শুধু আমাকে অবহেলা কষ্ট দিয়েছো।আমার মাকে কেড়ে নিয়েছো।আমার সংসারটা নষ্ট করেছো।এতো রাগ তোমার ছিলো আমার প্রতি ছোট মা।আমাকে এতিম করে দিলে।
সালমাঃতোর প্রতি আমার রাগ ছিলোনা।তোর শুধু একটাই দোষ তুই মেজেজাবীনের মেয়ে।তাই তোকে এইসব ভুগতে হয়েছে।
মেহেরঃমানছি আপনার সাথে যা হয়েছে অন্যায় হয়েছে।কিন্তু আপনি যা করেছেন তাও অন্যায়।খুন করেছেন আপনি।আমার বোনকেও খুন করতে চেয়েছেন।আপনার এই কুকর্ম এখন সব মিডিয়া টেলিভিশনে লাইভ দেখানো হচ্ছে।আপনি কি তা জানেন।
সালমাঃ………
মেহেরঃআরিশকে আমি বাঁচিয়ে দেবো।কারন ওকে সাজা আমি দিয়েছি।যত যাই হোক সেও ষড়যন্ত্রের শিকার।কিন্তু আপনাদের কঠিন থেকে কঠিন শাস্তি হবে।সাদাফ পুলিশদের আসতে বলো।

সাদাফ কল করে রায়হানকে।(সাদিয়ার স্বামী রাজিব চ্যাঞ্জ করে দেওয়া হলো)

কিছুক্ষনের ভেতর রায়হান আসলো তার অফিসারদের নিয়ে।
সালমা আর সায়মাকে এরেস্ট করলো।

মেহেরঃপাপ বাপকেও ছাড়ে না মিস সালমা।আপনার পাপের শাস্তি পাবেন।আমার মা বোনের সাথে যা করেছেন আমি চাইলে আপনাকে এখানে মেরে গুম করে দিতে পারতাম।আপনি জানেন আমার ক্ষমরা সম্পর্কে।এমন কিছু করলে কেউ জানতেও পারতোনা।কিন্তু আমি তা করিনি।আপনার শাস্তি দেবে আইন।

পুলিশ অফিসার সালমাকে নিয়ে যাচ্ছেন সালমা তখন পুলিশের রিভালবারটা নিয়ে মেহেরের দিকে তাক করে আর বলে,

তোর জন্য সব খেলা মাটি হয়েগেলো।জেলে যদি যাই তাহলে তোকে মেরেই যাই। বলেই মেহেরের দিকে গুলি ছুঁড়ে দিলো সালমা।

মুগ্ধ চিৎকার দিয়ে উঠলো,

ভাইয়ায়ায়া!!

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here