শেষ_থেকে_শুরু
পর্ব_৪
নন্দিনি_চৌধুরী
?
৭.
সায়মা নিজের রুমে বসে রাগে ফুসছে। খুব মেজাজ খারাপ লাগছে তার। এতো কিছু করলো সে যার জন্য সেই কাজ তো হচ্ছেনা। সে যদি আরিশকে বিয়ে না করতে পারে তাহলে মুগ্ধকে সে কিভাবে কষ্ট দেবে।
সায়মা:উফফফ সব কিছু যখন ঠিক হচ্ছিলো মাঝখান থেকে আরিশের এই নাটকের কোনো মানে হয়না না। আমার পরিকল্পনা নষ্ট হতে দেবোনা। কিন্তু আমি কি করবো যা করলে আরিশ আমাকে বিয়ে করতে বাধ্য হবে।
সায়মা নিজের মাথায় হাত দিয়ে চিন্তা করছে। তখন সালমা বেগম খাবার হাতে মেয়ের রুমে আসলো। মেয়েকে এভাবে বসে থাকতে দেখে তিনি সায়মার কাছে এসে বললো,
সালমা:কিরে কি হয়েছে তোর? এভাবে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছিস কেন?
সায়মা:মা সব কিছু যখন পরিকল্পনা মতো হচ্ছিলো। তখন এই আরিশ বিয়ে করতে রাজি হচ্ছেনা।
সালমা:সেকি! কেন কি হয়েছে?
সায়মা:ওই এখন মাত্র ডিভোর্স হয়েছে। এখোনি কিভাবে বিয়ে করবে লোকে কি বলবে এইসব।
সালমা:হুম বুজলাম কথাটা এতোটা ফেলে দেওয়ার মতোনা। ডিভোর্স হবার পর পরেই বিয়ে করলে লোকে যাতা ভাব্বে। তবে আমাদের বসে থাকলে তো হবেনা। শোন আমার কাছে একটা উপায় আছে।
সায়মা:উপায় তোমার কাছে। কি উপায়?
সালমা:শোন…………………
সায়মা:তুমি সিওর যে এটাতে কাজ হবে।
সালমা:একদম হবে। বুজলি আমি যেটা বললাম সেটা কর ১০০% কাজ হবে। ভুলে যাস না মুগ্ধের নামে এখনো ৫০% প্রোপার্টি আছে সেটা এখনো আমাদের নামে করতে হবে। আর আরিশের প্রোপার্টির একটা বড় অংশ আছে সেটাও আমাদের পেতে হবে। আর এটা পেতে হলে এই উপায় কাজে দেবে।
সায়মা:ঠিক আছে তাহলে আমি এটাই করবো।
সালমা:তাহলে কালকেই কাজে লেগে পর।
সায়মা:ওকে।
মুগ্ধের দাদা মৃত্যুর আগে একটা উইল করে যান। যেখানে লেখা ছিলো তার মৃত্যুর পর তার ছেলের বউ সব সম্পত্তির মালিক হবেন। আর তার ছেলের বউয়ের মৃত্যুর পর তার সন্তাদের মাঝে সেই সম্পত্তি ভাগ হবে। যেহিতু সম্পত্তি মেহেজাবিনের নামে ছিলো তাই তিনি মারা যাওয়ার পর ৫০% করে মেহের মুগ্ধের মাঝে সম্পত্তি ভাগ হয়ে যায়। কিন্তু মেহেরাব যেহুতু আবার বিয়ে করে তাই এখন প্রোপার্টি তিনভাগ হবে। কিন্তু সালমা সেটা চায়নি তিনি একাই সব তার মেয়ের জন্য চেয়েছিলো। কিন্তু মেহের তার বাবার কোনো সম্পত্তি নেয়নি সে বলে দিয়েছিলো তার এসব চাইনা। তাই সেই প্রোপার্টি সালমা নিজের নামে করে নেয়। কিন্তু মুগ্ধের থেকে সেটা করতে পারেনি। আর আরিশের বাবাও তার মৃত্যুর আগে একটা উইল করে যান সেখানে তিনি লেখে দিয়ে যান যে তার ছেলের বউকে তিনি প্রোপার্টি ৪০%দিয়েদিয়েছেন আর বাকিটা তার ছেলের। মুগ্ধ কোনোদিন এই প্রোপার্টির দিকে হাত দেয়নি। তার মতে এগুলা তার স্বামীর কাছেই থাকুক। যা তার তা তো তার স্বামীরই। কিন্তু এখন মুগ্ধের সাথে আরিশের ডিভোর্স হয়ে যাওয়ায় সেটা এখন আর মুগ্ধ পাবেনা। পাবে আরিশের নতুন বউ। আরিশের সাথে মুগ্ধের বিয়ের আসল কারন ছিলো এই প্রোপার্টি। সালমা চেয়েছিলো সায়মার সাথে বিয়ে হোক। কিন্তু সায়মা তখন মাত্র ক্লাস নাইনে তখন বিয়ে দেওয়া পসিবল ছিলোনা। তাই বাধ্য হয়ে মুগ্ধকে বিয়ে দেন। কিন্তু তারাই এমন এক ছলনার জাল পাতে সেই জালেই আজ মুগ্ধ আরিশের সম্পর্কের ইতি ঘটেছে।
মুগ্ধ ভাইয়ের সাথে বসে লুডু খেলছে। মেহের বার বার ওর গুটি কেটে দিচ্ছে। আর মুগ্ধ গাল ফুলাচ্ছে।
মেহের:হেহেহে চড়ুইপাখি তুই সব সময় হেরেগেছিস। এখোনো হেরে যাবি।
মুগ্ধ:এটা ঠিক না তুমি নিশ্চিত চিটিং করছো ভাইয়া।
মেহের:হে এখন হেরে গেলে কত কিছুই বলবি।
মুগ্ধ:এহ যাও।
রুহি দুজনের জন্য হালিম নিয়ে রুমে আসলো।
রুহি:এই খেলা রাখো আর এই নেও হালিম।
মুগ্ধ:ওয়াও হালিম ভাবিপু আমার আজকে অনেক ইচ্ছা করছিলো হালিম খেতে।
রুহি:হুম মাহির বলছিলো তোর জন্য রান্না করতে।
মেহের:নে খেয়ে নে। ঝাল কম দিছো?
রুহি:হুম দিছি লেবু বেশি করে দিছি। তুমি যেভাবে বলেছো সেভাবেই।
মুগ্ধ:উম ভাবিপু হালিমটা সেই হইছে।
মেহের:আচ্ছা এখন বল আজকে কলেজে কেমন গেলো প্রথম দিন?
মুগ্ধ:হ্যা ভালো গেছে একটা বান্ধুবিও হয়েছে।
মেহের:গুড কোনো প্রব্লেম হলেই কিন্তু জানাবি।
মুগ্ধ:আচ্ছা।
খাওয়া শেষ করে মুগ্ধ রুমে এসে পড়া পড়লো। সাদাফের দেওয়া পড়াটাও পড়ে নিলো।
সকালে মুগ্ধ কলেজে চলে আসলো।একটু পর সাদিয়াও চলে আসলো।
সাদিয়া:এই কাল তোর থেকে তোর নাম্বারটা নেওয়া হয়নি। তোর নাম্নারটা দে।
মুগ্ধ:হুম এই নেও ০১৯১……
সাদিয়া:আচ্ছা চল ক্লাস শুরু হতে এখনো দেড়ি আছে। একটু কলেজটা ঘুরে দেখি।
মুগ্ধ:আচ্ছা চলো।
সাদিয়া আর মুগ্ধ দুজোনে কলেজ ঘুরে ঘুরে দেখতে লাগলো।ঘুরা শেষে দুজোনে এসে ক্লাসে বসলো। প্রথম ক্লাস শেষে এখন সাদাফের ক্লাস। সাদাফ একদম সময় মতো ক্লাসে আসলো।
সাদাফ:গতকালকের পড়াটা সবাই পড়েছো?
সবাই:জি স্যার।
সাদাফ:ওকে তাহলে আমি পড়া একটু ধরি।
সাদাফ সবাইকে পড়া ধরলো। এখন মুগ্ধের পালা।
সাদাফ:মিস মুগ্ধো আপনি আমাকে বলেন যে হুকের একটা সুত্র আছে ওই সুত্রটা আপনি আমাকে বলেন।
মুগ্ধ:”আমরা যদি পীড়ন এবং বিকৃতি বুঝে থাকি তাহলে হুকের সুত্রটি বুঝা খুব সহজ।এই সুত্র অনুসারে স্থিতিস্থাপক সীমার ভেতরে পীড়ন এবং বিকৃতি সমানুপাতিক।”
সাদাফ:গুড মিস মুগ্ধ সিট ডাউন।
বাকি পড়া সবাইকে বুজিয়ে সাদাফ ক্লাস শেষ করে চলেগেলো।
মুগ্ধরাও বাকি ক্লাস করে চলে গেলো।
বাসায় এসে মুগ্ধ দেখলো রুহির মা বাবা আর ভাই এসেছে।মুগ্ধ গিয়ে তাদের সাথে কুসলবিনিময় করে রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে নিলো।রুহির মায়ের ঠিক মুগ্ধেক তেমন একটা ভালো লাগেনি।তবুও মেয়ের ননদ হিসাবে হালকা কথা বলেছেন।
বিকালে রুহি রান্না ঘরে কাজ করছিলো তখন রুহির মা সেখানে এসে বলেন,
রুহির মা:শোন রুহি তোর এই ননদ কতদিন থাকবে এখানে?
রুহি মায়ের কথায় বেশ অবাক হলো অবাক হয়েই উত্তর দিলো,
রুহি:মানে?
রুহির মা:না মানে বলছিলাম বাড়ি কবে যাবে। শোন এসব মেয়েদের না কোনো বিশ্বাস নেই। একবার ঘর ভেংগে এসেছে দেখবি আবার আরেক নাগর জুটাবে। চোখে চোখে রাখতে হয় এদের।
রুহি:মা!!কি যাত্তা বলছো।
রুহির মা:যাত্তা না ঠিক বলছি। তুই বল কি এমন কারনে এর স্বামী একে ছাড়লো। নিশ্চই এর চরিত্রে কোনো ভেজাল আছে। দেখ নিশ্চই স্বামী থাকতেও অন্য ছেলেদের সাথে মিশামিশি করতো। তাই স্বামী ছেড়ে দিয়েছে। আমি তোকে বলছি এই মেয়েকে তাড়াতাড়ি এই বাড়ি থেকে বের কর। পরে নাহলে তোদের মানইজ্জতও নষ্ট করবে এই মেয়ে।
রুহি:মা!তুমি যা বলেছো তা যেনো আর কোনোদিন বলতে না শুনি। মুগ্ধ মেহেরের জান।আর মা তুমি আমার সংসারে এসে আমার ননদের সম্পর্কে এসব কথা বলছো। ছিহ্ মা আমি মুগ্ধকে নিজের বোন মনে করি। মা মেয়েটা মানষিক ভাবে কতটা ভেংগে পড়েছে। একটা মেয়ের এমন অবস্থায় ওকে যদি আমরা না সামলাই তো কে সামলাবে। আর তুমি এসে আমাকে এসব বলছো আমার ভাবতেও অবাক লাগছে।
রুহির মা:রুহি তু….
রুহি:মা আর কিছু আমি শুনতে চাইনা। তুমি এখন যাও এখান থেকে।
রুহির মা আর কিছু না বলে চলে আসলেন রান্না ঘর থেকে।এত্তক্ষন আড়াল থেকে সব কিছু শুনছিলো মুগ্ধ। চোখ দুটো তার পানিতে ভোরে গেছে। পলক ফেল্লেই পানি গড়িয়ে পরবে। মুগ্ধ এক দৌড়ে ছাদে চলে আসলো।
মুগ্ধ:হ্যা আল্লাহ তুমি তো জানো আমি এমন কিছু করিনি যার কারনে আরিশ আমাকে ছেড়ে দিলো। আমিতো জানিইনা কেন ও আমায় ছাড়লো। অথচ এই দুনিয়ার লোকগুলো শুধু আমার চরিত্রে দাগ লাগাচ্ছে।আমি কি করে এদের এই ধারনা বদলাবো। আল্লাহ আমাকে তুমি ধৈর্য্য দেও।তুমি তো পবিত্র কোরয়ান শরিফে ধৈর্য্যকে এনোছো ৯২বার আর নামাজকে এনেছো ৮২বার।হ্যা আল্লাহ আমাকে তুমি ধৈর্য্য দেও।
৮.
রাতে মেহের রুহি বাকিরা খেতে বসেছে। কিন্তু মুগ্ধ নিচে আসেনি। শরীর খারাপের বাহানা দিয়ে উপরেই খেয়ে নিয়েছে।খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই যে যার রুমে চলে গেলো।রাতে রুহি নিজের রুমে বসে পড়ছিলো তখন ওর রুমে রাজিব আসলো।
রাজিব:আরে বেয়ান এতো রাতে কি করছেন?
হঠ্যাৎ রাজিবকে আসতে দেখে মুগ্ধ ভয় পেয়েযায়। তাড়াতাড়ি মাথা গায়ে ভালো মতো কাপড় দিয়ে উঠে দাঁড়ায়।
মুগ্ধ:আরে রাজিব ভাই আপনি এতো রাতে এখানে?
রাজিব:অই ঘুম আসছিলোনা তাই দেখতে আসলাম আপনি কি করছেন।
মুগ্ধ:অহ আচ্ছা আমি পড়ছিলাম আপনি এখন যান কেউ দেখলে খারাপ ভাব্বে।
রাজিব:তারিয়ে দিচ্ছেন বেয়ান।
মুগ্ধ:না মানে এতো রাতে আপনি এইখানে কাল সকালে কথা বলবো নে আমরা।
রাজিব:কিন্তু আমিতো আপনার সাথে এখোনি কথা বলতে চাই…বলেই মুগ্ধের দিকে এগোতে লাগলো রাজিব। মুগ্ধ ভয়ে পিছাতে লাগলো আর বলতে লাগলো,
মুগ্ধ:রাজিব ভাই আপনি এভানে এগোচ্ছেন কেন প্লিজ এগোবেন না।
রাজিব:মুগ্ধ আমি তোমাকে পছন্দ করি খুব। আমার কোনো সমস্যা নেই তুমি ডিভোর্সি তাতে। আমি তোমাকে তোমার আগের স্বামীর থেকে অনেক সুখ দিবো। প্লিজ আমার হয়ে যাও প্লিজ।। কথা গুলো বলে মুগ্ধে দিকে কুকুরের মতো নজর দিয়ে তাকাচ্ছে আর এগোচ্ছে। মুগ্ধ ভয়ে পিছাচ্ছে,,
মুগ্ধ:রাজিব ভাই কি বলছেন আপনি এসব। আমি আপনার বোনের মতো। প্লিজ আল্লাহর দোহাই লাগে আপনি আমার রুম থেকে যান।
রাজিব:আমাদের মাঝে যা হবে কাউকে বলবোনা মুগ্ধ। তুমি ভয় পেয়োনা আসো আমার কাছে আসো।
মুগ্ধ:আমি কিন্তু এভার চিৎকার করবো।
রাজিব:করো করো কেউ আসবেনা।
মুগ্ধ:ভা…..
রাজিব মুগ্ধের চিৎকার করার আগেই মুখ চেপে ধরে। মুগ্ধ ছোটাছোটি করছে ছুটার জন্য। কিন্তু পারছেনা। রাজিব কুকুরের মতো মুগ্ধের দিকে তাকিয়ে আছে। মুগ্ধের জামার ওড়নায় যেইনা হাত দিতে যাবে তখন রাজিবের পিঠ বরাবর লাথি অনুভব করে সে। ছিটকে পরে যায় খাটের পাশে। মুগ্ধ সামনে তাকিয়ে দেখে মেহের দাঁড়ানো রাগে তার চোখ ফুলে উঠেছে। মুগ্ধ গিয়ে ওর ভাইকে জরিয়ে ধরে।
মেহের বোনকে পাশে রেখে রাজিবকে টেনে উঠিয়ে এলোপাথারি মারতে লাগলো,,
মেহের:জানোয়ারের বাচ্চা তোর সাহস কিভাবে হয় আমার বোনের গায়ে হাত দেওয়ার। আমার ফুলের মতো বোনটার গায়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করছিস তুই। আজকে তোকে আমি মেরেই ফেলবো….বলে এলোপাথাড়ি কিল ঘুষি দিতে লাগলো।
এতো চেঁচামেচির আওয়াজ শুনে রুহি আর রুহির মা এসে দেখে মেহের রাজিবকে মারছে। রুহির মা চিৎকার দিয়ে বলছেন,
রুহির মা:আল্লাহ গো আমার পোলাডারে মাইরা ফেলাইলো গো। রুহি বাঁচা ওরে পাগল হয়ে গেছে জামাই।
রুহি রুহির মা খুব কষ্টে মেহেরকে রাজিবের থেকে সরায়।
রুহি:মেহের কি হয়েছে তুমি রাজিবকে এভাবে মারছো কেন?
মেহের:ছাড়ো আমাকে ওকে আমি মেরে ফেলবো। ও আজকে মুগ্ধের দিকে হাত বারিয়েছিলো। আজ আরেকটু দেড়ি করে আমি আসলে কতবড় ক্ষতি মুগ্ধের হতো তুমি ভাবছো।
রুহি:কিহ?
রুহির মা:কি সব যাতা বলছো জামাই।আমার ছেলে এরকম করতেই পারেনা।রাজিব তুই বল জামাই কি সত্যি বলছে?
রাজিব:না মা এই মেয়েটাই আমাকে ডাকছিলো এই ঘরে। তারপর নিজেই আমার কাছে আসছে। এই মেয়েটার দোষ সব।
রাজিবের কথা শুনে মুগ্ধ অবাক হয়ে যাচ্ছে মুগ্ধ চিৎকার করে বলে,
মুগ্ধ:মিথ্যা কথা উনি মিথ্যা বলছেন।। বিশ্বাস করো ভাইয়া আমি এমন কিছু করিনি। উনি এসেছিলেন এখানে।
রুহির মা:চুপ মিথ্যাবাদী আমি তোকে আগেই বলছিলাম না রুহি এই মেয়ের চরিত্র ভালোনা। এইসব মেয়েরা এমনি হয় নাহলে কি ডিভোর্সি হতো বেসরম মেয়ে মানুষ।
মেহের:এনাফ ইজ এনাফ!আপনাদের সাহস দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।আপনার ছেলে এখানে এসে আমার বোনের সাথে জোরাজোরি করছিলো আমি নিযে এসেই সেটা দেখেছি। আর নিজের ছেলের গুনগান করছেন। বিগত দুইমাসের খোজ নেন তার। কতগুলা মেয়ের সাথে তার এফেয়ার আছে কত মেয়ের সাথে সে বাজে কাজ করছে। আপনার কাছে সাধু সেজে থাকে বলে মনে করেন সে সাধু। আর কি বললেন আমার বোনের চরিত্রে সমস্যা আছে। আমার বোনের চরিত্রে না আপনার মনমানসিকতায় সমস্যা আছে। নিহাত আপনি রুহির মা তাই আপনাকে আমি এখনো কিছু তেমন বলিনি। কিন্তু আপনার এই ছেলেকে আমি যেনো কাল সকালে আমাদের বাড়িতে না দেখি। যদি দেখি তাহলে সত্যি ও আমার হাতে মরবে।
রুহি:মা তুমি ওকে নিয়ে কাল সকাল হতেই চলেযাবে মনে করবে তোমাদের মেয়ে নেই।
রুহির মা অপমানে মাথা নিচু করে ছেলেকে নিয়ে রুম ছেড়ে বের হয়ে গেলেন।
মুগ্ধ তখোনো ঠায় হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলোই মেহের এসে মুগ্ধকে ধরতেই মুগ্ধ সেনস্লেস হয়ে মেহেরের বুকে ঢোলে পরে। মেহের বোনকে এভাবে পরে যেতে দেখে ভয় পেয়ে যায়। বোনেএ দুগালে হাত দিয়ে বলতে থাকে,
মেহের:চড়ুইপাখি পাখি কি হয়েছে তোর। এই চড়ুইপাখি কথা বল কি হলো তোর।
মেহের খুব অস্থির হয়ে পরেছে তাড়াতাড়ি মুগ্ধকে বিছানায় শুইয়ে ডাক্তারকে কল দেয়।
কিছুক্ষনের মাঝে ডাক্তার এসে মুগ্ধকে চেকাপ করতে লাগলো।রুহি মুগ্ধের মাথার কাছে বসে আছে।বেচারির খুব খারাপ লাগছে তার মা ভাইয়ের জন্য আজ মেয়েটার এই অবস্থা। ডাক্তার চেকাপ করে মেহেরর দিকে তাকিয়ে বললো,
ডাক্তার:মিস্টার মেহের আপনার বোন মনে হয় অতিরিক্ত টেনশন করে। আর অনেক স্ট্রেস নেয়। তাই তার শরীর অনেক দুর্বল। আর হয়ত কোনো কারণে সে আজ ভয় পেয়েছে। তাই সেন্সলেস হয়ে গেছে। আমি কতগুলা মেডিসিন দিচ্ছি সেগুলা খাওয়াবেন। আর যতটা পারবেন চিন্তা মুক্ত রাখবেন।
মেহের ডাক্তারের সাথে কথা শেষ করে তাকে বিদায় দিয়ে বোনের পাশে এসে বসলো।আসলেই মেয়েটার চেহারা এই কয়েকদিনে কেমন হয়েগেছে।
পরেরদিন সকালে……
সাদাফ,সাদিয়া,তাদের বাবা মা খাবার টেবিলে বসে নাস্তা করছেন খাওয়া এক প্রান্তে এসে সাদাফের মা সাদাফকে বললেন,
সাফাফের মা:সাদাফ আমি তোমার বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে চাচ্ছি।
সাদাফ মায়ের কথায় বেস অবাক হয়ে যায়।
সাদাফ:বিয়ে!
সাদাফের মা:হ্যা বিয়ে।আর কতদিন একা থাকবে আমাদের তো শখ আছে নাকি নিজের ছেলেমেয়ের বিয়ে দেখার।এতোদিন তুমি অনেক বাহানা দিয়েছো।কিন্তু এখন আমি তোমার আর কোনো বাহানা শুনছিনা।
সাদাফ:কিন্তু মা,,
সাদাফের মা:কোনো কিন্তু না সাদাফ।তোমার কাউকে পছন্দ থাকলে বলো তার সাথে বিয়ে দেবো।আমি তোমার বিয়ে এবার দেবো যখন বলেছি তখন দেবোই।
সাদাফ আর কোনো কথা না বলে উঠে বের হয়ে যায়। সাদিয়াও ওর পিছন পিছন বের হয়ে গেলো।
অফিসে বসে নিজের কাজ করছে আরিশ।এই কয়েকদিনে কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করছে তার ভেতর।মনে অজান্তেই মিস করছে সে মুগ্ধকে।কিছুই তার ভালো লাগছেনা।আরিশের কাজের মাঝেই তার ফোনে কল আসলো।আরিশ ফোন রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে যা শুনে তা শুনে সে চমকে যায়।উত্তেজিত হয়ে বলে,
আরিশ:What!এসব কি করে হলো।আমি এখোনি আসছি।
কল কেটেই আরিশ তারাহুরা করে বেরিয়ে যায় অফিস থেকে।
চলবে
ভুল ত্রুটু ক্ষমা করবেন।