শ্যাম বরণ কন্যা,পর্ব-০১
নীল মাহমুদ
বড় বোন কে দেখতে এসে যখন পাত্র পক্ষ ছোট বোন কে পছন্দ করে,
তখন সেই বড় বোনের মনের অবস্থা কি হতে পারে,
কিন্ত পাত্র পক্ষ থেকে এই কথা টা বলতে সাহস পাচ্ছে না, যে আমাদের ছোট মেয়ে কে পছন্দ হয়ছে,কিন্ত পাত্রের দুলাভাই মেয়ের বাবা কে সরাসরি বলে ফেলে,
পাত্রের দুলাভাই বলে,,
–আপনি তো জানেন আমার শালা সরকারি চাকরি করে,
–হুম তা তো জানি বাবাজী খুব ভালো চাকরি করে,,,
–কিন্ত একটা কথা বলতে চাই ছিলাম কি করে যে,,,,,বলি,,
– দ্বিধা না করে বলে ফেলেন,,
– আসলে আসলে এমন ছেলে হাত ছাড়া হয়ে গেলে কিন্ত আর পাবেন না,,, কিন্ত কথা টা হল আপনার ছোট মেয়ে কে আমাদের পছন্দ হয়েছে,,,
সাদিয়া (বড় মেয়ে)তাদের সামনে বসা ছিলো কথা টা চমকে যায়,,
সাদিয়ার বাবাও হতভম্ব হয়ে যায় এটা কি বলল,,,
সাদিয়ার বাবা অসহায়ের মতো বসে আছে,
পাত্রের দুলাভাই আবার বললেন, আমাদের শ্যামলা মেয়ে পছন্দ না,
কথা টা সাদিয়ার সামনেই বললেন,,
সাদিয়ার বাবা পাত্রের দুলাভাই কে বললেন,আমি একটু ভেতর থেকে…..?
পাত্রের দুলাভাই কথাটা বুঝতে পেরে বললেন আচ্ছা আচ্ছা একটু ভেবে চিন্তে বলেন আমরা অপেক্ষা করছি,,
কথা ভেতর রুম পর্যন্ত চলে গেছে মানে সাদিয়ার মাও কথা শুনে,
সাদিয়া কে নিয়ে সাদিয়ার বাবা ভিতরে গেলো,
পরামর্শ করতে সাদিয়ার মায়ের সাথে,
পাত্র পক্ষ বলতে ছেলে আর ছেলের দুলাভাই আসছে,,
সাদিয়ার ছোট বোন কে পছন্দ কে পাত্র নিজেই,
–তা সাদিয়ার মা সব তো শুনলা এখন কি করবা,
–না না এই বিয়ে হবে না মানুষ শুনলে কি বলবে,আর সাদিয়া কি মনে করবে,।
–আমি বুঝি কিন্ত এমন ছেলে হাত ছাড়া করা যাবে ছেলে সরকারি চাকরি করে,
আমাদের রিয়া কত কত সুখে থাকবে,
– তার পরেও মানুষ কি বলবে,ছোট মেয়ের বিয়ে হলে কি পরে বড় মেয়ের বিয়ে হবে,,,
–তাদের বলে দেখি, যে বড় মেয়ের বিয়ের পর ছোট মেয়ের বিয়ে দিবো,,,
সেই পর্যন্ত আপনারা অপেক্ষা করেন,,,(বাবা)
–কিন্ত এর মধ্যে যদি ছেলে বিয়ে করে ফেলে(মা)
–তাহলে আরেক কাজ করা যায় আমরা পারিবারিক ভাবে লোকজন না জানিয়ে বিয়ে দিলাম আর সাদিয়ার বিয়ে হলে পরে অনুষ্ঠান করে বিয়ে দিলাম,,,(বাবা)
–আচ্ছা তা নয় দিলেন,কিন্ত সাদিয়ার মনের অবস্থা টা কি হবে একবার ভেবে দেখছেন,,আমি মা আমি তো বুঝি,,(মা)
–দেখো সাদিয়ার মা আমার মেয়ে অবুঝ না, আমি বলে দেখি, সাদিয়ার মতামত শুনি,,(বাবা)
সাদিয়া মন খারাপ করে বসে ছিলো বাবা কে দেখে ঠোঁটের কোণে হাসি এনে বলল,
সাদিয়া – বাবা কিছু বলবা,
বাবা- হে মা আসলে তুই তো শুনলি ওরা তোর ছোট বোন কে,পছন্দ করছে,
ছেলে সরকারি চাকরি করে দেখতেও স্মার্ট, আর সুখে থাকলে তো তোর ছোট বোনই,, তাই তুই রাজি থাকলে,,রিয়ার সাথে বিয়ের কথা পাকা করতাম তা তুই কি বলিস,,
সাদিয়া একবার তার মায়ের দিকে তাকালো,কিন্ত মা নিরব দর্শক হয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিছু বলল না,
সাদিয়া বুঝে নিলো মাও রাজি আছে,
তখন সাদিয়া চুপসে গেলো নিচের দিকে মাথা দিয়ে বাবা কে বলল,তোমরা যা ভালো মনে কর,
আমার কোন আপত্তি নেই,
তখন সাদিয়ার বাবা চলে গেলো পাত্র পক্ষের কাছে আর বলল বিয়ে টা এখন হোক লোক জানাজানির করার দরকার নেই,
বুঝেনি তো বড় মেয়ে রেখে ছোট মেয়ে কে বিয়ে দিচ্ছি মানুষ জন শুনলে কি বলবে,
রিয়াও রাজি হয়ে গেছে কারন ছেলে তো ভালো,
সাদিয়ার এতে খারাপ লাগছে না ছেলে ভালো দেখে,,,
খারাপ এই জন্য লাগছে সাদিয়ে দেখতে শ্যামলা,
সাদিয়ার ইচ্ছে করছে মরে যেতে,
মনের কস্ট টা কেউ বুঝার চেস্টা করলো না,,
আমি সাদিয়া অনার্স ৩য় বর্ষে পড়ি,
আমার ছোট বোন অনার্স প্রথম বর্ষে পড়ে,আমরা দুজনেই সরকারি সা’দত কলেজে পড়ি,আমার বাবা একজন ব্যবসায়ী, হোম টাউন টাংগাইল,
আজ যে ছেলে দেখতে আসছে তার নাম রাসেল,
তো চলে যাই আবার গল্পে আস্তে আস্তে সব জানা বয়ে যাবে,,,
আজকেই রিয়া আর রাসেলের বিয়ে
বিয়েটা আমাদের বাসায় হবে,
রাসেলের বাসা থেকে লোকজন আসলো,
কিন্ত আমি আর বাসায় টিকতে পারছি
না,
খুব কস্ট হচ্ছে আমার কস্ট টা আমার নিজের মা বাবাও বুঝলো না,,,
তাই কাউ কে কিছু না বলে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম,
তখন প্রায় সন্ধা হয়ে আসছে,
আমি চলে গেলাম রেললাইনের দিকে,
আমি জানি সন্ধার সময় একটা ট্রেন আসবে,
ট্রেনে করে কোথাও যাবো না,।
আজ যাবো জীবন টা শেষ করতে শ্যামলা জীবন থেকে মুক্তি পেতে,
আজ এই ঘটনা থেকে না এর আগেও অনেক দেখতে আসছে শ্যামলা বলে রিজেক্ট করে দিছে,,,
ট্রেন আসার সময় হয়ে গেছে সাদিয়া
রেললাইনে দাঁড়িয়ে আছে এমন সময় ট্রেনের হর্ণ টা বেজে উঠলো, মানে ট্রেন চলে আসছে আর মাত্র কয়েক সেকেন্ড তারপরেই এই দুনিয়া ছেড়ে চলে যাবে,,
ট্রেন বার বার হর্ণ দিয়েই যাচ্ছে,,,,,,
চলবে