শ্যাম_বরণ_কন্যা,পর্ব-২৪ শেষ

1
2896

শ্যাম_বরণ_কন্যা,পর্ব-২৪ শেষ
নীল মাহমুদ

কিছু দিন পর নীল জানতে পারলো মাইসা বাড়ি থেকে বের শপিং এর কথা বলে বাবার বাড়ি যাবে হেনতেন বলে বাসা থেকে বের হয়,
এই কথা টা নীলের কানে যায়
নীল আবার গভীর ভাবে মাইসা কে সন্দেহ করা শুরু করে,।
নীল অফিসে কাজ কাজ করছিলো
হঠাৎ মনে হলো নীলের মাইসা কে ফলো
করলে জানা যাবে প্রতিদিন কই যায়,
বাসায় ফোন দেয় নীল,
মাইসা কোথাও বের হয়ছে কিনা,।
তা নীলের মা বলল, মনে হয় কোথাও যাবে রেডি হচ্ছে,।

নীল এই সুযোগ লাগাতে চায় তাই অফিস বাদ দিয়ে বাসার সামনে দাড়ায় রিকশা নিয়ে কিন্ত একটু দূরে,
মাইসা বের হয় বাসা থেকে,
রিকশার জন্য অপেক্ষা করছে,
একটু পর রিকশা আসে মাইসা চলল,
তার পিছনে নীল চল রিকশা নিয়ে,
যেতে হসপিটালে থামলো,
তারপর ডক্টের চেম্বারে গেলো,
নীল ভাবলো তার স্ত্রী হয়তো ডক্টর এর সাথে,,,, না না এই সব কি ভাবছি আগে দেখি,
ডাক্তারের সাথে কথা বলছে তখন রুম থেকে একটা নার্স বের হলো,
নীল নার্স কে জিজ্ঞেস করলো মাইসা কে দেখিয়ে,
নার্স প্রথমে বলতে চাইনি পড়ে নীল ৫০০টাকা দেওয়ায় বলে,
ওই মহিলা টি প্রেগন্যান্ট তার স্বামী কে মিথ্যা বলছে যে মানে ভুল রিপোর্ট বানিয়ে দেখাইছে প্রেগন্যান্ট না,
এখন উনি বাচ্চা টি নস্ট করে ফেলতে চান না হলে উনার সংসার টিকবে না,

নীল কথা গুলো শুনে চোখের পানি ফেলে অফিসে যায়,
মাইশা এটা কি করলো নীলের কাছে
মিথ্যা বলল আর এত বড় ঘটনা কেমনে আড়াল করতে পারলো,
অফিসে কোন কাজে মন বসছে না নীলের,

আরিফ নীলের মন মরা দেখে জিজ্ঞেস কররে, নীল ভাই কোন সমস্যা,
কিন্ত নীলের ভালো লাগছে না তাই আরিফ ভাই কে মিথ্যা না ভাই,

আরিফ – ও আচ্ছা তাহলে যাই আমি কাজ করি,

অফিস টাইম শেষ একে একে সবাই চলে যাচ্ছে, কিন্ত নীল বসে।
আরিফ জিজ্ঞেস করলে বলে গুরুত্বপূর্ণ একটা ফাইল আছে শেষ করেই যাবে,
রাত বাজে ১১টা নীলের ফোন অফ,
বাসার সবাই চিন্তায় বসে আছে,
কারণ নীলের ফোন কোন দিন এই ভাবে অফ থাকে না,আর এত লেট কোন দিন করেনি,

কিন্ত মাইশা মন ঠিকি বুঝতে পারছে কেনো এমন করছে,
মাইশা ভাবলো আজ এর ফয়সালা
করতেই হবে,
নীল আসলো বাসায় ঢুকলো দেখলো বাবা মা লিমা সবাই বসে আছে কিন্ত
মাইসা নেই,
বাবা মার সাথে কথা বলে রুমে যায় নীল,
রুমের লাইট টা অফ ছিলো, মোবাইলের
আলোয় সুইচ খোজে অন করলো,
চোখ টা গেলো জানালার দিকে চোখ যায় কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে,
জানালার গ্রিল ধরে,
কে আবার সেই শ্যাম বরণ মেয়েটি (সাদিয়া)
ছাড়া আর কে হবে,
নীল কাছে গেলো,
একে একে মনের কস্ট গুলো শেয়ার
করলো কিন্ত চুপ করে আছে,
আবেগ প্রবণ হয়ে নীল সাদিয়া কে জরিয়ে ধরে,
অনেকক্ষণ জরিয়ে ধরে থাকার ফলে
নীলের শারীরিক সম্পর্ক করার ইচ্ছে জাগে,নীল আর যেই মুহুর্তে শারীরিক সম্পর্ক করতে যাবে ঠিক তখনি সাদিয়া
বিছানা ছেড়ে মেঝেতে দাঁড়িয়ে বলে
আমি মাইসা সাদিয়া নই,

নীল তখন বুঝতে পারছে না তার সাথে কি হচ্ছে,
নীল কিছু বলতে যাবে তখন মাইসা নীল কে বলে আপনি চুপ আজ আমি বলবো আপনি শুনবেন,
মাইসা সাদিয়ার ডায়েরি টা হাতে নিয়ে বলে আপনি ভাবছেন আমি এই ডায়েরি টা কেমনে পেলাম,
ডায়েরি টা পেয়েছি আলমারিতে
জামা কাপড় গোছাতে গিয়ে,
আপনি যখন অফিসে থাকতেন
তখন আমি ডায়েরি টা পড়তাম সাদিয়া নামে একটি মেয়ে ছিলো দেখতে শ্যামলা ছিলো,
আপনি তাকে অনেক ভালবাসেন কিন্ত উনার বিয়ে আর মরার পর,।
উনি আপনার ভ্রম ছিলো অনেক দিন যার জন্য অনেক মানুষ আপনাকে পাগল বলতো,
মাঝে মাঝেই সাদিয়া আসতো আপনার
সামনে কল্পনা হয়ে,কবে কবে আসছে সেটা আবার ডায়েরি তে লিখে রাখছেন,
সাদিয়া আর আমার ফেইস এক কিন্ত উনি শ্যাম ছিলো আমি ফর্সা,

কিন্ত ডায়েরি টা পড়ে একদিন ইচ্ছে হল আমাদের চেহারা যখন এক দেখি না মেকাপ করে সাদিয়া হয়ে,
তাই লিমার কাছ থেকে মেকাপ বক্স এনে মেকাপ দিয়ে সাদিয়ার মতো হয়ে যাই, (ডায়েরিতে একটা ছবি ছিলো সাদিয়ার)
আপনি অফিস থেকে আসেন আর আজকের মতো করে আমার সাথে
শারীরিক সম্পর্ক করেন আমি বাধা দিতে চেয়ে পারি নাই,
আর তখন আমি কোন পদ্ধতি ইউজ করতে পারি নাই,
সেখানেই শেষ না তারপর কিছুদিন পর আবার এমন করি,তারপর আবার এই ভাবে কয়েকবার এমন করি,
কিন্ত ভাবছিলাম আপনি বুঝতে পারবেন কিন্ত না বুঝতে পারলেন না,
সাদিয়ার জন্য আপনি পাগল ছিলেন,
কিন্ত আমিও নারী ভালবাসা পেতে কার না ইচ্ছে হয়,
যদি আমার ভুল হয় আপনি যা শাস্তি
দিবেন আমি মাথা পেতে নিবো কিন্ত যদি ডিভোর্স দিতে চান আমিও তাতেও রাজি কারণ আমি অপরাধ করেছি,
নীল কিছু বলছে না চুপ করে বসে আছে,
কারণ না জেনে ভুল করে ফেলেছে
নীল,
বিছানায় বসে থাকা নীল হাত দিয়ে
মাইসা কে কাছে ডাকলো আর মাইসা কাছে আসতেই নীল মাইসাকে জরিয়ে ধরে,
আর বলে আমার ভুল হয়ে গেছে আমি না জেনে না বুঝে তোমার উপর মিথ্যা দোষ চাপিয়ে দিতে চাই ছিলাম,

মাইসা- আপনার কোন দোষ নেই কোন ভুল নেই,

নীল- আপনি না তুমি বলবা,
নীল মাইসার চোখের পানি মুচে দিতে দিতে বলে তোমাকে আর কাঁদতে হবে না ইনশাল্লাহ, আমি তোমার আদর্শ স্বামী হয়ে দেখাবো,
বলে কপালে একটা ভালবাসার স্পর্শ দেয়,

মাইসা- আমার লজ্জা করে,

নীল- ওরে আমার লজ্জাবতি রে,,,ও একটা কথা আমরা তো বাবা মা হতে চলেছি,

মাইসা- হুম কিন্ত একটা কথা।

নীল- কি,

মাইসা- আমি না কোন প্রেম করি নাই খুব ইচ্ছে তোমার সাথে প্রেম করার,চল না আমরা প্রেম করি,

নীল- আচ্ছা চল পার্কে যাই,
আজ সারাদিন ঘুরাঘুরি হবে,,,,,,
বলে দুজন বের হল প্রেম করতে আর এই সাথে আমার গল্পটাও শেষ,

সবাই পুরো গল্প ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ,,,

(শেষ)

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here