#শ্রাবন_আধারে_তুমি_২,১৩,১৪
#লেখিকা_আফরিন_ইসলাম
#পার্ট_১৩
অন্ধকার রাত গ্রাস করেছে পুরো শহর ৷ঘুমন্ত শহরে রাতের আধারের কান্না কেউ শোনে না ৷অন্ধকার জঙ্গলে রাই নিজেকে বাচাঁতে চেষ্টা করতে লাগলো ৷ রাই বেধে রাখা মুখ দিয়ে চিৎকার করতে চাইলো ৷ কিন্তু সে বারবার ব্যর্থ হলো ৷ মানুষ রূপে থাকা পিশাচ দুটো রাইয়ের শরীর খুবলে খাওয়ার জন্য ঝাপিয়ে পড়লো তার উপর ৷ রাই নিজেকে বাচাঁতে চেষ্টা করতে লাগলো ৷ কিন্তু ওদের থাপ্পরের আঘাতে রাই হার মেনে নিল ৷
অন্যদিকে সায়মা নিজের ঘরে বসে আছে ৷ পুলিশের কাছে সে যেতে পারছে না ৷ এতে করে অনিকের জীবন আরো ঝুকিতে পড়বে ৷ হাজার রকম চিন্তার মাঝেই সায়মার নাম্বারে একটা কল আসে ৷ সায়মা কল আসতেই রিসিভ করে ৷ তারপর কয়েক মুহূর্ত যেতেই সায়মা ওপাশের কথা শুনেই এক দৌড়ে ঘর থেকে বের হয়ে যায় ৷গেটের কাছে আসতেই দেখতে পেল তিনজন লোক একটা গাড়ীর ভেতর থেকে অনিককে অঙ্গান অবস্থায় তার বাড়ীর সামনে ফেলে রেখে গেছে ৷ সায়মা স্বামির কাছে দৌড়ে যায় ৷ অন্ধকারে স্বামীর মুখটা দেখে চমকে ওঠে সায়মা ৷পুরো মুখ রক্তবর্ন ধারন করেছে ৷ স্বামীর নিথর দেহ ধরে চিৎকার করে উঠলো সায়মা ৷
অপর দিকে রাই নিজেকে বাচাঁতে চেয়েও ব্যর্থ হলো ৷ নির্ঝন রাতে রাইয়ের কষ্ট গুলো বুঝতে কেউ এগিয়ে এলো না ৷ অবশেষে রাই শান্ত হয়ে গেল ৷ নিজের ভাগ্যকে মেনে নিল ৷ কিন্তু হঠাৎ করেই কেউ একজন ঝাপিয়ে পড়লো লোক দুইটার উপর ৷ লোক দুটো মুহূর্তেই চিৎকার করে উঠলো ৷ তারা রাইয়ের উপর থেকে সরে গেল ৷ রাই অন্ধকার রাতে তাকে সাহায্য করার জন্য কোনো মানুষকে দেখতে পেল না ৷ একটা কুকুর পিশাচ দুটোকে কামড়ে দিচ্ছে ৷লোক দুটো নিজেদের বাচাঁতে চেষ্টা করছে ৷ রাই নিজের হাত খুলতে চেষ্টা করে ৷ হাতের গিট অনেকটা আলগা হয়ে ছিল ৷ তাই খুব সহজেই রাই হাতের বাধন খুলে ফেললো ৷ অতঃপর সে অন্ধকার কাশবনের ভেতর দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব দৌড়াতে লাগলো ৷ প্রচন্ড ক্ষুধা , কষ্ট,ভয় আর আঘাতে রাই দৌড়াতে পারছে না ৷
অনেক দূরে ল্যাম্পপোস্টের আলো জ্বলছে ৷ রাই জানে না কোন দিক দিয়ে যেতে হবে ৷ শুধু জানে এই কাশবন তার পেরিয়ে যেতে হবে ৷ রাই ছেড়া কাপড়ে দৌড়াতে লাগলো কাদঁতে কাদঁতে ৷ অবশেষে মেইন রাস্তার উপর চলে এলো রাই ৷ রাস্তা একেবারে মানবশূন্য ৷ এখন যদি কেউ তাকে মেরেও ফেলে ৷ তবুও কেউ টের পাবে না ৷
আকাশে মেঘ জমেছে ৷ আর সেই মেঘ বৃষ্টির হয়ে জমিনে বর্ষন হলো ৷ পুরো শহরের সাথে রাই নিজেও ভিজে গেল সেই বৃষ্টিতে ৷ এই বৃষ্টি যেন শহরকে ভিজাতে আসে নি ৷ রাইয়ের গায়ে লেগে থাকা পিশাচদের স্পর্শ ধুয়ে দিতে এসেছে ৷ বৃষ্টির পানিতে রাইয়ের চোখের পানি মিশে গেল ৷ নির্ঝন রাতে বৃষ্টিরা তার চোখের পানি আড়াল করে দিল ৷ রাই ল্যাম্পপোস্টের আলোতে নিজের দিকে তাকালো ৷ তার জামার হাতা ছিড়ে ফেলেছে ওরা ৷তার কোমর অনাবৃত অবস্থায় ৷ শরীরের সাথে ছিড়ে জামাটা লেগে আছে ৷ রাই নিজেকে ঢাকার জন্য পাগলের মতো ব্যাগ খুজতে লাগলো বৃষ্টির মধ্যে ৷ কারন ব্যাগটা না পেলে যে বাকি সম্মানটুকু হারাতে হবে দিনের আলোয় ৷রাই রাস্তার পাশে ব্যাগটা খুজতে লাগলো ৷ পরিশেষে রাস্তার এক পাশে ব্যাগটা খুজে পেল ৷ দৌড়ে যেয়ে ব্যাগটা জরিয়ে ধরলো বুকের সাথে ৷ ব্যাগটা বুকে জরিয়ে কান্নায় ভেঙ্গে পড়লো রাই ৷ ঠিক তখনই পেছনে একটা কুকুর ঘেউ ঘেউ করে উঠলো ৷ রাই টলমল চোখে পেছনে ফিরে তাকালো ৷ ল্যাম্পপোস্টের হালকা আলোয় রাই কুকুরটাকে দেখতে পেল ৷ মুহূর্তেই রাইয়ের বুক ভার হয়ে গেল ৷ মাত্র কয়েক দিনের রুটির বিনিময়ে এই বোবা প্রানীটা তার ইজ্জত বাচিঁয়েছে ৷ অথচ যাদের সাথে বছরের পর থেকেছে ৷ তারাই তাকে ছুড়ে ফেলেছে নর্দমায় ৷যাদের অন্ধের মতো বিশ্বাস করেছে ৷ দিনশেষে তারাই বেইমানি করেছে ৷ কিন্তু আজ এই বোবা প্রানীটা তাকে বাচিঁয়েছে ৷ রাই বরাবরের মতো কুকুর বড্ড ভয় পেত ৷ কিন্তু আজ কেন যেন সে ভয় পেল না ৷ সামনে থাকা কুকুরটাকে বড্ড নির্ভর যোগ্য মনে হলো তার ৷ রাই নিজের দুই হাত পেতে দিল কুকুরটার দিকে ৷রাই হাত পেতে দিতেই অবুঝ কুকুরটা রাইয়ের দিকে দৌড়ে এলো ৷ রাই দুই হাতে কুকুরটাকে জরিয়ে ধরলো ৷ তারপর কাদঁতে কাদঁতে বলল,
“এখন থেকে তুই আমার সাথে থাকবি ৷আমরা এই দুনিয়াতে একে অন্যের জন্য বাচঁবো ৷ আমাদের আর কাউকে লাগবে না রে ৷ খেয়ে থাকি আর না খেয়ে থাকি আমরা এক সাথে থাকবো ৷ আমরা একসাথে বাচঁবো ৷
অবুজ কুকুরটা তার অসহায় মালিকের কথায় ঘেউ ঘেউ করে উঠলো ৷ হয়তো সারা জীবন এক সাথে থাকার কথা দিয়েছে ৷রাই ব্যাগ থেকে একটা বড় ওরনা বের করলো তারপর সেটা শরীরে পেঁচিয়ে উঠে দাড়ালো ৷ তারপর চোখের পানি মুছে কুকুরটার দিকে তাকিয়ে বলল,
“আজ থেকে আর কান্না নয় ৷ আজ থেকে শুধু নিজের জন্য বেচে থাকবো আমি ৷ আজ থেকে এতিম আমি ৷ যার কেউ নেই ৷ যার কাউকে দরকার নেই ৷ ”
একটা বিপদের রাত পেরিয়ে গেল ৷ কিন্তু এই রাত কোনো ঘরের নিচে রাইয়ের কাটলো না ৷ সকালের সূর্যটা প্রতিদিনের মতো সোনালী কিরন রাইকে উপহার দিল না ৷ কারো চিৎকারে ঘুম ভেঙ্গে গেল রাইয়ের ৷কেউ একজন চিৎকার করে বলল,
“এইসব রাস্তার পাগল কোথা থেকে যে আসে কফিশপের সামনে ৷ সকাল বেলা এসেই পাগলের মুখ দেখা লাগবে ৷”
চলবে….
#শ্রাবন_আধারে_তুমি_২
#লেখিকা_আফরিন_ইসলাম
#পার্ট_১৪
কফিশপের মালিকের চিৎকারে রাইয়ের ঘুম ভেঙ্গে গেল ৷ ভোর রাতে কফিশপের নিচে আশ্রয় নিয়ে ছিল ৷ তারপর কখন যে ঘুমিয়ে গেছে টের পায় নি ৷ দুর্বল শরীরে রাই উঠে বসলো ৷ কফিশপের মালিক চিৎকার করে বলল ,
“পাগল ছাগলের দল কোথাকার ৷ সরে যা এখান থেকে তাড়াতাড়ি ৷ আর আসবি না এখানে ৷”
রাই লোকটার দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে বলল,
“আমি চলে যাচ্ছি ৷ আর কখনো আসবো না ৷ কিন্তু আপনি দয়া করে চিৎকার করবেন না ৷আমি এখনই চলে যাচ্ছি এখান থেকে ৷”
রাই তার কুকুরকে নিয়ে হাটা শুরু করলো ৷ কিন্তু হাটতে পারছিল না সে ৷ গতকাল রাতে কাশবনে খালি পায়ে দৌড়ানোর জন্য পায়ের নিচে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে ৷ তবুও রাই হাটতে লাগলো ৷ রাই কয়েক পা হাটতেই কফি শপের মালিক বলল,
“এই মেয়ে দাড়াও ৷”
রাই থেমে গেল ৷ তারপর পেছনে তাকিয়ে বলল,
“আবার কি হয়েছে ?আমি তো চলেই যাচ্ছি ৷ আবার ডাকছেন কেন ?”
লোকটা রাইয়ের দিকে সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ৷ লোকটা যেন রাইয়ের মাঝেই অন্য কাউকে খুজছে ৷ কিছু সময় পর লোকটা বলল ,
“তোমাকে অনেক চেনা লাগছে আমার ৷ কেন যেন মনে হচ্ছে তোমাকে আগেও দেখেছি অনেক বার আমি ৷”
রাই হাসে লোকটার কথায় ৷তারপর উপহাস ভরা কন্ঠে বলে ,
” আমার মুখটা তো অচেনা নয় ৷ শুধু সময় বদলে গেছে ৷ আগে এই শপের সামনে আসলে আপনার শপের লোকেরা ম্যাডাম বলে সম্মান দিতো ৷ আর এখন আপনি ঘাড় ধাক্কা দিচ্ছেন ৷ আগে আমি দামি পোশাক পরে আসতাম ৷ আর এখন পাগলের মতো ৷কয়েক দিন আগেও আপনার কফিশপের একজন রেগুলার কাস্টমার ছিলাম আমি ৷ আপনার একজন আদরের কাস্টমার রাই ৷ আশা করি মনে পরে যাবে ৷ এবার আমি আসি ৷”
লোকটার কৌতুহল যেন বেড়েই গেল ৷ কারন রাইয়ের বাবার সাথে তার দুইবার কথা হয়ে ছিল ৷ লোকটার বেশ টাকা পয়সা আছে ৷ কিন্তু তার মেয়ে এমন পাগলের মতো রাস্তায় কেন ঘুড়ছে ৷ লোকটা নিজের কৌতুহল মেটাতে না পেরে বলল ,
“কিন্তু তোমার এই অবস্থা কেন ?আর রাস্তার পাশেই বা কেন থাকছো ?”
রাই খোলা আকাশেল দিকে তাকিয়ে আক্ষেপ ভরা কন্ঠে বলল
“ভাগ্য আমার সাথে এক নিষ্ঠুর খেলা খেলেছে ৷ তাই এই অবস্থা আমার ৷”
লোকটার কৌতুহল যেন কয়েক ধাপ বেড়ে গেল ৷তবুও লোকটা নিজের কৌতুহল দমিয়ে বলল,
“তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি ক্ষুধার্ত ৷ তুমি চাইলে কিছু খেয়ে নিতে পারো ৷ ”
রাই লোকটার দিকে শান্ত দৃষ্টি নিক্ষেপ করে ৷ তারপর বলে ,
“আমার খাবার চাই না ৷ যদি সাহায্য করতে চান ৷ তাহলে একটা কাজের ব্যবস্থা করে দিন আমাকে ৷ আপনার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো ৷”
অন্যদিকে সায়মা হাসপাতালের বারান্দায় বসে আছে ৷ চোখের পানি শুকিয়ে গেছে ৷ কাল রাতে মানুষের সাহায্য নিয়ে অনিককে হাসপাতালে নিয়ে এসেছে ৷ অনিকের চিকিৎসা চলছে ৷ খুব খারাপ ভাবে তাকে মারা হয়েছে ৷ শরীরের ভেতর অনেক আঘাত পেয়েছে সে ৷ অনিকের জ্ঞান নেই ৷ ডাক্তার বলেছে অবস্থা ভালো না ৷ কয়েক ঘন্টা যাবত অনিকের উপর লাঠি দ্বারা অমানবিক নির্যাতন করা হয়েছে ৷ যার ফলে ফুসফুস ,কিডনি ও বুকের পাজরে প্রচুর আঘাত পেয়েছে সে ৷অবস্থা ভালো না খুব বেশি ৷ অনিকের মা বাবাকে খবর দিয়েছে সায়মা ৷ তারা গ্রামের বাড়ী থেকে রওনা দিয়ে ৷
অপর দিকে রাইয়ের বড় ভাই নিজের ঘরে বসে আছে ৷ গভীর চিন্তা তাকে গ্রাস করেছে ৷ তাকে দেখে মনে হচ্ছে কোনো জটিল সমস্যার হিসাব মিলাচ্ছে সে ৷ রাইয়ের বড় ভাবি স্বামীকে বিষন্ন অবস্থায় বসে থাকতে দেখে বলল,
“কি ব্যাপার রায়হান ৷ কাল রাত থেকে দেখছি তুমি কি যেন ভাবছো ? তোমার কি কিছু হয়েছে ?”
রাইয়ের ভাই স্ত্রীর হঠাৎ ডাকে কেঁপে ওঠে ৷ তারপর স্বাভাবিক হওয়ার ভান করে বলে ,
“আমি ঠিক আছি ৷আমার আবার কি হবে ৷ কাজের একটু প্রেশার তাই কিছু ভালো লাগছে না ৷”
“ও এই ব্যাপার ৷ আমি আরো ভাবলাম কি যেন হয়েছে তোমার ৷”
রাইয়ের ভাই কয়েক সেকেন্ড চুপ থেকে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন ,
” আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ৷ আমার সাথে কখনো বিশ্বাসঘাতকতা করো না ৷ আমি মানতে পারবো না ৷ আর কখনো বিশ্বাস নিয়ে খেলার আগে আমায় শেষ করে দিও তুমি ৷”
রাইয়ের ভাবি স্বামীর এমন কথায় ঢোগ গিলে বলল,
“কি সব বলছো রায়হান ৷ আমি কেন বিশ্বাস নিয়ে খেলা করবো ?”
রায়হান হালকা হেসে বলে ,
“আমি জানি তুমি এমন কিছু করবে না ৷ তবুও বললাম আর কি ৷বলা তো যায় না কখন কি হয়ে যায় ৷”
রাইয়ের ভাই কথাটা বলে ঘর থেকে বেড়িয়ে যায় ৷ আর রাইয়ের ভাবি গভীর চিন্তায় মগ্ন হয়ে যায় ৷
রাই কফিশপের ভেতর বসে আছে ৷ তার পাশেই কুকুরটা বসে আছে ৷রাইয়ের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অবুঝ কুকুরটা ৷ রাই ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় ৷কুকুরটা জিহ্বা দিয়ে রাইয়ের হাত চাটতে শুরু করে ৷ বিনিময়ে রাই তার মিষ্টি হাসি উপহার দেয় ৷শপের মালিক দূরে দাড়িয়ে রাই আর কুকুরের ভালোবাসা দেখে ৷ রাইকে দেখে কেন যেন তার মনে অনেক মায়া লাগে ৷ প্রথমে পাগল ভেবে তাড়িয়ে দিলেও পরে যখন বুঝতে পারে তার নিয়মিত একজন কাস্টমার রাই ৷ তখন বেশ অবাক হন তিনি ৷ কয়েক দিন আগেও যেই মানুষটার শরীরে আভিজাত্যের ছোয়া থাকতো ৷ যার শরীরে দামি পোশাক থাকতো ৷ হাতে দামি ব্যাগ থাকতো ৷ গলায় ,কানে ,হাতে স্বর্নের অলংকার থাকতো ৷ সেই মানুষটাকে আজ পাগল ভেবে ভুল করে ছিল ৷ কোথায় সেই মায়াময়ী সৌন্দর্য ৷ শরীরে ময়লা কাপড় ,মাথার কোকড়া চুলে জট বেধে গেছে ,শরীরে ময়লা ,মুখে ক্ষুধার ছাপ ৷ অথচ এই মেয়েটাই একদিন তার দোকানের খাবার কিনে রাস্তার অসহায় মানুষকে খাওয়াতো ৷ আর আজ সে নিজেই খাবার পাচ্ছে না ৷ শপের মালিক ওয়েটারকে দিয়ে খবার পাঠিয়ে দিল রাইয়ের জন্য ৷তবে অবাক করা বিষয় রাই খাবার গুলো পেয়ে নিজে খেতে শুরু করলো না ৷ খাবার গুলো অর্ধেক ভাগ করলো ৷ তারপর কুকুরটার সামনে খাবার গুলো দিয়ে দিল ৷ কুকুরটা তার মালিকের আচরনে শুধু ঘেউ ঘেউ করে উঠলো ৷ রাই তার পরম স্নেহের হাত বুলিয়ে দিল অবুঝ প্রানীর শরীরে ৷ তারপর চলে গেল হাত ধুতে ৷
অপর দিকে রাইয়ের ভাই রায়হান মাহমুদ তার এক পুরনো বান্ধবীকে কল করলো ৷ একটু পর ওপাশ থেকে ফোন রিসিভ করতেই রায়হান বলল ,
“এত দেরি করছিলি কেন ফোন ধরতে তুই ? ”
ওপাশ থেকে বলল,
“কাল থেকে তোকে কত বার ফোন করলাম ৷ কিন্তু তুই রিসিভ করিস নি ৷ মেসেজ গুলো সিন করিস নি ৷ আমি ওখানে সব বলে দিয়েছি ৷”
রায়হান নিজেকে সামলে বলল,
“সরি দোস্ত ৷ আসলে একটু সমস্যায় ছিলাম ৷ তাই ফোন ধরি নি ৷ আর মেসেজ চেক করতে মনেই ছিল না ৷ এবার বল তোকে কাল যেই ঔষুধের নাম লিখে পাঠিয়েছি ৷ ঐ টা আসলে কিসের ঔষুধ ৷”
“এটা বাচ্চা মিসক্যারেজ করার ঔষুধ ৷ খুবই পাওয়ারফুল ঔষুধ এটা ৷একবার কেউ খেলে বাচ্চা বেশিক্ষন টিকবে না ৷”
“তুই ঠিক বলছিস তো ৷ আরেক বার দেখে বল তাসনিম ৷”
“আমার উপর তোর সন্দেহ আছে ৷ আজ চার বছর মেডিকেলে মা ও শিশু বিষেশজ্ঞ হয়ে কাজ করছি ৷ আমার কেন ভুল হবে ৷”
“ধন্যবাদ তাসনিম ৷ রাখছি আজ ৷ পরে কথা হবে ৷”
চলবে