সত্যি ভালোবাসো,part_18
writer Fatema Khan
প্রতিটি সূর্যদয় প্রত্যেক মানুষের জন্য নতুন কিছু নিয়ে আসে।কেউ নতুন করে বাঁচার জন্য মাঝ সমুদ্রেও ভেলা পেয়ে বসে।সবাই বাঁচতে চায়,নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে।কেউবা তাদের প্রথম ভালোবাসা পায় না।সব ভালোবাসা যে পূর্ণতা পাবে তেমনটা না ও হতে পারে।কিছু ভালোবাসা অপূর্ণ থাকাই শ্রেয়।তবে একজনকে ভালোবাসলে তা পূর্ণতা না পেলে যে অন্য কাউকে ভালোবাসা যাবে না এমনটা কোথাও লিখা নেই।চেষ্টা করলেই ভালোবাসা যায়।প্রথম ভালোবাসাকে ভুলতে না পারো কিন্তু নতুন কাউকে নিজের জীবনের সাথে জড়াতে ক্ষতি নেই তাই না।একবার চেষ্টা করেই দেখো না সব হবে তোমার দ্বারা।
(তাহসিনের হাত ধরে কথাগুলো বলল তাহিয়া)
_______________________________
ফ্ল্যাশব্যাক,,,
তাহসিনঃবাবা তুমি আমাকে মিথ্যা বলে দেশে আনলে কেনো?
আবিরঃদেখো তোমাকে দেশে আনা দরকার ছিলো।
তাহসিনঃকি এমন দরকার ছিলো,তুমি জানো আমি কেনো দেশে আসতে চাই নি।আমি তাহিয়ার থেকে দূরে থাকার জন্য কানাডা চলে গেলাম যাতে ওর আর আরিশের জীবনে আমার জন্য কোনো সমস্যা যেনো না হয়।সব জেনেও তুমি আমাকে মিথ্যা বলে কেনো আনলে বলো
আবিরঃআমি একদম হেয়ালি পছন্দ করি না,তাই তোমাকে সোজাসাপটা উত্তর দিবো।আমি তোমার বিয়ে ঠিক করেছি।
তাহসিনঃমানে কি এসবের?আমি বিয়ে করতে পারবো না।
আবিরঃআমি তোমার থেকে জিজ্ঞেস করি নাই তোমাকে আমার সিদ্ধান্ত জানালাম।
তাহসিনঃবাবা আমি কালই চলে যাবো কানাডা।
আবিরঃতোমার পাসপোর্ট আমার কাছে যা তুমি পাবে না।
তাহসিনঃএবার কিন্তু বেশি করে ফেলছো তুমি।
আবিরঃবাবার একমাত্র মেয়ে।কাল চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় এসেছে।ওইখানেই লেখাপড়া করে।তুমি চাইলে বিয়ের পর তাকে নিয়ে কানাডাতে সেটেল্ড হতে পারো।আর আমরা আজ বিকেলে ওদের বাড়িতে যাবো।এনগেজমেন্ট করে ফেলবো তোমাদের।
(হাতের কাছে থাকা গ্লাসটি ফ্লোরে ছুড়ে মেরে সিড়ি দিয়ে উপরে উঠে চলে যায় তাহসিন)
আবিরঃহ্যালো তাহিয়া মা একটু বাসায় আসবি।(তাহিয়াকে সব খুলে বলল)
তাহিয়াঃআমি আসছি আংকেল।
আবিরঃধন্যবাদ মা,তাহসিন তোর কথা শুনবে আমি জানি।
তাহিয়াঃআমি আর আরিশ আসছি।
_________________________________
ফ্ল্যাশব্যাক শেষ,,,
তাহিয়াঃকি বলো ভাইয়া নিজের জীবনকে আরেকটা সুযোগ দিবে না।
তাহসিনঃআমার দ্বারা যে এই বিয়ে টিয়ে হবে না,তুই যা এখান থেকে।
আরিশঃ চেষ্টা করে দেখো তাহসিন।কারো জন্য জীবন থমকে থাকে না।
তাহিয়াঃভাইয়া প্লিজ একটাবার ভেবে দেখো।আংকেলের কথা। সে তোমায় এভাবে দেখে কত কষ্ট পাচ্ছে।নিজের কথা ভাবো এভাবে কষ্ট পেয়ে নিজে কি খুব সুখে আছো।আমরা তোমাকে সুখি দেখতে চাই।তুমি সুখে থাকলেই সবাই সুখে থাকবে।
আরিশঃবিয়ের জন্য রাজি হয়ে যাও।সব ঠিক হয়ে যাবে।তোমার কি এমন কাউকে চাই না যে শুধু তোমাকে ভালোবাসবে।প্রথম ভালোবাসা ভুলা যায় না আমি মানছি,কিন্তু নতুন একজনকে ভালোবাসার চেষ্টা করতে তো আর দোষ নেই।একবার চেষ্টা করেই দেখো।
(তাহসিন নির্বাক কি বলবে সে।আরিশ আর তাহিয়া যা বলছে সব সত্যি।কিন্তু সে যে তাহিয়াকে খুব ভালোবাসে)
তাহিয়াঃকি হলো ভাইয়া কিছু তো বলো?
তাহসিনঃঠিক আছে আমি রাজি বিয়ে করতে।
তাহিয়াঃ সত্যি তুমি নিজের জীবনকে আরেকটা সুযোগ দিবে।
তাহসিনঃ হুম দেখি কি হয়।
(আরিশ তাহসিনকে জড়িয়ে ধরলো)
তাহিয়াঃ আচ্ছা এখন চলো আমরা বের হই,বিকালে তো আবার জারা ভাবিদের বাসায় যেতে হবে।
তাহসিনঃজারা ভাবি কে?
আরিশঃনিজের হবু বউয়ের নাম এখনো জানা হয়নি বুঝি?আজ তো তোমার আর জারার এনগেজমেন্ট তার কথাই বলছিলো তাহিয়া।
তাহসিনঃঅহহ
তাহিয়াঃ তো আমরা এখন যাই বিকালে দেখা হবে।
(তাহসিনকে বিদায় দিয়ে তাহিয়া ও আরিশ বের হয়ে যায়)
তাহসিনঃজারা নামটা যেনো কোথায় শুনেছি আমি।ওহ হ্যা কাল যে মেয়েটার সাথে ধাক্কা লেগেছিল সেই মেয়েটার নামও জারা ছিলো।কি ঝগড়ুটে মেয়েরে বাবা।(ঠোঁটের কোণে হাসি টেনে)
___________________________________
রাসেলঃএকদম বায়না করবে না।নিয়ে যাচ্ছি আমার সাথে সাথেই থাকবে।আমার চোখের আড়াল হলেই সোজা নিয়ে আসবো।
তনিমাঃএমন করছো কেনো?সবাই যাবে তাহসিনের এনগেজমেন্টে আমি যদি না যাই আমার মনটা তো ওইখানে পরে থাকবে আর আমার কত খারাপ লাগবে বলো।আর মনে হয় বাচ্চাটা একলা তোমারই আমার না।তোমার থেকে আমার বেশি টেনশন বুঝলা।
রাসেলঃ হুম বুঝলাম।আমার রাজকন্যা ভালো থাকলেই হলো।
তনিমাঃরাজকন্যা কেনো হতে যাবে।আমার তো রাজপুত্র হবে।
রাসেলঃআচ্ছা দেখা যাবে।এখন চলো লেট হয়ে গেছে।
________________________________
(জারাদের বাড়িতে সবাই বসার ঘরে বসে আছে।জারাকে নিয়ে তাহসিনের সামনে বসানো হলো।সবাই বিভিন্ন কথা বলছিলো।তাহসিন জারার দিকে তাকাচ্ছিলো না।আর জারা লজ্জায় মাথা তুলছে না।তা দেখে আরিশ আর রাসেল মিলে সবাইকে বলল তাহসিন আর জারাকে আলাদা কথা বলতে দিতে।কারণ ওদের তো আগে দেখা বা কথা হয়নি।তাই নিজেদের মধ্যে কিছুক্ষণ সময় ব্যয় করুক।সবাই রাজি হলো।তাহসিন আরিশ আর রাসেলের দিকে বিস্ফোরিত চোখে তাকালো।তারা দুইজন তাহসিনের দিকে তাকিয়ে দাঁত কেলালো।)
ছাদের এককোণে আকাশের দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে তাহসিন।কারো পায়ের শব্দে বুঝতে পারে জারা এসে গেছে।তাহসিন পিছনে ফিরে দেখে কালকের রাস্তায় যার সাথে ধাক্কা লেগেছিল সেই মেয়েটাই।
তাহসিনঃআপনি??
জারাঃআপনি?
চলবে,,,,,,