সন্ধ্যায়_সন্ধি সিজন-২,০২,০৩

0
760

#সন্ধ্যায়_সন্ধি সিজন-২,০২,০৩
#মম_সাহা
পর্বঃ২

–“দেখো রায়হান তুমি যেটা করেছ সেটা আমার কাছে খুবই নিন্দনীয়। তুমি যদি ভেবে থাকো এরকম নিম্নমানের কাজ করে আমার মন পাবে তবে তোমার ভুল সংশোধন করে দিচ্ছি এসব লো মেন্টালিটির কাজ করে আর যাই হোক এই চাঁদকে কাবু করতে পারবে না।” চাঁদ বেশ শক্ত কন্ঠে বলল।

রায়হান এতক্ষণ চুপ করে সব কিছু শুনলো।চাঁদের কথা থামার পর রায়হান শব্দহীন কান্নায় ভেঙে পড়লো। চাঁদের মন এবার একটু নরম হলো।সে রায়হানের কাছে আরেকটু এগিয়ে বসলো।রায়হানের মাথায় হাত বুলিয়ে বেশ কোমল কন্ঠেই বলল,,

–“দেখো রায়হান তুমি একজন মেডিকেল স্টুডেন্ট। তোমার কাছে এমন কাজ আশা করি নি।জীবনে এমন অনেক মানুষ আসবে যাবে।তাই বলে আমরা নিজের জীবনটাকে শেষ করে দিতে পারি না।এই সুন্দর দুনিয়া দেখার সুযোগ তো আর নাও পেতে পারো।তাই যখন সুযোগ পেয়েছো তা লুটে নেও।একজন মানুষের জন্য জীবনটা এভাবে তুচ্ছ করে দেখো না।জীবনে এমন এক সঙ্গী পাবে যে তখন আমার জন্য এই কাজটা করেছিলে তখন নিজেকে ছোট মনে হবে।এমন কাজ কখনোই করবে না যে নিজেকে ছোট মনে হয়।”

রায়হান চাঁদের দিকে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে চেয়ে রইল।এমন উরণচন্ডী মেয়েও এভাবে মন বুঝতে পারে তার জানা ছিলো না।চাঁদ আরও কিছুক্ষণ রায়হানের কাছে বসে ছিল।যখন সে উঠে আসতে নিলো রায়হান পিছু ডেকে বলল,,

–“আমি জানিনা তোমার পরও কাউকে এতটা ভালোবাসতে পারবো কি না।তবে আমি তোমাকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টাও করবো না। দেখি না তোমাকে হৃদয়ে রেখেই আগাতে পারি কি না।”

চাঁদ ফিরে চাইলো না আর।শুধু মুচকি হাসি দিয়ে বলল,

–“ভালোবেসে যাও আমায়।এ দুনিয়ায় আমাকে ভালোবাসার মানুষের খুব অভাব।তবে থেমে থেকো না।পিছুটান রেখো না।”

চাঁদ বের হয়ে গেলো রায়হানের কেবিন থেকে।সে একবারও ফিরে তাকালো না।রায়হান ভেবেছিল একটু হলেও ফিরে তাকাবে কিন্তু চাঁদ ফিরে তাকালো না।রায়হানের বুকের বা’পাশে একটু তো ব্যাথা হলো কিন্তু সে আর পাত্তা দিলো না।সে না হয় এক তরফা ভালোবেসে যাবে।ক্ষতি তো নেই।

এদিকে চাঁদ চেয়েও ফিরে দেখে নি।সে জানে সে ফিরলে রায়হানের ক্ষতটা আরো গাঢ়ো হবে।আর এমনেতেও সে রায়হানকে এগিয়ে যেতে বলেছে।কারো পিছুটান হয়ে থাকতে চায় না সে।

এসব কিছুই নিজের চোখে দেখেছে তেজ।যতই সে এই চাঁদকে অপছন্দ করুক কিন্তু সে এই মেয়ের কঠিন রূপের ভিতর একটা নরম মন একটা ভগ্ন হৃদয় আর আকাশসম বিষন্নতা দেখতে পায়।কিন্তু এই মেয়ের কাঠিন্য রূপটা দেখলেই আর বাঁকা বাঁকা কথা শুনলেই আর ভালো লাগে না।তেজস্ব আবরার,, যে কখনো কারে প্রতি ইন্টারেস্ট দেখায় নি সে এই নাম-ধাম হীন মেয়ে চাঁদের প্রতি ইন্টারেস্ট দেখায়। ভাবা যায় এগুলা। আনমনে এসব ভেবেই তেজ হসপিটালের বাহিরে এসে নিজের গাড়ি নিয়ে বাড়ির পথে রওনা দেয়।

চাঁদ একবারে ভার্সিটিতে চলে আসছে।ক্যাম্পাসের মাঝখানে দাঁড়াতেই চাঁদের ফ্রেন্ড আবির,নীল,রোহান,হাফছা, হৃদি আর পুষ্প হাজির হয়।চাঁদ সহ আর ছয়জন মিলে চাঁদদের টিম।ক্যাম্পাসে বেশ ফেমাস ওরা শুধু মাত্র চাঁদের রাগ আর সাহসিকতার জন্য।

হৃদি এসেই একপাশে চাঁদকে জড়িয়ে ধরে জিজ্ঞেস করে,

–“কিরে চাঁদুজান আমাকে না নিয়ে কোথায় গিয়েছিলি।আজ বাসায় গেলো মা তোরে ইচ্ছা মতন বকা দিবে না খেয়ে আসার জন্য। ”

চাঁদ হৃদির গাল গুলো টেনে মুচকি হাসি দিয়ে বলল,

–“মাঝে মাঝে মামের বকা না খেলে আমার বদহজম হয়ে যায়। তাই তো ইচ্ছে করে বকা খাই।”

সবাই কথা বলতে বলতে ক্যান্টিনে এসে পৌঁছালো।

নীল সবার জন্য কফি ওর্ডার দিলো।কফির অপেক্ষায় বসে আছে সাত মানব মানবী।সাথে আড্ডা। তখনই রায়হানের বোন রিয়া হাজির হলো।হঠাৎ এসেই চাঁদের হাত ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে দিলো। সবাই বেশ খানিকটা অবাক হলো।রিয়া চাঁদের হাত শক্ত করে চেপে ধরেই উচ্চস্বরে বলে উঠলো,

–“হাউ ডেয়ার ইউ ?ষ্টুপিড মেয়ে।ইউ সিলি গার্ল আজ তোমার জন্য আমার ভাইয়ের এ অবস্থা। নিজের অকাদ জানো?তোমার মতন একটা মেয়ের জন্য আমার ভাই এমন কান্ড করলো ভাবতেও পারি নি।থাকো তো পরের বাড়ির আশ্রিতা হয়ে আবার ইগো দেখাও।”

চাঁদ সবটুকু কথা মুখ বুঝে শুনলেও শেষের কথাটা শুনে বেশ রাগ হলো।তাই সে রিয়ার হাতটা ঝাড়া দিয়ে বলল,

–“ইউ ন্যাকা কুইন। আপনার ভাই কি করেছে না করেছে তার জন্য আপনার ভাই দ্বায়ী।আপনার কোনো রাইট নাই এগুলো জিজ্ঞেস করার।আর আমি কি করেছি তার কৈফিয়ত আমি নিশ্চয় আপনাকে দিবো না।আর হ্যাঁ দ্বিতীয় বার এই চাঁদকে কিছু বলার আগে অবশ্যই হাজার বার ভেবে বলবেন।কারণ সবসময় চাঁদ ছেড়ে দেওয়ার মুডে না ই থাকতে পারে।”

রিয়া এবার বেশ রেগে গেলো সে চিল্লিয়ে চাঁদের দিকে আঙুল তাক করে বলল,,

–“তোমার লজ্জা করে না এত বড় বড় কথা বলতে।অন্যের বাড়িতে থেকে এত পাওয়ার দেখাচ্ছো।আমিও দেখি তুমি আর কয়দিন টিকো ঐ বাড়িতে। ”

–“মিস রিয়া ঐ বাড়িটা না আপনার না আপনার বাবার সো ঐ বাড়িতে কে থাকবে না থাকবে সেই সিদ্ধান্ত আপনি নিবেন না নিশ্চয়।” আব্রাহামের কথায় সবাই ফিরে তাকালো।অবাক হচ্ছেন?আসলে আব্রাহাম এ ভার্সিটির শিক্ষক। আর সে যাওয়ার সময় রিয়াকে দেখেই ক্যান্টিনের দিকে এগিয়ে এসে ছিল।তখনই রিয়ার এমন অভদ্রতা দেখে সে উত্তর দেয়।তার এই রিয়া মেয়েটাকে পছন্দ নয়।কিন্তু তেজের বেষ্ট ফ্রেন্ড হিসেবে টলারেট করতে হয়।

রিয়া আব্রাহামের কথায় বেশ ক্ষ্যাপেছে।আর অপমানিতও হয়েছে।তাই দ্রুত স্থান ত্যাগ করলো।চাঁদ জানে ঝড় তো একটা আসবেই।এই রিয়ার ঝড় উঠানো ছাড়া কোনো কাজ নেই।

_____________________________

রাত আটটা।চাঁদ মাত্র অফিস থেকে বাসায় ফিরলো।আজ একটু তাড়াতাড়িই এসেছে।এসে দেখে বাসায় আগে থাকতেই রিয়া ওর বাবা উপস্থিত। আবার নতুন কোন নাটক শুরু হয়।

চলবে,,,,,,

#সন্ধ্যায়_সন্ধি (সিজন-২)
#মম_সাহা

পর্বঃ৩

সোফায় রিয়া আর ওর বাবাকে দেখেও বেশ নিঁখুত ভাবে ইগ্নোর করে নিজের ঘরে চলে যেতে নিলেই রিয়ার বাবা হোসেন মিয়া গলা ঝেড়ে পরিষ্কার করে চাঁদের উদ্দেশ্যে তীক্ষ্ণ স্বরে বলল,

–“এই মেয়ে ভদ্রতা জানো না?দেখছো সামনে একজন মুরব্বি বসে আছে তাকে সালাম তো দূরের কথা দেখেও না দেখার ভাব ধরে চলে যাচ্ছো।”

হোসেন মিয়া থামতেই তার মুখের কথা কেড়ে নিয়ে রিয়া বেশ তাচ্ছিল্য স্বরেই বলল,,

–“ও কি ভদ্রতা জানবে।কোন ফ্যামিলি থেকে এসেছে গড জানে।শিক্ষা দিক্ষার অভাব থাকবে সেটাই স্বাভাবিক।”

চাঁদ এতক্ষণ দুই হাত বুকের মাঝে গুজে তাদের কথা শুনছিলো।বাবা মেয়ে থামার পরই চাঁদ এগিয়ে গিয়ে সোফায় বসল।উপস্থিত সবাই বুঝতে পেরেছে একটা বোমা ফাটবে। আব্রাহাম ও ছিলো।সে তেজের পাশে এসে বসলো।তেজও বসেছে প্রস্তুতি নিয়ে। চাঁদ এবার নিজেও কয়েকবার গলা ঝেড়ে পরিষ্কার করে হোসেন মিয়ার উদ্দেশ্যে বলল,,

–“আঙ্কেল আসসালামু আলাইকুম এই কথাটি আপনাকে বলবো না কারণ আমি তাকেই সালাম দেই যে সালামের যোগ্য। আর আপনি কি জেনো বললেন ভদ্রতা।অন্যের মেয়েকে ভদ্রতা শেখানোর আগে নিজের মেয়েকে ভদ্রতা শেখান।কি বলুন তো আঙ্কেল সবার আগে নিজের চর্কাতে তেল দেওয়া উচিত। সে টা না করে কেনো আমার পিছে পরছেন?”

এবার রিয়ার দিকে ফিরে চাঁদ বেশ খোঁচা মেরে বলল,,

–“আর ন্যাকা কুইন কি বললেন জেনো আপনি? আমি কোন ফ্যামিলি থেকে এসেছি গড জানে।শিক্ষা দিক্ষার অভাব থাকবে তাই না? আপনি তো ভদ্র পরিবারে বিলং করেন তাহলে আপনি এখনো ভদ্রতা টা আয়ত্তে আনতে পারলেন না কেনো? আর আপনি না একজন ডাক্তার? কই খালি কুটনামি করা ছাড়া তো আর কিছুই করতে দেখলাম না।এত পড়াশোনা করে এই জন্যই বুজি ডাক্তার হয়েছেন?”

রিয়া বেশ অপমানিত হয়েছে।আব্রাহাম,হৃদি,তুহা মিটমিট করে হাসছে।রিয়া বেশ ন্যাকা ভাবে বিচারের স্বরে তেজকে বলল,

–“দেখেছিস তেজ তোর সামনে কীভাবে অপমান করলো এ মেয়ে? একে তো পরগাছা তাও এত পাওয়ার কোথায় পায় ও? কিছু বলবি না তুই?”

তেজ কিছু বলতে উদ্যত হলেই চাঁদ বলে উঠে,

–“প্রথমে ন্যাকা কুইন তেজ ভাইয়া আমার গার্ডিয়ান না যে কিছু বলবে। আর আমি ভুল কিছু বলি নি যে শাসন করবে।আর আমি যেমন পরগাছা তেমন আপনিও পরগাছা। তাই আপনি নিজেও নিজের লিমিটেশন টা মনে রাখবেন।”

এবার তেজের মা বেশ বিরক্তির স্বরে হোসেন মিয়াকে বললেন,,

–“ভাই দেখেন বারবার আপনার মেয়ে চাঁদকে পরগাছা,এ বাড়ির কেউ না বলে অপমান করছে কেনো?চাঁদ আমার মেয়ে। আশাকরি আর কোনো কথা হবে না।আর আপনারা কি দরকারে আসলেন বললেন না যে?”

হোসেন মিয়া বেশ বিব্রত বোধ করলেন।সে বুঝতে পেরেছে তার মেয়ের কথা শুনে হঠাৎ এখানে আসাটা উচিৎ হয় নি। তবুও আমতা আমতা স্বরে তিনি বললেন,,

–“আসলে ভাবি কাল আমার বোনের ছেলে রায়হান চাঁদকে প্রপোজ করে।আর সেটা রিজেক্ট করায় আত্মহত্যা করার চেষ্টা করে। তাই আমি চাঁদকে একটু বুঝাতে এসেছিলাম।”

–“বুঝাতে এসেছিলেন নাকি অপমান করতে?” আব্রাহাম কৌতুকের সুরে বলল।

রিয়া জ্বলে উঠে তেজের দিকে তাকিয়ে ঢং করে বলল,,
–“দেখছিস তেজ এই সামান্য একটা মেয়ের জন্য তোর বাসার মানুষ আমাকে কথা শুনাচ্ছে।আর যে এত বড় বড় কথা শুনাচ্ছে তোর ফুপাতো ভাই সেও কিন্তু পরগাছা।”

তেজ এবার বেশ রেগে বলল,,

–“শাট আপ রিয়া।তুই আমাদের বাড়ির ব্যাপারে এত নাক গলাচ্ছিল কেনো?কে আমাদের বাড়ির কি হয় সেটা তোর থেকে ভালো আমরা জানি।সো তোর কথা শেষ হলে যেতে পারিস।”

রিয়া বুঝে ফেলেছে সে ভুল জায়গায় ভুল কথা বলে ফেলেছে তাই কথা কাটানোর জন্য আমতা আমতা স্বরে বলল,

–“আরে তেজ আমি ওভাবে বলতে চাই নি।আসলে রায়হানের ব্যাপার টা নিয়ে একটু ডিস্টার্ব ছিলাম তো তাই আর কি।”

রিয়াকে কিছু বলতে না দিয়ে তেজ হাত দিয়ে থামিয়ে রিয়ার বাবার উদ্দেশ্যে বলল,

–“আঙ্কেল আমার মনে হয় এবার আপনি আসতে পারেন।”

হোসেন মিয়া ও বুজেছে তার মেয়ের কথা শুনে এভাবে চলে আসাটা ঠিক হয় নি।তাই সে রিয়ার হাত ধরে গটগট করে চলে গেলেন।

ওনারা চলে যাওয়ার পর চাঁদ ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার টেবিলে বসল।জাহানারা বেগম সবাইকে খাবার বেড়ে দিয়ে চাঁদের সামনে এসে দাঁড়ালো।চাঁদ খাওয়া থামিয়ে জাহানারা বেগমের দিকে নিষ্প্রাণ দৃষ্টিতে চাইলো।জাহানারা বেগম চাঁদের মাথায় হাত বুলিয়ে নরম স্বরে বলল,

–“আজ সকালে তাড়াতাড়ি চলে গেলি যে?খাবারও খেলি না।কোনো কাজ ছিল সকালে?”

চাঁদ বেশ বিড়ম্বনায় পড়লো। সে তো জানাতে চায় না সে রায়হানকে দেখতে গিয়েছিলো।চাঁদ কথা লুকিয়ে গেলো।মুচকি হাসি দিয়ে বলল,,

–“হ্যাঁ মাম একটু দরকারী কাজ ছিলো।তবে আমি ক্যান্টিনে খাবার খেয়েছি।”

জাহানারা বেগম সযত্নে মেয়েটার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়।মেয়েটাকে কেমন জানি বড্ড আপন লাগে।সবার অগোচরে ইগোস্টিক তেজও মুচকি হাসে।চাঁদের লুকানো কথাটা সে প্রকাশ করে না।থাক না কিছু গোপনে।যেমন গোপনে থেকেছে তার চাঁদের প্রতি প্রচন্ড রকমের ভালোবাসার কথাটা। আব্রাহাম খাবার থামিয়ে তেজের উদ্দেশ্যে বলে উঠে,,

–“চাঁদ ক্যান্টিনের কথা বলায় মনে পড়লো।আজ সকালে তোর ন্যাকা বান্ধবী রিয়া ক্যান্টিনে সবার সামনে চাঁদকে বেশ খারাপ কথা বলেছে। চাঁদ নাকি তোদের বাড়ির আশ্রিতা। আর কতদিন টিকবে এ বাড়িতে সেটাও নাকি দেখে নিবে।”

চাঁদ খাবার থামিয়ে দিলো।আব্রাহামকে উদ্দেশ্য করে বেশ বিরক্তের সুরে বলল,

–“আহা ব্রো কলেজের ব্যাপার এখানে কেনো বলছো?আর তুমি এক তরফা কেনো বললে?আমিও যে কত গুলো খারাপ কথা বললাম সেটা বললে না?”

খাবার টেবিলে বসা প্রত্যেক টা সদস্য অদ্ভুত দৃষ্টিতে তাকায় চাঁদের দিকে।এই মেয়ের এ গুন গুলোই সব থেকে বেশি আকর্ষণ করে তাদের।আব্রাহামের মা নাবিলা খানম চাঁদের মাথায় পরম মমতায় হাত বুলিয়ে দেন।এত দিনের মনের কথাটা বেশ অকপটেই বলে ফেললেন,

–“এই মেয়েটার মতন বউ যদি আমি আমার ছেলের জন্য পেতাম।”

উপস্থিত তিন জনের খাওয়া থেমে যায়।চাঁদ,আব্রাহাম আর তেজ।তেজের বুকটা তো ছ্যাত করে উঠল।কিছু ভিত্তিহীন রাগও হলো চাঁদের উপর।কেনো মেয়েটা এমন হলো।মেয়েটা এমন বলেই তো সবার এত পছন্দ। রাগ থেকেই তেজ ব্যাঙ্গাত্মক স্বরে বলল,,

–“ফুপি,এতদিন শুনেছি ঘরের বউ হিসেবে মানুষ ঠান্ডা, ভদ্র,সুশীল বউ চায় আর তুমি কিনা এমন ছন্নছাড়া বউ চাচ্ছো? ”

তেজের কথায় উপস্থিত সবাই বিরক্ত হলো।ভাবলো চাঁদ বোধহয় কিছু উচিত কথা শুনাবে।কিন্তু সবাইকে ভুল প্রমাণিত করে চাঁদ বেশ তাচ্ছিল্য স্বরেই বলল,,

–“এই কথাটাই আমি তেজ ভাইয়ার সাথে একমত।ঠান্ডার মা কখনো সাময়িক সুখের জন্য জীবনে এমন অলক্ষী মেয়ে মানুষ আনার কথা ভেবো না।আর যাই হোক সবার দ্বারা তো আর সংসার হয় না।”

চাঁদ খাবার অসমাপ্ত রেখেই উঠে চলে গেলো। জাহানারা বেগম ছেলের প্রতি বেশ বিরক্ত হলেন।হৃদি ব্যাথিত সুরে বললেন,

–“দাভাই এভাবে মেয়েটাকে অপমান না করলেও পারো।ওর ও নিজের মতন বাঁচার ইচ্ছে থাকতে পারে তাই বলে হেয় করা উচিত না ওরে।”

তেজের মনের গহীনে সুপ্ত খারাপ লাগা কাজ করে।মেয়েটাকে সে বোধহয় আজ বেশিই বলে ফেলেছে।

চলবে,,,।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here