সিক্রেট_গ্যাংস্টার♥পর্ব_০৫
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
রাতে,
পড়ালেখা শেষ করে খাবার খেয়ে এসে জানালার কাছে বসলাম।
আকাশে অর্ধেক চাঁদ উঠেছে।
মনের মাঝে বাদামী রঙা চোখ দুটোর বিস্তার অস্বীকার করা সম্ভব না।
তার কথা ভেবে অজান্তেই ঠোঁটের কনে হাসি চলে আসে।
বাইরে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম কথা গুলো।
এমন সময় ফোন শব্দ করে বেজে উঠলো।
ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখি অচেনা কোন নাম্বার,
ফোনটা হাতে নিয়ে ফোনটা ধরলাম,
— হ্যালো আসসালামু আলাইকুম,
–আলাইকুম আসসলাম প্রিয়।
অর্ধ চাঁদ টদ হেঁসে আমাকে তোমার কথা বলছিল। তুমি কি তার খোঁজে রাখো।
তার কন্ঠ শুনে হেঁসে দিলাম আমি বুঝতে পারলাম সে কে।
–না আমি খোঁজ রাখি না যাকে চাঁদ হেঁসে হেঁসে বলে সে খোঁজ রাখলেই হবে।
–আচ্ছা তাই নাকি।
–এক দম তাই।
–পড়ালেখা শেষ?
–হুম শেষ।
–খেয়েছো?
–হুম আপনি?
–হুম খেয়েছি।
তো ম্যাম কার কথা ভাবছিলেন আপনি।
–কার কথা ভাব্বো ভাবার মতো মানুষ নাই আমার।
–আচ্ছা তাই নাকি।
–হুম।
–কিন্তু আমার তো মনে হয় আছে,
–আপনার যদি মনে হয় আছে তো আপনি বলে দিন সে কে,
–কেন যার সাথে কথা বলছো সে।
–আপনি কোন দেশে গেছেন?
–বেশি দুরে না ইন্ডিয়া আসছি।
–ওহ,
কখন পৌছায়ছেন?
–এই তো কিছু সময় আগে হোটেলে এসেই তোমায় ফোন করেছি।
–ওহ আচ্ছা বুঝেছি।
–কি বুঝেছো?
–কিছু না।
–আচ্ছা আমি রাখছি তুমি ঘুমিয়ে পরো।
–হুম আল্লাহ হাফেজ।
–আল্লাহ হাফেজ।
ফোনটা কেটে গেল।
আমি গিয়ে শুয়ে পরলাম
তার শুতেই ঘুম চলে এলো,
,
,
–মেঘ আমার মেঘ সত্যি আমার অস্তিত্ব তোমায় ছাড়া সম্ভব না খুব বেশি ভালোবাসি তোমায়।
,
,
,
সকালে,
হেঁটে এসে বাসায় মাকে বললাম খেতে দিতে,
মা খেতে দিলেন,
গোসল করে খাবার খেয়ে সোজা ঋতুর সাথে ভার্সিটি তে চলে এলাম।
এসে ঋতুকে বললাম কালকের ঘটনা।
,–কি বলিস রে এতো দুর।
–অনেকটা দুর।
,–দোস্ত ছেলেটাকে কখনো দেখিস নি। ঠিক হচ্ছে এগুলা।
–আমি কিছু জানি না দোস্ত তিনি আমার অস্তিত্ব হয়ে গেছেন তাকে ভুলা সম্ভব না।
তুই একটু বোঝ।
–হুম আমি সব সময় তোর পাশে আছি।
–ধন্যবাদ সোনা।
–আমাকে ধন্যবাদ দিতেছিস (চোখ সরু করে)
–আরে না না তুই যে কি বলিস।
–হুম চল ক্লাসে।
আমরা ক্লাসে চলে এলাম।
,
,
,
আরিফ খানের অফিসে,
–আজিজ রায়হান স্যার আপনাকে বড়ো স্যার ডেকে পাঠিয়েছে।
পিয়নের কথায় আজিজ রায়হায় চেয়ার ছেড়ে উঠে বসের কেবিনের দিকে যায়।
–স্যার আসবো।
–আরে আজিজ তুই আসবি তার জন্য আবার ফর্মালিটির কি দরকার।
–আরে যতোই হোক বস তো বসি তাই না।
–আয় আয়।
আজিজ রায়হায় ভেতরে প্রবেশ করলো
–বস।
–হুম বল (বসতে বসতে বলল আজিজ রায়হান)
–দেখ তোর আমার বন্ধুত্ব অনেক দিনের।
–হ্যাঁ অনেক দিনের।
–তুই তো জানিস আমার একটা মাত্র ছেলে।
ওর হবার সময় ওর মা মারা যায়।
–হ্যাঁ তোর ছেলে তো মাসআল্লাহ আল্লাহ তাকে নিজ হাতে তৈরি করছে।
–তোর আমার ছেলেকে পছন্দ তো।
–হ্যাঁ পছন্দ তো অবশ্যই তোর ছেলে পছন্দ হবার মতো মানুষ।
–দেখ বন্ধু আমি আমাদের বন্ধুত্ব কে আরো একটা মধুর সম্পর্কে পরিনত করতে চাই ।
–তুই কি বলতে চাচ্ছিস?
–আমি তোর মিষ্টি মেয়েটাকে আমার বাড়ির বৌ করতে চাই।
–কি বলছিস তুই এ তো খুশির খবর।
–হ্যাঁ সময় এসে গেছে আমাদের বন্ধুত্ব কে বেয়াই বেয়াইয়ের সম্পর্কে পরিনত করার তোর মেয়েটাকে আমার খুব ভালো লাগে।
আমার ঘরে কোন মেয়ে মানুষ নেই ও চারিদিকে আলো করে রাখবে আমি জনি ও পারবে।
–তুই আমার মেয়ের উপর ভরসা রাখিস এটা শুনেই আমি খুশি।
–তোর মেয়েটা আসলে খুব নরম মনের একটা মানুষ। আর সত্যি বলতে আমার একটা মেয়ে চাই বৌ না।
দিবি তোর মেয়েকে আমার ঘরের মেয়ে হিসাবে।
(আজিজ রায়হান এর হাতটা ধরে কথাটা বলল)
— কি বলছিস তুই ইনোসোনাল করে দিলি। আচ্ছা তাহলে তুই কাল আমার বাসায় আয়।
–আসবো অবশ্যই আসবো কিন্তু আমার ছেলেটা দেশের বাইরে আছে ও দেশে আসলে এক বারে এসে বিয়ের দিন ফেলবো
–আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে সেটাই হোক।
–হুম।
এই খুশিতে মিষ্টি মুখ করাই চল অফিসের সবাইকে।
–চল,
আজিজ রায়হান আর আরিফ খান মিলে সবাইকে মিষ্টি বিতরন করলো।
,
,
,
ভার্সিটি থেকে বাসায় এসে কাপড় ছেড়ে শুয়ে পরলাম,
আমি শুতেই মিস্টার সাইন্টিস্ট ফোন করল,
–কি ব্যাপার এতো সময় পর মনে পরলো,
–কাজে ছিলাম কাজ করতে এসেছি তুমি জানো।
–হুম বুঝেছি,
–তুমি তো সব বুঝো পিচ্চি।
–এই আমি পিচ্চি না,
–মেঘ মা (মেঘের আম্মু)
–এই আম্মু ডাকে বাই।
–ওকে বাই।
ফোনটা কেটে মায়ের কাছে গেলাম,
–হ্যা মা বলো।
–এদিকে এসো বসো।
–বাবা তুমি কখন এলে?
–এই তো মাত্র মা।
–কি হইছে তোমরা খুব খুশি মনে হচ্ছে?
–হ্যাঁ একটা খুশির খবর আছে।
–কি খবর।
–মেঘ মা,
বাবা আমার হাত দুটো ধরলেন,
–তুমি আমাদের মেয়ে তুমি তো জানো আমরা কখনো তোমার খারাপ চাইবো না।
–হ্যাঁ বাবা জানি।
–ছোট থেকে তো সব অভাব পুরোন করেছি তাই না সব দিয়েছি যা চেয়েছো।
–হ্যাঁ বাবা
–তাহলে আমি আজ তোমার থেকে কিছু চাইবো দিবে?
–অবশ্যই বাবা কি চাও বলো?
–তোমার বিয়ে ঠিক করেছি আরিফ খানের ছেলে আমান খানের সাথে,
বাবার মুখে বিয়ে কথাটা শুনে বুকের মধ্যে ৪২০ ভোল্ট এর ঝটকা খেলাম।
অজান্তে চোখের কোনে পানি চলে এলো
–আরিফ আজ আমার কাছে তোকে তার বাড়ির মেয়ে হিসাবে চেয়েছে।
আমি তার কথা ফেলতে পারি নি আমি জানি আমি তাকে তোর কাছে না শুনে কথা দিয়েছি।
কিন্তু আমরা জানি তোর কোন পছন্দ নেই তাই রাজি হয়েছি।
মা তুই না করিস না আমান কোন অংশে খারাপ ছেলে নয়।
–বাবা কিন্তু একটা বার,
–মারে আমি আমার সব থেকে কাছের বন্ধু কে কথা দিয়েছি মা।
আমি আর কিছু বলার মতো অবস্থা তে নাই চুপচাপ ঘরে থেকে বেরিয়ে এলাম।
ঘরে এসে দেখি ১০ টা ফোন কল।
সব গুলা ব্লক করে দিয়ে ঋতুকে ফোন দিলাম,
–হ্যালো দোস্ত,
–ঋতু তুই কই বাসায় আয় জলদি। (কেঁদে)
–তুই কাঁদছিস কেন কি হইছে?
–তুই বাসায় আয় জলদি।
কথাটা বলে ফোন কেটে দিলাম।
–ও মা কি হলো হটাৎ করে,
ঋতু জলদি ওড়না পেঁচিয়ে মেঘের বাসার দিকে রওনা হয়।
মেঘের বাসায় এসে কলিং বেল বাজাতে মেঘের মা দরজা খুলে,
–কিরে মা কেমন আছিস?
মেঘের মায়ের হাসি দেখে ঋতু বুঝতে পারে শুধু মেঘের কিছু হইছে,
–এই তো ভালো আন্টি মেঘ কই।
–ওর রুমে বোধ হয়। খুশির খবর আছে একটা।। —
–কি খবর।
–ওকে ঘরে না আসতে দিয়ে তুমি খবর শুনাচ্ছো।
–ওহ হ্যাঁ ঘরে আয়।
ঋতু ঘরে আসতে মেঘের মা দরজা লাগিয়ে দিলো,
আর ঋতুকে সব বলল,
এবার ঋতু বুঝতে পারলো মেঘের কি হইছে,
–আলহামদুলিল্লাহ আন্টি আমি একটু মেঘের কাছে যাই।
–হ্যাঁ যা।
ঋতু মেঘের রুমে চলে এলো,
ঋতু রুমে আসতে দরজা বন্ধ করে ওকে জড়িয়ে কাঁদতে লাগলাম,
–দোস্ত কাদিস না।
–কি করব আমি। বাবা আমার হাত ধরে কথাটা বলেছে জীবনে প্রথম আমার থেকে কিছু চেয়েছে। (হেঁচকি তুলে)
–কি করতে বলব কি বলব আল্লাহ কিছু বুঝতেছি না তুই কদিস না।
আমার ভালো লাগে না তোর কান্না
চলবে,
(আমি রিচেক দিতে পারি নি বানা ভুল হতে পারে তার জন্য অগ্রিম ক্ষমা প্রার্থী)