সিক্রেট_গ্যাংস্টার❤️
পর্ব_২৩
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা
আমান চুপচাপ বসে আছে।
চোখের সামনে শুধু মেঘের সেই চনচল কথা গুলো।
তাদের এক সাথে কাটানো কিছু সুখের মুহুর্ত এগুলাই আসছে।
আল্লাহর কাছে দু হাত তুলে দোয়া করা ছাড়া কোন উপায় নেই।
সেই রাতটা কেটে গেল।
সকালে ফজরের আজান দিতে আমান নামাজ আদায় করে।
তার সাথে আমনের বাবা।
মেঘের মা বাবাও।
কিন্তু আমান নামাজ শেষ করে আর উঠে না।
সিজদাহ্ তে বসে কাঁদতে থাকে।
খুব কষ্ট হচ্ছে তার।। বুকের ভেতর হাজার টা চাকু বিঁধছে মেঘকে দেখে।
কোন মতে নিজেকে শান্ত করার উপায় খুঁজে পাচ্ছে না সে।
শুধু মেঘের কথা ভাবছে।
সকলের ভাবনার অবসান ঘটিয়ে ডক্টর বললেন,
–আল্লাহ আপনাদের ডাক কবুল করেছে মিসেস.খানের জ্ঞান ফিরেছে ।
কিন্তু উনি দুর্বল আর আমাদের ধারনা এই দুর্বলতা খুব শীঘ্রি যাবে না।
কথাটা বলে ডক্টর চলে আসতে গেলে আমান বলে উঠলো,
–দেখা করতে পারব ডক্টর?
–হ্যাঁ পারবেন।
আমান ছুটে মেঘের কেবিনে ঢুকে গেল।
গিয়ে মেঘের পাশে বসে আলত হাত টা মেঘের মাথায় রাখলো,
মেঘ তার দুর্বল চোখ দুটো পিটপিট করে খুলে দিলো
।আমান শক্ত করে মেঘের হাতটা ধরে,
–কেন করেছিলে এমন একটা বার আমার কথা ভাবো নি তোমার কিছু আমি যে মারা যেতাম মেঘ।
★★★
খুবই অস্পষ্ট কন্ঠে আমি বলতে চাইলাম
–আ মি তো,
আমাকে কষ্ট পেতে দেখে উনি বললেন,
–থাক কথা বলতে হবে না।
কিছু বলো না শুধু আমার বুকের মাঝে নিজের বিস্তার রেখো চিরো কাল।
আমি মৃদু হাসলাম।
আমান আমার কপালে গভীর চুমু দিলো।
সত্যি নিজেকে বড্ড ভাগ্যবান মনে হচ্ছে এতো সুন্দর একটা ভালোবাসার মানুষ কে পেয়েছি আমি যে কিনা শুধুই আমার।
ওর উপর অধিকার শুধুই আমার।
আমি তো ভেবেছিলাম আর সময় বোধহয় নেই কিন্তু আল্লাহ তায়লা আমাকে তার সাথে জীবন কাটানোর জন্য সময় দিয়েছে আমি হাজার সুকরিয়া আদায় করছি তার জন্য।
ভালোবাসি এই মানুষ টাকে বড্ড ভালোবাসি।
আমাকে শুধু তার বুকের মাঝে রাখলেই হবে।
আমার আর কিছু চাওয়ার নেই।
সত্যি আমি ওকে ভিশন ভালোবাসি।
কথায় বা বাক্যে প্রকাশ করা সম্ভব না ঠিক কতোটা ভালোবাসি।
★★★
ধিরে ধিরে পার হলো সময়।
মেঘ এখন প্রায় সুস্থ কিন্তু ও এখবো ক্লান্ত।
এখন মেঘকে বাসায় নিয়ে যাবে।
আমান মেঘের জন্য একটা লাল শাড়ি নিয়ে এসেছে বেনারসির মতো
–এটা কেন পড়বো? (মেঘ)
–আছে একটা কারন এসো পরিয়ে দেয়।
আমন খুব যত্ন করে শাড়িটা পরিয়ে দিলো মেঘকে।
তার পর,
আমান মেঘকে পাজ কোল করে হসপিটালের মধ্যে দিয়ে নিয়ে আসছে।
সবাই হা হয়ে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে।
এমন কেউ করে।
করে না কিন্তু আমান করে শুধু মাত্র ওর পক্ষে এমন পাগলামি করা সম্ভব।
মেঘ কিছুটা লজ্জা পেলেও পরিশেষে ভালো লাগাই কাজ করলো।
আমান মেঘকে নিয়ে বাসায় এলো,
★★★
আমি গাড়ি থেকে নামতে অবাক
এ মা এগুলো কি পুরে বাড়ি আমাদের বিয়ের দিনের মতো করে সাজানো হয়েছে ঠিক সেই দিনের মতো।
আমি আমানের দিকে তাকালাম।
আমন তার গাল ভরা হাসি টি আমার জন্য নিক্ষেপ করলো।
আমিও হাসলাম
ভেতরে আসতে দেখি সবাই উপস্থিত।
ঋতু, কিরন দাদা, মা, বাবা, বাবা(শ্বশুর মসাই) সবাই ঠিক বিয়ের মতো সেজেছে ঠিক যেমন আমার বিয়েতে সাজ ছিল।
আমি পুরোই অবাক।
আমানের দিকে তাকালম সে হাসছে।
বাবা আমাকে ঠিক সেই প্রথম দিনের মতো বরন করে ঘরে তুললেন,
আমি সত্যি ভাগ্যবান তাদের মতো মানুষ কে আমার জীবনে পেয়েছি।
আমি ঘরে প্রবেশ করলাম।
মনে হচ্ছে আজ সত্যি নতুন করে বিয়ে হয়েছে।
ঘরে এসে আরেক ধামাকা।
কাজি সাহেব বসে আছেন।
আমি তো সত্যি এবার আরো বেশি অবাক।
দ্বিতীয় বারের মতো বিয়েটা সম্পন্ন হলো।
আমি সত্যি ভাবতে পারি নি ওরা আমার জন্য এতো সুন্দর সারপ্রাইজ রেখেছে।
দিনটা খুব আনন্দে কাটলো।
সন্ধ্যায় সবাই চলে গেল মানে ঋতু আর কিরন দাদা।
মা, বাবা।
আমাকে আমাদের ঘরে আনা হলো।
ঘরটাকেও সেই দিনের মতো করে সাজানো হয়েছে।।
আমি হাত দিয়ে ফুল গুলেকে ছুয়ে দিচ্ছি।
ঠিক তখনি পেছন থেকে কেউ আমায় জড়িয়ে ধরলো।
আমি বুঝতে তো পেরেইছি সে কে।
–ধন্যবাদ।
–কেন?
–আমাকে এতো সুন্দর একটা দিন উপহার দেবার জন্য।
–তোমাকেও ধন্যবাদ।
–আমাকে কেন?
–আমাকে এতো সুন্দর একটা বউ উপহার দেবার জন্য।
এতো মিষ্টি একটা ভালোবাসার সম্পর্ক দেবার জন্য।
–হুম আচ্ছা একটা কথা বলুন।
–হুম বলো।
–এই যে মি.গ্যাংস্টার।
ও সরি #সিক্রেট_গ্যাংস্টার
এটা যে আমার স্বামী হবে আর সেই মুখোশ পরা লোকটা আমার প্রথম ভালোবাসা না সরি প্রথম এবং শেষ ভালোবাসা।
কেন বলেন নি আগে।
–বলে দিলে কি আর আজকের দিন পেতাম বলো।
–ও মা সে কি কথা।
–সব ঝড় শেষ আমি আর কোন গ্যাংস্টার নই আমি এখন শুধু মাত্র তোমার ভালোবাসা তোমার স্বামী।
কথাটা বলে সে আমাকে কোলে তুলে নিলো।
আর বেলকনিতে চলে এলো।
চাঁদের আলোয় পরিবেশ আলোকিত।
আমি তার বুকে মাথা রেখে উপভোগ করলাম তার দেওয়া সমস্ত উপহার আর তার দেওয়া এক আকাশ ভালোবাসা।
সত্যি একটা মানুষ এতো ভালোবাসতে পারে জানা ছিল না।
(ঠিক ১ বছর পর তাদের দুই জমজ সন্তান হয় যাদের নাম আদ্রিয়ান আর আদ্রি।
ঋতু এবং কিরনের তার ২ মাস পরি আরাব) জন্ম নেয় আরাব।
বর্তমান,
–আচ্ছা মা একটা কথা বলো তো (আদ্রিয়ান)
–হ্যাঁ বাবা বলো কি কথা (ঋতু)
–হুম বলো শুনছি তোমার কথা (মেঘ)
–এই দুজন মানুষ আসলে কারা?
–এই দু’জন মানুষ কারা তা তো বলতে পারব না বাবা তবে একটা কথা বলতে পারি। (ঋতু)
–কি কথা? (আদ্র)
–এরা তোমাদের খুব কাছে থাকে।
–আচ্ছা
আদ্র এবং আদ্রিয়ান চিন্তায় পড়ে যায় ।
তাদের চিন্তা দেখে মেঘ আমান, ঋতু কিরন হেসে দেয়।
★★★
রাতে,
মেঘ আমান বাসায় চলে আসে।
আসলে আজ করিন আর ঋতুর বাসায় দওয়াত ছিল তার জন্য ওরা সবাই গিয়েছিল৷
যেয়ে ঋতুর মুখে গল্প শুনতে ব্যাস্ত ছেলে ৩ টা।
৩ টা ছেলের মধ্যে ভিশন মিল।
সব সময় এক জায়গায় থাকে
আরাব ২ মাসেী ছোট হলেও ওরা একি ক্লাসে পড়ে।
বাসায় এসে আদ্রিয়ান আর আদ্র তাদের রুমে চলে যায়।
মেঘ আমানও।
মেঘ রুমে এসে গোসল করে রুমে এলো।
আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছে মেঘ চুল গুলো মুছতে ব্যাস্ত।
তখন আমান বলল,
–আচ্ছা মেঘ।
–হুম।
–বাচ্চা দের বলে দিলে হতো। গল্পটা কাদের।
–অপেক্ষা করো তোমার ছেলের তো তোমার মতোই গ্যাংস্টার।
দেখো তারা নিজেরা বার করে নিবে।
–হ্যাঁ দেখা যাক ওরা কি করে।
–হুম।
–তবে আজ ঋতু পুরোনো স্মৃতি তাজা করে দিলো বলো।
–হুম সত্যি আগের দিন গুলোর কথা মনে পড়লে ভলো লাগে আবার ভয় ও হয়।
চলবে,