সিনিয়র ডক্টর #পার্ট:১০

0
1015

#নাম: সিনিয়র ডক্টর
#পার্ট:১০
#লেখক: Osman

_তাই ঠিক করলাম আনিকার চেম্বারে গিয়ে নিজেই মাফ চাইবো। সেদিন ছিলো শনিবার। আমি কলেজে বিকালের দিকে কোচিং করিয়ে। আনিকার চেম্বারের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। এমন সময় কোথা থেকে জানি এক মেয়ে এসে আমার পথ আটকালো। নেকাব ডাকা মুখ লুস বোরকা। মনে হচ্ছে পর্দাশীল কোনো মেয়ে আমি বললাম।

আমি: কে আপনি ? আমার পথ ছাড়েন।

মেয়ে: কে আমি?

_আমি গলার শুর শুনে চিনতে পারলাম আনিকা। তাহলে সে আমার কথা মতো চলছে। যাক আমি হার মানলাম না। আনিকায় হার মানলো। মনে মনে ইয়েস আমি যেতে গেছি। আনিকার সাথে একটু মজা করা যাক।

আমি: সরি কে আপনি? আপনাকে চিনতে পারলাম না?

আনিকা: আমি আনিকা।

আমি: ওহহ ডক্টর আপনি । কেমন আছেন কি মনে করে?

আনিকা: কুত্তার বাচ্চা তুই জানিস না।?

আমি: কি জানবো। সরি আনিকা তুমি দেরি করে ফেলেছো। আমার একটা গার্লফ্রেন্ড আছে।

__আনিকা রেগে গিয়ে আমার শার্টের কালার ধরে বলল

আনিকা: কোনটা তর গার্লফ্রেন্ড দেখা। তাকে এখানে আন।

আমি বুঝতে পারলাম আনিকা অনেক রেগে গেছে। আমি দুরের একটা মেয়েকে দেখিয়ে দিয়ে বললাম।

আমি: ঐটা আমার মিষ্টি সুইট গার্লফ্রেন্ড।

আনিকা: তর গার্লফ্রেন্ড দেখুক আমি তার বয়ফ্রেন্ডকে কি করি?

_এই বলে আনিকা তার নেকাব নিচে নামিয়ে। সোজা আমাকে লিপ কিস করে বসলো। আমি আর আনিকা ৩০ সেকেন্ড এভাবে ছিলাম। কলেজের সবাই আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে।যেনো কলেজের সবাই ৩০ সেকেন্ডের একটা লাইভ দেখলো।

আমি: এটা কি করলা তুমি?

আনিকা: সারাজীবনের জন্য তকে আমার করে নিলাম।

আমি: আমি তো সারাজীবন তোমারী ছিলাম।

আনিকা: আমি জানি।

আমি: তাহলে গত এক সপ্তাহ এসব কি ছিলো?

আনিকা: তোমাকে পরিক্ষা করছিলাম। আর তুমি সে পরিক্ষায় পাশ করেছো।

আমি: তাহলে এতদিন তোমার এগুলো সাজানো নাটক ছিলো।

আনিকা: হুম।

আমি: কেনো এরকম করলা?

আনিকা: বললামতো পরিক্ষা করছি।

আমি: তোমরা পরিক্ষাও করো? তোমরা‌ পারোও বটে।

আনিকা: অনেক দিন ধরে তোমাকে জড়িয়ে ধরিনা।
এখন আমাকে জড়িয়ে ধরো ।

আমি আনিকা কে জড়িয়ে ধরলাম। আনিকা কেঁদে দেয়।

আমি: কাঁদছো কেন?

আনিকা: এটা সুখের কান্না।

আমি: হুম কেঁদো না।

আনিকা: বলো সাড়া জীবন আমাকে এভাবে বুকের ভিতর আগলে রাখবে।

আমি: সাড়া জীবন তোমাকে এভাবে বুকের ভিতর আগলে রাখবো।

_আনিকা আস্তে আস্তে আমাকে ছেড়ে দেয়।

আনিকা: চলো এখন তোমাকে আমার বাড়িতে নিয়ে যাবো।

আমি: আজ না অন্য দিন।

আনিকা: এখন তুমি আমার সাথে যাবা।

আমি: ওকে।

_তারপর দুজন দুজনের হাত ধরে কলেজ থেকে বাইরে বেরিয়ে আসলাম। এসে দুজনে একটা রিকশায় ওঠলাম। রিকশা গিয়ে তাদের বাড়ির সামনে নামলো। রিকশায় যতক্ষণ ছিলাম আনিকা আমার হাত শক্ত করে ধরে রাখলো। আনিকা আমাকে বাড়িতে নিয়ে যায়। নিয়ে ড্রয়িং রুমে বসিয়ে বলল।

আনিকা: তুমি বসো।

আমি: না না তুমি আমাকে ছেড়ে যেওনা ?

আনিকা: ঈশান এটা আমাদের বাসা। এখানে ভয় পাওয়ার কি আছে?

আমি: তবুও তুমি আমার সাথে থাকো।

আনিকা: ওকে ।

আনিকা জুড়ে শারমিন বলে ডাক দিলো। শারমিন আমাকে নিচে দেখে এসে বলল।

শারমিন: ঈশান ভাই আপনি? আপনি আমাদের বাসায় বিশ্বাসই হচ্ছে না।

আনিকা: বিশ্বাস হবেও না। তুই তর ভাইয়ের সাথে থাক। তর ভাই ভয় পাচ্ছে। আমি ড্রেস চেঞ্জ করে আসি।

শারমিন: ভাই আপনি না একটা ভিতু।

আমি: তাহলে ফাহিম হলো ভিতুর ডিম।

শারমিন: ফাহিম কে বলছেন কেনো? সেতু অনেক সাহসী।

আমি: সাহসী না ☂️। পুরায় আস্তো একটা ভিতু।

শারমিন: ভালো হচ্ছে না কিন্তু ভাইয়া। ভিতু বললাম আমি আপনাকে আর আপনি বলেলেন ফাহিম কে?

আমি: তাহলে তুমি ও ভিতু।

শারমিন: না না।

আমি: তাহলে কে।

শারমিন: আপনি ভিতু।

_আনিকার মা এসে বলল।

আনিকার মা: কে ভিতু?

আমি: আন্টি ফাহিম।

শারমিন: না না আমি ভিতু।

আনিকার মা: ফাহিম কে।

শারমিন: কেউ না।

আমি: আন্টি আসসালামুয়ালাইকুম। কেমন আছেন?

_আমি দাঁড়িয়ে বললাম

শারমিনের মা: ওয়ালাইকুমুস সালাম ভালো তুমি কেমন আছো বাবা?

আমি: ভালো।

আনিকার মা: যাতো আনিকা কে বল ঈশানের জন্য খাবার নিয়ে আসতে।

_শারমিন চলে গেলো। আনিকার মা বলল

আনিকার মা: বাবা শুনো তোমাকে কিছু কথা বলি।
আনিকাকে তুমি কন্ট্রোলে রাখতে পারবা? এই মেয়ে কিন্তু অনেক জেদি। তোমাকে পেয়ে আমরা অনেক খুশি। আনিকাকে অনেক ছেলে দেখতে আসছে। কাওকে সে পছন্দ করেনি। অবশেষে তোমাকে সে পছন্দ করেছে। তোমাকে পেয়ে আমরা অনেক খুশি।

আমি: থ্যাংকস।

আনিকার মা: এখন বলো তোমার বাবা মাকে কবে নিয়ে আসবা।

আমি: আনিকার সাথে কথা বলে‌ নেই ।
আনিকার মা: ওকে। তোমার আংকেল বাইরে গেছে।
তোমার বাবা কি করে?

আমি: ছোট একটা জুতার দোকান চালায়।

আনিকার মা: তুমি কি করো?

আমি: পড়া লেখা।

আনিকার মা: তুমি তাকে এখন বিয়ে করতে চাচ্ছো।

আমি: সেটা আনিকার উপর নির্ভর করছে। এখন সে যখন বলে। সে যদি এখন করবে । তাহলে আমার সমস্যা নাই। আর যদি বলে আরো দুবছর পর সেটা সমস্যা নাই।

আনিকার মা: তোমার কথা আমার ভালো লাগলো।

আমি: থ্যাংকস।

_আনিকা খাবার নিয়ে আসলো। আনিকা নতুন কাপড় পরলো।সে যে কাপড় পরুক না কেন? আনিকাকে অনেক সুন্দরী দেখায়। আনিকা আমার সামনে খাবার দিলো। আনিকার মা বলল

আনিকার মা: তাহলে তারা দুজন সিন্ধান্ত নেয়। কি করবি?

আনিকা: ওকে তুমি যাও।

আমি: তোমাকে তো দারুন সুন্দরী দেখাচ্ছে।

আনিকা: সত্যি তোমার এই ড্রেস ভালো লাগছে।

আমি: তুমি যেই ড্রেস পরোনা কেনো? সবই আমার কাছে ভালো লাগে।

আনিকা: থ্যাংকস বলবো শুধু বলবো আমি তোমাকে ভালোবাসি।

আমি: আমি জানি।

আনিকা: এখন বলো মার সাথে তোমার কি কথা হয়েছে?

আমি: বলছে তোমাকে এখন বিয়ে করবো না পরে।

আনিকা: তুমি কি বলো?

আমি: সেটা তোমার উপর নির্ভর করছে। দেখো আমার এখনো কোনো স্থায়ী উপার্জনের পথ নেই।
সেটা হতে আরো কমপক্ষে দুই থেকে তিন বছর লাগবে। তুমি যদি চাও তাহলে তিন বছর পরে বিয়ে করতে আমার কোনো অসুবিধা নেই। সেটা এখন তোমার উপর।

_আনিকা কিছু বলছে না। মনে হচ্ছে ভাবনায় ডুবে আছে। কিছুক্ষণ পর বলল

আনিকা: আচ্ছা শুনো তুমি আমাকে এই দুই মাসের ভিতর বিয়ে করবা। কিভাবে করবা জানিনা। যদি বাড়ি থেকে রাজি না হয় তাহলে পালিয়ে বিয়ে করবা।

আমি: সত্যি বলছো।

আনিকা: হুম । তোমার কোনো কাজ করতে হবে না। তুমি শুধু আমার পাশে থাকবা‌।

আমি: ওকে। এখন বলো কবে বাবা মাকে নিয়ে আসবো।

আনিকা: আগামী সপ্তাহে নিয়ে আসো।

আমি: ওকে দেখা যাক। তাহলে আমি ওঠি।

আনিকা: আমার রুমটা দেখে যাও।

আমি: না আরেক দিন দেখবো।

আনিকা: না! না! এখন চলো।

_আনিকা আমার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে গেলো তার রুমে। আমি আনিকার রুম থেকে অবাক হয়ে যাই।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here