সিনিয়র ডক্টর #পার্ট:৩

0
665

#নাম: সিনিয়র ডক্টর
#পার্ট:৩
#লেখক:Osman

_এই বলে ফোন কেটে দিলাম। আর দিলাম এক ঘুম।
সকালে ঘুম থেকে উঠে। কোচিং এ গেলাম। কোচিং শেষে গেলাম কলেজে এভাবে সারাদিন কাজের চাপে শেষ। ৫টার দিকে বাসায় এসে বিছানায় শরীরটা লাগালাম। কিজে ভালো লাগছে। মাথাটা ধরে আসছে। মন চাচ্ছে ঘুমায়তে। কিন্তু না ডক্টরের কাছে যেতে হবে। ওঠে গোসল করলাম। করে রেডি হয়ে চলে গেলাম ডক্টরের চেম্বারে। দরজার সামনে কোনো মানুষ নেই। আমি গিয়ে টোকা দিলাম। ভিতর থেকে বলল আসেন।

আমি: আমি ভিতরে ঢুকে সালাম দিলাম।

ডক্টর: ওয়ালাইকুমুস সালাম বসেন।

আমি: থ্যাংকস।

_আজ ডক্টর একটা খয়েরি রঙের বোরকা । আর সাদা কালার ওড়না দিয়ে স্কার্ট পড়া ।নেকাব নেই। মনে চায় শুধু তাকিয়ে থাকতে।

ডক্টর: শরীর ঠিক আছে।

আমি: না‌। (মাথাটা কেমন জানি লাগছে)

ডক্টর: কেমন লাগছে?

আমি: যে রকম সবসময় লাগে।

ডক্টর: তাহলে আমি আপনাকে নতুন কয়েকটি ঔষধের নাম বলে লেখে দিচ্ছি সেগুলো খাবেন।

আমি: কিন্তু আগের গুলো।

ডক্টর: আগের গুলোও খাবেন। এগুলো ও খাবেন।

আমি: ওকে।

ডক্টর: যদি আপনার রোগ ভালো হয়ে যায়। তাহলে আপনি কি করবেন?

আমি: কি করবো আপনাকে মনে মনে অনেক ধন্যবাদ দিবো।

ডক্টর: হুম। (বলল মনটা কালো করে)

আমি: আমিতো আপনার থেকে ছোট?

ডক্টর: হুম।

আমি: তাহলে আপনি আমাকে তুমি কিংবা তুই করে বলতে পারেন।

ডক্টর: বললে আপনি রাগ করবেন নাতো?

আমি: না।

ডক্টর: থ্যাঙ্কস।

আমি: আচ্ছা আপনি এতো তাড়াতাড়ি ডক্টর হয়ে গেলেন সত্যি অবিশ্বাস্য!

ডক্টর: থ্যাংকস।

আমি: ওয়েল কাম।

ডক্টর: আপনার ফেসবুক একাউন্ট ঘেঁটে দেখলাম।
আপনার ওপর অনেক মেয়ে ক্রাশ। কাউকে লাভ করেন না?

আমি: না। এখনো সিন্গেল

ডক্টর: এতো সুন্দর একটা ছেলে। তারপরেও সিন্গেল।

আমি: আসলে মনের মতো কাউকে পাইনি। আর এভাবে পাঁচ ছয়টা লাভ করার চেয়ে ভালো না । একজনকে মন থেকে ভালবাসা যাকে সারাজীবন আগলে রাখবো এই বুকের ভিতর।

ডক্টর: ঠিক বলছেন।

আমি: আপনার সম্পর্কে কিছু বলেন…..

_এমন সময় কে জানি ডক্টরের মোবাইলে ফোন দিলো।

ডক্টর: হ্যালো আশিক কি করো।……… ঘুরতে আসছো……কার সাথে…… বন্ধুদের সাথে …… আচ্ছা ভালো করে চিল করো…..আমি চেম্বারে…… রোগী দেখি….. ওকে বায় বেবী।

_আমি মনে মনে ভাবছি কে হতে পারে। বন্ধুর সাথে তো এভাবে কথা বলে না কেউ। লাস্টে বেবী‌ বলাতে আমার সব ক্লেয়ার হয়ে যায়। ডক্টরের বয় ফ্রেন্ড।
এটাই ছিলো আমার কপালে। অনেক দিন পর একটা মেয়ে পছন্দ হইছে।তারো বলে বয় ফ্রেন্ড আছে।

আমি: কে ছিলো ?

ডক্টর: বয় ফ্রেন্ড।

আমি: অহহহ। ( বললাম মনটা খারাপ করে)

ডক্টর: রাগ করছেন।

আমি:‌রাগ করবো কেনো? (কেনো জানি আমার চোখ দিয়ে পানি চলে আসছে)

ডক্টর: একি তুমি কাঁদছো।

আমি: না‌ না। কয় নাতো। ( ডক্টরের মুখ থেকে তুমি শুনে কলিজায় গিয়ে আঘাত লাগলো।)

ডক্টর: বেশি মাথা ব্যথা করছে?

আমি: হুম। (কষ্টের কথা না বলার জন্যে মিথ্যা বললাম।)

ডক্টর: আচ্ছা ঠিক আছে। (এই নেও টিস্যু চোখ মুছেন)

আমি: থ্যাংকস।

_আমি চোখ মুছে কিছুক্ষন চুপ করে থাকলাম।
আমি ডক্টরের চোখের দিকে তাকালাম। ডক্টর ও আমার চোখের দিকে‌ তাকালো। দুজনের চোখ একসাথে হলো। ডক্টরের চোখ দেখে মনে হচ্ছে ডক্টর আমাকে কি যেনো বলছে? সেটা কি আমাকে ভালোবাসার কথা। ডক্টর চোখ নিচে নামাচ্ছে না। এক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে আছে। আমি চোখ সরিয়ে বললাম

আমি: তো ডক্টর আমি ওঠি?

ডক্টর: আরেকটু বসেন আমি ও বের হবো।

_একটু পর দুজন একসাথে হসপিটাল থেকে বের হয়ে আসলাম। একটাও কথা বললাম না। কারন তার‌ বয় ফ্রেন্ড আছে। সে তার বয় ফ্রেন্ড নিয়ে সুখে থাকুক আর আমি আমার রাস্তা দেখি। দুজনে পাশাপাশি হাঁটছি। আনিকা বলল

আনিকা: আমার সম্পর্কেতো কিছু বলা হয় নাই।

আমি: আরেকদিন শুনবো ।

ডক্টর: ওকে।

আমি: আচ্ছা ডক্টর আপনি আমার বড়। আপনাকে
আনিকা আপু বলে ডাকি। রাগ করবেন

ডক্টর:আপু ডাকার দরকার নেই।ডক্টর বলবা?

আমি: আচ্ছা আপনার বয় ফ্রেন্ড সম্পর্কে কিছু বলেন।

ডক্টর: তার নাম আশিক। সে একটা জব করে। তার সাথে দেখা হয়েছিল আমার কানাডায়।

আমি: আপনি কানাডায় গিয়েছেন। আপনারাই পেরেছেন জীবনে কিছু করতে।

ডক্টর: থ্যাংকস।

আমি: তাহলে আমি যাই।

ডক্টর: বায়।

আমি: গুড বায়।

_আমি একটা রিকশা ডেকে চলে আসলাম। মনে মনে এটাই বোধহয় ডক্টরের সাথে শেষ দেখা। আমি বাসায় চলে আসি। এসে ফাহিমের সাথে কোনো কথা না বলে ঘুমিয়ে পড়ি।

_আনিকা এরকম বিব্রতকর অবস্থায় আগে কখনো পড়েনি। ঈশান যে কেঁদে দিবে কে জানতো। আসলে আনিকার ঈশানকে প্রথম দেখাতে ভাল লেগেছে।
কিন্তু আনিকারতো একটা বয় ফ্রেন্ড আছে। এই কথাকা আনিকা ঈশানকে কয়েকদিন পরে বলতো।
আনিকার নিয়ত আশিকের সাথে ব্রেকআপ করে ফেলবে। কারন কিছু দিন আগে সানিকে অন্য‌ এক মেয়ের সাথে দেখে ফেলে। আর কিছু দিন ধরে আশিক আনিকা কে বেশি কেয়ার করে না। তার কারণ আশিক হয়তো আনিকার চেয়ে ভালো কাউকে পেয়ে গেছে। আনিকা বাসায় আসে ।আনিকা রা দুই বোন আনিকা বড় ছোট বোনের নাম শারমিন। বাবা মা দুজনেই আছে। বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করে রুমে গিয়ে আশিককে কল দিলো। ব্যাস্ত আছে দুইবার ডায়েল করেন ঢুকলো।

আনিকা: কার সাথে কথা বলতাছো?

আশিক: আরে আমার অফিসের এক স্যারের সাথে।

আনিকা: মিথ্যা কথা।

আশিক: আনিকা তুমি আগের‌ থেকে চেন্জ হয়ে গেছো।

আনিকা: তুমি চেন্জ হয় নাই।

আশিক: না।

আনিকা: আচ্ছা তাহলে তোমার কল লিস্টের একটা স্ক্রিন সট দেও। কোনো‌ চালাকি করবা না। কল‌
কাটবা না।

আশিক: কেনো তোমাকে আমার কল লিস্টের ছবি দিবো?
আনিকা: এই কথা ধারা বুঝা যায় । তোমার ভিতরে সমস্যা আছে।

আশিক: তোমার সাথে কথা বলতে আমার ভালো লাগছে না।

আনিকা: ভালো লাগবে কি করে। আমার থেকে ভালো কাউকে পেয়ে গেছত…….

_শয়তান ফোন কেটে দিয়েছে। ব্র্যাকআপ করে ফেলবি এনে। ঘুরাইতাছত কেনো?
শারমিন ঢুকলো আনিকার রুমে। ঢুকে বলল

শারমিন: কাকে এভাবে গালি দেছ আপু?

আনিকা: কাউকে না।

শারমিন: দেখতো আপু এই দুজন থেকে তরে কাকে ভালো লাগে।

আনিকা অনিচ্ছা সত্ত্বেও তাকালো শারমিনের মোবাইলে। দেখে ঈশান আর একটা অপরিচিত ছেলের ছবি। আনিকা বলল

আনিকা: তুই এই ছবি কোথা থেকে পেয়েছত?

শারমিন: তুই চিনিস?

আনিকা: হুম।

শারমিন: তুই কি‌ করে চিনলি?

আনিকা: আগে তুই বল?

শারমিন: সে হলো ঈশান মাহমুদ। আমাদের কলেজের থার্ড ইয়ারে পড়ে। অধিকাংশ মেয়েদের ক্রাশ। কিন্তু সে আবালের মতো সাড়াদিন কাজ করে।কোনো মেয়েদের পাত্তায় দেয় না।

আনিকা: তর ক্রাশ?

শারমিন: না । দেখ তার হাবাগোবা বন্ধুটার উপর ক্রাশ খাওয়া আমি।

আনিকা: দেতর মোবাইল টা দে?

_এই বলে আনিকা শারমিনের হাত থেকে মোবাইল নিয়ে ছবিটি ভালো করে দেখতে লাগলো।বলল

আনিকা: ঈশান মাহমুদের উপর যতগুলো মেয়ে ক্রাশ খেয়েছে। তার একটা লিস্ট আমাকে দিবি।

শারমিন: কেনো তুইও ক্রাশ খেয়েছত ? তাহলে‌ আশিক ভাই?

আনিকা: সে আমার পেসেন্ট।

_অনিচ্ছা কৃত ভাবে আনিকা শারমিনের মোবাইলের ছবি গুলো দেখতেছে একটা ছবির উপর আনিকার চোখ আঁটকে যায়।

চলবে……

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here