#নাম: সিনিয়র ডক্টর
#পার্ট:৯
#লেখক: Osman
_এই বলে আনিকা ফোন রেখে দিলো । আনিকা ভাবছে কোনো ভুল করছেনাতো সে। আনিকা আবার আগের মতো টাইট বোরকা আর নেকাব না পড়ে ঈশানের সামনে যাবে এবং দেখবে ঈশানের প্রতিক্রিয়া কি আসে?
_আমি সকালে ঘুম থেকে উঠি অনেক দেরিতে। ওঠে দেখি ফাহিম ওয়াশ রুমে। আনিকা রাতে জানি কি বলছিলো মনে নাই। মনে পড়েছে কোথায় জানি ঘুরতে যাবে। কয়টায় যাবে ধুর একটু পর এমনেই ফোন দিবোনে। ফাহিম ওয়াশ রুম থেকে আসলে আমি বললাম
আমি: দোস্ত শারমিনের সাথে কেমন চলছে?
ফাহিম: রাতে কি স্বপ্নে শারমিনকে দেখছত । ঘুম থেকে উঠেই শারমিনের কথা জিজ্ঞেস করছত।
আমি: আরে না।
ফাহিম: ভালো । এখন কেমন জানি তার জন্য একটা মায়া কাজ করে । মন চায় খালি তার মুখটা দেখতে ইচ্ছে করে।
আমি: এটায় ভালোবাসা।
ফাহিম: বাড়ি থেকে না বিয়ের জন্য বলছে। কি করবো?
আমি: শারমিনের কথা বলে দে। কিন্তু এখন না।
দেখ ফাহিম আনিকার বয়স কিন্তু বেশি। আগে তার বিয়ে হোক । তারপর….
ফাহিম: বুঝছি। ওকে
আমি: শুন শারমিন মেয়েটা কিন্তু অনেক ভালো।
তাকে আবার আগেরটার মতো হারিয়ে ফেলিস না।
ফাহিম: যদি চলে যায়।
আমি: যতটা সম্ভব তাকে বেশি সময় দিবি।
ফাহিম: ওকে…
_আমার মোবাইলে কল আসলো । দেখি বাড়ি থেকে
ফোন আসলো।
আমি: হ্যালো মা কেমন আছো?
মা: ভালো তুই কেমন আছত?
আমি: ভালো।
মা: তর জন্য একটা খুশির খবর আছে।
আমি: কি খুশির খবর?
মা: তকে না মেয়ের বাড়ি থেকে দেখতে আসছে।
আমি: মানে?
মা: মানে হলো তর বাবার বন্ধু যে আবুল ভাই। তার একমাত্র মেয়ে তকে পছন্দ করেছে। তার বাবা এবং তার মা গতকাল আমাদের বাড়িতে আসছে ।এসে সব দেখে গেছে । তাদের তকে পছন্দ হয়েছে এবং বাড়ি ঘরও। আর তর বাপের আর আমার মেয়েকে অনেক ভালো লেগেছে।
_আমার মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। মা এসব কি বলছে? না! না! এই মেয়েকে চিনি না জানি না বিয়ে ঠিক করে ফেলছে । আর এদিকে আনিকাকে নিয়ে ঘর সংসার করার স্বপ্ন দেখছি!
আমি: দেখো মা তোমাকে আমি পরিস্কার করে বলে দেই আমার ঢাকায় একজন মেয়ে পছন্দ আছে । আর বিয়ে করলে আমি তাকেই করবো ।
মা: কিন্তু আমাকেতো বললি না?
আমি: এই যে এখন বললাম।
মা: তর বাপ যে বলেছে । বিয়ে দিলে তকে এই মেয়ের সাথে বিয়ে দিবে।
আমি: সেটা বাবার চিন্তা ভাবনা । আর কিছু দিন পর আমি বললে তোমরা ঢাকায় এসে মেয়েকে দেখে যাবে বিয়ের তারিখ ঠিক করে যাবা।
মা: তাহলে কি এই মেয়েকে না করে দিবো।
আমি: ডাইরেক্ট না করে দাও।
মা: আরেকটু চিন্তা ভাবনা করে দেখ। মেয়ের বাবা স্বেচ্ছায় ৫ লাখ টাকা যৌতুক দিতে রাজি হয়ে আছে।
আমি: যৌতুক-টৌটুক আমি বুঝিনা। না করে দাও।
_এই বলে ফোন কেটে দিলাম। আমি ভাবছি অন্য চিন্তা । আগামীকালকে আনিকার ব্যাবহার। এরকম যদি প্রতিদিন হয় তাহলেতো হবে না । না হলে নাই আনিকাকে ভালোবাসি আনিকা কেই বিয়ে করবো
দরকার হলে তাকে কিডন্যাপ করবো । আমার এরকম রাগারাগী দেখে ফাহিম বলল
ফাহিম: দোস্ত কি হয়ছে কোনো সমস্যা?
আমি: নারে বাড়ি থেকে আমার জন্য মেয়ে রেডি করে রাখছে তাই আমি না করলাম।
ফাহিম: আনিকাকে যদি তর বাড়ি থেকে পছন্দ না করে।
আমি: সেটা সমস্যা নাই। বিয়ে করবো আমি ঘর সংসার করবো আমি। মা বাবার পছন্দ না হলে আমি কি করবো?
ফাহিম: ওকে দোস্ত….
_এমন সময় ফাহিমের মোবাইলে কেযেনো কল। ফাহিম কথা বলার জন্য বেলকনিতে যায়। আমি আনিকাকে কল দিলাম। কল রিসিভ করলো
আমি: কি করো?
আনিকা: আজকে না ঘুরতে যাবো রেডি হচ্ছি।
আমি: কোথায় আসবো?
আনিকা: আরে তোমার বাসার চৌরাস্তা মোড়ে যে রেস্টুরেন্ট আছে সেখানে আসো।
আমি: ওকে।
আনিকা: তাড়াতাড়ি এসো।
আমি: ওকে।
_ফোন রেখে রেডি হয়ে গেলাম রেস্টুরেন্টে। গিয়ে দেখি আনিকা এসে বসে রইলো। আনিকা কে দেখে আমার মেজাজ পুরো গরম হয়ে যায়। মুখে নাই নেকাব টাইট বোরকা। আমি টেবিলে বসলাম। এবার রাগ কন্ট্রোল করতে পারলাম না।
আমি: এসবের মানে কি আনিকা?
আনিকা: কি ইশান?
আমি: তুমি বুঝোনা।
আনিকা: সত্যি আমি বুঝতে পারছি না। আর তুমি রেগে যাচ্ছো কেনো?
আমি: তোমাকে না বললাম । আমি নেকাব পড়তে ও লুস বোরকা পড়তে। ড্রাইভারকেতো চেন্জ করছয় না। দেখো তোমাকে ভোগ করার ইচ্ছা থাকলে। তোমাকে কবেই ভোগ করে ফেলতাম। আমি চাই তোমাকে সারাজীবন আগলে রাখতে।
আনিকা: তুমি এসব কি বলছো?
আমি: তুমি কি কিছু বুঝনো না?
আনিকা: আমার এরকম ভাবে পড়তে ভালো লাগে।
আর ড্রাইভার কে আমি বাদ দিতে পারবো কারন ড্রাইভার অনেক আগে থেকে ড্রাইভারি করে।
_আমি আনিকার মুখ থেকে এরকম কথা শুনে অবাক হয়ে গেলাম। আনিকার চেহারায় কোনো ভাবান্তর নেই। মনে হচ্ছে আমি এরকম করবো সেই জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে।
আমি: আমি আমার প্রিয় মানুষটা চাইনা বেপর্দায় থাকুক। আচ্ছা তুমি কি আমাকে ভালোবাসো?
আনিকা: হুম।
আমি: তাহলে আমার কথা মতো চলতে তোমার সমস্যা কি। দেখো আমরা দুজন দুজনকে কিস করছি।
_আনিকা কিছু বলছে না। আমি মনে মনে বলছি মাফ চেয়ে ফেল। তাহলেইতো সব ঝামেলা শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আনিকা কিছু বলছে না আমি আবার বললাম
আমি: তাহলে তুমি থাকো তোমার মতো আর আমি থাকি আমার মতো। এখানে শেষ
_এই বলে আমি চলে আসলাম। আনিকা পিছন থেকে একটা ডাকও দিলো না। তাহলে কি এতোদিন লোক দেখানো ছিলো কিন্তু আমাকে যে কিস করলো। আমি আনিকার কাজ কারবার কিছুই বুঝলাম না। কিন্তু সবতো শেষ এখন কি করবো আমি? কি করবো আমি? তাকে ছাড়া থাকবো কিভাবে? আমি এটা কি করলাম? না! না! ঠিকি আছে আমার কথা মতো না চললে এরকময় হবে। ধুর । কি করবো। মাফ চাইবো গিয়ে । না মাফ চাইবো না । হার মানবো না। সেকি আমাকে ভালোবাসে না। তাহলে এতদিন এসব কি ছিলো। আমার অবাক লাগছে। এতদিন তো যেভাবে চলছে মনে হয়েছে সে আমাকে ছাড়া বাঁচবে না । এখন বাড়িতে কি বলবো। এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে আসি হেঁটে। অনেক কষ্টে দিনটা কাটালাম। সারাদিনে আনিকা কল দিলো না।আমি আনিকার কলের অপেক্ষায় বসে আছি। সে কল দিয়ে মাফ চাইলেও তো হয়ে যায়। এভাবে একটা সপ্তাহ চলে যায়। আমি কিছুই বুঝলাম না । একটা সপ্তাহ আমার কিভাবে যে গেলো সেটা একমাত্র আল্লাহয় জানে। আমি আর আনিকা কে ছাড়া পারছি না। তাই ঠিক করলাম আনিকার চেম্বারে গিয়ে নিজেই মাফ চাইবো। সেদিন ছিলো শনিবার। আমি কলেজে বিকালের দিকে কোচিং করিয়ে। আনিকার চেম্বারের উদ্দেশ্য রওনা দিলাম। এমন সময় কোথা থেকে জানি এক মেয়ে এসে আমার পথ আটকালো।
চলবে…….