#নাম: সিনিয়র ডক্টর
#পার্ট: ৬
#লেখক:Osman
_এই বলে নাচতে আনিকা নিজের রুমে চলে গেলো।
গিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে পড়লো। শারমিন ভাবছে আমি প্রেম করলে তুমি জানবা কোথা থেকে। শারমিন ও ঘুমিয়ে পড়লো।
_আমি চোখ খুলে দেখি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে আছি। চোখ খুললে ফাহিম কাছে আসলো বলল
ফাহিম: কেমন লাগছে?
আমি: ভালো।
ফাহিম: এখন বল কে কে তরে মারছে?
আমি: নাম জানিনা । তবে কলেজের সেকেন্ড ইয়ারে পড়ে।
ফাহিম: সেকেন্ড ইয়ারের ছেলেরা তরে মারছে?
আমি: হুম।
ফাহিম: তুই কিছু করেছিস?
আমি: না । তর জন্যইতো আমি মাইর খেলাম।
ফাহিম: আমার জন্য মানে?
আমি: তর উপর ক্রাশ খাওয়া মেয়েটা । শারমিন তার জন্য।
ফাহিম: ঐ যে শারমিন সকালে যে ফোন দিয়েছিলো।
আমি: হুম। তার সাথে কথা বলছি দেখে । সালার পুতেরা আসছে আমারে মারতে।
ফাহিম: তুই কোনো টেনশন করিস না। শারমিন কেও দেখে নিবো । ঐ সালা ঘরে দেখে নিবো……
_এক নার্স এসে বলল
নার্স: আপনাদেরকে বেড ছেড়ে দিতে হবে।
ফাহিম: কেনো?
নার্স: কারন এখানে অন্য রোগী আসবে।
ফাহিম: কেনো আমারাতো সিটের বাঁড়া দিবো?
নার্স: তাহলে উপর তলায় উন্নত মানের বেডে যান।
এক দিনের বাড়া ১০ হাজার টাকা।
ফাহিম: মানে।
নার্স: মানে কিছু না আপনাদের এই বেড ছেড়ে দিতে হবে।
আমি: ওকে । ফাহিম আমি ঠিক আছি।
ছেড়ে দিচ্ছি। আপনার ব্যাবহার ভালো লাগলো না।
নার্স: কি করবেন ? যত্তসব ফালতু কোথা থেকে যে আসে এগুলো হসপিটালে । ছোট লোকের বাচ্চা।
_ফাহিমের এমনি মাথা গরম। একে আমাকে মারছে
তারপর এই নার্সের এসব কথা শুনে রাগ ওঠে যায়। ফাহিম কোনো চিন্তা না করেই গেছে চড় দিতে আমার এক হাত খালি আছিলো সাথে সাথে ধরে ফাহিম কে বাইরে নিয়ে আসি বললাম
আমি: এই নার্সকে পড়ে দেখে নিবো।
ফাহিম: তুই আমারে ধরলি কেনো? চড় দিয়ে সব গুলো দাঁত ফেলে দিতাম।
আমি: দেখ বিল কতো হইছে? আমি এখানে বসি।
_এতক্ষন আমার হসপিটালটা ভালো করে দেখা হয়নি। হসপিটালের এদিক ওদিক তাকিয়ে আমার চোখ বড় হয়ে যায় । আরে এতো আনিকা যে হসপিটালে কাজ করে এটাতো সেই হসপিটাল। এই করিডোর পার হলেইতো আনিকা বসে আছে চেম্বারে। এতো কাছে বসে আছে আমার ভালোবাসা। মন চাচ্ছে উড়াল দিয়ে চলে যেতাম তার কাছে। কিন্তু গেলে কি লাভ হবে তার তো বা**বয়ফ্রেন্ড আছে। আচ্ছা গেলেতো অসুবিধা নেই। কেনো জানি মন চাচ্ছে আনিকাকে একনজর দেখতে। সম্ভবত ভালোবাসি সে কারনে।ফাহিম এসে বলল
ফাহিম: দোস্ত বিল ১০ হাজার টাকা ।
আমি: এতো টাকা। কি করলো একটু পিঠে সেলাই করলো । আর মুখে ওয়াশ করে বেন্ডিজ বেঁধে দিলো সামান্য কাজে এতো টাকা হয় কি করে?
ফাহিম: আমি একই প্রশ্ন করছিলাম। তারা বলে তরে যে ইনজেকশন দিয়েছে সেগুলো অনেক দামি।
আমি: ঠিক আছে। দেখি কি করা যায়। তুই এক কাজ কর । যে নার্স আমাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করছে তার নামটা জেনে আয়
ফাহিম: তুই দাঁড়া। (একটু পর এসে বলল)
ফাহিম: তানহা নার্সের তানহা।
আমি: তানহা নামটা সুন্দর। কিন্তু একটা ডাইনি।
আমি এক যায়গায় যাবো । তুই আমাকে হেল্প কর।
ফাহিম: কোথায় যাবি?
আমি: আমাকে ধর তকে বলি। আমি যে মাথা ব্যথার
জন্য ডক্টর দেখাইছিলাম। সে ডক্টরের চেম্বার একটু সামনে তার কাছে যাচ্ছি।
ফাহিম: কিন্তু তার কাছে গিয়ে কি লাভ হবে?
আমি: জানি কোনো লাভ হবে না। আর এই ডক্টরকে আমি দুইমাস আগে ভালোবাসছিলাম। এতো কাছে যেহেতু তাই একনজর দেখে যাই।
ফাহিম: ওকে যা।
আমি: আর শুন । এই ডক্টরের বোনের নাম শারমিন।
ফাহিম: কি কস?
আমি: হুম। ঐ দেখ ডক্টরের চেম্বার আমি যাই।
ফাহিম: কতক্ষণ লাগবে?
আমি: জানি না।
_এই বলে আমি আনিকার চেম্বারের সামনে চলে আসি। তার ঐ পিএস এসে বলল
পিএস: এখন কোনো রোগী দেখা হবেনা।
আমি: ম্যাডামকে বলেন ঈশান মাহমুদ আসছে।
_পিএস ভিতরে চলে যায়। একটু পর ফিরে এসে বলল ভিতরে যেতে। আমি ভিতরে ঢুকলাম। দেখি ডক্টর ওলটু দিকে চেয়ার ঘুরিয়ে বসে আছে।
আমি: আমাকে মুখ দেখাবেন না। যেটার জন্য এতো কষ্ট করে আমি এখানে আসলাম। দেখাবেন না তাহলে ভিতরে আসতে বললেন কেনো? আমি চলে যাচ্ছি। এই বলে বসা থেকে উঠলাম ।
_দেখি ডক্টর তার চশমাটা রেখে । সোজা হেঁটে আমার কাছে চলে আসে।এসে কোনো কথা না বলে আমার মাথায় ধরে সোজা তার নরম গোলাপি ঠোঁটটা আমার ঠোঁটে লাগিয়ে দেয়। আমি এর জন্য প্রস্তুত ছিলাম না। ৩০ সেকেন্ড পড় ছেড়ে দিলো । সে চোখ বন্ধ করে রাখছে।
আমি: এটা কি ছিলো?
ডক্টর: জানি না।
_এবার আমি তার পিছনে কোমড়ে হাত রেখে টান দিয়ে আমার একেবারে কাছে এনে আমি নতুন করে আমার ঠোঁট তার ঠোঁট লাগিয়ে দেই। এবার আমরা দুজন একে অন্যের ঠোঁটের স্বাধ উপভোগ করলাম টানা দুই মিনিট। আমি আস্তে আস্তে তার কোমর ছেড়ে দেই। ডক্টর আস্তে আস্তে নরমাল হয়। আমার কাছ থেকে একটু সড়ে চোখ খুলে। একটা মুচকি হাসি দেয়।
আমি: এতো ভালোবাসা এতো আকান্খা । এসব এতোদিন কোথায় রেখেছিলা?
ডক্টর: জানিনা।
_আমি আস্তে আস্তে চেয়ারে বসি। ডক্টর এখন পুরো শরীরে তাকায়। তাকিয়ে অবাক হয়ে যায় বলে।
ডক্টর: এসব কি তোমার শরীরে কি করে হইছে এগুলো?
আমি: এতো উত্তেজিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।
আমি ঠিক আছি।
ডক্টর: কোথায় তুমি ঠিক? পিঠে বেন্ডিজ মাথায় বেন্ডিজ হাতে বেন্ডিজ।
_আনিকা ওঠে এসে আমার শরীর দেখতে লাগলো।
দেখে বলল।
ডক্টর: তোমাকে মনে হয় তিন চার জন মিলে গনধোলায় দিছে। কি করে হলো সব খুলে বলো।
_আমি আনিকাকে রাতের ঘটনা । হাসপাতালে আশা। এবং সবশেষে নার্সের কথাটা বললাম। নার্সের কথা শুনে আনিকা রেগে যায়। বলে
ডক্টর: তুমি একটু বসো । আমি সবঠিক করে দিয়ে আসি। আমি কিছুক্ষন বসে রইলাম।একটু পর আনিকা এসে বলল।
ডক্টর: সব ঠিক আছে। তোমাকে কিছু ঔষধ লেখি দিচ্ছি। সেগুলো খাইবা। আর পুরো দুই সপ্তাহ রেস্টে থাকবা।
আমি: এতো দিন রেস্টে থাকতে পারবো না।
ডক্টর: কেনো?
আমি: শুনো আমি দুইটা কোচিং একটা প্রাইভেট পড়াই। আমি যদি দুই সপ্তাহ এসব বন্ধ রাখি । তাহলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।
ডক্টর: কি ক্ষতি?
আমি: আমি এখানে মেসে থাকি মেসের ভাড়া খাওয়া। আর আমাদের ফ্যামিলি মেম্বার ৬জন। আব্বার একটা ছোট জুতার দোকান। সেটা দিয়ে চলে না। তাই আমি এখানে ও গাধার মত খেটে-খুটে কিছু টাকা ইনকাম করে বাড়িতে পাঠাই। এখন যদি দুই সপ্তাহ এসব বন্ধ রাখি । তাহলে কি অবস্থা হবে?
_আনিকা ওঠে আমার কাছে এসে বসলো বসে আমার হাত ধরলো।
ডক্টর: ঈশান তোমার সমস্যা আমার সমস্যা। আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি বাসোনা?
আমি: বাসি। কিন্তু
ডক্টর: কিন্তু কি?
আমি: তোমার না একটা বয়ফ্রেন্ড আছে?
ডক্টর: তার সাথেতো আমি দুইমাস আগে ব্রেকআপ করছি।
আমি: অহহ খুব ভালো। আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।
ডক্টর: আমি জানতাম তুমি আমাকে অনেক ভালোবাসো।
আমি: হুম।
ডক্টর: তুমি কোনো টেনশন করো না। তুমি দুই সপ্তাহ রেস্ট নেও। দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে।
আমি: তুমি বলছো?
ডক্টর: হুম। আচ্ছা তুমিতো বললা তোমাকে তিনজন মারলো । কেনো মারলো সেটাতো বললানা?
আমি: তোমার বোন শারমিনের কারণে। অবশ্য তার এখানে কোনো দোষ নেই। তার সাথে সকালে কথা বলছিলাম সেটা তিনজন ভালো চোখে নেয়নি।
ডক্টর: শারমিন এখানে জড়িত আছে । তার খবর আছে।
_মোবাইল বের করলো ফোন করার জন্য।
আমি: তাকে ফোন দিবা না। তার এখানে কোনো দোষ নেই।
ডক্টর: ওকে। তোমার মোবাইলটা দেও।
আমি: গতকাল রাতে ভেঙ্গে গেছে।
ডক্টর: এখন কি করবা?
আমি: ফাহিমকে দিয়ে নতুন মোবাইল কিনবো।
ডক্টর: হুম। জানো আমার এখন কি মন চাচ্ছে?
আমি: কি মন চাচ্ছে?
ডক্টর: এখানে তোমার সাথে বসে সাড়াদিন কথা বলতে।
আমি: আমারো মন চাচ্ছে।
ডক্টর: চলো তোমাকে বাসায় দিয়ে আসি।
আমি: তুমি যাবা।
ডক্টর: হুম।
আমি: চলো তাহলে।
ডক্টর: আর শোনো । তোমার আর কোনো বিল দিতে হবে না।
আমি: হুম।
_আমি ওঠে আস্তে আস্তে বের হচ্ছি । এমন সময় আবার আনিকা আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে।
বলল।
ডক্টর: আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি ঈশান। তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে।
আমি: না কক্ষনো।
চলবে…….