#নাম: সিনিয়র বস,পার্ট: ৫,৬
#লেখক: Osman
পার্ট: ৫
__কিছুক্ষণ পর দেখি সারা কল দিলো । সারা বললো তার অফিসে যেতে । তার অফিসে গিয়ে দেখি পরির মতো সুন্দরী একটা মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সারা বললো।
সারা: রাফিদ উনি আমাদের কোম্পানিতে আসছে । একটা চুক্তি করতে । কিন্তু উনার লেপটপটা কি জানি সমস্যা হয়েছে দেখতো.
আমি: ওকে।
__আমি ঐ মেয়েটার লেপটপটা নিলাম। নিয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই ঠিক করলাম। মেয়েটা বললো
মেয়ে: এতো তাড়াতাড়ি ঠিক হয়ে গেলো।
আমি: ওপেন করে দেখুন।
__মেয়েটা লেপটপ ওপেন করলো। সারা ইশারায় বললো চলে যেতে । আমি চলে আসলাম। আমি পিসিতে মুভি দেখতে লাগলাম। কিছুক্ষন সারা আবার কল করলো বললো।
সারা: নিচ তলায় ৫৬ নম্বর অফিসে। দেখতো কি সমস্যা?
__আমি ঐখানে গেলাম। গিয়ে তার কম্পিউটারের ডেক্সটপে একটু সমস্যা। সেটা সলভ করে আসলাম। এসে আবার মুভি দেখতে লাগলাম। দেখি মা ফোন দিয়েছে।
মা: কিরে তুই না বলে বাড়িতে আসছ । এখনো তো আসলি না।
আমি: মা ঐখানে টাকা চায় ৬ লক্ষ্য। তাই আমি আর আসিনি এখন মনি আপুর কোম্পানিতেই আছি।
মা: আচ্ছা মন দিয়ে কাজ কর।
আমি: ওকে।
__আবার মুভি দেখতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর দেখি।
মনি আপু কল দিলো। আমি তরিঘড়ি করে ফোন ধরলাম।
আমি : জী ম্যাডাম কোনো প্রয়োজন?
মনি আপু: তর কি এটা মুভি দেখার যায়গা।
আমি: না ।
মনি আপু: তো মুভি দেখতাছত কেনো?
আমি: অবসর টাইম পাস করছি। আর আপনিইতো বলছেন। কারো সাথে কথা না বলতে।
মনি আপু: আমার মুখের উপর কথা।
আমি: সরি ম্যাডাম।
মনি আপু: তকে একটা ফাইল দিচ্ছি। এটা কমপ্লিট কর।
আমি: ওকে।
__দেখি আমার ই-মেইল এ একটা ফাইল আসলো। আমি কমপ্লিট করলাম। কিছুক্ষণ বসে রইলাম । আমার এখানে কল আসলো। বললো ৮০ নম্বর রুমে বলে কি প্রোবলেম হয়েছে। আমি সেখানে গেলাম গিয়ে দেখি আমার সম বয়সি এক ছেলে কাজ করতাছে । সে বললো তার কম্পিউটারে কি জানি সমস্যা। আমি তার কম্পিউটার চেক করে সমস্যাটা বের করলাম। আমি কাজ করতাছি সে বললো।
সিহাব: ভাই আপনাকেতো আগে দেখেনাই। ভাই আপনি কি নতুন আসছেন। (তার টেবিলের উপর নাম লেখা ছিলো)
আমি: জী ভাই।
সিহাব: ভাই আপনার নাম কি?
আমি: রাফিদ।
সিহাব: আমি সিহাব দেখা হয়ে ভালো লাগলো।
__আমি উনার সাথে হ্যান্ডশেক করলাম।
আমি: me to.
সিহাব: ভাই এটা ঠিক করতে কতক্ষন লাগবে।
আমি: ১০ মিনিটের মতো।
সিহাব: ওকে।
আমি: ভাই একটা প্রশ্ন ছিলো ।
সিহাব: জী ভাই বলেন।
আমি: ভাই এখানে দেখি সবাই । সবাই সবার কাজ মন দিয়ে করছে। কারো সাথে কেউ কথা বলে না। কারণটা কি?
সিহাব: ভাই এটা এই কোম্পানির নিয়ম। কেউ ভঙো করলে । তার চাকরি নট।
__আমি ভাবলাম যাক তাহলে শুধু আমার জন্য নিয়ম না সবার জন্যই। যাক বাঁচা গেলো। কিন্তু এটা কি করে সম্ভব? একটানা ৬ ঘন্টা কাজ করতে হয়। এর মধ্যে কেউ কারো সাথে কথা বলে না। এমন নিয়ম আমি জীবনেও শুনিনি। এখনতো দেখি তারা কাজ করতে আসে না জেল খানায় আসে। দুর এতো কিছু চিন্তা করে লাভ কি ? আমি আমার চিন্তা করি।
আমি: ভাই শেষ এখন আসি।
সিহাব: ওকে।
__আমি আমার অফিসে চলে আসলাম। কিছুক্ষণ পর সারা আমাকে বললো। তার অফিসে যেতে।
আমি সারার অফিসে গেলাম। সারা বললো
সারা: তরতো কোনো কাজ নেই। আমার এই ফাইলটি কম্প্লিট করে দে।
আমি: ওকে। এখানে বসে করি ।
সারা: ওকে।
আমি: এই কোম্পানির একটা অদ্ভুত নিয়মের কথা শুনলাম।
সারা: কি কথা?
আমি: এখানে বলে প্রয়োজন ব্যাতিতো । কারো সাথে কেউ কথা বলতে পারে না।
সারা: হুম।
আমি: কেনো?
সারা: জানি না।
আমি: আপনি জানেন না। এটা কি করে সম্ভব?
সারা: এটা এই অফিসের নিয়ম।
আমি: ওহ। কিন্তু নিয়মটা একটু অন্যারকম হয়ে গেলো না।
সারা: আমাকে জিজ্ঞেস করতাছত কেনো? ম্যাডামকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর।
আমি: ওকে।
__আমি আর কিছু বললাম না। সোজা বাসায় চলে আসলাম অফিস শেষ করে। এসে খাওয়া দাওয়া করে গোসল করলাম। কাপড় গুলো পরিষ্কার করলাম। আমি পরিস্কার থাকতে পছন্দ করি। আমি একটা কাপড় দুই দিনের বেশি পড়িনা। পড়ে সেটা ধৌত করে আবার পড়ি। আমি যতই অলস হই। কিন্তু পরিস্কার থাকতে আমি পছন্দ করি। এভাবে কিছুদিন চলে গেলো আমার অফিসে অধিকাংশ সময় কাজ থাকে না। বসে বসে সময় কাটাই। মনি আপুর মতিগতি ভালো লাগতাছে না। আমার সামনে পড়লেই কেমন জানি রাগি চোখে তাকিয়ে থাকে। কারনটা বুঝে পাচ্ছি না। আমি শুধু অফিসে বসে থাকি সে জন্য। একদিন রাতে দেখি সারা কল দিলো রাত তখন ৯ টা । আমি ফোন ধরলাম
সারা: কিরে কই তুই?
আমি: বাসায়।
সারা: একটা জরুরী কাজে তকে এখন আসতে হবে।
আমি: কেনো? এখন আমি ঘুমাবো।
সারা: আমি আর বস একটা মিটিং এ আছি। এখানে একটু সমস্যা হয়েছে। তর এখানে আসতে হবে।
আমি: ওকে । কোথায় আসতে হবে?
সারা: আমি তরে লোকেশন দিচ্ছি। যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব চলে আয়।
আমি: ওকে।
__আমি রেডি হয়ে সারার দেওয়া লোকেশনে চলে আসলাম। এসে দেখি এখানে একটা বিশাল হোটেল।
আমি হোটেলের দেওয়া রুমে চলে আসলাম। এসে দরজায় টোকা দিলাম । দেখি দরজা খুলা। ভিতরে ঢুকে দেখি কেও নাই। আমি ভাবলাম সারাকে কল দেই। কল দিতে যাবো। দেখি রুমে আরো দুজন ছেলে ঢুকলো। ঢুকেই আমাকে ওরা দুরা মারতে লাগলো। আমি কিছু বলবো সে সুযোগ দিচ্ছে না ।
আমিও প্রতিহত করতে লাগলাম। আমি দু’জনকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিলাম। পরে একজনের তল পেটে কিক চালালাম। আরেক জনকে ইচ্ছা মতো কিক দিতে লাগলাম। পরে একজন আমাকে লাথি দিয়ে নিচে ফেলে দেয়। পরে দুজন আমার উপরে ওঠে । তরিঘড়ি করে আমার হাত পা বেঁধে ফেলে । একটা চেয়ারে বসিয়ে । চেয়ারের সাথে বেঁধে তারা দুজন চলে যায়। আমি খেয়াল করলাম আমার নাক থেকে রক্ত পড়ছে। ঠোঁট ফেটে গেছে। আমি বুঝতে পারছি না । তারা দুজন আমাকে মারবে কেনো? দুজনের কাওকে আমি চিনিনা। নাকি তারা অন্য কারো কথায় এরকম করছে। কিন্তু কার কথায় আমি বুঝতে পারছি না। আমি কারো সাথেতো কোনো ঝামেলা করিনি। পরক্ষনেই আমার খেয়াল আসলো। আরে এটা আবার ভাবার কি আছে। আমাকে এখানে আনছে কে ? সারা! নিশ্চয় সে আমার সাথে এরকম করছে। কিন্তু কেনো? আর এভাবেই মারবে কেনো?
আমার মাথা কাজ করছে না। আমি মাথা নিচু করে বসে রইলাম। রক্তে আমার শার্ট প্যান্ট লাল হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর খেয়াল করলাম কে জানি আসছে রুমের ভিতর। আমার শরীরটা দুর্বল লাগছে। আমি মাথা উঁচু করলাম না। সে এসে আমার আমার মাথা উঠালো। আমি তাকিয়ে দেখি সারা। আমি অবাক হয়নি। কারণ সে যেহেতু আমাকে এখানে ফোন করে আনছে। তাহলে নিশ্চয়ই এটা তার কাজ। সে টিস্যু দিয়ে আমার মুখ মুছে দিচ্ছে।
আমি বললাম
আমি: হাত সরা বেশ্যা মাগী।
সারা: দেখ বকা দিস না । আমি তরে কিছু করছি?
আমি: হাত সরা। আমি মনি আপুর কাছে বলবো তুই যে আমার সাথে কি করছস?
সারা: ওহহো তুইতো দেখি ম্যাডামের নামো জানস। এই জন্যই তো বলি ম্যাডামের সাথে তর কিসের এতো কথা।
আমি: চুপ কর শয়তান। এর বিচার খুব ভয়ংকর হবে।
সারা: কার বিচার হবে । সেটা একটু পর বুঝবি ।
আমি: তুই শুধু একটা বার ম্যাডামের সাথে কথা বলার সুযোগ দে ।
__আমার চোখে মুখে দিয়ে আগুন ? বের হচ্ছে রাগে। হাত দুটো যদি খুলা থাকতো তাহলে এতোক্ষণে তাকে আধা মরা করে ফেলতাম।
সারা: দুঃখিত দিতে পারলাম না।
আমি: আচ্ছা তুই আমার সাথে এরকম করছিস কেনো? আমি তরে কিছু করছি?
সারা: তর সাথে আমার কোনো ? ঝামেলা নাই।
ঝামেলা আছে আরেকজনের।
আমি: কে সে?
সারা: একটু পর দেখতি পারবি।
আমি: তাকে বল আমার সামনে না আসতে। তাকে পেলে আমি মেরেই ফেলবো।
সারা: সেই সাধ্য তর নেই।
আমি: দেখা যাবে। তুই সাহস থাকলে আমার হাত খুলে দে। দেখ তুই এইখান থেকে বেঁচে ফিরতে পারস কিনা।
সারা: ভাবনায় ফেলে দিলি। আচ্ছা যাইহোক আমি চলে যাই। একটু তর সাথে একজন দেখা করবে । তার কাছেই তুই তর রাগ মিটাস।
__এই বলে সারা চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর আরেকজন কে জানি আসলো। তার দিকে তাকাতেই আমার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়লো।
চলবে….
#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ৬
#লেখক: Osman
__এই বলে সারা চলে গেলো। কিছুক্ষণ পর আরেকজন কে জানি আসলো। তার দিকে তাকাতেই আমার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। আমি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেললাম। সেটা হলো মনি আপু। মনি আপু আমার সাথে এরকম করলো। আমি বিশ্বাস করতে পারতেছি না। মনি আপু আমার সামনে এসে বসলো।
মনি আপু: ইস তরে একটু বেশিই মারছে। সরি সরি
আমি: Why? Why?
মনি আপু: তর সাথে আমার কোনো শত্রুতা নেই।
আমি: তাহলে কেনো?
মনি আপু: মনে আছে আজ থেকে দশ বছর আগে। আমার কোমড়ে ঘুসি দিয়েছিলি আর আমাকে চড় দিয়ে চশমা ভেঙ্গে ফেলেছিলি।
আমি: হুম মনে আছে।
মনি আপু: সেটার জন্য এমন করেছি। আসলে কি জানিস আমি আমার মনকে শান্তি দিতে পারছি না। তরে দেখলেই আমার সেই ছোট্ট বেলার কথা মনে পড়ে।
আমি: এটার জন্য এতো কিছু করতে হবে। ঐদিনই আমাকে চড় দিয়ে দিতেন। আমি কিছু মনে করতাম না।
মনি আপু: দেখ তর মনে করায় । আমার কিছু যায় আসেনা। তুই সেই আট দশটা ছেলের মতই আমার কাছে। আর তকে আমি নিজ হাতে মারবো। নাহলে আমার মন শান্তি হবে না।
আমি: আপনি যদি আমাকে মারতেন । তাহলে আমার কোনো দুঃখ থাকতো না। আপনি মানুষ ভাড়া করে আমাকে মারছেন।
মনি আপু: আসলে আমি লোক পাঠাই ছিলাম । তকে ধরে চেয়ারে বাঁধতে। কিন্তু তকে কাবু করতে একটু সমস্যা হয়েছে।
আমি: ওহ।
মনি আপু: সেই ছোট্ট বেলা থেকেই আমার চোখে একটু সমস্যা। আজ আমি তকে কানা বানাবো।
আমি: যা ইচ্ছা করেন। আমার শরীর খুব দুর্বল লাগছে।
__মনি আপু আমাকে কোনো না ভেবেই আমাকে ঠাস ঠাস করে দুইটা চড় দিলো। দিয়ে আরো চারটা চড় লাগালো। আমার ঘাল দুটো যেনো দিয়ে আগুন বের হচ্ছে। তারপর আবার আমার নাকে মুখে ঘুসি দিতে লাগলো। চোখে একটা ঘুষি দিলো। চোখ ফেটে যেনো রক্ত বের হচ্ছে। এভাবে মারার কারণে ব্লিডিং আরো বেড়ে গেলো। দেখি মনি আপু চলে যাচ্ছে। আমি বললাম।
আমি: আপু আমার শরীরটা খুব দুর্বল লাগছে অতিরিক্ত ব্লিডিং এর কারণে । মনে হয় বাঁচতে পারবো না। যদি মারা যাই তাহলে আপু প্লিজ আমার মাকে দেখে রাখবেন।
__এই বলে আমি মাথা নিচু করে বসে রইলাম। আমার চোখ দুটো বুঝে আসছে। আর কিছু মনে নেই। চোখ খুলে দেখি কোনো এক হাসপাতালে ভর্তি আছি। দেখি মুখে বেন্ডেজ । আস্তে আস্তে আমার সব খেয়াল হলো। আমি আমার মোবাইল খুঁজতে লাগলাম। দেখি এক নার্স আসলো। বললো
নার্স: বেশি নড়াচড়া করবেন না। ব্লিডিং শুরু হবে।
আমি: আমি কয়দিন এখানে আছি।
নার্স: গতরাতে আপনাকে এখানে আনা হয়েছে। একদিন আপনি ঘুমিয়ে ছিলেন।
আমি: আমার মোবাইলটা কোথায় জানেন?
নার্স: আপনার সাথেতো মোবাইল আসে নাই।
আমি: ওহ। আমার আর কতক্ষন এভাবে থাকতে হবে।
নার্স: আপনার চোখে মারাত্মক চোট লেগেছে। যার জন্য আপনাকে চোখের ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। আর আপনার প্রচুর ব্লিডিং হয়েছে। সেজন্য আপনার চিকিৎসা করতে রক্তের প্রয়োজন ছিলো।
কিন্তু আপনার রক্তের গ্রুপ ছিলো A–। এই রক্ত আমাদের কাছে ছিলো না। যে নিয়ে এসেছিলো আমরা তাকে জানালাম। সে আপনাকে এক ব্যাগ রক্ত দেয়। যার জন্য আপনি এই যাত্রায় বেঁচে যান।
আমি: আপনার মোবাইলটা দেওয়া যাবে। আমার মাকে ফোন করবো।
নার্স: আমাদের ব্যাক্তিগত মোবাইল । কোনো পেসেন্টকে দেওয়া যায় না।
আমি: প্লিজ আপু । দেন আমার মা মনে হয় খুব টেনশন করছেন। শুধু একটা মিনিট।
নার্স: এটা আমাদের রুলস। আমরা রুলস ভঙো করি না।
আমি: প্লিজ আপু একটা মিনিট।
নার্স: ওকে এই নিন।
__আমি ফোন নিয়ে মার কাছে কল দিলাম। মা কল ধরলো। মা বললো
মা: কিরে তকে সকালে ফোন দিলাম ধরলি না কেনো?
আমি: এইতো মা একটু ব্যাস্ত ছিলাম।
মা: ওকে। খাওয়া দাওয়া ঠিক মতো করিস। তর ঐ নাম্বার কি হয়েছে?
আমি: মা অফিস থেকে কি জানি সমস্যা হয়েছে। কিছুদিন পর ঐ নাম্বারে কল দিয়ো।
মা: আচ্ছা।
আমি: আর এই নাম্বারে ফোন দিয়ো না। এখন রাখি।
মা: আচ্ছা। ।
__মার সাথে কথা বলে । মনটা এখন খুব ভালো লাগছে। আমি নার্সকে মোবাইল দিয়ে দিলাম। নার্স বললো
নার্স: আপনি এমন আহত হয়েছেন। কিন্তু আপনার মাকে বললেন না কেনো?
আমি: মাকে বললে সমস্যা আছে।
নার্স: আপনি যে আহত হয়েছেন। আমরা ভাবছিলাম পুলিশকে ইনফর্ম করবো। কিন্তু যে আসছিলো আপনাকে নিয়ে। সে না করছে।
আমি: পুলিশকে না বলে ভালই করছেন।
নার্স: এই নিন ঔষধ ।
আমি: ধন্যবাদ । আচ্ছা আমার হাসপাতালের বিল কতো হয়েছে।
নার্স: সেটা বলতে পারবো না। কিন্তু আপনার হাসপাতালের বিল পে করে দিয়েছে। যিনি আপনাকে নিয়ে আসছিলো।
আমি: কে নিয়ে আসছিলো জানেন।
নার্স: চিনি না।
আমি: তার মুখের বর্ননা দিতে পারবেন।
নার্স: হুম পারবো।
আমি: বলেন।
নার্স: উনি খুব আতঙ্কে ছিলেন। এবং খুব কাঁদতে ছিলেন । তিনি কিছুটা মিডিয়াম বয়সের ছিলেন। আমি মিন ২০ এর উপরে হবে। তিনি অত্যন্ত সুন্দরী ছিলেন। মুখের মধ্যে মায়াবী একটা ভাব ছিলো। সব চেয়ে বড় কথা হলো তিনি চশমা পড়া ছিলো।
আমি: ওকে ধন্যবাদ। আমি তাকে চিনেছি।
নার্স: এখন রেষ্ট নেন।
__আমি ভালো করেই চিনতে পারছি । এটা মনি আপু ছিলো আমাকে মেরে এখন ভালো সাজতে আসছে। আমিতো মরেই যাচ্ছিলাম। এর শাস্তি মনি আপু অব্যশই পাবে। আমি আর মনি আপুর কোম্পানিতে চাকরি করবো না। পরে আবার কোনো ঝামেলায় ফেলে আবার আমাকে মারবে। এর চেয়ে ভালো সময় থাকতে কেটে পড়া। আর সারাকে আমি কোনো ভাবেই ছাড়বো না। আচ্ছা আমার মোবাইল কোথায়? মোবাইল এর জন্য খুব টেনশন। মোবাইল এর মধ্যে আমার গুরুত্ব পূর্ণ ফাইল ছিলো । যেটা অনায়াসে একটা লেপটপ হ্যাক করা সম্ভব। অসুবিধা নেই। সেই ফাইল আমার গুগল ড্রাইবে আপলোড করা আছে। এখন টাকাও নেই । একটা মোবাইল কিনবো। চোখে কেমন জানি ঝাপসা দেখছি। চোখের ডাক্তার দেখা লাগবে। সেই টাকা ও নেই। মার কাছে টাকা চাবো। সেই উপায়ও নেই। মার কাছে টাকা চাইলে হাজার প্রশ্ন ছুড়ে দিবে। আর মনে হয় না মার কাছে টাকা আছে। মা ব্যাবস্থা করে দিবে। সত্যি কথা বললে মা শুধু বলবে । শুধু বাড়িতে চলে যেতে। এখন কি করবো আমার মাথায় কোনো কাজ করছে না। এখন কাজ শুধু এখান থেকে বের হওয়া।
দেখি নার্স প্রবেশ করছে। হাতে আমার পোশাক। আসলে নার্সটা খুব সুন্দরী। (বন্ধুরা আগামী গল্প থাকবে নার্সের প্রেমে) । নার্স বললো
নার্স: এই নিন আপনার কাপড়।
আমি: ধন্যবাদ । আমি এখন চলে যেতে চাই।
নার্স: কিন্তু উনি বলছিলো । তিনি এসে আপনাকে নিয়ে যাবে।
আমি: থাক তার আর দরকার নেই।
নার্স: এই ঔষধ গুলো খাবেন রুটিন মতো।
আমি: ওকে।
নার্স: ধন্যবাদ আবারো আসবেন।
আমি: নাহ আমার আর এখানে আসার ইচ্ছা নেই।
কারণ আমি মরতে চাইনা।
নার্স: এখানে সবাই আসে বাঁচার জন্য । মরার জন্য নয়।
আমি: মরার জন্যই আসে। নাহলে কেনো? আমি মরতে বসেছিলাম।
নার্স: দেখেন আমরা আপনাকে বাঁচিয়ে তুলেছি। আপনার কৃতজ্ঞ থাকা উচিত।
আমি: ওকে। ধন্যবাদ ।
___নার্স চলে গেলো। আমি পোশাক পাল্টিয়ে । এমন ভাব ধরলাম। যেমন আমার কিছুই হয়নি। আমি হাসপাতাল থেকে বের হয়ে আসলাম। দেখি সারা আর মনি আপু গাড়ি থেকে নামলো। তাদের দেখেই আমার মেজাজ গরম হয়ে গেলো। সারা হেঁটে আমার কাছে আসলো। বললো।
সারা: ম্যাডাম তকে ডাকছে।
__আমি তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বললাম।
আমি: কে আমার ম্যাডাম। আর আপনি কে?
সারা: দেখ ভাব ধরিস না। ম্যাডাম দাঁড়িয়ে আছে।
আমি: কে আমার ম্যাডাম। আমি কি কোনো কোম্পানিতে চাকরি করতাম। মনে হয় না। আর আপনি বা কে?
সারা: ম্যাডাম দাঁড়িয়ে আছে।
আমি: লিসেন আমি কোনো কোম্পানিতে চাকরি করি নাই। না আমার ছিলো কোনো বস। আর আপনাকে আমি চিনিনা। আমাকে আর ডিস্ট্রাব করবেন না।
__এই বলে আমি রিকশা নিয়ে চলে আসলাম বাড়িতে। বাড়িতে এসে বাড়িওয়ালার মোবাইলটা নিয়ে মাকে ফোন দিলাম।
আমি: মা কিছু টাকা পাঠাও।
মা: কেনো কি হয়েছে কোনো সমস্যা?
আমি: মা আমার মোবাইলটা ছিনতাই হয়ে গেছে। কিছু টাকা দরকার।
মা: কিভাবে ছিনতাই হয়েছে। আমাকে আগে বলিস কেনো?
আমি: সে সুযোগ ছিলো না।
মা: কতো টাকা লাগবে।
আমি: ১০ হাজার টাকা দেও।
মা: আচ্ছা তুই বিকাশ নাম্বার দে পাঠাইতাছি।
আমি: আচ্ছা।
__বিকাশ থেকে টাকা তুলে। প্রথমে চোখের ডাক্তারের কাছে গেলাম। ডাক্তারের কাছে সমস্যার কথা বললাম। ডাক্তার একটা ড্রপ দিলো আর চশমা দিলো বললো তিন মাস ব্যাবহার করতে। ভাবলাম মনি আপুর মনের ইচ্ছা পূরণ হলো সে নিজে কানা সাথে আমাকেও কানা বানালো। আমি নিয়ত করে ফেললাম মনি আপুর কোম্পানির আশে পাশেও আমি যাবো না। । দরকার হলে ঢাকায় রিকশা চালিয়ে বাড়িতে টাকা পাঠাবো। এখন আমার কাজ শুধু একটা নতুন কাজ বের করা। আমি একটা বাটন মোবাইল কিনে পূর্বের সিমটা উঠাইলাম । কাজ খুঁজতে লাগলাম চারদিন চলে গেলো। কোনো কাজ পাই নাই। সেদিন খুব ক্লান্ত লাগছিলো । রাতে ঘুমালাম । রাত ১টা সময় কে জানি দরজায় টোকা দিচ্ছে। আমি কিছুটা অবাক হলাম। এতো রাতে কে দরজায় টোকা দিচ্ছে। আসলে আমার রুমটা বাড়ির এক কোনায় পড়ছে। মানে গেটের ভিতরে এক দরজা গেঁটের বাহিরে আরেক দরজা। আমি বাহিরেরটা বেশি ব্যাবহার করি। সেজন্য গেটের বাহিরে থেকেও আমার রুমে আশা যায়। রাত ১টা সময় দরজায় টোকা দেওয়ার কারণে আমি কিছুটা হকচকিয়ে উঠলাম। আমার মাথায় কাজ করছেনা কে দরজায় টোকা দিলো। আমি লাইট জ্বালিয়ে চশমা চোখে দিয়ে। দরজার কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কে?
চলবে…..