#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ১৯,২০
#লেখক: Osman
পার্ট: ১৯
মনি: তুই চুপ করবি। নাকি একটা দিবো নাক বরাবর। যা ব্যান্ডিজ বের কর।
__মনি আমার মাথা ওয়াশ করে মাথায় ব্যান্ডিজ করে দিলো। আমি বললাম
আমি: ধন্যবাদ। সাদিয়া দেখো মনির মুখে একটু ব্যাথা পেয়েছে।
সাদিয়া: ওকে।
__সাদিয়া মনির ঘালটায় ওয়াশ করে দিলো । সাদিয়া চলে গেলো। আমি বললাম
আমি: তুমি যে এতো মারামারি পারো আমাকেতো আগে বলো নি।
মনি: প্রয়োজন মনে করেনি।
আমি: ধন্যবাদ আমাকে বাঁচানোর জন্য।
মনি: ধন্যবাদের প্রয়োজন নেই তকে বাঁচানো আমার কর্তব্য।
আমি: ওকে। সন্ধ্যা হয়ে আসছে। আমি রুমে যাই।
মনি: রুমে যাওয়ার দরকার নেই। আজকে আমার বাসায় থাকবি। পরে কোনো নতুন রুম ঠিক করিস।
আমি: না ওখানেই থাকবো।
মনি: তর সেখানে থাকাটা বিপজ্জনক।
আমি: তুমি তাড়াতাড়ি এর সমস্যা সমাধান করো।
মনি: ওকে। এখন সারা আর রাহাতের কানাডা যাওয়ার কি হলো?
আমি: ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করো।
মনি: ওকে। দেখি সাদিয়ার মোবাইল দিয়ে।
__একটু পর সাদিয়া আসলো। সাদিয়ার মোবাইল দিয়ে ফোন করলো। আমি রাহাতের নাম্বার দিলাম। মনি বললো আমি কথা বলতে।
আমি: ঐদিকের কাজ সব কম্প্লিট।
রাহাত: তুই আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবি কি হচ্ছে?
আমি: তরে পরে আমি সব বুঝিয়ে বলবো। এখন তরা কোথায়?
রাহাত: আমরা এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছি।
আমি: ওকে । সারা নতুন মোবাইল কিনেছে?
রাহাত: হুম।
আমি: কানাডা গিয়ে কোনো তথ্য পেলে সাথে সাথে জানাবি।
রাহাত: ওকে। বাড়িতে এ সম্পর্কে কিছু বলিস না দোস্ত আমার যেনো কি রকম লাগছে?
আমি: সারাকে মোবাইল দে।
সারা: বল।
আমি: রাহাতকে কিন্তু আমি তোমার উপর ভরসা করে দিচ্ছি। ওর যদি কোনো সমস্যা না হয়।
সারা: তুই কোনো টেনশন করিস না। আমি থাকতে রাহাতের কোনো প্রোবলেম হবে না।
আমি: কানাডায় রিফাতের লোক থাকতে পারে। একটু গোপনীয়তা অবলম্বন করবা।
সারা: ওকে।
আমি: সব সময় আপডেট দিবা।
সারা: ওকে।
__আমি ফোন কেটে দিলাম। আমি মনিকে বললাম।
আমি: ওরা এয়ারপোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে।
মনি: ওকে। এখন বাসায় চল।
আমি: চলো।
সাদিয়া: তদের সাথে কি হচ্ছে আমাকে বলবি?
মনি: তর সেটা না জানলেও চলবে।
সাদিয়া: আমার বেতনটা একটু বাড়ানোর ব্যাবস্থা কর।
মনি: এখন ঝামেলায় আছি। এসব বিষয়ে পরে কথা হবে।
সাদিয়া: ওকে।
মনি: এই হাসপাতালের দায়িত্ব একজনকে দিয়েছিলাম। কিন্তু সে একটা ধান্দাবাজ। ভাবছি তকেই দায়িত্বটা দিবো।
সাদিয়া: কি বললি? কি বললি? আবার বল।
মনি: রাফিদ উঠ যাই।
__আমি আর মনি মনির বাসায় আসলাম। আসার সময় মোবাইল কিনে আনলাম। মনি আমাকে তার রুমে নিয়ে গেলো। বললো
মনি: তুই বিছানায় শু। আমি গোসল করে আসি।
আমি: আমারো গোসল করতে হবে।
মনি: মাথায় বেন্ডেজ নিয়ে গোসল করা ঠিক হবে না।
আমি: গোসল করলে হয়তো ভালো লাগবে।
মনি: গোসল করার প্রয়োজন নেই। আর তর কোনো পোশাক নেই।
আমি: ওকে।
__আমি মনির নরম বিছানায় শুয়ে পড়লাম। কিছুক্ষণের ভিতর চোখে ঘুম এসে পড়লো। হয়তো মাথায় আঘাতের কারণে। ঘুমের চোখে তাকিয়ে দেখি মনি মাত্র গোসল করে বের হলো শুধু একটা নাইটি পড়া। আমি আড় চোখে তাকিয়ে আবার চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করতে লাগলাম। একটু পর মনি আমাকে বললো
মনি: রাফিদ উঠ খেয়ে নে।
আমি বললাম
আমি: না খাবো না
মনি: উঠ খেয়ে। ঔষধ খেয়ে নে।
আমি: ওকে। আমি ঘুর্মাক্ত চোখে উঠে বসলাম। দেখি মনি নুডলস নিয়ে বসে আছে। আমি অল্প নুডলুস খেলাম । খেয়ে ঔষধ খেয়ে বললাম
আমি: এখানেই ঘুমাবো।
মনি: হুম।
আমি: তুমি ঘুমাবা কোথায়?
মনি: সেই টেনশন তুই করিস না। তুই নিশ্চিন্তে ঘুমা।
আমি: ওকে ।
__চোখ বন্ধ করার সাথে সাথেই আমি ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠলাম। দেখি মনি সোফায় ঘুমাচ্ছে। মাথাটা কিছু হালকা লাগছে। আমি উঠে গিয়ে ফ্রেশ হলাম। মনি এখনো ঘুম থেকে উঠে নাই। ভাবলাম ডাক দিবো। কিন্তু আবার ভাবলাম নাহ সে আগামীকাল অনেক কাজ করছে । মন দিয়ে ঘুমাক। আমি গিয়ে মনির শরীরে চাদর দিয়ে দিলাম। বেলকনিতে গিয়ে মোবাইল টিপতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর মনি ঘুম থেকে উঠলো। উঠে ফ্রেশ হলো গিয়ে দুইজনের জন্য নাস্তা করলো। মনি বললো
মনি: রাফিদ খেয়ে যা।
__আমি গিয়ে সোফায় বসলাম।
আমি: আজকে অফিসে যাইবা।
মনি: হুম।
আমি: এখন অফিসে যাওয়া সমস্যা না
।
মনি: আমাকে নিয়ে তর টেনশন করতে হবে না। কিভাবে প্রতিহত করতে হয় সেটা আমার ভালো করেই জানা আছে।
আমি: আমিও যাবো তোমার সাথে
।
মনি: তর মাথায় ব্যান্ডিজ নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
আমি: তাহলে আমি রুমে যাচ্ছি।
মনি:ওকে
__আমি মনির বাসা থেকে চলে আসলাম। গতকাল মারামারির কারণে ঘর লন্ডভন্ড হয়ে আছে। আমি রুমটা পরিস্কার করলাম। করে বিছানায় শুয়ে রেস্ট নিতে লাগলাম। কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম । বলতেও পারলাম না। কার ফোনে যেনো ঘুম ভেঙ্গে গেল। দেখি মনির ফোন
মনি: কিরে কোথায় তুই?
আমি: রুমে ঘুমাইতাছি।
মনি: শরীর কেমন ?
আমি: ভালো ।
মনি: আমি আসতাছি।
মনি: ওকে।
__কিছুক্ষণ পর মনি আসলো । খেয়াল করলাম মনি দিন দিন সুন্দরী হচ্ছে। আমি মনির দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম। মনি বললো
মনি: এভাবে তাকিয়ে আছত কেনো?
আমি: তুমি দিন দিন সুন্দরী হচ্ছো ।
মনি: তরে কে বলছে ? আমি ২৬ বছর বয়সী একটা বুড়ি। আমি বলে দিন দিন সুন্দরী হচ্ছি।
__আমি মনির হাত ধরে টেনে এনে আমার পাশে বসালাম। বললাম
আমি: আমার কাছে তুমি সবার সেরা।
মনি: সত্যি বলছত।
আমি: হুম।
মনি: দেখা যাবে। এখন দে তর মাথার ব্যান্ডেজ খুলে দেই।
আমি: হুম।
__মনি আস্তে আস্তে আমার মাথার ব্যান্ডেজ খুলে দিলো। এমন সময় রাহাত কল দিলো।
আমি: কিরে কিছু পেলি।
রাহাত: না চাওয়ার চেয়ে বেশি পেয়েছি।
আমি: কি পাইছত?
রাহাত: আমরা প্রথমে তার ভার্সিটিতে গিয়েছিলাম সেখানে শুনি রিফাত বলে অনেক দিন ধরে বলে পলাতক । কানাডার পুলিশ তাকে খুঁজছে। সে এখনে ধর্ষন মামলার আসামি। সে দুইজন মেয়েকে ধর্ষণ করছে। সে কানাডা থেকে পালিয়ে এসেছে । এখন ইন্টারপোল তাকে খুঁজছে।
আমি: তরা পুলিশের সঙ্গে দেখা করছত?
রাহাত: না ।
আমি: এখন যদি ইন্টারপোল জানতে পারে রিফাত এখানে । সাথে সাথে রিফাত কে ধরে নিয়ে যাবে। এক্ষেত্রে মনির কোম্পানির নাম খারাপ হবে এবং বড়সড় ক্ষতি হয়ে যাবে। এখন তরা পুলিশকে বলবি না রিফাত বাংলাদেশে আছে। তরা কিছু ডকুমেন্ট জোগাড় কর যেটা দিয়ে রিফাত কে ব্ল্যাকমেইল করা যাবে।
রাহাত: কি রকম?
আমি: এই ধর সে যে ধর্ষণের কারণে কানাডায় ওয়ান্টেড আছে । ইন্টারপুল যে তাকে খুঁজছে এরকম একটা ডকুমেন্ট। যদি এরকম কিছু বের করতে পারস । তাহলে যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ আয় ।
রাহাত: ওকে।
__আমি ফোন কেটে দিলাম । মনি বললো
মনি: কি হয়েছে?
আমি: রিফাত কানাডায় দুই ধর্ষন মামলার আসামি।
মনি: কিহ! ছিঃ ছিঃ । আমি বিশ্বাস করতে পারতেছি না। আর আব্বা বলে কিনা রিফাতকে বিয়ে করতে।
ছিঃ ছিঃ।
আমি: মনি আমরা না চাওয়ার চেয়ে বেশি পেয়ে গেছি। তুমি না কোম্পানিটা নিজের করে নিতে চাচ্ছিলানা। সেটার সময় হয়ে গেছে।
মনি: সত্যি ।
__মনি খুশিতে আমাকে জড়িয়ে ধরলো। বললো
মনি: রাফিদ তকে সত্যিই ভালোবাসি । আমি থাকতে তর কিছুই হবে না।
__মনি আমার চোখে চোখ রাখলো । আমি বুঝতে পারলাম মনি কি চাচ্ছে? আমি দেরি করলাম। সোজা মনির ঠোঁটে আমার ঠোঁট লাগিয়ে দিলাম। মনি পিছন থেকে আমাকে জড়িয়ে ধরে কিস দিতে লাগলো। আমি এক মিনিট পর মনিকে ছেড়ে দিলাম। মনি তখন আমাকে জড়িয়ে ধরে রয়েছে । মনি বললো
মনি: সারাটা জীবন টাকার পিছনে ছুটলাম একটু সুখের জন্য । কিন্তু জীবনে একটু সুখ পেলাম না এটাই মনে হয় আমার জীবনে শ্রেষ্ঠ সুখ ।
আমি: তুমি কিভাবে প্রতিহত করো আমাকে একটু শিখাও।
মনি: ওকে চল ।
__মনি পজিশন নিয়ে দাঁড়াতে বললো আমি পজিশন নিয়ে দাঁড়ালাম মনি বললো
মনি: তর প্রথম আত্নরক্ষা হলো প্রথমে যে আসবে তার মেডেল স্টেম বরাবর কিক চালাবি। সে সেখানেই শেষ। প্রত্যাক পুরুষের এটাই দুর্বল যায়গা।
দ্বীতিয় দেখবি কোন কোন যায়গায় আঘাত করলে সে কিছুটা ওঠে দাঁড়াতে টাইম নেয় । প্রথমে সেটা হলো তার তলপেট তারপর কানের নিচে নরম যায়গা। ঐখানে আঘাত করবি তর হাতে যদি কিছু থাকে তাহলে যতটা সম্ভব মাথায় বারি দেওয়া এড়িয়ে যাবি মাথায় বাড়ি দিলে মারা যেতে পারে । তারপর…
__মনি এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার উপর ভর দিয়ে আমাকে নিচে ফেলে দিলো । আমি উল্টিয়ে গিয়ে নিচে আছার খেলাম।
মনি: এভাবে উল্টিয়ে ফেলবি। তারপর তার শরীরের উপর উঠে তার মুখে ঘুষি দিবি।
__এটা বলে মনি হাসতে হাসতে লাগলো। এবং আমার উপর শুয়ে পড়লো।
আমি: গ্রেট এটা সত্যিই ভালো ছিলো।
__মনি তখনো হাসতে লাগলো বললো
মনি: এবার তুই ট্রাই কর।
আমি: না থাক আমার দাঁড়া হবে না।
মনি: আরে ট্রাই কর ।
আমি: ওকে।
__আমি আবার পজিশন নিয়ে দাঁড়ালাম।
চলবে…
#নাম: সিনিয়র বস
#পার্ট: ২০
#লেখক: Osman
__আমি আবার পজিশন নিয়ে দাঁড়ালাম। আমি মনির কাঁধে হাত রেখে পুরো ভর মনির উপর ছেড়ে দিলাম । মনি উল্টিয়ে পড়ে গেলো আমি ভালো করেই বুঝতে পারলাম মনি ইচ্ছা করেই সেটা করছে।
আমি ওঠে বিছানায় শুয়ে পড়লাম। আমি বললাম
আমি: থাক আজকে এটুকুই চলবে।
মনি:: আচ্ছা। আজকে কোথায় থাকবি?
আমি: এখানে।
মনি: না কোনোভাবেই না। যদি কোনো প্রোবলেম হয়।
আমি: আরে কিছু হবেনা । আমি দরজা লাগিয়ে ঘুমাবো।
মনি: দরজা ভেঙে ফেলতে কতক্ষন। আমি কোনো ভাবেই তকে ছাড়া যাবো না। চল আমার বাড়িতে আয়।
আমি: না।
মনি: চল বলতাছি।
আমি: না আমি এখানেই থাকবো।
মনি: তাহলে আমিও এখানে থাকবো।
আমি: পাগল নাকি তুমি এখানে থাকবা। এই গরিবের নোংরা অপরিস্কার ঘরে তুমি থাকবা আর তুমিতো অপরিস্কার পছন্দ করো না।
মনি: চুপ একদম চুপ। হয় তুই আমার সাথে যাবি নয়তো আমি তর সাথে থাকবো । আমি তকে ছাড়া কোথাও যাচ্ছি না ।
আমি: ওকে।
মনি: আজকে তর সাথে এখানে থাকবো।
আমি: তুমি এতোবড় একটা কোম্পানির মালিক । যদি কেও জানতে পারে। তাহলে নিশ্চয়ই তোমার বদনাম হবে । এখনতো আমাদের শত্রু আছেই। খালি সুযোগ খুঁজতেছে।
মনি: আমি তরে ছাড়া কোথাও যাচ্ছি না এটা আমার পরিস্কার কথা।
আমি: মনি এটা ছেলেখেলা না । এটা তোমার লাইফের ব্যাপার।
মনি: এই এলাকার প্রত্যাকটা থানায় আমার টাকা দেওয়া আছে। যদি আমার কোম্পানির নামে কোনো খারাপ খবর পায়। সেটা লুকিয়ে ফেলার দায়িত্ব তাদের। তুই কোনো টেনশন করিস না।
আমি: আচ্ছা। এখন রাতে কি খাইবা?
মনি: তুই এতো দিন কোথায় খাওয়া দাওয়া করছস?
আমি: ঐ সামনে একটা মেসে।
মনি: মেসে তুই কি করে খাস। মেসের খাবার অনেক বাজে।
আমি: এটা ছাড়া আমার আর কোনো উপায় নেই। আর এতো টাকাও নেই যে ভালো ভালো খাবো।
মনি: ওহ । সামনে থেকে খাওয়া নিয়ে আর টেনশন করিস না।
আমি: ওকে । এখন কি খাবা বলো?
মনি: তর যেটা খুশি অর্ডার দে।
আমি: ওকে।
__আমি একটা পিৎজা অর্ডার দিলাম। রাত অনেক হলো । মনি বললো
মনি: গাড়িটা কি করবো?
আমি: তুমি কি সত্যিই এখানে থাকবা।
মনি: তুই যেখানে আমি সেখানে।
__একটু পর পিৎজা এলো। আমরা দুজনে পিৎজা খেলাম। মনি বললো
মনি: আমি তর বিছানায় শুবো। তুই রাহাতের বিছানায় ঘুমা।
আমি: ওকে।
__আমি রাহাতের বিছানায় শুয়ে ঘুমানোর চেষ্টা করলাম। কতক্ষন ঘুমালাম জানি না মোবাইল ধরে দেখি । দেখি মনিও ঘুমাচ্ছে। মোবাইল ধরে দেখি রাহাত কল দিছে ।
রাহাত: তুই যা চেয়েছিলি সব পেয়েছি।
আমি: যতো তাড়াতাড়ি সম্ভব বাংলাদেশ আয়।
রাহাত: আমরা এখন এয়ারপোর্টে আছি। সকাল চারটায় ফ্লাইট ।
আমি: ওকে আয় । এসে আমার সাথে দেখা কর ।
আর একটু গোপনীয়তা অবলম্বন করিস । এগুলো কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ।
রাহাত: ওকে।
__আমি ফোন কেটে আবার ঘুমালাম। সকালে মনির ডাকে ভাঙ্গলো । দেখি মনি রেডি হয়ে বসে আছে। আমি ওঠে ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে । বললাম
আমি: আজকে রশিদ সাহেব আর রিফাতের সাথে একটা মিটিং ডাকো।
মনি: মিটিং ডাকলে।
আমি: আমরা যা চেয়েছি রাহাত সেটা জোগাড় করতে পেরেছে। এখন এই ফাইল দিয়ে রশিদ সাহেবকে ব্ল্যাকমেইল করবো। বলবো কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে দিতে । নাহলে ইন্টারপুলের কাছে আমরা সব বলে দিবো।
মনি: কিন্তু এটা কি কাজে দিবে?
আমি: চলো না চেষ্টা করে দেখি।
মনি: ওকে।
__আমরা বের হলাম। অফিসে যাওয়ার আগে একটা রেস্টুরেন্ট থেকে নাস্তা করে নিলাম। আমি অফিসে বসলাম। মনিকে বলে দিলাম মিটিং এর টাইম পরে আমি জানাবো। কিছুক্ষণ অফিসে বসে রইলাম।
পরে রাহাতকে কল দিলাম । নাহ ঢুকছে না। তারমানে বিমানে আছে। আমি গুগলে গিয়ে সার্চ দিয়ে দেখি কানাডা থেকে বাংলাদেশে আসতে ১৩ ঘন্টার উপরে লাগে । সকালে চারটায় ফ্লাইট হলে বাংলাদেশ সময় নামবে বিকাল পাঁচটায় । তাহলে মিটিং দেওয়া যায় রাত আটটায়। আমি মনিকে টাইম বলে দিলাম। আমি সন্ধ্যা ৬ টায় রাহাতের ওয়াটসাপে কল দিলাম। তখন ফোন ঢুকলো। আমি বললাম।
আমি: অফিসে আসতে কতক্ষন লাগবে।
রাহাত: এক ঘন্টার মতো।
আমি: ওকে তাড়াতাড়ি আয়।
__তাদের অফিসে আসতে । একঘন্টার বেশি লাগছে। আমি তখন মনির অফিসে বসে আছি। মনি খুব ভয়ে আছে। রাহাত আসলে তাদের চোখের দিকে তাকিয়ে আমি অবাক। তারা খুব পরিশ্রম করছে সেটা তাদের চোখেই বুঝা যায়। হয়তো একটা মিনিট রেষ্ট নেওয়ার টাইম পাইনায়। আমি রাহাতকে বললাম
আমি: ধন্যবাদ তকে। এখন বাসায় চলে যা। সারা তুমি থাকো ।
__আমি ফাইলটা নিয়ে চোখ বুলালাম। ফাইলটা কপি করলাম । কপি ফাইলটি নিয়ে মিটিং রুমে গেলাম আমার সাথে মনি আর সারা । মনি আমার হাত ধরে রাখছে মনি। আমি বললাম
আমি: ভয় পেয়ো না মনি। এরকম কোনো কিছু আছে । যেটা দিয়ে রিফাত আমাদের হুমকি দিতে পারে।
মনি: না ।
আমি: গুড।
__একটু পর রশিদ সাহেব ও তার ছেলে রিফাত আসলো। এসে আমাদের সামনে চেয়ারে বসলো । রশিদ সাহেব বললো
রশিদ: কি ম্যাডাম এতো রাতে কি জন্য?
মনি: কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে।
রশিদ: রাফিদ এখানে কি করে?
সারা: রাফিদ এখানেই থাকবে।
রিফাত: ওকে। কি জন্য ডাকছেন তাড়াতাড়ি বলেন । আমার আবার আরেক জায়গায় যেতে হবে।
মনি: আরেকটা মেয়েকে ধর্ষণ করতে নাকি।
রিফাত: ওয়াট? কি বললেন?
রশিদ: মনি তোমার কি মাথা গেছে নাকি?
__আমি রশিদ সাহেবকে ফাইলটা এগিয়ে দিলাম পড়ার জন্য। রশিদ সাহেব হাসিমুখে ফাইলটা পড়া শুরু করেছিলো । ফাইলটা পড়ার সময় রশিদ সাহেবের মুখের রং পাল্টে গেলো। রাগি চোখে রিফাতের দিকে তাকালো। রিফাত অবাক হয়ে ফাইলটা পড়া শুরু করলো। তখন রিফাতের মুখের রং পাল্টে গেলো। মনি বললো
মনি: কি রশিদ সাহেব এখন বুঝলেন কি জন্য বলছি। রিফাত আরেকটা মেয়েকে ধর্ষণ করতে যাবে।
__রশিদ সাহেব উঠে রিফাত কে ঠাস করে এক চড় দিলো। বললো
রশিদ: তরে এই জন্য কানাডা পাঠিয়েছিলাম। ছিঃ করলি কি তুই এটা আমার মান সম্মান শেষ করলি তুই।
আমি: এখন আপনাদের কাছে দুটো রাস্তা খুলা।
এক .. আপনার শেয়ার মনিকে কাছে বিক্রি করে দিন। দুই … নয়তো আমরা বাংলাদেশ পুলিশ কে বলে দিবো রিফাত সম্পর্কে তখন তো ইন্টারপুল জানবেই । আর যখন পুলিশ আমাদের কাছে আসবে তখন আমরা বলে দিবো এর সাথে আপনিও জড়িত। তখন আপনারাই ভাবেন আপনারা কোথায় যাবেন? বাংলাদেশে কোনো কারাগারে থাকতে পারেন। আর নয়তো বাংলাদেশের বাইরে কোনো এক কারাগারে সারাটা জীবন পচে মরতে হবে। এখন আপনারাই সিদ্ধান্ত নেন কি করবেন?
মনি: ছিঃ রশিদ সাহেব আপনাকে অনেক সম্মান করতাম। আপনার ছেলে এতো খারাপ আমি কল্পনাও করিনি।
রশিদ: মনি তুমি মাথা ঠান্ডা করো । আমি রিফাতের ব্যাবস্থা করছি।
মনি: আমার কোম্পানিতে কোনো ধর্ষকের যায়গা নেই। আপনি আমার কোম্পানী থেকে বের হয়ে যান।
আপনার ছেলেকে দেখতেই আমার ঘেন্না হচ্ছে।
আমি: কি রশিদ সাহেব এখন কারাগারে যাবেন নাকি? কোম্পানি থেকে বের হয়ে যাবেন।
__দেখি রশিদ সাহেব চিন্তায় ডুবে গেলো। মনি বললো
মনি: আপনার পর আপনার উত্তরাধিকার সুত্রে আপনার ছেলে এই শেয়ার পাবে। আর আপনার ছেলে একটা ধর্ষক। পরে সে কি করবে? আমার কল্পনার বাইরে। আর কিছুদিন আগে সে আমাদের মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলো।
রশিদ: কিহহ!
__রশিদ সাহেব আবার গিয়ে রিফাতকে ঠাস ঠাস দুইটা চড় দিলো।
রশিদ: তকে আমার ছেলে বলতে লজ্জা করছে। তুই এই কোম্পানির যোগ্য নয় । মনি কাগজ দাও আমি কোম্পানি থেকে চলে যাচ্ছি।
মনি: সারা কাগজ দে।
__সারা কাগজ বাড়িয়ে দিলো ।
রশিদ: শেয়ারের কিছু মূল্যতো আমি পাবো ।
মনি: আপনার একাউন্টে চলে যাবে।
__ রশিদ সাহেব সেখানে সাক্ষর করলো। তারপর মনি সেখানে সাক্ষর করলো।
রশিদ: আশাকরি এসব বিষয় নিয়ে আর কোনো সমস্যা হবে না।
আমি: আর কোনো সমস্যা হবে না। আপনার ছেলে যদি আবার এই বিষয়ে বাড়াবাড়ি করে তাহলেতো সমস্যা হবেই।
রশিদ: সে সব নিয়ে তোমরা কোনো টেনশন করো না। ও এখন থেকে আমার ছেলে না।
__এই বলে রিফাতকে নিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে গেলো। মনি বললো
মনি: এটা যে এতো সহজ হবে আমি জীবনেও কল্পনাও করিনি।
সারা: যাই এখন গিয়ে শান্তি মতো একটা ঘুম দেই।
ম্যাডাম আমি নয়তলায় যাচ্ছি। সেখানের পানি অনেক আরাম। বাড়িতে গেলে ঘুমাতে পারবো না। আজকে রাতে বলে আমাকে দেখতে আসবে। যাই নয়তলায় গিয়ে ঘুমাই।
__এই বলে সারা চলে যেতে লাগলো। মনি বললো
মনি: যা । তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠিস নতুন করে অফিসের সবাইকে নিয়ে একটা মিটিং করতে হবে। নতুন ম্যানেজার নিয়োগ দিতে হবে। এখন তুই কি করবি?
আমি: ম্যাডাম আমার বেতন যদি একটু বাড়াতেন ।
মনি: তুই টাকা দিয়ে কি করবি?
আমি: বিয়ে করবো।
মনি: কাকে?
আমি: মায় একটা মেয়ে পছন্দ করছিলো তাকে ।
মনি: দেখছত আমার হাত। এটা দিয়ে দিবো একটা নাক বরাবর সারাজীবন আমাকে মনে রাখবি । যে আমার হাতের মাইর খাইছে সে জানে।
চলবে….