#সুখবর্ষণ
পর্ব ২
লিখা- Sidratul Muntaz
নাইট পার্টি হচ্ছিল ইলমিদের ছাদে। বিশাল বড় বাউন্ডারি দেওয়া ছাদের একপাশে সুইমিংপুল আর অন্যপাশে দোলনা। যেই পাশে সুইমিংপুল ছিল সেখানেই ইলমিরা হৈচৈ করছিল। ঠিক তার বিপরীত পাশেই দোলনায় নিঃসঙ্গের মতো বসে রয়েছিল ইলহান। অরিনের বাড়ি থেকে মা ফোন করে জানাল,ঘরে রান্নার করার মতো কিছু নেই। অরিন যাতে বাজার নিয়ে ফিরে। সাউন্ড বক্সে তখন গান চলছিল তীক্ষ্ণ শব্দে। অরিন এতো শব্দের মাঝে মায়ের একটা কথাও বুঝতে পারছিল না। সে ছাদের অন্যপাশে চলে গেল। তখনও অরিন জানতো না যে ছাদের ওই পাশে একটা ছেলে বসে আছে। হঠাৎ ছ’ফুট সাইজের বিশাল দীর্ঘদেহী মানুষটিকে ছাদের কার্নিশে দাঁড়ানো দেখে ভয়ে আত্মা কেঁপে উঠল অরিনের। মুখ দিয়ে ছিটকে বেরিয়ে এলো চিৎকার। ওই পাশে এতো হৈচৈ-এর মাঝে অরিনের চিৎকার কেউ শুনল না। এমনকি যে মানুষটিকে দেখে অরিন চিৎকার দিয়েছে সেও কোনো হেল-দোল দেখালো না। দেয়ালের উপর দাঁড়িয়ে কেমন নেশাগ্রস্তের মতো টলতে লাগল। যেকোনো সময় পড়ে যেতে পারে। বিপদের আশংকা দেখে অরিন প্রায় ছুটে গেল। ছেলেটির ধবধবে সাদা হাত জাপটে ধরল। চোখ পিটপিট করে ছেলেটা অরিনকে একবার দেখার চেষ্টা করল। তার আগেই অরিন শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে তাকে নিজের দিকে টেনে আনল। ইলহানের নিয়ন্ত্রণহীন বিশাল দেহটা তুমুল বেগে এসে অরিনের ছোট্ট শরীরের উপর পড়ে গেল। একটা গাঢ় শব্দ হলো। অরিন কয়েক মুহুর্ত চোখে-মুখে অন্ধকার দেখতে পেল। দুই পায়ে তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভব করল। নিশ্বাস বন্ধ হয়ে আসতে চাইছিল। ছেলেটি অরিনের গা থেকে উঠে বসতেই অরিন নিশ্বাস নিতে পারল।
” আপনি কি সুইসাইড করতে যাচ্ছিলেন?”
বিচলিত ভঙ্গিতে প্রশ্নটা ছুঁড়ে দিয়েই অরিন হাঁপাতে লাগল। অনেক কষ্টে উঠে বসতে পেরেছে সে। কিন্তু দাঁড়াতে পারবে নাকি এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারল না। পায়ে প্রচন্ড ব্যথা করছে। ছেলেটার ওজন মারাত্মক! ইলহান মাথা নিচু করে চুপচাপ বসে আছে। অরিন আবার বলল,” দেয়ালের ওপর উঠে দাঁড়িয়েছিলেন কেন? যদি পড়ে যেতেন?”
” পড়ে যাওয়ার জন্যই তো উঠে দাঁড়িয়েছিলাম। মাঝখান থেকে আপনি চলে এলেন। কেন এলেন?”
মানুষটার কণ্ঠস্বর কেমন জড়ানো। চোখ ভালোমতো মেলতে পারছে না। আধবোজা হয়ে আছে। অরিনের বুঝতে বাকি নেই যে মানুষটা এখন নেশাগ্রস্ত।
” আপনি কি এলকোহলিক?”
” কিছুটা!”
” সুইসাইড করার জন্যই কি নেশা করেছেন?”
” ঠিক ধরেছেন।”
” কিন্তু কেন? আপনি সুইসাইড কেন করতে চান? আপনার জীবনটা তো অনেক সুন্দর। এতো সুন্দর জীবন রেখে কোন পাগলে ম/রতে চায় বলুন তো?”
ইলহান হাসল। তাচ্ছিল্যপূর্ণ হাসি।
” কে বলেছে আমার জীবন সুন্দর? ”
” কেউ বলেনি। কিন্তু আমার মনে হয় আপনি পৃথিবীর সুখী মানুষদের মধ্যেই একজন। যার এতোবড় বাড়ি আছে, এতো সুন্দর বাড়ির ছাদ আছে, যে ইচ্ছে করলেই মাথা উঁচু করে আকাশ দেখতে পারে, ঠান্ডারুমে ঘুমাতে পারে, মা-বাবা, বোনদের নিয়ে দেশ-বিদেশে ঘুরতে যেতে পারে তার আবার কষ্ট কিসের?”
ইলহান শব্দ করে হেসে ফেলল। ভরাট কণ্ঠের হাসির ছন্দটা বাজতে লাগল দেয়ালে দেয়ালে। অরিন অবাক হয়ে তাকাল,” হাসছেন কেন? আমি কি কিছু ভুল বলেছি?”
” আপনার কি ধারণা, কেবল টাকা-পয়সা, দেশ-বিদেশে ঘুরে-বেড়ানো, আকাশ দেখা, পরিবার, এসবের মাঝেই সুখ নিহিত?”
” সুখ আসলে কিসের মাঝে নিহিত তা আমরা কেউ জানি না। তবে যখন আমরা সুখে থাকি, তখন সেই সুখের মর্ম বুঝি না। সুখ নির্ভর করে আমাদের সন্তুষ্টির উপর। কিন্তু সমস্যা হলো, আমরা কখনও সন্তুষ্ট হই না। তাই সুখ আমাদের কাছে ধরা দেয় না।”
” ভালোই বলেছেন। কিন্তু আমার জীবনে সন্তুষ্ট হওয়ার মতো কোনো ঘটনা আজ পর্যন্ত ঘটেনি।”
ইলহানের কণ্ঠস্বর বেশ তীক্ষ্ণ। অরিন সহাস্যে বলল,” এই কথা আপনি কিভাবে বললেন? সবার জীবনেই দুঃখের পাশাপাশি খুশির ব্যাপারও ঘটে। আপনার জীবনে কি কখনও খুশির ব্যাপার ঘটেনি?”
” উহুম।”
হঠাৎ করেই দমকা বাতাসে অরিনের শাড়ির আঁচল উড়তে লাগল। ইলহানের লালচে চুলগুলো কপাল ছেড়ে বাতাসের সাথে খেলতে লাগল। প্রশান্তির একটা স্পর্শ এসে শরীর ছুঁয়ে যেতে লাগল। অরিন মসৃণ হেসে বলল,” দেখলেন তো, আপনি যে মিথ্যে বলছেন তা এই মাত্র প্রমাণ হয়ে গেল।”
ইলহান ভ্রু কুচকালো,” কিভাবে?”
” এইতো, এই মাত্র আপনার জীবনে খুশির ব্যাপার ঘটল। কত সুন্দর একটা বাতাস এসে মনটা ভালো করে দিল দেখলেন? আরও খুশির ব্যাপার ঘটবে। যদি আজ বৃষ্টি হয়।”
” বৃষ্টি-বাতাসের সাথে খুশির কি সম্পর্ক?”
” সম্পর্ক আছে। যখন বৃষ্টি হয়, প্রকৃতিতে একটা উৎসবের আমেজ তৈরী হয়। খিলখিল করে হাসতে থাকে আকাশ আর মাটি। তাদের হাসিতে ঝনঝন শব্দ তৈরী হয়। পরিবেশ শীতল হয়ে ওঠে। স্নিগ্ধ একটা আভা ছড়িয়ে পড়ে। কখনও বৃষ্টির সময় জানালা আটকাতে গিয়ে বাহিরে হাত বাড়িয়ে বৃষ্টির ফোঁটা স্পর্শ করার চেষ্টা করেছেন? অথবা জানালায় মুখ বাড়িয়ে বৃষ্টিপান করেছেন?”
” বৃষ্টিপান করার জিনিস নয়। পলিউশন থাকতে পারে।”
” আপনি যেটা পান করেছেন সেটার থেকে বৃষ্টির পলিউশন হাজার গুণে ভালো। এখন শুনুন আমার কথা, মানুষের বড় বড় সুখগুলো ছোট ছোট জিনিসেই লুকানো থাকে। আমরা সেটা বুঝতে পারি না বলে সুখ আমাদের কাছে ধরা দেয় না। আপনি বলছেন আপনার জীবনে নাকি কখনও খুশির ব্যাপার ঘটেনি। সবসময় দুঃখের ব্যাপার ঘটেছে। আচ্ছা, সত্যি কথা বলুন তো? আপনি কি কখনও প্রিয়জনের মৃতদেহ কাছ থেকে দেখেছেন?”
ইলহান অদ্ভুতভাবে মাথা ঝাঁকাল। সে দেখেনি। অরিন হেসে বলল,” একটা সুন্দর ভরা সংসারে হঠাৎ করে হাহাকার বয়ে যেতে দেখেছেন? মা অসুস্থ, চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার দরকার। কিন্তু টাকা নেই। সেই টাকার জন্য আত্মসম্মান বিসর্জন দিয়ে নিজের জীবনে দেখা সবচেয়ে নিকৃষ্ট মানুষটির কাছে হাত পেতেছেন?”
ইলহান এই পর্যায়ে জবাব দিল না। অরিন নিজেই বলে যেতে লাগল।
” ছোটবোন বায়না করল খাবারের জন্য। কিন্তু ঘরে কোনো খাবার নেই। প্রচন্ড ক্ষিদে পেটে নিয়েই সে ঘুমিয়ে পড়ল। তখন তার ঘুমন্ত মুখের দিকে চেয়ে থেকে বুকে মোচড় দিয়েছে? ডুঁকরে কেঁদে উঠেছেন? যখন কাউকে বিশ্বাস করা যায় না, জীবনটাকে তখন নিশ্চল হয়ে যেতে দেখেছেন? বিপদের সময় পরিচিত মানুষগুলোর রূপ বদলানোর মতো ভয়াবহতা অনুভব করেছে? তখন বিশ্বাস ভেঙে যায়৷ ভাঙা বিশ্বাস কখনও জোড়া লাগে না। একটা জীবনে এতো কষ্ট দেখার পরেও আমি যদি ছোট-খাটো বিষয়ে সুখ খুঁজে নিতে পারি তাহলে আপনি কেন পারবেন না? আপনি কি আমার চেয়েও দুঃখী মানুষ? ”
ইলহান বিস্মিত স্বরে বলল,” আপনার জীবনে এতো ক্রাইসিস?”
” এসব তো কিছুই না। আরও কত ভয়ংকর ঘটনা আছে। শুনলে আপনার মনখারাপ হবে।তাই না শোনাই ভালো। কিন্তু বিশ্বাস করুন, আমার না কখনও ম/রে যেতে ইচ্ছে করেনি। সবসময় আমি বাঁচতে চেয়েছি। একটা সুন্দর জীবনের স্বপ্ন দেখেছি। এই নিষ্ঠুর দুনিয়ায় এতো কষ্ট নিয়ে আমরা কেন বেঁচে থাকি? সুখের আশায়। সেই সুখ যখন সত্যিই এসে ধরা দেয় তখন যে দুঃখের স্মৃতিতে ডুবে থাকে, মুষড়ে পড়ে আর ম/রে যেতে চায় সে তো মহাবোকা। বড় আহাম্মক। একটা কথা সবসময় মনে রাখবেন, ম/রে যাওয়া মানেই হেরে যাওয়া। ভীতুরা ম/রতে চায়। আর সাহসীরা চায় বাঁচতে।”
ইলহান মাথা নিচু করে ভাবল, অরিনের থেকে তার জীবনের কষ্ট অনেক কম। বরং অরিনের কষ্টের কাছে তার নিজের কষ্ট কোনো কষ্টই না। এইভাবে নেশার ঘোরে ম/রে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া ভুল হয়েছে। অনেক বড় ভুল। ভাগ্যিস মেয়েটা এসেছিল। নয়তো ইলহান বুঝতো কি করে যে সে কতবড় ভুল করতে যাচ্ছিল!
হঠাৎ ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামল। বহুদিন পর বৃষ্টিতে গা ভেজালো ইলহান। দুইহাত প্রসারিত করে মেলে দিল। চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির শীতলতা অনুভব করল। আসলেই তো, ভীষণ সুখ! মনে হচ্ছে যেন বৃষ্টি নয়, আকাশ থেকে সুখবর্ষণ হচ্ছে। অরিন লাফ-ঝাঁপ শুরু করল। তার চঞ্চলতা দেখে ইলহানের মন ভরে উঠল। সামান্য বৃষ্টি মানুষের মনে এতো আনন্দ এনে দিতে পারে? চঞ্চলা, সিন্ধা, উজ্জ্বল হাসির মেয়েটিকে ইলহান বিভোর হয়ে দেখছিল। ছাদে তখন কেবল তারা দু’জন। বাকিরা বৃষ্টি দেখে কবেই নিচে নেমে গেছে। অরিনের কথা তাদের খেয়ালও নেই। অরিন মুখে লেপ্টে থাকা চুলগুলো দুইহাতে সরিয়ে দিচ্ছিল। চোখ বন্ধ করে বৃষ্টির ফোঁটায় চেহারা ভেজাচ্ছিল৷ প্রতিটা দৃশ্য ইলহানের হৃদয়কে খঞ্জরের মতো ধারালো আঘাতে ক্ষত-বিক্ষত করে দিচ্ছিল। ইলহানের মনে হলো, এইরকম ক্ষত-বিক্ষত সে হাজার বছর ধরে হতে পারবে। আফসোস হলো ভীষণ। ইচ্ছে করলো হাত দিয়ে অরিনের গাল ছুঁয়ে দিতে। হঠাৎ বজ্রপাতের শব্দে ঘোর কাটল দু’জনের। অরিন তাড়াহুড়ো করে বলল,” আল্লাহ, আমাকে তো বাড়ি যেতে হবে। রাত দশটা বেজে গেছে। অনেক উপদেশ দিলাম। আপনি প্লিজ আর কখনও সুইসাইড করতে যাবেন না। এটা খুব খারাপ জিনিস। মনে থাকবে?”
ইলহান মনে মনে বলল,” সবসময় মনে থাকবে।”
অরিন ইলহানের উত্তরের অপেক্ষা না করেই ছাদ থেকে দৌড়ে বেরিয়ে গেল। কিন্তু ইলহান দাঁড়িয়ে রইল। অনেকক্ষণ ধরে বৃষ্টিতে ভিজল। তার সর্দি লেগে গেল। পরদিন সকালে জ্বর এসে টনসিল ফুলে গেল। মা কেঁদে-কেটে ঘরে ডাক্তার ডেকে এনে একটা হুলুস্থুল কান্ড বাঁধালেন।
মেঘার ঠোঁট থেকে হাসি যেন নামছেই না। চোখ বড় করে, মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে সে বান্ধবীদের সাথে ইলমিদের বাড়ির নাইট পার্টির গল্প করছে। তবে মেঘার গল্পের প্রধান হিরো যে ইলহান সেটা তার মুখে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তার চেহারায় তুমুল একটা উল্লাসী ভাব ঝিকমিক করছে। চোখের দৃষ্টি চকচক করছে।
” জানিস, ইলমির ভাই অস্ট্রেলিয়া থেকে হায়ার স্টাডিজ কমপ্লিট করে এসেছে। দেখতে রাজপুত্রের চেয়েও কম না। ইলমি যতটা সুন্দর তার চেয়েও দশগুণ বেশি সুন্দর তার ভাই।এতো সুন্দর একটা মানুষ যে কিভাবে হয়! প্রথম দেখাতেই আমি পুরো ফিদা হয়ে গেছি। আমার মনে হয় যেকোনো সাধারণ মেয়ে তাকে দেখা মাত্রই ফিদা হয়ে যাবে। উফ! আমার তো এখনও বুকের মধ্যে ধপধপ করছে।”
রুবি গালে হাত রেখে বলল,” কিন্তু ইলহান ভাইয়া হঠাৎ তোকে কেন বাড়িতে ডাকল?”
মেঘার চেহারায় লাজুক আভা প্রকাশ পেল।
” সেটা আমি কিভাবে বলবো? তবে সেদিন না উনি আমার দিকে বার-বার লক্ষ্য রাখছিলেন। আমি খেয়াল করেছি। পার্টিতে এতো মেয়ে, উনি সবাইকে এভোয়েড করে শুধু আমার দিকেই কেন দেখবে বলতো? আবার শুধু আমার সাথেই কথা বলেছেন। অন্যকারো সাথে বলেনি। এমন কেন করবে বল?”
আরশি মজার ছলে বলে উঠল,” এবার তোকে ডেকেছে কিজন্য? প্রপোজ-টপোজ করবে নাকি? দেখিস আবার!”
মেঘা মুখে দুইহাত চেপে বলল,” তাহলে আমি সাথে সাথে হার্ট অ্যাটাক করবো। এমন কথা তোরা বলিসই না প্লিজ। আমার হার্টবীট স্টপ হয়ে যাচ্ছে।”
হো হো করে হেসে উঠল সবাই। মেঘা অসহায় মুখে বলল,” ধ্যাত, হাসছিস কেন তোরা?”
অরিন দীর্ঘশ্বাস ছাড়ল। মেঘা এখানে বসেই একদমে অনেকগুলো মিথ্যে কথা বলে ফেলেছে। মানুষ এতো মিথ্যে বলে কি মজা পায়? ইলহান ভাই মেঘার দিকে একবারও তাকাননি। তিনি তো মেয়েদের সাইডেও আসেননি। পার্টি হয়েছিল ইলমিদের বাড়ির ছাদে।ইলহান যেখানে বসেছিল সেটা একদম ছাদের বিপরীত পাশ। তিনি সারাক্ষণ একা একাই ছিলেন। একবারের জন্যেও মেয়েদের মাঝে আসেননি। শুধু ইলমি যখন সবাইকে পরিচয় করাতে নিয়ে গেল, তখন তিনি একবার মেঘার দিকে তাকিয়ে বলেছেন,” হ্যালো।”
ওইটুকু ব্যাপারটাকেই মেঘা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে এমনভাবে বলছে কেন? এতে কি মজা পাচ্ছে সে? অদ্ভুত মেয়ে মানুষ!
বাড়ি ফিরেই অরিনের মনখারাপ হয়ে গেল। মা আবার হাসাদ ভাইয়ের সাথে বিয়ের বিষয়টা নিয়ে কথা বলতে লেগেছেন। অথচ অরিন কালরাতেই বলেছিল, ম/রে গেলেও হাসাদ ভাইকে বিয়ে করবে না। গতকাল লোকটির সাথে ঘুরতে গিয়ে একটা জঘন্য ঘটনা ঘটেছে। রিকশায় ওঠার পর বার-বার কাঁধে আর কোমরে হাত দিচ্ছিল হাসাদ ভাই। রিকশাওয়ালাকে বলল হুড তুলে দিতে।
অরিন ইতস্তত করে বলল,” হুড তুলতে হবে না।”
” কেন তুলতে হবে না? বাহিরে কত রোদ। তোমার কষ্ট হবে।”
বারণ করা সত্ত্বেও তিনি হুড ওঠালেন। অরিনের প্রায় দম আটকে আসছিল। সে দুইবার বলল,” হাত সরান প্লিজ।”
হাসাদ ভাই কোনো জবাব দিল না। অরিনের চিৎকার করে কাঁদতে মন চাইল।
চলবে