সূর্যোদয় #পর্ব_৩০ #কারিমা_দিলশাদ

0
808

#সূর্যোদয়
#পর্ব_৩০
#কারিমা_দিলশাদ

পিটপিট করে চোখ খুলে ঐশী। চোখগুলোতে যেন কেউ আঠা লাগিয়ে দিয়েছে। ঝাপসা ঝাপসা নজরে আবছা একটা লম্বা অবয়ব দেখতে পারছে সে। কিন্তু বুঝতে পারছে না সে কে। অবয়বটা স্পষ্ট হলেই বুঝতে পারে এটা জয়। গোল ফ্রেমের চশমা, গায়ে এপ্রোন, গলায় স্টেথোস্কোপ একদম পেশাদারী লুক। হাতে কিছু ফাইল নিয়ে কারো সাথে কথা বলছে। ঐশী অবাক! জয় এখানে কেন আসবে? কিভাবে আসলো ও? গলার স্বর ভেঙে যাওয়ায় ফ্যাসফ্যাসে গলায় বলে,

“ এই… এই আপনি এখানে কি করছেন? যান এখান থেকে…”

জয় ঐশীর রিপোর্ট নিয়ে নার্সের সাথে কিছু কথা বলছিল। তখন ঐশীর গলা শুনে জয় ঐশীর দিকে তাকায়। ওর জ্ঞান ফিরেছে। জয় তড়িঘড়ি করে ঐশীর দিকে ঝুঁকে হাত ধরে তার পার্লস চেক করে, কপালে এবং গলায় হাত দিয়ে জ্বরের তাপমাত্রা অনুভব করে, ঐশীর চোখ দেখে। আর ঐশী বোকার মতো জয়ের এসব কর্মকাণ্ড দেখছে। তার ব্রেইনে জিনিসটা তখনও ধরতে পারে নি, যে সে হাসপাতালে। জয় জিজ্ঞেস করে,

“এখন কেমন ফিল করছো?”

“ আমি… আমি কোথায়?” — কক্ষের চারদিকে নজর বুলিয়ে, আর নিজের দিকে নজর বুলিয়ে বলে,

“ আমি হাসপাতালে!?” — উত্তরে জয় মাথা নাড়ে।

“ কি হয়েছে আমার?”

“ জ্বরে অজ্ঞান হয়ে পড়ে ছিলে। আরেকটু দেরি হলে কি হতো জানো? এতোটা কেয়ারলেস কেন তুমি বলো তো। নিজের ভালো মন্দ’র খেয়াল তো অন্তত রাখবে। তোমার মাঝে অন্য কারো প্রাণপাখি বাসা বেঁধে আছে ভুলে যাও কেন। ”

ঐশী চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। জয়ের থেকে নজর ঘুরিয়ে ঐশী নার্সটার দিকে তাকায়। তিনি মুখে মুচকি হাসি রেখে ওষুধ নিয়ে কিছু একটা করছে। তা দেখে ঐশী চোখ দিয়ে জয়কে শাসায়। আর জয় তাকে তুমি সম্বোধন করছে! সে উঠে বসতে চায়, কিন্তু পারে না। এরপর জয় তার দুই বাহু ধরে তাকে উঠে বসতে সাহায্য করে। পিঠের পিছনে বালিসে ঠেস দিয়ে বসিয়ে দেয় তাকে। ঐশীর মাথায় হাজার প্রশ্ন কিলবিল করছে। মাথাটা তার ভার ভার লাগছে। জয় চেয়ারে বসে ঐশীকে দেখে যাচ্ছে। ঐশীকে মাথায় হাত দিতে দেখে জয় বলে,

“ মাথা ব্যাথা করছে?”

ঐশী মাথা নাড়িয়ে না বলে। সে জানায় তার মাথা ভার ভার লাগছে।

“ একটু ভার ভার লাগবেই। পরে ঠিক হয়ে যাবে। তার আগে খাবার খেয়ে ওষুধগুলো খেয়ে নাও।”

“ আমার আম্মু আব্বু কই? আর আপনি কিভাবে জানেন?”

সকাল ১০ টা বেজে গেছে ওনারা এখনও এসে পৌছায় নি।

“ ওনারা এসে পড়বেন এক্ষুনি। আর আমি কিভাবে কি জানলাম তা পরে বলছি আগে ফ্রেশ হয়ে নাও। তারপর তোমাকে খেতে হবে।”

“ না, আগে আপনি আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিন।”

“ ঐশী…. লুক এট ইউ। তুমি ঠিকমতো কথাও বলতে পারছ না। শরীরে এক তুলা শক্তিও নেই, এই অবস্থায় এসব কথা বলাটা কি বেশি জরুরি? আমি সবই বলবো। তার আগে মুখটা ধুয়ে নাও।”

নার্সকে কিছু একটা বলতেই তিনি চলে যান। আর জয় ব্রাশ পেস্ট নিয়ে ওয়াশরুম থেকে ভিজিয়ে এনে ঐশীকে দেয়। ঐশী অগত্যা ব্রাশটা হাতে নেয়। কিন্তু এটা তো তার ব্রাশ না।

“ এটা কার ব্রাশ? আমার ব্রাশ তো এটা না।”

“ ডোন্ট ওয়ারি। এটা নতুন ব্রাশ। আংকেল আন্টি এসব কিছু দিয়ে যায় নি। আর তারাও এখনও এসে পৌছায় নি। তাই ব্রাশ, তোয়ালে এসব কিনে নিয়েছি। এবার ব্রাশ করো।”

ব্রাশ করা শেষে জয় ঐশীকে ধরে ধরে ওয়াশরুমে নিয়ে যায়। যেহেতু তার পাশে আর কেউ নেই তাই না চাইতেও ঐশীকে জয়ের সাহায্য নিতে হচ্ছে। জয় খুবই স্বাভাবিকভাবে ঐশীর সব কাজ করে দিচ্ছে। যেন ঐশীর এই কাজগুলো জয় প্রায়ই করে। ওকে ওয়াশরুম থেকে নিয়ে এসে বেডে বসিয়ে দিয়ে তোয়ালে দিয়ে মুখটা নিজেই মুছে দেয়। কারণ ঐশীর হাতে যেহেতু ক্যানোলা লাগানো তাই ঐশী কাজটা করতে পারবে না। এরমধ্যেই আবার সেই নার্সটা একটা টিফিন ক্যারিয়ার নিয়ে কেবিনে আসে। জয় সেখান থেকে সুজির বাটিটা নিয়ে ঐশীকে খাওয়াতে গেলেই ঐশী বেঁকে বসে। সে কিছুতেই জয়ের হাতে খাবে না। নিজের হাতে খাবে। নিজে না পারলে সে নার্সের হাতে খাবে তবুও জয়ের হাতে খাবে না। এতক্ষন নিরুপায় হয়ে জয়ের সাহায্য নিয়েছে তবে এখন সে কিছুতেই আর জয়ের কাছ থেকে কোনো হেল্প নিতে চায় না। এবার জয় বলে,

“ আমি এখানে কিভাবে, তোমার অসুস্থতার খবর কিভাবে জানলাম শুনবে না?”

এরপর ফিসফিসিয়ে বলে,

“ ওর সামনে কিন্তু বলা যাবে না।” এবার আর কোনো কথা বলে না ঐশী। তাই জয় নার্সকে যেতে বলে যেই চামচ মুখের সামনে ধরেছে সেই খাবার দেখে ঐশীর আরেক জেদ। সে সুজি খাবে না৷ সে কোনো বাচ্চা না। এবার জয় বলে,

“ দেখুন ম্যাডাম এখন আপনি ভারি কিছু খেতে পারবেন না। লাইট ওয়েট খাবার খেতে হবে। ভারি খাবার আপনার মুখে এখন ভালোও লাগবে না। স্যুপই আনতাম কিন্তু আমি জানি আপনি স্যুপ খান না। তাই এই সুজি এনেছি। এটা ভালো খেয়ে দেখো। তাও যদি না খাও তাহলে আমি জোর করেই খাওয়াবো।”

জয়ের কথায় এবার ঐশী চুপচাপ খেয়ে নেয়। খাওয়াতে খাওয়াতে জয় সব বলে। ঐশী থম মে’রে আছে। খাওয়ার পর জয় ওষুধ বের করে ঐশীর হাতে দেয়। ঐশী সেটাও নিরবে খেয়ে নেয়।

“ আচ্ছা শোনো। আমার এখন ডিউটি আছে। তাই আমাকে যেতে হচ্ছে। তবে আমি একটু পর পর আসার চেষ্টা করব। আর আশাও এসে পড়েছে, এক্ষুনি চলে আসবে। আশা আসার আগ পর্যন্ত একজন নার্স তোমার পাশে থাকবে। ওর নাম স্বর্ণা খুব ভালো মেয়ে। যা দরকার পড়বে বা কোনো সমস্যা হলেই ওকে বলবে। এখন রেস্ট নাও। আমি আসছি।”

ঐশী অন্যদিকে তাকিয়ে কেবল শুনে গেল। মনে অনেক প্রশ্ন থাকলেও কোনো জবাব দিল না। জয় এবার নার্সটাকে ডেকে বলে,

“ তোমার ম্যাডামের খেয়াল রেখো। উনার কোনো সমস্যা যেন না হয়। আসি।”

‘তোমার ম্যাডাম’ শুনে ঐশী চট করে জয়ের দিকে তাকায়। কিন্তু জয় আসি বলে আর দেরি করে নি। সে চলে গেছে।

—————————

জয় চলে যেতেই নার্সটা মিষ্টি হেসে ঐশীর পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।

“ আপনি অনেক লাকি ম্যাডাম। ডা. জয়ের মতো জীবনসঙ্গী পাওয়া অনেক বড় ভাগ্যের ব্যাপার। আজকাল এতো নম্র,ভদ্র আর দায়িত্ববান মানুষ পাওয়া মুশকিল। কালকে সারারাত তিনি আপনার জন্য জেগে থেকেছেন। পেশাদারিতে তার কোনো তুলনা হয় না। তবে যখন আপনাকে নিয়ে এলো উনাকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন উনার দেহে প্রাণ নেই। উনি খুব ভালবাসে আপনাকে।
আর স্যারের যা চার্ম এখানে কি বলবো। অন্যান্য অনেক ফিমেল ডাক্তার, জুনিয়র, নার্সরা তো রীতিমতো আপনাকে এখন হিং’সে করছে। আপনারা খুব সুখী হবেন ম্যাডাম।”

আরও অনেক কথাই বলছিল তিনি। ঐশী তার কথাও নিরবে কেবল শুনে গেল। তার মন-মস্তিষ্কে কি চলছে তা কেউ জানে না। হয়তো ঐশী নিজেও জানে না। লাগাতার যা হচ্ছে কয়েকটা দিন ধরে। এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখে ঘুম ভর করে জানা নেই তার। ঐশীকে ঘুমিয়ে যেতে দেখে নার্সটা ঐশীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে। মিষ্টি চেহারার একটা মেয়ে, ডা. জয়ের সাথে বেশ ভালোই মানাবে।

——————————–

কারো উচ্চ আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় ঐশীর। ঘুম ভেঙে দেখে তার মা ফোনে কারো সাথে কথা বলছে। কথা শুনে বুঝতে পারে তার বড় খালার সাথে কথা বলছে। কালকে সারারাত তিনি দুচোখের পাতা এক করতে পারে নি, মেয়ের চিন্তায় কিচ্ছু খেতে পারছেন না। আরও কত গাল-গল্প। তাচ্ছিল্যের হাসি ফুটে উঠে তারমুখে। গলার স্বর যথেষ্ট কঠোর করে বলে উঠে,

“ আম্মু? এটা তোমার নিজের বাসা মনে হচ্ছে? কথা বলার ছিল বাইরে গিয়ে বললেই পারতে। এখানে এত গলা মেলানোর কি ছিল?”

“ ওহহ তুই উঠছস। আমি তো আস্তে কথাই কইলাম। রোগে পইড়াও আমার সাথে এমনে কথা কস…”

“ তুমি কিভাবে কথা বলছো তা জানা আছে। আর তোমার সাথে কিভাবে কথা বলা লাগবে তাও আমার জানা আছে। তুমি এখানে কি করছ তোমার তো আসার কোনো দরকার ছিল না। আমি মেনেজ করে নিতাম।”

“ মা হইয়া আমি দ্বায়ে পড়ছি বুঝছস। মা হইলে বুঝতি মায়ের কত জ্বালা। কালকে ধইরা খাওয়া নাই ঘুম নাই। চিন্তায় চিন্তায় জীবন শেষ আমার। তারপরও তোর মুখের কথা শুনা লাগে আমার।”

ঐশী তাচ্ছিল্য হেসে বলে,

“ আমার জন্য তোমার যে কত চিন্তা হয় তাও আমার জানা আছে। এতই চিন্তা যে মেয়ে ঘরে জ্বরে পড়ে থাকে অথচ তোমার কোনো খোঁজ নাই। মেয়েকে একা হাসপাতালে রেখে বাসায় গিয়ে আরামে ঘুমাও। আর কেউ না জানুক আমি তো জানি তোমাদের এতো লেইটে আসার কারণ। সকাল ১০টার আগে তো তোমার ঘুমই ভাঙে না। তুমি ১০ টার আগে এখানে আসবে কি করে! এই হচ্ছে আমার জন্য তোমার চিন্তার নমুনা৷”

“ একা কই রাইখা গেলাম জামাই আছিল না? জামাই থাকতে আর সমস্যা হবো কি। সবাই কত মান্য করে জামাইরে জানস। হাসপাতালে নিজেরাই দৌড়াইয়া তাল পাওয়া যায় না আর এইবার হাসপাতালের লোকেরারে কইলেই হেরা সব ব্যবস্থা কইরা দেয়। তোরে কি পানিত ফেলায় থুইয়া গেছি?”

মায়ের কথায় ঐশী একধ্যানে কেবল তারদিকে তাকিয়ে থাকে। আর ভাবে এ বুঝি মা? আল্লাহ তায়ালা কেন যে এই মহিলাকে সন্তান দিয়েছিল। বয়সে বড় নাহলে আর সম্পর্কে মা না হলে ঐশী যে এই মহিলাকে কি করতো। এরমধ্যেই আশা ঢুকে কেবিনে হাতে পানির বোতল। আশাকে দেখে ঐশী বলে,

“ দোস্ত এনারে বাইরে যাইতে বল।”

আশা বোকার মতো একবার ঐশীর দিকে তাকায় আবার ঐশীর মা’র দিকে তাকায়। ঐশীর মা ঐশীর দিকে একটা মুখ মুচড়া দিয়ে চলে যায়। আশা প্রশ্নবোধক দৃষ্টিতে তাকায় ঐশীর দিকে। ঐশী তাকে ধরে তুলতে বলে।

“ কি হইছে দোস্ত? ”

“ কিছু না। চেয়ার নিয়ে বস। ”

“ শরীর কেমন লাগে এখন?”

“ মোটামুটি ভালোই। আচ্ছা শোন একটা কাজ কর। বাসায় গিয়ে আমার ক্রেডিট কার্ডটা নিয়ে আসবি। যা বিল হবে আমার কার্ড থেকে পে করে দিবি। আর বাচ্চাদের বলে দিস কয়েকদিন ক্লাস বন্ধ থাকবে।”

“ আচ্ছা ঠিক আছে, তুই চিন্তা করিস না। এখন কটা খেয়ে নে। আবার ওষুধ খেতে হবে। ”

আশা নিজের হাতে ঐশীকে খাইয়ে দিতে থাকে। খেতে খেতে ঐশী আশার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে,

“ তোকে আমার অসুখের খবর কে দিয়েছে?”

“ তোর ডাক্তার দিয়েছে।” ঐশী চোখ গরম করে তাকাতেই বলে,

“ মানে ডাক্তার জয় দিয়েছে। আমিই তোকে ফোন দিয়েছিলাম কালকে রাতে। দুই-তিনদিন ধরেই তো দিচ্ছিলাম, কিন্তু তুই তো ধরিস না। কালকে ফোন দিলে জয় ভাইয়া ফোন ধরে। তারপর সেই বলেছে। প্রীতি আর কবিতাও আসছিল। আরেকটু আগে উঠলে দেখতে পারতি। খালি অনিকরা আসে নাই। কেন আসে নাই জানসই তো। আন্টি না থাকলে ফোন দিতে বলছে। ”

“ হুমম। আমি স্যুপ খাই না এটাও তুই বলছস না?”

“ আরে উনিই জিজ্ঞেস করলো তুই কি খাস না খাস। এইদিকের পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে বলতে বলে ফেলছি৷ ক্ষতি কি হইছে তাতে বল তো?”

ঐশী কোনো জবাব দেয় না। ঐশীর খাওয়া শেষ হতেই জয়ের আগমন ঘটে। এসেই আশাকে উদ্দেশ্য করে বলে,

“ আরে শ্যালিকা সাহেবা আমার বউয়ের ঠিকমতো খেয়াল রেখেছেন তো কোনো সমস্যা হয় নি তো?”

“ না না একদম সমস্যা হয় নি।”

ঐশী রাগে কটমট করে তাকিয়ে আছে দু’জনের দিকে। যেন চোখ দিয়েই ভস্ম করে দিবে। অসুস্থতার জন্য রাগটাও ঠিক মতো করতে পারছে না। অনেক কথা বলার থাকলেও বলতে পারছে না। জয় ঐশীর নজর উপেক্ষা করে ওষুধগুলো বের করে ঐশীর হাতে দিয়ে পানিটাও তুলে দেয়। ঐশীর রাগি দৃষ্টি দেখে লাজুক ভঙ্গিতে বলে,

“ এভাবে দেখো না গো লজ্জা লাগে আমার।”

“ আপনার কি মনে হয় না আপনি অতি বাড়াবাড়ি করছেন। কি শুরু করেছেন আপনি? আর এখানের লোকদের কি বলে পরিচয় দিয়েছেন আমার?”

“ উফফফফ…. একসাথে কত প্রশ্ন করে রে। আগে ওষুধটা খাও তারপর বলছি।”

ঐশী ওষুধটা খেয়ে নেয়। ঐশীর মুখে লেগে থাকা পানিটা জয় চট করে মুছে দেয়। ঐশী হা করে তাকায় জয়ের দিকে। এর পরিবর্তে জয় একটা মিষ্টি হাসি উপহার দিয়ে চেয়ারটা টেনে নিয়ে ঐশীর কাছাকাছি বসে বলে,

“ এক হচ্ছে না। আমার মনে হয় না আমি মোটেও বাড়াবাড়ি করছি। অনেক কিছু করার ইচ্ছা হচ্ছে কিন্তু এখনও অধিকারটা পায় নি বলে করতে পারছি না। দুই, আমি এখনও কিছুই শুরু করি নি। তবে এখন থেকে শুরু করবো। তিন, এখানে সবাই জানে তুমি উড বি মিসেস আহসান কবির জয়। আর কয়দিন পর আমার হবে হবে বউ। দ্যাটস ইট মাই লর্ড।”

“ এই হবে হবেটা কখনো হবে না৷ আমি আপনাকে বিয়ে করবো না।”

“ এসব বলে কোনো লাভ নেই জানেমন। তোমার মা বাবা তো একপায়ে দাঁড়িয়ে। যদি বলি আজকে বিয়ে করবো তো তারা আজকেই বিয়ে দিতে রাজি। আমার ফ্যামিলির কথা তো বলার অপেক্ষায় রাখে না। মা তো তার বউকে পারলে এখনই বাসায় নিয়ে যায়। আর আমি…… আমি তো আপনার অপেক্ষায় শুকিয়ে যাচ্ছি। কেবল এখানে একজনই বাগড়া দিচ্ছে আর সে হলেন আপনি ম্যাডাম।”

এবার ঐশীর দিকে ঝুঁকে বলে,

“ রাজি হয়ে যান ম্যাডাম অনেক ইচ্ছে আছে, অনেক জল্পনা কল্পনা আছে আপানকে নিয়ে। সবটা তোমাকে সাথে নিয়ে, তোমার হাতে হাত রেখে পূরণ করতে চাই। না করো না প্লিজ।”

“ গো টু হে’ল।”

“ নোপ। আপনাকে সাথে নিয়ে জান্নাতে যাওয়ার ইচ্ছা ম্যাডাম। হেলতে টেলতে যাব না। আর আজকে থাকতে হবে। কালকে তোমার শারীরিক অবস্থা দেখে রিপোর্ট ভালো হলে কালকেই রিলিজ পাবে। এবার বিয়ে কিভাবে পন্ড করবে এসব চিন্তা ভাবনা না করে, লক্ষী মেয়ের মতো চুপচাপ শুয়ে থাকো। আর আমাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর স্বপ্ন দেখো। এটাই তোমার কাজ। আমি পরে আবার আসবো। বাই।”

#চলবে

( কপি করা নিষেধ। কেউ কপি করবেন না।
গল্পটা কি বোরিং লাগছে?? )

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here